উপজেলা নির্বাচন / ভোটার বাড়ানোর নির্দেশ ইসির
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতিতে সন্তুষ্ট থাকলেও ভোটার উপস্থিতি নিয়ে খুব একটা স্বস্তিতে নেই নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জাতীয় নির্বাচনের পর এবারের উপজেলা নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক কম ভোটার উপস্থিতি নিয়ে বেশ চিন্তিত কমিশন। এমন প্রেক্ষাপটে ভোটের ব্যাপারে দিন দিন মানুষের এমন অনাগ্রহের কারণ খুঁজে পরবর্তী ধাপের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, গত ৮ মে বুধবার অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলা নির্বাচনে ভোট পড়েছে মাত্র ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ। ভোটারদের এমন হতাশাজনক উপস্থিতির অনেক কারণের কথা বলা হলেও মূল কারণ হিসেবে ‘একতরফা’ ভোটকেই দায়ী করা হচ্ছে। সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের মতো বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এবারের উপজেলা নির্বাচনও বর্জন করেছে। ফলে ক্ষমতাসীনদের নিজের মধ্যে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচন নিয়ে তেমন আগ্রহ বা উচ্ছ্বাস দেখাননি ভোটাররা। তবে রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের বিষয়ে কমিশনের খুব বেশি কিছু করার ক্ষমতা নেই বলে মনে করেন ইসি সংশ্লিষ্টরা। সংবিধান ও আইনি বাধ্যবাধকতা মেনেই প্রতিটি নির্বাচন যথাসময়ে আয়োজন করছে কমিশন। এর পরও উপজেলা নির্বাচনে সর্বনিম্ন ভোটের হার নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে রয়েছে কমিশন। সেজন্য পরবর্তী ধাপগুলোয় তা যতটা সম্ভব কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা হচ্ছে কমিশনের তরফ থেকে। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা শনিবার খুলনায় এক মতবিনিময় সভায় বলেছেন, কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া প্রথম ধাপে উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। এতে নির্বাচন কমিশন সন্তুষ্ট। তবে প্রথম ধাপের চেয়ে পরবর্তী ধাপের নির্বাচনগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে কাজ করছে কমিশন। প্রার্থীদের দায়িত্ব ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসা। আর নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব ভোটারদের নিরাপত্তা বিধান ও নির্বিঘ্নে ভোটদানের পরিবেশ সৃষ্টি করা। সূত্র আরও জানায়, প্রথম ধাপের ভোটের পরদিন বৃহস্পতিবারই নির্বাচন কমিশনের মাসিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সারা দেশের মাঠ কর্মকর্তারা যোগ দেন। সেখানে নানা প্রসঙ্গের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি নিয়ে ব্যাপক বিশ্লেষণ চলে। মাঠ কর্মকর্তাদের বক্তব্যেও উঠে আসে প্রসঙ্গটি। এ সময় ইসি সচিব জাহাংগীর আলম জানান, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পরবর্তী পর্যায়গুলোতে সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। প্রথম পর্যায়ের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো চিহ্নিত করে পরবর্তী পর্যায়ের নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে নির্বাচনী কার্যক্রম আরও গতিশীল করার বিষয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে প্রচার আরও জোরদার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। ইসি সূত্র জানায়, ভোটের দিন রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবন থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং অন্য কমিশনাররা। ভোট মনিটরিং করেন দায়িত্বপ্রাপ্ত টিমের সদস্যরাও। সকাল থেকে প্রায় সারা দেশে ভোটার উপস্থিতির করুণ চিত্র উঠে আসে। তবে ভোটারদের উপস্থিতি কম থাকলেও বিভিন্ন উপজেলায় সংঘাত-সহিংসতায় জড়ান প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। এতে বেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেন কমিশনের কর্তারা। ভোট শেষে সার্বিক পরিস্থিতির মূল্যায়নে বসে পড়েন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। কমিশনের হিসেবে এ ধাপে ভোটের হার ছিল ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ। এতে অন্য সবার মতো নির্বাচন কমিশনও ‘অসুখী’ মনোভাব প্রকাশ করেছে। ভোট পড়ার এই হারকে ‘কম’ আখ্যা দিয়ে সেজন্য মোটা দাগে পাঁচটি কারণও চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলো হলো, বৈরী আবহাওয়া, অনেক রাজনৈতিক দলের ভোটে অংশ না নেওয়া, জনপ্রিয় প্রার্থীর অভাব, ধান কাটার মৌসুম এবং সাধারণ ছুটি থাকায় শ্রমিকরা নিজ এলাকায় চলে যাওয়া। নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর সাংবাদিকদের মোটা দাগে এ পাঁচ কারণের কথা জানান। যদিও ভোটের দিন দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ হার ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ছিল বলে জানান ইসি সচিব। আর ভোট গ্রহণ শেষে সিইসি গণমাধ্যমে জানান, কোনো কোনো এলাকায় বৃষ্টিবাদল এবং মানুষ ধান কাটতে ব্যস্ত থাকায় ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। ইসির তথ্য অনুযায়ী, ১৩৯টি উপজেলার মধ্যে ২২টিতে ইভিএমে ভোট হয়েছে। এসব উপজেলায় ভোট পড়ার হার ৩১ দশমিক ৩১ শতাংশ। আর ব্যালট পেপারে ভোট হওয়া বাকি ১১৭ উপজেলায় ভোটের হার ৩৩ দশমিক ২২ শতাংশ। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে ৭৩ দশমিক ১৬ শতাংশ। এ ছাড়া রাঙামাটির কাউখালীতে ৭০ দশমিক ৫৩ শতাংশ ও পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৬৬ দশমিক ১৮ শতাংশ ভোট পড়ে। আর সর্বনিম্ন ১৭ শতাংশ ভোট পড়েছে বগুড়ার সোনাতলায়, চট্টগ্রামের মিরসরাই ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলায়। এ ছাড়া ঢাকার নবাবগঞ্জে ১৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ ও চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ১৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ ভোট পড়ে। এর আগে ২০১৯ সালে পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনে গড়ে ৪১ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছিল। আর ২০১৪ সালে চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনে ৬১ শতাংশ এবং ২০০৯ সালে তৃতীয় উপজেলা নির্বাচনে ৬৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ ভোট পড়ে। সে হিসাবে গত এক দশকের মধ্যে স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনে ভোটের হার এবারই সবচেয়ে কম। তপশিল অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলায় নির্বাচন এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে ১৬০টি উপজেলায় ২১ মে, তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৬টি উপজেলায় ৬ জুন ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১টি ও চতুর্থ ধাপে দুটি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ করা হবে।
১৩ মে, ২০২৪

উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘টার্ন আউট’ সন্তোষজনক। প্রাণহানি ছাড়া একটা নির্বাচন হয়েছে। সন্তোষজনক বলতে হবে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আশা করি, পরে বিস্তারিত বলা যাবে। উপজেলা নির্বাচন নিয়ে নিন্দুকেরা বিশেষ করে বিরোধী দল যে বক্তব্য রেখেছিল, সেটা হাস্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৩৯টি উপজেলায় নির্বাচন হয়েছে। আপনাদেরও অনেকের আশঙ্কা ছিল খুনোখুনি, মারামারির। প্রথম পর্যায়ে বাংলাদেশের কোথাও কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। কিছু জায়গায় ছোটখাটো ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, এ নির্বাচনে ধান কাটার একটা ব্যাপার আছে, ঝড়বৃষ্টি আজও অনেক জায়গায় হয়েছে। নির্বাচন কমিশন যেটা বলেছে—৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে এটা সন্তোষজনক। ওবায়দুল কাদের বলেন, অধিকাংশ জায়গায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। পার্টি থেকে আমাদের নেতাকর্মীরা নেত্রীর নির্দেশে যথাযথ দায়িত্ব পালন করেছেন। উপজেলা নির্বাচন জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে—বিএনপির এমন দাবির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এটা পাগলের প্রলাপ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত।
০৯ মে, ২০২৪

বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ, ভোটার উপস্থিতি কম
যেমন আশঙ্কা করা হয়েছিল, তেমনটা হয়নি প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে। কোথাও কোথাও বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ, গোলাগুলি, প্রকাশ্যে জাল ভোট, ভোট গ্রহণ স্থগিত করা, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আটকসহ নানা ঘটনা ঘটেছে। বড় ধরনের কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। গতকাল বুধবার ১৩৯টি উপজেলায় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে এ ভোট গ্রহণ চলে। তবে এবারের উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কম। ভোটারের খরায় অনেক জায়গায় দিনভর অলস সময় কাটান ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা। কোথাও কোথাও ভোট পরিদর্শনে গিয়ে ভোটার না থাকায় জেলা প্রশাসকসহ মাঠ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ফিরে যেতেও দেখা গেছে। তবে কোনো কোনো উপজেলায় ভোটারদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে ছিল ভোটারের দীর্ঘ লাইন। দুপুর ১২টায় নির্বাচন কমিশন থেকে ভোটের হার ১৫ থেকে ২০ শতাংশ বলা হলেও দিন শেষে তা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ হতে পারে বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। এদিকে নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ ৪৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সংঘর্ষ-হামলা, আহত ৩৬: লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের মধ্য চর আফজল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে বিকেলে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর (দোয়াত-কলম ও কাপ-পিরিচ) সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। তবে সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় একটি কেন্দ্র থেকে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন হোসেন্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনিরুল হক ও তার লোকজন। এ সময় পুলিশ বাধা দিলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশের দুই সদস্যসহ মনিরুল হক পক্ষের পাঁচজন আহত হন। গতকাল দুপুরে উপজেলার হোসেন্দি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। আহত দুই পুলিশ সদস্য হলেন সাদ্দাম হোসেন ও মো. শামীম। আহত অন্যদের নাম জানা যায়নি। অভিযুক্ত মনিরুল হক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আনারস প্রতীকের প্রার্থী আমিরুল ইসলামের সমর্থক। পরে কেন্দ্রটির ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। এদিকে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একই ইউনিয়নের ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যকে মারধর করে আনারস প্রতীকের সমর্থকরা। এ ঘটনার ছবি তুলতে গেলে মানবজমিনের মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি ও মুন্সীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহসভাপতি গোলজার হোসেনের মোবাইল কেড়ে নিয়ে তাকেও মারধর করা হয়। সেই সঙ্গে ওই কেন্দ্রের ভেতরে থাকা সাত সাংবাদিককে প্রায় ৩০ মিনিট অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য মো. সোহেল রানা বলেন, কেন্দ্রের পাশে একটি দোকান ছিল। সেখানে আনারস প্রতীকের সমর্থকরা জড়ো হচ্ছিল। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে আমি তাদের সরে যেতে বলি। সে সময় আনারসের সমর্থকরা আমার ওপর হামলা চালায়। সাংবাদিক ছবি তোলায় তাকেও মারধর করে। সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে সিলেটেও। সদর উপজেলার ঘোপাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাল ভোট দিতে এসে আটক হওয়া যুবককে ছাড়িয়ে নিতে না পেরে এক ফটো সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়েছে কাপ-পিরিচ প্রতীকের সমর্থকরা। এতে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে উপস্থিত সহকর্মীরা তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। গতকাল বিকেল সোয়া ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মাদারীপুর সদর উপজেলায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী আনারস প্রতীকের আসিবুর রহমান খান ও মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী পাভেলুর রহমান খানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হন। দুপুর ১২টার দিকে সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের বালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ১০টি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জাল ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে সুনামগঞ্জের শাল্লায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সকাল পৌনে ১০টার দিকে চব্বিশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রায় আধা ঘণ্টা কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ কার্যক্রম বন্ধ ছিল। গণেন্দ্র চন্দ্র সরকার (আনারস) ও অবনী মোহন দাসের (ঘোড়া) সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘাত বাধে। এতে উভয়পক্ষের ১০ জন আহত হন। নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার পথে দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিমের এক সমর্থককে কুপিয়ে জখম করেছে সন্ত্রাসীরা। আহত শামছুদ্দিন সর্দার (৫৫) সুবর্ণচর উপজেলার ৮নং মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। চরজব্বর থানার ওসি কাওসার চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে আইগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাচনে ফল ঘোষণা করতে দেরি হওয়ায় গতকাল রাতে প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ আটক ৪৭: গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। দুপুরে গিমাডাঙ্গা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরে ঘটনাস্থল থেকে আনারস প্রতীকের ৬ সমর্থককে আটক করা হয়। সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় তৈয়েবুর রহমান সোহেল নামে এক আনসার সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। উপজেলার মৌখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকালে তাকে আটক করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. শাহিন। ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে জাল ভোট দেওয়ার সময় হৃদয় হোসেন নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে সাত দিনের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। উপজেলার মধ্য চাড়োল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় জাল ভোট দেওয়ার ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার ঘটনায় হামিম হোসেন নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশ। উপজেলার মনিগ্রামে অবস্থিত একটি কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে বাধা ও আগের রাতে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শাখাওয়াত হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজিম উদ্দিন আল আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে ভোট কেনার সময় ১ লাখ ১০ হাজার টাকাসহ ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার তামাই পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পাশ থেকে তাকে আটক করা হয়। লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরজাঙ্গালিয়া হাজিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোটে সহায়তা করার অভিযোগে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মেহেদি হাসানকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে জাল ভোট দেওয়াসহ ভোটারদের প্ররোচিত করার দায়ে দুই পোলিং এজেন্টসহ তিনজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। দুপুরে উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কাটানিসার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়। দণ্ডিতরা হলেন হৃদয় মিয়া, শাকিব মিয়া ও রাকিব হোসেন। জাল ভোট দেওয়ার অপরাধে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে হৃত্বিক ঘোষ নামে একজনকে এক মাসের কারাদণ্ড, বাবুল শেখ নামে অন্য একজনকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং একই অপরাধে বিশ্বনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র মাহফুজুর রহমান নামে একজনকে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে কুষ্টিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর মীর রেজাউল ইসলাম বাবুকে আটক করেছে পুলিশ। দুপুর ১২টার দিকে সদর উপজেলার চৌড়হাস মুকুল সংঘ ভোটকেন্দ্র থেকে তাকে আটক করা হয়। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মুক্তি রানী হাওলাদার, পোলিং অফিসার মুন্নী বড়ুয়া ও সমীর চন্দ্র দাশকে আটক করা হয়েছে। উপজেলার উত্তর আমবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র থেকে তাদের আটক করেন দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় কেন্দ্রে প্রবেশ করে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে জাল ভোট দেওয়ার সময় হৃদয় হোসেন নামে এক যুবককে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। উপজেলার মধ্য চাড়োল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। বগুড়ার গাবতলী উপজেলার রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের একটি কেন্দ্র থেকে ব্যালট পেপার বাইরে দেওয়ার অভিযোগে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও প্রার্থীর এজেন্টকে আটক করে পুলিশ। এ ছাড়া সোনারায় ইউনিয়নের এক কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার ঘটনায় প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও ২ সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আটকরা হলেন মাঝপাড়া কুসুম কলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা শাহজাহান আলী ও চেয়ারম্যান প্রার্থী রফি নেওয়াজ খান রবিনের এজেন্ট এবং সাবেক ইউপি সদস্য এমদাদুল হক এরশাদ। এ ছাড়া বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার রানা মিয়া ও আনোয়ার হোসেনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড, সারিয়াকান্দি উপজেলার রোমান খন্দকার ও মমিনকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া ময়মনসিংহ, সিলেট, কিশোরগঞ্জ, কক্সবাজার, কুমিল্লা ও খাগড়াছড়িতে আরও ১৮ জনকে জেল ও জরিমানা করা হয়েছে। কেন্দ্রে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন এজেন্ট: ভোটার উপস্থিতি না থাকায় নীলফামারীর ডিমলার একটি কেন্দ্রে ঘুমিয়ে পড়েন এক প্রার্থীর এজেন্ট। তার নাম আলাকুল ইসলাম (৬০)। তিনি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী আনোয়ারুল হক সরকার মিন্টুর (ঘোড়া প্রতীক) নির্বাচনী এজেন্ট। আলাকুল বলেন, ‘সকাল ৮টায় কেন্দ্র এসেছি। কখনো দু-তিনজন, কখনো ২০ মিনিটেও কোনো ভোটারের উপস্থিতি নেই। ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ায় কখন ঘুমিয়ে পড়েছি বলতে পারছি না।’ (প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন কালবেলার ব্যুরো, নিজস্ব প্রতিবেদক ও জেলা-উপজেলা প্রতিনিধিরা)
০৯ মে, ২০২৪

ভোটার শূন্য কেন্দ্র, ভোটারদের অপেক্ষায় এজেন্টরা
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে সীতাকুণ্ড উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে বুধবার (৮ মে) সকাল ৮টা থেকে। ভোটগ্রহণ চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। তবে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ভোটকেন্দ্রে সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোটকেন্দ্রগুলো ভোটার শূন্য। ভোটারদের জন্য অপেক্ষা করছেন বিভিন্ন প্রার্থীর এজেন্টরা। এরমধ্যে ভোট দিয়েছেন হাতেগোনা কয়েকজন ভোটার। সৈয়দপুর ইউনিয়নের কেদারখীল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং অফিসার সিরাজউদ্দিন বলেন, এ কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা তিন হাজার ১৭৫ জন। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ৮টি বুথের মধ্যে ভোট পড়েছে ১ দশমিক ৫১ শতাংশ। সকাল থেকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। যার কারণে ভোটার উপস্থিতি অনেকটা কম। আশা করছি বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে। সোনাইছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইটিং অফিসার মিটন ঘোষ বলেন, এ কেন্দ্রে ৪৫৯৬ জন ভোটার রয়েছে। ১০টি বুথের মধ্যে সকাল ১০টা পর্যন্ত ৬৪টি ভোট পড়েছে। সোনাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইটিং অফিসার আমিনুর রহমান বলেন, এ কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ৩৪ হাজার পাঁচজন। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মোট ভোট করেছে ৬৫টি। রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সীতাকুণ্ড উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২ জন। এ ছাড়া উপজেলায় দুজন ভাইস চেয়ারম্যান ও তিনজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী রয়েছেন। উপজেলার ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ২০ হাজার ১৯৩ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৬৯ হাজার ৩৮০ জন এবং মহিলা ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৫০ হাজার ৭০৯ জন।
০৮ মে, ২০২৪

ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোই প্রধান চ্যালেঞ্জ ইসির
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের আনুষ্ঠানিক প্রচার শেষ হয়েছে। আগামীকাল বুধবার ১৪১টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি এরই মধ্যে শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অনিয়ম ঠেকাতে ভোরেই কেন্দ্রগুলোতে পাঠানো হবে ব্যালট পেপার। এদিকে ভোটের সব আয়োজন সম্পন্ন হলেও কেন্দ্রে ভোটার আনাকেই এ নির্বাচনের প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। সেজন্য ভোটের হার সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে যাতে কোনোভাবেই কম না হয়, সে ব্যাপারে বেশ তৎপর রয়েছে কমিশন। সেই লক্ষ্যে এরই মধ্যে নানা কার্যক্রম শেষ করা হয়েছে। ইসি সূত্র জানায়, ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি যেন এর চেয়ে বেশি হয়, সে ব্যাপারে সজাগ রয়েছে সংস্থাটি। ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে শুরুতেই বিধিমালা পরিবর্তন করে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য অবাধ সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রচারের সুযোগ দেওয়া হয়েছে ডিজিটাল মাধ্যমেও। ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে পত্রপত্রিকা, বেতার, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচার চালিয়েছে ইসি। প্রচার চালানো হয়েছে বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমেও। ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসতে সারা দেশেই মতবিনিময়সহ নানাভাবে সক্রিয় ছিলেন নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির কর্মকর্তারা। পাশাপাশি ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে ভোট উপলক্ষে ৮ মে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা কালবেলাকে বলেছেন, ‘গত জাতীয় নির্বাচনে যে স্ট্যান্ডার্ড তৈরি হয়েছে, আমরা আর তার নিচে নামতে দিতে চাই না; বরং ওপরে উঠতে চাই। ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আসছে উপজেলা নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করাই আমাদের লক্ষ্য।’ নিয়ম অনুযায়ী, ৩৬ ঘণ্টা আগেই ভোটের আনুষ্ঠানিক প্রচার শেষ হয়। সে অনুযায়ী সোমবার মধ্যরাতেই প্রথম ধাপের প্রচার শেষ হয়েছে। পোলিং এজেন্ট নিয়োগসহ শেষ মুহূর্তের নির্বাচনী কৌশল নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন প্রার্থীরা। সেইসঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের প্রার্থীরাও এরই মধ্যে প্রচারে নেমে পড়েছেন। আর তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপের ভোট নিয়েও অনানুষ্ঠানিক প্রচারে রয়েছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। ইসি সূত্রে জানা গেছে, প্রথম ধাপে ১৫২টি উপজেলা নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করে ইসি। এর মধ্যে পাঁচটি উপজেলায় (হাতিয়া, মুন্সীগঞ্জ সদর, পরশুরাম, বাগেরহাট সদর ও শিবচর) বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এরই মধ্যে সব প্রার্থী বিজয়ী হন। এ ছাড়া ধাপ পরিবর্তন, মামলা ও মৃত্যুজনিত কারণে ছয়টি উপজেলায় (নারায়ণগঞ্জ সদর, কুমারখালী, রোয়াংছড়ি, থানচি, গোপালপুর ও মহাদেবপুর) এ ধাপে ভোট হচ্ছে না। ফলে বাকি ১৪১টি উপজেলায় অনুষ্ঠিতব্য ভোট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ১৪১ বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছে ইসি। নির্বাচনী অপরাধ আমলে নিয়ে তারা সংক্ষিপ্ত বিচারকাজ সম্পন্ন করবেন। পরবর্তী ধাপগুলোর জন্যও একইভাবে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেবে ইসি। এ ধাপের নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করবেন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে জেলা প্রশাসক। সূত্র জানায়, প্রথম ধাপের এ নির্বাচনে ১৪১ উপজেলায় মোট কেন্দ্র রয়েছে ১১ হাজার ৫৫৬টি। এর মধ্যে দুর্গম এলাকার ৪২৪টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের আগের দিন ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। আর ১১ হাজার ১৩২ কেন্দ্রে ব্যালট যাবে ভোটের দিন সকালে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, চার ধাপে অনুষ্ঠেয় উপজেলা নির্বাচনের সব ধাপেই দুর্গম কেন্দ্রে আগের দিন ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। অন্যগুলো যাবে ভোটের দিন সকালে। কয়েক বছর ধরে ভোটে কারচুপি রোধ করতে আগের রাতে ব্যালট না পাঠিয়ে সকালে পাঠায় কমিশন। ইসি সূত্র জানায়, বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর বর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার ও ইসি। এরপর অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকারের কয়েকটি নির্বাচনেও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়েনি ভোটের হার। গত ১১ মার্চ ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটির উপনির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের ২৩১টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ময়মনসিংহ সিটিতে ভোট প্রদানের হার ৫৬ দশমিক ৩০ শতাংশ। অন্যদিকে কুমিল্লা সিটিতে ভোটের হার ৩৮ দশমিক ২ শতাংশ। জাতীয় নির্বাচনের পর স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির এমন চিত্র নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন কমিশনের কর্তাব্যক্তিরা। সেজন্য ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে ভোটার উপস্থিতির হার বাড়াতে ব্যাপক তৎপর হয়ে পড়েন তারা। নির্বাচনে প্রার্থী সংখ্যা বাড়িয়ে ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়াতে এবার নির্দলীয় ভোটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ফলে এবারের নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে বিধিমালা সংশোধন করা হয়েছে। নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ছাড় দিয়ে ভোটের ব্যাপারে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনী পোস্টার, নির্বাচনী প্রচার এবং প্রার্থীদের জামানতসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বড় ধরনের সংশোধন আনা হয়।
০৭ মে, ২০২৪

‘তীব্র তাপপ্রবাহে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা’
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনিছুর রহমান বলেছেন, তীব্র তাপপ্রবাহের জন্য উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। উপজেলা পরিষদের সাধারণ নির্বাচন ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য হবে। নির্বাচনে কোনো পক্ষপাতমূলক আচরণ করা হবে না। গতকাল শনিবার দুপুরে সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে উপজেলা নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন। আনিছুর রহমান বলেন, নির্বাচন যেন উৎসবমুখর, অংশগ্রহণমূলক হয়, সেজন্য আমরা প্রতিটি মুহূর্তে কাজ করছি। তবে তীব্র তাপপ্রবাহের জন্য নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা গণতান্ত্রিক অধিকার হলেও জনগণ স্থানীয় নির্বাচন বর্জন করবে না। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করতে যা যা করা দরকার, নির্বাচন কমিশন তা করতে বদ্ধপরিকর।
২৮ এপ্রিল, ২০২৪

তীব্র দাবদাহে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা ইসির
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনিছুর রহমান বলেছেন, তীব্র দাবদাহের জন্য উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়াও তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদের সাধারণ নির্বাচন ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য হবে। নির্বাচনে কোনো পক্ষপাতমূলক আচরণ করা হবে না। শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে উপজেলা নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, নির্বাচন যেন উৎসবমুখর, অংশগ্রহণমূলক হয় সেজন্য আমরা প্রতিটি মুহূর্তে কাজ করছি। তবে তীব্র দাবদাহের জন্য নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা গণতান্ত্রিক অধিকার হলেও জনগণ স্থানীয় নির্বাচন বর্জন করবে না। একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করতে যা যা করা দরকার নির্বাচন কমিশন তা করতে বদ্ধ পরিকর। সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকীদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার মো. জাকির হোসেন খান, অতিরিক্ত ডিআইজি (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) সৈয়দ হারুন অর রশীদ, বিজিবি শ্রীমঙ্গল সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল এএইচএম ইয়াসিন চৌধুরী, পিএইচডি, আনসার ও ভিডিপি সিলেটের উপপরিচালক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল, জেলা প্রশাসক সিলেট শেখ রাসেল হাসান, পুলিশ সুপার সিলেট মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা সিলেট মো. আবদুল হালিম খান। সিলেট বিভাগের চার জেলার মধ্যে সিলেটের সদর, দক্ষিণ সুরমা, বিশ্বনাথ ও গোলাপগঞ্জ। সুনামগঞ্জের দিরাই ও শাল্লা। মৌলভীবাজারের জুড়ি, কুলাউড়া ও বড়লেখা এবং হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ ও বানিয়াচং উপজেলায় প্রথম ধাপে নির্বাচন হচ্ছে। এ ১১ উপজেলায় প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২২ এপ্রিল। আর ভোটগ্রহণ হবে ৮মে।
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

কক্সবাজারে কত রোহিঙ্গা ভোটার হয়েছে জানতে চান হাইকোর্ট
কক্সবাজারে কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্টে। বিষয়টি তদন্ত করে ৬ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে কক্সবাজারের ঈদগাঁও ইউনিয়নের ৩৮ রোহিঙ্গাকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ-সংক্রান্ত রিটের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চ গতকাল বুধবার এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের ভোটার করা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত। রোহিঙ্গাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ না দিয়েই ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তপশিল প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত মঙ্গলবার রিট করেন ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা মোহাম্মদ হামিদ। অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক উল্লাহ জানান, ঈদগাঁও ইউনিয়নের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়েছে ৩৮ রোহিঙ্গা। তাদের তালিকা যুক্ত করে রিট আবেদন করা হয়। এ ছাড়া একই ইউনিয়নে কয়েকশ (সাড়ে তিনশ) রোহিঙ্গা বাংলাদেশের নাগরিক হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে তাদের নাগরিকত্ব বাদ দিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ না করা পর্যন্ত ওই ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত রাখার আর্জি জানানো হয়েছে রিটে।
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচন / মাইকে ডেকেও ভোটার খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সকাল থেকেই ভোটার উপস্থিতি কম। ভোট শুরুর আগে থেকে প্রার্থীরা উপস্থিত হলেও, ভোটারদের উপস্থিতি তেমন একটি চোখে পড়েনি। এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে মাইক দিয়ে শিল্পীদের ভোট প্রদানের জন্য আহ্বান করতে দেখা যায়। এ নিয়ে প্রার্থীদের অনেকেই কালবেলাকে জানান তীব্র গরম থাকায় ভোটারদের উপস্থিতি কম। তবে দুপুরের পর থেকে ভোটারদের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে উঠবে বিএফডিসি।  এদিকে গতবারের প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুন কালবেলাকে বলেন, ‘এই সময়ে গতবার ভোট কাস্ট হয়েছিল ১৬০ এবার ১১ টি।’   নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে আছেন প্রযোজক নেতা খোরশেদ আলম খসরু। তার সঙ্গে সদস্য হিসেবে আছেন এজে রানা ও বিএইচ নিশান। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯ টা থেকে শুরু হয়েছে ভোট গ্রহণ। চলবে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত।  এবারের নির্বাচনে দুই প্যানেলের একটিতে আছেন অভিনেতা মিশা সওদাগর ও মনোয়ার হোসেন ডিপজল আর অন্যটিতে একসময়ের জনপ্রিয় নায়ক মাহমুদ কলি ও চিত্রনায়িকা নিপুন আক্তার।
১৯ এপ্রিল, ২০২৪

উপজেলায় ভোটার বাড়াতে ইসির নানা পদক্ষেপ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি যেন তার চেয়ে বেশি হয়, সে ব্যাপারে সজাগ রয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে এরই মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য বিধিমালা পরিবর্তন করা হয়েছে। ছোটখাটো ভুলে কোনো প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা যাবে না—এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে মাঠ প্রশাসনকে। প্রচার-প্রচারণার সুযোগ দেওয়া হয়েছে ডিজিটাল মাধ্যমেও। ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে সচেতনতামূলক প্রচারও চালাবে ইসি। এ ছাড়া ভোটের হার বাড়াতে আরও যা যা করার তার সবই করা হবে। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেছেন, ‘গত জাতীয় নির্বাচনে যে স্ট্যান্ডার্ড তৈরি হয়েছে, আমরা আর তার নিচে নামতে দিতে চাই না; বরং ওপরে উঠতে চাই। আসছে উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করাই আমাদের লক্ষ্য।’ আগামী মাস থেকে চার ধাপে দেশের সাড়ে চার শতাধিক উপজেলা নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেছে কমিশন। এরই মধ্যে প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলার মনোনয়ন জমা শেষ হয়েছে। আজ বুধবার হবে মনোনয়ন যাচাই-বাছাই। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল, আর ১৫০ উপজেলায় ভোট গ্রহণ হবে ৮ মে। এই ধাপের নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করবেন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে জেলা প্রশাসক। এ ছাড়া দ্বিতীয় ধাপে ১৬১টি উপজেলা নির্বাচনেরও পূর্ণাঙ্গ তপশিল ঘোষণা করা হয়েছে। তপশিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিল ২১ এপ্রিল শেষ সময়, মনোনয়নপত্র বাছাই ২৩ এপ্রিল, আপিল গ্রহণ ২৪ থেকে ২৬ এপ্রিল, আপিল নিষ্পত্তি ২৭ থেকে ২৯ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল, প্রতীক বরাদ্দ ২ মে। আর ১৬১ উপজেলায় ভোট গ্রহণ হবে ২১ মে। এই ধাপের নির্বাচনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। ভোটারের সংখ্যা ৫ লাখের বেশি যেখানে, সেখানে একাধিক সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। এরপর ২৯ মে এবং ৫ জুন তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আজ বুধবার তৃতীয় ধাপের নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করা হতে পারে। ইসি সূত্র জানায়, বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর বর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার ও নির্বাচন কমিশন। এরপর অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকারের কয়েকটি নির্বাচনেও উল্লেখযোগ্য হারে বাড়েনি ভোটের হার। গত ১১ মার্চ ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনে সাধারণ ও কুমিল্লা সিটির উপনির্বাচনসহ স্থানীয় সরকারের ২৩১টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ময়মনসিংহের ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৬ জন ভোটারের মধ্যে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৪৩৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এ সিটিতে ভোট প্রদানের হার ৫৬ দশমিক ৩০ শতাংশ। তার আগে ২০১৯ সালে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইকরামুল হক টিটু মেয়র নির্বাচিত হন। অন্যদিকে কুমিল্লা সিটিতে ২ লাখ ৪২ হাজার ৪৫৮ ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ৯৪ হাজার ১১৫ জন। ভোটের হার ৩৮ দশমিক ২ শতাংশ। ২০২২ সালের কুমিল্লায় ভোট পড়েছিল ৫৮ দশমিক ৬১ শতাংশ। জাতীয় নির্বাচনের পর স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির এমন চিত্র নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন কমিশনের কর্তাব্যক্তিরা। সেজন্য ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে ভোটার উপস্থিতির হার বাড়াতে ব্যাপক তৎপর হয়ে পড়েন তারা। নির্বাচনে প্রার্থী সংখ্যা বাড়িয়ে ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়াতে এবার নির্দলীয় ভোটের সিদ্ধান্ত নেয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ফলে এবারের নির্বাচনে নৌকা মার্কার কোনো প্রার্থী থাকছেন না। এতে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের মতো উপজেলা নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীদের হিড়িক পড়েছে। প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলায় ক্ষমতাসীন দলের ৪৬৬ জন প্রার্থী হয়েছেন। ভোটের জন্য প্রতিটি উপজেলায় গড়ে তিনজনেরও বেশি প্রার্থী হয়েছেন এ দলের নেতারা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে এই কৌশল বড় ধরনের কোনো কাজে না এলেও এ নির্বাচনের জন্য সরকারবিরোধী বিএনপি-জামায়াতের ৬০ জনেরও বেশি নেতা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। যদিও মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে দুই দলের পক্ষ থেকেই এসব প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে দলীয় নির্দেশ আমলে না নিয়ে এসব প্রার্থী সিদ্ধান্তে অটল থাকলে শেষ পর্যন্ত চতুর্মুখী লড়াইয়ে ভোটার উপস্থিতি বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন ও আচরণ বিধিমালায় এরই মধ্যে ব্যাপক সংশোধন আনা হয়েছে। নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ছাড় দিয়ে ভোটের ব্যাপারে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে। এ নির্বাচনে যাতে অধিক সংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থী অংশ নিতে পারেন, সেজন্য প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের সঙ্গে ২৫০ ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা সংযুক্তির বিষয়টি বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচনী পোস্টার, নির্বাচনী প্রচারণা এবং প্রার্থীদের জামানতসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বড় ধরনের সংশোধন আনা হয়েছে। জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ কালবেলাকে বলেন, নির্বাচনে ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে টিভিসি, বিভিন্ন প্রচার কার্যক্রম, উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচারের মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা আশা করি স্থানীয় এ সরকার নির্বাচনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের থেকে ভোটার উপস্থিতি বেশি থাকবে।
১৮ এপ্রিল, ২০২৪
X