ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৫৯ পিএম
আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:১০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

শুরু হলো প্রথম এনআরবি-পিবিও সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন

ছবি : সৌজন্য
ছবি : সৌজন্য

অনাবাসী বাংলাদেশি (এনআরবি) ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত (পিবিও) কবি-সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিককর্মীদের সাহিত্যকর্ম নিয়ে শুরু হলো তিন দিনব্যাপী এনআরবি-পিবিও সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন।

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশন ও স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির আয়োজনে ও বাংলা একাডেমির সহযোগিতায় শুরু হয় এই সম্মেলন।

অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী (কবি কামাল চৌধুরী)।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনির।

বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্তিত ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক পবিত্র সরকার, শিল্পী মনিরুল ইসলাম, লেখক, মুক্তিযোদ্ধা ও বিজ্ঞানী ড. নূরুন নবী, যুক্তরাষ্ট্রের টেম্পল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সুচরিতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।

উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, আমি আসলে প্রবাসী শব্দটা ব্যবহার করতে চাই না, তারা আমাদের স্বজন। বাংলা ভাষার চর্চা নিয়ে অনেক আলোচনা হয় কিন্তু তেমন প্রয়োগ হয় না। প্রবাসীদের নিয়ে সাহিত্য সম্মেলনসহ বিভিন্ন কাজ করায় আমি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই।

খলিল আহমদ বলেন, প্রবাসীদের এমন সাহিত্য সম্মেলনের আয়োজন সত্যিই প্রশংসনীয়। প্রবাসীদের সৃজনশীল কাজ তুলে ধরা মহৎ কাজ। বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তাদের অভিজ্ঞতা বই আকারে তুলে ধরা যেতে পারে। তিনি এনআরবি স্কলার্স পাবলিশার্সের ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন।

অধ্যাপক ড. পবিত্র সরকার বলেন, নিজের দেশকে বুকের মধ্যে রেখে চলতে হবে। পৃথিবীর অন্য কেনো দেশে প্রবাসীদের নিয়ে এমন কোনো সংগঠন আছে কি না আমার জানা নেই। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ অগ্রগণ্য। এই সম্মেলনে এসে আমি জীবনের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেলাম। বাংলাদেশের যে কোনো অনুষ্ঠানে আসার জন্য আমি সবসময় এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকি।

রামেন্দু মজুমদার বলেন, প্রথম এই সাহিত্য ও সংস্কৃতির সম্মেলন আয়োজনে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। প্রবাসে থেকে যারা লেখালেখি করেন তারা প্রত্যেকেই হৃদয়ে লালন করেন এক টুকরো বাংলাদেশ। দেশের বাইরে যারা দেশকে নিয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছেন তাদের আজ সম্মাননা দেওয়া হলো, তাদের অভিনন্দন জানাই। এরপরের দিনে যাদের সম্মাননা দেওয়া হবে তাদের অগ্রিম অভিনন্দন। এই সম্মাননায় বাংলাদেশের অন্যান্য শিল্পী-সাহিত্যিকদেরও যুক্ত করা উচিত বলে আমার মনে হয়, যাতে করে সবার মধ্যে একটা মেলবন্ধন তৈরি হয়।

তিনি আরও বলেন, একসময় আমাদের বাংলাদেশি সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আহ্বানে দেশের বাইরে বঙ্গবন্ধু কালচারাল সেন্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠান করার প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম। কিন্তু এটা পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি টানাপড়েনের কারণে থেমে যায়। অথচ এটি আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজন এবং সময়োপযোগী। এটার মাধ্যমে দেশের সংস্কৃতিকে বিদেশে তুলে ধরা যাবে।

সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এম ই চৌধুরী শামীম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন।

প্রথম এই এনআরবি/পিবিও সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্মেলনের ঘোষণা পাঠ করেন সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশন ও স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী দিলারা আফরোজ খান রূপা।

অনুষ্ঠানে দুটি বইয়ের মোড়কগ্রন্থ উন্মোচন হয়। একটি শামসুর রাহমানের প্রিয় কবিতা ও আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর সময়ের ঘড়ি।

তিন দিনব্যাপী এনআরবি-পিবিও সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন চলবে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ২৩ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দিনে দুই অধিবেশনে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

প্রথম অধিবেশন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলবে। পরের অধিবেশন চলবে বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে।

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালে স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটি এবং সেন্টার ফর এনআরবি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সংগঠন দুটির এনআরবি-পিবিওদের (নন-রেসিডেন্স বাংলাদেশ/পিপল অব বাংলাদেশি অরিজিন) শিকড়ের সঙ্গে সংযুক্ত করার প্রচেষ্টার একটি গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে।

এই ২০ বছরে সংগঠনটি তাদের অন্যতম সেতু হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ২০০৫, ২০০৭ ও ২০০৯ সালের সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশে এনআরবি, পিবিও শব্দ দুটি ব্যাপক পরিচিতি পায়। যার একটি শব্দ অনাবাসী বাংলাদেশি (এনআরবি) ও অপর শব্দটি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিদেশি নাগরিক (পিবিও)।

এই সম্মেলনের মাধ্যমেই জনতা ব্যাংক এনআরবি শাখা, দেশের ৩টি এনআরবি ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা পায়। সংগঠনটির দীর্ঘ প্রচেষ্টায় ৩০ ডিসেম্বর প্রবাসী বাংলাদেশি দিবস (এনআরবি ডে) জাতীয় প্রবাসী দিবসে রূপ পায়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দুই-তৃতীয়াংশের বেশি সিট পেয়ে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে : ফজলুর রহমান

নেতাকর্মীদের ধৈর্যশীল আচরণের আহ্বান আমিনুল হকের 

বাংলাদেশ হবে বসবাস ও বিনিয়োগের স্বর্গ: আব্দুল মুক্তাদির

ঢাকায় অ্যাপোলো ক্লিনিকের যাত্রা শুরু

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামকে দেখতে হাসপাতালে ডা. রফিক

একাত্তরের ইস্যুর সমাধান চাইল এনসিপি

রাজধানীতে তামাকের বিরুদ্ধে ‘ইয়ুথ মার্চ’

বুড়িগঙ্গা নদী থেকে নারী-শিশুসহ ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার

ত্রিবার্ষিক সম্মেলন / আবারো জামালপুর জেলা বিএনপির নেতৃত্বে শামীম-মামুন

দাবি আদায় ছাড়া ঘরে না ফেরার ঘোষণা মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বস্তিবাসীর

১০

লিডসের বিরুদ্ধে আর্সেনালের গোল উৎসব

১১

আউটসোর্সিং কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষিত: জোনায়েদ সাকি

১২

এনসিপির কর্মকাণ্ডে ফিরছেন সারোয়ার তুষার

১৩

যৌথ বাহিনীর অভিযানে পিস্তলসহ যুবক গ্রেপ্তার 

১৪

সাংবাদিকের বাড়িতে চুরি, স্বর্ণালংকারসহ ৫ লাখ টাকার ক্ষতি

১৫

৪৫ বছর ভাত না খেয়েও সুস্থ ও সবল বিপ্লব

১৬

চেতনানাশক খাইয়ে দুধর্ষ ডাকাতি

১৭

রংপুর বিভাগের ৩৩ আসনে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী ঘোষণা

১৮

প্রার্থিতা প্রত্যাহার নিয়ে ছাত্রদলের নির্দেশনা, না মানলে ব্যবস্থা

১৯

নারী শিক্ষার্থীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে চাকরি খোয়ালেন বেরোবি সমন্বয়ক

২০
X