প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পুষ্টি চাহিদা পূরণ করছে পারিবারিক পুষ্টি বাগান
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণ করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পুষ্টি বাগান প্রকল্প। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সরেজমিনে উপজেলার টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নের অধুনাবিলুপ্ত ছিটমহল হাজীরহাট বালাসুতি পাড়া এলাকায় গিয়ে দেয়া যায়, এখানে আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ঘরে ৪৫টি পরিবার বাস করে। আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় নির্বাচিত কৃষান কিষানীদের আঙিনায় ২৭টি পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হয়েছে। আশ্রয়ন প্রকল্পের দৃষ্টিনন্দন সারি সারি রঙিন ঘরের আঙিনায় শোভা পাচ্ছে বাহারি শাকসবজির বাগান। দেড় শতক জমির সয়েল বেডে লালশাক, পুইশাক, বেগুন, কলমীশাক, ধনিয়া, টমেটো, ঢেঁড়স লাগানো হয়েছে। এছাড়া বেডের দুই পাশে দেওয়া মাচায় লাউ, কুমড়া, সিম, বরবটি, ঝিঙা, করলা, ইত্যাদির চাষ করা হচ্ছে। এসব বাগানের বীজ, সার, বেড়া, পোকার ফাঁদসহ সবকিছুরই জোগান দিয়েছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। পরিশ্রম আর যত্নে উৎপাদিত শাকসবজি ও ফসল থেকে নিজেদের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা পূরণ করছেন এখানে বসবাসকারীরা। সুবিধাজনক সময়ে পরিবারের নারী-পুরুষ বা অন্য সদস্যরা এসব পুষ্টি বাগানের পরিচর্যা করেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বসত বাড়ির আঙ্গিনায় ও অনাবাদি পতিত জমিতে পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন ‘প্রকল্প’র আওতায় ২৭টি পুষ্টি বাগান স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি বাগানের আয়তন দেড় শতক, এতে রয়েছে ২.৫ ফুট/১৬ ফুট আয়তনের ৫টি সয়েল বেড। এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো- অনাবাদি ও পতিত জমির যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এদিকে, পুষ্টি বাগানে শাকসবজি উৎপাদনের ফলে আশ্রয়ন প্রকল্পের পরিবারগুলোর দৈনন্দিন সবজির চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ফরিদুল ইসলাম নামে পুষ্টি বাগান প্রকল্পের এক উপকারভোগী বলেন, সরকার আমাদের ঘর দিছে। কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির বীজ দিছে, সার দিছে। এখন আর আমাদের শাকসবজি কিনে খেতে হয় না। রুপালি বেগম নামে পুষ্টি বাগান প্রকল্পের আরেক উপকারভোগী বলেন, বাগান থেকে এর আগেও দুইবার করে শাক, সবজি আবাদ করে খেয়েছি। এবার আবার নতুন করে শাক, বেগুন এবং মরিচ লাগাইছি। কৃষি অফিস থেকে বীজ, সার, বাগান ঘেরার জন্য জাল দিছে। নিয়মিত কৃষি অফিসাররা আমাদের বাগান পরিদর্শন করে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন। পুষ্টি বাগান প্রকল্পের বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নাঈম মোর্শেদ বলেন, বসতবাড়ির আঙিনায় অনাবাদি ও পতিত জমিতে পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন প্রকল্পের আওতায় এই বাগানগুলো করা হয়েছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর এই পরিবারগুলোর প্রয়োজনীয় শাকসবজি ও পুষ্টির চাহিদা পূরণ এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আশ্রয়ন প্রকল্পের পতিত জমিতে এই পুষ্টি বাগান করা হয়েছে।
২৯ মার্চ, ২০২৪
X