গুচ্ছ পরীক্ষা কেন্দ্র করে সদরঘাট এলাকায় তীব্র যানজট
গুচ্ছ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ সচিবালয় থেকে শুরু করে সদরঘাট পর্যন্ত সম্পূর্ণ রাস্তা তীব্র যানজটে জর্জরিত। যার কারণে সদরঘাট অভিমুখী বাসগুলো তাঁতিবাজার পর্যন্ত এসে তাদের গন্তব্যস্থল শেষ করছে। ফলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব শিক্ষার্থীর পরীক্ষার আসন পড়েছে তাদের যথেষ্ট ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয়। এই তীব্র গরমে তাঁতিবাজার মোড় থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত তাদের হেঁটে অথবা রিকশাযোগে আসে অনেকেই। আর এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ সুযোগ নিয়ে অধিকাংশ রিকশাচালক দ্বিগুণ ভাড়া দাবি করছে।  শনিবার (২৭ এপ্রিল) গুচ্ছ ভুক্ত ২৪ টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ (বিজ্ঞান) ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা চলছে। রাস্তা বন্ধ প্রসঙ্গে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমানের নিকট জানতে চাইলে তারা বলেছেন, তাঁতিবাজার থেকে সদরঘাট অভিমুখী রাস্তা যথেষ্ট সরু হওয়ার কারণে তারা সাময়িক সময়ের জন্য বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে যাতে করে রাস্তায় জ্যাম না পরে এবং শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে কেন্দ্রে পৌঁছতে পারে।  তিনি আরও জানিয়েছেন, পরীক্ষা শেষে তারা আবার সদরঘাট পর্যন্ত বাস চলাচল করার অনুমতি দেবেন এবং এই সাময়িক যোগাযোগ বিচ্যুতি এর কারণে তারা দুঃখপ্রকাশ করছেন। এসব ভোগান্তির জন্য পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। মিরপুর থেকে আসা মো. রাকিব সিদ্দিক নামে একজন পরীক্ষার্থীর অভিভাবক বলেছেন, সম্পূর্ণ রাস্তায় মোটামুটি যানজট থাকলেও বাংলাদেশ সচিবালয় থেকে শুরু করে সদরঘাট পর্যন্ত সম্পূর্ণ রাস্তা যানজটে ডুবে আছে। তার মতে তীব্র এই গরমে শিক্ষার্থীরা এই যানজট ঠেলে এসে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে যেটা তাদের পরীক্ষায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।  উত্তরা থেকে আসা তানভির নামে এক পরীক্ষার্থী বলেন, যানজটের কারণে রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে আছে। আর বাসগুলো তাঁতিবাজার এসে তাদের গন্তব্যস্থল শেষ করার কারণে এখান থেকে রিকশাযোগে তাদের কেন্দ্রে আসতে হচ্ছে। আর এটার সুযোগ নিয়ে রিকশাচালকরা দ্বিগুণ ভাড়া দাবি করছে। তাঁতিবাজার থেকে সদরঘাট ৪০ টাকার রিকশাভাড়া রিকশাচালকরা এখন ৮০ থেকে ১০০ টাকা দাবি করছে।
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে ৫ যাত্রীর মৃত্যু : ৫ আসামি কারাগারে
রাজধানীর সদরঘাটে একটি লঞ্চের ছিঁড়ে আসা রশির আঘাতে পাঁচ যাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলায় রিমান্ড শেষে পাঁচ আসামিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ঢাকার অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম রকিবুল হাসান কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতের দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর এ তথ্য জানিয়েছেন। কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন ফারহান-৬ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার আবদুর রউফ (৫৪), দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার মোহাম্মদ সেলিম হাওলাদার (৫৪), লঞ্চের পরিচালক শাহরুখ খান (৭০), তাসরিফ-৪ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার মিজানুর রহমান (৪৮) ও দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার মো. মনিরুজ্জামান (২৭)। এদিন আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদরঘাট নৌথানার উপপরিদর্শক নকীব অয়জুল হক তাদের কারাগারে আটকের আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত ১২ এপ্রিল ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফা চৌধুরী হিমেলের আদালত শুনানি শেষে তাদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ১১ এপ্রিল বিকেল ৩টার দিকে সদরঘাট ১১ নং পন্টুনের সামনে এমভি তাশরিফ-৪ নামে একটি লঞ্চ ও এমভি পূবালী-১ নামে আরও একটি লঞ্চ রশি দিয়ে পন্টুনে বাঁধা ছিল। এ দুটি লঞ্চের মাঝখান দিয়ে ফারহান নামে আরেকটি লঞ্চ ঢুকানোর সময় এমভি তাশরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে গেলে পাঁচ যাত্রী লঞ্চে ওঠার সময় গুরুতর আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পর ওইদিন রাতে নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন। 
১৬ এপ্রিল, ২০২৪

সদরঘাট দুর্ঘটনা: / অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী-সন্তানসহ বাড়ি ফেরা হলো না বিল্লালের
ঈদের দিন ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্ব স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে নিয়ে যাওয়া হলো না গ্রামের বাড়িতে। সদরঘাট লঞ্চ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানার কর্মী বিল্লাল হোসেনের। ঈদের ভিড় এড়াতে সদরঘাট যান স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে মায়ের সাথে ঈদ করবেন বলে। ঈদের সময় ছুটি পেয়ে বিল্লাল প্রতিবার ঈদ করতে ছুটে যান মায়ের কাছে। তবে স্ত্রী মুক্তা বেগম ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় ঈদের আগে বাড়িতে যাননি। ঈদের দিন যাত্রীর চাপ কম থাকবে বলে এদিন বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কিন্তু কে জানতো এই যাত্রায় হবে পরিবারটি শেষ যাত্রা। রাজধানীর সদরঘাটে লঞ্চের রশি ছিঁড়ে নিহতদের মধ্যে তারা ৩ জন একই পরিবারের সদস্য । তারা হলেন—  আব্দুল খালেক মুন্সির ছেলে ছেলে মো. বেলাল (২৮), মুক্তা (২২) ও তাদের চার বছরের শিশু মাইশা।  তাদের বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ৪ নং দাউদখালী ইউনিয়নের খায়ের ঘটিচোরা গ্রামে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) দুপুর ৩ টার দিকে সদরঘাট লঞ্চঘাটের ১১ নম্বর পল্টুনের সামনে এ দুর্ঘটনা হয়। ঈদের দিন বাড়ি ফেরার জন্য চার বছরের শিশু সায়মা তার বাবা বিল্লাল এবং মা মুক্তার সঙ্গে ভোলার চরফ্যাশনগামী এমভি তাসরিফ লঞ্চে উঠতে চেয়েছিল। তবে অন্য একটি লঞ্চের ধাক্কায় শিশুটি বাবা-মায়ের সঙ্গে অনন্তকালের পথে পাড়ি জমিয়েছে। জানা যায়, সদরঘাটের ১১ নম্বর পন্টুনে এমভি তাশরিফ-৪ ও এমভি পূবালী-১ নামের দুটি লঞ্চ রশি দিয়ে বাঁধা ছিল। দুটি লঞ্চের মাঝখান দিয়ে ফারহান নামের আরেকটি লঞ্চ পন্টুনে ঘাটে নোঙ্গর সময় এমভি তাশরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে যায়। এ সময় লঞ্চে ওঠা অবস্থায় পাঁচজন যাত্রী গুরুতর আহত হন। তাদের উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। বেল্লাল হোসেনের মামাতো ভাই শাকিল হোসেন (৪৫) কলবেলাকে জানান, বেল্লাল ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতো। তার স্ত্রী টেইলার্সে দর্জি কাজ করতো। তার মা গ্রামে ভিক্ষা করে সংসার চালাতো। বেল্লাল হোসেন পরিবারের একমাত্র উপার্জন করার ব্যক্তি ছিলো।আজ মায়ের সাথে ঈদ করতে লঞ্চে রওনা দিলে সদরঘাট বসে দুর্ঘটনায় তারা প্রাণ হারায়। তার মা মৃত্যুর খবর শোনার পরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন।  মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল কাইয়ূম  কালবেলাকে জানান, তাদের পারিবারিক অবস্থা ভালো না থাকার কারণে আমরা উপজেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। ইতিমধ্য  ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে যাতে সার্বক্ষণিক তাদের সাথে যোগাযোগ করে মরাদেহ নিয়ে আসা হয়।
১২ এপ্রিল, ২০২৪
X