দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল রোববার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের বড় পতন হয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স সাড়ে তিন মাস পর আগের অবস্থানে ফিরে গেছে। পাশাপাশি বাজারের লেনদেন নেমেছে ৪ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলেছেন, পুঁজিবাজারে কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন গুজব ঘুরছে। এর অন্যতম হলো মার্জিন ঋণ বিধিমালায় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ না দেখার গুজব। কিছু অসাধু ব্যক্তি ও ব্রোকারেজ হাউস তাদের নিজেদের স্বার্থে মার্জিন ঋণ নিয়ে এ ধরনের আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এতে আতঙ্কিত বিনিয়োগকারী প্যানিক সেল (আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি) দিচ্ছে, যা বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন বলেন, ‘মার্জিন ঋণ নিয়ে একটি শ্রেণি বাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে নেতিবাচক তথ্য ছড়াচ্ছে। যেখানে মার্জিন ঋণ নিয়ে আইন এখনো পাসই হয়নি, সেখানে যারা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে, তারা নিঃসন্দেহে খারাপ উদ্দেশ্যে এ গুজব ছড়াচ্ছে। যারা এসব গুজব ছড়াচ্ছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’
গতকাল ডিএসইতে ৪৪২ কোটি ৪০ টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়। এই লেনদেন চলতি বছরের ২৫ জুনের পর সর্বনিম্ন। ওইদিন এই বাজারে ৪১৩ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছিল।
ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বাড়ে ৪৪টির, কমে ৩১৪টির। আর ৩৮টির দর অপরিবর্তিত থাকে। দর কমা শেয়ারগুলোর মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির ১৭৫টি, ‘বি’ ক্যাটাগরির ৭১টি এবং ‘জেড’ ক্যাটাগরির ৬৮টি শেয়ার ও ইউনিট ছিল। অধিকাংশ সিকিউরিটিজের দর কমায় গতকাল ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ কমে ৫ হাজার ৪৪ পয়েন্টে নেমে আসে। সূচকটির এ অবস্থান গত ৯ জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন। ওইদিন ডিএসইএক্স সূচকটি ৫ হাজার ৩৫ পয়েন্টে অবস্থান করছিল।
অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল ২৪ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২১ শতাংশ কমে ১ হাজার ৬২ পয়েন্টে এবং ডিএসইর বাছাই করা ৩০ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৩০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫১ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯৩৮ পয়েন্টে নেমে আসে।
দেশের অন্য পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) গতকাল সবগুলো মূল্যসূচকে বড় পতন হয়েছে। এ বাজারে অধিকাংশ শেয়ার ও ইউনিটের দরপতন হলেও সার্বিক লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে।
সিএসইর সার্বিক সূচক সিএসপিআই ১৯৫ পয়েন্ট কমে ১৪ হাজার ২৭৪ পয়েন্টে অবস্থান নেয়। আর সিএসসিএক্স সূচকটি ১১৪ পয়েন্ট কমে ৮ হাজার ৭৮৪ পয়েন্টে নামে। সিএসইতে ১৭৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়। এর মধ্যে ৩১টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমে ১৩৪টির। আর ১৩টির দর দিন শেষে অপরিবর্তিত থাকে। এক্সচেঞ্জটিতে সার্বিক লেনদেন হয় ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
মন্তব্য করুন