ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে
টানা ৩৭ দিন তাপপ্রবাহের পর বৃষ্টির প্রভাবে কমেছে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। স্বস্তি ফিরেছে জনজীবনে। সারা দেশে আগামী পাঁচ দিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। সেসঙ্গে বজ্রপাত, শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখীর সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুসারে, আজ বৃহস্পতিবার দিনের তাপমাত্রা কমবে। শুক্রবার দিন ও রাতের তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা আছে। বৃষ্টির প্রবণতা কমে এলে ফের তাপপ্রবাহ আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা।
গতকাল বুধবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ৩৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া খুলনায় ৩১ দশমিক ৫, বরিশালে ৩১ দশমিক ৩, রাজশাহীতে ৩১, চট্টগ্রামে ৩০ দশমিক ৫, সিলেট ও রংপুরে ৩০ দশমিক ৫ এবং ময়মনসিংহে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দৈনিক দেশের ৪৪টি স্টেশনের আবহাওয়া পরিস্থিতি তুলে ধরে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সে অনুযায়ী, গতকাল দেশের ৩৮টি স্টেশনে বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ হয়েছে রাজশাহীতে ৫১ মিলিমিটার। এ ছাড়া ভোলায় ৩৮, সাতক্ষীরায় ৩৬, যশোরে ৩৪, বরিশালে ৩৩, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুরে ২৮, বগুড়ায় ২৬, মাদারীপুরে ২২, টেকনাফ ও মোংলায় ২১ এবং ঢাকায় ১২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ বলেন, আরও অন্তত পাঁচ দিন বৃষ্টি থাকতে পারে বলে মনে হচ্ছে। দিনের কোনো একসময় অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় একবার বৃষ্টি হতে পারে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। যদিও দক্ষিণাঞ্চলে এখনো কিছুটা বেশি, ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া
যেহেতু ঠান্ডা হয়েছে, শিলার পরিমাণ কমে আসবে। যেসব জায়গায় মেঘের উচ্চতা বেশ, সে রকম দু-এক স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
বৃষ্টির প্রবণতা কমে এলে আবারও আসতে পারে তাপপ্রবাহ। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, এ মাসে আবারও তাপপ্রবাহ আসার আশঙ্কা আছে। দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষে বা তৃতীয় সপ্তাহের শুরুতে আবারও তাপপ্রবাহ শুরু হতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, গতকাল বুধবার সন্ধ্যা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে রাজশাহী, বংপুর, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।
সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। শুক্রবার সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
কালবৈশাখীর সতর্কতা:
সারা দেশে কালবৈশাখী, শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাত হতে পারে বলে সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এতে বলা হয়, গতকাল বুধবার বিকেল ৪টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ কালবৈশাখী বয়ে যেতে পারে। সঙ্গে বজ্রপাত ও বিচ্ছিন্নভাবে শিলা বৃষ্টিও হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ খোন্দকার হাফিজুর রহমান কালবেলাকে বলেন, সারা দেশেই কমবেশি বৃষ্টির ধারা চলবে আরও চার-পাঁচ দিন। অস্বস্তিকর তীব্র গরম থাকবে না। আপাতত তাপপ্রবাহের শঙ্কা নেই। রাতের আকাশ মেঘলা থাকলে কিছুটা ভ্যাপসা গরম অনুভূত হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, এখনকার বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত অবধারিত থাকবে। এর জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে, বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সচেতন করতে হবে।
১৫ ঘণ্টা আগে