বুবলীর অভিযোগে দুজনকে সতর্ক করেছে পুলিশ
ঢাকাই চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম বুবলী। শাকিবের হাত ধরে চলচ্চিত্রে এলেও তিনি এখন অনেক নায়কের সঙ্গেই সিনেমা করছেন। তবে মাঝে শাকিবের সঙ্গে বিয়ে ও এক সন্তানের মা হয়েছেন। তবে এসব নিয়ে বির্তক কম নয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রায়ই নানা ধরনের হেনস্থার শিকার হতে হয় এ নায়িকাকে।  অরুচিকর, মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচারের অভিযোগ নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ঢাকাই সিনেমার নায়িকা শবনম বুবলী। গত ২৪ এপ্রিল রাজধানীর ভাটারা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডিএমপির সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ইউনিট চলচ্চিত্র অভিনেতা সুরুজ বাঙ্গালী ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর মৌ সুলতানাকে ডেকে সর্তক করেছে। বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন সাইবার ক্রাইম ইউনিটের এসপি নাজমুল ইসলাম। তিনি জানান, বিষয়টি কগনিজেবল অফেন্স (আমলযোগ্য অপরাধ) না, তাদের ডেকে সতর্ক করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এগুলো করলে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তারা এটা বুঝতে পেরেছেন এবং তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন। একইসঙ্গে তারা কখনই এমন করবেন না বলে গেছেন। ডিএমপির সিটিটিসি বিভাগের সাইবার ইউনিট এক বিবৃতিতে জানায়, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে এখন নানা ধরনের বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন নেটিজেনরা। ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, টুইটার, ভাইবার, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ ইত্যাদির মাধ্যমে তারা সাইবার অপরাধীদের শিকারে পরিণত হচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে সিটিটিসি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনে প্রাপ্ত অভিযোগগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, কিছু ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রোস্টিংয়ের নামে সংস্কৃতি কর্মীদের টার্গেট করে অনবরত বুলিং করছেন এবং কুৎসা রটনা করে চলেছেন। এতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি অভিনয় শিল্পী শবনম বুবলীও এহেন অপরাধের শিকার হোন, তার জিডি ও অভিযোগের ভিত্তিতে একজন পুরুষ অভিনেতা ও একজন নারী কন্টেন্ট ক্রিয়েটরকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে ও এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। সাইবার স্পেসে যে কাউকে হেয় করা অপরাধ ও তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। সংস্কৃতি কর্মী বা সাধারণ ভিক্টিম সবার জন্য আমাদের সাইবার সেবা উম্মুক্ত থাকবে। এদিকে, সাধারণ ডায়েরিতে বুবলী উল্লেখ করেছেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে কিছু ব্যক্তি, অনলাইন পোর্টল ও টিভি চ্যানেল তাদের নিজস্ব ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে আমার নামে বিভিন্ন অরুচিকর, মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রচার করছে। এমন অবস্থায় বিষয়টি সাধারণ ডায়েরিভুক্ত করে রাখা একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করেছি।’ পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ‘প্রতিদিনের চিত্র’, ‘জমশেদ ভাই’, ‘মৌ সুলতানা’, ‘সনি কমিনিকেশন’, ‘এসকে উজ্জল’, সোনিয়া শিমু’, ‘ফেরদৌস কবির’, ‘আবুল হোসাইন তুফান, ‘শাহিনুর আক্তর’, ‘জাহিদুল ইসলাস আপন’সহ ১৫-২০টি ফেসবুক পেজ-ইউটিউব চ্যানেলের নাম উল্লেখ করেছেন বুবলী। তার অভিযোগের তালিকায় আছে দেশের ৪টি গণমাধ্যমেরও নাম।
১ ঘণ্টা আগে

আদালতে মিল্টন সমাদ্দার, কারাগারে আটক রাখার আবেদন
মানবপাচার আইনের আরেক মামলায় রিমান্ড শেষে 'চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। এ সময় তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছে ডিবি পুলিশ।  বৃহস্পতিবার (৯ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট  ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরীর আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। আদালতের মিরপুর মডেল থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা উপপরিদর্শক সাইফুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।  এর আগে গত ২ মে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে জালজালিয়াতির মাধ্যমে মৃত্যু সনদ তৈরি করার অভিযোগে করা মামলায় তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। তিন দিনের রিমান্ড শেষে গত ৫ মে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। তখন এ মামলায় তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর জোনাল টিমের উপপরিদর্শক মোহাম্মদ কামাল হোসেন।  এ ছাড়া মানবপাচার আইনের আরেক মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোসহ সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে ডিবি পুলিশ। পরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরা মাহবুবের আদালত এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখান। ওইদিন দুপুরে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম শান্তা আক্তারের আদালত তার ফের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।  এর আগে রাজধানীর মিরপুর থেকে গত বুধবার রাতে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর জোনাল টিম।  গ্রেপ্তার হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে মিরপুরের পাইকপাড়া এবং বরিশালের উজিরপুরের সাধারণ মানুষজন। এ ছাড়া বুধবার রাতেই রাজধানীতে আনন্দ মিছিল করে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি সংগঠন। গ্রেপ্তারের পর থেকেই ভুক্তভোগীদের অনেকে মিল্টনের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। গত ২৫ এপ্রিল ‘মানবিক মুখোশের আড়ালে ভয়ংকর মিল্টন সমাদ্দার’ এবং ‘জীবনের ধাপে ধাপে প্রতারণা’ শিরোনামে দুটি সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক কালবেলা। এরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। মুখ খুলতে শুরু করেন ভুক্তভোগীরা। এরপর মাঠে নামেন ডজন ডজন সাংবাদিক। উঠে আসে তার একের পর এক ভয়ংকর প্রতারণার আর অপকর্মের তথ্য। প্রসঙ্গত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক কোটি ষাট লাখের বেশি অনুসারী রয়েছে মিল্টন সমাদ্দারের। অভিযোগ রয়েছে এ বিশাল অনুসারীদের কাজে লাগিয়ে তার মূল টার্গেট ছিল বিভিন্ন মানবিক কাজ প্রচার করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করা।
৭ ঘণ্টা আগে

পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সুপার হলেন ৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদের ৭ জনকে পুলিশ সুপার (এসপি) পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।  বুধবার (৮ মে) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা হতে উপসচিব মো. মাহাবুর রহমান শেখ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  পদোন্নতিপ্রাপ্ত ৭ কর্মকর্তা হলেন- দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মুমিনুল করিম, সিএমপির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. আমিনুল ইসলাম, পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আশ্রাফুজ্জামান, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কবির আহম্মেদ, মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব, পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম ও পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সুফি উল্লাহ।  প্রজ্ঞাপনে এসব কর্মকর্তাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর পদোন্নতিপ্রাপ্ত পদে যোগদানপত্র প্রেরণ করতে বলা হয়েছে।  এ ছাড়া জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ যোগদানের তারিখ থেকে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়। 
০৮ মে, ২০২৪

বাকিতে ঘুষ নেওয়া সেই তিন পুলিশ কর্মকর্তা ক্লোজড
‘পুলিশের তিন কর্মকর্তা ঘুষ নেন বাকিতে’ এই শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয় দৈনিক কালবেলায়। এ ঘটনার পরে ঢাকা মহানগর পুলিশের শাহআলী থানার ওই অভিযুক্ত তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে ক্লোজড করা হয়েছে।  তারা হলেন- শাহ আলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. এমাদুল, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কামরুজ্জামান এবং সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) বদরুজ্জামান।  শাহআলী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মওদুদ হাওলাদার কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওসি বলেন, তিন পুলিশ অফিসারকেই ক্লোজড করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে। মিরপুরে একটি জুতার দোকানের কর্মচারী মো. ফরিদকে মাঝ রাস্তায় পথ আটকিয়ে তুলে নিয়ে যায় শাহ আলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. এমাদুল। ফরিদকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর তার স্ত্রীকে ফোন করেন এসআই এমাদুল। দাবি করেন ৫০ হাজার টাকা। জানান এই টাকা না দিলে তার স্বামীকে মাদক মামলায় আসামি করা হবে। পরে স্বামীকে বাঁচাতে ৩০ হাজার টাকা দিতে রাজি হন ফরিদের স্ত্রী।  এমদাদুলের কথামতো রাতেই নগদ ২৫ হাজার টাকা দিয়ে স্বামীকে ছাড়িয়ে নেন তার স্ত্রী। আর ৫ হাজার টাকা বাকি রাখেন তিনি। সেই বাকির ৫ হাজার টাকা দুদিন পরে দিয়ে দেন এসআই এমাদুলকে। ভুক্তভোগী মো. ফরিদ কালবেলাকে বলেন, আমি শাহ আলী মার্কেটের একটি জুতার দোকানে কাজ করি। গত ১৪ রোজায় আমি রাতে দোকান থেকে হেঁটে বাসায় আসিতেছিলাম। তখন সেখান থেকে এসআই এমাদুল  আমারকে ধরে নিয়ে শাহ আলী থানার টিনশেডে নিয়ে যাইয়া, আমারে আটকাইয়া ফালাইছে। আটকাইয়া আমার কয় ফ্যামিলিরে ফোন দে। তারপর আমি আমার ওয়াইফ-রে ফোন দিছি। এরপর এসআই এমাদুল আমার স্ত্রীকে বলে ওনাকে ছাড়াতে হলে ৫০ হাজার টাকা লাগবে। ওনার কাছে মদের বোতল পাইছি। আসলে তারা আমার কাছে কিছুই পায় নাই। আমি পান ছাড়া জীবনে আর কিছুই খাই নাই।  তিনি আরও বলেন, এসআই এমাদুল তখন হাতে লাঠি নিয়ে বলে তোকে হিরোইন মামলা দেব, মারব বিভিন্ন রকমের ভয় দেখায়। তখন আমার স্ত্রী ভয়ে বলে ঠিক আছে ২০ হাজার টাকা দেব। কিন্তু উনি তাতে রাজি হয় না, অনেক মারধোর করছে আমাকে। পরে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে ছাড়ছে। সেই রাতে দিছি ২৫ হাজার। আর বাকি ছিল ৫ হাজার। সেই বাকির ৫ হাজার ২ দিন পরে নিয়েছে।  স্বামীকে বাঁচাতে মাঝরাতে কোলের শিশুকে নিয়ে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব ছিল না ফরিদের স্ত্রীর। তাই বাধ্য হয়ে নিজের কানের দুল বন্ধক রেখে টাকা জোগাড় করেছিলেন তিনি।  ভুক্তভোগী ফরিদের স্ত্রী কুলসুম বেগম কালবেলাকে বলেন, সেই রাতে এমাদুল স্যার আমার জামাইকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর প্রথমে আমাকে কয় ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। আমি কই স্যার গরিব মানুষ এত টাকা কই পামু। তখন কয় টাকা না দিলে হিরোইন মামলা দিয়ে লাইফ শেষ করে দিমু। এটা শুনে তো আমি ভয় পাইয়া যাই। পরে আমি হাতে পায়ে ধরে সেই রাতে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে জামাইরে ছাড়াইয়া আনছি। বাকি ৫ হাজার টাকা পরে দিছি।  শুধু এই স্বামী-স্ত্রীর গল্পই নয়। আরও এক ব্যক্তিকে মামলার ভয় দেখিয়ে তার স্ত্রীর কাছে থেকে দফায় দফায় টাকা নিয়েছেন এসআই এমাদুল।  মোছা. তাসলিমা নামের ভুক্তভোগী ওই নারী কালবেলার কাছে অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী মুরগির গাড়িতে ডিউটি করে। যেহেতু গাড়িতে থাকে তাই হালকা পাতলা নেশা করেই। কিন্তু আমার স্বামীর কারণে এসআই এমাদুল বারবার আমার বাসায় গিয়ে টাকা নিয়ে আসে। এ পর্যন্ত দফায় দফায় কমপক্ষে ৭০ হাজার টাকা নিয়েছে। একদিন আমার ঘরে গিয়ে বলে তল্লাশি করবে। তল্লাশি করে কিছুই পায় নাই। তখন আমার ড্রয়ারে কিস্তির বইয়ের মধ্যে টাকা ছিল সেই টাকাগুলোও নিয়ে গেছে। আমি এত করে বলছি এগুলো কিস্তির টাকা নিয়েন না। তবুও উনি থাবা দিয়ে টাকা নিয়ে পকেটে ঢুকাইয়া ফেলছে। শুধু বাকিতেই আটকে নেই এসআই এমাদুল। রাস্তাঘাট থেকে ধরে নিয়ে হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে পকেটে থাকা সমস্ত টাকা বের করে নেন তিনি। তাতেও কম পড়লে সেই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের ফোন করে ডেকে নিয়ে আদায় করেন আরও টাকা। তার এসব অপকর্মের সঙ্গী একই থানার এএসআই কামরুজ্জামান এবং এএসআই বদরুজ্জামান।  একই ঘটনা ঘটিয়েছেন গত বছরের ১৬ অক্টোবর রাতেও। রিজন নামের এক ছেলেকে গুদারা ঘাটের ৮নং রোডের একটি চায়ের দোকান থেকে তুলে নিয়ে যান এসআই এমাদুল। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন এএসআই কামরুজ্জামান এবং এএসআই বদরুজ্জামান। আটকের খবর পেয়ে ভাইকে বাঁচাতে থানায় যান রিজনের ভাই সোহাগ। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন বন্ধু আল আমিন। সেখানে যাওয়ার পরই এসআই এমাদুল ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সোহাগ ও আল আমিনের হাতে হ্যান্ডকাপ লাগায় এএসআই কামরুজ্জামান। পরে সোহাগের পকেটে থাকা ৮ হাজার টাকা এবং আলামিনের পকেটে থাকা ৫ হাজার টাকা বের করে নিয়ে নিজের পকেটে রেখে দেন এই পুলিশ সদস্যরা।  তবুও মেলেনি রক্ষা। তাদের হাজতে ঢুকিয়ে রেখে বিকাশে আরও ১০ হাজার টাকা আদায় করেন এই তিন পুলিশ কর্মকর্তা। সেই তিনজনকে থানায় আটক রাখার ভিডিও এবং টাকা লেনদেনের অডিও পৌঁছেছে কালবেলার হাতে।  সেই রাতের পুলিশের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারে কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সোহাগ। কিন্তু অভিযোগ করার পরই তাকে নানা রকমের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে এই পুলিশ সদস্যরা।  ভুক্তোভুগি সোহাগ কালবেলাকে বলেন, তিন পুলিশের নামে অভিযোগ করার পর থেকেই অনেক চাপে আছি। নানা রকমের হুমকি দিচ্ছে তারা। এসব অভিযোগের বিষয়ে শাহআলী থানায় গিয়ে পাওয়া যায়নি অভিযুক্ত ৩ পুলিশের কাউকেই। পরে যোগাযোগ করা হয় তাদের মুঠোফোনে। প্রত্যেকের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তা রিসিভ করেননি কেউই। এরপর তাদের মুঠোফোনে ও হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠালেও কোনো উত্তর মেলেনি। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অল্প সংখ্যক এমন কিছু পুলিশ সদস্যের কারণে পুরো বাহিনীর সুনাম নষ্ট হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক কালবেলা বলেন, শাহ আলী থানা এলাকার ৩ পুলিশ সদস্য ওইখানের মানুষের মনে যে আতঙ্ক তৈরি করেছে। পুলিশের এই দুয়েকজন কর্মকর্তার অপেশাদার আচরণের কারণে মানুষের মনে কিন্তু অনেক অবিশ্বাস তৈরি হয়। প্রশ্ন হলো এই তিন পুলিশ যা করছেন তা কি তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দেখেন না। যদি দেখেও না দেখার মতো থাকেন এটাও অপরাধ। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া খুবই জরুরি। এতে জনগণ ও পুলিশের মধ্যে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ্য ও বিশ্বাসের সম্পর্ক তৈরি হবে।  পুলিশ সদস্যের এমন বেপরোয়া কাজের প্রমাণ মিললে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
০৭ মে, ২০২৪

কিশোরকে তুলে নিয়ে চাঁদা দাবির ঘটনায় চার পুলিশ প্রত্যাহার
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে এক কিশোরকে তুলে নিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রোববার (৫ মে) সন্ধ্যার পর তাদের রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী পুলিশ তদন্তকেন্দ্র থেকে রাজশাহী পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়। প্রত্যাহার হওয়া চার সদস্যরা হলেন- প্রেমতলী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের এসআই মো. রেজাউল করিম, এএসআই মো. আনোয়ারুল ইসলাম, কনস্টেবল মো. রেজাউল করিম ও মিলন হোসেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম গ্রাম থেকে ওই কিশোরকে তুলে নিয়ে যান কয়েকজন। ওই কিশোরকে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তার বাবা মো. মুর্ত্তজা একজন কাপড় ব্যবসায়ী। ওই কিশোর ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার রাত ৮টার দিকে ভুক্তভোগী কিশোর তার বাবার কাপড়ের দোকান বন্ধ করে। পরে সে তার দুই বন্ধুর সঙ্গে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে করে চারজন তাদের সামনে আসে। তারা পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের তিনজনের মোবাইল কেড়ে নেয়। এরপর তারা জোর করে ওই কিশোরকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে চলে যায়। রাত ৯টার দিকে তার হাতে হাতকড়া পরানো হয়। এরপর তাকে প্রেমতলী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের পাশে পদ্মা নদীর পাড়ে নিয়ে গিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।  এ সময় তারা তাকে বলেন, ‘তোর বাপকে ফোন দিয়ে টাকা আনতে বল, নইলে মাদক মামলায় চালান দিয়ে দেব।’ এই সময় কিশোরটির মোবাইলে তার মা-বাবার মোবাইল থেকে বারবার ফোন আসছিল। কিন্তু তারা তাকে তার মা-বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে দেয়নি। এরপর রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার বসন্তপুরে ফাঁকা রাস্তার পাশে সোহানুরকে নামিয়ে দেওয়া হয়। পরে ওই কিশোর একা গোগ্রাম বাজারে চলে যায়। ভুক্তভোগী কিশোর জানায়, তারা নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়েছে। তাদের আচরণ পুলিশের মতোই। তবে তাদের পরনে পুলিশের কোনো পোশাক ছিল না। বারবার ফোন আসছিল আর ‘স্যার স্যার’ বলছিলেন। তাদের একজনের হাতে থাকা হাতকড়া তাকে পরিয়ে দেওয়া হয়। পরে তারা তার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে গাড়ি এনে থানায় নিয়ে চালান দিয়ে দেবেন বলেও তারা তাকে হুমকি দেন। সে ভয় না পেয়ে তাদের সঙ্গে থানায় যেতে চায়। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিশোরটি আরও জানায়, ওই চারজন তার মোবাইলে থাকা বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে পিন নম্বর নিয়ে তার সামনেই তিন হাজারের মতো টাকা তুলে নেন। তাকে ছেড়ে দেওয়ার আগেই দুজন পুলিশ সদস্য সেখান থেকে চলে যান। বাকি দুজন তাকে ফাঁকা রাস্তায় নামিয়ে দেন। এরইমধ্যে ভুক্তভোগীকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থায় তার পরিবার তাকে খুঁজতে থাকে। থানা-পুলিশকেও ফোন করা হয়। এ সময় এএসআই আনোয়ারুলকে সাদা পোশাকে গোগ্রাম বাজারে দেখতে পান স্থানীয়রা। স্থানীয় লোকজন তার কাছে ভুক্তভোগীর বিষয়ে জানতে চান।  একপর্যায়ে স্থানীয় ব্যক্তিরা তাকে অবরুদ্ধ করেন। পরে খবর পেয়ে প্রেমতলী তদন্তকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসমান গণি অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়েই স্থানীয় লোকজনকে লাঠিপেটা করেন তিনি। এতে সাত–আটজন আহত হন। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন লোকজন। পরে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি আবদুল মতিন ও গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সোহেল রানা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে এএসআই আনোয়ারুলকে নিয়ে চলে যান। ওই কিশোরকে তুলে নিয়ে চাঁদা চাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে এএসআই আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘এই ঘটনার পর তাকে পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। তাকে ফাঁসানো হয়েছে।’ এ বিষয়ে রাজশাহী পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় পুলিশ বাদী মামলা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে চারজনকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
০৬ মে, ২০২৪

পুলিশ বক্সের সামনেই অটোরিকশা স্ট্যান্ড, টাকা দিলেই মেলে চালানোর অনুমতি
মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল বন্ধে ভূমিকা রাখার কথা থাকলেও রীতিমতো পুলিশ বক্সের সামনেই বসেছে অটোরিকশার স্টপেজ। যাত্রী ওঠানামা চলছে দেদারছে। ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার বাইপাইল পুলিশ বক্সের সামনে গিয়ে দেখা মেলে এমন দৃশ্যের। অটোরিকশা চালকদের দাবি, পুলিশকে নিয়মিত ১ হাজার থেকে পনেরশ টাকা দিয়ে অটোরিকশা চালাচ্ছেন তারা। আর মাসিক অর্থ না দিলে রেকার করানো হয় অটোরিকশা।  পুলিশের দাবি, অটোরিকশা বন্ধে নিয়মিত রেকারিং করা হচ্ছে। তবে পুলিশ বক্সের সামনে অটোরিকশা স্টপেজের বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি বাইপাইল ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (টিআই) খসরু পারভেজ। রোববার (৫ মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নবীনগর-চন্দ্রা, বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর মহাসড়কজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অটোরিকশা। এসব অটোরিকশা যাত্রী ওঠানামা করাচ্ছে বাইপাইলের ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে। এছাড়া মহাসড়কের নবীনগরগামী লেনে অন্তত শতাধিক অটোরিকশা অপেক্ষমাণ থাকতে দেখা যায়। একই অবস্থা মহাসড়কের চন্দ্রাগামী লেনেও। অটোরিকশা চালকদের দাবি, রেকার করা হলে পুলিশ প্রতিটি অটোরিকশা ছাড়ানোর জন্য ২ হাজার ৬০০ করে টাকা নেয়। তবে মাসিক ১ হাজার টাকা করে মাসিক ভিত্তিতে দিলে সেসব অটোরিকশা ধরা হয় না। বাইপাইল ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে অটোরিকশা নিয়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, পুলিশ ধরে। টাকা দিলে ছেড়ে দেয়। জাকারুল ইসলাম নামে আরেক চালক বলেন, মহাসড়কে ওঠা নিষেধ। মাসে মাসে টাকা নেয়। গত ২৪ তারিখ ১ হাজার টাকা দিয়েছি। আবার আগামী মাসে দিতে হবে। তাহলে ধরবে না। এদিকে ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে অটোরিকশা স্টপেজ নিয়ে কথা হয় বাইপাইল ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (টিআই) খসরু পারভেজ সঙ্গে। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি রেকারের মামলার স্লিপ নিয়ে আসেন। মাসিক ভিত্তিতে টাকা নিয়ে অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি প্রসঙ্গে তিনি এসপি ও সাভার হাইওয়ে পুলিশের ওসির সঙ্গে কথা বলতে বলেন। এ বিষয়ে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার, মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এসব বিষয়ে আমরা কাজ করছি। কীভাবে অটোরিকশা সমস্যা সমাধানে কাজ করা যায় তা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। পুলিশ টাকা নিয়ে চালাতে দিচ্ছে এমন প্রশ্ন বিব্রতকর। এসবের প্রমাণ থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু বাইপাইল না, অনেক জায়গায় কাজ করছি। জেলা ট্রাফিক কাজ করছে।
০৬ মে, ২০২৪

ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে চাঁদা দাবি, পুলিশ কর্মকর্তা অবরুদ্ধ
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে ব্যবসায়ীর ছেলেকে তুলে নিয়ে গিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনার পর স্থানীয়রা গোদাগাড়ীর প্রেমতলী তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই আনোয়ারকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এ সময় উত্তেজিত জনতা ইটপাটকেল মেরে পুলিশের গাড়ি ভাংচুর করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। অবরুদ্ধ এএসআইকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় তারা। শনিবার (৪ মে) রাত ৮টার দিকে উপজেলার গোগ্রাম বাজারে এ ঘটনা ঘটে। অপহরণের শিকার যুবকের নাম সোহান। তিনি গোগ্রামের কাপড় ব্যবসায়ী মুর্ত্তজার ছেলে। সোহানের অভিযোগ, রাত ৮টার দিকে দোকান বন্ধ করে সামনের মোড়ে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিল। এই সময় দুটি মোটরসাইকেলে চারজন এসে নিজেরা ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এরপর নাম জিজ্ঞাসা করে। নাম ঠিকানা বলার পর সোহানকে জোর করে মোটরসাইকেল তুলে নেয়। কিছুদূর যাওয়ার পর সোহানের হাতে হ্যান্ডক্যাপ পরানো হয়। এরপর তাকে প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পাশে পদ্মা নদীর পাড়ে নিয়ে গিয়ে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ সময় তারা বলে তোর বাপকে ফোন দিয়ে টাকা আনতে বল, নইলে মাদক মামলায় চালান দিয়ে দিব। এই সময় আমার ফোনে বারবার কল আসছিল। কিন্তু তারা ফোনে কথা বলতে দেয়নি। এরপর রাত সাড়ে ১১টার দিকে বসন্তপুর-খেতুরধামের রাস্তায় ফাঁকা জায়গায় নামিয়ে দিয়ে যায়। সেখান থেকে তিনি একা গোগ্রাম বাজারে চলে যান। গোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান জানান, ডিবি পুলিশ পরিচয়ে সোহানকে অপহরণের পর এএসআই আনোয়ার সাদা পোশাকে গোগ্রাম বাজারে যান। সেখানে স্থানীয় লোকজন তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে প্রেমতলী তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ওসমান অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় জনতার ওপর লাঠিচার্জ করে। এতে ৭-৮ জন আহন হন। পুলিশের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে লোকজন। এতে পুলিশের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে গোদাগাড়ী থানার ওসি আব্দুল মতিন ও গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সোহেল রানা উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। মজিবুর রহমান আরও বলেন, উত্তেজিত জনতা পুলিশের কাছে সোহানকে ফেরত চান। এ সময় সোহানের মোবাইল ফোনে অপহরণকারীদের সঙ্গে কথা বলেন ওসি আব্দুল মতিন। এর পর তারা সোহানকে ছেড়ে দেয়। বিষয়টি জানতে চাইলে এএসআই আনোয়ার বলেন, সোহানকে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার বিষয়ে আমি জানি না। শনিবার রাতে আমার ডিউটি শেষে গোগ্রাম বাজার পার হয়ে কিছুটা গেলে কয়েকজন এসে আমার সঙ্গে কথা বলেন এবং সোহানের বিষয়ে জানতে চান। এ সময় অনেক লোকজন জড়ো হয়ে যায়। পরে আমি প্রেমতলী কেন্দ্রের ইনচার্জকে ফোন করে বিষয়টি জানাই। তবে রাতে সাদা পোশাকে গোগ্রাম বাজারে কেন গিয়েছিলেন এমন প্রশ্নের জবাব তিনি এড়িয়ে যান। ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, রাতেই পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসেছিলাম। সোহানকে কারা অপহরণ করেছে সেটি তদন্ত করে বের করার জন্য বলেছি। এ সঙ্গে পুলিশ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আমরা এ ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করেছি। গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি আব্দুল মতিন বলেন, কারা সোহানকে তুলে নিয়ে গিয়ে চাঁদা দাবি করেছে সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও গুরুত্বসহকারে দেখছেন বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
০৫ মে, ২০২৪

দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন করায় ক্ষেপে গেলেন ট্রাফিক ইন্সট্রাক্টর
ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় মহাসড়কের পাশে পুলিশ বক্সের সামনেই দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল অবৈধ অটোরিকশা। চালকরা বলছিলেন, ‘মাসিক টাকা দিয়ে মহাসড়কে অটোরিকশা চালান তারা।’  বিষয়টি নিয়ে বাইপাইল ট্রাফিক পুলিশের ইন্সট্রাক্টর খসরু পারভেজের কাছে প্রশ্ন করতেই ক্ষেপে যান তিনি। সোজা জানিয়ে দেন, ‘তিনি এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে বাধ্য নন। এ জন্য এসপি ও হাইওয়ের ওসির সঙ্গে কথা বলেন।’ তথ্য বলছে, ২০২৩ সালেও একবার ট্রাফিক পুলিশ বক্সের ভেতরে শ্রমিককে মারধর ও অটোরিকশা থেকে সরকারি জরিমানার কথা বলে রসিদ ছাড়া টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছিল ট্রাফিকের পুলিশের এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। রোববার (৫ মে) উপজেলার বাইপাইল ত্রি মোড় সড়কে গিয়ে দেখা যায়, অটোরিকশায় সয়লাব পুরো মহাসড়ক। স্বল্পপাল্লা ও দূরপাল্লার পরিবহনের সঙ্গে মহাসড়কে দাপটের সঙ্গে চলছে অটোরিকশা। এগুলোর যাত্রী ওঠানামা করানো হচ্ছে পুলিশ বক্সের সামনেই। পাশেই দুই পুলিশ সদস্যকে দায়িত্বরত দেখা যায়। ট্রাফিক পুলিশের ছাউনির নিচে দাঁড়িয়ে গল্পে ব্যস্ত তারা। কয়েকজন অটোরিকশাচালকের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, অটোরিকশা চালাতে গেলেই মামলা দেয় পুলিশ। তবে মাসিকভাবে টাকা দিলে সেগুলো ধরা হয় না। বাইপাইল ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে অটোরিকশা নিয়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, পুলিশ ধরে। ধরলে ১ হাজার টাকা দিলে ছেড়ে দেয়। জাকারুল ইসলাম নামে আরেক চালক বলেন, মহাসড়কে ওঠা নিষেধ। মাসে মাসে টাকা নেয়। গত ২৪ এপ্রিল ১ হাজার টাকা দিয়েছি। আবার আগামী মাসে দিতে হবে। তাহলে ধরবে না। এদিকে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে বাইপাইল পুলিশ বক্সের ভেতরে যান কালবেলা প্রতিবেদক। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, এসি করা পুলিশ বক্সের কক্ষে মোবাইল ফোনে ভিডিও দেখায় ব্যস্ত তিনি। তাকে ঘিরে বসা আরও ২ পুলিশ সদস্য। তার কাছে অটোরিকশা চলাচল নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি চেয়ার থেকে উঠে ডাকতে থাকেন রেকার অপারেটরকে। রেকার অপারেটর এলে তার কাছ থেকে জরিমানার স্লিপের বই নিয়ে এ প্রতিবেদককে দেখান তাদের কাজের ফিরিস্তি। এরপর পুলিশ বক্সের সামনেই অটোরিকশার স্টপেজ করার বিষয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি ক্ষেপে যান। এরপরই বক্তব্য দেবেন না বলে জানান তিনি। সেই স্লিপ দেখিয়ে বলেন, আমরা ধরি, রেকার করি, ডাম্পিং করি। এই যে তার প্রমাণ। একপর্যায়ে নিজের মোবাইল ফোনের ক্যামেরা চালু করে এ প্রতিবেদকের ভিডিও ধারণ করতে থাকেন ও বলেন, ‘আপনাকে বক্তব্য নিতে হলে জেলার এসপিরটা নেন। আপনার কী অথরিটি আছে আমাকে ব্লেম দেবেন। হোয়াই ইউ আর ব্লেমিং মি। ইউ আর মাই অথরিটি?’ এ প্রতিবেদকের কাছে বক্তব্য রয়েছে এমন কথা বললে তিনি বলেন, ‘সেটা আপনি প্রমাণ করবেন। আমার অথরিটির কাছে যাবেন।’ এ ছাড়া টাকা নেওয়ার কথাও অস্বীকার করেন তিনি। এ বিষয়ে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার, মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এসব বিষয়ে আমরা কাজ করছি। কীভাবে অটোরিকশা সমস্যা সমাধানে কাজ করা যায় তা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। পুলিশ টাকা নিয়ে চালাতে দিচ্ছে এমন প্রশ্ন বিব্রতকর। এসবের প্রমাণ থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধু বাইপাইল না, অনেক জায়গায় কাজ করছি। কীভাবে এসব নিয়ন্ত্রণে নেওয়া যায় সে বিষয়ে জেলা ট্রাফিক কাজ করছে।
০৫ মে, ২০২৪

আসামি ধরতে গিয়ে পরিবারের হামলায় ৩ পুলিশ সদস্য আহত
ফেনীর সোনাগাজীতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত কুয়েত প্রবাসী এক আসামিকে ধরতে গিয়ে আসামি ও তার পরিবারের সদস্যদের হামলায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। শুক্রবার (৩ মে) সন্ধ্যায় উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের মধ্যম চরচান্দিয়া গ্রামের কুয়েত প্রবাসী মো. ইয়াহিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, সোনাগাজী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুব আলম সরকার, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবুল খায়ের ও কনস্টেবল মোহাম্মদ আলী। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চরচান্দিয়া ইউনিয়নের মধ্যম চরচান্দিয়া এলাকার কুয়েত প্রবাসী ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে চারটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। ইয়াহিয়া দেশে ফিরে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে তিনটি মামলায় জামিন নেন। একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে বাড়িতে গেলে তাদের ঘরে ঢুকতে বাধা এবং পরিবারের সদস্যরা হামলা চালায়। হামলায় আহত উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুব আলম সরকার বলেন, চার মামলার পলাতক আসামি কুয়েত প্রবাসী মো. ইয়াহিয়াকে ধরতে গেলে মো. ইয়াহিয়া ও তার তিন ছেলেসহ স্বজনরা পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। কিল-ঘুষি মেরে এবং লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তিন পুলিশ সদস্যকে আহত করেছে।  প্রবাসী ইয়াহিয়ার পরিবারের দাবি, পুলিশ সদস্যদের ওপর কোনো হামলা করা হয়নি। রাতে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুব আলম সরকার বাদী হয়ে কুয়েত প্রবাসী মো. ইয়াহিয়া ও তার তিন ছেলেকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় কুয়েত প্রবাসী মো. ইয়াহিয়া (৫৭) ও তার ছেলে মো. আবদুল আজিজকে (২৪) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোনাগাজী মডেল থানার ওসি সুদ্বীপ রায় বলেন, ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে চারটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। তিনটি মামলায় জামিন নিলেও একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তারের জন্য গেলে তারা পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
০৪ মে, ২০২৪

উপজেলা নির্বাচন / পুলিশ পক্ষপাতিত্ব করলে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ ইসি রাশেদার
নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, যদি থানা পুলিশ পক্ষপাতিত্ব করে, তবে প্রার্থীরা কোর্টে যেতে পারেন। আমরা চাই, দুষ্কৃতকারীর শাস্তি হোক। পুলিশ যদি প্রভাবিত হয়, তাহলে কোর্ট খোলা আছে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনেও অভিযোগ দিতে হবে। সাংবাদিকদের থেকে শুনে ব্যবস্থা নেব না। শুক্রবার সকালে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মিলনায়তনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, প্রার্থী ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। বেলকুচিতে গভীর রাতে থানায় ঢুকে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তার কর্মী-সমর্থকদের হামলার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে এসব কথা জানান ইসি রাশেদা। এর আগে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ন কবীরের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসন আয়োজিত মতবিনিময় সভায় রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি সাইফুল ইসলাম, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন, জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল, চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বক্তব্য দেন।
০৪ মে, ২০২৪
X