শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৩, ০৭:০৪ পিএম
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৩, ০৭:১১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

রোহিঙ্গাদের আকুতি শুনলেন মার্কিন কংগ্রেস প্রতিনিধি দল

রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলের এক সদস্য। ছবি : কালবেলা
রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলের এক সদস্য। ছবি : কালবেলা

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে এসে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের আকুতি শুনলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল।

নাগরিকত্ব ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনে সহযোগিতার হাত বাড়াতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আকুতি নিয়ে আহ্বান জানান রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা।

এ নিয়ে তাৎক্ষণিক কোনো কথা না বললেও রোহিঙ্গাদের আবেদন ও নিবেদনগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। এমনটি জানিয়েছেন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে থাকা ক্যাম্প সংশ্লিষ্টরা।

সোমবার (১৪ আগস্ট) সকালে কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল কক্সবাজার বিমানবন্দরে নেমে আইএসসিজির অফিস হয়ে ক্যাম্পে যান।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির কংগ্রেস সদস্য এড কেইস ও রিপাবলিকান পার্টির রিচার্ড ম্যাকরমিকের নেতৃত্বে ১১ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছায় এবং প্রায় ৪ ঘণ্টারও বেশি সময় সেখানে অবস্থান করেন।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ এপিবিএনের অধিনায়ক (অ্যাডিশনাল ডিআইজি) মো. আমির জাফর জানান, কংগ্রেস প্রতিনিধি দল প্রথমে উখিয়ার বালুখালীস্থ ১২ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্রে যান। সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে রোহিঙ্গাদের ডাটা এন্ট্রি কার্যক্রম তদারকির পাশাপাশি ডাটা কার্ডের বিভিন্ন সুবিধা নিতে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন। এপিবিএন সদস্যরা প্রতিনিধিদলের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত পরিদর্শনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন।

১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক (অ্যাডিশনাল ডিআইজি) সৈয়দ হারুনুর রশীদ জানান, বালুখালীস্থ ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে কুতুপালং ১১ নম্বর ক্যাম্পের সি/১ ব্লকে অবস্থিত ইউএস অর্থায়নে পরিচালিত সান লার্নিং সেন্টার পরিদর্শন করেন। সেখানে মিয়ানমার ক্যারিকুলাম অনুযায়ী শিক্ষা প্রদানের বিষয়টি তদারকি করেন। এরপর ডাব্লিউএফপির ই-ভাউচার আউটলেট এবং রোহিঙ্গারা ডাটা কার্ডের মাধ্যমে কিভাবে রেশন গ্রহণ করে তা পর্যবেক্ষণ ও বিভিন্ন স্টোর পরিদর্শন করেন।

পরে কুতুপালং রেজিস্ট্রার্ড ক্যাম্পের ইউএনএইচসিআর-এর উৎপাদন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর আইন সেবাকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ এবং রোহিঙ্গাদের যেসব আইনগত সেবা প্রদান করা হয় তা তদারকি করেন। সবশেষে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। এসময় রোহিঙ্গারা নাগরিকত্ব ও সম্মনজনক প্রত্যাবাসনে সহযোগিতার হাত বাড়াতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আকুতি নিয়ে আহ্বান জানান। বিকেল ৫টার দিকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ত্যাগ করেন তারা।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ দৌজা নয়ন জানান, সোমবার সকাল ৯টায় মার্কিন কংগ্রেসের ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল বিমানবন্দর থেকে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সমন্বয় সংস্থা ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপের অফিসে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)সহ ইউএন’র বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরে প্রতিনিধি দল উখিয়ার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। প্রতিনিধি দলটির সদস্যরা ক্যাম্পে বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থার বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শনের পাশাপাশি রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের সঙ্গে সরাসরি আলাপ করেন। বিকেলে প্রতিনিধি দলটি কক্সবাজার আরআরআরসি অফিসে এসে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন। কংগ্রেস প্রতিনিধিদল সফরকালে রোহিঙ্গাদের আর্থিক অবস্থাসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন বলে উল্লেখ করেছে।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে হত্যা ও নির্যাতন শুরু করে। তখন সীমান্ত অতিক্রম করে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকেই এখানে ছিল আরও কয়েক লাখ নিপীড়িত রোহিঙ্গা। ফলে সব মিলিয়ে এখানে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা বর্তমানে ১২ লাখেরও বেশি।

মানবিক কারণে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলেও বর্তমানে বিশাল এই জনগোষ্ঠী নিয়ে বিপাকে পড়েছে সরকার। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরানোর চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। আন্তর্জাতিক চাপে মিয়ানমার বারবার আশ্বাস দিলেও একজন রোহিঙ্গাকেও নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়নি। মানবিক বিবেচনায় আশ্রয় দেওয়া রোহিঙ্গারা এখন বাংলাদেশের জন্য বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানকার অবস্থা দেখতে বিশ্বের নেতৃত্ব স্থানীয় দেশের প্রতিনিধিরা প্রায় ক্যাম্পে আসছেন। এরই অংশ হিসেবে মার্কিন কংগ্রেস প্রতিনিধি দলও ক্যাম্প পরিদর্শন করেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নিখোঁজের একদিন পর যুবকের মরদেহ মিলল পুকুরে

বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ড্রয়ের তারিখ ঘোষণা করলেন ট্রাম্প

এশিয়া কাপ দলে জায়গা পেয়ে সোহানের কৃতজ্ঞতার বার্তা

ঘুষ কেলেঙ্কারিতে পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

প্রবীণদের বিশেষ যত্ন নিয়ে বার্ধক্যের প্রস্তুতি নিন: স্বাস্থ্য সচিব

বিভুরঞ্জন সরকারের মৃত্যু অনাকাঙ্ক্ষিত: রাষ্ট্রদূত আনসারী

লা লিগার কাছে যে অনুরোধ করতে চায় বার্সা

‘নির্বাচনে আমলাদেরকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে’

সাবেক এডিসি শচীন মৌলিক কারাগারে

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা আসছেন শনিবার, যেসব বিষয়ে আলোচনা

১০

সিদ্ধিরগঞ্জে হেফাজতে ইসলামের শানে রিসালাত সম্মেলন

১১

শেষ দিনেও ‘জুলাই সনদ’ নিয়ে মতামত দেয়নি ৭ রাজনৈতিক দল

১২

ইউরোপের লিগগুলোতে দল কমানোর প্রস্তাব ব্রাজিল কোচ আনচেলত্তির

১৩

নেপালে মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকের প্রচার, তাসনিম জারার ব্যাখ্যা

১৪

মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে মৃত্যুর মিছিল, তিন বছরে প্রাণ হারান ১৮৩ জন

১৫

স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি 

১৬

সুদ দিতে না পারায় বসতঘরে তালা, বারান্দায় রিকশাচালকের পরিবার

১৭

দেশ বাঁচাতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে : চরমোনাই পীর

১৮

এএসপির বাসায় চাঁদাবাজি-ভাঙচুর, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

১৯

জেলের জালে বড় ইলিশ, ৯ হাজারে বিক্রি 

২০
X