মুন্সীগঞ্জের আড়িয়াল বিল দখল বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের আড়িয়াল বিল দখল করে বিভিন্ন ব্যক্তি ও হাউজিং কোম্পানির মাটি ভরাট বন্ধ নিশ্চত করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ বুধবার (১৬ আগস্ট) এ বিষয়ে দায়ের করা এক রিটের ওপর শুনানি শেষে এ নির্দেশ দেন বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিললের আদালত। আড়িয়াল বিল দখল করে মাটি ভরাট নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ গত ১৩ আগস্ট জনস্বার্থে একটি রিট পিটিশন দায়ের করে। এতে আড়িয়াল বিল সংরক্ষণের নির্দেশনা ও সব ধরনের দখল, মাটি ভরাট ও বালু ভরাট অপসারণের নির্দেশনা চাওয়া হয়। এ নিয়ে আজ বিচারপতি জে বি এম হাসান এবং বিচারপতি রাজিক আল জলিলের আদালতে রিট শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত আড়িয়াল বিল সুরক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং এ বিল থেকে অবৈধ মাটি ভরটি, নির্মাণ করা স্থাপনা অপসারণ এবং বিলের জলাশয় মূল অবস্থান অনুযায়ী সংরক্ষণের জন্য কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানাতে চার সপ্তাহের রুল জারি করেছেন। বাদী পক্ষের কৌঁশুলি সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, ঢাকা শহরের বন্যা প্রতিরোধে অন্যতম ভূমিকা রাখে আড়িয়াল বিল। জলাশয় সংরক্ষণ আইন, ২০০০; পরিবেশ সংরক্ষন আইন, ১৯৯৫ এবং পানি আইন, ২০১৩-এর বিধান অনুসারে জলাশয় ভরাট শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ভরাটকারীদের বিরুদ্ধে জলাধার আইনের ৮ ধারায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন ভরাটকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। তাদের নিষ্ক্রিয়তার কারণে দিনে দিনে গুরত্বপূর্ণ জলাশয়টি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আদালত এক অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে পূর্ত সচিব, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ মোট চার জনকে আড়িয়াল বিলের ২০১০ ও ২০২২ সালের প্রকৃত স্যাটেলাইট এরিয়াল ম্যাপ দাখিলের নির্দেশ দেন। অপর এক আদেশে আদালত মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, শ্রীনগরের ইউএনও এবং পরিবেশের এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরকে আড়িয়াল বিলে আর কেউ যেন মাটি ভরাট, নির্মাণকাজ বা দখল কার্যক্রম করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে বলেছেন। একই সঙ্গে তাদের তিন  মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন। হাইকোর্টে রিট পিটিশনার হলেন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ফর বাংলাদেশ-এর পক্ষে অ্যাডভোকেট মো. হোরওয়ার আহাদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এখলাস উদ্দিন ভূঁইয়া এবং অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মণ্ডল। বিবাদীরা হলেন পরিবেশ, বন ও জলাবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সচিব, গৃহায়ণ ও গর্ণপূত মন্ত্রণালয় সচিব, রাজউক চেয়ারম্যান, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট), মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, শ্রীনগরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ওসি।
১৬ আগস্ট, ২০২৩
X