এপ্রিলের শুরু থেকেই তীব্র দাবদাহে পুড়ছে দিনাজপুরের খানসামাসহ গোটা দেশ। আকাশ ফেটে যেন ঝরছে আগুন। তীব্র তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। এ তপ্ত রোদে বাইরে তুলনামূলক কম বের হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সূর্যের প্রখর তাপে তীব্র গরমে নাজেহাল। কিন্তু অতিরিক্ত গরমে ঘরের ভেতরেও মিলছে না মুক্তি। আর এ তাপপ্রবাহের মধ্যেই বিদ্যুৎ এর লুকোচুরি যেন মরার উপর খাড়ার ঘা। বৈদ্যুতিক পাখা না চলায় গরমে আরও কষ্ট পেতে হচ্ছে সাধারণ জনগণের। সারাদিনে তিন ঘণ্টাও মিলেছে না বিদ্যুৎ।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দিনাজপুরে দুপুর ৩টায় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় যা ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এ সময় বাতাসে জলীয় বাষ্পের আর্দ্রতা ১৮ শতাংশ। বাতাসের গড় গতিবেগ ছিল ১২ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। এর আগে সোমবার (২৯ এপ্রিল) তাপমাত্রা ৩৯.৮ রেকর্ড হয়েছিল। দিনাজপুর আবহাওয়া অফিস এ তথ্য নিশ্চিত করে।
এদিকে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে ভ্যানচালক, কুলি ও নিম্ন আয়ের দিনমজুর। গরমের তীব্রতায় সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। প্রখর রোদে ঘাম ঝরানো তাপমাত্রার কারণে শ্রমজীবী মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে। শিশুদের গরমের তীব্রতায় দীর্ঘসময় ধরে পুকুরে নেমে গোসল করতে দেখা গেছে। তীব্র গরমে বয়স্ক, শিশুরা পড়েছে সব থেকে বেশি ভোগান্তিতে। গরমের তীব্রতায় পানিশূন্যতায়ও অসুস্থ হচ্ছেন কেউ কেউ। রাস্তাঘাট-হাটবাজারে লোকসমাগম কমে গেছে। জরুরি কাজ না থাকলে মানুষজন তেমন বাইরে বের হচ্ছেন না। রোদের প্রখরতায় রাস্তার পিচ তপ্ত উষ্ণতা ছড়াচ্ছে।
দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.তোফাজ্জল হোসেন কালবেলাকে বলেন, জেলায় ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে বায়ুর চাপ উল্লেখযোগ্য হারে কমতে শুরু করেছে। সাধারণত বাতাসের চাপ ক্রমাগত কমতে থাকলে বুঝতে হবে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এবং বাতাসের চাপ বাড়তে থাকলে আবহাওয়া পরিষ্কার বা ফেয়ার হবে। দেশের বিভিন্ন স্থানে মেঘের সঞ্চার হতে পারে এবং সেক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপমাত্রা কমতে পারে এবং বিরাজমান তাপ প্রবাহের দাপট বেশ কিছুটা কমতে পারে। তবে তাপমাত্রা কমলেও এক্ষেত্রে বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের সৃষ্টি হবে এবং ভ্যাপসা গরমের অনুভূতি থাকবে।
মন্তব্য করুন