মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
সংসদে ধর্মমন্ত্রী / হজ করতে নয়, সরকারি কর্মচারীদের সৌদি পাঠানো হয় হাজিদের খেদমতে
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হজের উদ্দেশে পাঠানো হয় না উল্লেখ করে ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেছেন, হজ ব্যবস্থাপনা ও হাজিদের সেবা প্রদানের দায়িত্ব পালনের জন্য বিভিন্ন টিমে সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীগণকে সৌদি আরবে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার (ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে ঢাকা-১৯ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুহম্মদ সাইফুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান তিনি। সাইফুল ইসলাম তার প্রশ্নে বলেন, প্রতিবছর সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী সরকারি টাকায় হজে যায়। সরকারি টাকা জনগণের টাকা। অন্যের টাকায় হজ সঠিক হবে কি না এবং যেসব কর্মকর্তা ও কর্মচারী হজে যায় তারা হাজিদের কতটুকু খেদমত করে? জবাবে ধর্মমন্ত্রী বলেন, ‘মিনা-আরাফা মুজদালিফা-জামারা এবং মক্কা ও মদিনায় হাজিদের সেবার উদ্দেশ্যে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের (হজ প্রতিনিধি টিম, হজ প্রশাসনিক টিম, হজ মেডিকেল টিম, হজ কারিগরি টিম এবং হজ প্রশাসনিক সহায়তাকারী) বিভিন্ন টিমে সৌদি আরব প্রেরণ করা হয়ে থাকে। সরকারি টাকায় হজ করতে তাদের পাঠানো হয় না।’ বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও বয়স্ক হাজিদের চিকিৎসাসেবাসহ সব ক্ষেত্রে টিমের সদস্যরা হাজিদের যথাযথ খেদমত করে থাকেন বলে দাবি করেন ধর্মমন্ত্রী। তিনি বলেন, দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মশিউর রহমান মোল্লা সজলের এক প্রশ্নের জবাবে ফরিদুল হক খান বলেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় রিয়ালের মূল্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, তাই সরকারের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হজের ব্যয় কমানো সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম হজে প্রেরণকারী দেশ। ২০২৪ সালে বাংলাদেশের হজযাত্রীর কোটা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮। বিগত বছরগুলোর মতো ২০২৪ সালেও যাতে পূর্ণ কোটায় হজযাত্রী হজে যেতে পারেন, সে জন্য ২০২৩ সালের হজের চেয়ে ৯২ হাজার ৪৫০ টাকা কমিয়ে ২০২৪ সালে হজে ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা মূল্যের সাধারণ হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। যাতে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ হজে যেতে পারে। মন্ত্রী আরও বলেন, সৌদি আরবে মক্কা ও মদিনায় অনেক এলাকায় বাড়ি ও হোটেল ভেঙে ফেলায় এ বছর বাড়ি ভাড়া ব্যয় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া মিনায় মিনা আরাফায় তাঁবু ভাড়াসহ মেয়াল্লেম ফি বেড়েছে। এসব কারণে সরকারের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হজের ব্যয় আর কমানো সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, অধিক সুযোগ-সুবিধা আশা করেন এই রকম হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের জন্য বিশেষ প্যাকেজের ব্যবস্থা রয়েছে। সরকারি মাধ্যমের বিশেষ প্যাকেজের মূল্য ৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজের প্রশ্নের উত্তরে ধর্মমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে প্রায় তিন লাখ মসজিদ রয়েছে। এসব মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনের সংখ্যা প্রায় ৭ লাখ। বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই বৃহৎ জনবলের ভাতা দেওয়া আপাতত সম্ভব নয়। ভবিষ্যতে এ বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিনের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, সরকারের নীতি আদর্শের কারণে দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতির উন্নতি হচ্ছে।  দেশে মোট নদী ১ হাজার ৮টি সরকারদলীয় সংসদ সদস্য এম আব্দুল লতিফের প্রশ্নের উত্তরে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নদী কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট নদীর সংখ্যা ১০০৮। জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রবহমান নদী রয়েছে ৯৩১টি। নাব্য হারিয়েছে এমন নদীর সংখ্যা ৩০৮। নাব্য হারানো নদীর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৮৫টি, খুলনা বিভাগে ৮৭টি, রংপুর বিভাগে ৭১টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৬টি, রাজশাহী বিভাগে ১৮টি, সিলেট বিভাগে ১০টি এবং চট্টগ্রাম বিভাগে ১১টি। ১৫৭ দেশে ওষুধ রপ্তানি হয় ঢাকা-১৯ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন বলেন, বাংলাদেশ ওষুধ শিল্পে উত্তরোত্তর উন্নতি করেছে। দেশের মোট চাহিদার ৯৮ শতাংশ ওষুধ এখন দেশেই উৎপাদিত হয়। বিশ্বের ১৫৭টি দেশে বাংলাদেশের উৎপাদিত প্রায় সব ওষুধই রপ্তানি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশে উৎপাদিত ওষুধ বিদেশে রপ্তানিতে উৎসাহিত করতে সরকারিভাবে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে চলতি বছর ১০ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার খানের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে প্রায় ৫৯০০ কোটি ৫৪ লাখ ৫৬ হাজার ৯০৩ টাকার ওষুধ রপ্তানি করা হয়েছে। স্বতন্ত্র এমপি মো. আবদুল্লাহর প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রায় ৩২ প্রকারের ওষুধ ও সরকারি হাসপাতালকে ১০৫ প্রকারের ওষুধ বিনা মূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে। সরকারদলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন জানান, গত ১ জানুয়ারি ২০২৩ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১ হাজার ৭২১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X