পবিপ্রবির নিয়োগে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তদন্তে ইউজিসি
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) অনুমোদনহীন নিয়োগ, বিশ্ববিদ্যালয় নীতিমালা ভঙ্গ করে নিয়োগ, পদবিহীন নিয়োগ, সংশ্লিষ্ট পদে আবেদন না করেও নিয়োগ ও নিয়োগের মানদণ্ডসহ নানাবিধ অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। জানা যায়, ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুসারে কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ মোট ৩৯ জনের নিয়োগের কথা থাকলেও গত ২ ডিসেম্বর রিজেন্ট বোর্ডে সর্বমোট ৫৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। মূলত, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ছেলেসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের পরিবারের সদস্যদের নিয়োগ দেওয়া হয়। পাশাপাশি এ নিয়োগে অনুমোদনহীন পদে নিয়োগসহ নানাবিধ অভিযোগ ওঠে, যা পরবর্তীতে দেশের প্রথম শ্রেণির গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়। এসব অভিযোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা (মাউশি) বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগে অনিয়মের প্রেক্ষিতে গত ১৪ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে ওই বিভাগকে অবহিত করার নির্দেশ প্রদান করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সচিব ড. ফেরদৌস জামানকে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অনান্য সদস্যরা হলেন, ইউজিসির অর্থ ও হিসাব বিভাগের উপপরিচালক মো. আব্দুল আলীম ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপপরিচালক মো. আমিরুল ইসলাম শেখ। এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে ইউজিসি সচিব এবং তদন্ত কমিটির আহবায়ক ড. ফেরদৌস জামান জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পবিপ্রবির সাম্প্রতিক নিয়োগে অনিয়ম হওয়ায় তা তদন্তের নির্দেশ দিয়ে চিঠি এসেছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য কমিশন আমাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে। আমরা দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দিব।
০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

বেগম রোকেয়ায় শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও লোকপ্রশাসন বিভাগের সভাপতি আসাদুজ্জামান মণ্ডল আসাদকে নিয়মবহির্ভূতভাবে সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়ে রেজিস্ট্রারকে চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি, এ নিয়োগ নিয়ম মেনেই হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে গত ৭ ডিসেম্বর দুদক, শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাবিউর রহমান প্রধান। এরপর ১৪ ডিসেম্বর ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেয় ইউজিসি। এতে প্রতিবেদন দিতে ৭ কর্মদিবস সময় বেঁধে দেওয়া হয়। ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর লোকপ্রশাসন বিভাগের শূন্যপদে দুজন সহযোগী অধ্যাপক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। শর্তে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণির স্নাতকোত্তর ডিগ্রিসহ পিএইচডি এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে চার বছরসহ কমপক্ষে সাত বছরের সক্রিয় শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়। অথবা বর্ণিত যোগ্যতাসহ এমফিল ডিগ্রিধারীদের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে ৫ বছরসহ মোট ১০ বছরের শিক্ষকতার বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। পরে আবেদনগুলোতে প্রার্থীদের সঠিক যোগ্যতা আছে কি না, তা যাচাই করতে ওই বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির কাছে পাঠানো হয়। তবে আবেদনকারী আসাদুজ্জামান ২০২২ সালের ১৩ ডিসেম্বর প্ল্যানিং কমিটির সভায় নিজেই ওই কমিটির সভাপতি থেকে তার চাকরির বয়স ৮ বছর ১ মাস হলেও নিজেকেসহ আরও তিনজনকে যোগ্য প্রার্থী ঘোষণা করে বোর্ডের কাছে সুপারিশ করেন। এরপর গত ২৭ ফেব্রুয়ারি উপাচার্য প্রফেসর হাসিবুর রশীদ বোর্ডের তারিখ নির্ধারণ করেন। তবে এমন সুপারিশের খবর প্রকাশিত হলে বোর্ড স্থগিত করে তার ব্যাখ্যা চায় ইউজিসি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, ওই বিভাগে শিক্ষক সংকট থাকায় আবেদনকারীরাই প্ল্যানিং কমিটির সভাপতি ও সদস্য ছিলেন। এরপর চলতি বছরের ১৩ জুলাই নিয়োগ বোর্ড হয়। তবে এ বোর্ডে যোগ্য চারজনের মধ্যে মাত্র দুজন উপস্থিত হন, তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এতে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত যোগ্যতা না থাকলেও আসাদুজ্জামানকে নিয়োগের সুপারিশ করে বোর্ড। পরে তার নিয়োগটি অনুমোদনের জন্য ২০ জুলাই ৯৬তম সিন্ডিকেটে তোলা হলে যোগ্যতা না থাকায় বিষয়টি ফেরত পাঠানো হয়। আইন অনুযায়ী, বাছাই বোর্ডের সুপারিশ সিন্ডিকেটে পাস না হলে বিষয়টির তথ্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাতে হবে। সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেটাই চূড়ান্ত হবে। তবে সেই আইন ভেঙে পছন্দের প্রার্থী তথা আসাদুজ্জামানকে নিতেই আবেদনটি ফের বাছাই বোর্ডে পাঠানো হয়। এরপর উপাচার্য গত ২৩ সেপ্টেম্বর বোর্ড আহ্বান করে তাকেই নিয়োগের সুপারিশ করেন। অভিযোগ রয়েছে, ৯৬তম সিন্ডিকেটে আপত্তি তোলা সদস্যদের অনুপস্থিতিতে ২৪ সেপ্টেম্বর ৯৮তম সিন্ডিকেট সভায় তা অনুমোদন করে ওইদিনই আসাদুজ্জামানকে যোগদান করানো হয়। বিষয়টি নিয়ে ক্যাম্পাসে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। এরপর গত ১০ অক্টোবর ইউজিসিতে লিখিত অভিযোগ করেন শিক্ষক তাবিউর রহমান প্রধান। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১৪ ডিসেম্বর পৃথক দুটি চিঠি পাঠায় ইউজিসি। একটিতে তাবিউর রহমানকে আসাদুজ্জামানের নিয়োগে অনিয়মের বিষয়টি পুনরায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দিতে বলা হয়। অন্যদিকে তার অভিযোগ আমলে নিয়ে উত্থাপিত অভিযোগের ব্যাখ্যা চেয়ে রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আলমগীর চৌধুরীকে জবাব দিতে বলা হয়। আসাদুজ্জামান মণ্ডল জানান, আইন অনুযায়ী বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির সভাপতি হন ওই বিভাগের প্রধান। তাই নিয়ম অনুযায়ী আমি সভাপতি হয়েছি। আমাকে সাময়িক হয়রানির জন্য এ অভিযোগ করা হচ্ছে। উপাচার্য হাসিবুর রশীদকে ফোন করা হলে বিষয়টি জেনেই মিটিংয়ে আছি বলে ফোন কেটে দেন। অবশ্য আর কল রিসিভ করেননি তিনি। রেজিস্ট্রার আলমগীর চৌধুরী জানান, আমার মনে হয় তার নিয়োগে অনিয়ম হয়নি। বিশেষ বিবেচনায় এসব ক্ষেত্রে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। আসাদুজ্জামানের ক্ষেত্রে কী হয়েছে, তা আমার এই মহূর্তে জানা নেই।
২৪ ডিসেম্বর, ২০২৩

বিমানে পাইলট নিয়োগে অনিয়ম তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
পাইলট নিয়োগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স আন্তর্জাতিক ও নিজস্ব নিয়মনীতির লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে তদন্ত শেষে আগামী এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিতে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ বিমানের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও সিভিল এভিয়েশনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে যুক্ত করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে রুলও জারি করেছেন আদালত। রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. তানভীর আহমেদ। রিটে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন আদালত। পাইলট নিয়োগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স আন্তর্জাতিক ও নিজস্ব নিয়মনীতির লঙ্ঘন করেছে—এমন অভিযোগ তদন্তে স্বাধীন কমিটি গঠন করতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। জনস্বার্থে গত ২৭ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. তানভীর আহমেদ ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠান। নোটিশ পাওয়ার দুই দিনের মধ্যে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠনে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছিল। নোটিশ পাওয়ার পরও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় রিটটি করা হয়। রিটে পাইলটদের সংগঠন বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) পাইলট নিয়োগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স আন্তর্জাতিক ও নিজস্ব নিয়মনীতির চরম লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করে। পাইলট হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে বিমানের অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিবারের সদস্যকে। বিমানের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে এ নিয়োগের তদন্ত চায় বাপা। এর আগে বিষয়টি তদন্তের দাবি করে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বরাবর একটি আবেদনপত্র জমা দেয় বাপার নির্বাহী কমিটি। একইভাবে এর প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে বিমানের প্রশাসন ও ফ্লাইট অপারেশন বিভাগের পরিচালকদের কাছে।
১৪ আগস্ট, ২০২৩
X