মিল্টনের অনেক ভয়ংকর ঘটনা রয়েছে : ডিবিপ্রধান
প্রতারণা ও নানা অনিয়মে গ্রেপ্তার ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারের অনেক ভয়ংকর ঘটনা রয়েছে। তদন্ত শেষে যা বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। সোমবার (৬ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ডিবিপ্রধান বলেন, মিল্টন কিছু অসহায়, বৃদ্ধ, অনাথ, মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে ধরে আনতে। তাদের দেখিয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছেন। যে অর্থ তার ব্যাংক হিসাবে জমা হচ্ছিল। কিন্তু তিনি কোনো টাকা খরচ করছিলেন না।  তিনি বলেন, মিল্টন সমাদ্দারকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি। এ সময় ভয়াবহ ও লোমহর্ষক তথ্য বেরিয়ে এসেছে তার বিরুদ্ধে। মিল্টন একজন সাইকোপ্যাথ সে কীভাবে একজন মানবতার ফেরিওয়ালা হলেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে মিল্টনের আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা অসহায় মানুষদের খাবার ও ওষুধের ব্যবস্থা করতে শামসুল হক ফাউন্ডেশন নামের একটি সংস্থা এগিয়ে এসেছে বলে জানান হারুন অর রশীদ। হারুন অর রশীদ বলেন, এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে সবগুলো অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। তিনি আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় মিল্টন স্বীকার করেছেন তার অপারেশন থিয়েটারের কথা। যেখানে সে এই কাটাছেঁড়া করতেন। সেই সঙ্গে টর্চার সেলের কথাও জানা গেছে। যেখানে সে এসব অসহায় মানুষদের পেটাতেন। এদিকে তিন দিনের রিমান্ড শেষে মানবপাচার আইনের আরেক মামলায় মিল্টন সমাদ্দারের আরও চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার (৫ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তারের আদালত শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে রাজধানীর মিরপুর থেকে গত বুধবার রাতে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর জোনাল টিম। তার বিরুদ্ধে এরই মধ্যে মিরপুর মডেল থানায় ৩টি মামলা করা হয়। আরও কয়েকটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। গত বৃহস্পতিবার মিল্টনকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমে জাল মৃত্যুসনদ দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এদিকে মিল্টন সমাদ্দারের গ্রেপ্তার হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে মিরপুরের পাইকপাড়া এবং বরিশালের উজিরপুরের সাধারণ মানুষজন। এ ছাড়া বুধবার রাতেই রাজধানীতে আনন্দ মিছিল করে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি সংগঠন। গ্রেপ্তারের পর থেকেই ভুক্তভোগীদের অনেকে মিল্টনের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। গত ২৫ এপ্রিল ‘মানবিক মুখোশের আড়ালে ভয়ংকর মিল্টন সমাদ্দার’ এবং ‘জীবনের ধাপে ধাপে প্রতারণা’ শিরোনামে দুটি সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক কালবেলা। এরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। মুখ খুলতে শুরু করেন ভুক্তভোগীরা। এরপর মাঠে নামেন ডজন ডজন সাংবাদিক। ওঠে আসে তার একের পর এক ভয়ংকর প্রতারণার আর অপকর্মের তথ্য। প্রসঙ্গত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক কোটি ষাট লাখের বেশি অনুসারী রয়েছে মিল্টন সমাদ্দারের। অভিযোগ রয়েছে এ বিশাল অনুসারীদের কাজে লাগিয়ে তার মূল টার্গেট ছিল বিভিন্ন মানবিক কাজ প্রচার করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করা।
০৬ মে, ২০২৪

ভয়াবহ প্রতারণার জাল বিস্তার করেছেন মিল্টন : ডিবিপ্রধান
মানবিকতার আড়ালে মিল্টন সমাদ্দার ভয়াবহ প্রতারণার জাল বিস্তার করেছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। বুধবার (১ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ডিবির প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।  হারুন অর রশীদ বলেন, মিল্টনকে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে আমাদের হেফাজতে আছেন।  ডিবিপ্রধান বলেন, মানবিকতার আড়ালে ভয়াবহ প্রতারণার জাল বিস্তার করেছেন মিল্টন। প্রকৃতপক্ষে তিনি যে কয়জনকে লালন-পালন করছেন, প্রচার করেছেন তার চেয়ে কয়েক গুণ। লাশ দাফন করার যে হিসাব দিচ্ছেন, তাতেও আছে বিরাট গরমিল। সবচেয়ে ভয়ংকর, মিল্টনের বিরুদ্ধে রয়েছে অসহায় মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার নামে তাদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রির অভিযোগ।  তিনি বলেন, মিল্টন সমাদ্দার তার বাবাকে পেটালে এলাকাবাসী তাকে এলাকা ছাড়া করে। সেখান থেকেই মূলত তার উত্থান হয়। পরে শাহবাগে এসে একটা ফার্মেসিতে চাকরি করে। সেখান থেকে ওষুধ চুরি করার কারণে তাকে বের করে দেওয়া হয়। পরে মিতু হালদার নামে এক নার্সকে সে বিয়ে করে। বিয়ে করার পর তার স্বপ্ন এলো সে একটা ওল্ড অ্যান্ড কেয়ার স্থাপন করবে। তারপর সে তার স্ত্রীকে নিয়ে মিরপুরে ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান করে। তিনি বলেন, এরপর সে রাস্তা থেকে শিশু এবং বৃদ্ধদের নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা দেয়। আপনারা দেখেছেন সে ওই সব ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করত। বিভিন্ন গণমাধ্যমেও তাকে নিয়ে নিউজ করা হয়। সে বলেছে তার অপারেশন থিয়েটার ছিল কিন্তু তার কোনো অনুমোদন ছিল না। মানুষের অসহায়ত্ব তুলে ধরে তাদের জন্য বিত্তবানদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতেন তিনি। ডিবিপ্রধান আরও বলেন, গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদনে মানবসেবার অন্তরালে যে নির্মম ও বর্বরোচিত চিত্র ফুটে উঠেছে তা অত্যন্ত ভয়াবহ। মানবসেবা পরম ধর্ম কিন্তু মানব সেবার নামে মুখোশের আড়ালে রাস্তা থেকে অসুস্থ, অসহায় ও নিরীহ মানুষকে তুলে এনে চিকিৎসার নামে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রির যে অভিযোগ মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে উঠেছে তা অত্যন্ত ভীতিকর, ন্যাক্কারজনক ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। গত ২৫ এপ্রিল ‘মানবিক মুখোশের আড়ালে ভয়ংকর মিল্টন সমাদ্দার’ এবং ‘জীবনের ধাপে ধাপে প্রতারণা’ শিরোনামে দুটি সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক কালবেলা। এরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। মুখ খুলতে শুরু করেন ভুক্তভোগীরা। এরপর মাঠে নামেন ডজন ডজন সাংবাদিক। উঠে আসে তার একের পর এক ভয়ংকর প্রতারণার আর অপকর্মের তথ্য। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিল্টন সমাদ্দারের সেবামূলক কর্মকাণ্ডের রয়েছে ব্যাপক প্রচারণা। যেখানে দেখা যায়, অসহায়-দুস্থ মানুষের সেবায় তিনি গড়ে তুলেছেন ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামের একটি বৃদ্ধাশ্রম। রাস্তা থেকে অসুস্থ ও ভবঘুরেদের কুড়িয়ে ওই বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় দেন, করেন সেবা-শুশ্রূষা। জনসেবামূলক এসব কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন সরকারি-বেসরকারি নানা পুরস্কারও। তবে ভালো কাজ যতটুকু করেছেন, প্রচার করেছেন তার চেয়েও কয়েক গুণ। মানুষের কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কেটে বিক্রির মতো ভয়ংকর অপকর্মের পাশাপাশি রয়েছে বহু অভিযোগ। কালবেলার অনুসন্ধানে উঠে আসে মিল্টনের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সব মিলিয়ে ৫০টি মরদেহ দাফন করা হয়েছে। এ ছাড়া রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে ১৫টির মতো মরদেহ দাফনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। কিন্তু আজিমপুর কবরস্থানে ওই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত কোনো মরদেহের দাফন হয়নি। তবে মিল্টন সমাদ্দারের দাবি অনুযায়ী ৯০০ মরদেহ দাফন করা হলে বাকি ৮৩৫টি মরদেহ কোথায় দাফন করা হয়েছে, তার কোনো সুদুত্তর পাওয়া যায়নি। এসব মরদেহ আবার বেশিরভাগ সময় রাতে দাফন করা হয়েছে না রহস্যের জন্ম দিয়েছে। তাছাড়া দাফন করা মৃতদেহের পেটে আবার কাঁটাছেঁড়ার দাগ থাকার অভিযোগও রয়েছে। আশ্রমে যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের ডেথ সার্টিফিকেট মিল্টন নিজেই তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ আছে। ডাক্তারের সিল-স্বাক্ষর জাল করে এসব করা হয়েছে বলে অনুসন্ধানে উঠে আসে। আবার মৃতদেহের শরীরে কাঁটাছেঁড়ার দাগ থাকার বিষয়ে মসজিদ কর্তৃপক্ষ প্রশ্ন তুললে বিনামূল্যে সেখানে গোসল (মৃতদের) করানো বাদ দেন মিল্টন। পরে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা করে খরচ করে আশ্রমের মধ্যে মৃতদেহ গোসল করানো হতো বলে জানা গেছে। মিল্টন সমাদ্দারের আশ্রমে এক বৃদ্ধকে রেখে আসেন মিরপুরের দারুস সালাম থানার বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহসভাপতি রনি মল্লিক। তবে সেই বৃদ্ধের ভাগ্যে কী ঘটেছিল সেই উত্তর পাননি রনি মল্লিক। রনির অভিযোগ, বৃদ্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে উল্টো আমাকে নির্যাতন করা হয়। তার ধারণা বৃদ্ধকে হয়তো বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। মিল্টন সমাদ্দার হোমকেয়ার নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে আয় করে ৬৬ লাখ টাকা বৃদ্ধাশ্রমে দান করেছেন বলে সাক্ষাতকার দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে তার হোমকেয়ারের কোনো সার্ভিস নেই। শুধু লাইসেন্স আছে। এ ছাড়া তিনি সব সময় দুটি আশ্রমের কথা বলে এসেছেন। তবে একটি আশ্রমের তথ্য সব সময় গোপন রেখে এসেছেন অভিযোগ আছে। এ ছাড়া আশ্রমে চর্টার সেল বানিয়ে মানুষকে নির্যাতন, বরিশালে চার্চ দখল করতে মন্ত্রণালয়ের নামে ভুয়া চিঠি তৈরি, চাকরি দেয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেওয়া, শিশু পাচার বা বিক্রি, সাঈদী, মামুনুল হকের মতো লোকদের মুক্তির মিথ্যা প্রচারণা ইত্যাদি নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। প্রসঙ্গত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক কোটি ষাট লাখের বেশি অনুসারী রয়েছে মিল্টন সমাদ্দারের। অভিযোগ রয়েছে এই বিশাল অনুসারীদের কাজে লাগিয়ে তার মূল টার্গেট ছিল বিভিন্ন মানবিক কাজ প্রচার করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করা।
০১ মে, ২০২৪

ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে বিজয়ী ডিবিপ্রধান হারুন ও এডিসি নাজমুল
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের উদ্যোগে ‘ডিএমপি ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে’ দ্বৈতভাবে বিজয়ী হয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর–রশীদ এবং ডিবি-সাইবারের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) নাজমুল হাসান। সোমবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় মিন্টো রোডের ডিবি ব্যাডমিন্টন ইনডোরে ‘ডিএমপি ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট–২০২৪’ এর ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। পরে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।  এ সময় এমন আয়োজনের জন্য আয়োজক কমিটিকে ধন্যবাদ জানান ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ডিবির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার সঞ্জিত কুমার রায়। উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) এ কে এম হাফিজ আক্তার। এর আগে গত বুধবার রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিবি অফিসে এ ইনডোর ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করা হয়। এ আন্তঃবিভাগ ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে ঢাকা মহানগর পুলিশের নারী ও পুরুষ সদস্যের মোট ৪৪টি দল অংশগ্রহণ করে। যার মধ্যে পরিদর্শক থেকে তদূর্ধ্ব (পুরুষ) ১৫টি, কনস্টেবল থেকে উপপরিদর্শক (পুরুষ) ১৯টি, পরিদর্শক থেকে তদূর্ধ্ব (নারী) ৬টি এবং কনস্টেবল থেকে উপপরিদর্শক (নারী) ৪টি দল অংশ নেয়।
১১ মার্চ, ২০২৪

করোনায় আক্রান্ত ডিবি প্রধান হারুন
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।  সোমবার(২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডিবির কর্মকর্তারা।  সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পেইজে গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, হঠাৎ করে করোনা আক্রান্ত হলাম। সুস্থতার জন্য দোয়া চাই। ডিবি সূত্র জানায়, তিনি আজকেও ব্যাডমিন্টন খেলেছেন। আগামীকাল পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে তিনি প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য ভিআইপিদের প্যান্ডেলে ওনার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব থাকায় করোনা টেস্ট করা বাধ্যতামূলক। সে কারণে করোনা পরীক্ষা করিয়েছেন। এরপরই ফলাফল পজিটিভ এসেছে।  ডিবি জানায়, করোনা পজিটিভ আসার পরে বর্তমানে বাসায় বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

ডা. সাবরিনা এবং ডিবিপ্রধান
করোনার নমুনা সংগ্রহ ও ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগে ২০২০ সালের ১২ জুলাই ডা. সাবরিনাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর আগে তার স্বামীসহ আরও কয়েকজন গ্রেপ্তার হন। আদালতের রায়ে সাজা হয় তাদের। জেল থেকে বের হওয়ার পর ৫ ফেব্রুয়ারি একটি সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের কারাগারগুলোতে সমকামিতার বিষয়ে মন্তব্য করেছেন ডা. সাবরিনা। বলেছেন পরকীয়া নিয়েও। বইমেলায় এ নিয়ে তিনি খোলামেলা কথা বলেছেন। একই সময় তার নিজ অনুভূতি এবং কারাগার প্রসঙ্গে আরও অনেক কথা বলেছেন। তার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পরদিন ৬ ফেব্রুয়ারি কথা বললেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে তিনি বলেছেন, ‘ডা. সাবরিনা যদি কারা কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করেন, তবে এ বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত।’ হয়তো ভাবখানা যেন এই—ডা. সাবরিনা মনগড়া কথা বলেছেন। কারাগারে আসলে কী হয়, কী চলে তা নিয়ে অনেক রটনা আছে। এর অনেক নিশ্চয়ই ঘটনাও। এসব বিষয় উঠে এসেছে অনেক গল্প-উপন্যাস-নিবন্ধে। কিঞ্চিৎ আমি নিজেও দেখে এবং অনুমান করার সুযোগ পেয়েছি ১৯৯৬ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ১৮ দিন থাকাকালে। সেই কথা বললে হয়তো ডিবিপ্রধান আমাকেই ধরে নিয়ে যেতে পারেন। প্রসঙ্গত, পত্রিকা অফিসে বসে ‘সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত’ করার অভিযোগ সাজিয়ে ৫৪ ধারা বলে আমাকে যিনি নয়াপল্টনের অফিস থেকে এক বিকেলে ধরে নিয়েছিলেন, তিনি ছিলেন সেই সময় ঢাকার ডিবিপ্রধান, সৈদয় বজলুল করিম। তিনি তখন খুবই ক্ষমতাবান এবং বেপরোয়া পুলিশ। অনেক কাণ্ডের সঙ্গে তিনি ডিএমপি কমিশনারকে চ্যালেঞ্জ করার কাণ্ডও করেছেন সেসময়। যাক সেটি ভিন্ন প্রসঙ্গ। কারাগারের অভ্যন্তরে চলমান ঘটনা নিয়ে, গল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধ অথবা ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ থেকে না গিয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ উল্লেখ করাই বেহেতের। ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, ‘দেশের একাধিক জেলে কার্যত ঠাঁই নেই অবস্থা। সমকামিতা ও পায়ুকামও বন্দিদের মধ্যে চলে জেলের অন্দরে। আর সেখানকার আবাসিকরা যখন বেরিয়ে আসেন জেল থেকে, তখন তারা কার্যত পশুর মতো হয়ে যান।’ বিচারপতি কেএম যোশেফ ও ঋষিকেশ রায়ের বেঞ্চ জানিয়েছেন, ‘জেলে কী হয়—সেটা খুব ভয়ংকর। আমাদের জেল পরিদর্শনের সুযোগ হয়েছে। সেখানে এতটাই ভিড় যে, সমকামিতা থেকে পায়ুকাম সবই হয়। যখন বেরিয়ে আসেন তখন পশু ছাড়া আর কিছু নয়। এটা থেকে একটি প্রতিহিংসার মনোভাব তৈরি হয়।’ আমাদের দেশের কারাগারে সমকামিতা হয় কি হয় না, সেটি ভিন্ন প্রসঙ্গ। আর কোন কারণে অথবা কোন মতলবে ডা. সাবরিনা কারাগারে সমকামিতার প্রসঙ্গ তুলেছেন, সেটিও বিবেচ্য বিষয় হতে পারে। কিন্তু চট করে এ বিষয়ে ডিবিপ্রধানকে কথা বলতে হবে কেন? আর শুধু কথা বলাই নয়, কী কারণে এবং কখন ডা. সাবরিনা গ্রেপ্তার হয়েছেন, কীভাবে সাজা হয়েছে—এন্তার বয়ান দিয়েছেন ডিবিপ্রধান। এত সময় তিনি কোথায় পান! আসলে অতিকথন প্রবণতায় আক্রান্ত হয়ে অপ্রয়োজনীয় কথা বলার জন্য সময়ের অভাব হয় না। এ হচ্ছে অতিকথন প্রবণতায় আক্রান্ত হওয়ার আলামত। আর অতিকথনের প্রবণতায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশপ্রধান শুধু নন, আমাদের দেশের সবাই যেন আক্রান্ত। তবে ক্ষমতাসীনরা বেশ বেশিই আগানো বলে মনে হচ্ছে। আর পিছিয়ে নেই ক্ষমতাহীনরাও। সবমিলিয়ে চারদিকে যেন কথার বৃষ্টি বর্ষিত হচ্ছে! হয়তো এ ধারা থেকে পিছিয়ে থাকতে চাননি ডিবিপ্রধান। অথবা তিনি আলোচনায় থাকার ক্ষেত্রে ডা. সাবরিনাকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেছেন। এ ব্যাপারে প্রচলিত একটি গল্প প্রাসঙ্গিক হতে পারে। গল্পটি এ রকম, চোর মালপত্র নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি টের পেয়ে গৃহকর্তা চোরের পিছু নিলেন। টের পেয়ে মালপত্র ফেলে ভোঁ-দৌড় দিল চোর। কিন্তু মালপত্রের দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে চোরের পেছনে ছুটতে থাকলেন গৃহকর্তা। কারণ, তাকে চোর ধরতেই হবে। চোর দৌড়ায়, দৌড়ান গৃহকর্তা। কিছুক্ষণের মধ্যে তার মনে হলো, আরে আমি তো দৌড়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া লোক। চোরের পেছনে দৌড়ানো কি আমার সাজে! যেই চিন্তা সেই কাজ! তিনি চোরকে ছাড়িয়ে সামনে ছুটলেন। এই সুযোগে উল্টো দিকে ফিরে দৌড়াতে থাকল চোর রত্নটি। কিছুক্ষণ পর দৌড়ে ক্লান্ত মালিক বাড়ি ফেরার সময় দেখলেন, ফেলে দেওয়া মালপত্র চোর নিয়ে গেছে। তখন তিনি অনুধাবন করেন, প্রতিটি ঘটনায় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লিপ্ত হওয়া কোনো কাজের কাজ নয়। গল্পের সেই গৃহকর্তার মতো আমাদের ডিবিপ্রধানের কবে বোধোদয় হবে, তা বলা মুশকিল। হয়তো একদিন হবে, অথবা কোনোদিনই হবে না। এ বিষয়টি পরিষ্কার নয়। কিন্তু এটি খুবই পরিষ্কার, সব বিষয়ে তার কথা বলতেই হবে এবং তিনি আলোচনায় থাকবেনই। যেমনটাই ঘটে আসছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের আজকের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ প্রথম আলোচনায় আসেন জাতীয় সংসদ চত্বরে তৎকালীন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুককেন্দ্রিক ঘটনায়। বলা হয়, সে ঘটনাই তাকে উত্থানের শক্ত সিঁড়িতে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এরপর তিনি পেশাগত অনেক সাফল্য দেখিয়েছেন। কিন্তু এই সাফল্য অনেকটা ছাপিয়ে তিনি বারবার আলোচনায় আসছেন। এ ক্ষেত্রে সহায়ক বিষয় হচ্ছে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে আহার করানো, যা পাবলিসিটি হয়েছে, জেনেছে সবাই। নেতা থেকে নায়িকা—সব শ্রেণির মানুষ রয়েছেন প্রকাশিত তার আপ্যায়নের তালিকায়। এ নিয়ে নানা কথা বলা হচ্ছে। সবচেয়ে মজার কথা বলেছেন হিরো আলম। সহযোগীসহ রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে ধারণ করা একটি ভিডিও ক্লিপে মধ্যাহ্নভোজের সময় ইউটিউবার আশরাফুল ইসলাম ওরফে হিরো আলমকে বলতে দেখা গেছে, ‘এটা ঠিক না। দুরকম খাবার দিচ্ছেন, ঠিক নাকি? অপু আসলে অনেক খাবার দিছেন, নেতা আসলে অনেক কিছু খেতে দিছেন। আমাদের খালি আলু ভর্তা, ডাল, ভাজি দিছেন, মাছ দিছেন।’ আপ্যায়নে মানের ভিন্নতায় হিরো আলমের উচ্চারণ ‘এটা ঠিক না।’ এরই প্রতিধ্বনি করে অনেকেই বলছেন, প্রতিটি ইস্যুতে ডিবিপ্রধানের কথা বলাটা ঠিক নয়। আবার ‘এটা ঠিক না’—এ কথা নানা ক্ষেত্রেই বলা চলে। কেউ বলেন। কেউ আবার বলেন না। কিন্তু সবারই বলা উচিত, বৈদেশিক কোনো ঘটনায় দেশ যখন সংকটের মুখোমুখি হয়, তখন মনগড়া কথা বলা একেবারেই ঠিক নয়। যেটি সমানে বলে চলেছে সাবেক শাসক দল বিএনপি। যেমন বিএনপি বলছে, সীমান্তে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সংঘর্ষে বাংলাদেশিদের হতাহতের ঘটনা প্রসঙ্গে। এ বিষয়ে সরকারের ‘নিষ্ক্রিয়তার’ সমালোচনা করে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটি বলেছে, ‘সরকার সীমান্ত নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। ধৈর্য ও সংযম দেখানোর কৌশল সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির বহিঃপ্রকাশ।’ ৬ ফেব্রুয়ারি বিএনপির স্থায়ী কমিটির পাঠানো বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে। এটি ‘নতজানু পররাষ্ট্রনীতির’ বহিঃপ্রকাশ বলে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। সরকার জাতীয় সার্বভৌমত্বকে অবজ্ঞা করছে অভিযোগ করে বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকার অনির্বাচিত বলেই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সাহস পাচ্ছে না। বরং তাদের অপরিণাম দর্শিতার কারণেই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী দীর্ঘকাল দেশে অবস্থান করে মানবিক সংকট তৈরি করেছে। সাবেক শাসক দল বিএনপিকে কে প্রশ্ন করবে, একটি দেশের অভ্যন্তরীণ সহিংস বিরোধের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশকে কি সেই সংঘাতে জড়িত করতে হবে? আর সেটা না করলেই তা হবে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি? বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন, মিয়ানমারে যা চলছে, তা শুধু দেশটির অভ্যন্তরীণ বিরোধ বা বিষয় নয়। এর নেপথ্যে পরাশক্তির স্বার্থের খেলা চলমান, যা চলছে উইক্রেন ও গাজায়। চলছে ইরাক, লিবিয়ায়। এসব বাস্তবতা বিবেচনায় না নিয়ে মিয়ানমারের খেলার মাঝে ‘ইয়া আলী’ বলে বাংলাদেশের ঝাঁপ দেওয়া কি সাহসিকতা? নাকি আগুনে পতঙ্গের ঝাঁপ দেওয়ার মতো কর্ম—সেটি কিন্তু বিএনপির বিবেচনায় নেওয়া উচিত। আর শুধু এই ইস্যুতে নয়, সব বিষয়ই কথা বলছে বিএনপি। তা ‘আব্বাসের সঙ্গে গাবগাছ’ ছন্দ মিলানোর মতো হলেও! এ নিয়ে আমজনতার মধ্যে বিরক্তির নানা প্রশ্ন ওঠে। যেমন প্রশ্ন উঠেছে, ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান কীসের ভিত্তিতে কারাগারে সমকামিতা নিয়ে ডা. সাবরিনার বক্তব্য প্রসঙ্গে কথা বলছেন। এ বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার ব্যাপারে কি তার কোনো বাধ্যবাধকতা আছে? আরও প্রশ্ন আছে, কোনো বিতর্কিত আলোচনার মাঝখানে কেনই বা বারবার প্রবেশ করতে হবে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধানকে! অনেক হয়েছে, তিনি থামলে ভালো লাগে। যেমন ভালো লাগে, ‘হেন করেঙ্গা তেন করেঙ্গা’—গোছের কথা বলা থেকে মন্ত্রীরা বিরত থাকলে। জনতা চায়, আগে করেন! বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন, বিদেশি ঘোরে থাকা বিএনপিকে বোকা বানিয়ে ৭ জানুয়ারি পুলসিরাত পার হওয়াই কিন্তু শেষ কথা নয়! অনেক কিছু আছে সামনে। তা হতে পারে নিকটেও, বিশেষ করে ডলার সংকট! লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

সমকামিতা নিয়ে ডা. সাবরিনার বিষয়ে যা বললেন ডিবিপ্রধান হারুন
কারাগারে সমকামিতা নিয়ে মন্তব্য করে ফের আলোচনায় এসেছেন বিতর্কিত চিকিৎসক ডা. সাবরিনা শারমিন হোসেন। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) একটি সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের কারাগারগুলোতে সমকামিতার বিষয়ে মন্তব্য করেন। ওই সংবাদমাধ্যমে ডা. সাবরিনা অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের কারাগারে সমকামিতা চলছে। তরুণ বয়সে যারা জেলে এসে দীর্ঘদিন বন্দী আছেন, তাদের মাঝেই এই প্রবণতা বেশি দেখেছেন তিনি। তার এই বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করেছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ বা ডিবির প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। ডিবি প্রধান বলেন, ডা. সাবরিনা যদি কারা কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করেন তবে এ বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। হারুন অর রশীদ বলেন, আমি যখন তেজগাঁও বিভাগের ডিসি ছিলাম, তখন করোনার সনদ জালিয়াতির অভিযোগে সাবরিনার বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলায় আমরা তাকে গ্রেপ্তার করি এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। তিনি বলেন, এর ভিত্তিতে আদালত ডা. সাবরিনাকে সাজার আদেশ দেন। সম্প্রতি সাজাভোগ শেষে তিনি কারাগার থেকে বের হয়েছেন। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কারাগারের বিষয়ে নানা ধরনের অভিযোগ তুলছেন। তবে তিনি কী বলছেন সেটা আমাদের বিবেচ্য বিষয় নয়। কারণ, মহামান্য আদালত তার অপরাধ বিবেচনায় তাকে সাজা দিয়েছেন। হারুন অর রশীদ আরও বলেন, সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ের অবতারণা করছেন সাবরিনা। তিনি আদৌ কারাগারে এ ধরনের সমস্যায় পড়েছেন কি না বা সমস্যায় পড়লে তিনি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন কি না, নাকি ভাইরাল হওয়ার জন্য বা ভিউ বাড়াতে এসব বলছেন তা জানি না। তবে এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দায়ের করলে আমরা মনে করি বিষয়টির তদন্ত হওয়া উচিত। করোনার ভুয়া রিপোর্ট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথ কেয়ারের কর্ণধার আরিফুল হক চৌধুরীর স্ত্রী ডা. সাবরিনা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের একজন চিকিৎসক। মামলার পর ওই প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। উল্লেখ্য, করোনার নমুনা সংগ্রহ ও ভুয়া প্রতিবেদন দেয়ার অভিযোগে ২০২০ সালের ২৩ জুন জেকেজি হেলথ কেয়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আরিফুল হক চৌধুরী, কর্মচারী হুমায়ুন কবির, তার স্ত্রী তানজিনা পাটোয়ারীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। একই বছরের ১২ জুলাই সাবরিনাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

অপহরণ চক্রের সঙ্গে কাজ করছেন গাড়িচালকরা : ডিবিপ্রধান
হরহামেশাই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অপহরণের ঘটনা ঘটে থাকে। এসব ঘটনার মধ্যে বেশকিছু ক্ষেত্রে অপহরণ চক্রের সঙ্গে গাড়িচালকদের যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের লালবাগ বিভাগ। শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিমেল অপহরণের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) লালবাগ বিভাগ তদন্ত করছিল। এ মামলার তদন্তে ব্যক্তিগত গাড়িচালককে গ্রেপ্তার করা হয়। এ চালকই অপহরণের মূলহোতা।  গ্রেপ্তার ছামিদুল প্রথমে তুরাগ এলাকার হানিফ বাবুর্চি নামের এক সাইটের ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে আলোচনা করেন। এরপর পরবর্তী আলোচনা হয় ময়মনসিংহের ধোবাউরা থানার ইউপি চেয়ারম্যান মামুনের সঙ্গে। হিমেলকে অপহরণ করে তার বাসায় রাখার পরিকল্পনা করা হয়। পরবর্তীতে হিমেলকে অপহরণ করে তার বাসায় নেওয়া হয় কিন্তু টাকা পেতে দেরি হওয়ায় মামুন গাড়িতে করে হিমেলকে সীমান্ত এলাকায় বর্ডারের একটি পাহাড়ে নিয়ে যায়। তখন সামিদুল ও মালেক, মোবারক, মানিককে নিয়ে চলে যায়। তখন থেকেই হিমেলের ওপর নির্যাতন শুরু হয়। পরবর্তীতে ডিবি লালবাগ বিভাগ কাজ শুরু করে। হারুন অর রশীদ বলেন, পরবর্তীতে ডিবি লালবাগ শরীয়তপুরের চর অঞ্চল থেকে মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাসুদের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে ময়মনসিংহের ধোবাউরা, নেত্রকোনা, দুর্গাপুর এরপর তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওরে সোর্স নিয়োগ করা হয়। এ সোর্সের মাধ্যমে ডিবি জানতে পারে এ গ্রুপ শুধু অপহরণ করে না, তারা চোরাচালানের সঙ্গেও জড়িত। তারা গরু, চিনিসহ বিভিন্ন পণ্য চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। অপহরণের পর ভুক্তভোগীকে নির্যাতন করা হয়। যার ছবি ও ভিডিও পাঠানো হতো হিমেলের মায়ের কাছে। সর্বশেষ তারা ৩০ লাখ টাকা দাবি করেছিল। কিন্তু ডিবির অভিযানের কারণে তারা পেরে উঠতে পারেনি। এ সময়ে অপহরণকারীদেরও টাকা শেষ হয়ে যায়। কারণ ওপারের মেঘালয় পুলিশ, এপারের আমাদের তৎপরতার কারণে এক মাস পাহাড়ে থাকায় টাকা শেষ হয়ে যায়। এ সময়ে তারা টাকার জোগান দিতে গরু চুরি করে বিক্রি করে। এরপর সেই টাকা দিয়ে পাহাড়ে অবস্থান করত। পরে আমরা খবর পেলাম অপহরণকারীরা টাঙ্গুয়ার হাওরে আবারও অন্য একটি পরিকল্পনা নিয়ে এসেছে। এমন খবর পেয়ে টাঙ্গুয়ার হাওরের একটি নৌকা থেকে হিমেলের গাড়িচালক সামিদুল, ১৭ মামলার আসামি মালেকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ অভিযানে র‌্যাবও সহযোগিতা করে। তাদের গ্রেপ্তারের পর ডিবি তথ্য পায় এ অপহরণের মূল পরিকল্পনা করা হয় তুরাগ থানা এলাকায় বসে। এরপর ধোবাউরায় ইউপি চেয়ারম্যানের বাসায় বসে পরিকল্পনার দ্বিতীয় পর্ব ঠিক করা হয়। এ ঘটনায় মামুন ও হানিফ নিজেদের দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। আমাদের কাছে তারা স্বীকার করেছেন, তারা একাধিক অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছে। ভুক্তভোগীরা নানা কারণে তাদের টাকা দিয়েছে। কিন্তু এ ঘটনায় ডিবি পুলিশ নিয়মিত মোবাইল ট্র্যাকিংসহ বিভিন্নভাবে কাজ করে গেছে। পাশাপাশি মেঘালয় পুলিশের তৎপরতার কারণে তারা যে দুই তিন কোটি টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করেছিল সেটি নিতে তারা ব্যর্থ হয় এবং আমরা ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করি।
০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানালেন ডিবিপ্রধান হারুন
সব রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দুর্বার ছুটে চলা শেখ হাসিনাই ফের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন। এক নতুন বাংলাদেশের রূপকার বঙ্গবন্ধুকন্যার রেকর্ড টানা চতুর্থবারের মতো সরকারপ্রধানের পদ অলংকৃত করা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। এমন আনন্দক্ষণে প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। সোমবার (৮ জানুয়ারি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ নিজের ফেসবুকে ফুল দেওয়া একটি ছবি পোস্ট করেন।   এ সময় হারুন লিখেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা স্যার ৮ম বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় ফুলেল শুভেচ্ছা জানাই।’ টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে ২০১৮ সালেই রেকর্ড গড়েছিল আওয়ামী লীগ। চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হয়ে নতুন নজির সৃষ্টি করেছিলেন শেখ হাসিনা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সেই রেকর্ড আরও সমৃদ্ধ করছে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল ও তার সভাপতি। গতকাল রোববার (৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত নির্বাচনের বেসরকারি ফলে ২৯৮টি আসনের মধ্যে ২২৫টিতেই নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ এককভাবে ২২৩ আসন পেয়েছে। আর ১৪ দলীয় জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি এবং জাসদ জিতেছে ১টি করে।  
০৮ জানুয়ারি, ২০২৪

মানুষ নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছেন : ডিবিপ্রধান
নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হচ্ছে উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ বলেছেন, মানুষ নির্বিঘ্নে ঘর থেকে বের হয়ে ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছেন। সব জায়গায় মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিচ্ছেন।  রোববার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও সরকারি সংগীত কলেজের ভোটকেন্দ্রে ভোট দিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। ডিবিপ্রধান বলেন, হরতালের কারণে মানুষ ঘরে বসে নেই সবাই ঘর থেকে বেরিয়ে এসে ভোট দিচ্ছে। নির্বাচনে সামান্য ঘটনা ঘটতেই পারে। সব জায়গায় মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিচ্ছেন। হারুন অর রশীদ বলেন, দুই-একটি জায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটতেই পারে। তারপরও সব জায়গায় পুলিশ আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ডিবি আছে। যেখানেই ঘটনা ঘটছে তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সামাল দিচ্ছে। আজ সকাল ৮টার পর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। যা বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে। এবারের এই নির্বাচনে দেশের ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।  কড়া নজরদারিতে চলছে ভোটগ্রহণ। ভোট শুরুর আগে আগে গত কয়েক ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতার ঘটনা ঘটায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় আট লাখ সদস্য কেন্দ্র ও কেন্দ্রের বাইরে পাহারায় রয়েছে।  একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে মাঠে কাজ করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় আট লাখ সদস্য, যা গত একাদশ সংসদ নির্বাচনের চেয়ে এক লাখ ৩০ হাজার বেশি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এসব সদস্যের মধ্যে পুলিশের ১ লাখ ৭৪ হাজার ৭৬৭ জন, আনসার ব্যাটালিয়ন ৫ লাখ ১৪ হাজার ২৮৮ জন, সশস্ত্র বাহিনীর ৪০ হাজার সদস্য মোতায়েন রয়েছেন।
০৭ জানুয়ারি, ২০২৪
X