পরাজিত প্রার্থীর এজেন্টকে কুপিয়ে হত্যা
সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-২ (সেনবাগ ও সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনে আ.লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর (কাঁচি প্রতীক) এজেন্ট শাহেদুজ্জামান ওরফে পলাশকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার (১৩ জানুয়ারি) রাত ১০টার দিকে সোনাইমুড়ী উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব মির্জানগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে সোনাইমুড়ী থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। নিহত শাহেদুজ্জামান ওরফে পলাশ (৩৫) পূর্ব মির্জানগর গ্রামের মো. জামাল উদ্দিনের ছেলে। তবে কে বা কারা পলাশকে খুন করেছেন, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। আ.লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহা. আতাউর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ভোটকেন্দ্রে জাল ভোট ও অবৈধ প্রভাব বিস্তারের প্রতিবাদ করায় ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের দিন থেকে স্থানীয় নৌকা প্রতীকের সমর্থকেরা পলাশকে নানা হুমকি দিয়ে আসছেন। এর জেরে তাকে খুন করা হতে পারে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষী ব্যক্তিদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। স্বতন্ত্র প্রার্থীর এ অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন নৌকা প্রতীকের বিজয়ী সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম। তিনি বলেন, গত ১০ বছর নোয়াখালী-২ আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি। দীর্ঘ এ সময়ে এলাকায় কোনো ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতা কিংবা হত্যাকাণ্ড ঘটেনি। নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী তাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে অপপ্রচারে নেমেছেন। হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার জন্য সোনাইমুড়ী থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন বিজয়ী সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শনিবার রাত ১০টার দিকে পূর্ব মির্জানগর গ্রামের নিজ বাড়ির পাশের খালি জায়গায় রক্তাক্ত অবস্থায় শাহেদুজ্জামানের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন প্রতিবেশীরা। তার কপাল ও মুখে ধারালো অস্ত্রের আঘাত দেখা গেছে। স্থানীয় লোকজন তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি সোনাইমুড়ী থানাপুলিশকে অবহিত করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। শাহেদুজ্জামানের স্ত্রীর বরাত দিয়ে সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোহাম্মদ বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, শাহেদুজ্জামান এক সময় বিদেশে থাকতেন। দেশে আসার পর এলাকায় মাছ ও মুরগির খামার করেন। স্ত্রী নিয়ে তিনি শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন। দিনের বেলায় নিজের বাড়িতে আসতেন এবং খামার দেখাশোনা করতেন। শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে শাহেদুজ্জামানের সঙ্গে তার স্ত্রীর মোবাইল ফোনে ভিডিও কলে সর্বশেষ কথা হয়েছিল। তবে কে বা কারা শাহেদুজ্জামানকে খুন করেছেন, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ওসি বখতিয়ার উদ্দিন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিহত শাহেদুজ্জামান সংসদ নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর এজেন্ট ছিলেন কি না, তা তিনি নিশ্চিত নন। তবে কে বা কারা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, এ বিষয়ে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে নোয়াখালী-২ আসনে মোরশেদ আলম নৌকা প্রতীকে ৫৬ হাজার ১৮৬ ভোট পেয়ে জয়ী হন। স্বতন্ত্র (কাঁচি) প্রার্থী আতাউর রহমান ভূঁইয়া পান ৫২ হাজার ৮৬৩ ভোট।
১৪ জানুয়ারি, ২০২৪

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আজ
তপশিল ঘোষণার পর ৫২ দিনে নানা ধাপ পেরিয়ে উপস্থিত সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। স্বাধীন বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আজ রোববার (৭ জানুয়ারি)। সারা দেশে ২৯৯টি আসনে সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে ভোট গ্রহণ। কোনো বিরতি ছাড়াই চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এরপর হবে ভোট গণনা ও ফল প্রকাশ। নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কারচুপি এড়াতে প্রথমবারের মতো ভোরে কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে ব্যালট পেপার। ভোটকেন্দ্র ও আশপাশের এলাকা এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হলে কঠোর হস্তে দমনের জন্য নির্দেশ দিয়েছে ইসি। তা সত্ত্বেও নাশকতা থেকে রক্ষা পায়নি দেশ। তপশিল ঘোষণার পর থেকেই বিএনপিসহ নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলোর হরতাল অবরোধ-কর্মসূচির পাশাপাশি চলেছে জ্বালাও-পোড়াও। ভোটের এক দিন আগেও (শুক্রবার) যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন দিয়ে কেড়ে নেওয়া হয়েছে চারজনের প্রাণ। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে কয়েকটি ভোটকেন্দ্র। ধ্বংসাত্মক এসব কর্মকাণ্ড ভোট উৎসবে ছড়িয়েছে আতঙ্কের বার্তা। নাশকতার এই হুমকির মধ্যে ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্পন্ন করা আক্ষরিক অর্থেই গণতন্ত্রের অগ্নিপরীক্ষা বলছেন বিশ্লেষকরা। কারণ দেশ-বিদেশে এই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার সঙ্গে আগামী দিনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রশ্ন অনেকটাই জড়িত বলে মনে করেন তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন কালবেলাকে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রধান জায়গা হলো—আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র চেয়েছি। সেই গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে ভোটাধিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সেটা নিশ্চিত করার জন্য সব রাজনৈতিক দলেরই নির্বাচনে আসা বাঞ্ছনীয়। কারণ সব দল না এলে নির্বাচনের পরিপূর্ণ আবহ থাকে না। তবে নিজস্ব কোনো এজেন্ডার কারণে কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করতেই পারে। কিন্তু সেজন্য কোনোভাবেই সহিংসতা কাম্য নয়। এ ধরনের সহিংসতা গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার যে লক্ষ্যে আমরা পৌঁছতে চাই, তাকে বাধাগ্রস্ত করবে।’ এই নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের তৎপরতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমাদের গণতন্ত্র, আমাদের মানবাধিকার আমাদেরই নিশ্চিত করতে হবে। একটা রাষ্ট্র নানা চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। সেই সংগ্রামটা একান্তই আমাদের। তবে বিশ্বায়নের যুগে ভূরাজনৈতিক নানা চ্যালেঞ্জকেও অস্বীকার করা যায় না।’ এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে রাজনীতিতে চলছে নানামুখী তৎপরতা। বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপিসহ বেশ কিছু দল। অন্যদিকে সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকার অধীনে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে শুরু থেকেই অনড় ছিল আওয়ামী লীগ। বড় দুই দলের বিপরীতমুখী এ অবস্থানের মধ্যেই অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রশ্নে তৎপর ছিল যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ। সরকারের ওপর নানাভাবে চাপ সৃষ্টির চেষ্টাও করেছে তারা। জাতীয় নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশের জন্য আলাদা ভিসা নীতিও ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ঘরে-বাইরের সব চাপ উপেক্ষা করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের পথেই হেঁটেছে সরকার। সাংবিধানিক নির্দেশনা অনুসরণ করে গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। দাবি পূরণ না হওয়ায় নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি, বাম গণতান্ত্রিক জোট, ইসলামী আন্দোলনসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দল। দফায় দফায় হরতাল-অবরোধ, গণসংযোগসহ বিভিন্ন কর্মসূচি মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষকে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। আজ রোববার নির্বাচনের দিন হরতাল পালন করছে বিএনপি ও তাদের যুগপতের মিত্ররা। নতুন ভোটার হওয়া ১ কোটি ৫৪ লাখ ৫২ হাজার তরুণ এই নির্বাচনে প্রথমবারের মতো তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। ভোটার তালিকা পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, নতুন ও পুরোনো মিলিয়ে মোট ভোটারের প্রায় ২৫ শতাংশই ১৮ থেকে ২৮ বছর বয়সী।  বিশ্লেষকরা বলছেন, এবারের নির্বাচনে এই তরুণরাই প্রধান নিয়ামকের ভূমিকা পালন করবেন। তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করলে ভোটার উপস্থিতির হারে যেমন বড় প্রভাব ফেলবে, তেমনি ফলাফলের ক্ষেত্রেও তা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া বিপুলসংখ্যক নারী ভোটারকে কেন্দ্রে উপস্থিত করাও এবারের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ২৯৯ আসনে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ২৪টি। এসব কেন্দ্রে ভোটকক্ষ ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১২টি।
০৭ জানুয়ারি, ২০২৪

একনজরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
রাত পোহালেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ দিন প্রায় ১২ কোটি ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। জনগণ যাদের পক্ষে রায় দেবেন, আগামী পাঁচ বছরের জন্য তাদের হাতেই থাকবে বাংলাদেশের শাসনভার। বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলো এ নির্বাচন বর্জন করেছে। ২৮টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী ১ হাজার ৫৩৪ জন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ৪৩৬ জন। গত ১৫ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করেন। সেই অনুযায়ী ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা প্রচার শুরু করেন, যা শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় শেষ হয়েছে। এক নজরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৪ ভোটগ্রহণের সময়   রোববার সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। আসন এক প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় ৩০০ আসনের মধ্যে রোববার ভোট হবে ২৯৯ আসনে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনে পরে ভোটগ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন। মোট ভোটার নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। এর মধ্যে ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন পুরুষ আর ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন নারী। এ ছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারের সংখ্যা ৮৫২। কেন্দ্র ও ভোটকক্ষ ৪২ হাজার ১০৩টি কেন্দ্রে ভোটকক্ষ থাকবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১২টি। যেভাবে ভোট   এবার সব আসনেই সনাতন পদ্ধতিতে ব্যালট পেপার ব্যবহার করে ভোটগ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন। ফল ঘোষণা   ভোট গণনার কাজ শেষ হওয়ার পরপরই প্রত্যেক প্রিসাইডিং অফিসার ব্যবহৃত ব্যালট পেপার ভর্তি সিলমোহরকৃত বিভিন্ন ধরনের প্যাকেট, ভোট গণনার বিবরণী ও ব্যালট পেপারের হিসাব সরাসরি অথবা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের মাধ্যমে রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠাবেন। তিনি প্রিসাইডিং অফিসারদের কাছ থেকে প্রাপ্ত ফল যোগ করে প্রত্যেক প্রার্থীর ফল নির্ধারণ করবেন। প্রতিদ্বন্দ্বী এবার নির্বাচনী লড়াইয়ে রয়েছেন ১৯৭০ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে ১ হাজার ৫৩৪ জন দেশের ২৮টি রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থী আর বাকি ৪৩৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। কোন দলের কত প্রার্থী এবারের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সংখ্যা ২৬৬। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির ২৬৫ জন, তৃণমূল বিএনপির ১৩৫ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ৯৬ জন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ৫৬ জন।  নির্বাচনে বিধিনিষেধ ৭২ ঘণ্টা মোটরসাইকেল ও ২৪ ঘণ্টা সর্বসাধারণের যান চলাচলের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ সময় কেবল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী, প্রশাসনের সদস্য ও অনুমোদিত পর্যবেক্ষক, জরুরি সেবার যানবাহন, ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও অভিন্ন কাজে ব্যবহৃত জিনিসপত্র এবং সংবাদপত্র বহনকারী সব ধরনের যানবাহন, দূরপাল্লার যানবাহন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের এজেন্টদের ক্ষেত্রে এই বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে। সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী, জাতীয় মহাসড়ক, প্রধান আন্তঃজেলা রুট, মহাসড়ক এবং প্রধান মহাসড়কের সংযোগ সড়কের ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ শিথিল করা হবে। পর্যবেক্ষণ নির্বাচন কমিশন ১৮৬ জন পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিককে অনুমোদন দিয়েছে। তাদের মধ্যে ১২৭ জন পর্যবেক্ষক আর ৫৯ জন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের কর্মী। এ ছাড়া নির্বাচন পর্যবেক্ষণে দেশি ২০ হাজার ৭৭৩ জন পর্যবেক্ষককে অনুমোদন দিয়েছে ইসি। তাদের মধ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে ৪০টি পর্যবেক্ষক সংস্থার ৫১৭ জন এবং স্থানীয়ভাবে ৮৪টি পর্যবেক্ষণ সংস্থার ২০ হাজার ২৫৬ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করবে। এবারের নির্বাচনে বাজেট এবারের নির্বাচনে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এ নির্বাচনে আসনপ্রতি সাত কোটি টাকার বেশি ব্যয় করবে ইসি। এ ব্যয়ের তিন ভাগের দুই ভাগ রাখা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য।
০৬ জানুয়ারি, ২০২৪

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৭ জানুয়ারি
জল্পনা-কল্পনার পর নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।  বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় বিটিভিতে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণের মাধ্যমে তপশিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।  ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারির ৭ তারিখে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।  এ ছাড়াও মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ৩০ নভেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। যা যাচাই-বাছাই করা হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে। সেই সঙ্গে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।   এ সময় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সিইসি সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। এ ছাড়াও সংবিধান ও আইনের আলোকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন তিনি। এর আগে বিকেল ৫টায় ভোটগ্রহণের দিন ঠিক করতে বৈঠকে বসেছিল কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন।  বৈঠকে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর ও মো. আনিছুর রহমান এবং ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম উপস্থিত ছিলেন।  গত ৯ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর সিইসি প্রথমবারের মতো জানান, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ অথবা দ্বিতীয় সপ্তাহে ভোট হতে পারে। এ ছাড়াও সূত্র জানায়, গত বছর দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই বর্তমান নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনসহ সার্বিক কর্মপরিকল্পনার খসড়া রোডম্যাপ তৈরি করে। সেখানে ২০২৪ সালের ৪ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের সম্ভাব্য দিন হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। ওই তারিখটি ধরেই ইসির পরবর্তী কর্মকাণ্ড এগিয়ে নেওয়া হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনাররাও ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ বা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোট এবং নভেম্বরের প্রথমার্ধে তপশিল হবে বলে নানা সময় বক্তব্য দিয়েছেন। ৪ জানুয়ারি একটি বৃহৎ ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী হওয়ায় ভোটের তারিখ এক দিন এগিয়ে ৩ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়। প্রায় দেড় বছরে পরিবর্তিত রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ভোটের সেই তারিখ থেকে সরে আসে কমিশন। এসব জল্পনা-কল্পনা শেষে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হলো। 
১৫ নভেম্বর, ২০২৩
X