টমেটো চাষে স্বপ্ন বুনছেন রাফিয়া
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের রনিয়া গ্রামের বাসিন্দা আসকর মিয়ার স্ত্রী রাফিয়া খাতুন। নিজের ২৮ শতাংশ জমিতে চাষ করেছেন শীতকালীন মালিকা সিড জাতের টমেটো। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার টাকা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে সেই টমেটো তিনি বাজারের হাটে ধাপে ধাপে বিক্রি শুরু করবেন। বিক্রি চলবে আগামী চৈত্র মাস পর্যন্ত। শীতকালীন এই টমেটো বিক্রি করে অন্তত দেড় লাখ  টাকা পর্যন্ত আয় হবে বলে আশা করছেন রাফিয়া খাতুন। শুধু রাফিয়াই নন একই এলাকার সফিকুল ইসলাম, মাস্টার মিয়া, জাকির মিয়াসহ অন্তত ৩০টি পরিবার দীর্ঘদিন ধরে শীতকালীন এই টমেটো চাষ করে বিক্রি করে আসছেন। এতে তারা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। তবে দীর্ঘদিন ধরে সবজি চাষ করলেও স্থানীয় কৃষি বিভাগের কোনো রকমের সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সবজি চাষিরা। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর বলছে, চলতি বছরে উপজেলায় ১৭০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আলু, মিষ্টি আলু, বেগুন, কাঁচা মরিচ, টমেটো, ফুল ও বাঁধাকপি। আর মাঠে কৃষকদের পরার্মশ ও সহযোগিতার জন্য রয়েছেন ১১ জন মাঠর্কমী। সরজমিনে সদর ইউনিয়নের রনিয়া গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় দেখা যায় আজমিরীগঞ্জ -কাকাইলছেও সড়কের পাশে কৃষি জমিতে সারি সারি টমেটো, কাঁচামরিচের বাগানে কিষান-কিষানিরা পরির্চযায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ সময় আলাপকালে রাফিয়া খাতুন কালবেলাকে বলেন, আশ্বিন মাসের শুরুতে ২৮ শতাংশ জমিতে মালিকা সিড জাতের চারা রোপণ করেছিলাম। বর্তমানে সব গাছেই টমেটো ঝুলছে। আগামী সপ্তাহে বিক্রি শুরু করব। কিন্তু এরই মধ্যে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। তাই বাজার থেকে এনে ফ্লোরা ও ফাইথ্রিন বালাইনাশক জমিতে স্প্রে করেছি। মাস্টার মিয়া বলেন, ৪২ শতাংশ জমিতে টমেটো ও দেশি জাতের বিন্দু কাঁচা মরিচ চাষ করেছেন তিনি। বৃষ্টি ও পোকার আক্রমণে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকে কোনো রকমের পরামর্শ বা সহযোগিতা পাননি তিনি। বাজার থেকে কিনে বিভিন্ন ধরনের সার ব্যবহার করেছেন, সারের কার্যকারিতাও কম। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলন পাবেন বলে আশা করছেন তিনি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফে আল মুঈজ বলেন, চলতি বছরে উপজেলায় ১৭০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন সবজি চাষ করা হয়ছে। গত কিছুদিন পূর্বে বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টিপাতের পরপরই সাধারণত পোকার আক্রমণ হয়। এসময় ফাইবার মেথ্রিন জাতীয় গ্রুপের ওষুধ স্প্রে করলেই পোকার আক্রমণ কমে যায়। কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতার বিষয়ে তিনি বলেন, উপজেলা অধিদপ্তরের ১১ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করেছেন। যে কোনো কৃষক আমাদের পরামর্শ বা সহযোগিতা চাইলে আমরা তা অবশ্যই প্রদান করি। তারপরও যদি কোনো কর্মকর্তা মাঠপর্যায়ে ঠিকমতো কাজ না করেন তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অব্যশই আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
০১ জানুয়ারি, ২০২৪

টিপস / টমেটো চাষে ৭ ভুল
শীত আসি আসি করার এ সময়টায় শহরের শখের বাগানিরা টবে লাগাচ্ছেন টমেটোর চারা। নিয়মমাফিক সার, পানি ও রোদের আলো তো লাগবেই, সেইসঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে যাতে ছোটখাটো কিছু ভুল না হয়— দুর্বল চারা সব ঠিকঠাক থাকলেও চারা যদি দুর্বল হয় তবে ফলন হবে না। টমেটো গাছকে ফল ধরাতে প্রচুর সুগার তৈরি করতে হয়। তাই দুর্বল চারা হলে গাছ সহজে ফল দিতে চাইবে না। ফুলও ঝরে যাবে তরতর করে। চারা কেনার সময় খেয়াল করুন, যাতে কোনো পাতা কুঁকড়ে না থাকে বা রোগাক্রান্ত হলদেটে ডাল যেন না থাকে। গভীরতা সুস্থ চারা অন্তত তিন ইঞ্চি গভীরে রোপণ করা হলে গাছ সতেজ ও বড় হবে। এতে করে টমেটো চারা ভালোভাবে শিকড় ছড়ানোর সুযোগ পায়। ঘনবসতি ঘনবসতি কেউই পছন্দ করে না। এ ক্ষেত্রে টমেটো গাছ আরও সাবধানী। প্রচুর খাবার তৈরি করতে হয় বলে এ গাছ তার প্রতিটি পাতাকেই কাজে লাগায়। ঘন করে লাগালে অনেক পাতায় সূর্যের আলো পড়বে না। এতে ফলও ধরবে কম। একটি চারার জন্য অন্তত ১২ ইঞ্চি টবের দরকার হবে। পাতায় পানি টবের টমেটো গাছে পানি দেওয়ার সময় খেয়াল রাখবেন, যাতে পানি সরাসরি পাতায় না পড়ে। গোড়ায় পর্যাপ্ত পানি ঢেলে দিলেই যথেষ্ট। টব ছেড়ে কয়েকদিনের জন্য কোথাও বেড়াতে গেলে ড্রিপিং সিস্টেম কাজে লাগাতে পারেন। এ কাজে ব্যবহার করতে পারেন স্যালাইনের সেট ও বড় পানির জার। বেঁধে না দেওয়া টমেটো গাছ বাড়তে শুরু করলে সেটাকে একটা শক্তপোক্ত খুঁটির সঙ্গে আলতো করে বেঁধে দিতে হয়। তা না হলে গাছ নুয়ে পড়বে এবং যথারীতি ফল ধরবে না, পাতাও মরে যাবে। গাছ যত বাড়বে ততই সেটাকে ধাপে ধাপে বেঁধে দিতে হবে খুঁটির সঙ্গে। খেয়াল রাখতে হবে আঁটুনি যেন খুব টাইট না হয়। ছাঁটাই না করা টমেটো গাছে ছাঁটাই করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তা না হলে ডাল ও পাতার পেছনেই গাছের সব পুষ্টি ছোটাছুটি শুরু করবে। গাছে প্রথম ফুল এলে দুটো ডালের মাঝে যে ডালগুলো থাকে সেগুলো হাত দিয়ে সাবধানে ফেলে দিতে হবে। এভাবে দুই ডালের মাঝে ৪৫ ডিগ্রি কোণ করে যত ডাল গজায় সেগুলো ফেলে দিলেই দেখা যাবে ফলন হচ্ছে বেশি। গাছে ফল রেখে দেওয়া টমেটো পেকে যেতে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব সেটা তুলে ফেলতে হবে। একসঙ্গে সব পাকার জন্য অপেক্ষা করা যাবে না। তা না হলে গাছে থাকা পাকা টমেটোয় দ্রুত পচন ধরবে এবং পুরো গাছই আক্রান্ত হবে।
১৮ নভেম্বর, ২০২৩

রূপচর্চা / ত্বকের জন্য টমেটো বেসন
n মুখ ব্রণ ও র‌্যাশ ভরে যাচ্ছে? ছোপ দাগ নিয়ে জেরবার? এ ক্ষেত্রে ভরসা রাখা যায় বেসন ও টমেটোর ওপর। টমেটো ও বেসনের ফেসপ্যাক ত্বকের ট্যান এবং কালচে দাগ হালকা করে। আবার টমেটোর ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান বলিরেখা দূর করে। n একটা ছোট পাকা টমেটো ব্লেন্ড করে নিন। দুই টেবিল চামচ বেসন মিশিয়ে মুখে লাগান। মিনিট দশেক পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুই-তিনবার এ প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। n দুই টেবিল চামচ টমেটোর রসে দুই টেবিল চামচ বেসন এবং এক চা চামচ টক দই মেশান। মুখ প্রথমে ফেসওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করে ফেসপ্যাকটি লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন। ব্রণ ও দাগ কমাতে সপ্তাহে দুবার ব্যবহারই যথেষ্ট। n একটি টমেটো ধুয়ে পিষে নিন। একটি পাত্রে টমেটো পেস্টের সঙ্গে এক চা চামচ হলুদ গুঁড়ো, এক টেবিল চামচ বেসন এবং দুই চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে প্যাক বানান। ১০ মিনিট মুখে রেখে কুসুম গরম পানিতে ধুয়ে ফেলুন। যাদের ত্বক শুষ্ক, তারা লেবুর রসের পরিবর্তে টক দই ব্যবহার করুন। মাসে দুবার ব্যবহার করতে পারেন এ ফেসপ্যাক। n এক চা চামচ বেসনের সঙ্গে আধা চা চামচ লেবুর রস এবং এক চা চামচ টমেটোর পাল্প মিশিয়ে মুখে লাগান। ১০ মিনিট রেখে দিন। এরপর কুসুম গরম পানিতে ধুয়ে মুছে নিন। শেষে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে ভুলবেন না।
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

অটোয় চড়লে ১ কেজি টমেটো দেবেন চালক
ভারতে মধ্যবিত্তের হেঁশেলে আগুন। টমেটোর দাম যেভাবে আকাশ ছুঁয়েছে তাতে স্বস্তি নেই কারও। কিন্তু এ পরিস্থিতিতেই এক অটোচালকের দেখা মিলল, যিনি তার যাত্রীদের বিনামূল্যে ১ কেজি টমেটো উপহার দিচ্ছেন! তবে শর্ত রয়েছে। সেই শর্ত পূরণ করলেই মিলবে এ উপহার। ভারতের চণ্ডীগড়ের এ অটোচালকের নাম অরুণ। গত ১২ বছর ধরে ভারতীয় সেনার কাছ থেকে তিনি ভাড়া নেন না। পাশাপাশি অন্তঃসত্ত্বাদের বিনা খরচে পৌঁছে দেন গন্তব্যে। সে অরুণই এবার বিনামূল্যে টমেটো উপহার দেওয়ার ঘোষণা দিলেন। তবে যাত্রীকে মানতে হবে বিশেষ এক শর্ত। এটি হলো, বিনামূল্যে ১ কেজি টমেটো পেতে হলে অরুণের অটোয় অন্তত ৫ বার চড়তে হবে যাত্রীকে। তবেই মিলবে বিনামূল্যের টমেটো। এখানেই শেষ নয়। অক্টোবরে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারত যদি জেতে তাহলে টানা পাঁচ দিন সবাইকে বিনা খরচে অটোয় চড়াবেন তিনি! কেন এমন বিনামূল্যে পরিষেবা দেন অরুণ? তিনি জানান, অটো চালানো আয়ের একমাত্র উৎস হওয়ার পরও মানুষকে এই ধরনের পরিষেবা দিতে পারলে তার হৃদয় ভরে ওঠে। সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
২০ জুলাই, ২০২৩

টমেটো বেচে এক মাসেই কোটিপতি
ভারতে টমেটোর বাজারে আগুন! মরিচ বা আদার মতো টমেটোয় হাত পড়লেই লাগছে ছ্যাঁকা; কিন্তু কথায় আছে, কারও সর্বনাশ তো কারও পৌষ মাস! এ ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। টমেটোর দামের সুযোগেই কোটিপতি হয়েছেন মহারাষ্ট্রের পুনে জেলার ব্যবসায়ী তুকারাম ভাগোজি গায়কর ও তার পরিবার। এক মাসে ১৩ হাজার ক্যারেট টেমেটো বিক্রি করে তাদের আয় হয়েছে ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। তুকারামের সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১৮ একর জমি। সেই জমির মধ্যে ১২ একরেই চাষ করেন ওই কৃষক। ছেলে ঈশ্বর ও মেয়ে সোনালির সাহায্যে ওই জমিতেই টমেটো চাষ করেছেন তিনি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বাজারে সেই সুযোগই কাজে লেগেছে তুকারামের জীবনে। তুকারাম প্রতি ক্যারেট টমেটো বিক্রি করে ২ হাজার ৭০০ টাকা করে আয় করেন। সে হিসাবে এক শুক্রবার তিনি বিক্রি করেছেন ৯০০ ক্যারেট অর্থাৎ ২৪ লাখ ৩০ হাজার টাকার টমেটো। আগের মাসেও মানভেদে প্রতি ক্যারেট টমেটো বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৩০০ থেকে ৩ হাজার ১০০ টাকায়। এদিকে পুনে জেলার জুন্নার এলাকার সবজির বাজারে টমেটো বিক্রি করে ব্যাপক আয় করেছেন ব্যবসায়ীরা। এ এলাকায় এখন দ্রুত বিত্তশালী হতে অনেকেই ঝুঁকছেন টমেটো চাষে। সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
১৬ জুলাই, ২০২৩
X