যেভাবে শাটডাউন এড়াল মার্কিন কংগ্রেস
যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ বিল নিয়ে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছিল। একপ্রকার নিশ্চিতই ছিল আবারও শাটডাউন হচ্ছে দেশটিতে। তবে শেষ মুহূর্তে মার্কিন কংগ্রেসে বিল পাসের মাধ্যমে এ যাত্রায় শাটডাউন এড়াতে পারলেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। আর এর ফলে বড় ধরনের অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা থেকে রক্ষা পেল দেশটি। খবর বিবিসির। শনিবার শেষ মুহূর্তে স্টপগ্যাপ তহবিল বিল পাস করে মার্কিন কংগ্রেস। এ বিল পাসের ফলে আগামী ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত সরকারি অর্থায়ন বজায় থাকবে। তবে এ বিলে কট্টরপন্থি রিপাবলিকানদের দাবি মেনে ইউক্রেনের জন্য নতুন কোনো সহায়তা রাখা হয়নি। মূলত ইউক্রেনের জন্য অর্থ সহায়তা নিয়েই দুদলের মধ্যে বিরোধ চলছিল। রিপাবলিকানরা চাচ্ছিলেন না কিয়েভের জন্য নতুন কোনো অর্থ বরাদ্দ হোক। শেষ পর্যন্ত তাদের সেই দাবি মেনেই বিল পাস করে শাটডাউন এড়ানো হলো। ৪৫ দিনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থের জোগান দিতে কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি এ বিলটি সংসদে উত্থাপন করেছিলেন। প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি ৩৩৫-৯১ এবং সিনেটে ৮৮-৯ ভোটের ব্যবধানে পাস হয়। কংগ্রেসের পাসের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্বাক্ষরের পর সেটি আইনে পরিণত হয়। এর ফলে মাত্র ১০ বছরের মধ্যে চতুর্থ শাটডাউনের হাত থেকে রক্ষা পেল যুক্তরাষ্ট্র। বিল নিয়ে সিনেটে ভোটাভুটির পর পরই এক বিবৃতিতে জো বাইডেন বলেন, প্রতিনিধি পরিষদের কট্টর রিপাবলিকানরা একটি কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে চেয়েছিলেন। একই সঙ্গে ইউক্রেনের জন্য তহবিল বরাদ্দে দেরি না করে নতুন আরেকটি বিল পাসের জন্য প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ম্যাকার্থির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা কোনো পরিস্থিতিতেই ইউক্রেনের জন্য মার্কিন সহায়তা বাধাগ্রস্ত হতে দিতে পারি না। বিল পাসের পর সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল ডেমোক্র্যাট পার্টির নেতা চাক শুমার বলেন, এখন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারবে। কয়েক জন রিপাবলিকান নেতা যে উগ্র, কদর্য ও ক্ষতিকর বাজেট কাটছাঁটের তোড়জোড় শুরু করেছিলেন, তা এড়ানো গেছে। এ সময় তিনিও কিয়েভকে আরও অর্থ সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।
০২ অক্টোবর, ২০২৩

রোহিঙ্গাদের আকুতি শুনলেন মার্কিন কংগ্রেস প্রতিনিধিরা
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছে বাংলাদেশে সফররত মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল। এ সময় তাদের কাছে নিজ দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন রোহিঙ্গারা। সেইসঙ্গে নাগরিকত্ব ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে তাদের সহযোগিতাও কামনা করেন। গতকাল সোমবার সকালে ৯টায় কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছায় প্রতিনিধিদলটি। এ দলে থাকা কংগ্রেসম্যানদের একজন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির কংগ্রেস সদস্য এড কেইস ও অন্যজন রিপাবলিকান পার্টির রিচার্ড ম্যাককোরমিক। তারা ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিমানবন্দর থেকে দলটি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সমন্বয় সংস্থা ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপের (আইএসসিজি) অফিসে যায় ও সেখানে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএমসহ ইউএনের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে। এরপর সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে যায় দলটি। সেখানে ৪ ঘণ্টারও বেশি সময় অবস্থান করেন দলের সদস্যরা। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ দৌজা নয়ন জানান, প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ক্যাম্পে সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থার বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শনের পাশাপাশি রোহিঙ্গা নারী ও পুরুষের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর বিকেলে তারা কক্সবাজার আরআরআরসি অফিসে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন। এ সফরে তারা রোহিঙ্গাদের আর্থিক অবস্থাসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
১৫ আগস্ট, ২০২৩

রোহিঙ্গাদের আকুতি শুনলেন মার্কিন কংগ্রেস প্রতিনিধি দল
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে এসে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের আকুতি শুনলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল।  নাগরিকত্ব ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনে সহযোগিতার হাত বাড়াতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আকুতি নিয়ে আহ্বান জানান রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা।  এ নিয়ে তাৎক্ষণিক কোনো কথা না বললেও রোহিঙ্গাদের আবেদন ও নিবেদনগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। এমনটি জানিয়েছেন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে থাকা ক্যাম্প সংশ্লিষ্টরা। সোমবার (১৪ আগস্ট) সকালে কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল কক্সবাজার বিমানবন্দরে নেমে আইএসসিজির অফিস হয়ে ক্যাম্পে যান।  যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির কংগ্রেস সদস্য এড কেইস ও রিপাবলিকান পার্টির রিচার্ড ম্যাকরমিকের নেতৃত্বে ১১ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছায় এবং প্রায় ৪ ঘণ্টারও বেশি সময় সেখানে অবস্থান করেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ এপিবিএনের অধিনায়ক (অ্যাডিশনাল ডিআইজি) মো. আমির জাফর জানান, কংগ্রেস প্রতিনিধি দল প্রথমে উখিয়ার বালুখালীস্থ ১২ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্রে যান। সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে রোহিঙ্গাদের ডাটা এন্ট্রি কার্যক্রম তদারকির পাশাপাশি ডাটা কার্ডের বিভিন্ন সুবিধা নিতে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন। এপিবিএন সদস্যরা প্রতিনিধিদলের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত পরিদর্শনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন।  ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক (অ্যাডিশনাল ডিআইজি) সৈয়দ হারুনুর রশীদ জানান, বালুখালীস্থ ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে কুতুপালং ১১ নম্বর ক্যাম্পের সি/১ ব্লকে অবস্থিত ইউএস অর্থায়নে পরিচালিত সান লার্নিং সেন্টার পরিদর্শন করেন। সেখানে মিয়ানমার ক্যারিকুলাম অনুযায়ী শিক্ষা প্রদানের বিষয়টি তদারকি করেন। এরপর ডাব্লিউএফপির ই-ভাউচার আউটলেট এবং রোহিঙ্গারা ডাটা কার্ডের মাধ্যমে কিভাবে রেশন গ্রহণ করে তা পর্যবেক্ষণ ও বিভিন্ন স্টোর পরিদর্শন করেন।  পরে কুতুপালং রেজিস্ট্রার্ড ক্যাম্পের ইউএনএইচসিআর-এর উৎপাদন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর আইন সেবাকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ এবং রোহিঙ্গাদের যেসব আইনগত সেবা প্রদান করা হয় তা তদারকি করেন। সবশেষে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। এসময় রোহিঙ্গারা নাগরিকত্ব ও সম্মনজনক প্রত্যাবাসনে সহযোগিতার হাত বাড়াতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আকুতি নিয়ে আহ্বান জানান। বিকেল ৫টার দিকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ত্যাগ করেন তারা। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ দৌজা নয়ন জানান, সোমবার সকাল ৯টায় মার্কিন কংগ্রেসের ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল বিমানবন্দর থেকে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সমন্বয় সংস্থা ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপের অফিসে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)সহ ইউএন’র বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরে প্রতিনিধি দল উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। প্রতিনিধি দলটির সদস্যরা ক্যাম্পে বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থার বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শনের পাশাপাশি রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের সঙ্গে সরাসরি আলাপ করেন। বিকেলে প্রতিনিধি দলটি কক্সবাজার আরআরআরসি অফিসে এসে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন। কংগ্রেস প্রতিনিধিদল সফরকালে রোহিঙ্গাদের আর্থিক অবস্থাসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন বলে উল্লেখ করেছে।  ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে হত্যা ও নির্যাতন শুরু করে। তখন সীমান্ত অতিক্রম করে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকেই এখানে ছিল আরও কয়েক লাখ নিপীড়িত রোহিঙ্গা। ফলে সব মিলিয়ে এখানে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা বর্তমানে ১২ লাখেরও বেশি। মানবিক কারণে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলেও বর্তমানে বিশাল এই জনগোষ্ঠী নিয়ে বিপাকে পড়েছে সরকার। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরানোর চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। আন্তর্জাতিক চাপে মিয়ানমার বারবার আশ্বাস দিলেও একজন রোহিঙ্গাকেও নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়নি। মানবিক বিবেচনায় আশ্রয় দেওয়া রোহিঙ্গারা এখন বাংলাদেশের জন্য বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানকার অবস্থা দেখতে বিশ্বের নেতৃত্ব স্থানীয় দেশের প্রতিনিধিরা প্রায় ক্যাম্পে আসছেন। এরই অংশ হিসেবে মার্কিন কংগ্রেস প্রতিনিধি দলও ক্যাম্প পরিদর্শন করেন।
১৪ আগস্ট, ২০২৩
X