সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন সম্মাননা পেলেন ২৫ গুণীজন
সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য ১২টি বিভাগে ‌‌‘এনআরবি ও পিবিও সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন সম্মাননা’ পেলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাস করা ২৫ জন গুণী ব্যক্তি।  শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে এই বিশেষ সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।  সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো তিন দিনব্যাপী প্রথম ‘এনআরব, পিবিও সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন ২০২৪’ আয়োজন করা হয়। এতে সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে বাংলা একাডেমি। সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য পবিত্র সরকার, মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক ড. নুরুন নবী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশন ও স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী দিলারা আফরোজ খান রূপা। অনাবাসী বাংলাদেশি (এনআরবি) ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত (পিবিও) কবি-সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিককর্মীদের সাহিত্যকর্ম নিয়ে তিন দিনব্যাপী এনআরবি-পিবিও সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন শুরু হয় গত বৃহস্পতিবার। আজ ছিল সমাপনী দিন। সমাপনী অনুষ্ঠানে সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশনরে প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এম ই চৌধুরী শামীম বলেন, এখন থেকে এনআরবি-পিবিও সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। প্রবাসীদের শিল্পকর্ম, সাহিত্য দেশে উপস্থাপন করা ও স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য এই সম্মেলনের আয়োজন। প্রবাসীদের জন্য আমাদের দায় আছে। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। ভারত, চায়না, জাপান, সিঙ্গাপুর প্রবাসীদের নানাভাবে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগিয়েছে। আমরা পারিনি। এখন থেকে প্রবাসীদের আরও বেশি দেশের কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিতে হবে। অনুষ্ঠানে দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। হাসান আল আবদুল্লাহর লেখা আমার প্রিয় কবিতা ও হাসান ফেরদৌসের লেখা কাপুরুষ ও সালভাদর দালির ‘মিস বাংলাদেশ’। অনুষ্ঠানে পুরস্কার পাওয়া ব্যক্তিদের সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে নানা অবদানের কথা তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন তানভীর আলম সজীব। যারা সম্মাননা পেলেন : কথাসাহিত্য-সামগ্রিক অবদানে ড. আবদুন্ নূর, সাংবাদিকতা-সামগ্রিক অবদানে সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ ও রোকেয়া হায়দার, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় ড. নুরুন নবী ও তাজুল মোহাম্মদ, শিল্প-সংস্কৃতি-সামগ্রিক অবদানে অধ্যাপক ড. পবিত্র সরকার, রতন বসু মজুমদার, এস এম নুরুল আলম ও সেলিমা আশরাফ, চিত্রকলা-সামগ্রিক অবদানে শিল্পী মনিরুল ইসলাম, নাটক-সামগ্রিক অবদানে ঝর্ণা চৌধুরী, কবিতায় শামস আল মমীন, শিল্প-সংস্কৃতিতে শামস আহমেদ, চিত্রকলায় তাজুল ইমাম, সাংবাদিকতায় সৈয়দ নাহাজ পাশা, নাটকে গোলাম সারওয়ার হারুন, সংগঠক হিসেবে কিরণময় মণ্ডল, গৌরী চৌধুরী, আহমেদ হোসেন, সিরাজুস সালেকিন ও কামরুন জিনিয়া, অনুবাদ সাহিত্যে আনিসুজ জামান, প্রবন্ধ/ গবেষণায় প্রবীর বিকাশ সরকার, বিদেশিদের বাংলাভাষায় সাহিত্য রচনায় অবদানে নাওমি ওয়াতানাবে, প্রবাসী লেখকদের গ্রন্থ প্রকাশে অবদানের জন্য ওসমান গনি (আগামী প্রকাশনী)।  
২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

শুরু হলো প্রথম এনআরবি-পিবিও সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন
অনাবাসী বাংলাদেশি (এনআরবি) ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত (পিবিও) কবি-সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিককর্মীদের সাহিত্যকর্ম নিয়ে শুরু হলো তিন দিনব্যাপী এনআরবি-পিবিও সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন।  বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশন ও স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির আয়োজনে ও বাংলা একাডেমির সহযোগিতায় শুরু হয় এই সম্মেলন।  অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী (কবি কামাল চৌধুরী)।  উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনির।  বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্তিত ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক পবিত্র সরকার, শিল্পী মনিরুল ইসলাম, লেখক, মুক্তিযোদ্ধা ও বিজ্ঞানী ড. নূরুন নবী, যুক্তরাষ্ট্রের টেম্পল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সুচরিতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।  উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, আমি আসলে প্রবাসী শব্দটা ব্যবহার করতে চাই না, তারা আমাদের স্বজন। বাংলা ভাষার চর্চা নিয়ে অনেক আলোচনা হয় কিন্তু তেমন প্রয়োগ হয় না। প্রবাসীদের নিয়ে সাহিত্য সম্মেলনসহ বিভিন্ন কাজ করায় আমি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই। খলিল আহমদ বলেন, প্রবাসীদের এমন সাহিত্য সম্মেলনের আয়োজন সত্যিই প্রশংসনীয়। প্রবাসীদের সৃজনশীল কাজ তুলে ধরা মহৎ কাজ। বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তাদের অভিজ্ঞতা বই আকারে তুলে ধরা যেতে পারে। তিনি এনআরবি স্কলার্স পাবলিশার্সের ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন। অধ্যাপক ড. পবিত্র সরকার বলেন, নিজের দেশকে বুকের মধ্যে রেখে চলতে হবে। পৃথিবীর অন্য কেনো দেশে প্রবাসীদের নিয়ে এমন কোনো সংগঠন আছে কি না আমার জানা নেই। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ অগ্রগণ্য। এই সম্মেলনে এসে আমি জীবনের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেলাম। বাংলাদেশের যে কোনো অনুষ্ঠানে আসার জন্য আমি সবসময় এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকি। রামেন্দু মজুমদার বলেন, প্রথম এই সাহিত্য ও সংস্কৃতির সম্মেলন আয়োজনে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। প্রবাসে থেকে যারা লেখালেখি করেন তারা প্রত্যেকেই হৃদয়ে লালন করেন এক টুকরো বাংলাদেশ। দেশের বাইরে যারা দেশকে নিয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছেন তাদের আজ সম্মাননা দেওয়া হলো, তাদের অভিনন্দন জানাই। এরপরের দিনে যাদের সম্মাননা দেওয়া হবে তাদের অগ্রিম অভিনন্দন। এই সম্মাননায় বাংলাদেশের অন্যান্য শিল্পী-সাহিত্যিকদেরও যুক্ত করা উচিত বলে আমার মনে হয়, যাতে করে সবার মধ্যে একটা মেলবন্ধন তৈরি হয়।  তিনি আরও বলেন, একসময় আমাদের বাংলাদেশি সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আহ্বানে দেশের বাইরে বঙ্গবন্ধু কালচারাল সেন্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠান করার প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম। কিন্তু এটা পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি টানাপড়েনের কারণে থেমে যায়। অথচ এটি আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজন এবং সময়োপযোগী। এটার মাধ্যমে দেশের সংস্কৃতিকে বিদেশে তুলে ধরা যাবে। সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এম ই চৌধুরী শামীম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন। প্রথম এই এনআরবি/পিবিও সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্মেলনের ঘোষণা পাঠ করেন সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশন ও স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী দিলারা আফরোজ খান রূপা।  অনুষ্ঠানে দুটি বইয়ের মোড়কগ্রন্থ উন্মোচন হয়। একটি শামসুর রাহমানের প্রিয় কবিতা ও আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর সময়ের ঘড়ি। তিন দিনব্যাপী এনআরবি-পিবিও সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন চলবে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ২৩ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দিনে দুই অধিবেশনে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।  প্রথম অধিবেশন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলবে। পরের অধিবেশন চলবে বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালে স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটি এবং সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সংগঠন দুটির এনআরবি-পিবিওদের (নন-রেসিডেন্স বাংলাদেশ/পিপল অব বাংলাদেশি অরিজিন) শিকড়ের সঙ্গে সংযুক্ত করার প্রচেষ্টার একটি গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে।  এই ২০ বছরে সংগঠনটি তাদের অন্যতম সেতু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ২০০৫, ২০০৭ ও ২০০৯ সালের সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশে এনআরবি, পিবিও শব্দ দুটি ব্যাপক পরিচিতি পায়। যার একটি শব্দ অনাবাসী বাংলাদেশি (এনআরবি) ও অপর শব্দটি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিদেশি নাগরিক (পিবিও)। এই সম্মেলনের মাধ্যমেই জনতা ব্যাংক এনআরবি শাখা, দেশের ৩টি এনআরবি ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা পায়। সংগঠনটির দীর্ঘ প্রচেষ্টায় ৩০ ডিসেম্বর প্রবাসী বাংলাদেশি দিবস (এনআরবি ডে) জাতীয় প্রবাসী দিবসে রূপ পায়।
২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X