বিএমইটি সার্ভার জাতীয় তথ্য সেন্টারে স্থানান্তরের উদ্যোগ
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) সার্ভারের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেটিকে জাতীয় তথ্য সেন্টারে যুক্ত করার উদ্যাগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। এতে সার্ভার জালিয়াতি রোধ করা সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, এই সার্ভার স্থানান্তরের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় দুই কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। শিগগিরই সার্ভার সিস্টেমটি জাতীয় তথ্য সেন্টারে স্থানান্তর করা হবে। গত ২৬ নভেম্বর বিএমইটি ও বিজিডি ই-গভ সার্টের মধ্যে এ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই হয়। এ বিষয়ে জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর এক কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, সার্ভার সিস্টেম বিএমইটিতে না রেখে দ্রুত জাতীয় তথ্য সেন্টারে এ স্থানান্তর করা উচিত। বিএমইটি যদি সার্ভারটি নিজেরা আধুনিকায়ন করতে যায়, তাহলে অন্তত ৫০ কোটি টাকা লাগবে। তাই সার্ভার সিস্টেমটি অতিসত্বর জাতীয় তথ্য সেন্টারে যুক্ত করা দরকার। এ বিষয়ে অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর কালবেলাকে বলেন, বিএমইটি সার্ভার জাতীয় তথ্য সেন্টার স্থানান্তর হলে সাময়িক উপকার হবে। অর্থাৎ সার্ভারটি হ্যাকিংয়ের হাত থেকে রক্ষা পাবে। তবে বিএমইটির নিজস্ব নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকতে হবে। তাদের কোনো ইউনিট নেই। দায়িত্বশীল কর্মকর্তাও নেই। এক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারের জন্য বিএমইটির নিজস্ব স্মার্ট ডিভাইস প্রয়োজন। তিনি বলেন, ২০৩৫ সালকে টার্গেট করে আইসিটি মন্ত্রণালয়কে সঙ্গে নিয়ে নতুন পরিকল্পনা সাজাতে হবে। নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিএমিটির সার্ভারকে নিরাপদ করে গড়ে তুলতে হবে। বিএমইটি সার্ভারটি দুই দশক আগে চালু হয়। তবে সার্ভার আধুনিকায়ন জন্য ২০০৯ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ সুযোগে প্রবাসীদের বহির্গমন ছাড়পত্রের তথ্য বারবার চুরি হচ্ছে। জালিয়াত চক্র তথ্য মুছে দিচ্ছে। এতে সার্ভারটি নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়ছে, যে জন্য সার্ভার জালিয়াতির ঘটনা কোন লিঙ্ক থেকে হচ্ছে তা খুঁজে বের করা সম্ভব হচ্ছে না।
৩১ জানুয়ারি, ২০২৪

জন্মনিবন্ধন ভোগান্তি দূর করতে সার্ভার উন্নয়নের কাজ চলছে : মেয়র আতিক
জন্মনিবন্ধন ভোগান্তি দূর করতে রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়ের সার্ভার উন্নয়নের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। বুধবার (২০ ডিসেম্বর) নগর ভবনের হলরুমে দ্বিতীয় পরিষদের ২৪তম করপোরেশন সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সভায় আতিকুল ইসলাম কাউন্সিলরদের উদ্দেশে বলেন, জনগণের ভোগান্তি দূর করে দ্রুত জন্মনিবন্ধন সরবরাহে ওয়ার্ড পর্যায়ে অফিসে দেওয়া হয়েছে। সবাইকে আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা দিতে হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর নির্দেশে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধকের কার্যালয় সার্ভার উন্নয়নে কাজ করছে। নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে দ্রুত সময়ের মধ্যে ওয়ার্ড সচিব নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। করপোরেশন সভার শুরুতে মহান বিজয়ের মাস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। সভায় আলোচনা শেষে ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম শফিকুর রহমান এবং উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ারকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এ ছাড়া নতুন প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস চৌধুরী, উপপ্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রুবাইয়াত ইসমত অভীক, মহাব্যবস্থাপক (পরিবহন) সালমা আক্তার খুকী এবং চারজন আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা নাছিমা খানম, কামরুজ্জামান, মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন ও নাহিদ উল মোস্তাককে অভ্যর্থনা জানানো হয়। ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজার সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, ডিএনসিসির সব বিভাগীয় প্রধান, কাউন্সিলর ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২০ ডিসেম্বর, ২০২৩

বুড়িমারী ইমিগ্রেশনে যাত্রীর চাপ, তিন দিন ধরে সার্ভার জটিলতা
লালমনিরহাটে পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সীমান্ত পথে চিকিৎসা ও ভ্রমণপিপাসু ভারতগামী পাসপোর্টধারী যাত্রীর চাপ বেড়েছে। তিন দিন ধরে বুড়িমারী ইমিগ্রেশনের ই-পাসপোর্টের অনলাইন সার্ভার জটিলতার কারণে অনলাইনে কোনো ধরনের তথ্য আপডেট বা প্রবেশ করা যাচ্ছে না। বুড়িমারী ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ জানায়, এ পথে যাতায়াতকারী পাসপোর্ট ভিসাধারী যাত্রীদের সব তথ্য কাগজে-কলমে নোট করতে হচ্ছে। এতে সময়ক্ষেপণের কারণে ভোগান্তিতে পড়েন তারা। সার্ভার জটিলতায় কোনো দাগি অপরাধী দেশত্যাগ করে কি না, এ নিয়েও চিন্তিত ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা। যদিও সতর্কাবস্থায় রয়েছেন তারা। তবে দ্রুত সময়ে ঢাকা থেকে ঠিক করতে বা নতুন বিশেষ কম্পিউটারে (পিসি) সার্ভার ইনস্টল করতে হবে।    সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে বুড়িমারী ইমিগ্রেশনে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ইমিগ্রেশনের ভ্রমণে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ যাত্রীর ভিড়। ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা যাত্রী ছাড়াও ভারতগামী বাংলাদেশের লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন জেলা থেকে বুড়িমারী ইমিগ্রেশনে এসেছেন পাসপোর্টধারী যাত্রীরা। নীলফামারী জলঢাকা থেকে আসা মাধবী রানি বলেন, সার্ভার সমস্যার কারণে দীর্ঘক্ষণ থেকে বসে আছি আমি ও আমার মেয়ে। আমার কোমরে ব্যথা, ভারতের শিলিগুড়ি যাব চিকিৎসার জন্য। এ ঘটনা পুলিশের বিশেষ শাখার মাধ্যমে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট বিভাগ ঢাকার প্রকৌশলীদের জানানো হয়। প্রকৌশলীরা তথ্য-উপাত্ত ঘেটে জানায়, বুড়িমারী ইমিগ্রেশনে সংযুক্ত পিসি সমস্যার কারণে সার্ভারে কাজ করছে না। দ্রুত ঢাকায় এনে ঠিক করতে হবে। নতুবা নতুন বিশেষ পিসি সার্ভার ইনস্টল করতে হবে। ওই দিনই বুড়িমারী ইমিগ্রেশনের পিসি ঢাকায় পাঠানো হয়। শত শত যাত্রীদের পারাপারে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) অনুমতি সাপেক্ষে ম্যানুয়ালি পাসপোর্টের নম্বর ও তথ্য নোট নিয়ে যাত্রী পারাপার সচল করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ম্যানুয়ালি কাজ করলেও পাসপোর্ট ও ভিসাধারী ব্যক্তির প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট বিভাগ এবং এয়ারপোর্ট ঢাকার প্রকৌশলীদের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। পাসপোর্ট নম্বর পাঠিয়ে ব্যক্তি ব্লাকলিস্টে আছে কি না বা কোনো আপত্তি আছে কি না এসব যাচাই করে সবুজ সংকেত বা ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পরই পারাপারের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এতে একটু সময় বেশি লাগছে। বুড়িমারী ইমিগ্রেশন ইনচার্জ মুর হাসান কবির বলেন, তিন দিনে এক হাজারের বেশি পাসপোর্টধারী যাত্রী এ পথে পারাপার হয়েছেন। তাদের প্রত্যেকের তথ্য কাগজে-কলমে লিখিতভাবে এন্ট্রি করা হয়েছে। সার্ভার সমস্যা সমাধান হলে ওইসব তথ্য আবার অনলাইনে আপডেট করা হবে।
১১ ডিসেম্বর, ২০২৩

জন্ম-মৃত্যু সার্ভার উন্নয়নের দায়িত্বে এবার এনটিএমসি
কয়েক মাস ধরে জন্ম ও মৃত্যু সনদ সংগ্রহে ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ নাগরিকরা। বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আসন্ন ভর্তি মৌসুমের আগে চোখে যেন অন্ধকার দেখছেন অভিভাবকরা। মাসের পর মাস ভোগান্তি পোহালেও কোনো সমাধান হচ্ছিল না জন্মনিবন্ধন সনদ নিয়ে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রিভ সিস্টেমস জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়কে শর্তানুযায়ী সবকিছু বুঝিয়ে দেয়নি বলে অভিযোগ দপ্তরটির। এমন প্রেক্ষাপটে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন তথ্য ব্যবস্থার (বিডিআরআইএস) দায়িত্ব পেয়েছে জাতীয় টেলিযোগাযোগ তদারকি কেন্দ্র বা এনটিএমসি। ভবিষ্যতে কখনো বিডিআরআইএস সার্ভারে কোনো জটিলতা হবে না এমন লক্ষ্যেই সিস্টেমটি তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এনটিএমসির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান। আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে জন্ম ও মৃত্যু সনদ-সংক্রান্ত জটিলতার নিরসন হবেও দাবি সংস্থাটির। ২০০৪ সালে প্রণীত এবং ২০০৬ সাল থেকে কার্যকর হওয়া আইনের মাধ্যমে অন্তত ১৯টি সেবার ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন সনদ প্রয়োজনীয় করা হয়। বিশেষ করে পাসপোর্ট ইস্যু, বিবাহবন্ধন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়া, জমি নিবন্ধন-সংক্রান্ত সেবা পেতে এবং ১৮ বছর বয়সের নিচে যাদের জাতীয় পরিচয় (এনআইডি) নেই তাদের জন্য জন্মনিবন্ধন সনদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দলিল। তবে সার্ভার জটিলতা, ডাটাবেজের তথ্য ফাঁস হওয়ার মতো ঘটনায় জন্মনিবন্ধন সনদ পাওয়া এক প্রকার সোনার হরিণ পাওয়ার মতো হয়ে যায়। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধক জেনারেলের কার্যালয় থেকে ইন্টারনেটে নাগরিকদের তথ্য ছড়ানোর পর দেখা দেয় সার্ভার জটিলতা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সার্ভার বন্ধ এবং ‘ডাউন’ থাকার ফলে জন্মসনদ পেতে ব্যাপক ভোগান্তি ও হয়রানি পোহাতে হয়। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সরেজমিন নাগরিকদের ভোগান্তি পোহাতে দেখা যায়। বিশেষ করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) আওতাধীন এলাকার বাসিন্দাদের অবস্থা বেশ নাজেহাল। যদিও প্রক্রিয়া সহজ করতে আঞ্চলিক কার্যালয়ের বদলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে জন্মসনদ নেওয়ার একটি প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে চালু করেছে ডিএনসিসি। এই প্রক্রিয়ায় ওয়ার্ড কাউন্সিলর জন্ম নিবন্ধন সনদ ইস্যু করছেন। এ জন্য বিডিআরআইসি ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রথমে নিবন্ধন করতে জন্মসনদের কপি প্রিন্ট করতে হয়। তারপর সেই প্রিন্টেড কপিতে স্বাক্ষর করেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর। তবে সার্ভার জটিলতায় এই প্রক্রিয়াও বিঘ্ন হচ্ছে। এ জন্য সেবাপ্রত্যাশীদের কোনো কম্পিউটার দোকানে গিয়ে প্রিন্টেড কপি নিয়ে আসতে বলা হচ্ছে ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয় থেকে; কিন্তু দোকানগুলোতে সার্ভার ডাউন বা স্লো থাকার কারণে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কোনো কোনো আবেদনকারী সব ধাপ সম্পন্ন করে যখন ‘ওয়ান টাইম পাসপোর্ট’ (ওটিপি) এর ধাপে যান তখন সার্ভার থেকে আর কোনো সাড়া পান না। ডিএনসিসি ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, দুই দিন ধরে চেষ্টা করছি; কিন্তু এখনো জন্মসনদ পাইনি। কাউন্সিলর অফিস থেকে বলেছে কোনোভাবে যদি প্রিন্টেড কপি আনতে পারি, তাহলে কাউন্সিলর সিল ও স্বাক্ষর করে দেবেন। একবার ওটিপি পর্যন্ত যেতে পেরেছি সার্ভারে। আরেকবার সব করে যখন ‘সাবমিট’-এ দিয়েছি তখন সার্ভার দেখাচ্ছে ‘টাইম আউট’। ভোগান্তির পরিমাণ এতটাই বৃদ্ধি পায় যে, ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানান। এমনকি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীন এ প্রতিষ্ঠানটির কারিগরি উন্নয়নে এগিয়ে আসতে হয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগকে। আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের উপস্থিতিতেও দফায় দফায় সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সার্ভারজনিত নাগরিকদের ভোগান্তির বিষয়টি আমলে নিতে চান না রেজিস্ট্রার জেনারেল রাশেদুল হাসান। এর আগেও তথ্য ফাঁসের ঘটনার বিষয়টিও প্রথমে অস্বীকার করে এড়িয়ে যেতে চেয়েছিলেন এই কর্মকর্তা। সার্ভার জটিলতা নিয়ে জানতে চাইলে কালবেলাকে তিনি বলেন, কোথাও সার্ভার জটিলতা নেই। সব ঠিক আছে। এ বিষয়ে ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন বলেন, নাগরিকরা যেন সহজে সেবা পান, সেজন্য জন্মসনদের বিষয়টি মেয়র বিকেন্দ্রীকরণ করেছেন। আগে শুধু ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে জন্মনিবন্ধন করা যেত। সেবাটি সহজ করার জন্য আঞ্চলিক কার্যালয়ের বদলে এখন ওয়ার্ড কার্যালয় থেকে সনদ প্রদান করা হচ্ছে। বর্তমানে নগরবাসী খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে সনদ সংগ্রহ করতে পারছেন। কেউ কেউ জানাচ্ছেন, আবেদন করতে সার্ভারে কিছুটা সময় লাগছে। আসলে এই সার্ভারটি সিটি করপোরেশন রক্ষণাবেক্ষণ করে না। সিটি করপোরেশন সার্ভারটির ব্যবহারকারী। ডিএসসিসির ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির বলেন, আমাদের সার্ভারের কারণে মানুষকে আর ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না। ওখানে সার্ভার স্লো, সার্ভার ডাউন বলে মাসের পর মাস মানুষ ঘুরত। আমাদের এখানে আসছে, সর্বাধিক দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমরা জনগণকে সনদ করে দিচ্ছি। সর্বোচ্চ দুদিনের মধ্যেই সনদ পাচ্ছেন। জন্ম-মৃত্যু সার্ভার সম্পর্কে জানতে চাইলে আইসিটি বিভাগের সচিব সামসুল আরেফিন কালবেলাকে বলেন, এই সিস্টেমের কারিগরি সহায়তা এখন এনটিএমসিই দেবে। এরই মধ্যে এনটিএমসিকে বিডিআরআইএসের যাবতীয় দায়িত্ব নিতে এনটিএমসিকে চিঠি দিয়েছে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়। রেজিস্ট্রার জেনারেল রাশেদুল হাসান স্বাক্ষরিত চিঠিটি গত ৩১ অক্টোবর তারিখে ইস্যু করা হয় বলে কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন এনটিএমসি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান।
০৮ নভেম্বর, ২০২৩

কমলগঞ্জে সার্ভার জটিলতায় জন্মনিবন্ধনে স্থবিরতা
ইউনিয়ন ও পৌরসভার সার্ভারে ত্রুটি এবং মারাত্মক ধীরগতির কারণে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম ভোগান্তিতে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। সার্ভার সমস্যায় একাধিকবার ফির টাকা কেটে নিলেও জন্মনিবন্ধন ও জন্মনিবন্ধন সংশোধন করতে পারছেন না অনেকেই। সরেজমিন কমলগঞ্জের একটি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়ন ঘুরে পৌর মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় দেড় মাস ধরে এ সমস্যা চলছে। স্কুলশিক্ষক সৈয়দ হারুন শিপু বলেন, শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি কার্ড করতে, পাসপোর্ট করতে আগে জন্মনিবন্ধন করতে হয়। আর গত দেড় মাস ধরে ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রে বারবার গেলেও সার্ভার সমস্যায় জন্মনিবন্ধন করতে পারছে না।  ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম খান বলেন, জমি ক্রয়-বিক্রয় কাজে, নতুন ভোটার হতে ও ভোটার কার্ড সংশোধন করার সময় আগে জন্মনিবন্ধন কার্ড করে নিতে হয়। যাদের আগে ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন করা হয়নি তারা ইউনিয়ন ও পৌরসভার তথ্যকেন্দ্রে গিয়ে সার্ভার সমস্যায় তা করতে পারছেন না। কমলগঞ্জের শমশেরনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জুয়েল আহমদ, পতনঊষার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অলি আহমদ খান ও আলীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নিয়াজ মুর্শেদ রাজু সার্ভার সমস্যার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মাঝে মাঝে সার্ভারের গতি বাড়ে তখন দুই একটি জন্মনিবন্ধন কার্ড করা সম্ভব হয়। আবার কোনোদিন একটিও করা যায় না। শমশেরনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জুয়েল আহমদ আরও বলেন, জন্মনিবন্ধন আবেদনকালে ফির টাকা পরিশোধ করার পর আবার সার্ভার ডাউন হলে সে টাকা আর ফেরত পাওয়া যায় না। অনেক গ্রাহকের একাধিকবার ফির টাকা খোয়া গেছে।   এ সমস্যার সত্যতা নিশ্চিত করে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘এটি দেশব্যাপী সমস্যা। সম্প্রতি জন্মনিবন্ধন দিবস পালনকালে জনপ্রতিনিধিরা এ নিয়ে নানা অভিযোগ করেছেন। যেহেতু এটি দেশব্যাপী সমস্যা তাই আশা করা যায়, দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’  
০৬ নভেম্বর, ২০২৩

এনআইডি সার্ভার চালু
চালু হলো জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সার্ভার। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে নির্বাচন কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সার্ভার রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য বুধবার দুপুর ২টা পর্যন্ত এনআইডিসংক্রান্ত সব ধরনের সেবা বন্ধ থাকার কথা ছিল।  গতকাল মঙ্গলবার নিরাপত্তা প্রশ্নে সার্ভারটি বন্ধ করা হয় বলে জানিয়েছিলেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ূন কবীর।   এর আগে সাইবার হামলার শঙ্কায় ১৪ আগস্ট রাত ১২টায় এনআইডি সার্ভার বন্ধ করা হয়েছিল। টানা ৩৮ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ১৬ আগস্ট দুপুর আড়াইটায় আবার চালু করা হয়। ওইদিন এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) হুমায়ুন কবীর বলেছিলেন, সাইবার হামলার শঙ্কা থেকে ১৪ আগস্ট রাত ১২টায় সার্ভার বন্ধ করা হয়। যদিও আগে থেকেই ১৭১টি প্রতিষ্ঠানকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হবে- এমন শঙ্কায় ব্যক্তি পর্যায়ে জানানো হয়নি। দেশের প্রায় ১২ কোটি নাগরিকের ব্যক্তিগত বিভিন্ন তথ্য রয়েছে এনআইডি সার্ভারে। কিন্তু এখন পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই তথ্যভাণ্ডারের কোনো ডিজাস্টার রিকভারি সাইট (ডিআরএস) বা যথাযথ ব্যাকআপ (বিকল্প সংরক্ষণ ব্যবস্থা) নেই। ডিআরএস না থাকায় জাতীয় এই তথ্যভাণ্ডার অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সম্প্রতি ইসির তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ কমিটির একটি বৈঠকেও বিষয়টি উঠে আসে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এনআইডির তথ্যভাণ্ডারে প্রায় ১২ কোটি ভোটারের কমবেশি ৩০ ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য আছে। ১৭১টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইসির এই তথ্যভাণ্ডার থেকে প্রতিনিয়ত তথ্য যাচাইসংক্রান্ত সেবা নিচ্ছে। সম্প্রতি রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের ওয়েবসাইট থেকে সম্প্রতি লাখ লাখ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়। এরপর দেশে ডিজিটাল তথ্য ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়টি আলোচনায় আসে।
২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

সার্ভার নয় কার্ড জালিয়াতি হয়েছে- বিএমইটি ডিজি
বিএমইটির সার্ভার জালিয়াতি হয়নি বলে জানিয়েছেন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক শহীদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ডিজিটালাইজেশন ও কড়াকড়ির ফলে সার্ভার জালিয়াতির সুযোগ নেই। প্রতারক চক্র কার্ড জালিয়াতি করে সংস্থার সুনাম নষ্ট করেছে। গত জুনের শেষে বিএমইটির সার্ভার জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সম্পর্কে এ কথা বলেন তিনি। কালবেলাকে শহীদুল ইসলাম জানান, বিএমইটি থেকে স্মার্টকার্ড পাওয়ার শর্ত হচ্ছে কর্মসংস্থান ভিসা। বিএমইটি বৈধ ভিসা না থাকলে কাউকে বিদেশে পাঠাতে পারে না। তবে যেসব দেশের ভিসা অনলাইনে আপলোড করা থাকে না সেক্ষেত্রে বৈধতা যাচাইয়ের সুযোগ থাকে না। সে সুযোগে প্রতারক চক্র অবৈধ ভিসা দেখিয়ে প্রতারণা করার জন্য বিকল্প কার্ড তৈরি করে অবৈধভাবে বিদেশে লোক পাঠায়। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটির) জাল কার্ড এবং জাল ভিসা তৈরি করে প্রতারণা মামলায় গত শুক্রবার তিনজন গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। এর মধ্যে দুজন নিজেদের অপরাধ ঢাকতে লিঙ্গ পরিবর্তন করেছে বলে জানিয়েছে ডিবি।
১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

সার্ভার জালিয়াত চক্রের বিরুদ্ধে বিএমইটির মামলা
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) সার্ভার ব্যবহার করে বিদেশে যাওয়ার ছাড়পত্রের ভুয়া স্মার্ট কার্ড ইস্যু করছে একটি চক্র। গত জুনের শেষ দিকে ঘটা এ জালিয়াতির মাধ্যমে এক এজেন্সির নামে কার্ড তৈরি করে কর্মী পাঠিয়েছে অন্য এজেন্সি। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই প্রতিষ্ঠান মালিকের বিরুদ্ধে গত ১৩ আগস্ট মতিঝিল থানায় মামলা করেছেন বিএমইটির সহকারী পরিচালক জান্নাতুল ফিরদাউস। অভিযুক্তরা হলেন আল মামুন ওভারসিজের মালিক মোশারফ হোসেন পাটোয়ারী স্বপন ও কিউ কে কুইক এক্সপ্রেসের পরিচালক রবিউল ইসলাম রবিন। সূত্র জানায়, একটি মালয়েশিয়ান প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১৫০ জন কর্মী পাঠানোর কাজ পায় আল মামুন ওভারসিজ এজেন্সি। তবে এজেন্সিটি সেদেশের সরকারি তালিকাভুক্ত না হওয়ায় আলহেরা ওভারসিজের নামে এসব কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্র ইস্যু করা হয়। পরে গত জুনের শেষ দিকে আলহেরা ওভারসিজকে পাশ কাটিয়ে বিএমইটির ইমিগ্রেশনের অসাধু কর্মকর্তা ও রবিউল ইসলাম রবিনের যোগসাজশে সার্ভার জালিয়াতির আশ্রয় নেয় আল মামুন ওভারসিজ। আল খামিজ ইন্টারন্যাশনাল নামের আরেক প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে বহির্গমন ছাড়পত্র সংগ্রহ করে ১২০ জন কর্মীকে মালয়েশিয়া পাঠায় আল মামুন ওভারসিজ। এ ঘটনা সামনে এলে গত ৯ জুলাই প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন আল খামিজের মালিক ফরিদ আহমদ। অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে মন্ত্রণালয়। এ প্রসঙ্গে জান্নাতুল ফিরদাউস বলেন, বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইনে মামলা করা হয়েছে। এ ধরনের অপরাধের জন্য পাঁচ থেকে সাত বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। এ ছাড়া চার্জশিটের পর্যায়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৬৭, ৪৬৮, ৪২০ যুক্ত করা হবে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মতিঝিল থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তরা বিদেশে পলাতক।
১৮ আগস্ট, ২০২৩

সাইবার হামলা মোকাবিলা / সার্ভার বন্ধের বদলে সক্ষমতা বৃদ্ধির তাগিদ বিশেষজ্ঞদের
সাম্প্রতিক সময়ে সাইবার হামলার আশঙ্কায় সার্ভার বা ওয়েবসাইট বন্ধ রাখতে দেখা গেছে বেশকিছু সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে। এতে সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় বিপাকে পড়ে সাধারণ মানুষ। তবে হামলা এড়াতে সার্ভার বন্ধ রাখা কোনো সমাধান নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বরং দীর্ঘমেয়াদে সাইবার নিরাপত্তা সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ দেশের সাইবার স্পেস সুরক্ষিত ও নিরাপদ রাখতে সরকারের বাজেট বাড়ানোর পরামর্শও দিয়েছেন তারা। গত ৪ আগস্ট বাংলাদেশের সাইবার স্পেসে বড় ধরনের আক্রমণ পরিচালনার হুমকি দেয় একটি হ্যাকার গোষ্ঠী। আক্রমণের তারিখ উল্লেখ করা হয় ১৫ আগস্ট। এমন প্রেক্ষাপটে ১৪ আগস্টের আগেই সার্ভার বা ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সুরক্ষা প্ল্যাটফর্ম, নির্বাচন কমিশন ও কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র শাখাসহ বেশ কয়েকটি সরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান। তবে সতর্কতার মধ্যেই ডিস্ট্রিবিউটেড ডেনায়েল অব সার্ভিস বা ডিডস আক্রমণের শিকার হয় কয়েকটি বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট। ফলে ব্যাহত হয় বিভিন্ন ধরনের সেবা কার্যক্রম। কেন এমন আক্রমণ : কিন্তু কেন এসব সাইবার হামলা করা হয়? জানা গেছে, কোনো কম্পিউটার সিস্টেম দখলে নেওয়া বা তথ্য চুরি অথবা সিস্টেমকে অচল করতে বিভিন্ন ধরনের সাইবার হামলা চালায় অপরাধীরা। এর পেছনে থাকে সুনির্দিষ্ট কিছু উদ্দেশ্য। এ প্রসঙ্গে একজন এথিক্যাল হ্যাকার কালবেলাকে বলেন, হ্যাকিংয়ের প্রধান উদ্দেশ্য থাকে কোনো কম্পিউটার সিস্টেম ও সিস্টেমের তথ্যের দখল নেওয়া। এসব তথ্য নিয়ে ডার্ক ওয়েবে চড়া দামে বিক্রি করাই হামলার উদ্দেশ্য। আরেক ধরনের সাইবার হামলা ‘র্যান্সামওয়্যার’। হ্যাকার সিস্টেমে প্রবেশ করে ডাটা ‘এনক্রিপট’ করে দেয়। ফলে মূল মালিক আর সেগুলোর ‘এক্সেস’ নিতে পারে না। এ অবস্থায় ব্যাকআপ না থাকলে সিস্টেমের মালিক হ্যাকারদের টাকা দিয়ে ডাটা ফিরিয়ে আনবে; অথবা ডাটা হারাবে। দেশে বেশ কয়েক বছর ধরে এ ধরনের হামলার প্রবণতা বেড়েছে। ডিডস আক্রমণ নিয়ে এ হ্যাকার বলেন, ডিডস আক্রমণ মূলত হয় কোনো সিস্টেমকে ‘ডাউন’ রাখার জন্য। ডার্ক ওয়েবে হ্যাকারদের মধ্যে বিভিন্ন কমিউনিটিতে রেটিংয়ের প্রতিযোগিতা চলে। সেখানে এগুলোর রেটিং যুক্ত হয়। আবার যখন এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের হ্যাকার কমিউনিটির কোনো সমস্যা হয়, তখনো একে অপরের দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় এ ধরনের হামলা করে। অনেক সময় সাময়িকভাবে সেসব সিস্টেমের দখলও নিয়ে নেয় তারা। বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন : তবে সাইবার হামলার আশঙ্কায় ওয়েবসাইট বা সার্ভার বন্ধ রাখা কোনো সমাধান নয় বলে মনে করেন সাইবার নিরাপত্তা এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সাময়িকভাবে এটা করা হলেও আগামীতে সিস্টেম বন্ধ রেখেও সাইবার জগৎ নিরাপদ রাখা যাবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন বলেন, হামলার ভয়ে আপনি যদি সিস্টেম বন্ধ রাখেন, তার মানে এই না যে আপনি নিরাপদ। সাইবার নিরাপত্তার যে বিষয়গুলো আছে, তার মধ্যে এটাও আছে যে, আপনার সিস্টেম নিরবচ্ছিন্নভাবে সচল থাকতে হবে। তবে আমাদের দেশে এ ধরনের পরিস্থিতি যেহেতু নতুন, তাই সবাই একটু বেশিই সজাগ। এজন্যই হয়তো বন্ধ রাখছে। একই কথা বলছেন খোদ ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির (ডিএসএ) মহাপরিচালক আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, এটা করা হয়েছে অস্থায়ীভাবে, ওই সময়টুকু মোকাবিলার জন্য। সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের দেশের চর্চা ও সংস্কৃতিতে নতুন। আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। সাইবার নিরাপত্তায় মানুষ আপডেটেড থাকবে, আধুনিক প্রযুক্তি সফটওয়্যার এবং বিশেষ করে সিকিউরিটি সফটওয়্যার থাকবে, সেগুলো সময়ের সঙ্গে আপডেট করতে হবে। সরকারি সিস্টেমের সুরক্ষায় সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত ইমেইলের বদলে সরকারি ডোমেইনের ইমেইল ব্যবহার, সরকারি ডিভাইস ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার না করা বা ব্যক্তিগত ডিভাইস সরকারি ডিভাইসের সঙ্গে যুক্ত না করার মতো নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে বলেও জানান তিনি। বেসিসের সাবেক প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, সাইবার নিরাপত্তায় কিছু আন্তর্জাতিক নীতিমালা এবং আইএসও স্ট্যান্ডার্ড নির্ধারিত কিছু নির্দেশনা আছে। আমাদের দেশে এখনো সেগুলোর প্রতিপালন হচ্ছে না। এখনো অনেক সরকারি দপ্তরে গেলে সচিব পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও দেখবেন তাদের সরকারি ডিভাইসে ব্যক্তিগত ডিভাইস ব্যবহার করছে। আবার সরকারি ডোমেইনের ইমেইল ঠিকানার বদলে এখনো জিমেইল বা ইয়াহুর মতো ব্যক্তিগত ইমেইল ব্যবহার করছে। এসব পরিবর্তন করতে হবে। সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষক আব্দুল্লাহ আল জাবের কালবেলাকে বলেন, এখনো অনেক সরকারি দপ্তরে লাইসেন্সবিহীন বা ক্র্যাক দেওয়া সফটওয়্যার ব্যবহার হতে দেখা যায়। এমনকি অপারেটিং সিস্টেম, যেটা দিয়ে একটা কম্পিউটার চলে, সেটাও পাইরেটেড থাকে। এতে করে ওই কম্পিউটার সিস্টেম বা ওই নির্দিষ্ট সফটওয়্যার সিকিউরিটি আপডেট পায় না। এর সুযোগ নিয়ে হ্যাকাররা সিস্টেমে প্রবেশ করে। তবে সম্প্রতি আইসিটি প্রতিমন্ত্রী সরকারি ডিভাইসে আসল সফটওয়্যার ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই। সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ও ব্যাকডোর প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর হাসান জোহা বলেন, ডিডস আক্রমণ বন্ধ করতে হলে চতুর্থ প্রজন্মের ডিডস প্রটেকশন সলিউশন ব্যবহার করতে হবে। এগুলো বেশ ব্যয়বহুল। অনেক সরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের এই বাজেট থাকে না। পাশাপাশি আমাদের নিজস্ব সাইবার স্পেস নিরাপদ রাখতে হলে একটা ‘সাইবার আর্মি’র প্রয়োজনীয়তা এখন অনেক বেশি। সবমিলিয়ে সাইবার নিরাপত্তায় সরকারের বাজেট বাড়াতে হবে। ঢাবির অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন বলেন, বড় ধরনের সাইবার আক্রমণ বা হ্যাকিং করা এতটাও সোজা না। যদিও কোনো ব্যবস্থাই শতভাগ নিরাপদ না বা কেউ বলতে পারবে না যে, তার সিস্টেমে কোনো সফল আক্রমণ হবে না। তবুও আপনার যদি শক্ত প্রতিরোধী ব্যবস্থা থাকে, আপনি যদি সব প্রমিত বিষয় মেনে চলেন তাহলে কাজটা বেশ কঠিন। আমাদের পর্যাপ্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষ করে প্রযুক্তিগত সমাধানে জোর দিতে হবে। তবে বিষয়টা ব্যয়বহুল। তারপরও তথ্য চুরি হওয়া বা সিস্টেম অন্যের দখলে গেলে এর থেকে অনেক বেশি খরচের মাশুল দিতে হতে পারে। তাই এ খাতে সরকারের উচিত বিনিয়োগ করা, বাজেট বাড়ানো।
১৮ আগস্ট, ২০২৩
X