কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ মে ২০২৪, ০২:৫৭ পিএম
আপডেট : ২০ মে ২০২৪, ০৩:০৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

অটোরিকশাচালকদের ওপর স্টিম রোলার চালাচ্ছে সরকার :  রিজভী 

সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শ্রমিক দল আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি : কালবেলা
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শ্রমিক দল আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি : কালবেলা

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকদের ওপর সরকার স্টিম রোলার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, অটোরিকশা বন্ধের মধ্য দিয়ে গরিবের আহার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সরকার সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে গরিবদের ওপর জুলুম চালাচ্ছে।

সোমবার (২০ মে) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে শ্রমিক দল আয়োজিত এক মানববন্ধনে রিজভী এসব কথা বলেন।

বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, দরিদ্র অটোরিকশাচালকদের কাছ থেকে সরকারি দলের নেতাকর্মীরা প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি করে তাদের সর্বস্বান্ত করেছে। সরকার দেশের প্রত্যেকটি সেক্টরকে লুটপাট করে শেষ করে দিয়েছে। অবিলম্বে জনসম্পৃক্ত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটানো হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ভ্যান বন্ধ করে দিলেন। আপনি নিজেই বলেছেন তার হাতের ঘড়ির দাম অনেক টাকা। অনেক মানুষ বলে ৫০ লাখ টাকা। তিনি যে সানগ্লাস পরেন সেটারও অনেক দাম, লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। যার সানগ্লাসের দাম এত, ঘড়ির দাম ৫০ লাখ টাকার উপরে, তিনি এই ব্যাটারওচালিত রিকশাচালকদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেন। তিনি কীভাবে তাদের দুঃখের মর্ম বুঝবেন। উনি কী জানেন, এরা একবেলা খায় না কি দুইবেলা খায়। ওবায়দুল কাদের কী জানেন, তারা যে পরিশ্রম করে রিকশা চালায় সেই টাকা দিয়ে, সেই উপার্জন দিয়ে তার সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে পারে কি না?

ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, তাদের সন্তানরা তো বিভিন্ন দেশে বসবাস করছে। কেউ বলে দুবাইয়ে, কেউ বলে কানাডায়, কেউ বলে মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম এবং বিভিন্ন ধরনের বাড়ি তারা সেখানে নির্মাণ করেছেন। তারা তো এদের বিষয়ে জানে না। গরিব মানুষরা যে চাল কিনতে পারছে না, যে দেশে আলুর দাম এই সিজনেও ৫০ টাকা- এটা কী ওবায়দুল কাদের সাহেব জানেন? ওবায়দুল কাদের সাহেব জানেন না, ওনার নেত্রীও জানেন না। ওনাদের প্রত্যেকটি নেতা এবং তাদের আত্মীয়স্বজন বিদ্যুৎখাত থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে গেছে, বিভিন্ন উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা পাচার করেছেন। শুধু টাকা পাচারের এই আরব্য উপন্যাসের কাহিনি প্রতিদিন আমরা সংবাদপত্রের পাতায় পড়ছি। সুতরাং তারা কী করে ওই ব্যাটারি চালিত রিকশাচালকদের করুণ কাহিনি জানবে।

ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, এই ব্যাটারিচালিত রিকশা নিশ্চয়ই কোনো দেশ থেকে আমদানি করা হয়েছে। এই আমদানি করার লাইসেন্স কে দিল, ঢাকাসহ প্রতিটি শহরেই আমি দেখেছি এই ব্যাটারি চালিত যান চলাচল করে, তাদের এই রোড পারমিশন কারা দিল? আপনার সরকারই দিয়েছে। এগুলো যারা ইমপোর্ট করেছে তারা তো আওয়ামী লীগের লোক, তারা তো আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ী। আর যারা ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছে তাদেরই দোষ হয়ে গেল? আপনাদের পেট ভরে বদ হজম হবে, তারপরও আপনাদের টাকা দরকার। এরা কিন্তু এমনি এমনি চালাতে পারে না, আপনার প্রশাসনের লোকদের টাকা দিতে হয়, স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগকে চাঁদা দিতে হয়। এত ঘাটে ঘাটে টাকা দেওয়ার পরও যতটুকু তাদের উপার্জন হয়, সেটা দিয়ে কোনোরকমে তারা দিনযাপন করে। আর এদের ওপরেই আপনারা চালাচ্ছেন স্টিম রোলার, এদের মাথার ওপর আওয়ামী লীগের তরবারি ঝুলছে। ওবায়দুল কাদের সাহেব, আপনি গরিবের আহার কেড়ে নিয়ে, ভাত কেড়ে নিয়ে আপনি রাজত্ব করবেন, আপনারা স্বর্গে বসবাস করবেন, ওই স্বর্গ থেকে আপনাদের বিদায় নিতেই হবে। ওই স্বর্গে আপনারা আর বেশি দিন বসবাস করতে পারবেন না।

শেয়ার বাজারেও নতুন করে ধস নেমেছে উল্লেখ করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, তরুণ শিক্ষিত যুবকরা, অল্প আয়ের মানুষরা শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করে। সেই শেয়ার মার্কেটেও আবার নতুন করে এমন পতন হচ্ছে- ওই পতন থেকে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না শেয়ার মার্কেট। এতে বেকার হচ্ছে তরুণরা যুবকরা। তারা এখন সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে, ফতুর হয়ে গেছেন।

রিজভী বলেন, আজকের এই দিনে ঘুমন্ত চা শ্রমিকদের ওপর গুলি চালায় এ দেশের পুলিশ বাহিনী। তাদের এই আক্রমণের মধ্য দিয়ে অধিকার আদায়ের যে তীব্র আকুতি, যে আকাঙ্ক্ষা; আজও বাংলার আকাশে বাতাসে, আজও বাংলার নদী নালায় যে দাবি প্রবাহিত হয়- সেখান থেকে এখনো তাদের আওয়াজ মুছে যায়নি। আজও এ দেশের মানুষ নিপীড়িত, আজও এদেশের মানুষ নির্যাতিত, আজও দেশের মানুষকে এক বেলা খাবারের জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করতে হয়। সেদিনের সেই মুল্লুক চলো আন্দোলন যে শিক্ষা দিয়েছে, সেই শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নিপীড়িত নির্যাতিত শ্রমজীবী মানুষ লড়াই করছে।

আন্তর্জাতিক চা দিবস বা মুল্লুক চলো দিবস উপলক্ষে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির সহ শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, সহঅর্থনৈতিকবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

চবিতে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মীকে মারধর

আমেরিকান পিস্তল ফেলে পালালেন বিএনপি নেতার ভাগিনা

শেষ ওভারে ঝড়, ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর লড়ার মতো স্কোর গড়ল বাংলাদেশ

বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বন্ধ থাকা ইউনিটের উৎপাদন শুরু

বিদ্যুৎস্পর্শে পুত্রবধূ-শ্বশুরের মৃত্যু, শাশুড়ি হাসপাতালে

ধানমন্ডি থানার ওসিকে পুরস্কৃত করলেন ডিএমপি কমিশনার

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের শঙ্কা, বিশ্ববাজারে বাড়ল তেলের দাম

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব জায়গায় আন্দোলন

ঝিনাইদহ কৃষকদল নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার  

১০

কেরানীগঞ্জে বিএনপিকে টেক্কা দিয়ে হাটের ইজারা পেল এনসিপি

১১

পাকিস্তানি সিরিয়াল এলে অভিনয় করবেন না আলভী

১২

ঈদুল আজহার ছুটি ঘোষণা করল কাতার, কবে ঈদ?

১৩

দুই মামলায় অব্যাহতি পেলেন জেলা বিএনপির সভাপতিসহ ৬৪ নেতাকর্মী

১৪

সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা বহাল রাখার দাবি ঐক্য পরিষদের

১৫

রাজনীতিকে অপছন্দ করা মানুষরাই দেশ চালাচ্ছে : মান্না

১৬

বিসিএস ডেন্টাল ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের ৬ দফা 

১৭

এসএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষায় শিক্ষকদের লাখ লাখ টাকা আয়

১৮

নুরের বিষয়ে গণঅধিকারের বিবৃতি

১৯

আত্মহত্যা প্রতিরোধে মাভাবিপ্রবিতে বিশেষ সেমিনার

২০
X