উন্নয়ন কাজে ঠিকাদার পাচ্ছে না ডিএসসিসি
পুরান ঢাকার চানখাঁরপুলে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি বহুতল মার্কেট নির্মাণে ২০১৭ সালে কার্যাদেশ দেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এরপর সামান্য কিছু কাজ করে চার বছর প্রকল্পটি ফেলে রাখে ঠিকাদার। এ কারণে ২০২১ সালে বাতিল করা হয় কার্যাদেশ। নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগে তিনবার দরপত্র ও পুনঃদরপত্র বিজ্ঞপ্তি দিয়েও সাড়া পাচ্ছে না সংস্থাটি।
মান্ডা খালকে স্বাভাবিক রূপে ফিরিয়ে আনতে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। সেজন্য একটি প্যাকেজের দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। একে একে তিন দফা বিজ্ঞপ্তি দিয়েও পাওয়া যায়নি যোগ্য ঠিকাদার। এখন আবার পুনঃদরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে প্রকৌশল বিভাগ।
মান্ডা খালের উন্নয়নকাজের দায়িত্বে থাকা ডিএসসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খায়রুল বাকের বলছেন, ‘খাল সংস্কারের একটি প্যাকেজের কাজে টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। তিনবার টেন্ডার করেছি, নিয়োগ করার মতো ঠিকাদার পাওয়া যায়নি। এখন আবার পুনঃদরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।’
শুধু মান্ডা খাল কিংবা পুরান ঢাকার চানখাঁরপুলই নয়—এমন অনেক প্রকল্পে কাজ দেওয়ার মতো ঠিকাদার পাচ্ছে না ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঠিকাদার না পাওয়ার কারণে বিভিন্ন জনবান্ধব উন্নয়নকাজ স্থবির হয়ে আছে। প্রায় সব কাজেই বারবার দরপত্র আহ্বান করেও মিলছে না ঠিকাদার। এতে উন্নয়নকাজে সময়ক্ষেপণ হওয়ার পাশাপাশি বিজ্ঞাপন বাবদ গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।
সদস্য বিদায়ী বছরের জুলাই থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন পত্রিকায় ডিএসসিসির দরপত্র বিজ্ঞপ্তি ঘেঁটে দেখা গেছে, ওই সময়ের মধ্যে ২৫ বার বিভিন্ন প্রকল্পের পুনঃদরপত্রের বিজ্ঞাপন দিয়েছে সংস্থাটি। এর বাইরে দরপত্রের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে ৪৫টি প্রকল্পে। সব মিলিয়ে পুনঃদরপত্র এবং সংশোধনী দরপত্রে উন্নয়নমূলক কাজের পরিমাণ দুই শতাধিক।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডিএসসিসির মেয়র বেশকিছু ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনলেও প্রধান প্রকৌশলীসহ কিছু প্রকৌশলীর খামখেয়ালির কারণে এসব উন্নয়নকাজে ঠিকাদার সংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া কাজ শেষ করার পরও বিল পেতে নানা সমস্যা, নির্মাণসামগ্রীর দাম বৃদ্ধি, শ্রমিক সংকটসহ নানা কারণেই ঠিকাদাররা কাজে আগ্রহ হারিয়েছেন।
বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি ও করপোরেশনের নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত পাঁচ মাসে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া দরপত্রের মধ্যে মাত্র ৪০ শতাংশে কার্যাদেশ দিতে পেরেছে ডিএসসিসি। এ সময়ে পুনঃদরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে নিউমার্কেটে নতুন ফুটওভার ব্রিজ, হাজারীবাগে কাঁচাবাজার, সূত্রাপুর আধুনিক কাঁচাবাজার ও চানখাঁরপুল মার্কেট নির্মাণ; মান্ডা খাল পুনরুদ্ধার, সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধন, কাজী আলাউদ্দীন সড়ক, আগাসাদেক সড়ক ও সিক্কাটুলি পার্ক এলাকায় সড়ক-নালা ও ফুটপাতের উন্নয়ন, জুরাইন কবরস্থানে লাশ দাফনের জন্য বাঁশ-চাটাই সরবরাহ ও কবর খনন, ফুলবাড়ীয়া সুপার মার্কেট সংস্কার, নীলক্ষেত তুলা মার্কেট সংস্কার ও পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) সম্প্রসারণ, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে এসটিএস সম্প্রসারণ, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় সড়ক-নালা সংস্কার ও উন্নয়ন, অঞ্চল-৪-এর ১২টি ওয়ার্ডে সড়ক-নালা সংস্কার ও উন্নয়নের ১১টি কাজ; মেকানিক্যাল সার্কেলে মই, এক্সক্যাভেটর, রোড রোলার, ভ্রাম্যমাণ টয়লেট, পেলোডার, পানির ট্যাঙ্কিসহ যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম সরবরাহ, অঞ্চল-১-এর সড়ক, ফুটপাত, নালা সংস্কার ও উন্নয়নের সাতটি কাজ; অঞ্চল-৫-এর সাতটি ওয়ার্ডে সড়ক-নালা সংস্কার ও উন্নয়নের ১১টি কাজ; অঞ্চল-২-এর চারটি ওয়ার্ডে সড়ক সংস্কার, গাছ কাটা, নালা ও সড়ক উন্নয়নের চারটি কাজ; সূত্রাপুর কাঁচাবাজার নির্মাণ, ১৪, ৫৫ ও ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডে সড়ক ও নালার উন্নয়নকাজ; পাঁচটি পাবলিক টয়লেট ইজারা, কাঁঠালবাগানে নগর কাঁচাবাজার নির্মাণ, জিগাতলা এলাকার তিনটি সড়ক ও নালার উন্নয়নকাজ এবং পুরান ঢাকার ৩১ ও ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের শরৎচন্দ্র চক্রবর্তী সড়ক, কেপি ঘোষ স্ট্রিট, বাগদাসা লেন, আবুল খায়রাত রোড, ৫৯ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব কদমতলী ও মেরাজনগর এ ব্লকে সড়ক এবং নালার উন্নয়নকাজে।
একই সময়ে সংশোধনী দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে কলাবাগান এলাকায় উন্নয়ন, অঞ্চল-৪-এর সড়ক ও নালা সংস্কার, উন্নয়নের ১১টি কাজ, অঞ্চল-২-এর সড়ক ও নালা উন্নয়ন, সংস্কার ও গাছ কাটার ১৪টি কাজ, অঞ্চল-৫-এর সড়ক ও নালা উন্নয়ন, সংস্কার ও গাছ কাটার ২৩টি কাজ, অঞ্চল-১-এর ১১টি উন্নয়নকাজ, অঞ্চল-৫-এর সড়ক নালা সংস্কার, উন্নয়নের পাঁচটি কাজ, অঞ্চল-৪-এর সড়ক ও নালা সংস্কার, উন্নয়নের ২০টি কাজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা কমিউনিটি সেন্টারে সরঞ্জাম সরবরাহ, ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডে সড়ক ফুটপাত ও নালা উন্নয়নকাজ, অঞ্চল-১-এর সড়ক, নালা ও ফুটপাত সংস্কার এবং উন্নয়নের সাতটি কাজ, অঞ্চল-৫-এর সড়ক, নালা ও ফুটপাত সংস্কার ও উন্নয়নের তিনটি কাজ, অঞ্চল-৫-এর সড়ক ও নালা সংস্কার, উন্নয়নের তিনটি কাজ, অঞ্চল-৭-এর সড়ক ও নালা উন্নয়নকাজ, অঞ্চল-৫-এর বিভিন্ন এলাকার সড়ক সংস্কার ও ট্রাফিক অবকাঠামোর কাজ, যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজারে সরবরাহ কাজ, অঞ্চল-৩-এর সড়ক ও নালা সংস্কার, উন্নয়নের দুটি কাজ। অঞ্চল-৫-এর সড়ক ও নালা সংস্কার ও উন্নয়নের তিনটি কাজ, নগর ভবনে জেনারেটর ও বৈদ্যুতিক সরবরাহ, অঞ্চল-২-এর সড়ক ও নালা সংস্কার উন্নয়নের ছয়টি কাজ, অঞ্চল-৪-এর সড়ক ও নালা সংস্কার, অঞ্চল-১-এর সড়ক নালা সংস্কার, উন্নয়নের সাতটি কাজ, অঞ্চল-১-এর ১১টি উন্নয়নকাজ, অঞ্চল-৫-এর সড়ক, নালা ও ফুটপাত সংস্কার ও উন্নয়নের ১১টি কাজ, বকশীবাজার জামে মসজিদ নির্মাণকাজ, অঞ্চল-২-এর ৯টি উন্নয়ন কাজ, অঞ্চল-৪-এর সড়ক ও নালা সংস্কার, উন্নয়নের ২৩টি কাজ, হাজারীবাগ কাঁচাবাজার নির্মাণ, অঞ্চল-২-এর সড়ক ফুটপাত ও নালা উন্নয়নের তিনটি কাজ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের পাঁচটি কাজ, সূত্রাপুর আধুনিক কাঁচাবাজার, চানখাঁরপুল মার্কেট নির্মাণ, নীলক্ষেত তুলা মার্কেট, ফুলবাড়ীয়া সুপার মার্কেটের উন্নয়নকাজ, নিউমার্কেটে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ, অঞ্চল-৫-এর বিভিন্ন উন্নয়নকাজ, অঞ্চল-৩-এর দুটি সড়ক উন্নয়নকাজ, অঞ্চল-৩-এর একটি উন্নয়নকাজ, অঞ্চল-৩-এর সড়ক, নালা ও ফুটপাত সংস্কার ও উন্নয়নের পাঁচটি কাজ, অঞ্চল-৭-এর একটি উন্নয়নকাজ, অঞ্চল-৫-এর তিনটি উন্নয়নকাজ, অঞ্চল-১-এর সাতটি উন্নয়নকাজ এবং অঞ্চল-৪-এর ছয়টি উন্নয়নকাজ, অঞ্চল-৩-এর তিনটি উন্নয়নকাজ, সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে টার্মিনাল ফি, টয়লেট, গোসলখানা ব্যবহার, গাড়ি ধৌতকরণ ফি ও কুলির মজুরি আদায় কাজ।
গত তিন বছরে ডিএসসিসির কাজ করেছেন—এমন কয়েকজন ঠিকাদার কালবেলাকে জানান, বিটুমিন সাপ্লাই, সড়ক ও ফুটপাত রক্ষণাবেক্ষণের প্রায় ১ কোটি টাকার কাজ করেন তারা। নির্দিষ্ট সময় অর্থাৎ ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে হয়। ভ্যাট ট্যাক্স বাদ দিয়ে ১ কোটি টাকার কাজে বিল দেওয়া হয় ৭৫ থেকে ৮০ লাখ টাকা। এ টাকা সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেওয়ার নিয়ম থাকলেও করপোরেশনের প্রকৌশল দপ্তরের বেড়াজালে তা আটকে থাকে মাসের পর মাস। উত্তোলনে সময় লাগে ৩-৬ মাস। এ সময়ে বিল ওঠাতে প্রকৌশল দপ্তরেও কিছু খরচের বিষয় আছে। অন্যান্য দপ্তরও দেখতে হয়। এ ছাড়া তুচ্ছ কারণে প্রধান প্রকৌশলী অনেক বিল আটকে রাখেন। এভাবে কাজ করলে বিনিয়োগ ফেরত পাওয়াও সম্ভব নয়।
প্রধান প্রকৌশলীর খামখেয়ালির কারণেই ডিএসসিসির উন্নয়নকাজে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে ঠিকাদাররা বলেন, ১ কোটি টাকার কাজ নিতে করপোরেশনে সিকিউরিটি মানি হিসেবে রাখতে হয় ১০ লাখ টাকা। এক বছর পর এই টাকা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে ফেরত প্রদানের আইন থাকলেও নানা অজুহাতে দিন পর দিন তা আটকে রাখেন প্রধান প্রকৌশলী। লগ্নি করা অর্থ উত্তোলনে প্রকৌশল বিভাগে উপঢৌকন হিসেবে আবার টাকা দিতে হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
নগরীর একটি বিনোদন কেন্দ্রের উন্নয়নকাজ করে বিল পাচ্ছেন না ক্ষমতাসীন দলের একজন নেতা। তিনি অভিযোগ করেছেন, ২০ কোটি টাকার বিল আটকে রেখেছেন প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান।
ওই ঠিকাদার বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলীর মর্জিমতো সবকিছু চলছে। উনি যদি মনে করেন এটা ঠিক, তাহলে ঠিক। উনি যদি মনে করেন বেঠিক, বেঠিক না হলেও বেঠিক বানিয়ে ছাড়ে। সিটি করপোরেশনে কাজের কোনো মূল্যায়ন নেই।’
পিপিআরের ১৬. ৫(ক), ১৬.৫ (খ), ৪, ১৯, ২১, ৭, ৩, ৬১(৪), ৮ এবং ২৯ ধারার বর্ণনামতে একটি উন্নয়নকাজের পরিকল্পনা থেকে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন পাঠানো পর্যন্ত এক মাসের অধিক সময় ব্যয় হয়। এরপর ঠিকাদারদের টেন্ডারে অংশগ্রহণের জন্য ১৪ দিন থেকে ২৮ দিন সময় দেওয়ার বিধান রয়েছে। সবমিলিয়ে একটা কাজের প্রাথমিক অবস্থায়ই প্রায় দুই মাস সময় লাগে। কিন্তু সিটি করপোরেশনের বেশিরভাগ কাজেই প্রথম টেন্ডার আহ্বানে ঠিকাদার পাওয়া যায় না। ফলে দুই মাস নষ্ট হয়। এরপর পুনঃদরপত্র এবং দরপত্রের মেয়াদ বৃদ্ধির আহ্বানেও ব্যয় হয় অনেক সময়। করপোরেশনের নথি বলছে, অনেক কাজের ক্ষেত্রে তিনবারও পুনঃদরপত্রের আহ্বান জানিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। ফলে শুধু দরপত্র আহ্বানেই অনেক সময় ব্যয় হয়ে যাচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান কালবেলাকে বলেন, ‘এতদিন দেখা যেত, সিটি করপোরেশনের কাজ হলে তা পাওয়ার জন্য অনেক আগ্রহী থাকত। অনেক সময় দলীয় লোক, নিজের লোক, আত্মীয়স্বজন সবমিলিয়ে টেন্ডারটি মুরগির মতো হয়ে যেত। হঠাৎ করে উল্টোপথে যাত্রা। বাংলাদেশের বিদ্যমান বাস্তবতায় এটা বেশ অস্বাভাবিক, এ রকম সাধারণত হয় না। বরং লোকের অভাব থাকে না, টেন্ডার ড্রপ করতে হয়। যে টেন্ডার নেবে, সে একাই নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে ঠিকাদারদের আগের লেনদেনগুলোর প্রক্রিয়ায় কোনো সমস্যা, আস্থাহীনতা, সমন্বয়হীনতা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। লেনদেনগুলোর প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হতে হবে। অনেক সময় কাজের বিল পেতে দেরি হয়।’
তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্র করে কিংবা অর্থনৈতিক সংকটের কারণে বিল পাওয়া নিয়ে ঠিকাদারদের শঙ্কা থাকতে পারে। বিপুল অর্থ ব্যয়ে বারবার পত্রিকায় বিজ্ঞাপন না দিয়ে কী কারণে ঠিকাদাররা মুখ ফিরিয়ে নিল, সিটি করপোরেশনের তা তথ্যানুসন্ধান করা উচিত। ঠিকাদাররা কাজ খুঁজে পান না, কাজ করতে আগ্রহী হাজার হাজার ঠিকাদার বসে আছেন। সেখানে বারবার টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে কেন? এগুলো সিটি করপোরেশনের প্রয়োজনীয় কাজ। আমাদের জনগণের সেবামূলক কাজ। কাজগুলো যদি বন্ধ থাকে, সেবা প্রদান বিলম্বিত হবে।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সম্প্রতি ডিএসসিসির প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমানের কার্যালয়ে গিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করলেও তিনি এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। তার ব্যক্তিগত সহকারী কালবেলাকে জানান, ‘মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের অনুমতি ছাড়া গণমাধ্যমে কথা বলতে পারবেন না প্রধান প্রকৌশলী।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান কালবেলাকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশন আগের তুলনায় সক্ষমতা অর্জন করেছে। মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের নেতৃত্বে গত তিন বছরে রাজস্ব আয় দ্বিগুণ হয়েছে। কাউন্সিলর ও সংসদ সদস্যদের বরাদ্দ এ বছর থেকে দ্বিগুণ করা হয়েছে। জনগণের ট্যাক্সের টাকা তাদের কল্যাণে বেশি ব্যয় করার কারণেই উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বেড়েছে। অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। প্রতিটি প্রকল্প এলাকা পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদনের আলোকে ঠিকাদারের বিল নিষ্পত্তি করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘যথারীতি দরপত্র আহ্বান করা হয়ে থাকে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, পুনঃদরপত্র বা একাধিক দরপত্র আহ্বান বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে। এটি উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড যথাযথভাবে বাস্তবায়নের প্রমাণ। যথাসম্ভব কম অর্থ ব্যয়ে সর্বোচ্চ মানের কাজ নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়। এতে বিজ্ঞাপন বাবদ কিছু বাড়তি অর্থ ব্যয় হচ্ছে ঠিক; কিন্তু প্রকল্পকে মানসম্পন্ন ও স্থায়িত্বশীল করা সম্ভব হলে তা অনেক বেশি অর্থবহ হবে।’
০৩ জানুয়ারি, ২০২৪