একই দিনে দেশে ভয়ঙ্কর দুই ভূতের ছবি

যখন সুপারহিরো, সিক্যুয়েল আর পুরোনো ছবির রিবুট দেখে দেখে হাঁপিয়ে উঠেছেন দর্শক, তখন হঠাৎ ত্রাতার ভূমিকায় আবির্ভূত হয়েছে হরর বা ভৌতিক ঘরানার ছবি। সাম্প্রতিক সময়ে সারাবিশ্বেই হরর ছবি নির্মাণের হার বেড়েছে। এ বছর এখনো পর্যন্ত হলিউডের ব্যবসাসফল ছবির তালিকায় হরর ছবির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। মার্কিন সংস্থা কমস্কোরের এক পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছর উত্তর আমেরিকার মোট টিকিট বিক্রির ১৭ শতাংশই এসেছে হরর ছবির হাত ধরে, যা ২০২৪ সালে ছিল ১১ শতাংশ; এক দশক আগেও যা ছিল মাত্র ৪ শতাংশ। প্রযোজক, স্টুডিও প্রধান ও হলমালিকদের মতে, হরর সব সময়ই ছিল উদ্বেগ থেকে মুক্তির উপায়। আজকের দুনিয়ায় সেই মহামারির পরবর্তী ধাক্কা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আশঙ্কা, শরীরের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারানোর ভয় বা বর্ণবাদ—সবই হরর চলচ্চিত্রে জায়গা করে নিচ্ছে।

হরর ছবির এই জয়রথে যুক্ত হতে যাচ্ছে আরও দুটি সিনেমা। ৮ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুক্তি পেতে যাচ্ছে মার্কিন হরর থ্রিলার ‘ওয়েপনস’। একই দিনে বাংলাদেশের স্টার সিনেপ্লেক্সেও মুক্তি পাবে ছবিটি। সেই সঙ্গে বাড়তি উপহার হিসেবে থাকছে জনপ্রিয় তুর্কি হরর সিনেমা ‘সিকিন’ সিরিজের নতুন ছবি ‘সিকিন ৮’। এটিও ৮ আগস্ট মুক্তি দিচ্ছে স্টার সিনেপ্লেক্স।

ওয়েপনস

জ্যাক ক্রেগার পরিচালিত আমেরিকান রহস্যময় হরর থ্রিলার সিনেমা ‘ওয়েপনস’-এ অভিনয় করেছেন যশ ব্রোলিন, জুলিয়া গার্নার, ক্যারি ক্রিস্টোফার, অস্টিন আব্রামস, অ্যামি ম্যাডিগানসহ আরও অনেকে। কাহিনি ঘুরছে মেব্রুক নামের একটি ছোট শহরকে ঘিরে, যেখানে একই ক্লাসের ১৭ জন তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র এক রাতে ২টা ১৭ মিনিটে হঠাৎ একসঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। শুধু একজন, অ্যালেক্স লিলি, পরের দিন স্কুলে উপস্থিত হয়। নিখোঁজ হওয়া শিক্ষার্থীদের খোঁজে নামে অভিভাবক, পুলিশ, শিক্ষকসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। এর মধ্যে কিছু অতিপ্রাকৃতিক ঘটনা তাদের আতঙ্কিত করে তোলে। ছবিটি ছয়টি অধ্যায়ে বিন্যস্ত, প্রতিটি অধ্যায় একটি চরিত্রের দৃষ্টিকোণ থেকে গল্প এগিয়ে নেয়। ছোট ছোট ঘটনার কিস্তি মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত ধ্বংসাত্মক এক ক্লাইম্যাক্সের দিকে পৌঁছে যায় গল্প। সমালোচকরা ইতিমধ্যেই ছবিটিকে ২০২৫ সালের অন্যতম সেরা হরর-থ্রিলার হিসেবে অভিহিত করেছেন। আইএমডিবি ও রটেন টমেটোসেও ছবিটির ইতিবাচক রিভিউ পাওয়া গেছে।

সিকিন ৮

অন্যদিকে, তুর্কি ভাষার সুপারন্যাচারাল হরর সিনেমা ‘সিকিন ৮’ সিরিজের অষ্টম কিস্তি। পূর্ববর্তী কিস্তি ‘সিকিন ৭’ গত বছরের ১৪ জুন মুক্তি পেয়েছিল। এক বছর পর পর্দায় এসেছে নতুন কিস্তি। অ্যালপার মেস্তকি পরিচালিত ছবিটি তুরস্কে মুক্তির পর দর্শকদের কাছ থেকে বেশ ভালো সাড়া পেয়েছে। কাহিনিতে দেখা যাবে একজন পুরুষ ও তার পরিবার ভয়াবহ অতিপ্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা অত্যাচারিত হচ্ছে। গল্প শুরু হয় যখন সে তার বৃদ্ধ মাকে বাসায় আনে। সিরিজের মূল নায়ক অরহানকে এবারও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে, যিনি পূর্বের কিস্তিগুলোতেও ছিলেন। প্রথম দুই কিস্তিতে নির্দিষ্ট কোনো হিরো বা ভিলেন ছিল না, বরং জাদুবিদ্যা ও কালো যন্ত্রণা ছিল মুখ্য বিষয়। তবে পরের কিস্তিগুলোতে কাহিনিতে এসেছে পরিবর্তন।

ছবিতে জিন তত্ত্ব, ব্ল্যাক ম্যাজিক ও পারিবারিক গোপন রহস্যের মিশ্রণ রয়েছে। প্রধান চরিত্র ফাতিহ, যিনি স্ত্রী বরনার অনুরোধে তার বৃদ্ধ মা গুনহুলকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেন। মা বাড়ি ছাড়ার পর পরিবারের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় এবং অচেনা, অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে থাকে। শান্ত পরিবেশে হঠাৎ অস্বাভাবিক শব্দ, ছায়া ও অতিপ্রাকৃতিক ঘটনা ফাতিহের পরিবারকে গ্রাস করে। অনুশোচনায় ভরা ফাতিহ শেষ পর্যন্ত মাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনে, কিন্তু সেই মা আর আগের মতো নেই। এরপর ঘটতে থাকে ভয়ঙ্কর সব ঘটনা।