জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনে চাকরি, মাসিক বেতন ৫৮ হাজার
জাতীয় স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থা জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের ‘অ্যাডমিন এন্ড ফাইন্যান্স অফিসার‘ পদে জনবল নিয়োগ দেবে। আগ্রহী ও যোগ্য প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন আগামী ২২ এপ্রিল পর্যন্ত। প্রতিষ্ঠানের নাম : জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন পদের নাম : অ্যাডমিন এন্ড ফাইন্যান্স অফিসার পদসংখ্যা : ১টি বয়স : কমপক্ষে ৩০ বছর কর্মস্থল : কক্সবাজার বেতন : ৫৮,০০০/- (মাসিক) অভিজ্ঞতা : কমপক্ষে ৫ বছর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ : ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ প্রার্থীর ধরন : নারী-পুরুষ (উভয়) কর্মক্ষেত্র : অফিস কর্মঘণ্টা : ফুলটাইম আবেদনের শেষ তারিখ : ২২ এপ্রিল, ২০২৪ শিক্ষাগত যোগ্যতা : বাণিজ্যে স্নাতকোত্তর, অ্যাকাউন্টিংয়ে মাস্টার্সকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। অন্যান্য দক্ষতা ও যোগ্যতা : এমএস অফিসে প্রাথমিক কম্পিউটার দক্ষতা। স্থানীয় ভাষা জ্ঞান সম্পর্কে ধারণা থাকা। চাপের মধ্যে কাজ করার ক্ষমতা থাকতে হবে। অন্যান্য সুবিধা : সাংগঠনিক নীতির পাশাপাশি প্রকল্প অনুযায়ী একত্রিত এবং অন্যান্য গ্রহণযোগ্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। যেভাবে আবেদন করবেন : আগ্রহী প্রার্থীরা সিভি মেইল করুন- [email protected] অথবা অনলাইনে আবেদন করতে এখানে ক্লিক করুন। ঠিকানা : জাগোরানী চক্র ফাউন্ডেশন, প্রধান কার্যালয়, ৪৬ মুজিব সড়ক, যশোর-৭৪০০
১৭ এপ্রিল, ২০২৪

বিচিত্র / তার শপিংয়ের জন্য মাসিক ‘বরাদ্দ’ প্রায় আড়াই কোটি টাকা!
ধনী ব্যক্তিরা যেমন তাদের হাত খরচ, কেনাকাটায় মাসে লাখ লাখ টাকা ব্যয় করেন; তেমনি হাত খুলে খরচ করেন তাদের স্ত্রী-সন্তানরাও। নামিদামি ব্র্যান্ডের জামা-জুতো কিনতে তারাও প্রচুর অর্থ ব্যয় করেন। কিন্তু মাঝেমধ্যে এমন কিছু ঘটনা সামনে আসে, যা শুনলে যে কারও চোখই কপালে উঠবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের এক কোটিপতির স্ত্রী প্রতি মাসে শপিংয়ের জন্য স্বামীর কাছ থেকে ‘বরাদ্দ’ পান ১ লাখ ৮০ হাজার পাউন্ড; যা বাংলাদেশি ২ কোটি ৪৬ লাখ টাকার বেশি! নিউজ এইটিনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ওই নারীর নাম মালাইকাহ রাজা। এই পরিমাণ অর্থ তিনি প্রতি মাসে তার একার কেনাকাটার পেছনে ব্যয় করেন। তিনি গর্ব করে নিজেকে ‘ধনী’ গৃহিণীও বলে থাকেন। এতে আরও বলা হয়েছে, মালাইকাহ তার ছেলে ও স্বামীর সঙ্গে থাকেন। মাঝেমধ্যেই তার উচ্চাভিলাষ জীবনযাপনের খুঁটিনাটি জানিয়ে ব্যক্তিগত টিকটক চ্যানেলে ভিডিও পোস্ট করেন। দ্য সানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মালাইকাহ একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন যেখানে ঈদে কেনাকাটার জন্য স্বামীর কাছে আরও বেশি টাকা চাইতে দেখা গেছে তাকে। নেটিজেনদের অনেকেই অবশ্য তার সুখের উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, যদি কোনো কারণে তার বিয়ে ভেঙে যায় বা মাসিক সেই ‘ভাতা’ বন্ধ হয়ে যায় তখন কী হবে? অনেকেই অবশ্য মালাইকাহর মতো জীবনযাপনের ইচ্ছাপোষণ করেছেন। সম্প্রতি একটি ভিডিওতে মালাইকাহ তার উচ্চাভিলাষ জীবনযাপনের এক ঝলক তার ফ্যানদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। সেখানে তাকে দুবাই মলে দেখা গেছে কেনাকাটা করতে।
১৭ এপ্রিল, ২০২৪

মন্ত্রণালয়ে নিয়মিত মাসিক সমন্বয় সভার নির্দেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
নিজ মন্ত্রণালয়ে নিয়মিতভাবে মাসিক সমন্বয় সভা আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। রোববার (৩১ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন পরিচালিত ‘সিনিয়র অফিসিয়ালস মিটিংয়ে তিনি এ নির্দেশনা দেন। অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ড. নজরুল ইসলাম ও সব উইংয়ের মহাপরিচালকরা সভায় অংশ নেন। সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কার্যার্থে বিদেশ ভ্রমণ শেষে দ্রুততম সময়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা, দূতাবাসগুলোর পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গেও সুসমন্বয়, প্রবাসী সেবার মানবৃদ্ধি, বিদেশস্থ মিশনগুলোর ট্রেড টার্গেট বাস্তবায়ন ও কার্যক্রম ইনস্পেকটর জেনারেল অব মিশনসের মাধ্যমে পরিদর্শন, ফরেন এলাউন্স বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তাসহ মন্ত্রণালয় ও এর মিশনসমূহের নানা কার্যক্রমের ওপর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
৩১ মার্চ, ২০২৪

নিম্নবিত্তদের মাসিক আয়ের ২২ শতাংশই জ্বালানিতে ব্যয়
রাজশাহী নগরীর নিম্নআয়ের পরিবারগুলোর মাসিক আয়ের ২২ শতাংশ অর্থই চলে যাচ্ছে জ্বালানির পেছনে। পরিবারগুলো প্রতি মাসে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বাবদ গড়ে ২ হাজার ৮২৯ টাকা ব্যয় করে। এর মধ্যে শুধু রান্নার জ্বালানি বাবদ প্রতি মাসে গড়ে খরচ হয় ১ হাজার ৪৬২ টাকা। সম্প্রতি রাজশাহী নগরীর নামোভদ্রা ও হরিজন পল্লিতে জরিপ চালিয়ে এ তথ্য পেয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ (বারসিক)। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) ‘নগর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জ্বালানির বর্তমান ব্যবহার এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি গ্রহণে চ্যালেঞ্জ : পরিপ্রেক্ষিত রাজশাহী সিটি করপোরেশন’ শীর্ষক এক সংলাপে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সংলাপে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইইই বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু বকর মো. ইসমাইল, প্রাণ-প্রকৃতি গবেষক পাভেল পার্থ, বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বারসিকের গবেষণা সহকারী ডালিয়া চাকমা প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, জরিপের আওতায় আসা জনগোষ্ঠীর ৮১ শতাংশ পরিবার রান্নার কাজে লাকড়ি ব্যবহার করে। ৩৫ শতাংশ পরিবার গ্যাস সিলিন্ডার ও ৩২ শতাংশ পরিবার কেরোসিন ব্যবহার করে। উদ্বেগের বিষয় হলো- ৪৪ শতাংশ পরিবারই রান্নার কাজে পরিবেশ দূষণকারী প্লাস্টিক ও পলিথিন পুড়িয়ে থাকে। রান্নার ধোঁয়ার কারণে ৮ শতাংশ পরিবারে রয়েছে কাশির সমস্যা। গবেষণায় উঠে এসেছে, গবেষণার আওতায় আসা মানুষের মধ্যে ৯৫ ভাগই নবায়নযোগ্য জ্বালানি শব্দটির সঙ্গে পরিচিত নন। সংলাপে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে। এ জন্য সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ছাড়া জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় আরও বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।
১৩ মার্চ, ২০২৪

কাগজের ঠোঙা তৈরি করেই সাগর-লিপি দম্পতির মাসিক আয় ৪০ হাজার
কাগজের ঠোঙা ও বক্স তৈরি করে জীবিকায় ভাগ্যবদলের সাফল্য পেতে চলেছেন চাঁদপুরের কচুয়ার এক দম্পত্তির পরিবার। তবে কাজটিতে দ্রুত সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছাতে প্রয়োজন ঋণ সুবিধাসহ সংশ্লিষ্টদের সহায়তা। যদিও ইউএনও বলছেন, দ্রুতই এই ধরনের উদ্যোক্তাদের সহায়তায় সরকারিভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকালে কচুয়ার পালাখাল মডেল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ভূঁইয়ারা গ্রামের বেপারী বাড়িতে গেলে সাগর ও লিপি দম্পতির এই সাফল্যের গল্প নজরে আসে। সরজমিনে জানা যায়, ঘরে বসে না থেকে সাগর হোসেন ও তার স্ত্রী লিপি বেগম শুধু কাগজের ঠোঙা ও বক্স তৈরি করেই মাসে আয় করছেন ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। পরিশ্রম ও একাগ্রতা থাকলে যে কোনো কাজই সফলতা এনে দেয়। তার দৃষ্টান্ত প্রমাণ যেন এই দম্পতি। এক সময়ে পালাখাল বাজারের বাপ্পি সাহা প্যাকেজিং অ্যান্ড ফরেনে মাত্র ৩শ’ টাকা মজুরিতে কাজ করত মো. সাগর হোসেন। পরে সেখানের পারিশ্রমিক দিয়ে না পোষানোয় কয়েক মাস যাবৎ নিজ বাড়ির পাশেই দোকান ভাড়া নিয়ে সাগর নিজেই বনে যান উদ্যোক্তা। এখন সেখানেই স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ঠোঙা ও মিষ্টির প্যাকেট বক্স বানিয়ে ঘুচাচ্ছেন পরিবারের দারিদ্র্যতা। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাপ্পি সাহা প্যাকেজিং অ্যান্ড ফরেনের ম্যানেজার মো. জুয়েল রানা। তিনি বলেন, সাগর যথেষ্ট ভালো কাজ করত। তবে আমরা তাকে যে টাকা দিতাম তাতে তার পোষাত না। পরে সে নিজে ব্যবসা দেওয়ার কথা জানালে আমরা তাকে কাজ থেকে নিঃসংকোচে যেতে দিয়ে স্বাগত জানাই। ভূঁইয়ারা গ্রামের প্যাকেজিং কারিগর সাগর হোসেন বলেন, আমি ঋণের টাকায় ১টি কাটিং মেশিন, ১টি ভাজ মেশিন কিনি। এরপর ১টি দুচালা টিনের দোকান ভাড়া নিয়ে সেখানে মেশিনগুলো স্থাপন করি। তারপর বাজার থেকে অটো বোর্ড, কাগজ, ময়দা, সুতা, পিন কিনে কাজ শুরু করি। কাজের মধ্যে মিষ্টির বক্স কাটিং করে তারপর ভাজ দিয়ে বক্সে লাসা লাগিয়ে এরপর বক্স শুকিয়ে মিষ্টির প্যাকেট করি। তবে মিষ্টির বক্সের চেয়ে কাগজের ঠোঙা বানানো অনেকটা সহজ। সাগর হোসেন আরও বলেন, ঠোঙ্গা ও মিষ্টির বক্স তৈরির যাবতীয় কাগজ ও বোর্ড ঢাকা থেকেই সংগ্রহ করতে হয়। নিজেদের পরিশ্রম ও যাবতীয় খরচ মিলিয়ে আমাদের প্রায় ২০ হাজার টাকা মাসে খরচ হয়। পরে সব খরছ বাদ দিয়েও গড়ে মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মতো ব্যবসায় লাভ থাকছে। সাগরের স্ত্রী লিপি বেগমসহ এলাকার লোকজন বলেন, এই ব্যবসাকে এগিয়ে নিতে সরকারিভাবে ঋণ সহায়তা প্রয়োজন। তাহলে সাগরের ব্যবসায়িক উন্নতি দেখে অন্যরাও এ ব্যবসায় আসতে আগ্রহ দেখাবে। চাঁদপুরের কচুয়ার ইউএনও মো. ইকবাল হাসান বলেন, সাগরের মতো কচুয়ার পালাখাল, সাচার ও বায়েকের মোড়েও এ রকমর প্যাকেজিং কাজ হয়। যেগুলো কচুয়ার স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চাঁদপুরের অন্যত্রও পাঠানো হচ্ছে। আমরা সাগরের মতো উদ্যোক্তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিচ্ছি। এদিকে প্যাকেজিং শিল্পকে এগিয়ে নিতে চাই কার্যকর পরিকল্পনা। তাই এ কাজে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সুযোগ সৃষ্টিতে সুদৃষ্টি প্রয়োজন বলে মনে করেছে সুধীমহল।
০৩ মার্চ, ২০২৪

ঢাকায় কবরের দাম দেড় কোটি, মাসিক ভাড়া কত?
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের আয়তন প্রায় ৩০৫ বর্গকিলোমিটার। এই সীমানায় বসবাস করেন প্রায় আড়াই কোটি মানুষ। বিপুলসংখ্যক এই মানুষের মধ্যে প্রতিদিনই পৃথিবী ছাড়েন একাধিক ব্যক্তি। সিটি করপোরেশন এলাকার বাসিন্দাদের দাফন হয় নির্ধারিত কবরস্থানে।  অঞ্চলভেদে রাজধানী ঢাকায় একটি কবরের দাম সর্বো‍চ্চ দেড় কোটি টাকা। মাসিক হিসেবে ধরলে ভাড়া গুনতে হয় প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা। দেড় কোটি টাকার এই কবর আগে বিক্রি হতো ৪৫ লাখ টাকায়। কিন্তু গত বছর হঠাৎ করেই দাম বাড়িয়ে তিনগুণ করা হয়েছে। তবে শুধু টাকা থাকলেই পাওয়া যাবে না এই কবর। লাগবে উচ্চপর্যায়ের তদবিরও। মাসে ৫০ হাজার টাকা হারে কবর ভাড়া করলেও শেষ পর্যন্ত একই কবরে দাফন করা হবে অন্য কাউকে।  ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনভুক্ত বনানী কবরস্থান চালু হয় ১৯৭৩ সালে। ১০ একর আয়তনের কবরস্থানটিতে ২২ হাজার কবর রয়েছে। ২০০৫ সাল পর্যন্ত এখানে কাউকে কবর দিতে গেলে ১৫ লাখ টাকা খরচ হতো। ২০০৫ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত কবরস্থানের জায়গা সংরক্ষণ প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছিল উত্তর সিটি করপোরেশন। ২০০৮ সাল থেকে পুনরায় বিভিন্ন মেয়াদে কবর সংরক্ষণ শুরু করে ডিএনসিসি। তথ্যসূত্রে জানা যায়, কবর সংরক্ষণের নিয়ম চালু করার পর থেকে ১৫ বছরের জন্য সংরক্ষণ ফি ছিল ২৪ লাখ টাকা। কিন্তু গত বছর সেটা বাড়িয়ে করা হয় ১ কোটি টাকা। আর ২৫ বছরের জন্য ৪৫ লাখ থেকে এক লাফে বাড়িয়ে করা হয়েছে দেড় কোটি টাকা, যা মাসিক ভাড়া হিসেবে ধরলে প্রতি মাসে দাঁড়ায় ৫০ হাজার টাকা। অন্যদিকে উত্তরা ৪নং সেক্টরে ১৫ বছর কবর সংরক্ষণের জন্য ফি ছিল মাত্র ৬ লাখ টাকা, এখন তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৭৫ লাখ টাকা। আর ২৫ বছরের জন্য করা হয়েছে ১ কোটি টাকা। উত্তরা ৬নং সেক্টরে ১৫ বছরের কবর সংরক্ষণ ফি ছিল ৬ লাখ টাকা, এখন খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ লাখে। আর ২৫ বছরের জন্য ১১ লাখ টাকা থাকলেও এখন গুনতে হবে ৭৫ লাখ টাকা।  মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে ১৫ বছরের জন্য ছিল ৬ লাখ টাকা, এখন তার জন্য দিতে হয় ২০ লাখ টাকা। ২৫ বছরের জন্য এই কবরস্থানে আগে ছিল ১১ লাখ টাকা, বর্তমানে তার জন্য খরচ করতে হবে ৩০ লাখ টাকা।  এ ছাড়া রায়েরবাজার কবরস্থানে ১৫ বছরের জন্য সংরক্ষণ ফি ছিল ৬ লাখ টাকা এখন বাড়িয়ে করা হয়েছে ১০ লাখ টাকা। আর ২৫ বছরের জন্য ১১ লাখ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৫ লাখ টাকা।  সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ধনাঢ্য পরিবারের কেউ মারা গেলে প্রিয়জনের কবর সংরক্ষণ করতে চান অনেকে। যার ফলে আর কোনো জায়গা থাকছে না কবরস্থানে। তাই কবর সংরক্ষণে নিরুৎসাহিত করতেই টাকার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। যদিও সংরক্ষণ করা এই কবরে পুনরায় কবর দিতে গেলে কবরস্থান ভেদে দিতে হয় নতুন ফি। বনানীতে পুনঃকবর ফি ৫০ হাজার টাকা। মিরপুরে ৩০ হাজার টাকা। কবর সংরক্ষণ ফি আকাশছোঁয়া হলেও বনানী কবরস্থানে জায়গা পেতে লাগে উচ্চ পর্যায়ের তদবির। যে কারণে দ্বারস্থ হতে হয় মিরপুর কিংবা রায়েরবাজারের শেষ ঠিকানায়। দাফন শেষ হলেও ভোগান্তি কাটে না স্বজনদের। কবর দেখভাল করা, পানি দেওয়ার জন্যও দিতে হয় টাকা। না হয় অযত্ন অবহেলায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় প্রিয়জনের শেষ চিহ্নটুকু। মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শামসুল আরেফিন নামে এক ব্যক্তি কালবেলাকে বলেন, নিয়মিত সরকারি ফিয়ে দিয়ে আসছি। তাতে কোনো প্রকার যত্ন নেওয়া হয় না কবরের। পরে একপ্রকার বাধ্য হয়েই মাসে মাসে টাকা দেই কবর দেখভালসহ পানি দেওয়ার জন্য। কালবেলার অনুসন্ধান বলছে, কবরস্থানে দেখভাল করতে সরকারিভাবে জনবল রয়েছে ৪ থেকে ৬ জন। অথচ কবরস্থান ভেদে জনবল থাকার কথা ২০ থেকে ২৬ জন। যে কারণে ব্যক্তিউদ্যোগে পরিশ্রমের বিনিময়ে গোরখোদক থেকে শুরু করে পরিচ্ছন্নতায় কাজ করে অনেকে।    জনবল কম থাকাকে দায়ী করে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের সিনিয়র মোহরার সানোয়ার হোসেন কালবেলাকে বলেন, আমাদের এখানে খুব কম লোকবল। বাইরের লোকজনই কবর খননসহ দেখাশোনার কাজ করেন। গোরখোদকদের খুশি হয়ে যা দেয়, তারা তা নেয়। তবে বাঁশ ও চাটাইরে জন্য ১৭০০ টাকা নেওয়া হয়।   
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

স্বতন্ত্র পরিচালকের মাসিক সম্মানী ৫০ হাজার টাকা
আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালকরা। তাই ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদে এই পদের সংজ্ঞা এবং তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের ওপর বিশেষ জোর দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ লক্ষ্যে প্রতি মাসে স্বতন্ত্র পরিচালকদের ৫০ হাজার টাকা স্থায়ী সম্মানী দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। যদিও আগে কোনো স্বতন্ত্র পরিচালকের স্থায়ী সম্মানী ছিল না। এ ছাড়া কোম্পানির পর্ষদ, সহায়ক কমিটির সভায় উপস্থিতির জন্যও তাদের সম্মানী ভাতা বাড়ানো হয়েছে। এত দিন স্বতন্ত্র পরিচালকরা পর্ষদ সভায় অংশ নিয়ে ৭ হাজার টাকা সম্মানী পেতেন। নতুন বিধানে এই সম্মানী ১০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়। এমন বিধান রেখে গতকাল বুধবার ব্যাংক কোম্পানিতে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ, যোগ্যতা এবং তাদের দায়িত্ব, কর্তব্য ও সম্মানী-সংক্রান্ত নতুন করে পরিপত্র জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে ব্যাংক কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক হতে গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ন্যূনতম বয়স হতে হবে ৪৫ বছর এবং সর্বোচ্চ বয়স ৭৫ বছর। একই সঙ্গে কমপক্ষে ১০ বছরের ব্যবস্থাপনা বা ব্যবসায়িক বা পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে তাদের। স্বতন্ত্র পরিচালকের শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, তাকে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি, ব্যাংকিং, ফাইন্যান্স, ব্যবসায় প্রশাসন, আইন, হিসাববিজ্ঞান বা কস্ট অ্যাকাউন্টিং বিষয়ে স্নাতক-স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী হতে হবে। নতুন প্রবর্তিত ডিজিটাল ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে উচ্চতর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকে অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এর আগে গত রোববার ব্যাংক কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ও পরিচালক নিয়োগের শর্ত নিয়ে পরিপত্র জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর গতকাল নতুন করে শুধু স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়ে এই পরিপত্র জারি হলো। পরিপত্রে স্বতন্ত্র পরিচালকের সংজ্ঞাও পরিবর্তন করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ব্যাংক-কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ধারা ১৫-এর উপধারা (৯)-এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ‘স্বতন্ত্র পরিচালক’ বলতে সেই ব্যক্তিকে বোঝাবে, যিনি ব্যাংক-কোম্পানির ব্যবস্থাপনা ও শেয়ার ধারক হতে স্বাধীন এবং যিনি কেবল ব্যাংক-কোম্পানির স্বার্থে মতামত দেবেন এবং ব্যাংকের সঙ্গে কিংবা ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তির সঙ্গে যার অতীত, বর্তমান বা ভবিষ্যৎ কোনো প্রকৃত স্বার্থ কিংবা দৃশ্যমান স্বার্থের বিষয় জড়িত নেই। স্বতন্ত্র পরিচালক পদের সংখ্যা, মেয়াদ ও অপসারণ সম্পর্কেও পরিপত্রে বলা হয়েছে। তিনজন স্বতন্ত্র পরিচালকসহ কোনো ব্যাংক কোম্পানিতে সর্বোচ্চ ২০ জন পরিচালক থাকতে পারবেন। তবে পরিচালক সংখ্যা ২০ জনের নিচে হলে স্বতন্ত্র পরিচালকের সংখ্যা হবে দুজন। সাধারণভাবে স্বতন্ত্র পরিচালকেরা তিন বছর মেয়াদের জন্য নিয়োগ পাবেন এবং মেয়াদ শেষে ব্যাংক-কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ১৫ ধারার বিধান সাপেক্ষে পরবর্তী মেয়াদে নিয়োগের জন্য নির্বাচিত হতে পারবেন। সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করে পরিচালনা পর্ষদ সংশ্লিষ্ট স্বতন্ত্র পরিচালককে অপসারণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুরোধ জানাতে পারবে। স্বতন্ত্র পরিচালক নিজে সাত দিনের নোটিশ দিয়ে স্বতন্ত্র পরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগ করতে পারবেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করে যে কোনো স্বতন্ত্র পরিচালককে অপসারণ করতে পারবে। স্বতন্ত্র পরিচালক করখেলাপি হতে পারবেন না। কোনো সময় আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত হননি এমন ব্যক্তি হতে হবে। ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসেবে তালিকাভুক্ত ব্যক্তি ওই তালিকা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পাঁচ বছর অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো ব্যাংকের পরিচালক হওয়ার যোগ্য হবেন না। দেশের ব্যাংক কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালকদের ভূমিকা নিয়ে অনেক দিন ধরে আলোচনা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, ব্যাংক খাতে সুশাসন নিশ্চিত ও খেলাপি ঋণ কমাতে ব্যাংকগুলোতে আরও বেশি স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করা দরকার। তবে স্বতন্ত্র পরিচালককে প্রকৃতপক্ষে স্বতন্ত্র হতে হবে। ব্যাংকের নিয়ন্ত্রকদের আত্মীয়-স্বজন অথবা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাকে স্বতন্ত্র পরিচালক মনোনয়ন দিলে লাভ হবে না। খাত-সংশ্লিষ্টরা বলেন, দেশে বর্তমানে যেভাবে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাতে আমানতকারী নয়, বরং পরিচালকদের স্বার্থ সংরক্ষিত হচ্ছে। সেজন্য স্বতন্ত্র পরিচালক পদে পেশাদার ও স্বাধীনচেতা মানুষদের নিয়োগ দেওয়ার কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

একজন মানুষের মাসিক গড় আয় ৭৬১৪ টাকা
বর্তমানে দেশে একজন মানুষের প্রতি মাসে গড় আয় দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৬১৪ টাকা। আর পরিবারে উপার্জনকারীদের সংখ্যা বিবেচনায় এই গড় আয় দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ৭০৭ টাকা। প্রতিটি পরিবারে গড় সদস্যসংখ্যা ধরা হয়েছে ৪ দশমিক ২৬ জন। এ হিসাবে পরিবারপ্রতি সবার মাসিক গড় আয় ৩২ হাজার ৪২২ টাকার বিপরীতে মাসিক গড় ব্যয় হচ্ছে সাড়ে ৩১ হাজার টাকা। যেখানে শুধু মাসিক খাবারের পেছনে গড় ব্যয় করতে হচ্ছে ১৪ হাজার ৩ টাকা। গতকাল রোববার প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানা আয় ও ব্যয় জরিপ ২০২২-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এমন চিত্র ওঠে এসেছে। বিবিএস থেকে এর আগে এ প্রতিবেদনের প্রাথমিক ফল প্রকাশ করা হয়েছিল চলতি বছর এপ্রিলে। বিবিএসের প্রতিবেদন মতে, আট বছরের ব্যবধানে দেশে মানুষের গড় আয় বেড়েছে ৩ হাজার ৬৭৪ টাকা। সবশেষ ২০১৬ সালের হিসাবে এ আয় ছিল ৩ হাজার ৯৪০ টাকা। অন্যদিকে, ৮ বছর আগে পরিবারপ্রতি উপার্জনকারীদের গড় আয় ছিল ১৩ হাজার ৬৪৬ টাকা। এই মানুষের গড় আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহর-গ্রামের মানুষের আয়েরও ব্যাপক তারতম্য তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ গ্রামের মানুষের চেয়ে শহরের মানুষের আয় অনেক বেড়েছে। বর্তমানে শহরের একজন মানুষের প্রতি মাসে গড় আয় দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৯৫১ টাকা, যা একজন গ্রামের মানুষের ক্ষেত্রে এ আয় মাত্র ৬ হাজার ৯১ টাকায় পৌঁছেছে। সরকারি এ সংস্থাটির তথ্যমতে, একটি পরিবারের গড় সদস্যসংখ্যা ৪ দশমিক ২৬ জন হলেও একটি পরিবারের সবাই আয় করেন না। অর্থাৎ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শিশু-বৃদ্ধ ও নারীও রয়েছেন, যারা কোনো আয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত নেই। এর বিপরীতে কোনো কোনো পরিবারে এক বা একাধিক সদস্য রয়েছেন আয়-রোজগারের সঙ্গে জড়িত। জরিপে তাদের সবারই গড় আয়ের হিসাবও দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এ সময়ে ধনীরা আরও ধনী হয়েছে। অর্থাৎ ধনীর আয় বেড়েছে। ফলে তাদের কাছে দেশের মোট সম্পদ পুঞ্জীভূত হওয়ার পরিমাণও বেড়েছে। তথ্যমতে, দেশে মোট আয়ের ৪১ শতাংশই দখলে নিয়েছে সবচেয়ে ধনীশ্রেণির মাত্র ১০ শতাংশ, যা ২০১৬ সালে ছিল ৩৯ শতাংশ। সবচেয়ে গরিব ১০ শতাংশ মানুষের আয়ের অংশীদারত্ব এ সময়ে কিছুটা বেড়েছে। এখন দেশের মোট আয়ের ১ দশমিক ৩১ শতাংশ তাদের হাতে। ৮ বছর আগে এ হার ছিল ১ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। বিবিএসের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, ২০২২ সাল শেষে গিনি সহগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে দশমিক ৪৯৯ পয়েন্ট। ২০১৬ সালে গিনি সহগ ছিল দশমিক ৪৮২ পয়েন্ট। সাধারণত দশমিক ৫০০ হলেই একটি দেশকে উচ্চ আয় বৈষম্যের দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

পাহাড়ের তরুণ ইব্রাহিমের মাসিক আয় ২ হাজার ডলার
অধ্যাবসায় শব্দটি অন্য কারও কাছে সত্য হোক বা না হোক, কিন্তু তা ফ্রিল্যান্সার ইব্রাহিমের ক্ষেত্রে সত্য বলে প্রতীয়মান হয়েছে। কেননা বারবার ধাক্কা খেয়ে পুনরায় লেগে থাকা, পরিবারের অর্থনৈতিক দুরবস্থা, এতসব প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে শুধু ফ্রিল্যান্সিংকে পেশা ও নেশা হিসেবে গ্রহণ করে সফল হওয়া এক স্বপ্নবাজ তরুণ মো. ইব্রাহিম খলিল। আজ পাহাড়ে যিনি একজন সফল ও পেশাদার ফ্রিল্যান্সার হিসেবে পরিচিতি। তবে এই সফলতা অর্জন সহজ ছিল না। বরং ছিল বাধা ও চ্যালেঞ্জে ভরপুর।  খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। সেখানেই তার বেড়ে ওঠা। তার নেশা-পেশা যেন প্রযুক্তি নিয়েই। প্রযুক্তির প্রতি তার আগ্রহ দিন দিন বাড়তেই থাকে। তাই বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি মাত্র ১৮ বছর বয়সে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করেন ইব্রাহিম। ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করতে একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ লাগবে। কিন্তু তার এই আবদার পূরণ করা পরিবারের কাছে অমাবস্যার চাঁদের মতো। তারা বাবা ছিল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তিন ভাইবোনের মধ্যে সে ছিল সবার বড়। যেখানে দু-বেলা খাবার জোগাড় করতে পরিবারকে রীতিমতো সংগ্রাম করতে হচ্ছে সেখানে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে তাকে কম্পিউটার কিনে দেওয়া, এমন সাধ্য পরিবারের পক্ষে সম্ভব ছিল না। ইব্রাহিম নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। পরিবারে বাবাই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার জন্মের পর থেকেই অভাব অনটনে দিনাতিপাত করতে থাকে তাদের পরিবার। ছোট্ট একটি ব্যবসার ওপর ভর করে কোনোরকম চলছিল তাদের সংসার। পরিবারের এই সংগ্রামের মধ্যেই ইব্রাহিম বড় কিছু হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন। ছোট থেকেই পড়াশোনায় ভালো ছিলেন। বন্ধুদের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা ধার করে বাকি ২০ হাজার টাকা নিজের চাচার কাছ থেকে নিয়ে প্রথমে ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে বহু কাঙ্ক্ষিত ল্যাপটপ কিনেন তিনি। মধ্যবিত্ত পরিবারের বাবা বুজতেই চাইতেন না অনলাইনে আয় করার বিষয়টা। ইব্রাহিমের মায়ের অনুপ্রেরণায় তখন থেকেই চলছে অবিরাম অধ্যবসায়।  বলছিলাম, খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার চৌধুরিপাড়ার ইব্রাহিম খলিলের কথা। নানা চড়াই উতরাই পেরিয়ে বর্তমানে তিনি একজন সফল ফ্রিল্যান্সার। মাসে আয় করেন দুই হাজার ডলার। তিনি এখন সরকার স্বীকৃত ফ্রিল্যান্সার। শিক্ষাজীবনে চট্টগ্রাম কমার্স কলেজ থেকে ম্যানেজমেন্টে মাস্টার্স করছেন তিনি। শুরুটা হয়েছিল ২০১৬ সালে। তরুণ তরুণীদের আউটসোর্সিং বিষয়ে সক্ষমতা বৃদ্ধি করে মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে আইসিটি বিভাগের আওতায় লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় প্রফেশনাল আউটসোর্সিং ট্রেনিং প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। তখন তিনি আবেদন করে ১০০ জন প্রতিযোগীর মধ্যে জেলার মধ্যে দ্বিতীয় হন তিনি। শুরু করেন প্রশিক্ষণ গ্রহণ। নিজ উপজেলা থেকে খাগড়াছড়ি সদরে গিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন ইব্রাহিম। প্রশিক্ষণ শেষে অর্ডার না পাওয়ায় প্রায় দেড় বছর বন্ধ ছিল কাজ। চলছে সফল হবার ক্রমাগত চেষ্টা। ইব্রাহিম বলেন, ২০১৮ সালের শুরুর দিকে এই প্রথম ৫ ডলারের একটি লোগে তৈরির কাজ পাই। একই বছরের জুনের শেষের দিকে ৫০ ডলারের আরেকটি কাজ পাই। এরপর ২০১৯ সালে একটার পর একটা অর্ডার পেতে থাকি। এ বছরে গড়ে মাসে প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো অর্ডার পেতাম। ২০২০ সালে করোনা মহামারির সময় আয় বেড়ে ৭০ হাজারের অধিক হয়। চলছে সফলতার মধ্যে হতাশা। এরপর কর্তৃপক্ষের শর্ত ভায়োলেট করার কারণে আমার আইডিটা নষ্ট হয়ে যায়। তাতে হতাশ না হয়ে নতুন করে আরও দুটি আইডি খুলি। একই বছরে আবার কাজ পাওয়া শুরু করি। তখন মাসে আয় নেমে ৪০ হাজার টাকা মিলত। মহামারির একই বছরে ঘরে বসে আমার প্রায় ৮০ হাজার টাকা আয় হতো। ‘২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে বর্তমান পর্যন্ত আমার অর্ডার বেড়ে ১ লাখ টাকা হয়। এবার নতুন পরিকল্পনা করি উদ্যোক্তা হবো। শুরু করি গ্রাফিক্স ডিজাইন ফ্রিল্যান্সিং অনলাইন কোর্স। দেশে এবং দেশের বাইরে থেকে প্রতি ব্যাচে ৩০ থেকে ৫০ জন ছাত্রসহ বর্তমানে ৮টি ব্যাচ চলমান রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৪০০ জনকে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে থেকে ৮০ জনের অধিক শিক্ষার্থী অর্ডার পাচ্ছেন। তিনি ফ্রিল্যান্সিং ও আইটি সেক্টরকে আরও উন্নত ও প্রসার করতে মাটিরাঙ্গায় খলিল কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার চালু করেন যেখানে প্রতিদিন ৫টি ব্যাচে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।’ এই ট্রেনিং সেন্টারটি খাগড়াছড়ি জেলার সকল উপজেলায় এর ব্যাপ্তি হবে বলে জানান ইব্রাহিম।   শুরুতে ডাচ বাংলা মোবাইল বাংকের খাগড়াছড়ি শাখার ডিস্ট্রিবিউশন ম্যানেজার ছিলেন ইব্রাহিম। বর্তমানে ডাচ বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং মাটিরাঙ্গা শাখার প্রোপ্রাইটর। তা ছাড়া সে এর আগে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় জেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। মাটিরাঙ্গা উপজেলার বিতর্ক ক্লাবের প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি। এদিকে ইব্রাহিম চলতি বছরের জুলাই মাসে ঢাকায় ন্যাশনাল ইয়ুথ ক্যারিয়ার কার্নিভাল-২০২৩ এ রাইজিং ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড-২০২৩ প্রাপ্ত হন। ৮ এপ্রিল পাবর্ত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ কর্তৃক সফল ফ্রিল্যান্সার ও আইটি এক্সপার্ট সম্মাননা স্মারক অর্জন করেন। এ বছরের ৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক কর্তৃক জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ফ্রিল্যান্সার মনোনিত হন। একই সাথে উপজেলার সকল ফ্রিল্যান্সারদের অংশগ্রহণে অত্র এলাকার হতদরিদ্রদের মাঝে মাসে একবার একবেলা উন্নত মানের খাবারের ব্যবস্থা করেন।  তিনি বলেন, আমার স্বপ্ন খাগড়াছড়িতে মি. ফ্রিলান্সার আইটি অফিস চালু করা। এতে করে এ অঞ্চলের বেকারদের কর্মসংস্থান হবে একই সঙ্গে যারা আমার এখান থেকে কাজ শিখছে তারাও এতে কাজ করার সুযোগ পাবে। কার্যক্রমটি অনলাইনে চালু থাকলেও সরাসরি উদ্বোধনের পর এটি হাতে কলমে চালু হবে বলে তিনি জানান।  এদিকে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেজী চক্রবর্তী মাটিরাঙ্গার ফ্রিল্যান্সারদের উদ্বুদ্ধ করতে সকল ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন এবং অত্র উপজেলোর সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফ্রিল্যান্সার রিলেটেড সেমিনার করবেন বলে তিনি জানান। তা ছাড়া মাটিরাঙ্গা সহকারী প্রোগ্রামার রাজিব রায় চৌধুরী উপজেলার সকল ফ্রিল্যান্সারদের একটি ডাটা সংযুক্ত করেন যেখানে তারা সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা পেতে পারেন। খাগড়াছড়ি সহকারী প্রোগ্রামার সলিল চাকমা ইতোমধ্যে সকল ফ্রিল্যান্সারদের নিয়ে কাজ শুরু করছেন। ফ্রিল্যান্সিংয়ে তরুণদের সম্ভাবনার কথা জানিয়ে মাটিরাঙ্গা সরকারি ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক মো. আব্দুল হামিদ বলেন, এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু করতে চাইলে ফ্রিল্যান্সিংয়ের সুবিধা নেওয়া উচিত। প্রতিদিন ৮-১০ ঘণ্টা ফ্রিল্যান্সিংয়ে কাজ করতে পারলে বেকারত্ব ঘোচানো সম্ভব। উপার্জনের পদ্ধতি সম্পর্কে ইব্রাহিম বলেন, ফ্রিল্যান্সিংয়ে ঢুকেই হাজার হাজার ডলার আয় হয়, এমন স্বপ্ন দেখা বন্ধ করতে হবে। কারণ ব্যবসায় ঢুকে কখনই কেউ একবারে বিরাট কিছু করতে পারে না। এটাও ঠিক একই রকম। তাই সময় নিয়ে কাজ করতে হবে। তাহলে আস্তে আস্তে আয় বাড়বে। কেননা একটা কথা মাথায় রাখতে হবে- ফ্রিলান্সিং করে কেউ রাতারাতি বড়লোক হয় না। দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে নিজের প্রত্যয় ব্যক্ত করে এই উদীয়মান ফ্রিল্যান্সার ইব্রাহিম বলেন, বর্তমানে চাকরি পাওয়া খুবই কঠিন। হাজার হাজার বেকার ঘুরে বেড়াচ্ছেন, অথচ অনলাইনে প্রচুর কাজ। এখান থেকে প্রতি মাসে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। তাই চাকরির পেছনে না ঘুরে সঠিক পথে পরিশ্রম করে কাজ করে স্বাবলম্বী হওয়া যায়।  তিনি আরও বলেন, ভাষাগত দক্ষতার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত দক্ষতার জন্য ফ্রিল্যান্সারদের দেশের যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ন্যূনতম ডিগ্রি পাস থাকা উচিত। এতে ফ্রিল্যান্সিং জগতের দক্ষতা সহজ হবে এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সফল হওয়া সম্ভব হবে।
০৯ নভেম্বর, ২০২৩

ন্যূনতম মজুরি মাসিক ২৫ হাজার টাকা প্রদানের দাবি
বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার সঙ্গে শ্রমিকের চাহিদারও পরিবর্তন হয়েছে। শ্রমিকের বড় খরচ সন্তানের লেখাপড়া, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা এবং পরিবহন, যা মজুরি কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত নয়। তাই মজুরি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মজুরির কাঠামোগত পরিবর্তন প্রয়োজন। নারীপক্ষের আয়োজনে সাভার প্রেস ক্লাবের সামনে গতকাল রোববার সকাল ১১টায় ন্যায্য মজুরির লড়াইয়ে নারী সমাজবিষয়ক অবস্থান কর্মসূচিতে বিশিষ্টজন এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন নারীপক্ষের সদস্য রওশন আরা। লিফলেট পাঠ করেন পল্লী ও পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থার কোষাধ্যক্ষ অরিত্রি বিনতে আতিকা। বংশাল মহিলা সমিতির সভানেত্রী পারুল ইসলাম বলেন, নারী শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাদের ন্যায্য ন্যূনতম মজুরি মাসিক ২৫ হাজার টাকা প্রদান করতে হবে।
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
X