শপথ নিলেন নতুন ৭ প্রতিমন্ত্রী
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের মন্ত্রিসভায় যুক্ত হলেন আরও সাত প্রতিমন্ত্রী। ইতিমধ্যে তারা শপথ নিয়েছেন। এর ফলে মন্ত্রিসভার আকার বেড়ে দাঁড়াল ৪৪ জনে। শুক্রবার (১ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বঙ্গভবনে নতুন প্রতিমন্ত্রীদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। তাদের শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। শপথ নেওয়া নতুন প্রতিমন্ত্রীরা হলেন– রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) মো. আব্দুল ওয়াদুদ, নওগাঁ-২ আসনের এমপি শহীদুজ্জামান সরকার, চট্টগ্রাম-১৪ আসনের এমপি নজরুল ইসলাম চৌধুরী, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক বেগম শামসুন নাহার (টাঙ্গাইল), সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও পরিকল্পনা অর্থবিষয়ক সম্পাদক বেগম ওয়াসিকা আয়শা খান (চট্টগ্রাম), সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ও শহীদ কর্নেল নাজমুল হুদার মেয়ে বেগম নাহিদ ইজাহার খান (ঢাকা) এবং সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক বেগম রোকেয়া সুলতানা (জয়পুরহাট)। এর আগে নতুন এই সাত প্রতিমন্ত্রীকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। মন্ত্রিপরিষদের সচিব মাহবুব হোসেন এক প্রজ্ঞাপনে সাত প্রতিমন্ত্রী নিয়োগের কথা জানান। উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গত ১১ জানুয়ারি শপথ নেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৩৭ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভা। বর্তমান মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী বাদে পূর্ণমন্ত্রী রয়েছেন ২৫ জন এবং প্রতিমন্ত্রী ১১ জন। ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্যদের দুই দফায় (৪৮ ও ২ জন) শপথবাক্য পাঠ করান স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এরপর থেকে মন্ত্রিসভার আকার বাড়ানোর বিষয়টি নেতাকর্মীদের মুখে মুখে আলোচিত হতে থাকে। প্রসঙ্গত, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২২৪টি, জাতীয় পার্টি ১১টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি আসনে জয় পেয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) একটি করে আসন পেয়েছে। একটি আসনে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি।
০১ মার্চ, ২০২৪

সাক্ষাৎকারে মাহমুদুর রহমান মান্না / মেয়াদ পূর্ণ করতে পারবে না সরকার
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকারকে কেউ নতুন সরকার মনে করে না বলে দাবি করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। নির্বাচন-পরবর্তী সার্বিক প্রেক্ষাপট নিয়ে শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) কালবেলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এই সরকারে কোনো নতুনত্ব আছে কিংবা নতুন কোনো অ্যাপ্রোচ আছে–এটা কেউ মনে করে না। জনগণ মনে করে, আগের সেই নির্যাতনকারী, দখলদার সরকারই এখনো ক্ষমতায় আছে। আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিত একই রয়েছে উল্লেখ করে ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, আন্দোলন আগের জায়গায় আগের মতো করেই আছে। সেটাকে কীভাবে জয়ের বন্দরে পৌঁছানো যায়, তার কৌশল নিয়ে এখন আমরা ভাবছি। তবে এটা সত্য, আগের চেয়ে এই সরকারের নাজুকতা অনেক বেশি। মানুষের মধ্যে প্রতিবাদী এমনকি প্রতিরোধী স্পৃহাও এখন অনেক বেশি। ফলে সরকার এবার মেয়াদ পূর্ণ করতে পারবে না, যদি আগামীতে আন্দোলনে আমাদের কোনো দুর্বলতা না থাকে। তার মতে, আন্দোলনকে বেগবান করতে এ মুহূর্তে যুগপতের সম্প্রসারণের আলোচনা না থাকলেও যুগপতের এ ধারণাটাই সবাইকে কাছে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সাক্ষাৎকারে মাহমুদুর রহমান মান্না সরকারের মেয়াদ, নির্বাচন-পরবর্তী আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট, আগামীর আন্দোলনসহ নানা বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন। সাক্ষাৎকারের বিস্তারিত তুলে ধরা হলো। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রাজকুমার নন্দী কালবেলা: সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবিতে এক বছরের বেশি সময় ধরে আপনারা বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করছেন; কিন্তু আপনাদের দাবি পূরণ ছাড়াই নির্বাচন হয়ে গেল? এমন অবস্থায় আপনারা আগামীতে কী করতে চান? মাহমুদুর রহমান মান্না: গত ৭ জানুয়ারি যে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে, সেটাকে নির্বাচন বলা যায় না। ৫ শতাংশের বেশি ভোট পড়েনি। মানুষকে আমরা আহ্বান জানিয়েছিলাম নির্বাচন বর্জন করতে। তারা ভোট বর্জন করেছে। আমরা এ সরকারের অধীনে নির্বাচন করব না, নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী নতুন সরকারের অধীনে নির্বাচন করব- সেজন্য লড়াই করছি। এটা আমি মানি যে, আমাদের সেই দাবিটি পূরণ হয়নি। আমরা হয়তো ফিজিক্যালি জয়লাভ করিনি, তবে পলিটিক্যালি বললে বলব মানুষ আমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছে এবং নিরঙ্কুশভাবে সরকারকে বর্জন করেছে। সেই বর্জন এখনো আছে। মানুষের মধ্যে সরকারের প্রতি কোনো রকম ইতিবাচক ধারণা জন্মেনি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কোনোভাবেই এ নির্বাচন স্বীকৃতি লাভ করেনি, কেউ নির্বাচনটাকে ভালো বলেনি। ফলে পরিস্থিতি যা ছিল সেখানেই আছে। সরকার কিছুই গেইন (অর্জন) করেনি, বরঞ্চ আমাদের প্রতি মানুষের নিরঙ্কুশ সমর্থনটা প্রকাশিত হয়েছে। নতুন দুই-একটি জিনিস যুক্ত হয়েছে, তার মধ্যে বিশেষ করে দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতের ইস্যুতে অর্থনীতি এখন এমনভাবে সংকটাপন্ন হয়েছে যে, সরকারের এখন হাফ ছেড়ে বাঁচা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। আমরা মনে করি, আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতটা একই আছে। পরিস্থিতি আছে বরং সেটা আরও ম্যাচিউড হয়েছে। কালবেলা: আগামীতে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়নের ক্ষেত্রে কোন বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন? মান্না: বিশেষ কোনো বিষয় নিয়ে আলাদা করে কিছু ভাবতে হচ্ছে না। কারণ, এই সরকার গণতন্ত্র ও সংসদের কফিনে পেরেক মেরে দিয়েছে। এদের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না বরং এদের অধীনে নির্বাচন ধ্বংস হয়ে যায়। যাচ্ছে তাই ব্যাপার হয়ে যায়, সেটা আবারও প্রমাণিত হয়েছে। অতএব, আমাদের আগে যে দাবি ছিল, অর্থাৎ এই সরকারের পদত্যাগ এবং একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন–সেই দাবি একই থাকছে। এর মধ্যে দুই-একটি জিনিসের গুরুত্ব একটু বেড়েছে যেমন–দ্রব্যমূল্য, দুর্নীতি, দুঃশাসনের বিষয়টি। দুর্নীতি-দুঃশাসন আগে ছিল, কিন্তু নতুন করে দুর্নীতির সূচকে তারা আরও দুইধাপ নিচে নেমে গেছে। সংসদ বলতে সরকারি দল ও বিরোধী দলের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এগুলো মিলে আমরা মনে করছি যে, আন্দোলন আগের জায়গায় আগের মতো করে আছে। শুধু আন্দোলনের কৌশলটা নিয়ে আমরা ভাবছি যে, কী করে সেটাকে জয়ের জায়গায় পৌঁছানো যায়। কালবেলা: অনেক দেশ এরই মধ্যে সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের মনোভাবও এখন নমনীয় মনে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলের এমন অবস্থানকে কীভাবে দেখছেন? মান্না: জাতিসংঘ এই সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে, এই কথা বোধহয় ঠিকভাবে বলা হলো না। কোনো একটা দেশে নতুন যে কোনো সরকার এলে তখন আন্তর্জাতিক প্রটোকলে জাতিসংঘসহ অন্যান্য দেশ সেই সরকারকে অভিনন্দন জানায়। কারণ, সরকারের সঙ্গে সরকারের বা দেশের সঙ্গে দেশের সম্পর্ক তো থাকতে হবে। তাদের নানা ধরনের কানেকশন থাকে। সেটা রাজনীতির বাইরেও ব্যবসা, সংস্কৃতিসহ অনেক কিছু। আমেরিকার কথা ধরা যাক, তাদের কত বিলিয়ন ডলার এখানে ইনভেস্ট করা আছে। তারা যদি বলে, এই সরকারকে মানি না। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ হয়ে গেলে সেসব টাকার কী হবে? এ ছাড়া আঞ্চলিক, স্থানীয়, আন্তর্জাতিক সিকিউরিটির প্রশ্ন- অনেক কিছু থাকতে পারে। এনগেজমেন্টটা কেউ এ রকম করে কেটে দেয় না। জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডোজারিক পরপর দুবার বলেছেন, তারা এই নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ মনে করেন, গ্রহণযোগ্য মনে করেন না। একই কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য, ইউরোপের প্রায় সব দেশই। ফলে এটা থেকে এ কথা বলার কোনো সুযোগই নেই যে, এই সরকারকে সবাই সমর্থন করছে, নির্বাচনকে ভালো বলছে। কালবেলা: বিএনপি ও যুগপতের শরিকদের আন্দোলনের মধ্যেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন এবং পরবর্তী সময়ে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। এই সংসদ ও সরকার সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী? মান্না: সংসদে সরকারি দল, বিরোধী দল, স্বতন্ত্র এমপি থাকেন; কিন্তু দ্বাদশ সংসদে স্বতন্ত্ররা বিরোধী দলের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। সংসদনেত্রী বলবেন, তোমরা আমার ডান হাত, বাম হাত। সব মিলিয়ে আমরা এক হাত। মানে সব মিলিয়ে একটা অজুহাত সংসদের। কে কীভাবে জিতেছেন, নির্বাচনে কী হয়েছে- সেটা আজ সবার কাছে পরিষ্কার। সংসদ নির্বাচন করতে গিয়ে দলের মধ্যে ভাঙন হয়েছে, জোটও ভেঙে গেছে। নিজেদের লোক নিজেদের বিরুদ্ধে কথাবার্তা বলছে। মারামারি, খুনোখুনি হয়েছে। সেই সংসদে যাকে বিরোধী দলের নেতা বানানো হয়েছে, তিনি বলছেন এই সংসদ কার্যকর হবে বলে মনে হচ্ছে না। সুতরাং এই সংসদ ও সরকার সম্পর্কে মূল্যায়ন করার কী আছে? এটা একটা সংসদীয় পদ্ধতির চূড়ান্ত উপহাস। এই সরকারকে কেউ নতুন সরকার মনে করে না। কালবেলা: আপনারা তো আগের দুটি সংসদকেও অবৈধ আখ্যা দিয়েছিলেন; কিন্তু সেই সংসদ ও সরকার পুরো মেয়াদ বহাল থেকেছে। এবার ভিন্ন কিছু হবে বলে আশা করেন কি? মান্না: একটা অবৈধ সরকার অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় তো থাকতে পারে। জার, সা ফুলগেন্সিও বাতিস্তা, হোসনি মোবারক, ফ্রান্সিস ফ্রাংকো এমন অনেক উদাহরণ আছে। বেশিদিন, পুরো মেয়াদ ছিলেন বলে কি তাদের বৈধ বলবেন? এদের বৈধ বলবার তো কোনো জায়গা নেই। এই সংসদের কোনো ফাংশনই তো হতে পারে না, সেখানে পুরো মেয়াদ থাকার প্রশ্ন আসছে কেন? এই সংসদে কোনো বিরোধী দলই তো নেই। সব সংসদ সদস্য, স্বতন্ত্ররা গিয়ে বলছেন, আপনি যা মনে করেন সেটাই করেন, আমরা আছি। আমরা তো আপনারই সন্তান, এ রকম একটা অবস্থা। কারা যে বিরোধী দল, সেটা বলতেও পারছে না। মনের কষ্টে জি এম কাদেরকে কিছু কথা বলতে দেখছি। যদি বলা হয়, এই সরকার টিকবে কতদিন? এটা সত্য, তারা দুটি টার্ম পুরো মেয়াদে থেকেছে। আন্দোলনে আমরা তাদের নামাতে পারিনি। এখন কী পারব? আগের চেয়ে এই সরকারের নাজুকতা অনেক বেশি। মানুষের মধ্যে প্রতিবাদী এমনকি প্রতিরোধী স্পৃহাও এখন অনেক বেশি। ফলে এই সরকার পুরো টার্ম যেতে পারবে বলে মনে করি না, যদি আন্দোলনে আমাদের কোনো দুর্বলতা না থাকে। ২০১৮ সালে দিনের ভোট আগের রাতে ডাকাতি করে নিয়ে গিয়েছিল। ন্যক্কারজনক ব্যাপার। তারপরেও আমরা দুই, আড়াই মাস কোনো প্রতিবাদই করতে পারিনি, প্রতিরোধ তো দূরের কথা। তবে এবার ৭ জানুয়ারির আগে থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিবাদ, আন্দোলন অব্যাহত আছে। ‘ছোট্ট স্ফুলিঙ্গ একটা দাবানল তৈরি করতে পারে’–যে কোনো সময় এমনটা হয়ে যেতে পারে। এ জন্য সরকার ৩০ জানুয়ারি সারা দেশে কালো পতাকা মিছিল করতে দেয়নি। কারণ সরকার ভয় পায়, মিছিল বের হলেই না জানি কী হয়, এত তাড়াতাড়ি মিছিল বের হয়ে গেছে। আবারও বলছি, এই সরকারের নাজুকতা অনেক বেশি। এ জন্য আশাবাদী হওয়াই যায় যে, এই সরকার টিকবে না। কালবেলা: সরকারবিরোধী আগামীর আন্দোলন বেগবান করতে শিগগির যুগপতের সম্প্রসারণ হবে কি না? মান্না: শিগগিরই যুগপতের সম্প্রসারণ হওয়ার কোনো প্রস্তাবনা টেবিলে নেই। এমন কোনো আলোচনাও নেই। তবে আমরা সব সময়ই বলি, আন্দোলন বেগবান করতে আন্দোলনের শক্তি যত বেশি বাড়ানো যায়, যত বেশি শক্তি সন্নিবেশিত-সমন্বিত করা যায়, সেটা ভালো–তা যে কোনো কায়দাতেই বা কৌশলেই হোক। সেই চেষ্টা আমাদের আছে। যারা যুগপতে নেই, আমরা তাদের সঙ্গেও তো আলাপ-আলোচনা করছি, এমনকি একসঙ্গে প্রোগ্রামও করছি। সেমিনার করেছি, গোলটেবিল করেছি এবং তারা আমাদের মতোই কথা বলেছেন। অন্তত একটা ব্যাপারে তারা সবাই একমত যে, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন মেনে নেওয়া যাবে না। এই সরকারের বদলে একটা নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকার এনেই নির্বাচনটা করব। সে জন্য আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। সেই ধরনের সম্প্রসারণ ইতোমধ্যে আছে, তবে এটা কাঠামোগতভাবে হয়নি। একমঞ্চ বানানো বিষয়টি এ রকম নয়। যুগপতের যে ধারণা সেটাই আসলে সবাইকে কাছে আনার জন্য যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে। দেখা যাক, আগামীতে কী হয়।  কালবেলা: বিএনপির নেতৃত্বে সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন করছে গণতন্ত্র মঞ্চ। আন্দোলন ও কর্মসূচি প্রণয়ন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে কখনো কোনো সমস্যা কিংবা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল কি না? মান্না : বিএনপি বড় দল, অনেক বড় দল। আমাদের জোটের তুলনায় অনেক বড় দল। সে হিসেবে মাঠে তাদের একটা প্রভাব নিশ্চয় আছে। সেই প্রভাবকে অস্বীকার করলে বাস্তবতাকে অস্বীকার করা হবে; কিন্তু তার মানে এই নয় যে, বিএনপি যে রকম করে লিড করছে, আন্দোলন সে রকম করে হচ্ছে। গণতন্ত্র মঞ্চ এবং বিএনপির মধ্যে একটা লিয়াজোঁ কমিটি আছে। সেই লিয়াজোঁ কমিটি আমরা প্রায়শই বসতাম। দু-একবার আমাদের বৈঠকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় হয়েছে এবং তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়েই আমরা এগিয়েছি, আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। তবে মাঝে-মধ্যে এর ব্যত্যয়ও হয়েছে। ব্যস্ততা, তাড়াহুড়োতে কখনো হয়তো ভুল বোঝাবুঝি হয়ে গেছে। পরে আবার আমরা আলোচনা করে একটা সংশোধনও করে নিয়েছি। সে দিক থেকে কোনো সমস্যা হয়নি। আমরা আগামীতেও একসঙ্গে মিলে যুগপৎভাবে আন্দোলনটা করতে চাই। আমাদের লক্ষ্য, গণতন্ত্রটাকে প্রতিষ্ঠা করা। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্র মেরামত তথা রাষ্ট্রের গুণগত পরিবর্তন সেই লড়াইটাও করতে চাই। সে জন্য আমরা সবাই একমত হয়ে ৩১ দফার ভিত্তিতে যুগপৎ আন্দোলনে নেমেছি। কালবেলা: নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক অবস্থা কী? আগামীতে দলের শক্তি আরও বাড়াতে কোন ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছেন? মান্না: আমরা জোটের মধ্যে আছি, যুগপতেও আছি। তারপরে দলগতভাবেও আছি। দলীয়ভাবে নাগরিক ঐক্যের নিজস্ব কর্মসূচি আছে। নাগরিক ঐক্যের পক্ষ থেকে আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করছি। রাস্তার মধ্যে কোনো একটা জায়গায় একটা লম্বা টেবিলের ওপর একটা বড় কাপড় বিছিয়ে তার ওপর সই নিচ্ছি। মানুষজন আসছেন, স্বাক্ষর করছেন। তাদের যথেষ্ট সমর্থন পাচ্ছি। এ ছাড়া জোটগত কর্মসূচিগুলোতে আমরা আমাদের সাধ্যমতো অংশগ্রহণ করি, সেটা সফল করার চেষ্টা করি এবং তার মধ্য দিয়ে আন্দোলনকে আরও বেশি বেগবান করার চেষ্টা করছি। আমাদের এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমরা যুগপৎভাবে এই আন্দোলন করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিজয়ের দিকে যাব–এই প্রত্যাশায় লড়াই করছি। কালবেলা: আওয়ামী লীগের বাইরে যেসব দল, প্রার্থী নির্বাচনে গিয়েছিল, তাদের অনেকে সরকারের সমালোচনা করছে। তাদের বিষয়ে আপনার মূল্যায়ন কী? আপনাদের চলমান আন্দোলনে আগামীতে তাদের পাশে চান কি না? মান্না: আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীকের বাইরে যারা নির্বাচনে গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগ লোকই আওয়ামী লীগের নেতা। এ ছাড়া জোটের কিছু নেতা এবং নাম করা কিছু নেতাও ছিলেন। আমরা বরাবরই বলে আসছি যে, ৭ জানুয়ারি কোনো নির্বাচন হয়নি, হয়েছে সিলেকশন, ওপর থেকে যেটা বলা হয়েছে। ভোটে পরাজয়ের পর মনের দুঃখে তারাও একই কথা বলছেন। তারা বলেছেন, ওপর থেকে বলে দিলেই তো এমপি হতে পারতাম; কিন্তু চাননি। প্রকাশ্যে তারা এটা বলছেন, মনে বড় কষ্ট। একটা গান আছে না, ‘মনে বড় জ্বালা রে’–এটা হলো সে রকম। মনের জ্বালা মনের মধ্যে রেখে তারা কষ্ট পেতে থাকবেন। নির্বাচনের মাঠে মানুষ তাদের গ্রহণ করেনি, কবে করবে, করলে কোন শর্তে করবে–জানি না। ওগুলো নিয়ে আমরা ভাবি না। তাদের নিয়ে ভাবার এখন কোনো অবকাশ নেই। সুতরাং আমাদের আন্দোলনে তাদের ডাকছি না; কিন্তু যারা নির্বাচন করেননি, যুগপতেও নেই–তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চালু আছে, চালু থাকবে।
০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

পরাজিত প্রার্থীর এজেন্টকে কুপিয়ে হত্যা
সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-২ (সেনবাগ ও সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনে আ.লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর (কাঁচি প্রতীক) এজেন্ট শাহেদুজ্জামান ওরফে পলাশকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার (১৩ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে সোনাইমুড়ী উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব মির্জানগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে সোনাইমুড়ী থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। নিহত শাহেদুজ্জামান ওরফে পলাশ (৩৫) পূর্ব মির্জানগর গ্রামের মো. জামাল উদ্দিনের ছেলে। তবে কে বা কারা পলাশকে খুন করেছেন, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। আ.লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহা. আতাউর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ভোটকেন্দ্রে জাল ভোট ও অবৈধ প্রভাব বিস্তারের প্রতিবাদ করায় ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের দিন থেকে স্থানীয় নৌকা প্রতীকের সমর্থকেরা পলাশকে নানা হুমকি দিয়ে আসছেন। এর জেরে তাকে খুন করা হতে পারে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষী ব্যক্তিদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। স্বতন্ত্র প্রার্থীর এ অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন নৌকা প্রতীকের বিজয়ী সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম। তিনি বলেন, গত ১০ বছর নোয়াখালী-২ আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি। দীর্ঘ এ সময়ে এলাকায় কোনো ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতা কিংবা হত্যাকাণ্ড ঘটেনি। নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী তাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে অপপ্রচারে নেমেছেন। হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার জন্য সোনাইমুড়ী থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন বিজয়ী সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শনিবার রাত ১০টার দিকে পূর্ব মির্জানগর গ্রামের নিজ বাড়ির পাশের খালি জায়গায় রক্তাক্ত অবস্থায় শাহেদুজ্জামানের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন প্রতিবেশীরা। তার কপাল ও মুখে ধারালো অস্ত্রের আঘাত দেখা গেছে। স্থানীয় লোকজন তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি সোনাইমুড়ী থানাপুলিশকে অবহিত করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। শাহেদুজ্জামানের স্ত্রীর বরাত দিয়ে সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, শাহেদুজ্জামান এক সময় বিদেশে থাকতেন। দেশে আসার পর এলাকায় মাছ ও মুরগির খামার করেন। স্ত্রী নিয়ে তিনি শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন। দিনের বেলায় নিজের বাড়িতে আসতেন এবং খামার দেখাশোনা করতেন। শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে শাহেদুজ্জামানের সঙ্গে তার স্ত্রীর মোবাইল ফোনে ভিডিও কলে সর্বশেষ কথা হয়েছিল। তবে কে বা কারা শাহেদুজ্জামানকে খুন করেছেন, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ওসি বখতিয়ার উদ্দিন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিহত শাহেদুজ্জামান সংসদ নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর এজেন্ট ছিলেন কি না, তা তিনি নিশ্চিত নন। তবে কে বা কারা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, এ বিষয়ে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে নোয়াখালী-২ আসনে মোরশেদ আলম নৌকা প্রতীকে ৫৬ হাজার ১৮৬ ভোট পেয়ে জয়ী হন। স্বতন্ত্র (কাঁচি) প্রার্থী আতাউর রহমান ভূঁইয়া পান ৫২ হাজার ৮৬৩ ভোট।
১৪ জানুয়ারি, ২০২৪

কড়া পাহারায় স্থগিত কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে, আছে সিসি ক্যামেরা
ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনের স্থগিত ভালুকাপুর উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় লাগানো হয়েছে দশটি সিসি ক্যামেরা। মোতায়েন রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুই শতাধিক সদস্য। এদিকে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভালুকাপুর উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র ও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর আগে গত ৭ জানুয়ারি আসনটির সহনাটি ইউনিয়নের ভালুকাপুর উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনায় ভোট বাতিল এবং ভোটকেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত করা হয়। এতে করে আসনের নির্বাচনী চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা আটকে যায়। এদিকে আসনের ৯২টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৯১ ভোটকেন্দ্রের ঘোষিত ফলাফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নিলুফার আনজুম পপি নৌকা প্রতীকে ৫৩ হাজার ১৯৬ ভোট পেয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সোমনাথ সাহা পেয়েছেন ৫২ হাজার ২১১ ভোট। নৌকার প্রার্থী ৯৮৫ ভোটে পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। স্থগিত হওয়া ভালুকাপুর উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ভোট ৩ হাজার ৩২ জন। পুরুষ ভোটার ১৫৩০ জন ও নারী ভোটার ১৫০২ জন। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাহিদুল করিম বলেন, স্থগিত কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সাতটি বুথে ভোটগ্রহণ চলছে। ভোটকেন্দ্রে ১০টি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। ভোটকেন্দ্র ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দুই শতাধিকের বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। কেন্দ্রে ভোট নিতে একজন প্রিসাইডিং অফিসার, সাতজন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও ১৪ জন পোলিং কর্মকর্তা  নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
১৩ জানুয়ারি, ২০২৪

মন্ত্রী হয়েই প্রতিদ্বন্দ্বীর নামে করলেন শতকোটি টাকার মানহানি মামলা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচারকালে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমান আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে আদালতে তার বিরুদ্ধে শতকোটি টাকার মানহানি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য এবং গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন।  বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যুগ্ম জেলা জজ নজরুল ইসলামের আদালতে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আগামী রোববার (১৪ জানুয়ারি) আদালত এই মামলায় শুনানি করবেন৷ বাদীর আইনজীবী আব্দুল জব্বার মামুন জানান, গত ২৬ ডিসেম্বর সদর উপজেলার সুহিলপুরে ফিরোজুর রহমান নির্বাচনী এক সভায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন। তার ওই আপত্তিকর বক্তব্যে র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সম্মানহানি হয়েছে। তাই ফিরোজুর রহমানকে তার আপত্তিকর বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে গত ২৮ ডিসেম্বর থেকে তাকে পর পর তিনটি নোটিশ পাঠানো হয়। কিন্তু তিনি সেই নোটিশ আমলে নেননি। তাই র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সম্মানহানি করায় আদালতে শত কোটি টাকার ক্ষতির মামলা দায়ের করা হয়েছে। আগামী রোববার আদালত এই মামলায় শুনানি করবেন৷ এ বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমান বলেন, বিষয়টি আইনিভাবে মোকাবিলা করা হবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। মোকতাদির চৌধুরী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি এই আসন থেকে চতুর্থবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসন থেকে কেউই পূর্ণ মন্ত্রী হননি। এই আসন থেকে প্রথমবারের মতো পূর্ণ মন্ত্রী হন মোকতাদির। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে এবারের নির্বাচনে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৭২ ভোট পেয়ে জয়ী হন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফিরোজুর রহমান ৬৪ হাজার ৩৭ ভোট পান।
১২ জানুয়ারি, ২০২৪

বগুড়ায় সাতটি আসনে সাড়ে ২৪ হাজার ভোট বাতিল
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়ার সাতটি আসনে এবার প্রদত্ত ভোটের মধ্যে ২৪ হাজার ৫০৬টি ভোট বাতিল করা হয়। বাতিলের হার ২ দশমিক ৯০ শতাংশ। জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। নির্বাচন কার্যালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বগুড়ায় বর্তমানে ২৮ লাখ ৩০ হাজার ৬০৪ জন ভোটারের মধ্যে গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতটি আসনে ৮ লাখ ৪৩ হাজার ৫৬৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ভোট প্রদানের হার ছিল ২৯ দশমিক ৮০ শতাংশ। অবশ্য প্রদত্ত ভোটের মধ্যে নানা কারণে ২৪ হাজার ৫০৬টি ভোট বাতিল করা হয়। বাতিলের হার ২ দশমিক ৯০ শতাংশ। নির্বাচনে সাতটি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ এবং ১৪ দলীয় জোট মনোনীত পাঁচজন প্রার্থী বিজয়ী হন। বাকি দুটি আসনের একটিতে এক আওয়ামী লীগ নেতা এবং অপর একটি আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী বিজয়ী হন।  আসনভিত্তিক ভোটের হিসেবে দেখা গেছে, বগুড়া-১ আসনে ৩৪ দশমিক ২৯ শতাংশ, বগুড়া-২ আসনে ২৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ, বগুড়া-৩ আসনে ৩৭ দশমিক ৩১ শতাংশ, বগুড়া-৪ আসনে ২৮ দশমিক ৪ শতাংশ, বগুড়া-৫ আসনে ৩৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ, বগুড়া-৬ আসনে মাত্র ২১ শতাংশ, বগুড়া-৭ আসনে ২১ দশমিক ৯৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। এই জেলার সাতটি আসনে গড় ভোট পড়েছে ২৯ দশমিক ৮০ শতাংশ। অন্যদিকে পাঁচ বছর আগে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ২৫ লাখ ৪২ হাজার ৪৫৮ জন। ওই নির্বাচনে মোট ১৯ লাখ ৩২ হাজার ৪৩৩ জন ভোট দিয়েছিলেন। ভোট প্রদানের হার ছিল ৭৬ শতাংশ। যা এবারের চেয়ে ৪৬ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। ওই নির্বাচনে জেলার সাতটি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি দুটি করে আসনে জয় পায়। অপর আসনে বিএনপি সমর্থিত অপর এক স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছিলেন। ধারণা করা হয়, আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিসহ নিবন্ধিত সিংহভাগ রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের কারণে ২০১৮ সালের নির্বাচনে ভোটের হার বেশি ছিল। পক্ষান্তরে বিএনপির মতো বড় দল বর্জন করায় সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোট প্রদানের হার কমে যায়।  নির্বাচন কার্যালয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এবার আসনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ ভোট বাতিল হয়েছে বগুড়া-৩ (আদমদীঘি ও দুপচাঁচিয় উপজেলা) আসনে। আর ২০১৮ সালে এই আসনে বাতিল হয়েছিল ১ দশমিক ২২ শতাংশ ভোট। এবার বগুড়া-৭ (গাবতলী ও শাজাহানপুর উপজেলা) আসনে বাতিল হয় ৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ ভোট। ২০১৮ সালে ওই আসনে বাতিল হয় ১ দশমিক ৬২ শতাংশ ভোট। সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ উপজেলা) আসনে বাতিল হয় ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ ভোট। পাঁচ বছর আগে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বাতিল হয়েছিল ১ দশমিক ১৯ শতাংশ ভোট। এবার বগুড়া-৪ (কাহালু ও নন্দীগ্রাম উপজেলা) আসনে বাতিল হয় ২ দশমিক ৯৫ শতাংশ ভোট আর ২০১৮ সালে বাতিল হয়েছিল ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ ভোট। বগুড়া-৬ (সদর উপজেলা) আসনে এবার বাতিল হয় ২ দশমিক ৬৭ শতাংশ ভোট। ২০১৮ সালে বাতিল হয় শূন্য দশমিক ৯৭ শতাংশ ভোট। বগুড়া-৫ (ধুনট ও শেরপুর উপজেলা) আসনে এবারের নির্বাচনে ২ দশমিক ২০ শতাংশ ভোট বাতিল হয়। ২০১৮ সালে বাতিল হয়েছিল ১ দশমিক ১৩ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে বগুড়া-১ (সোনাতলা ও সারিয়াকান্দি উপজেলা) আসনে ২০২৪ সালে বাতিল হয় ১ দশমিক ২৫ শতাংশ তবে ২০১৮ সালে আসনটিতে শূন্য দশমিক ৭৭ শতাংশ ভোট বাতিল করা হয়েছিল। ভোট বাতিল প্রসঙ্গে বগুড়ার জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ব্যালট পেপারে ভুলভাবে সিল মারার কারণে এসব ভোট বাতিল করা হয়েছে।
১২ জানুয়ারি, ২০২৪

সরকারের সামনে তিন চ্যালেঞ্জের কথা বললেন ওবায়দুল কাদের
ইতোমধ্যে শপথ নিয়েছেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদের মন্ত্রিসভার সদস্যরা। এরপর আজ শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারা।  শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী পাঁচ বছর সরকার চালাতে সংসদের ভেতরে-বাইরে নানামুখী চাপ সামাল দিতে হবে সরকারকে। তবে রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক- এই তিনটি বিষয় চ্যালেঞ্জের। ওবায়দুল কাদের বলেন, এই চ্যালেঞ্জের বেশিরভাগ হচ্ছে বিশ্ব সংকটের বাস্তবতার ফল। এসব থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করা সহজ না।   নির্বাচন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নানামুখী সংকট অতিক্রম করে আজকে যে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে পেরেছি, এটা আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার ম্যাজিক লিডারশিপের ফলেই সম্ভব হয়েছে। তিনি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যে দক্ষতা, দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন সে কারণেই মূলত আমরা সাহস পাই, আমরা আশা রাখি।  নতুন মন্ত্রিসভার কাজ নিয়ে তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ নিয়ে কাজ করাই মন্ত্রিসভার লক্ষ্য। এরপর যার যার মন্ত্রণালয়ে প্রধানমন্ত্রী যেসব নির্দেশনা দেবেন, বিশেষ করে নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নই আমাদের মূল কাজ। তিনি আরও বলেন, আমাদের চলার পথ কখনোই পুষ্প বিছানো ছিল না। আমাদের জন্ম থেকেই এ পথ কণ্টকার্কীণ ছিল। আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে এ পথ সহজ করেছি। সামনে আরও সহজ হবে। উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচনে ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২২২টিতে জয় পায় আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া স্বতন্ত্রদের মধ্যে বিজয়ী হন ৬২ জন, যাদের মধ্যে ৫৯ জনই আওয়ামী লীগই নেতা। আর জাতীয় পার্টি জয় পেয়েছে ১১টি আসনে। দুটিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগের শরিক দল জাসদ ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি এবং একটিতে জয় পেয়েছে কল্যাণ পার্টি। একটি আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত রয়েছে।   গত ৯ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গেজেট প্রকাশের পরদিন ১০ জানুয়ারি (বুধবার) শপথ নেন নবনির্বাচিত এমপিরা। আর এমপিদের শপথ গ্রহণের একদিন পর বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) শপথ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রিসভার ৩৭ সদস্য। এর আগে বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের অনুমোদন দিয়ে ২৫ মন্ত্রী ও ১১ প্রতিমন্ত্রীকে নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
১২ জানুয়ারি, ২০২৪

নবনির্বাচিত নৌকার এমপিকে শোকজ ইসির
অনিয়মের অভিযোগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-২ আসন থেকে নবনির্বাচিত নৌকার প্রার্থী ফরিদুল হক খানকে শোকজ করেছে নির্বাচন কমিশন।  বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক ভোটগ্রহণের দিন সিরাজাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে প্রকাশ্যে ভোট দিয়েছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছবিসহ ওই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ভোটের গোপনীয়তা রক্ষা না করা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৮৩ অনুচ্ছেদের বিধান অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। উল্লিখিত অপরাধের দায়ে ফরিদুল হকের বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে আগামী ১৫ জানুয়ারি বিকাল ৩টায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১১ জানুয়ারি, ২০২৪

মন্ত্রিসভায় ২৫ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ১১
দ্বাদশ জাতীয় সংসদে ৩৬ সদস্যবিশিষ্ট মন্ত্রিসভা গঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে পূর্ণ মন্ত্রী হচ্ছেন ২৫ জন এবং প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন ১১ জন। বুধবার (১০ জানুয়ারি) রাতে সচিবালয়ে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন । এর মধ্যে ২ জন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হচ্ছেন। মন্ত্রিপরিষদে স্থান পেয়েছেন যারা- ১. আ. ক. ম মোজাম্মেল হক (গাজীপুর-১) ২. ওবায়দুল কাদের (নোয়াখালী-৫) ৩. নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন (নরসিংদী-৪) ৪. আসাদুজ্জামান খান (ঢাকা-১২) ৫. ডা. দীপু মনি (চাঁদপুর-৩) ৬. মো. তাজুল ইসলাম (কুমিল্লা-৯) ৭. মুহাম্মদ ফারুক খান (গোপালগঞ্জ-১) ৮. আবুল হাসান মাহমুদ আলী (দিনাজপুর-৪) ৯. আনিসুল হক (বাহ্মণবাড়িয়া-৪) ১০. মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ (চট্টগ্রাম-৭) ১১. মো. আব্দুস শহীদ (মৌলভীবাজার-৪) ১২. সাধন চন্দ্র মজুমদার (নওগাঁ-১) ১৩. র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩) ১৪. মো. আব্দুর রহমান (ফরিদপুর-১) ১৫. নারায়ন চন্দ্র চন্দ (খুলনা-৫) ১৬. আব্দুস সালাম (ময়মনসিংহ-৯) ১৭. মহিবুল হাসান চৌধুরী (চট্টগ্রাম-৯) ১৮. ফরহাদ হোসেন (মেহেরপুর-১) ১৯. ফরিদুল হক খান (জামালপুর-২) ২০. মো. জিল্লুল হাকিম (রাজবাড়ী-২) ২১. সাবের হোসেন চৌধুরী (ঢাকা-৯) ২২. জাহাঙ্গীর কবির নানক (ঢাকা-১৩) ২৩. নাজমুল হাসান (কিশোরগঞ্জ-৬) এবং টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী দুজন হচ্ছেন- ২৪. স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ২৫. সামন্ত লাল সেন প্রতিমন্ত্রী ১. বেগম সিমিন হোমেন (রিমি) (গাজীপুর-৪)  ২. নসরুল হামিদ (ঢাকা-৩) ৩. জুনাইদ আহমেদ পলক (নাটোর-৩)  ৪. মোহাম্মদ আলী আরাফাত (ঢাকা-১৭)  ৫. মো. মহিববুর রহমান (পটুয়াখালী-৪)  ৬. খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (দিনাজপুর-২)  ৭. জাহিদ ফারুক (বরিশাল-৫)  ৮. কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (খাগড়াছড়ি)  ১৯. বেগম রুমানা আলী (গাজীপুর-৩) ১০. শফিকুর রহমান চৌধুরী (সিলেট-২)  ১১. আহসানুল ইসলাম (টিটু) (টাঙ্গাইল-৬) নতুন মন্ত্রীরা আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে শপথ নেবেন। রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করাবেন। শপথগ্রহণ শেষে নবনিযুক্ত মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ নিজ নিজ শপথবাক্যে স্বাক্ষর করবেন। এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন সংসদ-সদস্য শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত দিয়ে তার নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য সম্মতি দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পরে জারি করা হয় প্রজ্ঞাপন। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদের (৩) দফা অনুযায়ী দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন সংসদ-সদস্য শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন এবং তার নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। এতে আরও বলা হয়, নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের সঙ্গে সঙ্গে বর্তমান মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে গণ্য হবে। এর আগে, এদিন সকাল ১০টায় সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ নবনির্বাচিত ২৯৮ জন সংসদ সদস্য। তার আগে, সংসদ সদস্য হিসেবে প্রথমে শপথ গ্রহণ করেন বর্তমান স্পিকার শিরীন শারমীন চৌধুরী। এরপর স্পিকার হিসেবে তিনি শেখ হাসিনাসহ অন্য সংসদ সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান। জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র হিসেবে বিজয়ীরাও এদিন শপথ নিয়েছেন। উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৯টি আসনে ভোটগ্রহণ করা হয়। এরমধ্যে ময়মনসিংহ-৩ আসনের ফলাফল স্থগিত রয়েছে। নির্বাচনে ২২২টি আসনে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি (জাপা) জয় পেয়েছে ১১ আসনে। আওয়ামী লীগের পদধারী নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৬২ আসনে জয় পেয়েছেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ১টি করে দুটি আসনে জয়ী হয়েছে। আর বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি জয় পেয়েছে ১টিতে। গতকাল মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) এই নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গেজেট প্রকাশের পর দিনই, অর্থাৎ আজ সকালে শপথ নিয়েছেন নবনির্বাচিত এমপিরা।
১০ জানুয়ারি, ২০২৪

নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে অভিমত জার্মান রাষ্ট্রদূতের
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোসটার নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে অভিমত প্রকাশ করেন। তিনি জানান শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন শেষ হওয়ায় তারা খুশি। এ ছাড়াও বাংলাদেশের জনগণের বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে নতুন বছরে জার্মানি পাশে থাকবে বলেও জানান তিনি। মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘মিট অ্যান্ড গ্রিট’ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। জার্মান রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সঙ্গে জার্মানির উন্নয়ন সহযোগিতা আগামী দিনে আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। এ সময় তিনি সবাইকে ইংরেজি নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানান। এদিকে নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকরা ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এখনই নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। এ বিষয়ে সপ্তাহখানেকের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে একটি বিবৃতি ইস্যু করা হবে। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিদেশি কূটনীতিক, পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের সঙ্গে নির্বাচন পরবর্তী কুশল বিনিময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
১০ জানুয়ারি, ২০২৪
X