অমরেশ দত্ত জয়, চাঁদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৪, ১০:৪৩ এএম
আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২৪, ১২:০১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কাগজের ঠোঙা তৈরি করেই সাগর-লিপি দম্পতির মাসিক আয় ৪০ হাজার

চাঁদপুরে কাগজের ঠোঙা বিক্রি করে স্বাবলম্বী সাগর হোসেন ও লিপি বেগম দম্পতি। ছবি : কালবেলা
চাঁদপুরে কাগজের ঠোঙা বিক্রি করে স্বাবলম্বী সাগর হোসেন ও লিপি বেগম দম্পতি। ছবি : কালবেলা

কাগজের ঠোঙা ও বক্স তৈরি করে জীবিকায় ভাগ্যবদলের সাফল্য পেতে চলেছেন চাঁদপুরের কচুয়ার এক দম্পত্তির পরিবার। তবে কাজটিতে দ্রুত সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছাতে প্রয়োজন ঋণ সুবিধাসহ সংশ্লিষ্টদের সহায়তা। যদিও ইউএনও বলছেন, দ্রুতই এই ধরনের উদ্যোক্তাদের সহায়তায় সরকারিভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকালে কচুয়ার পালাখাল মডেল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ভূঁইয়ারা গ্রামের বেপারী বাড়িতে গেলে সাগর ও লিপি দম্পতির এই সাফল্যের গল্প নজরে আসে।

সরজমিনে জানা যায়, ঘরে বসে না থেকে সাগর হোসেন ও তার স্ত্রী লিপি বেগম শুধু কাগজের ঠোঙা ও বক্স তৈরি করেই মাসে আয় করছেন ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। পরিশ্রম ও একাগ্রতা থাকলে যে কোনো কাজই সফলতা এনে দেয়। তার দৃষ্টান্ত প্রমাণ যেন এই দম্পতি। এক সময়ে পালাখাল বাজারের বাপ্পি সাহা প্যাকেজিং অ্যান্ড ফরেনে মাত্র ৩শ’ টাকা মজুরিতে কাজ করত মো. সাগর হোসেন। পরে সেখানের পারিশ্রমিক দিয়ে না পোষানোয় কয়েক মাস যাবৎ নিজ বাড়ির পাশেই দোকান ভাড়া নিয়ে সাগর নিজেই বনে যান উদ্যোক্তা। এখন সেখানেই স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ঠোঙা ও মিষ্টির প্যাকেট বক্স বানিয়ে ঘুচাচ্ছেন পরিবারের দারিদ্র্যতা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাপ্পি সাহা প্যাকেজিং অ্যান্ড ফরেনের ম্যানেজার মো. জুয়েল রানা। তিনি বলেন, সাগর যথেষ্ট ভালো কাজ করত। তবে আমরা তাকে যে টাকা দিতাম তাতে তার পোষাত না। পরে সে নিজে ব্যবসা দেওয়ার কথা জানালে আমরা তাকে কাজ থেকে নিঃসংকোচে যেতে দিয়ে স্বাগত জানাই।

ভূঁইয়ারা গ্রামের প্যাকেজিং কারিগর সাগর হোসেন বলেন, আমি ঋণের টাকায় ১টি কাটিং মেশিন, ১টি ভাজ মেশিন কিনি। এরপর ১টি দুচালা টিনের দোকান ভাড়া নিয়ে সেখানে মেশিনগুলো স্থাপন করি। তারপর বাজার থেকে অটো বোর্ড, কাগজ, ময়দা, সুতা, পিন কিনে কাজ শুরু করি। কাজের মধ্যে মিষ্টির বক্স কাটিং করে তারপর ভাজ দিয়ে বক্সে লাসা লাগিয়ে এরপর বক্স শুকিয়ে মিষ্টির প্যাকেট করি। তবে মিষ্টির বক্সের চেয়ে কাগজের ঠোঙা বানানো অনেকটা সহজ।

সাগর হোসেন আরও বলেন, ঠোঙ্গা ও মিষ্টির বক্স তৈরির যাবতীয় কাগজ ও বোর্ড ঢাকা থেকেই সংগ্রহ করতে হয়। নিজেদের পরিশ্রম ও যাবতীয় খরচ মিলিয়ে আমাদের প্রায় ২০ হাজার টাকা মাসে খরচ হয়। পরে সব খরছ বাদ দিয়েও গড়ে মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মতো ব্যবসায় লাভ থাকছে।

সাগরের স্ত্রী লিপি বেগমসহ এলাকার লোকজন বলেন, এই ব্যবসাকে এগিয়ে নিতে সরকারিভাবে ঋণ সহায়তা প্রয়োজন। তাহলে সাগরের ব্যবসায়িক উন্নতি দেখে অন্যরাও এ ব্যবসায় আসতে আগ্রহ দেখাবে।

চাঁদপুরের কচুয়ার ইউএনও মো. ইকবাল হাসান বলেন, সাগরের মতো কচুয়ার পালাখাল, সাচার ও বায়েকের মোড়েও এ রকমর প্যাকেজিং কাজ হয়। যেগুলো কচুয়ার স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চাঁদপুরের অন্যত্রও পাঠানো হচ্ছে। আমরা সাগরের মতো উদ্যোক্তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিচ্ছি।

এদিকে প্যাকেজিং শিল্পকে এগিয়ে নিতে চাই কার্যকর পরিকল্পনা। তাই এ কাজে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য সুযোগ সৃষ্টিতে সুদৃষ্টি প্রয়োজন বলে মনে করেছে সুধীমহল।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ময়মনসিংহ-ঢাকা রুটে বাস চলাচল বন্ধ

গোল করে, করিয়ে দলকে জেতালেন মেসি

জেনে নিন আজকের স্বর্ণের বাজারদর

বিএনপিতে সন্ত্রাসী-দুষ্কৃতকারীদের জায়গা নেই : বিজিএমইএ সভাপতি 

অনূর্ধ্ব-২০ ফিফা বিশ্বকাপ / বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা

গাজায় নিশ্চিহ্ন মসজিদ, ধ্বংসস্তূপ থেকেই ভেসে আসছে আজান

সন্ত্রাস করে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া যায় না : জালাল উদ্দীন

টিভিতে আজকের যত খেলা

সীমান্তে আটক ১৬ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর

দেড় মাস পর ফের একই জায়গায় মিলল মরদেহ

১০

লোকবল নেবে আরএফএল

১১

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

১২

রাকসু নির্বাচনী বিতর্ক অনুষ্ঠানে ভিপি প্রার্থীদের নানা প্রতিশ্রুতি

১৩

দুটি ছাড়া ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের সব সেনাঘাঁটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে

১৪

১২ অক্টোবর : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

১৫

স্ত্রীর মৃত্যুর ৫ ঘণ্টা পর মারা গেলেন স্বামীও

১৬

ইফাদ গ্রুপের গৌরবময় ৪০ বছর উদ্‌যাপন, সমৃদ্ধির পথে একসাথে

১৭

রোববার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

১৮

১২ অক্টোবর : আজকের নামাজের সময়সূচি

১৯

জুতা পরে জানাজার নামাজ পড়া কি জায়েজ?

২০
X