ছাত্রী হেনস্তার ঘটনায় উত্তাল নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়
শিক্ষক কর্তৃক নিজ বিভাগের ছাত্রীকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দোষীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বিভাগে তালা ঝুলিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিকবিজ্ঞান ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও মানববন্ধন করেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দিয়ে বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দেন।  এ সময় বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র, প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জি, বিভাগের অন্যান্য শিক্ষক ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। শিক্ষার্থীরা শুভ্র ও সাজন সাহার কক্ষের সামনের নামফলক ভেঙে পুড়িয়ে ফেলে ও বিভাগের নাম কালো কাপড়ে ঢেকে দেয়।  প্রায় আধাঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর প্রক্টরিয়াল বডির সহায়তায় বিভাগ থেকে বের হন বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র। এরপর সন্ধ্যায় মৌন মিছিল ও মোমবাতি প্রজ্বলন করেছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকদেরও মানসিক কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করা উচিত। না হলে মানসিকভাবে বিকৃত এমন শিক্ষকদের দ্বারা কখনোই মানসম্পন্ন শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত হবে না। আমরা এই ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকদের অনতিবিলম্বে বহিষ্কারের দাবি জানাই। নাহলে আরও কঠোর আন্দোলন হবে। এ ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ও সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. আতাউর রহমানকে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক, ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ও সিন্ডিকেট সদস্য উম্মে সালমা তানজিয়া ও শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের অধ্যক্ষ ও সিন্ডিকেট সদস্য ড. এ কে এম আব্দুর রফিককে তদন্ত কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।  এর আগে গত মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহার বিরুদ্ধে অনৈতিক প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় হয়রানি এবং বিভাগীয় প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রর বিরুদ্ধে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ জানিয়ে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন একই বিভাগের ভুক্তভোগী ঐ শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় দ্রুত বিচারের আশ্বাস জানান উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর।
০৬ মার্চ, ২০২৪

পাবিপ্রবির বাস চালককে হেনস্থা করায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) এক বাস ড্রাইভারকে মারধর ও হেনস্থা করার প্রতিবাদে শহরের আবদুল হামিদ রোড অবরোধ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ করে বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের মুখে পাবনা শহরে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীদের দাবি, সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের নিয়ে একটি বাস পাবনা শহরের ইন্দিরা মোড় হয়ে ক্যাম্পাস ফেরার সময় পান্তুয়া সুইটসের সামনে পার্কিং করা একটা অটো সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এ সময় ওই চালকের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চালকের কথা-কাটাকাটি হয় এবং স্থানীয় এক নেতা সমস্যাটি সমাধান করে দেন। কিন্তু ওই সময় পান্তুয়া সুইটসের ম্যানেজার নাসির উদ্দিন জ্যাকি বাসে উঠে বাসের চাবি কেড়ে নেয় এবং বাস ড্রাইভার আবুল কালামকে গালিগালাজ করেন। এসময় কয়েকজন মানুষ উত্তেজিত হয়ে বাস ড্রাইভারের গায়ে হাত তোলেন। এ বিষয়টা প্রশাসনকে জানানোর পরেও তারা বিষয়টি সমাধান করেননি। তাই এই ঘটনার সুষ্ঠু সমাধানের জন্য তারা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। বিক্ষোভের সময় রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী শরীয়ত উল্লাহ বলেন, পাবনা শহরে বিভিন্ন সময়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং বাস ড্রাইভারদেরকে হেনস্থা করা হয়। কিছু মানুষ শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম সম্মান দেন না। গতকালকে বাসের চাবি কেড়ে নিয়ে অপমান করা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই এবং আগামীতে এ ধরনের কোনো ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় আমরা প্রশাসনের কাছে সেই দাবি জানাই। গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সুরুজ মিয়া আপেল বলেন, গতকালকে যে ঘটনা ঘটেছে তার একটা সমাধানও হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে পান্তুয়া সুইটসের ম্যানেজার এসে বাসের চাবি নিয়ে যায় এবং বাস ড্রাইভারকে গালিগালাজ করেন। এটা আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য লজ্জাজনক বিষয়। কোন কারণে ওই ম্যানেজার এই কাজ করেছেন আমরা সেটার জবাব চাই। এর জন্য ম্যানেজারকে ক্ষমা চাইতে হবে না হলে আমরা রাস্তা ছাড়ব না। এই ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যে পাবনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম, পাবনা সদর থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কামাল হোসেন, সহকারী প্রক্টর ড. মাসুদ রানা, ইয়াহিয়া ব্যাপারী আকাশ, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবু, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের শান্ত করেন। পরে দুপুর ১টার দিকে শিক্ষার্থীদের চাপে পান্তুয়া সুইটসের ম্যানেজার নাসির উদ্দিন জ্যাকি শিক্ষার্থীদের সামনে বাস চালকের কাছে ক্ষমা চান এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের আচরণ করবেন না বলে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেন। পরে শিক্ষার্থীরা অবরোধ উঠিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে যান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পান্তুয়া সুইটসের ম্যানেজার নাসির উদ্দিন জ্যাকি গণমাধ্যমের সামনে কিছু বলতে রাজি হননি। পান্তুয়া সুইটসের মালিক মাহমুদুন নবী বলেন, আমি গতকালকে দোকানে ছিলাম না। যদি আমার ম্যানেজার এই ধরনের কোনো কাজে জড়িত থাকে তাহলে তাকে চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. কামাল হোসেন বলেন, গতকালকে ঘটনা ঘটার পর আমরা দোকানদার এবং বাস ড্রাইভারদের সঙ্গে কথা বলেছি। সেখানে একটা সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আজকে হঠাৎ করে শিক্ষার্থীরা শহরে এসে রাস্তা অবরোধ করেন। এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। আমরা জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে আগামীতে এ ধরনের কোনো ঘটনা যাতে না ঘটে আমরা সে চেষ্টা করব। পাবনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ছোট একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে, যেটা একেবারেই কাম্য ছিল না। শহরের রাস্তাগুলোর প্রশস্ততা কম হওয়াতে বেশিরভাগ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের কারণে শহরে জ্যাম তৈরি হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ড্রাইভারদের সঙ্গে অটো ও রিকশা ড্রাইভারদের সঙ্গে সমস্যা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িগুলো বিকল্প কোনো রাস্তা দিয়ে নিতে পারলে সমস্যাটা তৈরি হতো না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব এবং যদি বিশ্ববিদ্যালয় বাসগুলো বিকল্প কোনো রাস্তা দিয়ে নেওয়া যায় কিনা সেটা দেখবো। বিকল্প রাস্তা দিয়ে বাস নিতে পারলে এই সমস্যাগুলো তৈরি হবে না বলে আমি মনে করি।
০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
X