শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের আংশিক উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  শনিবার (৭ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে তিনি এটি উদ্বোধন করেন। এর আগে সকাল ১০টা ১০ মিনিটে তিনি শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল এরিয়ায় এসে পৌঁছান। এ সময় দেশের গানের সঙ্গে মনোজ্ঞ নৃত্য পরিবেশন করে তাকে স্বাগত জানানো হয়। এরপর অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধাসংবলিত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩-এর বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে দেখেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২৯ বছর যারা ক্ষতমায় ছিলেন; তারা দেশের মানুষকে কিছু দিয়ে যেতে পারেনি। আমার এ দেশের মানুষকে সব দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৯৬ সালে আমি যখন সরকারে আসি তখন আমাদের বিমানবন্দরের কোনো বোডিং ছিল না, পার্কিং লোড ছিল না, কিছুই ছিল না। আমরা সরকারে এসেই বিমানবন্দরের উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। চট্টগ্রাম এবং সিলেট এই দুই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও আমরা নির্মাণ করি। সঙ্গে শাহজালাল বিমানবন্দরের উন্নয়নের প্রকল্প গ্রহণ করি। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল এ সময়টাই বিমানবন্দরের উন্নয়নের যাত্রা শুরু হয়। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, যদি পারেন তাহলে ৯৬ সালের পূর্ব পর্যন্ত কী উন্নয়ন ছিল, সেটা একটু দেখবেন।  তিনি বলেন, মানুষের যোগাযোগ ব্যবসা-বাণিজ্য অর্থনীতি উন্নতির জন্য একান্ত অপরিহার্য। আধুনিক যুগের নৌপথ সড়কপথ রেলপথের সঙ্গে সঙ্গে আকাশপথ সেটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বহন করে। বিশেষ করে, এদের সঙ্গে আমাদের যে যোগাযোগ সেই যোগাযোগের মূল বাহন হচ্ছে বিমান। অর্থাৎ আকাশ যাত্রাটা হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সেটাকে গুরুত্ব দেই। ২০১৭ সালের শাহজালালের ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটারের এই টার্মিনালের নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায়। সে সময় ব্যয় ধরা হয় ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ। তখন খরচ বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। খরচের বেশিরভাগ ঋণ হিসেবে দিচ্ছে জাপানের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা জাইকা। নির্মাণ প্রকল্পের কাজ করছে স্যামসাং গ্রুপের কনস্ট্রাকশন ইউনিট স্যামসাং কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ট্রেডিং (সিঅ্যান্ডটি) করপোরেশন।  এ ভবনটির নকশা করেছেন রোহানি বাহারিন। তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সিঙ্গাপুরের সিপিজি করপোরেশন প্রাইভেট লিমিটেডের স্থপতি। সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি, ভারত, ফিলিপাইন, চীন, ভিয়েতনাম, মালদ্বীপের ভেলানাসহ বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দরের নকশাও করেছেন তিনি।  তবে নান্দনিকতায় ঢাকার তৃতীয় টার্মিনাল ছাড়িয়ে গেছে থাইল্যান্ডের সুবর্ণভূমি ও তুরস্কের ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরকেও। বিমানবন্দরে এ টার্মিনাল ভবনে প্রথম পর্যায়ে ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ চালু করা হবে। পরবর্তী পর্যায়ে আরও ১৪টি বোর্ডেং ব্রিজ স্থাপন করা হবে। বহির্গমনে মোট ১১৫টি চেক ইন কাউন্টার থাকবে। এর মধ্যে ১৫টি থাকবে সেলফ সার্ভিস চেক ইন কাউন্টার। আগমনী লাউঞ্জে পাঁচটি স্বয়ংক্রিয় চেক ইন কাউন্টারসহ মোট ৫৯টি পাসপোর্ট চেক ইন কাউন্টার থাকবে। এ টার্মিনালটিতে কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল সেন্টার থাকবে, যা দিয়ে পুরো হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরটি মনিটরিং করা সম্ভব হবে। বর্তমানে বিমানবন্দরটিতে কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল সেন্টার সংক্রান্ত কোনো সুবিধা নেই। এ ছাড়াও ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টারসহ মোট ৬৬টি ডিপার্চার ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকবে। তৃতীয় টার্মিনালের সঙ্গে মাল্টিলেভেল কার পার্কিং ভবন নির্মাণ করা হবে। সেখানে প্রায় ১ হাজার ২৫০টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। তৃতীয় টার্মিনাল ভবনের ভেতরেই ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন আলাদা নির্ধারিত অংশ থাকবে। মুভিং ওয়াকার, এস্কেলেটর, এলিভেটর, ব্যাগেজ হ্যান্ডলিং সিস্টেম, সিকিউরিটি সিস্টেম, ইমিগ্রেশন সিস্টেমসহ সব আধুনিক ও অটোমেটেড সিস্টেম এখানে সংযুক্ত হতে যাচ্ছে। শুধু তৃতীয় টার্মিনাল দিয়ে বছরে ১ কোটি ৪০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। এ ছাড়া এই টার্মিনালের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। যাত্রীদের যাতায়াতের জন্য আশকোনার হজক্যাম্প থেকে একটি টানেলের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। অচিরেই এর কাজ শুরু করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
০৭ অক্টোবর, ২০২৩

‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধও উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি’
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধও আমাদের প্রকল্পের উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি উল্লেখ করে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমান বলেছেন, আজ আমাদের অত্যন্ত খুশির দিন। স্বপ্ন বাস্তবায়নের দিন। তৃতীয় টার্মিনালের এ প্রকল্প শেষ করতে অনেক প্রতিবন্ধকতা, প্রতিকূলতা ও বৈরী পরিবেশ মোকাবিলা করতে হয়েছে।   শনিবার (৭ অক্টোবর) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশের বিনির্মাণের যে রূপকল্প, তারই অবিচ্ছেদ্য অংশ বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন অধ্যায়। প্রকল্পের দায়িত্ব প্রদানের সময় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া সব নির্দেশনা মেনেই এ প্রকল্প আমরা শেষ করতে পেরেছি। তিনি বলেন, পাঁচ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটারের এ টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি প্লেন রাখার অ্যাপ্রোন (প্লেন পার্ক করার জায়গা) করা হয়েছে। দুই লাখ ৩০ হাজার স্কয়ার মিটারের মডার্ন টার্মিনাল বিল্ডিংয়ের ভেতরে থাকবে পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য ও অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তির ছোঁয়া।  ২০১৭ সালের শাহজালালের ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটারের এই টার্মিনালের নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায়। সে সময় ব্যয় ধরা হয় ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ। তখন খরচ বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। খরচের বেশিরভাগ ঋণ হিসেবে দিচ্ছে জাপানের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা জাইকা। নির্মাণ প্রকল্পের কাজ করছে স্যামসাং গ্রুপের কনস্ট্রাকশন ইউনিট স্যামসাং কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ট্রেডিং (সিঅ্যান্ডটি) করপোরেশন।  এ ভবনটির নকশা করেছেন রোহানি বাহারিন। তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সিঙ্গাপুরের সিপিজি করপোরেশন প্রাইভেট লিমিটেডের স্থপতি। সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি, ভারত, ফিলিপাইন, চীন, ভিয়েতনাম, মালদ্বীপের ভেলানাসহ বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দরের নকশাও করেছেন তিনি।  তবে নান্দনিকতায় ঢাকার তৃতীয় টার্মিনাল ছাড়িয়ে গেছে থাইল্যান্ডের সুবর্ণভূমি ও তুরস্কের ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরকেও। বিমানবন্দরে এ টার্মিনাল ভবনে প্রথম পর্যায়ে ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ চালু করা হবে। পরবর্তী পর্যায়ে আরও ১৪টি বোর্ডেং ব্রিজ স্থাপন করা হবে। বহির্গমনে মোট ১১৫টি চেক ইন কাউন্টার থাকবে। এর মধ্যে ১৫টি থাকবে সেলফ সার্ভিস চেক ইন কাউন্টার। আগমনী লাউঞ্জে পাঁচটি স্বয়ংক্রিয় চেক ইন কাউন্টারসহ মোট ৫৯টি পাসপোর্ট চেক ইন কাউন্টার থাকবে। এ টার্মিনালটিতে কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল সেন্টার থাকবে, যা দিয়ে পুরো হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরটি মনিটরিং করা সম্ভব হবে। বর্তমানে বিমানবন্দরটিতে কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল সেন্টার সংক্রান্ত কোনো সুবিধা নেই। এ ছাড়াও ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টারসহ মোট ৬৬টি ডিপার্চার ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকবে। তৃতীয় টার্মিনালের সঙ্গে মাল্টিলেভেল কার পার্কিং ভবন নির্মাণ করা হবে। সেখানে প্রায় ১ হাজার ২৫০টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। তৃতীয় টার্মিনাল ভবনের ভেতরেই ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন আলাদা নির্ধারিত অংশ থাকবে। মুভিং ওয়াকার, এস্কেলেটর, এলিভেটর, ব্যাগেজ হ্যান্ডলিং সিস্টেম, সিকিউরিটি সিস্টেম, ইমিগ্রেশন সিস্টেমসহ সব আধুনিক ও অটোমেটেড সিস্টেম এখানে সংযুক্ত হতে যাচ্ছে। শুধু তৃতীয় টার্মিনাল দিয়ে বছরে ১ কোটি ৪০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। এ ছাড়া এই টার্মিনালের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। যাত্রীদের যাতায়াতের জন্য আশকোনার হজক্যাম্প থেকে একটি টানেলের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। অচিরেই এর কাজ শুরু করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
০৭ অক্টোবর, ২০২৩

দৃষ্টিনন্দন তৃতীয় টার্মিনাল
অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে শিগগির। দুই মাস পর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্বপ্নের তৃতীয় টার্মিনাল। ৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই স্বপ্নের স্থাপনার স্বল্পপরিসরে (সফট ওপেনিং) উদ্বোধন করবেন। এদিন পরীক্ষামূলকভাবে এই টার্মিনাল থেকে একটি ফ্লাইটও উড্ডয়ন করবে। আনুষঙ্গিক কাজ শেষে যাত্রীদের জন্য পুরোপুরি চালু হবে আগামী বছর। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার থার্ড টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দৃশ্যমান হয়েছে দৃষ্টিনন্দন টার্মিনাল ভবনটি। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন অত্যাধুনিক এই টার্মিনাল ঘিরে চলছে অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা এবং বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ। প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে ৮২ শতাংশ। টার্গেট অনুযায়ী সফট ওপেনিংয়ের আগেই শেষ হবে ৯০ শতাংশ কাজ। এজন্য দিন-রাত কাজ করছেন প্রকৌশলী-স্থপতিসহ অন্তত ১২ হাজার কর্মী। বেবিচক কর্মকর্তারা জানান, এই টার্মিনালের কার্যক্রম চালু হলে যাত্রীদের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যাবে। উড়োজাহাজ চলাচল ও যাত্রীর সংখ্যাও বাড়বে। বর্তমানে শাহজালালে প্রতিদিন ৩০টির বেশি বিমান সংস্থার ১২০ থেকে ১৩০টি বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ করে। প্রতিদিন এসব বিমানের ১৯ থেকে ২১ হাজার যাত্রী টার্মিনাল ১ ও ২ ব্যবহার করেন। এ দুটি টার্মিনাল দিয়ে বছরে প্রায় ৮০ লাখ যাত্রীর সেবা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তৃতীয় টার্মিনালের কার্যক্রম পুরো শুরু হলে সব মিলিয়ে বছরে ২ কোটি ৪০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া যাবে। এই টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের (পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ) দায়িত্বও পাচ্ছে বিদেশি প্রতিষ্ঠান। এতে যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধির পাশাপাশি রাজস্ব আদায়ও বাড়বে। গতকাল প্রকল্প এলাকা ঘুরে কাজ নিয়ে নিজের সন্তুষ্টির কথা জানান বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৭ অক্টোবর এ টার্মিনালের সফট ওপেনিং করবেন। তিনি বলেন, এ কাজটা শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের এপ্রিলে। প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছা আর কর্মকর্তাদের সুপারভাইজিংয়ের কারণে এটি অক্টোবরের মধ্যেই শেষ করতে পারব। আশা করা যায়, আগামী বছরের শেষ নাগাদ এ টার্মিনাল ব্যবহার করতে পারবেন যাত্রীরা। বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, সফট ওপেনিং মানে আমাদের স্ট্রাকচার রেডি, আমাদের ইকুইপমেন্টগুলো বসে যাচ্ছে; কিন্তু যে সংস্থাগুলো এখানে কাজ করবে, তাদের সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও সমন্বয়ের দরকার আছে। ইকুইপমেন্টগুলোর সঙ্গে এখানে যারা কাজ করবেন, তাদের ক্যালিব্রেশনের প্রয়োজন আছে। এখানে পুরো সিস্টেমটাই অটোমেটেড। যে কোনো নতুন এয়ারপোর্টের ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ নানা কাজের জন্য পুরোপুরি অপারেশনে যেতে ৬ মাস থেকে এক বছর প্রয়োজন হয়। এটাকে বলা হয় ‘অপারেশন রেডিনেস অ্যান্ড এয়ারপোর্ট ট্রান্সফার’ প্রক্রিয়া। আমরা সেটা নিচ্ছি। সফট ওপেনিংয়ের দিনে পরীক্ষামূলকভাবে একটি ফ্লাইট অপারেট করে দেখা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, অবশ্য এটাকে অপারেশনাল বলা বা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হবে না। এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর বলেন, থার্ড টার্মিনালকেন্দ্রিক দুটি অতিরিক্ত ট্যাক্সিওয়ের ব্যবহার শুরু হয়ে গেছে। সফট ওপেনিংয়ের পর এই টার্মিনালের অ্যাপ্রোন ব্যবহার করা যাবে। পুরোনো টার্মিনালের অ্যাপ্রোনে ২৯টি উড়োজাহাজ রাখা যায়। সফট ওপেনিং হওয়ার পর থার্ড টার্মিনালের অ্যাপ্রোনে আপাতত আরও ৮ থেকে ১০টি উড়োজাহাজ পার্ক করা যাবে। তিনি আরও বলেন, আমরা নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পেরেছি। করোনাকালেও আমাদের কাজ থমকে যায়নি। সুপারভাইজিংয়ের কারণে আমরা প্রকল্পের ৭০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করেছি। আমাদের প্রকল্পের নির্ধারিত ছিল বারোটি বোর্ডিং ব্রিজ। সাশ্রয় করা টাকা দিয়ে আরও কয়েকটি বোর্ডিং ব্রিজ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বেবিচক কর্মকর্তারা জানান, ২০১৭ সালে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়। নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি টাকা। আর বাকি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। এই নির্মাণকাজ করছে জাপানের মিতসুবিশি ও ফুজিতা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং। টার্মিনাল ভবনটির দৃষ্টিনন্দন নকশা করেছেন সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের নকশাকার স্থপতি রোহানি বাহারিন। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বেবিচক সূত্র জানায়, তৃতীয় টার্মিনালে মোট ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজের ব্যবস্থা থাকবে। বহির্গমনের জন্য ১৫টি সেলফ সার্ভিস চেক-ইন কাউন্টারসহ মোট ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার থাকবে। এ ছাড়া ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট নিয়ন্ত্রণ (ই-গেট) কাউন্টারসহ বহির্গমন ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকবে ৬৬টি। আগমনীর ক্ষেত্রে পাঁচটি স্বয়ংক্রিয় চেক-ইন কাউন্টারসহ মোট ৫৯টি কাউন্টার থাকবে। টার্মিনালে ১৬টি ব্যাগেজ বেল্ট স্থাপন করা হচ্ছে। অতিরিক্ত ওজনের ব্যাগেজের জন্য থাকবে চারটি পৃথক বেল্ট। ১ হাজার ৪৪টি গাড়ি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন বহুতল কার পার্কিং তৈরি করা হচ্ছে। এই টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করে রাখা যাবে।
০৯ আগস্ট, ২০২৩
X