সহিংসতা ও কারচুপির শঙ্কার মধ্যেই আজ মঙ্গলবার উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ১৫৬ উপজেলায় বিরতিহীনভাবে এ ভোট গ্রহণ চলবে। এর মধ্যে ২৪ উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এবং বাকি উপজেলাগুলোতে ভোট হবে ব্যালটে। ভোটের সার্বিক প্রস্তুতি শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দুর্গম এলাকার কেন্দ্রগুলোতে গত রাতেই ব্যালটসহ নির্বাচনী সব সরঞ্জাম পাঠানো নিশ্চিত করেছে কমিশন। আর অন্য কেন্দ্রগুলোতে আজ ভোরেই পাঠানো হচ্ছে ব্যালট।
এ ধাপে ২১ জন একক প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন, যাদের মধ্যে সাতজন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান রয়েছেন।
এদিকে এ ধাপেও বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো অংশগ্রহণ করছে না। জনগণকে ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে বিভিন্ন উপজেলায় গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেছে তারা। তবে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে কয়েকটি উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা। সেজন্য তাদের বহিষ্কারও করা হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে আওয়ামী লীগ এবার দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দেয়নি। ফলে ক্ষমতাসীন দলটিরই একাধিক প্রার্থী ভোটে দাঁড়িয়েছেন। এতে দ্বিতীয় ধাপেও ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ারও আশঙ্কা করেছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। আর নির্বাচন নিয়ে আচরণবিধি ভঙ্গ, মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব নিয়ে অভিযোগ ছিল শুরু থেকেই। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা কেন্দ্র করে বিভিন্ন উপজেলায় সংঘাত-সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অনেকে। আজ ভোটকেন্দ্র করে সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন অনেকে। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্র দখল ও জাল ভোটের শঙ্কাও করছেন কোনো কোনো প্রার্থী।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এ ধাপে ১০টি অঞ্চলের ১০৬ পৌরসভার, ১ হাজার ৪৯৪ ইউনিয়নে ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১৩ হাজার ১৬টি। আর ভোটকক্ষ রয়েছে ৯১ হাজার ৫৮৯টি। গতকাল দুর্গম ৬৯৭ কেন্দ্রে ব্যালট পাঠানো হয়েছে। আজ যাবে ১২ হাজার ৩২৩ কেন্দ্রে। দ্বিতীয় ধাপে মোট ভোটার রয়েছেন ৩ কোটি ৫২ লাখ ৪ হাজার ৭৪৮ জন। নির্বাচনে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বিজিবি মোতায়েন থাকবে ৪৫৮ প্লাটুন। পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে ৮৯ হাজার ৮৬৩ জন। মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে র্যাব মোতায়েন থাকবে ২ হাজার ৭৬৮ জন। ভোটকেন্দ্র এবং মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আনসার সদস্য মোতায়ন থাকবে ১ লাখ ৯৩ হাজার ২৮৭ জন।
নির্বাচন উপলক্ষে গতকাল রাত ১২টা থেকে আজ রাত ১২টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাক, লঞ্চ, ইঞ্জিনচালিত বোট (নির্দিষ্ট রুটে চলাচলকারী ব্যতীত) অন্যান্য যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইসি। তা ছাড়া সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় ভোট গ্রহণের দুদিন আগে থেকে ভোট গ্রহণের পরদিন মধ্যরাত পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। গত ৮ মে প্রথম ধাপের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠ এ উপজেলা নির্বাচন শুরু হয়। আগামী ২৯ মে তৃতীয় এবং ৫ জুন চতুর্থ ধাপের ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
ফকিরহাটের ওসিসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলির নির্দেশ ইসির: বাগেরহাটের ফকিরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলির নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল ইসির উপ-সচিব মো. মিজানুর রহমান নির্দেশনাটি খুলনা রেঞ্চের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শককে পাঠিয়েছেন।