৬ জুন বাজেট ঘোষণা
আগামী ৬ জুন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব সংসদে পেশ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এদিন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জাতীয় বাজেট উত্থাপন করবেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানান, আগামী ৬ জুন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপনের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজেট পেশের দিনক্ষণ ঠিক করে ইতোমধ্যে কর্মকর্তাদের দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে। অর্থ বিভাগ সূত্র জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট হবে প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার, যা হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ আকারের বাজেট। এবারের বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পচ্ছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
০৯ মে, ২০২৪

সংশোধিত ব্যয় বাড়ল আরও ৩,৪২৪ কোটি / বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ করতে চাপে পড়ছে বাজেট
দেশের অর্থনীতিতে বর্তমানে সাড়ে ১১ লাখ কোটি টাকার বিদেশি ঋণের চাপ রয়েছে। এই ঋণ দেশি বা বিদেশি হোক, তা নির্দিষ্ট সময় শেষে সুদসহ পরিশোধের বিধান রয়েছে। এই পুঞ্জীভূত ঋণের একটা অংশ প্রতি মাসে সরকার এখন সুদ-আসলে পরিশোধও করছে। তবে দেশি ঋণ যখন খুশি সরকার শোধ দিতে পারে; কিন্তু বিদেশি ঋণে নির্দিষ্ট সময়ের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ কারণে দিন যত পার হচ্ছে, এ ঋণ পরিশোধে সরকারের চাপও তত বাড়ছে। এরই মধ্যে চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) গত ৯ মাসেই বিদেশি ঋণের সুদ-আসল মিলিয়ে মোট ২৮ হাজার ২৮১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে। এর মধ্যে আসল ১৬ হাজার ৬৭৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। বাকি ১১ হাজার ৬০১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা সুদ বাবদ দিতে হয়েছে। যদিও চলতি অর্থবছরের বাজেটে বিদেশি ঋণের আসল ২৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা এবং সুদ পরিশোধ বাবদ ১২ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা মিলিয়ে মোট ৩৭ হাজার ৭৬ কোটি টাকা পরিশোধের লক্ষ্য নির্ধারণ করে সরকার। এর অর্থ হচ্ছে, বাজেটে বৈদেশিক ঋণের দায় খাতে রাখা বরাদ্দের অর্থ দিয়ে চলতি অর্থবছরের বাকি ব্যয় সংকুলান হচ্ছে না। দায়িত্বশীল সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, এ কারণে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে সরকার ১৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকায় উন্নীত করেছে। চলতি অর্থবছরের প্রাথমিক বাজেটে বিদেশি ঋণের জন্য ১২ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। অর্থাৎ সংশোধিত বাজেটে সেটি ৩ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সাধারণত বাংলাদেশের মতো কল্যাণমূলক উন্নয়নশীল দেশে সব সরকারেরই জনপ্রতিশ্রুতি থাকে। এ কারণে উন্নয়নের চাহিদাও বেশি হয়। বিশেষ করে এই বাস্তবতায় এ ধরনের দেশগুলোয় রাজনৈতিক সরকারের বড় বৈশিষ্ট্য হলো, কম আয়ে বেশি উন্নয়নের চেষ্টা। ফলে সরকার বিভিন্ন সময় উন্নয়ন চাহিদা পূরণে বাড়তি ব্যয়ের সঙ্গে আয়ের তাল মেলাতে প্রতি বছর যে বাজেট তৈরি করছে, তার ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ খাতের বাইরে বৈদেশিক বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ করে থাকে। দেশে সরকারের কাঁধে এখন যে ঋণের বোঝা, এটি তারই পুঞ্জীভূত আকার। যার ঋণ এখন প্রতি মাসেই সুদ-আসলে শোধ দিতে হচ্ছে। তবে বিদেশি ঋণে সুদ তুলনামূলক কম, পরিশোধের গ্রেস পিরিয়ডও বেশি। এ কারণে সরকার বিদেশি ঋণেই ঝুঁকছে। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে বিদেশি ঋণ পরিশোধে ব্যয় করেছিল ১৬ হাজার ৯৬৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে আসল ছিল ১২ হাজার ২০২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আর সুদ পরিশোধ করতে হয়েছিল ৪ হাজার ৭৬৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরের যেখানে ৪ হাজার ৭৬৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা সুদ দিতে হয়েছিল, সেখানে চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত সুদ পরিশোধ করতে হয়েছে তার প্রায় আড়াই গুণ। সংশোধিত বাজেটে বিদেশি ঋণের দায় খাতে এই অতিরিক্ত বরাদ্দের কারণ জানতে চাইলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, বিদেশি ঋণের প্রায় ৪৫ শতাংশই নেওয়া এসডিআর (স্পেশাল ড্রয়িং রাইটস) মুদ্রায়, যা পরিশোধ করতে হয় সাধারণত মার্কিন ডলার কিংবা যুক্তরাজ্যের পাউন্ড স্টার্লিংয়ে; কিন্তু সম্প্রতি বৈশ্বিক অস্থিরতার কারণে এখন এই এসডিআর মুদ্রার সঙ্গে ডলার ও পাউন্ডের বিনিময় হার, ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময় হারের তারতম্য এবং ইউরোবর ও সোফর হার অনেক বেড়ে গেছে। ফলে বৈদেশিক ঋণ ও ঋণের ওপর সুদ পরিশোধের পরিমাণও আগের তুলনায় বেড়েছে। অর্থাৎ ডলার ও পাউন্ডের তুলনায় টাকার অবমূল্যায়নের কারণে একই পরিমাণ বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধে আগের তুলনায় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে। এই বাড়তি ব্যয়ই এখন বাজেট ব্যবস্থাপনায় সরকারের বড় চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা ছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেশে বেশ কিছু মেগা প্রকল্পের বাস্তবায়ন হয়েছে, কিছু বাস্তবায়নাধীনও রয়েছে। যেগুলোর গ্রেস পিরিয়ড শেষ হওয়ায় এখন তার অর্থায়নকৃত ঋণের কিস্তি পরিশোধ এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। এতে করেও নতুন-পুরোনো মিলে সরকারের কাঁধে বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধের চাপও আগের তুলনায় বেড়েছে। এই বাস্তবতায়ও বাজেট সংশোধনীতে এ খাতের সুদ পরিশোধের অর্থ বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। এদিকে এই বৈদেশিক উৎসের ঋণ সরকারের নিজস্ব আয় থেকে পরিশোধ করার কথা; কিন্তু দেশীয় বাস্তবতায় সরকারের আয় কম। আবার আয় বাড়ানোর ক্ষেত্রও কম। একমাত্র ভরসা হলো রাজস্ব খাত। সেখান থেকেও নানা কারণে কাঙ্ক্ষিত আয় আসছে না। যে কারণে সরকার নিজের আয় থেকে আংশিক পরিশোধ করে বাকিটা ঋণ নিয়েই ঋণের দায় শোধের চেষ্টা করছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বেসরকারি আর্থিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, সমস্যা হচ্ছে, সরকার অভ্যন্তরীণ উৎসের আয় বাড়াতে পারছে না। আবার যে আয় করছে, তার বড় একটা অংশ ভর্তুকিতেই খরচ করে ফেলছে। আবার রাজস্ব আয় বাড়ানোর যে সংস্কার কাজ তারও গতি বাড়াতে পারছে না। এ বাস্তবতায় যে বিদেশি ঋণ আসছে, তা প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজে কিছুটা ধীরগতির কারণে হয়তো সেটি বিদেশি ঋণের সুদাসল পরিশোধ করে থাকতে পারে। তবে এতে করে বিদেশি ঋণের আকার যেমন বাড়বে, তেমনি সুদ পরিশোধ খাতেও বড় আকারের ব্যয় করতে হবে। এর থেকে বেরিয়ে সরকারের উচিত বাজেটে বিভিন্ন খাতে যে রাজস্ব ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে, তা উঠিয়ে সরকারের রাজকোষ সমৃদ্ধ করা। এতে অন্তত প্রতি বছর যে মোটা অঙ্কের সুদ ডলারে পরিশোধ হচ্ছে, সেটি সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।
২৮ এপ্রিল, ২০২৪

প্রস্তাবিত বাজেট পেশ ৬ জুন
আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা হবে ৬ জুন। এ দিনকে সামনে রেখে পরিকল্পনা সাজাচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আগামী অর্থবছরের বাজেটের আকার হতে পারে ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ৩৫ হাজার ১১৫ কেটি টাকা বেশি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৩১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা, যা মোট জিডিপির ৯ দশমিক ৪ শতাংশ। আগামী বাজেটে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ছে প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা। এতে সামগ্রিক ঘাটতি (অনুদান ছাড়া) হতে পারে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়াও ২০২৪-২৫ অর্থবছরে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানোর লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। নতুন বাজেটে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে কয়েকটি খাতকে। এর মধ্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ডিজিটাল স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, ফাস্ট ট্র্যাক অবকাঠামো প্রকল্পে গুরুত্বারোপ, সবার জন্য খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন, প্রবৃদ্ধি অর্জন, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলা, বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বৃদ্ধিসহ প্রতিটি গ্রামের আধুনিকায়নের পরিকল্পনাও রয়েছে সরকারের।
১৮ এপ্রিল, ২০২৪

বাস্তবতার আলোকে বাজেট প্রণয়নের পরামর্শ
বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে বাস্তবতার আলোকে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তা না হলে অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতায় যে ভঙ্গুরতা দেখা দিয়েছে, সেখান থেকে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। আগামীতে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবসা-বাণিজ্যে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে বাজেটে পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও মনে করেন তারা। গতকাল রোববার ঢাকার পল্টনে নিজস্ব কার্যালয়ে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং পরবর্তী বাজেট’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। প্রতিমন্ত্রী বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, বর্তমানে সারাবিশ্বেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সামগ্রিক অর্থনৈতিক ভারসাম্যের দিকে সর্বাধিক নজর দেবে সরকার। একই সঙ্গে বাজেট ঘাটতি ধারণযোগ্য পর্যায়ে রেখে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার বিষয়েও জোর দেওয়া হচ্ছে। বাজেট প্রণয়নের জন্য এরই মধ্যে বিভিন্ন খাতের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে, আগামীতে আরও হবে। সবার মতামত নিয়ে একটি যৌক্তিক বাজেট দেওয়া হবে। রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ডিজিটালাইজেশনে মনোযোগ বাড়ানো হবে। জ্বালানি তেলের দাম প্রতি মাসে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ফাস্টট্র্যাক প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থের জোগানে বাড়তি নজর দেবে সরকার। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও নিম্ন মূল্যস্ফীতির সমন্বয়ে সামষ্টিক অর্থনীতি বেশ স্থিতিশীল ছিল। এ অবস্থা থেকে মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীলতা নষ্ট হলো, প্রবৃদ্ধি স্তিমিত এবং মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতিতে কোনোভাবেই লাগাম টানা যাচ্ছে না। গত প্রায় ১৮ মাস দুই অঙ্কের কাছাকাছি রয়েছে। পরবর্তীকালে হয়তো বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তকে উদাহরণ হিসেবে পড়ানো হবে যে, কীভাবে একটি ভালো অর্থনীতি মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে ঝুঁকিপূর্ণ অর্থনীতিতে পরিণত হলো। তিনি বলেন, এ অবস্থার পরিণতির অন্যতম কারণ হচ্ছে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে ভুলনীতি গ্রহণ। সে সময় জনতুষ্টিমূলক কথাবার্তা না বলে বাস্তবতার নিরিখে ওই বাজেট প্রণয়ন করা দরকার ছিল। সেটা করা হয়নি। তবে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যেন বাস্তবতার নিরিখে বাজেট প্রণয়ন করা হয়, সরকারকে সেদিকেই মনোযোগ দিতে হবে। সাবেক অর্থ ও বাণিজ্য সচিব মাহবুব আহমেদ বলেন, বর্তমান বিশ্ব অর্থনৈতিক অস্থিরতার সময় পার করছে। বিশ্বের মতো দেশের অর্থনীতি অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে। আগে বাজেটে বড় লক্ষ্য ছিল প্রবৃদ্ধি অর্জন এখন বাস্তবতার নিরিখে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নজর দিতে হবে। সরকারিভাবে এটি প্রথম সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিচ্ছে। তিনি বলেন, গত এক বছরে চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে প্রবৃদ্ধিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া। কিন্তু বিতরণ বা সরবরাহ পর্যায়ে পিছিয়ে আছে। এ বিষয়টি অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে পারিনি। ফলে নানা রকম অর্থনৈতিক অস্থিরতা বেড়ে গেছে। এতে বৈষম্য অনেক বেড়ে গেছে। আগামী বাজেটে কর আদায়ে বেশি জোর দিতে হবে। যাতে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ধরে রাখার পাশাপাশি বৈষম্য দূর করতে বরাদ্দ বাড়াতে পারলে বেশি কাজে দেবে। বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, চড়া মূল্যস্ফীতি উৎপাদনশীলতা হ্রাসের এ সময়ে যথাযথ সংস্কার ছাড়া অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে; এমন আশা করাটা বোকামি। বাজেটের আগে ঘটা করে ব্যবসায়ীদের নানা সমস্যার কথা শোনা হয়। তবে এসব সমস্যা সমাধানে কোনো কার্যকরী উদ্যোগ নেয় না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ বিষয়ে আগামী বাজেটে নজর দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ফলপ্রসূ না হলেও এর কারণে ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় অনেক বেড়ে যাচ্ছে। ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, আর্থিক খাতে অনিয়মে এক শ্রেণির ইচ্ছেকৃত ঋণখেলাপি সুবিধা পাচ্ছে। তাদের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। উল্টো তারা সুবিধা পাচ্ছে। আর আমাদের মতো ব্যবসায়ীরা উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করে আবার ঋণ পরিশোধ করছেন। তারা নতুন বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হবেন। কারণ তারা কিছু পান না। আগামী বাজেটে জিএসপি প্লাস ট্রানজিশনের বিষয়ে প্রতিফলন দেখন চান তারা।a
০৮ এপ্রিল, ২০২৪

ইআরএএফ সেমিনারে বক্তারা / বাস্তবতার আলোকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের পরামর্শ
বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে বাস্তবতার আলোকে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়ন করার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তা না হলে অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতায় যে ভঙ্গুরতা দেখা দিয়েছে, সেখান থেকে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। আগামীতে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবসা বাণিজ্যে গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে বাজেটে পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও মনে করেন বক্তারা।    রোববার (৭ এপ্রিল) ঢাকার পল্টনস্থ নিজস্ব কার্যালয়ে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘সামস্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং পরবর্তী বাজেট’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা। ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মৃধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান।  অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, বর্তমানে সারা বিশ্বেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সামগ্রিক অর্থনৈতিক ভারসাম্যের দিকে সর্বাধিক নজর দেবে সরকার। একই সঙ্গে বাজেট ঘাটতি ধারণযোগ্য পর্যায়ে রেখে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার বিষয়েও জোর দেওয়া হচ্ছে। বাজেট প্রণয়নের জন্য ইতোমধ্যে বিভিন্ন খাতের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে, আগামীতে আরও হবে। সবার মতামত নিয়ে একটি যৌক্তিক বাজেট দেওয়া হবে। রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ডিজিটালাইজেশনে মনোযোগ বাড়ানো হবে। জ্বালানি তেলের দাম প্রতিমাসে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থের জোগানে বাড়তি নজর দেবে সরকার। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও নিম্ন মূল্যস্ফীতির সমন্বয়ে সামষ্টিক অর্থনীতি বেশ স্থিতিশীল ছিল। এ অবস্থা থেকে মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে দেশের অর্থনীতি স্থিতিশীলতা নষ্ট হলো, প্রবৃদ্ধি স্তিমিত এবং মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতিতে কোনোভাবেই লাগাম টানা যাচ্ছে না। গত প্রায় ১৮ মাস দুই অংশের কাছাকাছি রয়েছে। পরবর্তীকালে হয়তো বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তকে উদাহারণ হিসেবে পড়ানো হবে, কীভাবে একটি ভালো অর্থনীতি মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে একটি ঝুঁকিপূর্ণ অর্থনীতিতে পরিণত হলো।  এ অবস্থার পরিণতির অন্যতম কারণ হচ্ছে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে ভুল নীতি গ্রহণ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সে অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হওয়ায় জ্বালানি তেলের দাম দুই থেকে আড়াই গুণ বেড়ে গেল। এমন পরিস্থিতিতে জিডিপির প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৭ শতাংশ, পেমেন্ট অব ব্যালেন্সে কোনো সমস্যা নেই, মূল্যস্ফীতি নিম্ন পর্যায়ে রেখেই বাজেট দেওয়া হলো। মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতির মধ্যেও ৯-৬ সুদহার ধরে রাখা হলো। টাকাকে শক্তিশালী করে রাখা হলো অথচ এ পরিস্থিতিতে অর্থনীতিতে কিছুটা সংশোধন আনতে রকেট সাইন্স জানতে হয় না। অর্থনৈতিক বিজ্ঞানের ভিত্তিতেই এটি করার কথা ছিল কিন্তু সেটি হয়নি। ফলে ক্ষতটা অনেক বেড়ে গেছে। তার খেসারত এখন দিতে হচ্ছে। সেসময় জনতুষ্টিমূলক কথাবার্তা না বলে বাস্তবতার  নিরিখে ওই বাজেট প্রণয়ন করা দরকার ছিল। সেটা করা হয়নি। তবে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যেন বাস্তবতার নিরিখে বাজেট প্রণয়ন করা হয়, সরকারকে সেদিকেই মনোযোগ দিতে হবে।     সাবেক অর্থ ও বাণিজ্য সচিব মাহবুব আহমেদ বলেন, বর্তমান বিশ্ব অর্থনৈতিক অস্থিরতার সময় পার করছে। বিশ্বের ন্যায় দেশের অর্থনীতি অস্থিতিশীর হয়ে পড়ছে। আগে বাজেটে বড় লক্ষ্য ছিল প্রবৃদ্ধি অর্জন এখন বাস্তবতার নিরিখে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ নজর দিতে হবে। সরকারিভাবে এটি প্রথম সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিচ্ছে।  তিনি বলেন, গত এক বছরে চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে প্রবৃদ্ধিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া। কিন্তু বিতরণ বা সরবরাহ পর্যায়ে পিছিয়ে আছে। এ বিষয়টি অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে পারিনি। ফলে নানা রকম অর্থনৈতিক অস্থিরতা বেড়ে গেছে। এতে বৈষম্য অনেক বেড়ে গেছে। আগামী বাজেটে কর আদায়ে বেশি জোর দিতে হবে। যাতে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ধরে রাখার পাশাপাশি বৈষম্য দূর করতে বরাদ্দ বাড়াতে পারলে বেশি কাজে দেবে।   বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, চড়া মূল্যস্ফীতি- উৎপাদনশীলতা হ্রাসের এ সময়ে যথাযথ সংস্কার ছাড়া অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে; এমন আশা করাটা বোকামি। বাজেটের আগে ঘটা করে ব্যবসায়ীদের নানা সমস্যার কথা শোনা হয়। তবে এসব সমস্যা সমাধানে কোনো কার্যকরী উদ্যোগ নেয় না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ বিষয়ে আগামী বাজেটে নজর দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ফলপ্রসূ না হলেও এর কারণে ব্যবসা পরিচালনার ব্যয় অনেক বেড়ে যাচ্ছে।   ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, আর্থিক খাতে অনিয়মে এক শ্রেণির ইচ্ছেকৃত ঋণ খেলাপি সুবিধা পাচ্ছে। তাদের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। উল্টো তারা সুবিধা পাচ্ছে। আর আমাদের মতো ব্যবসায়ীরা উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করে আবার ঋণ পরিশোধ করছেন। তারা নতুন বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হবেন। কারণ তারা কিছু পান না। আগামী বাজেটে জিএসপি প্লাস ট্রানজিশনের বিষয়ে প্রতিফলন দেখন চান তারা।
০৭ এপ্রিল, ২০২৪

বাজেট ব্যবস্থাপনায় এখনই সংস্কার আনার সময়
দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার পথটি নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন অব্যাহত রাখা জরুরি। সেটি নিশ্চিত করতে হলে গুণগত মানের সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনায় জোর, স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ায় রাজস্ব আহরণ বাড়ানো ও ব্যাংক খাতে দুরবস্থা দূর করতে হবে। যার সবই সমাধান করতে হবে বাজেট ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে। এক্ষেত্রে বাজেটে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনার এখনই উপযুক্ত সময় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গতকাল মঙ্গলবার আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রাক বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় সংসদ সদস্য, অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী নেতা ও আর্থিক খাতের বিশেষজ্ঞরা এমন মতামত দেন। ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র‌্যাপিড) এ আলোচনার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে র‌্যাপিড চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক বলেন, আগামী বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও সরকারি ব্যয় কমানোর উদ্যোগ মুখোমুখি অবস্থানে থাকবে বলে মনে হচ্ছে। সেখানে বাজেটে যদি সম্প্রসারণমূলক নীতি বহাল থাকে, তাহলে মূল্যস্ফীতি কমানো কঠিন হয়ে পড়বে। এজন্য আগামী বাজেটে বড় সংস্কার প্রয়োজন। নির্বাচনের আগে এ সংস্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন ছিল। নির্বাচনের পরে সেই সংস্কার উদ্যোগ নেওয়া সহজ হয়েছে। সামনে যেহেতু বাজেট, তা করার এখনই উপযুক্ত সময়। যাতে বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সহজ হয়। বাজেট প্রণয়নে সংখ্যার বাইরে বেরিয়ে গুণগত মানের দিকে নজর দেওয়ার তাগিদ দিয়ে আবদুর রাজ্জাক বলেন, একই সঙ্গে রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে, যাতে বাজেট ব্যয় বাড়ানো যায়। বিনিময় হার ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ব্যাংকিং খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। মূল প্রবন্ধে র‌্যাপিডের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ বলেন, দেশে এখনো পরোক্ষ কর অনেক বেশি। অথচ উন্নত বিশ্বে প্রত্যক্ষ কর বেশি। এতদিন এসব জায়গায় সংস্কার আনা যায়নি। এখন নির্বাচনের পরে সংস্কার করার সুযোগ অনেক বেশি। তিনি বলেন, ১২০টি দেশে উন্মুক্ত বাজেট ইনডেক্স হয়। বাংলাদেশে অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীদের সঙ্গে অনেক বেশি প্রাক-বাজেট আলোচনা হয়। কিন্তু বাজেটে এর প্রতিফলন দেখা যায় না। এ ক্ষেত্রে বাজেট ফলোআপ থাকলে কাজে আসত। ২০০৯-১০ অর্থবছরের তুলনায় এখন বাজেটের আকার আট গুণ বেড়েছে; কিন্তু সেই হারে রাজস্ব আয় বাড়েনি। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন নিয়েও উদ্বিগ্ন। বছরের শেষ সময়ে তড়িঘড়ি না করে বছরজুড়ে এডিপি বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেওয়া উচিত। এ ছাড়া আগামী দুই বছর পরে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের ধারাবাহিকতার বিবেচনায় বাজেটে নগদ সহায়তা ও ভর্তুকির বিষয়ে এখন নজর দেওয়া প্রয়োজন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার বাজেট ও সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরেন। তিনি জানান, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, পঞ্চবার্ষিকীসহ অন্যান্য পরিকল্পনা অনুযায়ী বাজেট প্রণয়ন করা হয়। আগামী বাজেটের আকার হবে ৮ লাখ কোটি টাকার। নবম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা তৈরি করার কাজ শুরু হয়েছে। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি কমানোর প্রক্রিয়ায় সুদহার বাড়ানো হয়েছে। সরকার কর জিডিপি অনুপাত বাড়াতে আগ্রহী। তিনি বলেন, আমরা প্রকৃত অর্থে মুক্ত অর্থনীতির অনুসারী না, আমরা কল্যাণকর অর্থনীতির অনুসারী। কল্যাণ অর্থনীতিতে চলছে বাংলাদেশ। আসন্ন বাজেটে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিফলন ঘটবে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের ১১টি বিষয় বাজেটে প্রতিফলিত হয়। এর বাইরেও সরকারের কিছু বিষয় আছে, সেগুলো মাথায় রেখে বাজেট করা হবে। সংসদ সদস্য নাসের শাহরিয়ার জাহেদী বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে ভূমির খাজনা আদায়ে তহশিল অফিস আছে। আর জেলা পর্যায়ে পর্যন্ত কর কর্মকর্তা আছেন। উপজেলা পর্যায়েও মানুষের আয় বেড়েছে, করদাতা বাড়েনি। করখেলাপিদের বা দুর্নীতিগ্রস্তদের বাড়তি সুযোগ দেওয়ায় সাধারণ করদাতারা নিরুৎসাহিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বাজেটে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে যা করার আছে, তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে নজর দিতে হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ বলেন, বাজেটে অনেক বেশি সংস্কার প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সংসদীয় কমিটির সংশ্লিষ্টতা বাড়াতে হবে। যাতে বাজেট বাস্তবায়নের সময় ধরতে পারে। তিনি বলেন, এনবিআরের কর আদায় প্রক্রিয়া অনলাইন করার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে সব প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে এনফোর্সমেন্ট বাড়াতে হবে। ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী বাজেটে বেশ সংস্কারের মাধ্যমে পদক্ষেপ নিতে হবে। যাতে আমরা ব্যবসা করতে পারি। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে না পারলে কর দেওয়ার ক্ষমতা কমে যাবে। তিনি বলেন, সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি কর বাড়ানোর জন্য যথার্থ হবে না। এ অবস্থায় আগামী বাজেটে কার্যকর কর হার কমানো গেলে অনেকটা ভালো হবে। তার মতে, ব্যবসার ওপর করের চাপ বাড়লে অর্থনীতি নিতে পারবে না। এ বছর ব্যবসা করতে না পারলে রাজস্ব আয় ও কর্মসংস্থান কমবে। প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন মাসুম বাংলাদেশে বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়া এবং লম্বা বাজেট বক্তৃতার সমালোচনা করেন। তিনি বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়া সংস্কারের দাবি জানান। আর মূল্যস্ফীতি কমাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর দাবি জানান ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মৃধা।
০৩ এপ্রিল, ২০২৪

শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা বাজেটে জাতীয় আয়ের ৬ শতাংশ বরাদ্দের দাবি
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষা ব্যয় হ্রাসে শিক্ষকদের পাঠদান পদ্ধতি উন্নয়নের দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি আন্দোলন। এ লক্ষ্যে শিক্ষক প্রশিক্ষণ, তাদের বেতন ভাতা ও নৈতিকতার মান বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়ার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।  রোববার (৩১ মার্চ) জাতীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি আন্দোলনের আহ্বায়ক একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ সেলিম ও সদস্য সচিব রুস্তম আলী খোকন এক যৌথ বিবৃতিতে এই দাবি জানিয়েছেন।   বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, দীর্ঘ সময় যাবৎ শিক্ষা ক্ষেত্রে নৈরাজ্য ও অরাজকতা চলছে। কোচিং ব্যবসা আর গাইড বই নির্ভর হয়ে পড়েছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থা। এই ধারা থেকে বের হয়ে আসতে হলে সরকারকে অবশ্যই ইউনেস্কোর সুপারিশমত শিক্ষা বাজেটে জাতীয় আয়ের ৬ শতাংশ বৃদ্ধি করে শিক্ষক শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে শিক্ষার্থীর উপযোগী করে ঢেলে সাজাতে হবে। তারা বলেন, শিক্ষকদের বেতন ভাতা ও সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের নৈতিকতার মান বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করাও জরুরি। এ সকল শর্ত পূরণের পাশাপাশি শিক্ষককেও জবাবদিহিতা এবং শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসা জরুরি। শিক্ষক নিয়োগে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) মতো স্বতন্ত্র কমিশন গঠনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তারা সুপারিশে বলেন, এ কমিশন মেধাবী তরুণ-তরুণীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রদানের সঙ্গে সঙ্গে তাদের পেশাগত উৎকর্ষ ও নৈতিকতার মান বৃদ্ধির কাজ করবে। যা অবশ্যই দলীয় ও রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত হবে। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, শিক্ষার্থী অভিভাবক ও শিক্ষকদের সঙ্গে মাঠপর্যায়ে যথাযথ ধারণা না নিয়েই প্রণীত হচ্ছে পাঠ্যপুস্তক। ফলে শিক্ষার্থীকে গাইড বইয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পাঠ্যপুস্তকের বাইরেও পড়তে হচ্ছে আরেকটি বই। কোচিং সেন্টার ও গাইড বই প্রমাণ করে বিদ্যালয় এবং পাঠ্যপুস্তকের সীমাবদ্ধতা কতটা প্রকট হয়েছে বাংলাদেশে। গাইড বই এর ব্যবসায়ী এবং কোচিং সেন্টারের মালিকরা গড়ে তুলেছে এক ভয়াবহ সিন্ডিকেট।  এতে আরও বলা হয়, বছরের পর বছর সরকারের নিকট কারিগরি শিক্ষার বিস্তার লাভের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জোর দাবি জানিয়ে আসলেও সরকার কোনো কার্যকর উদ্যোগই গ্রহণ করেনি। এই ধরনের নৈরাজ্য আর পশ্চাৎপদ শিক্ষার বিস্তার ঘটলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যর্থ হবে বাংলাদেশ। আর এর করুণ প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে এবং সমাজজীবনে।
৩১ মার্চ, ২০২৪

‘সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বাজেট বাড়ানোর চেয়ে পরিকল্পনা জরুরি’
প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেছেন, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে জাতীয় বাজেট বরাদ্দ সম্পর্কে অনেকেই বলেন কম। যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়, তা খরচ করারও একটা সক্ষমতা থাকে। বরাদ্দের অর্থ যদি ঠিকভাবে ব্যয় করা না যায়, তাহলে বাজেট বাড়িয়ে লাভ হবে না। এক্ষেত্রে পরিকল্পনাটা জরুরি। বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে বাংলা একাডেমি পরিদর্শন শেষে শহিদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। তার সঙ্গে ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান। তিনি বলেন, সরকার সংস্কৃতিবান্ধব সরকার। সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী অনেক উদ্যোগ নিয়েছেন। সে উদ্যোগগুলো দৃশ্যমান। এরপরও এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে সংস্কৃতিমনস্ক একটি জাতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিশ্ব সংস্কৃতির সঙ্গে একটি মেলবন্ধন গড়ে তোলা। শিশুদের সংস্কৃতিমনা পরিবেশে বেড়ে তুলতে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সাহিত্য ক্লাব গড়ে তোলা হচ্ছে। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে বাজেট কম এটি সত্যি। তবে আমাদের জানতে হবে এই বাজেটটিকে আমরা সঠিকভাবে কীভাবে ব্যবহার করব। এজন্য আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস আমাদের তরুণ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এ কারণে আমরা ঢাকাকেন্দ্রিক অনুষ্ঠানই শুধু নয়, বিভাগীয় পর্যায় থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ছড়িয়ে দিব। রিডিং ক্লাব, লিটারেচার ক্লাব তৈরি করব। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, অনুবাদ নিয়ে একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ প্রকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরও ৭টি প্রকল্পের প্রস্তাব রয়েছে। ৮টি প্রকল্পের প্রস্তাব যদি বাস্তবায়ন করা যায় তাহলে বাংলা একাডেমি প্রায় ৩০০ কোটি টাকার কাজ করার সামর্থ্য অর্জন করবে। দীর্ঘদিন পর আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছি। নির্বাচন করতে যে আইন বা বিধিমালা লাগে তা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। খুব কম সময়ে এর কাজ সম্পন্ন হবে। বাংলা একাডেমির ডিসেম্বরের কার্যবিবরণী সভার আগেই দেখা যাবে বাংলা একাডেমির একটি নির্বাচিত কাউন্সিল রয়েছে। মতবিনিময় সভার আগে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক উপদেষ্টা ও প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে বাংলা একাডেমির বিভিন্ন বিভাগ, উপবিভাগ পরিদর্শন করেন। একাডেমির মহাপরিচালক, সচিব, পরিচালক ও উপপরিচালকবৃন্দের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের কর্মপরিকল্পনা ও কার্যক্রম সম্পর্কে বৈঠক করেন।
২৭ মার্চ, ২০২৪

বাজেট প্রস্তাবনা নিয়ে সভা এফবিসিসিআইর
চেম্বার ও খাতভিত্তিক অ্যাসোসিয়েশন প্রধানদের সঙ্গে প্রাক-বাজেট মতবিনিময় সভা করেছে এফবিসিসিআই। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আমদানি শুল্ক, আয়কর, মূসক ও অন্যান্য কর সম্পর্কিত প্রস্তাবনা ও সুপারিশ নিয়ে এ আলোচনার আয়োজন করে সংগঠনটি। গতকাল শনিবার এফবিসিসিআইর বোর্ড রুমে এ সভা হয়। সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, আগামী জাতীয় বাজেটের জন্য এফবিসিসিআইর বাজেট প্রস্তাবনা প্রণয়নের কার্যক্রম এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। বিভিন্ন চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশন থেকে বেশ কিছু প্রস্তাবনা পেয়েছি, যেগুলো যাচাই-বাছাই করে এফবিসিসিআইয়ের প্রস্তাবনায় অন্তর্ভুক্তকরণের বিষয়ে কার্যক্রম চলছে। পাশাপাশি বাজেট প্রস্তাবনা নিয়ে এফবিসিসিআই গঠিত বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে। এ ছাড়া এফবিসিসিআইর আয়কর, আমদানি শুল্ক ও মূসক বিষয়ে মৌলিক প্রস্তাবনাগুলো নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর, মূসক ও শুল্কবিষয়ক বাজেট টাস্কফোর্সে আলোচনা হয়েছে। মাহবুবুল আলম আরও বলেন, দেশের জাতীয় অর্থনীতি একটি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়ালেও চলমান বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকট অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্যও চ্যালেঞ্জ তৈরি করে চলেছে। অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো বিবেচনায় নিয়ে জাতীয় লক্ষ্যমাত্রার আলোকে সুষ্ঠু অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সমুন্নত রাখতে সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় পর্যায়ক্রমে সুদৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সে লক্ষ্যে আগামী ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকবে বলে এফবিসিসিআই মনে করে। সভায় অন্যদের মধ্যে এফবিসিসিআইর সাবেক প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী, বর্তমান সহসভাপতি মো. মুনির হোসেন, পরিচালক, চেম্বার ও খাতভিত্তিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান এবং ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
২৪ মার্চ, ২০২৪

বাস্তবতার নিরিখে নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের পরামর্শ সিপিডির
বর্তমানে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে- রাজস্ব আহরণ ও বাজেট বাস্তবায়নে শ্লথ গতি, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ব্যাংকে তারল্য সংকট, রপ্তানি, প্রবাসী আয় ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া। এর পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগসহ বহিস্থ খাতের প্রায় সবগুলো সূচকে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শনিবার (১৬ মার্চ) ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয় ওঠে আসে। আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে তিনটি বিষয়কে মূল লক্ষ্য নির্ধারণ করে বাস্তবতার নিরিখে নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের পরামর্শ দেয় সিপিডি। সংবাদ সম্মেলনে এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানটির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, গবেষক মুনতাসীর কামাল প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে সিপিডি বলেছে, বর্তমানে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বড় ধরনের চাপের মধ্যে রয়েছে। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতির চাপে মানুষের জীবনযাত্রা সংকটে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করাই ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। এজন্য তিনটি বিষয়কে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এক, সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া; দুই, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া, যাতে ব্যাংকের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে রাজস্ব আয় থেকে প্রয়োজনীয় ব্যয় করা সম্ভব হয়; তিন, দক্ষতার সঙ্গে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকারি ব্যয় করা, যাতে অর্থের অপচয় না হয়। সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করাই ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের মূল্য উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। সে জন্য প্রয়োজনীয় মধ্যমেয়াদি সংস্কার করতে হবে। তিনি বলেন, গত ১০-১১ বছর ধরে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আহরণে বড় ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরেও আরও বড় এই ঘাটতি থাকবে; বছর শেষে তা ৮২ হাজার কোটি টাকা হতে পারে। সরকারের বাজেট ঘাটতি কমলেও ঘাটতি নিরসনে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ওপর সরকারের নির্ভরশীলতা বেড়েছে। সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নির্বাচনী ইশতেহারে মূল্যস্ফীতি কমানো ছিল বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। তা বাস্তবায়নে সরকার কিছু উদ্যোগ নিয়েছে; কিন্তু কেউ বাজারকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে সাত দিনে ৫০ কোটি টাকা লাভ করতে পারলে ৫০ লাখ বা এক কোটি টাকা জরিমানা করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না। সে জন্য বিদ্যমান আইনের কঠোর প্রয়োগ করতে হবে; এবং তা দৃশ্যমান হতে হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সম্প্রতি দুটি ব্যাংকের একীভূত হওয়ার ঘটনা ইতিবাচক। ব্যাংকগুলো দুর্বল হওয়ার পেছনে বাস্তব কারণ ছিল। দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতায় চতুর্থ প্রজন্মের এতগুলো ব্যাংকের প্রয়োজন ছিল কি না, সেটা একটা প্রশ্ন। এ ছাড়া ব্যাংকগুলোতে সুশাসনের অভাব ছিল দৃশ্যমান। যেসব কারণে ব্যাংকগুলো দুর্বল হয়েছে, সেই সব কারণগুলো আমলেও নেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে। সেটা না করে শুধু একীভূত করা হলে কার্যকর কিছু হবে না।
১৬ মার্চ, ২০২৪
X