মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
আওয়ামী লীগ সব কিছুই গোপন রাখছে : জি এম কাদের
আওয়ামী লীগ সব কিছুই গোপন রাখছে। সংবিধান লঙ্ঘন করে তারা সেটা করছে। এরা বিদ্যুৎ জ্বালানিসহ সব খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট ও পাচার করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম  কাদের। রোববার (১৯ মে) দুপুরে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে একথা বলেন তিনি। জি এম কাদের বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে পূর্বের বৈচিত্র্য হারিয়েছে আওয়ামী লীগ, সে কারণে তারা কাউকে পাত্তা দেয় না, হিসেবেও রাখছে না। বিভিন্ন প্রকল্পে সংবিধান মানছে না সরকার। জি এম কাদের আরও বলেন, আওয়ামী লীগের আগে বৈশিষ্ট্য ছিল তারা জনগণকে ধারণ করত। এখন তারা জনগণের কাঁধে চেপে বসে গেছে। আগে তারা গাছের ছায়ার মতো ছিল- মানুষ বিশ্রাম নিত। এখন সেটা হয়ে গেছে পরগাছা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এখন অনেক হাস্যকর কাজ কর্ম করছে। তাদের বাইরে দুনিয়ায় আরও লোক আছে সেটা তাদের হিসাবের মধ্যে আসছে না। তারা নিয়ম বহির্ভূতভাবে কাজ করছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কাজ এমন হতে পারে না।  তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের খাতসহ ওনারা অনেক কিছুতেই লুটপাট করেছে। এগুলো প্রচুরভাবে বিদেশে টাকা পাচার হয়েছে তারা দেশের থেকে, দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।  আগামী দুই দিন তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে সমাবেশ ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
১৯ মে, ২০২৪

লোহাগড়ায় দুর্বৃত্তের গুলিতে আওয়ামী লীগ নেতা নিহত
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় আওয়ামী লীগ নেতা ও মল্লিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিকদার মোস্তফা কামাল দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, পূর্বশত্রুতার জেরে লোহাগড়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সমির সিকদারের বাড়ির সামনে সিকদার মোস্তফা কামালকে একদল দুর্বৃত্ত গুলি করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা আহত কামালকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠান। লোহাগড়া থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি মারা যান। মোস্তফা কামালের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মেহেদী হাসান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমিসহ নড়াইল পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ওই এলাকায় পুলিশের একাধিক টিম আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত রয়েছে। আমরা ঘটনার বিস্তারিত জানতে পেরেছি। আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অভিযুক্তদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
১১ মে, ২০২৪

নিউ ইংল্যান্ড মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতির লাশ উদ্ধার
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইংল্যান্ড মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসিম পারভীনের মরদেহ তার নিজ বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।  মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টনের নিকটস্থ শহর ওয়েস্ট রক্সবুরির নিজ বাড়ির দরজা ভেঙে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন বোস্টনের আওয়ামী লীগ নেতা ওসমান গণি।  নাসিম পারভীন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনের সাবেক স্ত্রী। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ওই বাড়িতে একাই বসবাস করতেন। তাদের বিবাহবিচ্ছেদের পর তিনি ১ ছেলে ও ১ মেয়ে নিয়ে ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের (বোস্টনের নিকটস্থ) ওয়েস্ট রক্সবুরির বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করতেন। পরে ছেলেমেয়েরা চাকরির জন্য অন্যান্য শহরে বসবাস শুরু করলে তিনি ওই বাড়িতে একাই থাকতেন। ছেলেমেয়েদের ব্যস্ততার কারণে মাঝেমধ্যে মায়ের সঙ্গে দেখা হতো। সর্বশেষ মায়ের সঙ্গে তাদের ফোনে কথা হয় ২ মে বৃহস্পতিবার। এরপর অনেক চেষ্টা করেও তারা আর মাকে ফোনে পাননি। এতে তাদের সন্দেহ হলে মঙ্গলবার বিকেলে ওয়েস্ট রক্সবুরির বাসায় গিয়ে কলিং বেল টিপে এবং দরজায় ধাক্কা দিয়ে সাড়া না দিলে পুলিশে খবর দেন তার ছেলে। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে নাসিম পারভীনের মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। তবে তার মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। নাসিম পারভীনের দেশের বাড়ি পাবনা জেলায়। পুলিশের কাছ থেকে মরদেহ হস্তান্তরের পর তার জানাজা ও দাফনের ব্যবস্থা করা হবে বলে স্থানীয় মুসলিম কমিউনিটির নেতারা জানিয়েছেন।
১০ মে, ২০২৪

উপজেলা নির্বাচন / প্রথম ধাপের ভোটে আওয়ামী লীগের কৌশল কাজে আসেনি
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কোনো কৌশলই শেষ পর্যন্ত কাজে আসেনি। নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে দলীয় প্রতীক না দিয়ে সবার জন্য প্রার্থিতা উন্মুক্ত করা হলেও কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো যায়নি। আবার নির্বাচনকে প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত রাখতে মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত মাঠে ছিলেন তারা। শুধু তাই নয়, তাদের অধিকাংশই বিজয়ী হয়েছেন। এ অবস্থায় এই নির্বাচনের পরের তিন ধাপে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো এবং মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব কমাতে ক্ষমতাসীন দলটি কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়, সেদিকে তাকিয়ে থাকবেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। জানা গেছে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে তৃণমূলের বিভেদ উপজেলা নির্বাচনে যেন প্রভাব ফেলতে না পারে, সেজন্য আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী দেওয়া থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাবমুক্ত রাখারও চেষ্টা করে আওয়ামী লীগ। দলটির ধারণা ছিল, স্থানীয় নির্বাচনকে দলীয় আবহ থেকে বের করে সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা গেলে ভোটারদের আগ্রহ বাড়বে। সেইসঙ্গে মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাবমুক্ত করা সম্ভব হলে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে এবং ভোটাররা কেন্দ্রে যেতে উৎসাহী হবেন। তবে প্রথম ধাপের ভোটে তাদের সে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। যেসব এলাকায় শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে, সেখানেও খুব বেশি ভোটার কেন্দ্রে যাননি। সব মিলিয়ে ভোট প্রদানের হার ছিল মাত্র ৩৬ শতাংশ। এ বিষয়ে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন কালবেলাকে বলেন, ‘কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে। ভোটার উপস্থিতিও সন্তোষজনক। তবে আরও বেশি হতে পারত। পারিপার্শ্বিক নানা কারণেই তা হয়নি, যা দলের পক্ষ থেকেই স্পষ্ট করা হয়েছে।’ প্রথম ধাপের ভোটের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ভোটার উপস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগ। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘কোনো প্রাণহানি ছাড়াই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। ভোটার উপস্থিতিও সন্তোষজনক।’ তবে ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটের হার আরও বেশি হওয়া উচিত ছিল। তারা মনে করেন, নির্বাচনে বেশি দল অংশ নিলে প্রার্থীর সংখ্যাও বেশি হয়। তখন ভোটার উপস্থিতিও বাড়ে। ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ ভোটের প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে যাওয়া। বিএনপিসহ বেশ কিছু দল নির্বাচনে না আসারও প্রভাব পড়েছে। তা ছাড়া জীবন-জীবিকার কারণে মানুষের ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটের হার কমেছে। ধান কাটার ব্যস্ততা এবং বৃষ্টিও বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করেছে। আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন কালবেলাকে বলেন, ‘ভোটার উপস্থিতি আশানুরূপ না হলেও খারাপ হয়নি। বিএনপি নির্বাচন বয়কট করায় কিছুটা প্রভাব পড়েছে।’ জানা গেছে, দলীয় নির্দেশনাকে চ্যালেঞ্জ করে উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান পদে মন্ত্রী-এমপিদের ১৪ স্বজন অংশগ্রহণ করেন। তাদের ভোটের মাঠ থেকে সরাতে নানাভাবে চেষ্টা করেছে দল। বিভিন্ন পর্যায় থেকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দেওয়া হলেও প্রার্থীদের অনড় অবস্থানের কাছে নতি স্বীকার করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ফলে ভোটের মাঠে রয়ে যান মন্ত্রী-এমপির স্বজন ও নিকটাত্মীয়রা। গত ২২ এপ্রিল প্রথম ধাপের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন হলেও ভোটের আগের দিন পর্যন্ত প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে হুমকি-হুঁশিয়ারি জারি রাখে আওয়ামী লীগ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা ভোটের মাঠ ত্যাগ করেননি। বরং উন্নয়ন বন্ধের নামে প্রার্থী ও প্রচারকর্মীদের হুমকি, আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে গোপন বৈঠকে সমঝোতা, প্রশাসনকে ব্যবহারের কিংবা আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেছেন। ফলে দল এদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান থেকে পিছু হটে এবং ব্যবস্থা গ্রহণের সময়ক্ষেপণের মাধ্যমে প্রথম ধাপের নির্বাচন শেষ করে। কিন্তু নির্বাচনে অংশ নেওয়া মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের মধ্যে ১০ জন জয়ী হয়েছেন। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করার পরও এই প্রার্থীদের জয়ে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতাকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। ক্ষমতাসীন দলের এমপিদের মধ্যে নোয়াখালী-৪ আসনের একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে আতাহার ইশরাক শাবাব চৌধুরী, বগুড়া-১ আসনের সাহাদারা মান্নানের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন সজল ও ভাই মিনহাদুজ্জামান লিটন, পিরোজপুর-১ আসনের শ ম রেজাউল করিমের ছোট ভাই এস এম নুরে আলম সিদ্দিকী, খাগড়াছড়ির কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার জামাতা বিশ্ব প্রদীপ কারবারী, ঠাকুরগাঁও-২ আসনের মাজহারুল ইসলাম সুজনের চাচা শফিকুল ইসলাম, মাদারীপুর-২ আসনের শাজাহান খানের ছেলে আসিবুর রহমান খান এবং কুষ্টিয়া-৩ আসনের মাহবুব-উল আলম হানিফের চাচাতো ভাই আতাউর রহমান আতা ভোটে জয়ী হয়েছেন। আর নোয়াখালী-৬ আসনের এমপি মোহাম্মদ আলীর ছেলে আশিক আলী অমি এবং মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের এমপি মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লবের চাচা আনিছউজ্জামান আনিস আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা রাজনীতি করতে পারবে কিন্তু নির্বাচন করতে পারবে না—এ কেমন সিদ্ধান্ত? দলের নীতি অবশ্যই ভুল ছিল, তা মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে প্রমাণ করে দিয়েছেন।’ তবে শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থেকেও জয়ী হতে পারেননি জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও পাবনা-১ আসনের এমপি শামসুল হক টুকুর ছোট ভাই আব্দুল বাতেন ও ভাতিজা আব্দুল কাদের, টাঙ্গাইল-১ আসনের এমপি ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের খালাতো ভাই হারুনার রশিদ হিরা, নরসিংদী-২ আসনের আনোয়ার আশরাফ খানের শ্যালক শরীফুল হক এবং মৌলভীবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পরিবেশমন্ত্রী সাহাব উদ্দিনের ভাগনে সোয়েব আহমেদ। প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন সম্পর্কে মন্তব্য চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন কালবেলাকে বলেন, ‘প্রথম ধাপের নির্বাচনে তেমন হতাহত ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে, যা আশাব্যঞ্জক। মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাবমুক্ত একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটিও নির্বাচনের জন্য ইতিবাচক। যেসব মন্ত্রী-এমপি প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেছেন এবং ভবিষ্যতে করবেন তাদের বিরুদ্ধে দলের অবস্থান কঠোর। সিদ্ধান্ত ভুল ছিল, নাকি সঠিক ছিল, তা মূল্যায়নের এখনো সময় আসেনি।’
১০ মে, ২০২৪

আওয়ামী লীগ আমলে ভোট দিতে পারে না জনগণ
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বর্তমান সরকারের আমলে জনগণ ভোট দিতে পারে না। আওয়ামী লীগ ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচন করার পর আবার উপজেলা নির্বাচন করছে। এ নির্বাচনও ডামি। গতকাল রোববার বেইলি রোডে উপজেলা নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে বিএনপির উদ্যোগে লিফলেট বিতরণকালে তিনি এ কথা বলেন। রিজভী বলেন, বর্তমানে দেশের জনগণ ভোট দিতে পারে না। তাদের পছন্দের প্রতিনিধি বানাতে পারে না। দেশের এ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে বর্তমান ডামি নির্বাচনের সরকার। এ সময় ছিলেন ডা. রফিকুল ইসলাম, ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ, জাকির সিদ্দিকী, মেহেবুব মাসুম শান্ত, ওমর ফারুক কাওসার, তৌহিদুর রহমান আউয়ালসহ বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
০৬ মে, ২০২৪

আওয়ামী লীগ মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম (শায়খে চরমোনাই) বলেছেন, স্বাধীনতার আগে পাকিস্তানিরা এ দেশের জনগণের অধিকার ভূলুণ্ঠিত করেছিল। এখন আওয়ামী লীগ জনগণের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। সব সুযোগ-সুবিধা শুধু আওয়ামী লীগের জন্য। শুক্রবার বাদ জুমা রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে বিক্ষোভ-পূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ফরিদপুরের মধুখালীতে দুই ভাই হত্যার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে কেন্দ্রঘোষিত দেশব্যাপী বিক্ষোভের অংশ হিসেবে ইসলামী আন্দোলন ঢাকা জেলা দক্ষিণের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়। ঢাকা জেলা দক্ষিণের সভাপতি মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি মাওলানা জহিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, কেন্দ্রীয় নেতা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, আহমদ আবদল কাইয়ূম, রেজাউল করীম আবরার, মোহাম্মদ হানিফ মেম্বার, আনোয়ার হোসেন, ডা. কামরুজ্জামান, শাহীন আহমদ, ইলিয়াস হোসাইন প্রমুখ।
০৪ মে, ২০২৪

প্রভাবশালীদের চাপে রাখতে কৌশলী আওয়ামী লীগ
সাংগঠনিক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি সত্ত্বেও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের স্বজনের প্রার্থিতা ঠেকাতে পারেনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। হাতেগোনা দু-একজন বাদে ভোটের মাঠে রয়ে গেছেন এ ধরনের বেশিরভাগ প্রার্থী। দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে যেসব মন্ত্রী-এমপির স্বজন উপজেলায় ভোট করছেন, তৃণমূল পর্যন্ত অনেক নেতাকর্মীই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে সোচ্চার। তা সত্ত্বেও এ ইস্যুতে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যবস্থা নেয়নি আওয়ামী লীগ। গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের মৌখিক বক্তৃতায় হুমকি-ধমকির মধ্যেই বিষয়টি সীমাবদ্ধ রয়েছে। এমনকি দলের কার্যনির্বাহী কমিটিতেও এ নিয়ে আলোচনা হয়নি। শুধু তাই নয়, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী হওয়া প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে আগামী দিনেও কঠোর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। মূলত মন্ত্রী-এমপিসহ স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী নেতাদের নিয়ন্ত্রণে রেখে উপজেলা নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করতেই আওয়ামী লীগ এমন কৌশল নিয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক নেতা। জানা গেছে, এবারের উপজেলা নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে শুরু থেকেই সচেষ্ট ছিল আওয়ামী লীগ। এ কারণেই দলীয়ভাবে মনোনয়ন না দিয়ে সবার জন্য প্রার্থিতা উন্মুক্ত করা হয়। তা সত্ত্বেও বিএনপি-জামায়াতসহ অনেক দল নির্বাচনের বাইরে থাকায় শেষ পর্যন্ত এই নির্বাচন কতটা অংশগ্রহণমূলক হবে—তা নিয়ে সংশয় ছিল। বিশেষ করে সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য কিংবা স্থানীয়ভাব প্রভাবশালী নেতাদের হস্তক্ষেপে অনেক উপজেলায় তাদের পছন্দের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল। বিশেষ করে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের পরিবারের সদস্য বা স্বজনরা অবাধে ভোটে দাঁড়াতে পারলে তাদের বিরুদ্ধে আর কেউ প্রার্থী হতে চাইতেন না। এমন বিবেচনা থেকেই ভোটের মাঠ সবার জন্য উন্মুক্ত রাখতে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজন ও নিকটাত্মীয়দের নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। তা সত্ত্বেও অনেক উপজেলায় ভোটের মাঠে রয়ে গেছেন প্রভাবশালী প্রার্থীরা। তা সত্ত্বেও দলীয় কৌশল সফল হয়েছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তাদের মতে, মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের ভোট করার নির্দেশনা দিয়ে দল সবার জন্য একটি বার্তা দিতে চেয়েছে। তা হলো, আওয়ামী লীগ অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক উপজেলা নির্বাচন চায়। হাতেগোনা দু-চারটি বাদে মন্ত্রী-এমপি পরিবারের সদস্যরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। তাদের যেসব আত্মীয়স্বজন প্রার্থী হয়েছেন, তাদের প্রায় সবাই দীর্ঘদিন ধরে দলীয় রাজনীতিতে অবদান রেখে আসছেন। তা ছাড়া দু-চারটি ব্যতিক্রম বাদে এবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার সংখ্যা কম। সব মিলিয়ে উপজেলা নির্বাচনে নিয়ে দলীয় কৌশল সফল হয়েছে বলেই অনেক কেন্দ্রীয় নেতার ধারণা। এ বিষয়ে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন কালবেলাকে বলেন, ‘দলের বার্তা খুব পরিষ্কার, উপজেলা নির্বাচন যেন প্রভাবমুক্ত হয়। দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এমন বার্তাই স্পষ্ট করেছেন। নির্বাচনকে প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপমুক্ত রাখতেই এই কৌশল। এখন পর্যবেক্ষণ করতে হবে নির্বাচন কতটা প্রভাবমুক্ত হয়।’ গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের ৩০০ আসনের মধ্যে ৬২ টিতেই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন করে জয়ী হন। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের মধ্যে সিংহভাগই আওয়ামী লীগ নেতা। ফলে জাতীয় নির্বাচন ঘিরে তৃণমূলে যে দ্বৈরথ তৈরি হয়েছে, উপজেলা নির্বাচনেও তার প্রভাব পড়তে পারে বলে আওয়ামী লীগের আশঙ্কা। এ কারণেই দলীয় প্রতীকে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নির্বাচনকে আরও গ্রহণযোগ্য ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাবমুক্ত রাখতে আত্মীয়-স্বজনদের নির্বাচন থেকে বিরত থাকতেও নির্দেশ দেয় ক্ষমতাসীন দল। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নির্বাচনী লড়াইয়ে রয়ে গেছেন এ ধরনের প্রার্থীরা। নির্বাচন কমিশনের তপশিল অনুযায়ী প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলায়, দ্বিতীয় ধাপে ১৬১, তৃতীয় ধাপে ১১২ ও শেষ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার তৃতীয় ধাপের মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিনের হিসাব অনুযায়ী অন্তত অর্ধশতাধিক মন্ত্রী ও এমপির স্বজন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তবে ৪৮০টি উপজেলার মধ্যে এই সংখ্যাকে খুব বেশি বলে মনে করছে না আওয়ামী লীগ। এ কারণেই ঢালাওভাবে ব্যবস্থা নেওয়া থেকে আপাতত বিরত থাকছে তারা। গতকাল রোববার গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাও উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘পারিবারিক ফর্মুলা কী? নিজের ছেলে-মেয়ে-স্ত্রী, এই তো। তারপর হিসাব করে দেখেন, কয়জন ছেলেমেয়ে, কয়জন স্ত্রী দাঁড়িয়েছে। এর বাইরে তো পরিবার ধরা হয় না। আমাদের কথা হচ্ছে নির্বাচন যেন প্রভাবমুক্ত হয়। মানুষ যেন স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারে।’ জানা গেছে, প্রতিটি সংসদীয় আসনে এক বা একাধিক উপজেলা রয়েছে। এলাকার রাজনীতিতে এমপির পাশাপাশি উপজেলা চেয়ারম্যানের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েও অনেকে উপজেলা চেয়ারম্যানদের কাছে হেরেছেন। এ কারণে উপজেলায় নিয়ন্ত্রণ রাখতে মরিয়া হয়ে ওঠেন সংসদ সদস্যরা। নিজ পরিবার কিংবা বলয়ের লোককে উপজেলা চেয়ারম্যান করতে সচেষ্ট তারা। এ পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরেই মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করলে তাদের তালিকা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের হুঁশিয়ার করে দেন। সূত্র জানায়, এরপরই মন্ত্রী এমপিদের স্বজনদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ জমা পড়ে দলের দপ্তরে। অনেকে সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে লিখিত ও মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভার আলোচ্যসূচিতেও উপজেলা নির্বাচন ইস্যুটি অন্তর্ভুক্ত হয়। সাংগঠনিক সম্পাদকরা প্রতিবেদনও চূড়ান্ত করেন। তবে গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত নির্বাহী সংসদের সভায় এ বিষয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাও উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার প্রশ্নে অনেকটা নমনীয় মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি বলেছিলাম (মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের নির্বাচন থেকে বিরত থাকতে)। কারণ হচ্ছে, আমরা চাইছি, নির্বাচনটা প্রভাবমুক্ত যেন হয়, মানুষ যেন স্বাভাবিকভাবে ভোটটা দিতে পারে। সেটাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য।’ এসব কারণে অনেকের ধারণা, মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি ও হুঁশিয়ারি রাজনৈতিক কৌশল। আওয়ামী লীগের এক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মূলত বিএনপি নির্বাচনে আসবে না জেনেই নির্বাচনকে জমজমাট ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে দলীয় প্রতীক তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। নির্বাচনে যদি মন্ত্রী-এমপিদের স্বজন ঢালাওভাবে অংশ নেয়, তবে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবর্তে একপেশে হয়ে যাবে—এমন আশঙ্কায় তিনি ওই কৌশল নিয়েছিলেন।’ এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন কালবেলাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তো বার্তা দিয়েই দিয়েছেন। তার বার্তা অনুযায়ী নির্বাচন যে-ই করুক, কেউ প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন কঠোর ভূমিকা পালন করবে। উপজেলা নির্বাচনে কেউ প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না, যেহেতু দল কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’
০৩ মে, ২০২৪

জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এসেছে আওয়ামী লীগ : প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ কোনো ডিক্টেটর মিলিটারির পকেট থেকে বের হয়নি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছে আওয়ামী লীগ। বৃহস্পতিবার (২ মে) থাইল্যান্ড সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এই সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ দেশের মানুষের মুক্তির জন্যই আওয়ামী লীগের জন্ম হয়। আওয়ামী লীগ সব সময় মানুষের কল্যাণে কাজ করে আর বিএনপি মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়। মিয়ানমারে চলমান যুদ্ধপরিস্থিতি নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মিয়ানমারের এই বিষয়টি নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। বর্তমান যে পরিস্থিতি সেখানে চলছে সেটা নিয়ে থাইল্যান্ডও বেশ উদ্বিগ্ন। তবুও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চেষ্টা চলবে—এটুকু আশ্বাস থাই প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনে অব্যাহত গণহত্যা, মিয়ানমারে চলমান সংঘাত, রোহিঙ্গা সমস্যা নিরসন ও বিশ্বে চলমান সংঘাত বন্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়কে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে ছয় দিনের সরকারি সফর শেষে ২৯ এপ্রিল ব্যাংকক থেকে দেশে ফিরেছেন। সফরকালে শেখ হাসিনা গভর্নমেন্ট হাউসে (থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে দুই নেতার উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে ভিসা অব্যাহতি, জ্বালানি সহযোগিতা, পর্যটন ও শুল্ক সংক্রান্ত বিষয় এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) আলোচনার বিষয়ে পাঁচটি দ্বিপাক্ষিক নথি সই হয়। পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দুসিত প্রাসাদের অ্যামফোর্ন সাথার্ন থ্রোন হলে থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরা-ক্লাওচা-উয়ুয়া এবং রানি সুথিদা বজ্রসুধা-বিমলা-লক্ষণের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে গত ২৪ এপ্রিল বিকেলে ব্যাংককে পৌঁছেন শেখ হাসিনা। ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। থাইল্যান্ডের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫২ বছরে বাংলাদেশের সরকারপ্রধান পর্যায়ে এটাই ছিল প্রথম সফর। সফরটি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রতিবেশী’ নীতির ওপর বৃহত্তর মনোনিবেশের অংশ হিসেবেই তার এই সফর। আর এ সফর দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নবায়নের চমৎকার সুযোগ করে দিয়েছে। একই সময়ে তিনি ব্যাংককের জাতিসংঘ সম্মেলন কেন্দ্রে জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা। একইদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের নির্বাহী সচিব আরমিডা সালসিয়াহ আলিশাবানা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
০২ মে, ২০২৪

আ.লীগ নেতা টিপু হত্যা মামলার বিচার শুরু
রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যা মামলায় ৩৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে। সোমবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইনের আদালত এ আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রফিক উদ্দীন বাচ্চু এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে গত ২৫ এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষ ৩৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন। অন্যদিকে পলাতক ছয় আসামি ছাড়া অপর আসামিদের পক্ষে আইনজীবীরা মামলার দায় থেকে অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত এ বিষয়ে আদেশের জন্য ২৯ এপ্রিল দিন ধার্য করেন। গত ৫ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার আদালতে ৩৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহম্মেদ মন্টু, ফ্রিডম মানিক ওরফে জাফর, প্রধান সমন্বয়কারী সুমন সিকদার মুসা, শুটার মাসুম মোহাম্মদ আকাশ, শামীম হোসাইন, তৌফিক হাসান ওরফে বিডি বাবু, ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মারুফ রেজা সাগর, ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক আরিফুর রহমান ওরফে ‘ঘাতক’ সোহেল, মতিঝিল থানা জাতীয় পার্টির নেতা জুবের আলম খান রবিন, হাফিজুল ইসলাম হাফিজ, হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক সোহেল শাহরিয়ার, মাহবুবুর রহমান টিটু, নাসির উদ্দিন মানিক, মশিউর রহমান ইকরাম, ইয়াসির আরাফাত সৈকত, আবুল হোসেন মোহাম্মদ আরফান উল্লাহ ইমাম খান, সেকান্দার শিকদার আকাশ, মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম মাতবর, আবু সালেহ শিকদার, কিলার নাসির, ওমর ফারুক, মোহাম্মদ মারুফ খান, ইশতিয়াক আহম্মেদ জিতু, ইমরান হোসেন জিতু, রাকিবুর রহমান রাকিব, মোরশেদুল আলম পলাশ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ তালুকদার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মারুফ আহমেদ মনসুর, রিফাত হোসেন, সোহেল রানা, ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক নেতা আমিনুল, সামসুল হায়দার উচ্ছল ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান বাবুল। এদের মধ্যে জিসান, মানিক, রিফাত, সোহেল, আমিনুল ও কামরুজ্জামান পলাতক রয়েছেন। এছাড়া আসামি আশরাফ, মনসুর, মোরশেদুল, রাকিবুল, ইমরান, হাফিজ, মাসুদ ও মশিউর জামিনে রয়েছেন। ২০২২ সালের ২৪ মার্চ রাত সোয়া ১০টার দিকে শাহজাহানপুরে ইসলামী ব্যাংকের পাশে বাটা শোরুমের সামনে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় গাড়ির পাশে রিকশায় থাকা সামিয়া আফরান প্রীতি (১৯) নামে এক কলেজছাত্রীও নিহত হন। এ ছাড়া টিপুর গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন। ওইদিন রাতেই শাহজাহানপুর থানায় নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সংরক্ষিত কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এতে অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪
X