প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষা ব্যয় হ্রাসে শিক্ষকদের পাঠদান পদ্ধতি উন্নয়নের দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি আন্দোলন। এ লক্ষ্যে শিক্ষক প্রশিক্ষণ, তাদের বেতন ভাতা ও নৈতিকতার মান বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়ার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
রোববার (৩১ মার্চ) জাতীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি আন্দোলনের আহ্বায়ক একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদ সেলিম ও সদস্য সচিব রুস্তম আলী খোকন এক যৌথ বিবৃতিতে এই দাবি জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, দীর্ঘ সময় যাবৎ শিক্ষা ক্ষেত্রে নৈরাজ্য ও অরাজকতা চলছে। কোচিং ব্যবসা আর গাইড বই নির্ভর হয়ে পড়েছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থা। এই ধারা থেকে বের হয়ে আসতে হলে সরকারকে অবশ্যই ইউনেস্কোর সুপারিশমত শিক্ষা বাজেটে জাতীয় আয়ের ৬ শতাংশ বৃদ্ধি করে শিক্ষক শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে শিক্ষার্থীর উপযোগী করে ঢেলে সাজাতে হবে।
তারা বলেন, শিক্ষকদের বেতন ভাতা ও সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের নৈতিকতার মান বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করাও জরুরি। এ সকল শর্ত পূরণের পাশাপাশি শিক্ষককেও জবাবদিহিতা এবং শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসা জরুরি।
শিক্ষক নিয়োগে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) মতো স্বতন্ত্র কমিশন গঠনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তারা সুপারিশে বলেন, এ কমিশন মেধাবী তরুণ-তরুণীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রদানের সঙ্গে সঙ্গে তাদের পেশাগত উৎকর্ষ ও নৈতিকতার মান বৃদ্ধির কাজ করবে। যা অবশ্যই দলীয় ও রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত হবে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, শিক্ষার্থী অভিভাবক ও শিক্ষকদের সঙ্গে মাঠপর্যায়ে যথাযথ ধারণা না নিয়েই প্রণীত হচ্ছে পাঠ্যপুস্তক। ফলে শিক্ষার্থীকে গাইড বইয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পাঠ্যপুস্তকের বাইরেও পড়তে হচ্ছে আরেকটি বই। কোচিং সেন্টার ও গাইড বই প্রমাণ করে বিদ্যালয় এবং পাঠ্যপুস্তকের সীমাবদ্ধতা কতটা প্রকট হয়েছে বাংলাদেশে। গাইড বই এর ব্যবসায়ী এবং কোচিং সেন্টারের মালিকরা গড়ে তুলেছে এক ভয়াবহ সিন্ডিকেট।
এতে আরও বলা হয়, বছরের পর বছর সরকারের নিকট কারিগরি শিক্ষার বিস্তার লাভের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জোর দাবি জানিয়ে আসলেও সরকার কোনো কার্যকর উদ্যোগই গ্রহণ করেনি। এই ধরনের নৈরাজ্য আর পশ্চাৎপদ শিক্ষার বিস্তার ঘটলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যর্থ হবে বাংলাদেশ। আর এর করুণ প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে এবং সমাজজীবনে।
মন্তব্য করুন