মহাসড়কে যাত্রীর চাপ কম, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ
ঈদকে সামনে রেখে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে মানুষ। যাত্রীর চাপ কম থাকায় কোনো ভোগান্তি ছাড়াই কর্মস্থল ছাড়ছেন শিল্পাঞ্চল সাভারের মানুষ। তবে যাত্রীর চাপ কম থাকলেও বাস ভাড়া বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ বলে অভিযোগ সাধারণ যাত্রীদের। শনিবার (৬ এপ্রিল) সাভারের ঢাকা-আরিচা ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক ঘুরে সড়কে ঘরে ফেরা মানুষের তেমন চাপ দেখা যায়নি কিন্তু অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে বিভিন্ন কাউন্টারে। বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জের ভাড়া ৩৭২ টাকা, বগুড়ার ভাড়া ৫৫৮ টাকা, নাটোর ৫৯৩ টাকা, পাবনা ৬৪৬ টাকা, নওগাঁ ৭০১ টাকা, রাজশাহী ৭১২ টাকা, জয়পুরহাট ৭১২ টাকা, রংপুর ৮৭৯ টাকা, দিনাজপুর ৯৪০ টাকা, লালমনিরহাট ৯৯৪ টাকা, কুড়িগ্রাম ১০০২ টাকা, নীলফামারী ১০১৬ টাকা, ঠাকুরগাঁও ১০৯৫ টাকা ও পঞ্চগড় ১২৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ভাড়ার চেয়ে প্রতিটি গন্তব্যস্থলে যেতে জনপ্রতি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে দাবি যাত্রীদের। নবীনগর বাস টার্মিনাল থেকে নাটোরের টিকিট কেটেছেন মো. শফিক মিয়া। তার দাবি, ৫৯৩ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হলেও তাকে প্রতিটি টিকিট কিনতে হয়েছে ৯৫০ টাকা দরে। সুমন মিয়া নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের দোকান চাঁদ রাতেও খোলা। তাই পরিবারকে ভিড় বাড়ার আগেভাগেই গ্রামে পাঠাচ্ছি। কিন্তু যাত্রীর চাপ বাড়ার আগেই এরা টিকিটের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। নবীনগর বাস টার্মিনালের সোহাগ পরিবহনের কাউন্টার ইনচার্জ নাইম খান বলেন, আমরা বেশিরভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করি। অল্প কিছু টিকিট এখান থেকে বিক্রি হয়। তবে আমাদের কাউন্টারে অতিরিক্ত দাম রাখার কোনো সিস্টেম নেই। হয়তো লোকাল কোনো কাউন্টার বেশি রাখতে পারে। সাভার হাইওয়ে থানার ওসি (চলতি দায়িত্ব) এসআই বাবুল আকতার বলেন, সাভারের মহাসড়কগুলোতে এখনো অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ লক্ষ করা যায়নি। গণপরিবহনে নির্ধারিতের চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। অভিযোগ পেলে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ। অতিরিক্ত ভাড়া অদায়ের ব্যাপারে হাইওয়ে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এদিকে গত ৪ এপ্রিল সাভারের মহাসড়কের পরিস্থিতি পরিদর্শনে এসে হাইওয়ে পুলিশের প্রধান ও অতিরিক্ত আইজি শাহাবুদ্দিন সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেন, এবারের ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আমাদের হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সরকার। আমরা তার সহযোগী হিসেবে কাজ করছি। এ ব্যাপারে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
০৬ এপ্রিল, ২০২৪

নির্ধারিত ভাড়ায় চলছে না সরকারি অ্যাম্বুলেন্স, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ
সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় চলছে না নরসিংদীর বেলাব উপজেলা সরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স। নির্ধারিত ভাড়ার কয়েকগুণ বেশি টাকা রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে নিচ্ছেন অ্যাম্বুলেন্স চালকরা। বেলাব স্বাস্থ্য  কমপ্লেক্স জরুরি বিভাগের নোটিশ বোর্ডে সাঁটানো রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে ঢাকার ভাড়া ১৮০০ টাকা, নরসিংদী সদর, ভৈরব, ভাগলপুর ৬০০ টাকা। সরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১০ টাকা হলেও নির্ধারিত ভাড়ার তোয়াক্কা না করে রোগীর স্বজনদের জিম্মি করে নির্ধারিত ভাড়ার ২-৩ গুন ভাড়া বেশি নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা হাসপাতাল সূত্র জানায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ন্ত্রিত দুটি এবং উপজেলা পরিষদ নিয়ন্ত্রিত একটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। এ তিনটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি অনেক দিন ধরে অচল। অন্য দুটি দিয়ে চলে এখানকার রোগীর সেবা। এ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১৫০-২০০ জন রোগী বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা নেন। তবে অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন হয় গড়ে ৪-৫ জনের। এ হাসপাতাল হতে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা, নরসিংদী কিংবা কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর গেলে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিতে হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সরকার নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুলেন্স চালক মো.শাজাহান অভিযোগ স্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমরা একটু ভাড়া বেশি নেই। তবে ৪-৫ হাজার এ কথাটা সত্য নয়। আমি তিন হাজার থেকে পঁয়ত্রিশ শত নেই। কত টাকা নেওয়া হয় এমন কোনো রশিদ আছে কি না জিজ্ঞেস করলে কোনো উত্তর দেয়নি। উপজেলা পরিষদ নিয়ন্ত্রিত ড্রাইভার মো: আদিল মিয়া বলেন, আমরা বেলাব থেকে ঢাকা মহাখালীর ভাড়া ৩৫০০-৪০০০ হাজার টাকা নেই। তার চেয়ে কম নিলে আমাদের পোষায় না। উপজেলার আমলাব ইউনিয়ন থেকে আসা ভুক্তভোগী মো: বিপ্লব মিয়া বলেন, আমি অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজনে কিছুদিন আগে ফোন দিলে ড্রাইভার বলেন আমি নরসিংদী আছি। তারপর স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে কথা বলে আবার ফোন দিলে দেখি সে কোয়াটার থেকে নেমে আসছে। জিজ্ঞেস করলে সে কৌশলে এড়িয়ে যায় এবং ঢাকা যাওয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া জিজ্ঞেস করলে একদাম ৩৫০০ টাকা হলে যাবে না হয় অন্য ব্যবস্থা করার জন্য বলে। নারায়ণপুর ইউনিয়নের দড়িকান্দি গ্রামের আশিকুর রহমান শিশু বলেন, আমার ভাবীকে বেলাব হাসপাতাল থেকে ঢাকা মহাখালী কলেরা হাসপাতাল নিতে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে ৩,৫০০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সৈয়দা তানজিনা আফরিন (ইভা) বলেন, নির্ধারিত ভাড়ায় অ্যাম্বুলেন্স চালানো সম্ভব নয়, তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। তবে মাত্রারিক্ত ভাড়া নিলে যদি কেউ লিখিত অভিযোগ করে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমি ড্রাইভারকে বলেছি রোগীর স্বজনরা যদি তেল কিনে দেয় তবে যাওয়ার জন্য। নরসিংদী জেলা সিভিল সার্জন ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সরকারি ভাড়ার চার্ট প্রদর্শন করে রোগীর স্বজনের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়া উচিত। চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে থাকলে সেটা অন্যায়। রোগীদের জিম্মি করে যদি কোনো অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে থাকে তদন্ত করে অভিযুক্ত চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
০১ জানুয়ারি, ১৯৭০
X