অটোরিকশাচালকদের ওপর স্টিম রোলার চালাচ্ছে সরকার :  রিজভী 
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকদের ওপর সরকার স্টিম রোলার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, অটোরিকশা বন্ধের মধ্য দিয়ে গরিবের আহার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সরকার সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে গরিবদের ওপর জুলুম চালাচ্ছে। সোমবার (২০ মে) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে শ্রমিক দল আয়োজিত এক মানববন্ধনে রিজভী এসব কথা বলেন। বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, দরিদ্র অটোরিকশাচালকদের কাছ থেকে সরকারি দলের নেতাকর্মীরা প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি করে তাদের সর্বস্বান্ত করেছে। সরকার দেশের প্রত্যেকটি সেক্টরকে লুটপাট করে শেষ করে দিয়েছে। অবিলম্বে জনসম্পৃক্ত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটানো হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ভ্যান বন্ধ করে দিলেন। আপনি নিজেই বলেছেন তার হাতের ঘড়ির দাম অনেক টাকা। অনেক মানুষ বলে ৫০ লাখ টাকা। তিনি যে সানগ্লাস পরেন সেটারও অনেক দাম, লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। যার সানগ্লাসের দাম এত, ঘড়ির দাম ৫০ লাখ টাকার উপরে, তিনি এই ব্যাটারওচালিত রিকশাচালকদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেন। তিনি কীভাবে তাদের দুঃখের মর্ম বুঝবেন। উনি কী জানেন, এরা একবেলা খায় না কি দুইবেলা খায়। ওবায়দুল কাদের কী জানেন, তারা যে পরিশ্রম করে রিকশা চালায় সেই টাকা দিয়ে, সেই উপার্জন দিয়ে তার সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে পারে কি না?   ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, তাদের সন্তানরা তো বিভিন্ন দেশে বসবাস করছে। কেউ বলে দুবাইয়ে, কেউ বলে কানাডায়, কেউ বলে মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম এবং বিভিন্ন ধরনের বাড়ি তারা সেখানে নির্মাণ করেছেন। তারা তো এদের বিষয়ে জানে না। গরিব মানুষরা যে চাল কিনতে পারছে না, যে দেশে আলুর দাম এই সিজনেও ৫০ টাকা- এটা কী ওবায়দুল কাদের সাহেব জানেন? ওবায়দুল কাদের সাহেব জানেন না, ওনার নেত্রীও জানেন না। ওনাদের প্রত্যেকটি নেতা এবং তাদের আত্মীয়স্বজন বিদ্যুৎখাত থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে গেছে, বিভিন্ন উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা পাচার করেছেন। শুধু টাকা পাচারের এই আরব্য উপন্যাসের কাহিনি প্রতিদিন আমরা সংবাদপত্রের পাতায় পড়ছি। সুতরাং তারা কী করে ওই ব্যাটারি চালিত রিকশাচালকদের করুণ কাহিনি জানবে। ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, এই ব্যাটারিচালিত রিকশা নিশ্চয়ই কোনো দেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে। এই আমদানি করার লাইসেন্স কে দিল, ঢাকাসহ প্রতিটি শহরেই আমি দেখেছি এই ব্যাটারি চালিত যান চলাচল করে, তাদের এই রোড পারমিশন কারা দিল? আপনার সরকারই দিয়েছে। এগুলো যারা ইমপোর্ট করেছে তারা তো আওয়ামী লীগের লোক, তারা তো আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ী। আর যারা ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছে তাদেরই দোষ হয়ে গেল? আপনাদের পেট ভরে বদ হজম হবে, তারপরও আপনাদের টাকা দরকার। এরা কিন্তু এমনি এমনি চালাতে পারে না, আপনার প্রশাসনের লোকদের টাকা দিতে হয়, স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগকে চাঁদা দিতে হয়। এত ঘাটে ঘাটে টাকা দেওয়ার পরও যতটুকু তাদের উপার্জন হয়, সেটা দিয়ে কোনোরকমে তারা দিনযাপন করে। আর এদের ওপরেই আপনারা চালাচ্ছেন স্টিম রোলার, এদের মাথার ওপর আওয়ামী লীগের তরবারি  ঝুলছে। ওবায়দুল কাদের সাহেব, আপনি গরিবের আহার কেড়ে নিয়ে, ভাত কেড়ে নিয়ে আপনি রাজত্ব করবেন, আপনারা স্বর্গে বসবাস করবেন, ওই স্বর্গ থেকে আপনাদের বিদায় নিতেই হবে। ওই স্বর্গে আপনারা আর বেশি দিন বসবাস করতে পারবেন না। শেয়ার বাজারেও নতুন করে ধস নেমেছে উল্লেখ করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, তরুণ শিক্ষিত যুবকরা, অল্প আয়ের মানুষরা শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করে। সেই শেয়ার মার্কেটেও আবার নতুন করে এমন পতন হচ্ছে- ওই পতন থেকে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না শেয়ার মার্কেট। এতে বেকার হচ্ছে তরুণরা যুবকরা। তারা এখন সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে, ফতুর হয়ে গেছেন। রিজভী বলেন, আজকের এই দিনে ঘুমন্ত চা শ্রমিকদের ওপর গুলি চালায় এ দেশের পুলিশ বাহিনী। তাদের এই আক্রমণের মধ্য দিয়ে অধিকার আদায়ের যে তীব্র আকুতি, যে আকাঙ্ক্ষা; আজও বাংলার আকাশে বাতাসে, আজও বাংলার নদী নালায় যে দাবি প্রবাহিত হয়- সেখান থেকে এখনো তাদের আওয়াজ মুছে যায়নি। আজও এ দেশের মানুষ নিপীড়িত, আজও এদেশের মানুষ নির্যাতিত, আজও দেশের মানুষকে এক বেলা খাবারের জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করতে হয়। সেদিনের সেই মুল্লুক চলো আন্দোলন যে শিক্ষা দিয়েছে, সেই শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নিপীড়িত নির্যাতিত শ্রমজীবী মানুষ লড়াই করছে। আন্তর্জাতিক চা দিবস বা মুল্লুক চলো দিবস উপলক্ষে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির সহ শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, সহঅর্থনৈতিকবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
২ ঘণ্টা আগে

বিএনপির ওপর নিপীড়ন করছে সরকার
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর নানা কায়দায় নির্যাতন-নিপীড়ন করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে এ অভিযোগ করেন তিনি। রাজধানীর পল্টন থানার একটি মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় গণমাধ্যমে এই বিবৃতি দেন ফখরুল। বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশটা এখন মগের মুল্লুকে পরিণত হয়েছে। ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে দেশব্যাপী প্রতিদিনই বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নানা কায়দায় অবর্ণনীয় নির্যাতন-নিপীড়ন শুরু করেছে। এর একমাত্র উদ্দেশ্য- বিরোধী দলগুলো যেন সরকারের স্বৈরাচারী আচরণের সমালোচনা করতে না পারে। মিথ্যা মামলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো আওয়ামী সরকারের প্রধান কর্মসূচি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইশরাক হোসেনের জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো সেই কর্মসূচিরই নিরবচ্ছিন্ন অংশ। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বিবৃতিতে মামলা প্রত্যাহারপূর্বক অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানান। পৃথক বিবৃতিতে ইশরাক হোসেনকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে আহ্বান জানান ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম ও সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু।
১৪ ঘণ্টা আগে

গ্যান্টজের সরকার ছাড়ার হুমকি ‘রাজনৈতিক খেলার’ অংশ
ইসরায়েলের যুদ্ধ মন্ত্রিপরিষদের সদস্য বেনি গ্যান্টজের সাম্প্রতিক সরকার ছাড়ার হুমকি রাজনৈতিক খেলার অংশ। নির্বাচন সামনে রেখে এটি গ্যান্টজের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর থেকে ‘নিজেকে আলাদা করার’ একটি প্রচেষ্টা। ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের প্রাক্তন উপপ্রধান ইরান এটজিয়ন পূর্ব জেরুজালেম থেকে আলজাজিরাকে এ কথা বলেন। এটজিয়ন বলেন, সামনে নির্বাচন রয়েছে। তা ছাড়া প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক মানুষ নেতানিয়াহুবিরোধী বিক্ষোভ করছেন। এ সময় নেতানিয়াহুর পাশে থাকা মানে বোকামি। তাই সময় বুঝে এখন যুদ্ধকালীন মন্ত্রিপরিষদ থেকে সরে পড়ার চেষ্টা করছেন বেনি গ্যান্টজ। এটি যতটা না দেশের স্বার্থে তার চেয়ে বেশি তার রাজনৈতিক স্বার্থে। উল্লেখ্য, সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। দীর্ঘ এই আগ্রাসনে ৩৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দেশটি। এরপরও হামাসকে পরাজিত করতে পারেনি ইসরায়েল। এর মধ্যেই উঠছে গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন। এ ছাড়া, যুদ্ধ শেষ হলে গাজার ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়ে পরিকল্পনা তৈরির জন্যও ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন সরকারের মধ্যে বাড়ছে চাপ। এমন অবস্থায় নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভায় দেখা দিয়েছে ভাঙনের সুর। গাজার জন্য কোনো যুদ্ধোত্তর পরিকল্পনা তৈরি করা না হলে পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গ্যান্টজ। অবশ্য যুদ্ধ শেষ হলে গাজার ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়ে পরিকল্পনা দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রও ইসরায়েলি নেতাদের ওপর চাপ দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা উপত্যকায় যুদ্ধোত্তর পরিকল্পনা নির্ধারণ না করলে পদত্যাগ করার হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন কেবিনেট মন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ। আর এই পরিকল্পনা প্রস্তুতের জন্য আগামী ৮ জুন পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন তিনি। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে গ্যান্টজ এ কথা জানান। গাজায় যুদ্ধ শেষ হলে এর পরদিন সেখানে কীভাবে শাসন কাজ পরিচালনা করা হবে তা নিয়ে লক্ষ্য নির্ধারণের জন্য মন্ত্রিসভাকে ছয় দফা পরিকল্পনায় সম্মত হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘যদি আপনি জাতীয় বিষয়কে ব্যক্তিগত বিষয়ের ওপরে স্থান দেন, তাহলে আপনি আমাদের এই সংগ্রামে অংশীদার হিসেবে পাবেন। কিন্তু আপনি যদি ধর্মান্ধদের পথ বেছে নেন এবং পুরো জাতিকে অতল গহ্বরে নিয়ে যান, তাহলে আমরা সরকার ছাড়তে বাধ্য হব।’ তবে নেতানিয়াহু তার এই মন্তব্যকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, এর অর্থ ‘ইসরায়েলের পরাজয়’।
১৪ ঘণ্টা আগে

‘সবুজ ও জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় বহুমুখী প্রচেষ্টা জরুরি’
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, সবুজ ও জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় বহুমুখী এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টা একান্তই জরুরি। তাহলেই এ চ্যালেঞ্জ আমরা যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে পারব। আমাদের নাগরিকদেরও পরিবেশ রক্ষায় অন্যতম ভূমিকা পালন করতে হবে। বৈশ্বিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকেও স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। রোববার (১৯ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘নগর স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের (সিটি কর্পো. এবং পৌরসভা) সবুজ ও জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলার সক্ষমতা সম্পর্কিত প্রকল্পের পরিকল্পনা, অর্থায়ন, ও বাস্তবায়ন এবং সেবা প্রদানসংক্রান্ত নির্দেশিকা’ চূড়ান্তকরণের কন্সালটেশন কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় শিল্প কারখানায় কার্বন ও হেভিমেটাল নিঃসরণের ক্ষতিকর প্রভাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উন্নত বিশ্বের কার্বন নিঃসরণে বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি উন্নয়নশীল দেশসমূহ। শিল্পায়ন ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার উন্নত দেশসমূহকে উন্নতির শিখরে নিয়ে গেছে। কিন্তু এসবের যথেচ্ছ ব্যবহারে শিল্পকারখানায় কার্বন এবং হেভিমেটালের নিঃসরণ পরিবেশকে করছে দূষিত। দূষিত হচ্ছে বায়ু, মাটি ও পানি। দেখা দিচ্ছে নানা ধরনের পানিবাহিত রোগ। ঘটছে জলবায়ুগত পরিবর্তন ও বিপর্যয়। এর প্রধান ভুক্তভোগী হচ্ছে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশসমূহ। উন্নত বিশ্ব বাংলাদেশেসহ ভুক্তভোগী উন্নয়নশীল দেশসমূহকে কার্বন নিঃসরণের ফলে জলবায়ুগত প্রতিঘাত মোকাবিলায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে অনুদান দেওয়ার কথা তা ঠিকমতো পালন করছে না। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য খাদ্য উৎপাদন বিরাট একটা চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, পরিবেশগত ভারসাম্য বজার রেখে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ ও পরিকল্পনা। মন্ত্রী সবুজ ও জলবায়ুগত অভিঘাত মোকাবিলায় সবুজ বনায়ন ও বাংলাদেশের নদীসমূহ তথা পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনাকে সুসংহত, যুগোপযোগী ও পুনরুজ্জীবিত করার ওপর জোর দেন। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় সম্মানিত অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, বিশ্বব্যাংকের লিড কান্ট্রি ডিরেক্টর সোলেয়মান কুলিবালি প্রমুখ।
১৯ ঘণ্টা আগে

বিএনপির ওপর নানা কায়দায় নিপীড়ন করছে সরকার : ফখরুল 
আওয়ামী লীগ সরকার তাদের ক্ষমতা ধরে রাখতে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর নানা কায়দায় নির্যাতন-নিপীড়ন শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।  রোববার (১৯ মে) সন্ধ্যায় বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ অভিযোগ করেন তিনি। এর আগে দুপুরে রাজধানীর পল্টন থানার একটি মামলায় বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে এই বিবৃতি দেন ফখরুল। বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশটা এখন মগের মুল্লুকে পরিণত হয়েছে। ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে দেশব্যাপী প্রতিদিনই বিএনপিসহ বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের ওপর নানা কায়দায় অবর্ণনীয় নির্যাতন-নিপীড়ন শুরু করেছে। আর এ ধরনের অপকর্মের একমাত্র উদ্দেশ্যই হচ্ছে- দেশের বিরোধীদলগুলো যেন দখলদার সরকারের স্বৈরাচারী আচরণের সমালোচনা করতে না পারে। মিথ্যা মামলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা যেন আওয়ামী সরকারের প্রধান কর্মসূচি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইশরাক হোসেনের জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণ সেই কর্মসূচিরই নিরবচ্ছিন্ন অংশ। এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারপূর্বক ইশরাক হোসেনের নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহ্বান জানাচ্ছি। এদিকে পৃথক বিবৃতিতে অবিলম্বে ইশরাক হোসেনের মামলা প্রত্যাহারপূর্বক তার নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহ্বান জানান ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম ও সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু।
২০ ঘণ্টা আগে

সরকার ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা উন্নত করতে কাজ করছে : পরিবেশমন্ত্রী 
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশে ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে এবং বেস্ট প্রকল্পের অধীনে একটি ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্ট নির্মাণ করা হবে।  রোববার (১৯ মে) বাংলাদেশ সচিবালয়ে টেলিনর এশিয়ার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মনীষা ডোগরা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে পরিবেশমন্ত্রী এ কথা বলেন। সাবের হোসেন বলেন, সরকার টেকসই এজেন্ডা বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ লক্ষ্যে জ্বালানির পরিমিত ব্যবহার, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার সম্প্রসারণ এবং একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকের ব্যবহার হ্রাস করতে কাজ করা হচ্ছে।  মন্ত্রী বলেন, সরকার বাংলাদেশকে জলবায়ু সহনশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ নিরলসভাবে করে যাচ্ছে। জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান লক্ষ্য শিগগিরই সংশোধন করা হবে। বর্ধিত প্রযোজক দায়বদ্ধতা (ইপিআর) নির্দেশিকাগুলোর খসড়া জুনের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে। তিনি একটি সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে টেলিনরকে কাজ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। টেলিনর এশিয়ার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মনীষা ডোগরা বলেন, টেলিনর এশিয়া এ অঞ্চলে পরিবেশগত টেকসইতা এবং জলবায়ুসংক্রান্ত পদক্ষেপের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং একটি টেকসই ভবিষ্যতের দিকে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে নিবেদিত হয়ে কাজ করবে।
২১ ঘণ্টা আগে

অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে সরকার
আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতি, লুটপাট ও দুঃশাসনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে দাঁড় করিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, ২০১৪ সাল থেকে পরপর তিনবার জনগণের ভোট ছাড়া অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী লীগ জবাবদিহিবিহীন রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে বিদ্যুৎ খাতকে। গতকাল শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নাগরিক ঐক্যের উদ্যোগে ‘বিদ্যুৎ: আলো থেকে অন্ধকারে যাত্রা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। মান্না বলেন, বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকি কমানোর অজুহাতে গত ১৫ বছরে পাইকারি পর্যায়ে ১১ বার এবং খুচরা পর্যায়ে ১৩ বার বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুতের দাম। সম্প্রতি আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকি কমাতে বছরে চারবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অথচ বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির প্রায় পুরোটাই চলে যাচ্ছে রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে সরকারের অলিগার্কদের পকেটে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের জবাবদিহিহীন শাসনের অবসান ঘটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা না গেলে দেশের অর্থনীতি, সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা যাবে না। মান্নার সভাপতিত্বে সেমিনারে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
১৯ মে, ২০২৪

অর্থনীতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এনে দাঁড় করিয়েছে সরকার : মান্না
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতি, লুটপাট ও দুঃশাসনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এনে দাঁড় করিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, ২০১৪ সাল থেকে পর পর তিনবার জনগণের ভোট ছাড়া অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী লীগ জবাবদিহিহীন রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে বিদ্যুৎখাতকে। শনিবার (১৮ মে) বিকেলে সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নাগরিক ঐক্যের উদ্যোগে ‘বিদ্যুৎ : আলো থেকে অন্ধকারে যাত্রা’- শীর্ষক এক সেমিনারে মান্না এসব কথা বলেন। মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে বিদ্যুতের চাহিদা ক্রমাগত বাড়তে থাকে। ভিন্নভাবে বললে বাংলাদেশে তৈরি পোশাকখাতসহ শিল্প কারখানার বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের চাহিদা ব্যাপকভাবে বাড়তে থাকে। ২০০১ সালের চারদলীয় জোট সরকার ক্রমাগত চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি। এতে দেশব্যাপী লোডশেডিং দুর্বিষহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। পোশাক খাতসহ শিল্প কারখানার উৎপাদন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চারদলীয় জোট সরকারের পর এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেও পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেনি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রথম বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধিতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে পড়ল তখন বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতে সংসদে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০’ নামে একটা আইন পাস করা হলো। অর্থাৎ বিদ্যুৎ খাতের সেই ইনডেমনিটি আইন। শুরু হয় বিদ্যুৎ খাতে লুটপাটের মহোৎসব। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকি কমানোর অজুহাতে গত ১৫ বছরে পাইকারি পর্যায়ে ১১ বার এবং খুচরা পর্যায়ে ১৩ বার বাড়ানো হয়েছে বিদ্যুতের দাম। সম্প্রতি আইএমএফ-এর শর্ত অনুযায়ী বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকি কমাতে বছরে চারবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অথচ বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির প্রায় পুরোটাই চলে যাচ্ছে রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে সরকারের অলিগার্কদের পকেটে। তিনি আরও বলেন, জনগণের পকেট কাটার আরেক হাতিয়ার গ্রাহকের কাছ থেকে প্রতি মাসে ডিমান্ড চার্জ এবং মিটার ভাড়া আদায় করা। অথচ বিদ্যুতের মিটার একজন গ্রাহক নিজে কেনেন। নিজের কেনা মিটারের ভাড়া প্রতি মাসে সরকারকে দিতে হয়। বিষয়টা ঠিক ‘নিজের জমিতে নিজের খরচে বাড়ি করে ভাড়া দিয়ে থাকার মতো’। মান্না বলেন, শুধু বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাত নয়; দেশের ব্যাংকিং সেক্টর থেকে শুরু করে অর্থনীতির সব ক্ষেত্র আজ গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত। বিদ্যুৎসহ সব খাতে সরকারের স্বজনতোষী নীতি আর অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে গড়ে তোলা অলিগার্ক গোষ্ঠীর পকেটে জনগণের টাকা তুলে দিতে গিয়ে দেশকে নিশ্চিত অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। একইসঙ্গে অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক পরাশক্তির সমর্থন আদায় করতে সরকার তাদের দেশের স্বার্থবিরোধী সুযোগ সুবিধা দিয়ে সন্তুষ্ট রাখতে চেয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের এই জবাবদিহিহীন কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান ঘটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা না গেলে দেশের অর্থনীতি, সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা যাবে না। মান্নার সভাপতিত্বে সেমিনারে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
১৮ মে, ২০২৪

নব্য বাকশালী শাসন কায়েম করেছে সরকার
আওয়ামী লীগ সরকার দেশে নব্য বাকশালী শাসন কায়েম করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ অভিযোগ করেন তিনি। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের জামিন নামঞ্জুর এবং কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে এ বিবৃতি দেন মির্জা ফখরুল। বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে অবৈধ আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী এখন আরও তীব্র মাত্রায় হিংস্র হয়ে উঠেছে। মিথ্যাচার, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও অপকৌশলের মাধ্যমে অবৈধ রাষ্ট্রক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ গণতন্ত্রমনা বিরোধী দল, ভিন্ন মত ও পথের মানুষের ওপর নিষ্ঠুর দমনপীড়ন চালানো হচ্ছে অব্যাহতভাবে। মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় সাজাসহ জামিন নামঞ্জুর করে বিরোধী নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠানোর মাধ্যমে দখলদার আওয়ামী সরকার দেশে নব্য বাকশালী শাসন কায়েম করেছে। বিএনপি নেতা গিয়াসের জামিন নামঞ্জুর আওয়ামী জুলুমেরই ধারাবাহিকতা। তিনি বলেন, সারা দেশে প্রতিনিয়ত সরকারের মদদে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদের সাজা প্রদানসহ জামিন নামঞ্জুরের মাধ্যমে কারান্তরীণ করার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারসহ অবিলম্বে তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার জোর আহ্বান জানাচ্ছি।
১৮ মে, ২০২৪

নকল বিড়ির আগ্রাসনে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
তামাক ব্যবহারের অন্যতম মাধ্যম বিড়ি। দরিদ্র শ্রেণির ধূমপায়ীদের মধ্যে বিড়ি বেশ জনপ্রিয়। সময়ের পরিক্রমায় বাংলাদেশে বিড়ি সম্মুখীন হয়েছে নানা প্রতিকূলতায়। শ্রমঘন দেশীয় কুটির শিল্প হিসেবে যেখানে বিড়ি আনুকূল্য পাওয়ার দাবিদার, সেখানে বিড়িকে সম্মুখীন হতে হয়েছে নানাবিধ প্রতিকূলতায়। বিড়ির বাজার প্রতিযোগী সিগারেট, বিশেষত বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে অন্যায্য সুবিধা ভোগ করে বিড়িকে অসম প্রতিযোগিতায় নিক্ষেপ করে এর বাজার দখল করেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ২০১৯ সালের প্রকাশনায় বলা হয়েছে, প্রাপ্তবয়স্কদের তামাক ব্যবহারের বৈশ্বিক গবেষণা ২০০৯ ও ২০১৭ দেখাচ্ছে যে, বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্কদের ধূমপানের হার কমেছে দারুণভাবে—২০০৯ সালে ২৩ শতাংশ থেকে ২০১৭-তে ১৮ শতাংশ। তবে ধূমপানের এ নিম্নহার হয়েছে মূলত বিড়ির কারণে, যেটি ২০০৯-এ ছিল ১১.২ শতাংশ আর ২০১৭-তে হয়েছে ৫ শতাংশ। পক্ষান্তরে সিগারেটের অবস্থা রয়েছে প্রায় অপরিবর্তিত, ২০০৯-এ ১৪.২ শতাংশ থেকে ২০১৭-তে ১৪ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের ২০০৯-এর আরেকটি প্রকাশনা জানাচ্ছে যে, বাংলাদেশে তামাকের ব্যবহার বিড়ি ও ধোঁয়াহীন তামাক গ্রহণ থেকে সিগারেটের ব্যবহারের দিকে সরে গেছে। সিগারেটের বহুস্তরের কর ব্যবস্থা কমদামি সিগারেটের সেবনকে উৎসাহিত করছে। যেহেতু কর ব্যবস্থার মাধ্যমে কমদামি সিগারেট ক্রয়ক্ষমতার মাঝে রাখা হচ্ছে, ফলে কমদামি সিগারেটের বাজার সম্প্রসারণ সিগারেটের বাজারকেই সমৃদ্ধ করছে। নানাবিধ প্রতিকূলতার মধ্যে টিকে থাকা বিড়িকে সাম্প্রতিককালে মোকাবিলা করতে হচ্ছে নতুন সমস্যার সঙ্গে। সেটি হচ্ছে নকল বিড়ি। বিড়ি থেকে সরকার নির্ধারিত শুল্ক আদায়ের মাধ্যম হচ্ছে ব্যান্ডরোল। বিড়ি উৎপাদনকারীরা সরকারের কাছ থেকে নির্ধারিত দামে ব্যান্ডরোল কিনে তা বিড়ির প্যাকেটে লাগিয়ে দেয়। বৈধ ব্যান্ডরোল সংবলিত বিড়িই হচ্ছে আসল বিড়ি। পক্ষান্তরে নকল বিড়ি হচ্ছে ব্যান্ডরোলবিহীন, নকল ব্যান্ডরোলযুক্ত কিংবা একই ব্যান্ডরোল পুনঃব্যবহার করা। যেসব বিড়ি সরকার নির্ধারিত শুল্ক প্রদান না করে বিক্রি হয় সেগুলোই নকল বিড়ি। বর্তমানে ২৫ শলাকার এক প্যাকেট বিড়ির দাম সরকার নির্ধারণ করেছেন ১৮ টাকা, যার মধ্যে সরকার নির্ধারিত শুল্ক ৯.০৯ টাকা। তাই ৯ টাকার কম দামে বিক্রি হওয়া বিড়িকে নকল বিড়ি হিসেবে গণ্য করা যায়। কম দামে ভোক্তার কাছে বিড়ি বিক্রির প্রত্যাশা থেকেই নকল বিড়ির উৎপত্তি। বিড়ির দাম যখন কম ছিল, তখন নকল বিড়ির অস্তিত্ব তেমন ছিল না। ২০ বছর আগে বিড়ির দাম ছিল ২.৮৩ টাকা। তারপর দাম ক্রমাগতভাবে বেড়েছে, যার মধ্যে রয়েছে কয়েকবারের অতিমাত্রায় বৃদ্ধি—২০১৫-১৬ বছরের ৪.৯১ থেকে ২০১৬-১৭-তে ৭.১০, ২০১৭-১৮-তে ১২.৫০, ২০১৯-২০-এ ১৪ ও ২০২০-২১-এ ১৮ টাকা। বিড়ির দাম যখন বেড়েছে, তখন কম দামে বিড়ি প্রাপ্তির একটা বাজার তৈরি হয়েছে। নকল বিড়ি সেই বাজারের চাহিদা মেটাচ্ছে। যেহেতু সরকার নির্ধারিত কর প্রদান করতে হয় না, নকল বিড়ি আসল বিড়ির চেয়ে অনেক কম দামে বিক্রি করা যায়। ফলে দরিদ্র শ্রেণির ভোক্তারা সহজেই নকল বিড়ির প্রতি আকৃষ্ট হয়। নকল বিড়ি বিক্রিতে মুনাফা বেশি বলে তা বিক্রির জন্য ছোট ছোট দোকানি ও ভ্রাম্যমাণ হকারদের আগ্রহও বেশি। বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে টিকে থাকতে হলে আর উচ্চ আয়ের লক্ষ্য অর্জন করতে হলে কর্মসংস্থানের বিকল্প নেই। শ্রমঘন কুটির শিল্প বিড়ি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে তাদের জন্য যারা প্রচলিত কর্মসংস্থানে অংশগ্রহণ করতে পারে না। দরিদ্র নারী, প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বিড়ি অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে ভূমিকা রাখছে অনন্য। বিড়ির এ অবস্থানকে শক্তিশালী করতে হবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে। বিড়ির দাম বাড়িয়ে নকল বিড়ির বাজার সৃষ্টি এ অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রচেষ্টায় ছুরিকাঘাত। বিড়ির দাম বাড়লে সরকারের রাজস্ব আহরণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিড়ির মূল্য বৃদ্ধি নকল বাজার সৃষ্টি করে বিড়িকে ক্ষতিগ্রস্ত করে কর্মসংস্থান তথা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে। তাই অবিলম্বে বিড়ির দাম কমিয়ে সরকারের রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির ব্যবস্থার পাশাপাশি নকল বিড়ির বাজার নস্যাৎ করে প্রকৃত বিড়ি শিল্পকে সমৃদ্ধ করে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে অর্থনীতির উন্নয়নে অবদান রাখা প্রয়োজন। লেখক: সম্পাদক, মেহনতি কণ্ঠ
১৮ মে, ২০২৪
X