আদিবাসী ও সংখ্যালঘুবিষয়ক সংসদীয় ককাস পুনর্গঠন সভা অনুষ্ঠিত
আদিবাসী ও সংখ্যালঘুবিষয়ক সংসদীয় ককাস পুর্নগঠন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সংসদের মেম্বার্স ক্লাবে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন, আব্দুল মান্নান, আরমা দত্ত, পংকজ দেবনাথ, ননী গোপাল মন্ডল, ঊষাতন তালুকদার, আ্যডভোকেট রানা দাশগুপ্ত , রাজা দেবাশীষ রায়, ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, কাজল দেবনাথ, নির্মল রোজারিও, গৌতম দেওয়ান, গৌতম চাকমা, আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী প্রমুখ। সভায় আ ক ম মোজাম্মেল হককে সভাপতি ও র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে নির্বাহী সভাপতি ও অধ্যাপক ড. মেজবা কামালকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়। আদিবাসী ও সংখ্যালঘুবিষয়ক সংসদীয় ককাস এই বৈঠকের আয়োজন করে।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

ব্যাংক একীভূতকরণ ও ব্যাংকিং শিল্পের পুনর্গঠন
করোনা পরবর্তী সময়ে বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থায় মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যার ফলে বাংলাদেশে একসময়ের লাভজনক, দ্রুত বর্ধনশীল, গতিশীল এবং অত্যন্ত উদ্ভাবনী ব্যাংকিং খাত ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ব্যাংকিং সেক্টরে নন পারফর্মিং অ্যাসেট বৃদ্ধি পায়, তারল্য সংকট দেখা দেয়। সেজন্য, ব্যাংকিং খাতকে সংস্কারের উদ্দেশ্যে দেশের সব দুর্বল বা খারাপ ব্যাংকগুলোকে সবল বা ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত (মার্জ) করার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।  ইতিমধ্যে মূলধনের পর্যাপ্ততা, শ্রেণিকৃত ঋণের মাত্রা, ঋণ-আমানত অনুপাত এবং প্রভিশনিং বা নিরাপত্তা সঞ্চিতির পরিমাণ বিবেচনায় নিয়ে কয়েকটি দুর্বল ব্যাংককে চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের ব্যাংকিং খাত সংস্কারের জন্য এমন পরিরকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে থাকছে খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ ও ভেঙে পড়া করপোরেট সুশাসন ফেরানোর তাগিদ। পাশাপাশি  দুর্বল ব্যাংকগুলোর উন্নতি না হলে সেগুলো অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত (মার্জ) করার বার্তা রয়েছে। যার প্রথম উদ্যোগ হিসেবে এক্সিম ব্যাংক এবং পদ্মা ব্যাংক একীভূতকরণ। গত ১৪ মার্চ ব্যাংক দুটি একীভূতকরণ করা হয়। পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক ও বিডিবিএল ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংক এবং ইউসিবি ও ন্যাশনাল ব্যাংক একীভূত করার ঘোষণা দেওয়া হয়। বিভিন্ন কারণে ব্যাংকগুলো সংকটের সম্মুখীন হতে পারে। হতে পারে ব্যাংক রান কিংবা নন পারফর্মিং এসেট বৃদ্ধির মতো ঘটনা। কিন্তু বাংলাদেশে ব্যাংক রানের মতো ঘটনা না ঘটলেও কিছু ব্যাংকে নন পারফর্মিং এসেট তীব্র আকার ধারণ করেছে। মন্দ ঋণগুলো থেকে টাকা আদায় দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে। কেউ কেউ ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি, আবার কেউ কেউ কৌশলগত ঋণখেলাপি হচ্ছে। স্বভাবত এ সকল  নন পারফর্মিং এসেট আর্থিক স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে। তবে, ব্যাংক একত্রীকরণ নীতিগুলি স্বতন্ত্র নীতি নয় বরং মুদ্রা ও রাজস্ব নীতির অন্যান্য দিকগুলোর সঙ্গে একত্রে প্রণয়ন করা হয়। তাই ব্যাংক একত্রীকরণের ফলে খেলাপি ঋণের সংখ্যা হ্রাস পায় (উন্নত ঋণ স্ক্রীনিং এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা) এবং অর্থনীতির আর্থিক স্থিতিশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে। কারণ ভালো ব্যাংক ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি যদি আর্থিকভাবেও ভালো হয়, তাহলে সমস্যাগ্রস্ত ব্যাংককে বাঁচাতে পারে। ২০২২ সালে একটি গবেষণায় একীভূত হওয়া ব্যাংকগুলো থেকে দুর্বল ব্যাংকের নন পারফর্মিং অ্যাসেট (NPA) নিয়ে গবেষণা করা হয়। গবেষণায় দুর্বল একত্র হওয়া ব্যাংকগুলোর NPA পূর্বের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ হ্রাস পায়। এ ছাড়াও একীভূত হবার ফলে বৃহত্তর ব্যাংকগুলোর ব্যর্থতার কম সম্ভাবনা থাকে এবং ঋণগ্রহীতাদের ভবিষ্যতে ঋণ প্রবাহ অব্যাহত থাকে। তাই লোন পারফরম্যান্সের উন্নতি দুর্বল একীভূত ব্যাংকের ঋণগ্রহীতাদের দ্বারা পরিচালিত হতে পারে যেখানে কৌশলগত ডিফল্ট হবার সম্ভাবনা কমে আসে। ২০০৭ সালে ফিলিপ বন্ড এবং অশোক রাইয়ের একটি গবেষণায় ‘Borrower Run’- কে ব্যাংকের স্বাস্থ্যের অবনতির অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ঋণগ্রহীতা যে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করে, প্রাথমিকভাবে অনুমান করে ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের ঋণ গ্রহণ করতে পারবে। কিন্তু যদি মনে করে শেষ পর্যন্ত ব্যাংকটি ভেঙে পড়বে, তাহলে ভবিষ্যতে ব্যাংকটি থেকে ঋণ পাওয়ার আশা কমে যাবে।  সে পরিস্থিতিতে অনেক ঋণগ্রহীতার ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা থাকলেও ঋণ পরিশোধ করতে চায় না কিংবা বিলম্বে ঋণ পরিশোধ করে যাকে ‘Borrower Run’ বলে। ‘Borrower Run’ কে কৌশলগত খেলাপিও বলা হয়। ফলে কিছু ঋণগ্রহীতার খেলাপি হওয়ার প্রত্যাশা বৃহত্তর স্কেলে খেলাপি ঋণকে আরও বাড়িয়ে তুলে। ঋণগ্রহীতার আস্তার সংকটের জন্যই এমন হয়। ১৯৯৪ সালে ম্যাক্সিকান ব্যাংকগুলোতে বড় ধরনের সংকট দেখা দিয়েছিল। তার অন্যতম কারণ ছিল কৌশলগত খেলাপি এবং ঋণগ্রহীতাদের সমন্বয় ব্যর্থতা। সেজন্য, শক্তিশালী ব্যাংকের সাথে দুর্বল ব্যাংকের একীভূতকরণের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধের শৃঙ্খল উন্নত হতে পারে এবং ঋণগ্রহীতার আস্তার সংকট কাটিয়ে উঠতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে করোনা পরবর্তী সময়ে মূল্যস্ফীতির কারণে গ্রাহকের চাহিদার জন্য অর্থের প্রয়োজন পড়ে। নগদ টাকার সংকট মেটাতে গ্রাহকরা সিভি ব্যাংকে গচ্ছিত রাখা আমানত ভাঙতে শুরু করে। ব্যাংকটি নগদ তহবিল জোগান দিতে সমস্যায় পড়ে। খবর ছড়িয়ে পড়ে, ব্যাংকটির যতটা অর্থ প্রয়োজন, ততটা জোগাড় করতে পারছে না। ফলে ব্যাংকে তারল্য সমস্যা সৃষ্টি হয়ে ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। মূলত ব্যাংকের প্রতি আমানতকারীদের আস্তার সংকটের জন্য এমন হয়। তাই, পরবর্তীতে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক ফার্স্ট সিটিজেন ব্যাংকের সাথে, সিগনেচার ব্যাংক ফ্ল্যাগস্টার ব্যাংকের সাথে এবং ফার্স্ট রিপাবলিক ব্যাংক চেজের সাথে একীভূত করা হয়।  ব্যাংকিং সেক্টরের সামগ্রিক পতন রোধ করতে ব্যাঙ্কগুলিকে প্রায়শই বড় এবং আরও স্থিতিশীল ব্যাঙ্কগুলোর সঙ্গে একীভূত করা হয়। কারণ, একত্রীকরণ সত্ত্বা দুটি পূর্বের পৃথক প্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চ কর্মক্ষমতার দিকে পরিচালিত করে। এছাড়াও ব্যাংকগুলোর স্থিতিস্থাপকতা বাড়ানোর জন্য একীভূত করা প্রয়োজন। মূলত একীভূতকরণ ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা বাড়ানোর পাশাপাশি আর্থিক বাজারের গতিশীলতাকেও প্রভাবিত করে।  সে লক্ষ্যে ভারত ও চীনের অর্থনীতিতে ব্যাংকের একত্রীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভারতে পাবলিক সেক্টর ব্যাংকগুলোকে একত্র করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়। পদক্ষেপগুলির লক্ষ্য ছিল ভালো, দক্ষ এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার জন্য বড় আকারের ব্যাংক তৈরি করা। জাপানে ১৯৯০ দশকের শেষের দিকে আর্থিক সংকটের পর সরকার ব্যাংক একত্রীকরণে পদক্ষেপ নেয়। স্কেল অর্থনীতির মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন এবং ভবিষ্যতে ব্যাঙ্কগুলোর স্থিতিস্থাপকতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এটি করা হয়েছিল।  মূলত একত্রীকরণ ব্যাঙ্কিং সেক্টরের কাঠামোকে পরিবর্তন করে যা ব্যাংকের ঋণ প্রদানের আচরণ, বাজারের প্রতিযোগিতা এবং মুদ্রানীতি ট্রান্সমিশন মেকানিজমকে প্রভাবিত করে। যদিও ব্যাংক একীভূতকরণে সাধারণ গ্রাহকদের নেতিবাচক ধারণা তৈরি হতে পারে। তাদের রক্ষিত আমানত নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে পারে। যে সব গ্রাহক আর্থিক পরিষেবার ওপর নির্ভর করত তাদের অনেকেই ভাবতে পারে সেগুলো নাও থাকতে পারে। তবে সে উদ্বেগগুলো কম বাস্তবতা। ব্যাংক একীভূতকরণ শুধু ব্যাংকিং শিল্প জগতে ব্যাংকের সংখ্যা হ্রাস করার একটি পন্থা নয় বরং অন্তর্নিহিত সমন্বয়, দক্ষতা বৃদ্ধিসহ অর্থ সরবরাহ, সুদের হার এবং মূল্যস্ফীতির মতো কারণগুলোকে প্রভাবিত করে। যার ফলে সামষ্টিক অর্থনীতিতে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। একীভূতকরণের মূল চালিকাশক্তি ভৌগোলিক বৈচিত্র্য, বর্ধিত অর্থনীতি, বাজারের অংশীদারিত্ব যা একটি ব্যাংকের সম্প্রসারণকে ত্বরান্বিত করে এবং নতুন শাখা স্থাপনের বিকল্প হতে পারে। একই শিল্পের মধ্যে যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে তা হ্রাস পাবে, প্রযুক্তিগত দক্ষতা উন্নত হবে। সৃষ্ট নতুন ব্যাংক গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে আরও পণ্য এবং পরিষেবা অফার করতে পারে। যদিও, মূল লক্ষ্য খারাপ ঋণের ফলে উদ্ভূত আর্থিক সংকট কমানো এবং তা থেকে বেরিয়ে আসা। একীভূতকরণের সঙ্গে ব্যাংকি শিল্পের পুনর্গঠন লাভজনকতার পাশাপাশি গ্রাহক পরিষেবা আরও বিস্তৃত হবে। তবে, ব্যাংকগুলো সকল গ্রাহকদের শক্তিশালী স্মার্ট ব্যাংকিং প্রতিশ্রুতি দিয়ে একীভূতকরণের চেষ্টা করে। সঠিকভাবে তা না হলে একীভূতকরণের উদ্দেশ্য ম্লান হয়ে যেতে পারে। কারণ, ব্যাংক একীভূতকরণ একটি আঁটসাঁট সময়সীমার মধ্যে গ্রাহকদের পরিবর্তন ঘটায়। অন্জন কুমার রায়: ব্যাংক কর্মকর্তা
২৬ এপ্রিল, ২০২৪

একনেক পুনর্গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) পুনর্গঠন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কমিটির চেয়ারপারসন এবং অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বিকল্প চেয়ারপারসন। সোমবার (২২ জানুয়ারি) এ কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। ১৫ সদস্যের কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়, সকল বিনিয়োগ প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) বিবেচনা ও অনুমোদন; সরকারি খাতে ৫০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে মোট বিনিয়োগ ব্যয় সংবলিত প্রকল্পগুলোর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভার সুপারিশ বিবেচনা ও অনুমোদন; উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা; বেসরকারি উদ্যোগ, যৌথ উদ্যোগ অথবা অংশগ্রহণমূলক বিনিয়োগ কোম্পানিগুলোর প্রস্তাব বিবেচনা; দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পরিবীক্ষণ এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারণী বিষয়সমূহ পর্যালোচনা এবং বৈদেশিক সহায়তার বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা বিবেচনা ও অনুমোদন এবং এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অগ্রগতি পর্যালোচনা। প্রজ্ঞাপনে আরও জানানো হয়, কমিটির বৈঠক প্রয়োজনানুসারে অনুষ্ঠিত হবে। পরিকল্পনা বিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা করবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আগের প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। 
২২ জানুয়ারি, ২০২৪

কর কাঠামো পুনর্গঠন চান ব্যবসায়ীরা
বেসরকারি খাতকে এগিয়ে নিতে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিত এবং সহজ করার পাশাপাশি ট্যাক্স জিডিপি বাড়াতে কর কাঠামো পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছে দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) ব্যবসায়ীরা। গতকাল মঙ্গলবার এফবিসিসিআই কার্যালয়ে ‘বিল্ডিং এ রেজিলিয়েন্ট ইকোনমি ফর ভিশন ২০৪১: কি চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক কর্মশালায় এ দাবি জানান সংগঠনটির সভাপতি মাহবুবুল আলম। এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অন্যতম চ্যালেঞ্জ বেসরকারি বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করা। আর এজন্য দীর্ঘমেয়াদি ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিত ও সহজ করা জরুরি। কভিড-পরবর্তী পরিস্থিতি, বর্তমান বিশ্ব ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, রাশিয়া-ইউক্রেন এবং মধ্যপ্রাচ্যে সংঘটিত যুদ্ধে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটে বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন ব্যবসায়ীরা। এ পরিস্থিতিতে রূপকল্প-২০৪১ অনুযায়ী স্থিতিশীল অর্থনীতি অর্জনে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক খাতকে সুসংগঠিত করতে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বিত প্রচেষ্টায় কিছু উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। বিশেষ করে আর্থিক কার্যক্রম স্মার্টভাবে পরিচালনার জন্য সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বেশকিছু করণীয় ও চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করেন মাহবুবুল আলম। কর্মশালার প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোয় সাত লাখ আইটি এক্সপার্ট দরকার। কয়েক বছর পর হয়তো ১০ লাখ দরকার হবে। কিন্তু দক্ষতার অভাবে আমরা পাঠাতে পারছি না। দক্ষ লোকবল না গড়ে উঠলে ভবিষ্যতে উচ্চপ্রযুক্তি ব্যবহারে বিদেশ থেকে লোক আনতে হবে বলেও আশঙ্কা তার। শিক্ষার মান বাড়ানো জরুরি উল্লেখ করে এনবিআরের সদস্য মাসুদ সাদিক বলেন, প্রতিবছর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার নিয়ে যায় বিদেশিরা। অথচ দেশের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা শেষে চাকরি পাচ্ছে না। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইর প্যানেল উপদেষ্টা ড. মাশরুর রিয়াজ। প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন ফিকির সভাপতি জাভেদ আক্তার ও এমসিসিআইর সভাপতি কামরান টি রহমান। উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহসভাপতি আমিন হেলালী, সহসভাপতি মুনির হোসেন, পরিচালক প্রমুখ।
০৩ জানুয়ারি, ২০২৪

পিপলস লিজিংয়ের পর্ষদ পুনর্গঠন
পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডের (পিএলএফএসএল) পর্ষদ পুনর্গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। কোম্পানিটির সাত সদস্যের নতুন পর্ষদের চেয়ারম্যান করা হয়েছে সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ হাসান শহীদ ফেরদৌসকে। পর্ষদ সদস্যরা হলেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব কাজী আনোয়ারুল হক, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাশেদ ইমাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়া, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শফিকুর রহমান, সদস্য হিসেবে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের আমানতকারীদের প্রতিনিধি আতিকুর রহমান আতিক ও সগীর হোসেন খান। কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করবেন সগীর হোসেন খান। ২০১৯ সালের ১৩ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ১০০ দফায় লেনদেন বন্ধের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ লেনদেন ১২ থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই পিপলস লিজিং অবসায়নের জন্য আদালতে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত পিপলস লিজিংয়ের ঋণখেলাপিদের তলব করেছিলেন। পরে আমানতকারীরা কোম্পানিটি অবসায়ন না করার পক্ষে মত দেন। ২০২১ সালের ২৮ জুন পিএলএফএসএলকে পুনরুজ্জীবিত করার আদেশ দেন হাইকোর্ট। গঠন করে দিয়েছিলেন বোর্ডও। কিন্তু বোর্ড সদস্যদের পদত্যাগসহ বিভিন্ন কারণে পিএলএফএসএলের পর্ষদ পুনর্গঠন করেছেন হাইকোর্ট।
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

জাতিসংঘে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পুনর্গঠন চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থা পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের ফাঁকে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে স্পেন এবং ইউরোপীয় কাউন্সিল আয়োজিত ‘টুওয়ার্ডস এ ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্সিয়াল আর্কিটেকচার’ শীর্ষক একটি উচ্চপর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে এই গুরুত্বারোপ করেন তিনি।  বিশ্বব্যাপী ক্রেডিট রেটিং সিস্টেম পর্যালোচনা করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি বর্তমানে অনেক নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের জন্য তহবিলের সুবিধা সীমিত করেছে।  শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে একমত যে, বৈশ্বিক ক্রেডিট রেটিং সিস্টেম অবশ্যই পর্যালোচনা করা উচিত। বর্তমান রেটিং সিস্টেম অনেক নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশের জন্য তহবিলের সুবিধাকে আরও সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘তাদের ভোটাধিকার, কোটা এবং বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক (এমডিবিএস) এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে (আইএফআইএস) প্রতিনিধিত্বের সীমা তাদের দর কষাকষির ক্ষমতাকেও ক্ষুণ্ণ করে। আমরা প্রায়ই আন্তর্জাতিক পাবলিক ফাইন্যান্সগুলোকে ব্যয়বহুল এবং নাগালের বাইরে দেখতে পাই। ঋণের ঝামেলা এড়াতে আমরা উচ্চ-সুদের ঋণ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করি। বাংলাদেশ কখনোই এর ঋণ পরিশোধে খেলাপি হয়নি এবং আমরা সেই রেকর্ড বজায় রাখার আশা করি।’ আন্তর্জাতিক ফাইন্যান্সিয়াল-আর্কিটেকচারের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং গ্লোবাল সাউথের প্রতিনিধিত্ব করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মতো দেশের উন্নয়ন বিবরণী দেখায় যে, আমরা আমাদের অংশ করতে পারি। আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থার জন্য আমাদের প্রত্যাশার প্রতি সায় দেওয়ার সময় এসেছে। আমরা স্বীকার করি যে, আন্তর্জাতিক ফাইন্যান্সিয়াল-আর্কিটেকচারের জরুরি সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু সংস্কারের প্রকৃতি ও পরিধির বিষয়ে এগ্রিমেন্টের ক্ষেত্রে এখনো সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আর এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছা গুরুত্বপূর্ণ।’  জাতিসংঘ মহাসচিবের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, একটি মৌলিক পরিবর্তন প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী পাঁচ দফা প্রস্তাব পেশ করেন। প্রথম প্রস্তাবে তিনি বলেন, এমডিবি, আইএফআই এবং বেসরকারি ঋণদাতা সংস্থাগুলোকে তাদের অগ্রাধিকারগুলো পুনরায় সাজাতে হবে এবং এসডিজি বাস্তবায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা মোকাবিলার জন্য অতিরিক্ত তহবিল সংগ্রহ করতে হবে। দ্বিতীয়ত এবং তৃতীয় দফা সম্পর্কে তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য স্বল্প ব্যয়ে, রেয়াতি হারে তহবিলের পর্যাপ্ততা প্রয়োজন এবং পছন্দসই উচ্চমানের বিপুল পরিমাণে অনুদান এবং সমস্ত ঋণদানের উপকরণগুলোতে দুর্যোগের ধারা থাকতে হবে যাতে দুর্বল দেশগুলো সংকটকালের ধাক্কা সামলাতে পারে। চতুর্থ দফা সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঋণদাতাদের মধ্যে স্বচ্ছতা ও সমন্বয়ের ভিত্তিতে ন্যায্য ও কার্যকর ঋণ হিসেবে ত্রাণ ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। পঞ্চম এবং শেষ প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটার পরিবর্তে এসডিআর ঋণের সীমা প্রয়োজন এবং সীমাবদ্ধতার ভিত্তিতে সহজ ঋণ প্রক্রিয়ার  মাধ্যমে হওয়া উচিত। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে তার সুষ্ঠু সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য সুনাম কুড়িয়েছে। মহামারির ঠিক আগে আমাদের অর্থনীতি ৮.১৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। স্বাস্থ্য, জীবনযাত্রার ব্যয় এবং জলবায়ু সংকট আমাদের অর্থনীতিকে চাপের মধ্যে ফেলেছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বাংলাদেশ আইএমএফের সঙ্গে ৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, লেনদেনে ভারসাম্য এবং আমাদের উন্নয়ন ব্যয় বজায় রাখার চেষ্টা করছি। আমরা আমাদের দারিদ্র্যের হার ৪১.৯ শতাংশ থেকে ১৮.৭ শতাংশে এবং চরম দারিদ্র্যের মাত্রা ২৫.৫ শতাংশ থেকে ৫.৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছি।’ এই সভা আহ্বান করায় শেখ হাসিনা স্পেনের প্রধানমন্ত্রী ও ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতিকে ধন্যবাদ জানান। এ সময় ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) থিমেটিক অ্যাম্বাসাডর সায়মা ওয়াজেদ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন উপস্থিত ছিলেন।  
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টি বাংলাদেশের পর্ষদ পুনর্গঠন
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সিদ্ধান্তে সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিসিপিবিএল) পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। নতুন পর্ষদে সাতজনকে পরিচালক হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে। সম্প্রতি কমিশনের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। পর্ষদ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন মেজর জেনারেল ওয়াহিদ উজ জামান। ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি থেকে সিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে ফরহাদ আহমেদ এবং উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) হিসেবে আ স ম খায়েরুজ্জামান দায়িত্ব পালন করছেন। নতুন পরিচালকরা হলেন মেজর জেনারেল ওয়াহিদ উজ জামান, সুলতানা আফরোজ, হাবিবুল্লাহ এন করিম, ড. জামাল উদ্দিন, ড. মোহাম্মদ তারেক, ড. আসিফ হোসেন খান ও মোস্তাফিজুর রহমান।
০৫ জুলাই, ২০২৩
X