কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:০৩ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

উচ্ছেদ অভিযান ঘিরে উত্তাল কক্সবাজার

বাঁকখালী পাড়ে অবৈধ স্থাপনা
উচ্ছেদ অভিযান ঘিরে উত্তাল কক্সবাজার

বাঁকখালী নদীর পাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কক্সবাজার শহর। উচ্ছেদ অভিযানের পঞ্চম দিনে শুক্রবার সকাল থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে শহরের গুনগাছতলা ও নুনিয়ারছড়া এলাকায়। দখলদার ও স্থানীয়দের নেতৃত্বে কয়েকশ নারী-পুরুষ রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করেন, আগুন দিয়ে টায়ার জ্বালিয়ে দেন। বিআইডব্লিউটিএ ও প্রশাসনের উচ্ছেদ দল এক্সক্যাভেটরসহ পৌঁছলে তা ভাঙচুর করা হয়।

উচ্ছেদবিরোধী জনতার কারণে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বন্ধ থাকে বিমানবন্দর সড়ক। এতে বিপাকে পড়েন আসা-যাওয়ার ফ্লাইটের যাত্রীরা। অবরোধ না ওঠায় উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করতে হয়।

নুনিয়ারছড়ার স্থানীয় বাসিন্দা বজলুল করিম ভুট্টো ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই দেশ সরকারের পৈতৃক সম্পত্তি নয়। রোহিঙ্গারা জামাই আদর পায়, অথচ আমরা নাগরিক হয়েও ঠাঁই পাই না।’ তিনি অভিযোগ করেন, কোনো নোটিশ না দিয়েই উচ্ছেদ চালানো হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা নাসির উদ্দিন বাচ্চু বলেন, ‘নদীর সীমানা নির্ধারণ ছাড়া উচ্ছেদ মানা যায় না। কক্সবাজারের বাঁকখালী নদী তার সৌন্দর্য ফিরে পাক, কিন্তু জনগণের গলা কেটে নয়।’

বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী আরএস খতিয়ান অনুসারে সীমানা নির্ধারণের কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। বরং বহু বৈধ বাসিন্দার জমিও উচ্ছেদের আওতায় পড়েছে। মোবারক নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমাদের বিএস ও এমআরআর খতিয়ান অনুযায়ী বৈধ কাগজ আছে, তবুও তা দেখা হচ্ছে না।’

এক নারী বলেন, ‘আমাদের পূর্বপুরুষরা ৩০০ বছর ধরে এখানে ছিলেন। নদী ভেঙে কখনো কখনো আমাদের কাছে এসেছে, আমরা নদীর ওপর উঠিনি।’

বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন বিক্ষোভের মুখে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে ফোনে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি তাকে।

এদিকে, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল ও কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র সরওয়ার কামাল ভিপি ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন। কাজল বলেন, ‘হাইকোর্টের রায় আমরাও মানি, তবে আগে নদীর সীমানা নির্ধারণ করে স্থানীয়দের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

তিনি জানান, বিকেলে প্রতিনিধিদের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠকে বসানো হবে। কাজল আরও বলেন, ‘বাঁকখালী নদীর সৌন্দর্য ফেরাতে সব ধরনের সহায়তা করব; কিন্তু কেউ যেন দুর্ভোগে না পড়ে, সেটিও দেখতে হবে।’

উচ্ছেদ নিয়ে এর আগের দিন পেশকারপাড়ায়ও অভিযান ব্যর্থ হয়। গত দুই দিনে উচ্ছেদে বাধা দেওয়ায় ৬৫০ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে বলে জানান কক্সবাজার মডেল থানার ওসি ইলিয়াস খান।

দুপুর ১২টার দিকে নেতাদের আশ্বাসে বিক্ষোভকারীরা সড়ক ছাড়েন। তবে এলাকাবাসীর একটাই দাবি—উচ্ছেদ নয়, আগে ন্যায্যতা ও সম্মান নিশ্চিত হোক।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মেসিদের জন্য বড় দুঃসংবাদ, থুতু কাণ্ডে বড় শাস্তি পেলেন উরুগুইয়ান তারকা

ঢাকার বাতাস সহনীয়, বায়ুদূষণের শীর্ষে কিনশাসা

রাগ নয়, ভালোবাসাই হোক শেষ কথা!

আবারও ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব, পুলিশের তদন্ত শুরু

চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে ৫৪তম জশনে জুলুস

নতুন রুপে শাহরুখ

সবসময় ক্লান্ত লাগে? সহজ সমাধান বিট কেভাস

নৌকাডুবিতে মায়ের মৃত্যু, মেয়ে নিখোঁজ

পাহাড়ের বুকে সৌদি আরবের ফাইভ স্টার হোটেল 

সারাদিন সতেজ থাকতে সকালে করুন এই সহজ ব্যায়াম

১০

ম্যাজিস্ট্রেট আসার খবরে পালালেন বর-কনে

১১

বিপাকে শিল্পা-রাজ

১২

রাজবাড়ীর ঘটনায় সরকারের ব্যর্থতা ফুটে উঠেছে : এনসিপি

১৩

দেশে কত দামে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে আজ

১৪

আজ সালমান শাহর মৃত্যুবার্ষিকী

১৫

ডাকসু নির্বাচন, যা বলছেন প্রার্থীরা

১৬

রাস্তায় এখন কিয়ার ইভি৫

১৭

রাজধানীতে আজ কোথায় কোন কর্মসূচি

১৮

কেমন থাকবে আজকের ঢাকার আবহাওয়া

১৯

৬ দিনেও ইমতিয়াজের জ্ঞান ফেরেনি, মামুনের অবস্থার উন্নতি

২০
X