ক্রিস্টাল প্যালেসের কাছে বিধ্বস্ত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সবচেয়ে সফল দল হিসেবেই ধরা হয় তাদের। তবে তাদের এই সফলতা সবই এখন অতীত। ফুটবলে নিজেদের স্বর্ণযুগ ফেরাতে কম চেষ্টা করেনি দলটি কিন্তু ফলাফল যথারীতি শূন্য। বলা হচ্ছে প্রিমিয়ার লিগের সবচেয়ে সফল দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কথা। রেড ডেভিলসদের এবারের মৌসুমকে ব্যর্থ বললেও মনে হয় কম বলা হবে। এই মৌসুমে একের পর এক ব্যর্থতা সঙ্গী হয়েছে ব্রুনো ফার্নান্দেজ-মার্কাস রাশফোর্ডদের। এবার সেই ব্যর্থতার মুকুটে নতুন কাঁটা হিসেবে যুক্ত হলো পুচকে ক্রিস্টাল প্যালেসের কাছে বিধ্বস্ত হওয়া। সোমবার (৬ মে) প্রিমিয়ার লিগের ৩৫তম রাউন্ডের ম্যাচে ক্রিস্টাল প্যালেসের মাঠ সেলহার্স্ট পার্কে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে ম্যানইউ। জোড়া গোল করেছেন প্যালেসের ফরাসি ফরোয়ার্ড মিকায়েল ওলিসে। এ ছাড়া জ্যাঁ-ফিলিপে মাতেতা ও টাইরিক মিচেল একটি করে গোল করেন। এই হারে সামনের মৌসুমে ইউরোপের কোনো প্রতিযোগিতায় খেলার আশা কার্যত শেষ হয়ে গেল। প্যালেসের মাঠে এই দিন সফরকারী ম্যান ইউনাইটেড দল নেমেছিল তাদের অধিনায়ক ব্রুনো ফার্নানেন্দজকে ছাড়াই। ইনজুরির কারনে এই ম্যাচ থেকে ছিটকে যান পর্তুগালের এই তারকা ফুটবলার। ক্যারিয়ারে এই প্রথম ইনজুরির কারণে ম্যাচ খেলতে পারলেন না ইউনাইটেড অধিনায়ক।  এ ছাড়াও রক্ষণভাগের সবার ইনজুরির কারণে ব্রাজিলের মিডফিল্ডার ক্যাসেমিরোকে খেলানো হয় সেন্টারব্যাক পজিশনে৷  জোড়াতালি দিয়ে বানানো ইউনাইটেড দলকে ম্যাচের শুরু থেকেই নাচাতে থাকে প্যালেস। ম্যাচের ১২ মিনিটে পাওয়া প্রথম সুযোগেই ইউনাইটেডের রক্ষণভাগকে পরাস্ত করেন মিকায়েল ওলিসে। গোল খেয়েও ঘুম ভাঙেনি ইউনাইটেডের। তবে ১৮ ও ২৫ মিনিটে গোল শোধের সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি রেড ডেভিলসরা। উল্টো অল্পের জন্য ব্যবধান বাড়াতে পারেনি ঈগলরা। তবে প্রথমার্ধের শেষের দিকে আর সেই ভুল করেনি প্যালেস। ইউনাইটেডের রক্ষণের ভুলে বল পেয়ে জনি ইভান্সকে পরাস্ত করে প্যালেসের দ্বিতীয় গোল করতে ভুল করেননি মাতেতা। দ্বিতীয়ার্ধে ২-০ গোলে পিছিয়ে থেকে খেলা শুরু করা ইউনাইটেড যেন লড়াই করাই ভুলে যায়। আক্রমণ করার বদলে আরও আক্রমণের শিকার হতে থাকে দলটি। ৫৯ মিনিটে ইউনাইটেডের জাল তৃতীয়বারের মতো কাঁপায় ক্রিস্টাল প্যালেস। আবারও রক্ষণের জটলা থেকে গোল করতে ভুল করেননি ক্রিস্টাল প্যালেসের টাইরিক মিচেল। তখনও ম্যানইউর দুঃস্বপ্ন শেষ হয়নি। ৬৬ মিনিটে দলের চতুর্থ ও নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ওলিসে। এই গোলেও ইউনাইটেডের ডিফেন্সের হতশ্রী অবস্থা আরো সামনে এসেছে। এই ম্যাচে মোট আটবার প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়ের দ্বারা ড্রিবল পাস্ট হয়েছেন ক্যাসেমিরো, যা প্রিমিয়ার লিগে এই মৌসুমে এক ম্যাচে যে কোনো খেলোয়াড়ের জন্য সর্বোচ্চবার। অবশ্য ক্যাসেমিরো একা নন দলের বাকিদের অবস্থাও ছিল জঘন্য।   চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত মোট ৮১ গোল হজম করেছে ইউনাইটেড, যা ১৯৭৬ সালের পর দলটির সর্বোচ্চ গোল হজমের ঘটনা। এই মৌসুমে এই নিয়ে ১৩ ম্যাচ হেরেছে এরিক টেন হ্যাগের দল। প্রিমিয়ার লিগের কোনো মৌসুমেই এতো ম্যাচ হারের রেকর্ড নেই রেড ডেভিলদের। তবে এত বাজে হারের পরেও এরিক টেন হাগের বিশ্বাস তিনিই ইউনাইটেড কে এই বিপদ থেকে বাঁচানোর জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি।   এই হারে ৩৫ ম্যাচে ৫৪ পয়েন্ট নিয়ে ৮ নম্বরে আছে ইউনাইটেড। সমান ম্যাচে সমান পয়েন্ট নিয়েও গোল গড়ে এগিয়ে থাকায় ৭ নম্বরে চেলসি। ৩৬ ম্যাচে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে ১৪ নম্বরে ক্রিস্টাল প্যালেস।    
০৭ মে, ২০২৪

রিয়ালকে টপকে শীর্ষে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
রিয়াল মাদ্রিদকে টপকে ইউরোপিয়ান ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে খরুচে স্কোয়াড গড়ার রেকর্ড করেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ২০২০ সালে রেকর্ডটি নিজেদের দখলে নিয়েছিল স্প্যানিশ জায়ান্টরা। উয়েফা ফাইন্যান্সের সর্বশেষ প্রতিবেদনে ১০০ কোটি ইউরোর দামি ক্লাবের তালিকায় স্থান পেয়েছে চেলসি ও ম্যান সিটি। ইউরোপিয়ান ক্লাব ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ল্যান্ডস্কেপের প্রতিবেদন জানিয়েছে, ২০২২-২৩ মৌসুমে ম্যানইউ স্কোয়াডের সর্বমোট মূল্য ছিল ১৪২ কোটি ২০ লাখ ইউরো। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১৬ হাজার ৮১১ কোটি টাকা। তবে এই প্রতিবেদনে রাসমুস হইলুন্দ, ম্যাসন মাউন্ট, আন্দ্রে ওনানা ও আলতাই বায়িনদিরদের ট্রান্সফার ফি ধরা হয়নি। তাদের জন্য ১৮ কোটি ইউরো খরচ করেছিল ওল্ড ট্রাফোর্ডের দলটি।  ২০২২-২৩ ফুটবল মৌসুমে মোটা অঙ্কের ট্রান্সফার ফিতে ইংলিশ ক্লাবে যোগ দিয়েছিলেন আন্তোনি ও ক্যাসেমিরো। সেই বছরে ১২৮ কোটি ৬০ লাখ ইউরো নিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মূল্যের স্কোয়াড ছিল ম্যানসিটির।  ২০২০ সালে ইউরোপের ফুটবলে সবচেয়ে দামি স্কোয়াডের রেকর্ড গড়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। ১৩২ কোটি ইউরো নিয়ে দামি স্কোয়াড ছিল স্প্যানিশ পরাশক্তিদের। রিয়ালের স্কোয়াডের ফুটবলারদের মধ্যে ছিলেন এডেন হ্যাজার্ড, ফারলাঁন্ড মেন্দি, লুকা জোভিচ, এদের মিলিতাও এবং রদ্রিগো গোয়েসরা। ইউরোপিয়ান ক্লাব ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ল্যান্ডস্কেপ প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২২ সালে সর্বোচ্চ আয় করা ক্লাবের তালিকায় শীর্ষে আছে রিয়াল মাদ্রি। সবচেয়ে বেশি ৮৪ কোটি ১০ লাখ ইউরো আয় করেছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিটিজেরদের আয় ৮৩ কোটি ৬০ লাখ ইউরো। বার্সেলোনা ও পিএসজির আয় যথাক্রমে ৮১ কোটি ৫০ লাখ ও ৮০ কোটি ৭০ লাখ ইউরো।  তবে ইউরোপের সবচেয়ে দামি স্কোয়াড নিয়েও মৌসুমটা ভালো কাটেনি ইউনাইটেডের। প্রিমিয়ার লিগে এরিক টেন হাগের দল ২০২২-২৩ মৌসুমে শেষ করে তৃতীয় হয়ে। রেড ডেভিলদের চেয়ে ১৪ পয়েন্ট এগিয়ে শিরোপা ঘড়ে তুলেছিল ম্যানচেস্টার সিটি।   
১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

যোগ করা সময়ে অবিশ্বাস্য জয় পেল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কিংবদন্তি ম্যানেজার স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের সময় দলটির নামই ছিল কামব্যাক কিংস। ম্যানইউর বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ গোল করলে কতবার যে ফেরত এসেছে ওল্ড ট্রাফোডের দলটি তার ইয়ত্তা নেই। স্যার আলেক্স এখন ইউনাইটেডের ডাগআউটে নেই, দলটিরও আর পুরোনো জৌলুশ নেই। তবে মাঝেমধ্যে এখনো পুরোনো রূপে ফেরত আসে ইউনাইটেড যেমনটি দেখা গেল গতকাল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে। ৯০ মিনিট পর্যন্ত ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকেও যোগ করা সময়ে ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে এই মৌসুমে ধুঁকতে থাকা ম্যানইউ।  শনিবার ঘরের মাঠ ওল্ড ট্রাফোডে এরিক টেন হাহের শিষ্যরা আতিথেয়তা দেয় ব্রেন্টফোর্ডকে। প্রথম থেকেই অ্যাটাক করে খেলতে থাকলেও ব্রেন্টফোর্ডের জমাট ডিফেন্সের সামনে পারছিল না রেড ডেভিলসরা।  এর মাঝে ২৬তম মিনিটে গোল খেয়ে বসে দলটি।  গোলটির পেছনে দায় আছে কাসেমিরো ও গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানার। ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার পজেশন হারানোর পর বাজে ডিফেন্ডিংয়ের দেখা মেলে। বল ক্লিয়ার করার সুযোগ থাকলেও পারেনি কেউ। ডি-বক্সের মধ্যে ইয়েনসেনের নেওয়া নিচু শট আয়ত্তের বাইরে ছিল না ওনানার, কিন্তু তিনি ঝাঁপিয়ে বলে হাত ছোঁয়ালেও রুখতে পারেননি।  গোল খাওয়ার পর মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালায় ইউনাইটেড ফেরত আসার। তবে প্রতিপক্ষের জমাট ডিফেন্সে সব চেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছিল রাশফোর্ড-ফার্নান্দেজদের। বারবার ব্যর্থ হয়ে ইউনাইটেডের খেলোয়াড়দের সঙ্গে ভক্তদের মধ্যেও হতাশা দেখা দেয়। নিশ্চিত হার ধরে নিয়ে কেউ হতাশায় আবার কেউ ক্ষোভে স্টেডিয়াম ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। যাবেন না-ই বা কেন? সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে আগের দুই ম্যাচেও হেরে যাওয়া ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড যে তখন আরেকটি হার থেকে রেফারির শেষ বাঁশি শোনা সময়ের দূরত্বে। মানে, ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে ম্যাচের ৯২ মিনিট ৪৬ সেকেন্ড পর্যন্তও তারা ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে!  এরপরই দলের ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হলেন ‘সুপার সাব’ স্কট ম্যাকটমিনে। যোগ করা সময়ে ম্যাকটমিনের জোড়া গোলেই ২-১ ব্যবধানে জিতল ইউনাইটেড। প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসে এবারই প্রথম নির্ধারিত ৯০ মিনিট পর্যন্ত পিছিয়ে থেকেও জিতল রেড ডেভিলরা। ৮৭ মিনিটে সোফিয়ান আমরাবাতের বদলি নামার কিছুক্ষণের মধ্যেই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন ম্যাকটমিনে। যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে সমতা ফেরান। এর ৪ মিনিট পর হ্যারি ম্যাগুয়ারের বাড়ানো বলে করেন জয়সূচক গোল।  এবারের লিগে আট ম্যাচে এই নিয়ে কেবল চারটি জয় পেল প্রতিযোগিতার রেকর্ড চ্যাম্পিয়নরা। ১২ পয়েন্ট নিয়ে দশম স্থানে আছে তারা। বাজে সময়ের মধ্যে দিয়ে পথচলা চেলসিও এদিন জয় পেয়েছে; বার্নলির মাঠে ৪-১ গোলে জিতেছে তারা। ১১ পয়েন্ট নিয়ে ১১ নম্বরে আছে চেলসি। দিনের প্রথম ম্যাচে লুটন টাউনকে ১-০ গোলে হারিয়েছে টটেনহ্যাম হটস্পার। আসরে এখন পর্যন্ত অপরাজিত দলটি আট ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে আছে শীর্ষে।
০৮ অক্টোবর, ২০২৩
X