নির্বাচন পরবর্তী সময়ে উত্তপ্ত ফরিদগঞ্জ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে চাঁদপুর-৪ ফরিদগঞ্জ আসনটি। অভিযোগ রয়েছে, নৌকার বাইরে ঈগল প্রতীকের নির্বাচনে সহায়তাকারীদের কোণঠাসা করতে তাদের ও তাদের বাড়িঘরসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) রাতে চাঁদপুরে এসে ফরিদগঞ্জে ঈগল প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব আবু সাহেদ সরকার গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এই অভিযোগ করেন। এসময় ঈগল প্রতীকের কর্মী সমর্থকরা বলেন, শুধু ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ঈগল প্রতীকের নির্বাচন করি। আর এই কারণে নির্বাচনে ঈগলের পরাজয়ের পর কারা কারা ঈগল প্রতীকের নির্বাচন করেছে, তাদের চিহ্নিত করে নৌকার কর্মী-সমর্থকরা একের পর এক হামলা চালাচ্ছে। ১৫নং রূপসা উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাউছারুল আলম কামরুল বলেন, ঈগল প্রতীকের নির্বাচন করায় দুপুরে আমাদের ৪নং ওয়ার্ডে অটোরিকশা ড্রাইভার রিপনের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। একইদিন ওই এলাকার শরিফের গ্যারেজে ভাঙচুর চালায় এবং ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাইয়ের বাড়িতেও হামলা করা হয়। আর এই হামলার নেতৃত্বে ছিলেন নৌকার নির্বাচন করা নজরুল ইসলাম সুমন। শুধু তাই নয় করিমুদ্দিন রাঢ়ীর বাড়ির সম্মুখে শরিফ সর্দারের চায়ের দোকান ভাঙচুর, ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেনকে তার বাড়ির পাশে লোহার পাইপ দিয়ে আঘাত করে হাত পা ভেঙে ফেলা হয়েছে। ৬নং ওয়ার্ডের রোস্তমপুর গ্রামের ইদ্রিস বেপারির ঘরের ওপরও হামলা চালানো হয়। সবশেষ আমার বাড়িতে রাতে ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়। ২নং বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ঈগল প্রতীকের নির্বাচন করায় আমার ভাই মাহবুব আলম সুমন ও শোশাইরচরের ওসমানের মাথায় কোপ দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয় এবং মানিককে আহত করা হয়। আমার ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের রাসেলের বাড়িতে হামলা করে তার মাকে মারধর করা হয়। ৭নং ওয়ার্ডের কৃষ্ণপুরের রাসেল সর্দারের বাড়িতে হামলা, ১নং ওয়ার্ডে আলমগীর মাস্টারের ছেলে নাঈম, ২নং ওয়ার্ডে এম এ হাসান মুন্না ও ৫নং ওয়ার্ডের বাবুকে বেধরক মারধর করা হয়। সবশেষ আমাকে মেরে ফেলার হুমকি ধমকি দেওয়া হয়। এ ছাড়াও ঈগল প্রতীকের নির্বাচন করার অভিযোগে ১৬নং রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নে উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মহিউদ্দিন ভূইয়া ইরানের বাড়িতে সশস্ত্র হামলা, ৯নং গোবিন্দপুর ইউনিয়নে পুতুল সরকারের নেতৃত্বে নয়াহাট বাজারে ককটেল বিস্ফোরণ ও সন্ত্রাসী হামলা, দক্ষিণ ধানুয়ার জুয়েল মেম্বারের নেতৃত্বে শফিক খাঁ, আবুল বাশার ও লিটন খানের বাড়িতে হামলা ও মারধর, ধানুয়া বাজারে সোহেলের নেতৃত্বে ধানুয়াপ্রত্যাশীতে ককটেল বিস্ফোরণ, ১০নং গোবিন্দপুর ইউনিয়নে আলাউদ্দিন চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদ সদস্য আক্কাসের নেতৃত্বে হামলা, পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডে এমপির প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর পলোয়ান, আলো ও ইসমাইল পাটওয়ারীর নেতৃত্বে চরহোগলা মিজি বাড়ির রোমান মিজি, বাবু রাঢ়ীসহ আরও অনেকের উপর হামলা চালানো হয়। এসব তথ্য জানিয়ে ফরিদগঞ্জে ঈগল প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকার বলেন, ঈগলের নির্বাচন করায় আমাদের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের ২শ নেতাকর্মীর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর এবং প্রায় শতাধিক নেতাকর্মীকে মারধর করে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে স্বচ্ছ এবং স্বতঃস্ফূর্ত নির্বাচন করে এখন আতঙ্ক এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমরা এর প্রতিকার পেতে প্রধানমন্ত্রী ও জননেত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চাচ্ছি। এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে চাঁদপুর-৪ ফরিদগঞ্জ আসনে নৌকা প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক আবুল খায়ের পাটওয়ারীর বক্তব্য নিতে চেষ্টা করেও তাৎক্ষণিক তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
১০ জানুয়ারি, ২০২৪
X