মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
বঙ্গবন্ধু শান্তি পদক চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে শান্তি পদক চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সোমবার (২০ মে) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ পদক চালুর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। তিনি জানান, এ বিষয়ে একটি নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক জুরি বোর্ড গঠন করা হবে। সেই সঙ্গে একটি নীতিমালাও করা হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রতি দুই বছর পরপর ১৭ মার্চ পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হবে। পাশাপাশি ২৩ মে পুরস্কার প্রদান করা হবে। পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি ১ লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণের আর্থিক পুরস্কারের সঙ্গে ১৮ ক্যারেটের ৫০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণ পদক পাবেন। তিনি আরও বলেন, বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান, মানবাধিকার, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যবিমোচনে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৫ সাল থেকে প্রতি দুই বছর পরপর সম্মানজনক এই পদক দেওয়া হবে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের যে কোনো দেশের নাগরিক, কোনো দেশের রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী, সমাজসেবক, রাজনীতিক এ পদকের জন্য বিবেচিত হতে পারেন। এ ছাড়াও নোবেল বিজয়ী ও বাংলাদেশে অবস্থিত দূতাবাসের প্রধানরা সংশ্লিষ্ট দেশের জন্য নাম প্রস্তাব করতে পারবেন।  
৮ ঘণ্টা আগে

বঙ্গবন্ধু কাপ কাবাডিতে আসছে উগান্ডা
পাকিস্তান আসছে না—আগেই নিশ্চিত হয়েছে। আসবেন না ইংল্যান্ড দলও। এর পরও ১২ দল নিয়েই আয়োজিত হবে বঙ্গবন্ধু কাপ কাবাডি প্রতিযোগিতা। ইংল্যান্ডের জায়গায় আফ্রিকান দেশ উগান্ডা খেলবে বলে নিশ্চিত করেছেন আয়োজকরা। আফ্রিকার আরেক দেশ কেনিয়া বরাবরই আন্তর্জাতিক এ প্রতিযোগিতায় ভালো নৈপুণ্য প্রদর্শন করে আসছে। একই মহাদেশের উগান্ডা কেমন করবে—এ নিয়ে অবশ্য কৌতূহল থাকছে। মহাদেশীয় স্কুল কাবাডি প্রতিযোগিতায় খেলছে উগান্ডার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। উগান্ডা কাবাডি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ নামে ঘরোয়া আয়োজনও বেশ জমজমাট! জুনে আফ্রিকান কাবাডি কাপ খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটি। কেনিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আসরের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশে খেলতে আসছে পূর্ব আফ্রিকার এ দেশ। সে হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু কাপে খেলতে আসা উগান্ডা দল হিসেবে মন্দ হবে না। আন্তর্জাতিক এ কাবাডি প্রতিযোগিতার প্রধান সমন্বয়ক ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান এস এম নেওয়াজ সোহাগ সে কথাই জানিয়েছেন। কালবেলাকে তিনি বলেন, ‘উগান্ডায় কাবাডি কার্যক্রমে সচল। আমরা আশা করছি, কেনিয়ার মতো এ দেশটিও ভালো খেলা উপহার দেবে। এ কারণেই উগান্ডাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’ প্রতিযোগিতায় স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়াও অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে— ইরাক, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, উগান্ডা, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, পোল্যান্ড ও কেনিয়া। ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালে আয়োজিত আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। এবার টানা চতুর্থ শিরোপা হাতছানি দিচ্ছে স্বাগতিকদের। কাজটা অবশ্য বেশ কঠিন হতে যাচ্ছে। কারণ কেনিয়া ছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের মতো শক্ত প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। স্বাগতিকদের সম্ভাবনা সম্পর্কে অভিজ্ঞ কোচ আব্দুল জলিল বললেন, ‘বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে আছে। এখনো আমরা কিছু বিষয় নিয়ে কাজ করছি। সেগুলো সঠিকভাবে করতে পারলে বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়নের মতোই দেখা যাবে।’ বিগত তিন আসরের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ কোচ। ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে শিরোপা ধরে রাখতে পারবে তো বাংলাদেশ!
১৮ মে, ২০২৪

ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আগুন
ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আগুন লেগেছে। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সকালে হাসপাতালটির দ্বিতীয় তলার স্টোর রুমে এ আগুনের সূত্রপাত হয়। ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক দীপক কুমার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন । স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালটির দ্বিতীয় তলার স্টোর রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এ সময় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং ধোঁয়ায় আশপাশ অন্ধকার হয়ে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি টিম কাজ করছে। তবে কীভাবে এ আগুনের সূত্রপাত তা জানা যায়নি। ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ২০ মিনিটের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা যায়নি।  ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক দীপক কুমার বলেন, হঠাৎ করে হাসপাতালটির দ্বিতীয় তলার স্টোর রুমে আগুন লাগে। পরে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং ধোঁয়ায় অন্ধকার সৃষ্টি হয়। স্টোর রুমটিতে হাসপাতালের ওষুধপত্র, যন্ত্রপাতি, ফ্রিজসহ নানা সরঞ্জাম রয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি টিম এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে এখনো জানা যায়নি। বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো যাবে বলেও জানান তিনি।
১৬ মে, ২০২৪

নিজ আয়েই প্রতিস্থাপন খরচ মেটাবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ থেকে কোম্পানির যে আয় হচ্ছে তা দিয়েই স্যাটেলাইট প্রতিস্থাপনের খরচ মেটানো যাবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। রোববার (১২ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের ষষ্ঠ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল) আয়োজিত অনুষ্ঠানে কক্সবাজার থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ তথ্য দেন তিনি। বর্তমান বিশ্বের স্যাটেলাইটগুলোর গড় আয়ু ১৫ বছর। ফলে এ সময়ের মধ্যে এটি প্রতিস্থাপন করতে হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ নির্মাণ ও উৎক্ষেপণে ব্যয় হয়েছে ২৭৬৫ কোটি টাকা। এটি ২০৩৪ সাল নাগাদ প্রতিস্থাপন করতে হবে। আর বিএসসিএল যে হারে আয় করছে তাতে এর মধ্যেই স্যাটেলাইট প্রতিস্থাপনের সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে। এ সময় দেশের পরবর্তী স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২’ মহাকাশে উৎক্ষেপণের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ হবে আর্থ অবজারভেটরি বা পৃথিবী পর্যবেক্ষণকারী স্যাটেলাইট। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে ভূপ্রকৃতি, নদী ও সাগর নিয়ে গবেষণার দ্বার উন্মুক্ত হবে এবং ব্লু ইকোনমির পরিপূর্ণ সুফল গ্রহণের পথে আমরা আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যাব। বিএসসিএল চেয়ারম্যান ও কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শাহ্‌জাহান মাহমুদের সভাপতিত্বে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (এটকো) এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইকবাল সোবহান চৌধুরী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর সফল উৎক্ষেপণের ষষ্ঠ বর্ষপূর্তি উপযাপন করছি, সেটি জাতির পিতার কারণেই। তিনিই প্রথম ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়া উপগ্রহ ভূকেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে বহির্বিশ্বের সঙ্গে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দেশের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার সূচনা করেন।’ ‘পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে মহাকাশে দেশের প্রথম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের লক্ষ্যস্থির করেন, যার ফলস্বরূপ বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে ২০১৮ সালের ১২ মে বাংলাদেশ সময় ভোর ২টা ১৪ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল থেকে বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স এর রকেটে মহাকাশে পাঠানো হয় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’, উল্লেখ করেন ড. হাছান। ছয় বছরে স্যাটেলাইটের কারিগরি ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনায় বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের সাফল্যকে প্রশংসনীয় বলে বর্ণনা করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের সকল টিভি চ্যানেল, ২৬ টি বিদেশি চ্যানেল এবং দেশের একমাত্র ডিটিএইচ সেবা ‘আকাশ ডিটিএইচ’ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে সম্প্রচারিত হচ্ছে। প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকা বিশেষত পার্বত্য, উপকূলীয়, হাওড় এবং দ্বীপাঞ্চলে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়েছে। পূর্বতন দায়িত্বের সময়ের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান বলেন, ‘তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী থাকা অবস্থায় একটি কার্যকর টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট (টিআরপি) সিস্টেম চালু করার জন্য আমি বিএসসিএলকে দায়িত্ব প্রদান করি, তারা কার্যকরভাবে তা চালু করে, যা উদ্বোধনও করার সৌভাগ্য হয়েছে আমার।’ এ সম্পর্কে মন্ত্রী আরও জানান, এই টিআরপির মাধ্যমে বর্তমানে কোন গ্রাহকের কোন টেলিভিশনে কোন চ্যানেল দেখা হচ্ছে, কতক্ষণ ধরে দেখা হচ্ছে এসব তথ্য গাণিতিক বিশ্লেষণ করে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর জনপ্রিয়তার তথ্য সেবাগ্রহীতাদের প্রদান করা হচ্ছে।
১৩ মে, ২০২৪

পৃথিবী যতদিন থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথের দর্শন-কর্ম থাকবে : ঢাবি উপাচার্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছেন, পৃথিবী যতদিন থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কর্ম, চিন্তা-ভাবনা, আদর্শ ও দর্শন বেঁচে থাকবে।  বুধবার (৮ মে) বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।  ‘সোনার বাংলা স্বপ্ন ও বাস্তবতা: রবীন্দ্রনাথ থেকে বঙ্গবন্ধু’ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে আয়োজিত এই আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ সম্মাননীয় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হক। রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধু সারাজীবন কৃষক, শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের মুক্তির জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন, আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতা, গল্প, গান, রচনা, সাহিত্য ও শিল্পকর্মে দরিদ্র্য কৃষক ও শ্রমিকের মুক্তির গান গেয়েছেন। তারা উভয়ই অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ, উগ্রজাতীয়তাবাদ পরিহার এবং আত্মশুদ্ধির পন্থা অবলম্বন করেছেন।  তিনি আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথের চিন্তা-চেতনা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাম্প্রদায়িক চেতনা, গণতান্ত্রিক ও মানবিক মূল্যবোধ, দেশপ্রেম, মাটি ও মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা নিয়ে সারাজীবন আন্দোলন- সংগ্রাম ও অপরিসীম ত্যাগের মাধ্যমে আমাদেরকে স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র উপহার দিয়েছেন। মানুষকে ভালোবেসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ব্রিটিশ সরকার প্রদত্ত নাইটহুট উপাধি ত্যাগ করেছিলেন, ঠিক তেমনি নিজের জন্য খোঁড়া কবরের সামনে দাড়িয়ে পাকিস্তানি শাসকদের সাথে বাঙালীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও মুক্তির ব্যাপারে আপোস করেননি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এভাবেই বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথের দর্শন ও চিন্তা-ভাবনায় অপূর্ব মিল রয়েছে।   প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর কবিতা ও সাহিত্য কর্মে সমাজের নানা অসংগতি, কুসংস্কার, বৈষম্য, মানুষের কষ্ট, প্রকৃতি, পরিবেশ, মানবপ্রেমসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছেন। বঙ্গবন্ধু এবং রবীন্দ্রনাথ উভয়ই উগ্রজাতীয়তাবাদ বিরোধী ছিলেন। তাঁরা উভয়ই বিশ্বাস করতেন উগ্র জাতীয়তাবাদ সমাজে সংঘাত সৃষ্টি করে। অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন সমাজ প্রতিষ্ঠায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন্তাভাবনা ও দর্শন সকলের সামনে সবসময় তুলে ধরতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হক মূল প্রবন্ধে বলেন, সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথের ভাবনায় ও কর্মে অনেক মিল ছিল। বাঙালির ন্যায়সংগত অধিকার আদায়ে আত্মশক্তি অর্জনে উভয়ই সোচ্চার ছিলেন। রবীন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠ সৃজনশীল কাজগুলো তৎকালীন পূর্ববঙ্গের গ্রাম্যজীবন ও পদ্মাপাড়ের মানুষের জীবন নিয়ে রচিত। তিনি যেমন লেখনীর মাধ্যমে মানুষের চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন করে সমাজ সংস্কার করতে চেয়েছেন, তেমনি বঙ্গবন্ধু তাঁর দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনে অপরিসীম ত্যাগের মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় এককভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আলোচনা পর্ব শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগ ও নৃত্যকলা বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
০৮ মে, ২০২৪

যমুনার বুকে দৃশ্যমান বঙ্গবন্ধু রেলসেতু
যমুনার বুকে পুরোপুরি দৃশ্যমান হলো উত্তরাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। ৫০টি পিলারের ওপর ৪৯টি স্প্যান বসিয়ে এ সেতুর পুরো ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার সুপার স্ট্রাকচার পুরোই দৃশ্যমান হয়েছে। চলছে এডজাস্টমেন্টের কাজ। তবে উভয়পাশের স্টেশন নির্মাণ, স্লিপারবিহীন রেলপথ স্থাপনসহ কিছু কাজ বাকি রয়েছে। রেলসেতুতে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণও শেষের দিকে। আগামী ডিসেম্বরেই সেতুটি নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।  সোমবার (৬ মে) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা গেছে, জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর নির্মাণ ব্যয় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। ডব্লিউডি-১ ও ডব্লিউডি-২ নামে দুটি প্যাকেজে জাপানি ৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।  ডব্লিউডি-১ প্যাকেজটি বাস্তবায়ন করছে জাপানি আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওবাইসি, টোআ করপোরেশন ও জেইসি (ওটিজে) জয়েন্ট ভেনচার। ডব্লিউডি-২ প্যাকেজটি বাস্তবায়নে রয়েছে জাপানের আইএইচআই ও এসএমসিসি জয়েন্ট ভেনচার। এ ছাড়া সেতুর উভয়প্রান্তের দুই স্টেশনে সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপনে ডব্লিউডি-৩ নামে অপর একটি প্যাকেজের কাজও চলছে। সেতুটি নির্মাণে জাপান, ভিয়েতনাম, নেপাল, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন ও বাংলাদেশের প্রায় কর্মীরা নিয়োজিত আছেন।  রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু সেতুর ৩০০ মিটার উজানে যমুনার বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো এ সেতুটি ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগে নতুন দিগন্ত সূচিত করবে। ঢাকার সাথে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা অঞ্চলের রেল যোগাযোগে বর্তমান যে বিড়ম্বনা রয়েছে সেটা আর থাকবে না। নির্মাণের পর সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৮৮টি যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করবে। কমে যাবে পরিবহন খরচও। সেই সঙ্গে মহাসড়কের ওপর চাপও অনেকটা কমে আসবে। উত্তরবঙ্গ থেকে বিভিন্ন পণ্য সহজেই ঢাকাসহ সারা দেশ রপ্তানি করা সম্ভব হবে। ফলে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে।  বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্ট গ্লোবাল লি. এর সাব স্ট্রাকচার ইঞ্জিনিয়ার রবিউল আলম কালবেলাকে বলেন, সেতুর ৫০টি পিলারের মধ্যে সবকটি বসানো হয়েছে। প্রতি দুটি পিলারের মাঝখানে একটি করে মোট ৪৯টি স্প্যান বসানো শেষ হয়েছে। সেতুর উপরে রেললাইন স্থাপন শেষ হয়েছে ২ দশমিক ২৫ কিলোমিটার।  তিনি বলেন, ডব্লিউডি-১ প্যাকেজের ৯৬ দশমিক ১৫ শতাংশ, ডব্লিউডি-২ প্যাকেজের ৯০ শতাংশ ও ডব্লিউডি-৩ প্যাকেজের প্রায় ৬৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে ডব্লিউডি-১ প্যাকেজে ২ হাজার ৯৭৯ ও ডব্লিউডি-টু প্যাকেজে ২ হাজার ৮৪১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন।  প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি স্প্যানের ওপর জাপানিদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রেললাইন বসানো হচ্ছে। ফলে সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এ সেতুটির নির্মাণকাজ ডিসেম্বরেই শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান কালবেলাকে বলেন, ইতোমধ্যে সেতুর ৮৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু এডজাস্টমেন্ট বাকি রয়েছে। এলাইনমেন্ট ও লেভেল ঠিক করা হচ্ছে। বিভিন্ন ড্রেইনে কাজ, কালভার্টগুলো শেষ হয়ে গেছে। দুই পাশের স্টেশন বিল্ডিংয়ের কাজ, প্ল্যাটফর্ম স্থাপনের কাজ ও ট্র্যাকের কাজ চলছে। ছোট ছোট কিছু পেরিমিটার ফেল্ট বাকি আছে। আশা করছি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই সব কাজ শেষ হয়ে যাবে।  ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় কমিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনের গতিসীমা। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হওয়ায় সময়ের অপচয়ের পাশাপাশি ঘটছে সিডিউল বিপর্যয়। বাড়ছে যাত্রী ভোগান্তি। এসব সমস্যা সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।  ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটি নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের মার্চ মাসে।
০৭ মে, ২০২৪

কুমিল্লায় ‘খামারি’ মোবাইল অ্যাপ ও বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ নিয়ে মাঠ দিবস
কুমিল্লার চান্দিনায় ‌‌‌‌‍‍‘খামারি’ মোবাইল অ্যাপের কার্যকারিতা যাচাই ও বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ এর প্রদর্শনী ট্রায়ালের মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) সকালে উপজেলার এতবারপুরে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত।।  এ সময় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাসের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, কৃষি মন্ত্রণালয় সম্প্রসারণ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সদস্য পরিচালক (শস্য) ড. মোহাম্মদ আব্দুস ছালাম ও এতবারপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইউসুফ।  প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, এক সময় আমাদের দেশে বোরো ধানের ফলন, বিঘা প্রতি হতো পাঁচ থেকে সাত মণ। কৃষিতে আধুনিকায়ন, ভর্তুকি এবং কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ এবং কৃষকদের সময় উপযোগী পরামর্শ দেওয়ার ফলে ধানের উৎপাদন অনেক বেড়েছে। এছাড়াও সারাবিশ্বে টালমাটাল পরিস্থিতি থাকলেও প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে বাংলাদেশে সারের ঘাটতি পূরণ করেছেন।  তিনি বলেন, কৃষিতে ‌‘খামারি’ মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারে কৃষকের ভালো ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি উৎপাদন খরচ কম। তাই ব্যবহারকারীরা আর্থিকভাবে অনেক বেশি লাভবান হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় চৌধুরী বলেন, কৃষকরা তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ এর আবাদ করে বিঘা প্রতি ফলন পেয়েছেন ২২ থেকে ২৩ মণ। সেখানে খামারি অ্যাপ ব্যবহার করে কৃষকের উৎপাদন খরচ কমেছে এবং ফলন হয়েছে ২৩ থেকে ২৫ মণ। দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ের সব উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকের দোর গোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। সভাপতির বক্তব্যে কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার বলেন, খামারি মোবাইল অ্যাপটি অত্যন্ত চমৎকার একটি অ্যাপ। এ অ্যাপ ওপেন করে নিজ জেলা, গ্রাম এবং মৌজা সার্চ করলে ওই জমিতে সিজন অনুযায়ী কোন ফসল চাষাবাদ করলে ভালো হবে সে নির্দেশনা পাওয়া যায়। এ ছাড়া এসব ফসল চাষাবাদের সব ধরনের পরামর্শ, সারের পরিমাণ এবং পানি সেচসহ যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়। এ অ্যাপ ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ চাষাবাদ করে কৃষকরা লাভবান হয়েছেন। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর জমিতে তিন থেকে পাঁচ মণ ধান বেশি ফলেছে এবং সার অনেক কম লেগেছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান, চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাবের মো. সোয়াইব, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লা অঞ্চলের উপপরিচালক কৃষিবিদ আইয়ুব মাহমুদ, প্রোগ্রাম কো-অডিনেটর মো. মিজানুর রহমান ও চান্দিনা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. শাহিন। এদিকে সকালে জমি চাষ থেকে শুরু করে লাগানো, কাটা, শুকানো, ঝাড়া, মাড়াই সবকিছুর একটা পূর্ণাঙ্গ সমাধান হিসেবে কৃষকের মাঝে সরকারি অর্ধেক ভর্তুকিতে ৭০ লাখ টাকা মূল্যের দুটি আধুনিক কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। এ সময় চান্দিয়ারা গ্রামের দুই কৃষক ফখরুল ও ফয়েজের হাতে মেশিনের চাবি তুলে দেওয়া হয়।
০৪ মে, ২০২৪

বঙ্গবন্ধু কন্যাকে নৌকাখচিত চেয়ার উপহার দিতে চান হিরু কারিগর
তিন মাস শ্রম দিয়ে দৃষ্টিনন্দন নৌকাখচিত একটি চেয়ার বানিয়েছেন কাঠমিস্ত্রি হীরেন্দ্র চন্দ্র সরকার (হিরু)। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চেয়ারটি উপহার দিতে চান তিনি।  হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার আদাঐর গ্রামের বাসিন্দা হীরেন্দ্র চন্দ্র সরকার হিরু। তিন যুগ ধরে কাঠমিস্ত্রি পেশার সঙ্গে জড়িত। তারা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হিসেবে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তার অগাত বিশ্বাস ভক্তি ভালবাসা শৈশব থেকেই। তাই তো সাধ্যের জায়গা থেকেই প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যার জন্য একটি নান্দনিক চেয়ার বানানোর ইচ্ছে জাগে তার মনে। সেই ইচ্ছা থেকে সেগুন ও গামাইর কাঠ সংগ্রহ করে তিন মাস ধরে রাত-দিন পরিশ্রম করে চেয়ারের কাজ শেষ করেন হিরু কারিগর। কাজটি করতে তার প্রায় অর্ধ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এখন অপেক্ষা শুধু প্রধানমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে তুলে দেওয়ার। বিভিন্ন মিডিয়াকর্মী ও নেতাদের শরণাপন্ন হচ্ছেন তার স্বহস্তে বানানো চেয়ারটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। এখন ব্যতিক্রমী এই চেয়ারটি দেখতে অনেকে ভিড় জমাচ্ছেন তার বাড়িতে। মাধবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক এরশাদ আলী বলেন, আওয়ামী লীগ পরিবারের ওই কাঠমিস্ত্রি অত্যন্ত দলপরায়ন। বড় মাপের শিল্পীও। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি তার নিঃস্বার্থ নিবেদন তথা উপহারটুকু পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা সাধ্যমত উপরে আলাপ করার চেষ্টা করব। উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ওসমান মোল্লা বলেন, অনেক সময় ও মেধা খাটিয়ে হিরু ভাই যে চেয়ারটি বানিয়েছেন তা অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। সে ওই চেয়ারটিতে কাউকে বসতেও দেন না। এটা আরও প্রমাণ করে তৃণমূল আওয়ামী লীগ,বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জনমানুষের ভালোবাসা কতটুকু। এই ধরনের শিল্পীকে সরকারি প্রণোদনার অন্তর্ভুক্ত করাও এখন সময় দাবি। চেয়ারের কারিগর কাঠমিস্ত্রি হীরেন্দ্র চন্দ্র সরকার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জন্য উপহার হিসেবে চেয়ারটি ৩ মাস আগে বানানো শুরু করি। দিনরাত পরিশ্রম করে যত্ন নিয়ে চেয়ারটি বানিয়েছি শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়ার জন্য।  হিরু চেয়ারটি প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে পৌঁছে দিতে মিডিয়ার লোকজনের সহযোগিতা চান। চেয়ারটি প্রধানমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে দিতে না পারলে তার আক্ষেপ থেকে যাবে বলে জানান তিনি। কাঠমিস্ত্রি হিরো জানান আরও জানান, প্রতিদিনের পূজায় এই উপহারটুকু যাতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হয় ও সেটা যেন তার কাছে পৌঁছে দিতে পারেন সে প্রার্থনা করে যাচ্ছেন।
০৩ মে, ২০২৪

বঙ্গবন্ধু হত্যা প্রতিরোধ যোদ্ধাদের স্বীকৃতি দিতে কমিটি গঠন হাইকোর্টের
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার প্রতিবাদকারী ‘প্রতিরোধ যোদ্ধাদের’ (১৯৭৫-১৯৭৯) চিহ্নিত করে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জন্য সুপারিশ করতে চার সচিবের সমন্বয়ে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, সমাজকল্যাণ সচিব ও অর্থ সচিবকে নিয়ে করা এ কমিটিকে ৪ আগস্টের মধ্যে ‘প্রতিরোধ যোদ্ধাদের’ চিহ্নিত করার বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। পাঁচ ব্যক্তির করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গতকাল সোমবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী বাকির উদ্দিন ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত। আইনজীবী বাকির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন সামরিক সরকার মিছিল-মিটিং বন্ধ করে দেয়। তা সত্ত্বেও নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, খুলনা, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ ও ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ হয়। ১৯৭৫ সালে জাতীয় মুক্তি বাহিনী ও জাতীয় মুজিব বাহিনী নামে দুটি সশস্ত্র প্রতিরোধ বাহিনী গঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুভক্ত ছাত্র, তরুণ ও মুক্তিযোদ্ধারা তখন ওই বাহিনীতে যোগ দিয়ে ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। সপরিবার বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ৪৭ বছর পার হলেও সেই প্রতিরোধ যোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। তাই পাঁচজন প্রতিরোধ যোদ্ধা ২০২২ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। সেই রিটের শুনানি শেষে রায় দিলেন হাইকোর্ট।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪
X