লজ্জাবতী বানর মাটিরাঙ্গায় অবমুক্ত
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় লোকালয় থেকে উদ্ধার হওয়া বিপন্ন প্রজাতির লজ্জাবতী বানরটি মাটিরাঙ্গা রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ের ঔষধি বাড়িতে অবমুক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেলের দিকে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ডেজী চক্রবর্তী ও মাটিরাঙ্গা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা, মো. আতাউর রহমান লস্কর অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে বানরটি অবমুক্ত করেন। অবমুক্ত করার মাধ্যমে আবারও নিজের আবাসস্থল বনে ফিরে যায় বিপন্ন প্রজাতির এই লজ্জাবতী বানরটি। অবমুক্তকালে উপস্থিত ছিলেন মাটিরাঙ্গা রেঞ্জের ফরেস্টার তৌহিদুর রহমান লিটন, ফরেস্টার মো. মনির হোসেন, ফরেস্টার আহসানুজ্জামান, ফরেস্টার শাহনুর ররহমান ও ফরেস্টার সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ। এর আগে দুপুরের দিকে উপজেলার বড়নাল এলাকা থেকে বানরটি উদ্ধার করে নিয়ে আসেন মাটিরাঙ্গা রেঞ্জের কর্মকর্তারা। বিষয়টি নিশ্চিত করে রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান লস্কর বলেন, সকালের দিকে বড়নাল এলাকার মোটরসাইকেল চালক সুমন লজ্জাবতী বানরটিকে লোকালয়ে দেখতে পান। পরে সুমনসহ কয়েকজন মিলে বানরটিকে আটক করে বন বিভাগে খবর দেন। খবর পেয়ে মাটিরাঙ্গা বন বিভাগের কর্মকর্তারা বানরটি উদ্ধার করে বন বিভাগের ঔষধি বাড়িতে অবমুক্ত করেন। মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেজী চক্রবর্তী বলেন, বনজঙ্গল ও গাছপালা উজাড় হওয়ার কারণে খাদ্যের সন্ধানে লজ্জাবতী বানর লোকালয়ে এসে স্থানীয়দের হাতে প্রাণ হারাচ্ছে। এসব বন্যপ্রাণীকে রক্ষা করতে হলে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয়দেরও সচেতন করতে হবে। প্রসঙ্গত, গেল ১০ মাসে চারটি লজ্জাবতী বানর অবমুক্ত করেছে মাটিরাঙ্গা রেঞ্জ।
১৪ মে, ২০২৪

বিরল প্রজাতির লজ্জাবতী বানর উদ্ধার
হবিগঞ্জের মাধবপুরে একটি বিরল প্রজাতির লজ্জাবতী বানর (স্লো লরিস) উদ্ধার করছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পাখিপ্রেমিক সোসাইটি’র সদস্যরা। বুধবার (১৭ এপ্রিল) বিকালে উপজেলা চৌমুহনী ইউপির সীমান্তবর্তী কমলপুর গ্রাম থেকে বানরটি উদ্ধার করা হয়। সংগঠনটির সদস্য কায়েম মিয়া বলেন, অত্যন্ত সাবধানতা ও ঝুঁকি নিয়ে প্রাণীটিকে আমরা নিরাপদে খাঁচা বন্দি করি। পরে বন বিভাগের লোকজনকে খবর দেই। বানরটিকে ঈগল এবং কাক আক্রমণ করেছিল। সেখান থেকে আমরা এটিকে উদ্ধার করি। হবিগঞ্জের বিভাগীয় কর্মকর্তা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, কিছুদিন আগেও পাখিপ্রেমিক সোসাইটির সদস্যরা সংগঠনের একটি লজ্জাবতী বানর উদ্ধার করেছিল। বুধবার  আরও একটি বানর উদ্ধার করেছে তারা। আমরা তাদের সহযোগিতা নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে স্থানীয় সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের গহিন বনে বানরটিকে অবমুক্ত করেছি। অবমুক্ত করার আগে বানরটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদিকে, বন অধিদফতরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কমকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, লজ্জাবতী বানর বাংলা লজ্জাবতী বানর (Bengal Slow Loris) নামেও পরিচিত। মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, রেমা কালেঙ্গা বনবিটসহ সিলেট ও চট্টগ্রামের ঘন গহীন বনে মূলত এদের বাস। নিশাচর এই প্রাণীটি গাছের উঁচু ডালে উল্টো হয়ে ঝুলে থাকে ও খুব ধীরে চলাচল করে। বানরের অন্য প্রজাতির মতো যত্রতত্র ঘোরাঘুরি না করে সব সময় নিজেকে আড়াল রাখতে পছন্দ করে। মূলত গাছের কচিপাতা, আঠা, ফলমূল, ছোট পোকামাকড়, পাখির ডিম খেয়ে থাকে। তবে মজার বিষয় হচ্ছে খাওয়ার জন্য এরা হাত ব্যবহার না করে সরাসরি মুখ লাগিয়ে খায়। বছরে একবার মাত্র একটি বাচ্চা দেয় এই প্রাণীটি। তিনি বলেন, দেশের বনাঞ্চলে ঠিক কতটি লজ্জাবতী বানর রয়েছে তার সঠিক কোনো হিসাব নেই। তবে বন উজাড় এবং খাদ্য ও আবাসস্থল সংকটের কারণে সুন্দর এই প্রাণীটি হারিয়ে যেতে বসেছে। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) লজ্জাবতী বানরকে ‘সংকটাপন্ন’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। বন্যপ্রাণী আইন-১৯৭৪ ও বন্যপ্রাণী আইন-২০১২-এর তফসিল-১ অনুযায়ী এই প্রজাতিটি সংরক্ষিত। তাই এই প্রাণীটি হত্যা, শিকার বা এর যে কোনো ক্ষতি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।  
১৮ এপ্রিল, ২০২৪
X