রাইসির স্মরণে নিরাপত্তা পরিষদে নীরবতা পালনে চটেছে ইসরায়েল
হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও তার সফরসঙ্গীদের স্মরণে গত সোমবার এক মিনিট নীরবতা পালন করেছেন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরানের চিরশত্রু ইসরায়েল। হেলিকপ্টারটি গত রোববার দুপুরের দিকে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের পর্বতঘেরা ভারজাগান এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। হেলিকপ্টারটিতে রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানসহ ৮ আরোহী ছিলেন। সোমবার সকালে হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পাওয়া যায়। এরপর রাইসিসহ হেলিকপ্টারটির সব আরোহীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে ইরান সরকার। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে চলতি মে মাসের প্রেসিডেন্ট মোজাম্বিক। জাতিসংঘে নিযুক্ত মোজাম্বিকের রাষ্ট্রদূত পেদ্রো কমিসারিও আফনসো ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসিসহ তার সফরসঙ্গীদের স্মরণে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করতে বলেন। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান। তিনি এ পদক্ষেপকে লজ্জাজনক ঘটনা হিসেবে অভিহিত করেন। এক্সে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় গিলাদ বলেন, ‘আপনারা ঠিকই দেখেছেন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ইরানের গণহত্যাকারী প্রেসিডেন্ট রাইসির স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেছে। কী লজ্জাজনক!’ নিরাপত্তা পরিষদ বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে বলেও মন্তব্য করেন ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। এ ঘটনার পর থেকে গিলাদ ক্রমবর্ধমানভাবে জাতিসংঘের সমালোচনা করে আসছেন।
৪৩ মিনিট আগে

সেনাদের মৃত্যু ঠেকাতে পারছে না ইসরায়েল
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা যেন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে ইসরায়েলি সেনাদের। সদা সতর্কতা ও বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার পরও নিজ দেশের সেনাদের নিহত হওয়া ঠেকাতে পারছে না ইসরায়েল। সর্বশেষ গত বুধবার গাজা উপত্যকার জাবালিয়া এলাকায় ট্যাঙ্ক হামলায় প্রাণ হারিয়েছে পাঁচ ইসরায়েলি সেনা। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও সাতজন। যাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিহত সেনাদের সবাই প্যারাট্রুপার্স ব্রিগেডের ২০২ নম্বর ব্যাটালিয়নে কর্মরত ছিল। ভুল করে নিজ সেনাদের ওপর ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক থেকে হামলা চালালে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। এদিকে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে আরও ১২ ইসরায়েলি সেনাকে হত্যার দাবি করেছে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস। একই দিন একটি জটিল অপারেশন পরিচালনার সময় তাদের হত্যা করা হয় বলে হামাস এক বিবৃতিতে দাবি করেছে। ভুলক্রমে হামলায় নিহত পাঁচজনকে ধরে এ পর্যন্ত গাজায় স্থল অভিযানে মোট ২৭৮ ইসরায়েলি সেনা নিহত হলো। আর হামাসের দাবিকৃত সংখ্যাটি যদি সঠিক হয়, তাহলে মোট নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে। খবর আলজাজিরা ও টাইমস অব ইসরায়েলের ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, বুধবার প্যারাট্রুপারদের সঙ্গে জাবালিয়ায় হামলা চালাতে গিয়েছিল ট্যাঙ্ক বাহিনী। এদিন সন্ধ্যায় একটি ভবনকে লক্ষ্য করে ট্যাঙ্ক থেকে দুটি গোলা ছোড়া হয়। ট্যাঙ্ক সেনারা ভেবেছিল ভবনের ভেতর ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা আছেন। কিন্তু আসলে ছিল ইসরায়েলি সেনারাই। ট্যাঙ্ক সেনারা সেখানে ট্যাঙ্ক নিয়ে ভোরের দিকে গিয়েছিল। আর প্যারাট্রুপাররা এর দুই ঘণ্টা পর সেখানে পৌঁছে। সেখানে গিয়ে প্যারাট্রুপাররা ওই ভবনে অবস্থান নিয়েছিল। এরপর সন্ধ্যার দিকে ওই এলাকায় প্যারাট্রুপারদের আরেকটি দল যায়। ওই সময় তারা ট্যাঙ্ক সেনাদের জানিয়েছিল, তারা ভবনটিতে প্রবেশ করছে। এর কিছুক্ষণ পর ট্যাঙ্ক সেনারা ভবনটির একটি জানালা থেকে বন্দুকের নল দেখতে পায়। তারা ভেবেছিল এতে হামাসের যোদ্ধারা রয়েছে। ওই ভাবনা থেকে ভবনটিতে দুটি গোলা ছোড়া হয়। এতেই এত বড় হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিহত এ পাঁচজনকে নিয়ে গাজায় এ পর্যন্ত স্থল অভিযানে ২৭৮ ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে। ১২ ইসরায়েলি সেনাকে হত্যার দাবি হামাসের : এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ১২ ইসরায়েলি সেনাকে হত্যার দাবি করেছে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস। বুধবার একটি জটিল অপারেশন পরিচালনার সময় তাদের হত্যা করা হয়। একটি বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় হামাসের সশস্ত্র শাখা আল কাসেম ব্রিগেড। তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি এই খবর জানিয়েছে। তবে হামাসের এই দাবি যাচাই করতে পারেনি আনাদোলু। হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে একটি জটিল অপারেশনের সময় আল কাসেম যোদ্ধারা একটি ইয়াসিন ১০৫ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে একটি ইসরায়েলি ডি৯ সামরিক বুলডোজারকে লক্ষ্যবস্তু করে। এ সময় একটি বাড়িতে লুকিয়ে থাকা ইসরায়েলি বাহিনীকে লক্ষ্য করে আরও দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে তারা। এ অভিযানে অন্তত ১২ ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়।’ এর আগে, বুধবার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের কেন্দ্রস্থলে একটি ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেয় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের করা হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় একটি নৃশংস হামলা শুরু করে ইসরায়েল। হামাসের ওই হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। এ সময় আরও প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় সশস্ত্র যোদ্ধারা। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গাজায় চলমান হামলায় ইসরায়েলের হাতে এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজার ২৩০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এ সময় আহত হয়েছেন আরও ৭৯ হাজার ১৪০ জনেরও বেশি মানুষ।
১৭ মে, ২০২৪

শুক্রবার জেলা ও মহানগরে ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ
ফিলিস্তিনে অব্যাহত ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রগঠনের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আগামী শুক্রবার (১৭ মে) সারা দেশে জেলা ও মহানগরে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করবে। অনুষ্ঠেয় কর্মসূচি সফলের আহ্বান জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ। সোমবার (১৩ মে) এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ফিলিস্তিন একটি স্বাধীন রাষ্ট্র এবং বর্বর ইসরায়েল হচ্ছে চাপিয়ে দেওয়া একটি জারজ রাষ্ট্র। ইসরায়েলি পণ্য বয়কট নয়, আমদানি বন্ধ করতে হবে। এটা ইমানদার জনতার প্রাণের দাবি। ইহুদিদের অর্থনীতিতে আঘাত না করলে এরা থামবে না। আগামী শুক্রবার সারা দেশে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি সফলের আহ্বান জানান তিনি। ইউনুছ আহমাদ বলেন, বাংলাদেশের বাজারে ইসরায়েল ও তাদের দোসরদের পণ্য নিষিদ্ধ করতে হবে। দখলদার সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরায়েল ১৯৪৮ সাল থেকেই ফিলিস্তিনের মুসলমানদের ওপরে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়ে আসছে। এই হামলায় কয়েক লাখ মানুষকে তারা শহীদ করেছে। বিশেষ করে বিগত ৭ মাসে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের গাজায় যে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু করেছে তা অকল্পনীয়। এই কয়েক মাসেই প্রায় চল্লিশ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু, যা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ঘটনা। ইসরায়েলের বর্বর হামলায় স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, মসজিদ, গির্জাসহ কোনো স্থাপনায় বাদ যাচ্ছে না। অবিলম্বে গাজায় ইসরায়েলি এই বর্বর হামলা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রগঠনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং মুসলিম বিশ্বের মোড়লদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাই।
১৩ মে, ২০২৪

গাজায় ৫০০ মসজিদ ধ্বংস ও শত শত ইমাম হত্যা করেছে ইসরায়েল
গাজায় সাত মাসের বেশি সময় ধরে অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাদের এ হামলায় গাজার হাসপাতাল থেকে শুরু করে ধর্মীয় স্থাপনাও রেহায় পায়নি। এ অভিযানে শত শত মসজিদও গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল। শুক্রবার (১০ মে) মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেতনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ফিলিস্তিনের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ইসরায়েল অন্তত ৩০০ ইমাম ও ধর্মীয় ব্যক্তিদের হত্যা করেছে। এছাড়া তারা ৫০০ এর অধিক মসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি আংশিকভাবে ধ্বংস করা হয়েছে অসংখ্য মসজিদ। এ তালিকায় ঐতিহাসিক আল ওমারি মসজিদও রয়েছে।   ইসরায়েলের এ বর্বরতা থেকে রেহায় পায়নি গির্জাও। দেশটির সেনাবাহিনীর হামলায় ঐতিহাসিক সেন্ট প্রোফাইরিস গির্জাসহ আরও তিনটি গির্জা ধুলায় মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কোরআন পডকাস্ট ইনস্টিটিউটও হামলার শিকার হয়েছে।   ধ্বংসপ্রায় মসজিদেই তারা নামাজ আদায় করছেন। এছাড়া সেখানেই নতুন উদ্যোমে কোরআন শিক্ষা কার্যক্রমও চালু করেছেন তারা।  ফিলিস্তিনের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানান, ফিলিস্তিনিদের বিশ্বাসকে ভেঙে দিতে ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে ধর্মীয় ব্যক্তিদের ওপর হামলা চালিয়েছে। আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে ধর্মীয় স্থাপনা ও ব্যক্তিত্বরা আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে ‍সুরক্ষিত। তাদের ওপর হামলা যুদ্ধাপরাধ।  তিনি আরও বলেন, বিশ্বের প্রতি আমাদের বার্তা হলো আমরা সাধারণ ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধ করার জন্য পাশে চায়। বিশেষ করে আরব বিশ্বের ইসলামী ব্যক্তিত্বদের প্রতি আমাদের আহ্বান হলো আমাদের জনগণের ওপর চলমান ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ করতে কাজ করুন। 
১০ মে, ২০২৪

ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট তিন জাহাজে ইয়েমেনিদের হামলা
ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট ৩টি জাহাজে হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিরা। তারা জানিয়েছে, এডেন উপসাগর ও ভারত মহাসাগরে এ হামলা চালানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৯ মে) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা এডেন উপসাগরে দুটি এবং ভারত মহাসাগরে একটি জাহাজে হামলার দাবি করেছে। বৃহস্পতিবার হুতিদের সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি বলেন, এডেন উপসাগরে এমএসসি ডিয়েগো এবং এমএসসি জিনায় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন দিয়ে হামলা করা হয়েছে। দুটি হামলা ই নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছুই তিনি বলেননি।  অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মেরিটাইম ইনফরমেশন সেন্টার জানিয়েছে, মঙ্গলবার দুটি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। তবে এতে কোনো জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এ ছাড়া জাহাজের ক্রুরা নিরাপদ রয়েছেন। ইসরায়েলি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে জাহাজগুলোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।  দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এডেন উপসাগরে হামলার শিকার দুটি জাহাজ ছিল পানামার পতাকাবাহী এবং জেনেভাভিত্তিক একটি কোম্পানির কন্টেইনার জাহাজ। এ ছাড়া ভারত মহাসাগরে এমএসসি ভিক্টোরিয়া নামের একটি জাহাজকে নিশানা করা হয়েছে।   সম্প্রতি হুতিদের সামরিক শাখার মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি এক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, নিজেদের আয়ত্তে থাকা যে কোনো জায়গায় ইসরায়েলগামী জাহাজে হামলা চালানো হবে।  তিনি বলেন, ভূমধ্যসাগরের যেখানে আমরা পৌঁছাতে পারব সেখানেই ইসরায়েলের যে কোনো বন্দরগামী জাহাজে আমরা হামলা চালাব। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতা এবং ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে গত বছরের নভেম্বরে লোহিত সাগর, বাব এল-মান্দেব এবং এডেন উপসাগরে একের পর এক ইসরায়েলি জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছে ইয়েমেনের হুতিরা। গাজায় যুদ্ধ না থামা পর্যন্ত এ হামলা চলবে বলেও বার্তা দিয়ে আসছে গোষ্ঠীটি। হুতিদের হামলার ফলে লোহিত সাগর দিয়ে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে অনেক কোম্পানি। এজন্য তারা হর্ন অব আফ্রিকা ঘুরে গন্তব্য পাড়ি দিচ্ছে। ফলে তাদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার কারণে একদিকে সময় লাগছে বেশি। অন্যদিকে পরিবহন ব্যয়ও বাড়ছে অনেক। মার্কিন সেনা সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৯ নভেম্বর থেকে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে ৫০টির বেশি জাহাজে হামলা চালিয়েছে হুতিরা। তাদের হামলার ভয়ে বেশিরভাগ জাহাজ কোম্পানি গুরুত্বপূর্ণ এসব নৌপথ এড়িয়ে গন্তব্যে পাড়ি দিচ্ছে। এতে পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে পশ্চিমারা।
০৯ মে, ২০২৪

ইসরায়েল কি বাইডেনের ভিয়েতনাম হচ্ছে
গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা ও দেশটিকে মার্কিন সহায়তা বন্ধের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে, তা ১৯৬৮ সালে নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিক্ষোভের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। সে সময় বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে সেই শিক্ষার্থীদের দাবি মানতে বাধ্য হয় কলাম্বিয়া কর্তৃপক্ষ। যুদ্ধে পরাজিত হয় যুক্তরাষ্ট্র। ঠিক ৫৬ বছর পর একই মাসে গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে সেই কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। কলাম্বিয়াতে সেই আন্দোলনের সূচনা হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে সেই ছাত্রবিক্ষোভ। এরকম প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে ইসরায়েল কি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জন্য আরেক ভিয়েতনাম হয়ে উঠছে। দীর্ঘ ৫৬ বছর পর ভিয়েতনাম যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি ফিরে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। গত ১৭ এপ্রিল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ লনে ‘গাজা সলিডারিটি ক্যাম্প’ স্থাপন করে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। তারা দাবি জানায়, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ব্যবসা করে এমন কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে। আর গাজায় যুদ্ধরত ইসরায়েলি বাহিনীকে মার্কিন সহযোগিতা দেওয়া বন্ধ করতে হবে। বন্ধ করতে হবে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন। ঠিক একইভাবে ১৯৬৮ সালে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ভিয়েতনামে মার্কিন আগ্রাসন বন্ধের দাবি জানিয়েছিল। আর দাবি জানিয়েছিল, ভিয়েতনাম যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে পারবে না কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। এসব মিলের কারণেই বর্তমান ইসরায়েলবিরোধী ছাত্রবিক্ষোভটি ১৯৬৮ সালের ছাত্রবিক্ষোভের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক। ১৯৬৮ সালের ছাত্রবিক্ষোভের দাবিগুলো মেনে নিলেও চলমান বিক্ষোভের দাবিগুলো এখনো মেনে নেয়নি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বরং বিক্ষোভ দমাতে এখনো যুদ্ধংদেহি অবস্থানে আছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চলতি সপ্তাহে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা হ্যামিলটন হল নামে একটি স্কুলভবন দখল করে নিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট মিনোচে শফিক নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগকে তলব করেন। এরপর পুলিশ সেখানে যায় শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দিতে এবং গুলির ঘটনাও ঘটে। সেখানে পুলিশ যাওয়ার পর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। শিক্ষার্থীদের তাঁবু সরিয়ে ফেলে জোর করে সেখান থেকে তাদের বের করে দেয়। এখন পর্যন্ত আমেরিকার ৪৫টি অঙ্গরাজ্যের অন্তত ১৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এ পর্যন্ত আড়াই হাজারেরও বেশি গ্রেপ্তার হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমনে পুলিশের মারমুখী আচরণে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে দেশটিতে। দেশটির বিভিন্ন নাগরিক ও ধর্মীয় সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলছে, পুলিশ দিয়ে তাদের তাঁবু সরানো যেতে পারে, সাময়িক সময়ের জন্য তাদের বাধা দেওয়া যেতে পারে কিন্তু এতে তাদের আন্দোলন বন্ধ হবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত না গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা বন্ধ ও দেশটিকে মার্কিন সহায়তা বন্ধ হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে। এ বিক্ষোভের শেষ পরিণতি কী, তা এখনো অজানা। ১৯৬৮ সালে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়েছিল। কিন্তু এবারও কি মানবে? উত্তর অজানা। কারণ, সময় পাল্টেছে। ১৯৬৮ আর ২০২৪ এক নয়। বিক্ষোভের গতি-প্রকৃতিও এক নয়। তবে এরই মধ্যে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের এ বছরে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে। ১৫ মে এ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। এ ধরনের অনুষ্ঠানে সাধারণত ৫০ হাজার মানুষের উপস্থিতি থাকে। ঠিক একইভাবে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান বাতিল করে দিয়েছে। অনেকেই বলছে, ইসরায়েল বাইডেনের জন্য আরেক ভিয়েতনাম হয়ে উঠছে। মার্কিন সিনেটর ও বামপন্থি রাজনীতিক বার্নি স্যান্ডার্সও একই কথা বলেছেন। এক সাক্ষাৎকারে ভারমন্টের এ সিনেটর বাইডেনকে তুলনা করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসনের সঙ্গে, যিনি ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়ে শিক্ষার্থী-বিক্ষোভের জেরে ১৯৬৮ সালে পুনর্নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। স্যান্ডার্স বলেছেন, এবার ইসরায়েল নিয়ে তার অবস্থানের জন্য যুব সম্প্রদায় ও ডেমোক্র্যাটদের বড় অংশের সমর্থন খুইয়ে বাইডেনের হেরে যাওয়ার সম্ভাবনাটাই বেশি। তা ছাড়া মুসলিম ভোটের একটা প্রভাব তো আছেই। কারণ গাজায় ইসরায়েলকে নিঃশর্ত সমর্থনের কারণে মার্কিন মুসলিমরা এরই মধ্যে বাইডেনকে বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
০৯ মে, ২০২৪

রাফা ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইসরায়েল
রাতভর হামলার পর রাফা সীমান্ত ক্রসিংয়ের গাজা অংশের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে ইসরায়েল। মঙ্গলবার (৭ মে) গাজার ‘লাইফলাইন’ খ্যাত এলাকাটি দখলের পর সেখানে আর্টিলারিসহ বিপুল ইসরায়েলি সেনা অবস্থান নিয়েছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের অভিযানের উদ্দেশ্যে সেনাবহরটি জনবসতির দিকে এগোনোর আশঙ্কা করা হচ্ছে। আরব নিউজ ও আল জাজিরা জানায়, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার পরও রাফায় অভিযানের অনুমোদন দেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এরপরই রাতের অন্ধকারে রাফায় ঢুকে পড়ে ইসরায়েলি ট্যাংক। এ সময়কার ভিডিও ফুটেজ সম্প্রচার করে মিসরের আল কাহেরা টেলিভিশন। ওই ফুটেজে বন্দুকযুদ্ধ ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এ ছাড়া ট্যাংক এবং হেলিকপ্টারের শব্দও শুনতে পাওয়া যায়।  মিসরের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দেখে মনে হচ্ছে স্বল্প পরিসরে অভিযান চালানো হবে। অভিযান শেষে সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়েও মিসরকে জানিয়েছে ইসরায়েল। যদিও এ বিষয়ে মুখ খোলেনি তেল আবিব। সকালে রাফা ক্রসিংয়ের কয়েকটি অসমর্থিত ফুটেজ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যায়, সড়কের পাশে ‘আই লাভ গাজা' লেখা ভাস্কর্য ইসরায়েলি ট্যাংক গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। এ ছাড়া ক্রসিংয়ে থাকা ফিলিস্তিনি পতাকাও সরিয়ে ফেলে দখলদাররা। দ্য টাইমস অব ইসরায়েল একটি ফুটেজ সম্প্রচার করে। তাকে দেখা যায়, বিশাল ইসরায়েলি পতাকা উড়িয়ে একটি ট্যাংক সীমান্ত সড়কে টহল দিচ্ছে। এ ভিডিওয়ের বর্ণনায় বলা হয়েছে, মিসর অভিমুখে রাফা ক্রসিংয়ের গাজা অংশের নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েলিদের হাতে। গাজার দক্ষিণে রাফা। গাজার সঙ্গে বহির্বিশ্বের যোগাযোগে অন্যতম রাফা সীমান্ত ক্রসিং। মিসরের সিনাই মরুভূমি সংলগ্ন একটি সীমান্ত পথ এ ক্রসিং। অন্য দুটি সীমান্ত পথ অনেক আগে থেকে ইসরায়েলের দখলে থাকায় মিসরের এই সীমান্ত পথটিই গাজার উদ্বাস্তুদের একমাত্র ভরসা ছিল।  এ কারণে রাফা সীমান্তটিই বেসামরিক নাগরিকদের গাজা ত্যাগ করার একমাত্র স্থলপথ হিসেবে বিবেচিত। গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানোর ক্ষেত্রেও রাফা গুরুত্বপূর্ণ। এবার এ পথটিও ইসরায়েলের দখলে চলে যাওয়ায় ত্রাণসহায়তা অনেকটা স্থবির হয়ে পড়বে। আরও দুর্ভোগে পড়বেন যুদ্ধে বিধ্বস্ত গাজাবাসী।
০৭ মে, ২০২৪

ফিলিস্তিনিদের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার জবাবে যা জানাল ইসরায়েল
গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। দলটির সম্মত হওয়ার পর  এর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল। তারা জানিয়েছে, হামাসের এ ধরনের হালকা প্রস্তাব তারা গ্রহণ করবে না। সোমবার (০৬ মে) রাতে আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে  এ তথ্য জানানো হয়েছে।  নাম  প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে রয়টার্স বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব হামাস অনুমোদন করেছে তা তারা গ্রহণ করবে না। ইসরায়েলের ওই কর্মকর্তা হামাসের প্রস্তাবকে হালকা প্রস্তাব বলেও উল্লেখ করেন।  তিনি বলেন, মিসরের মধ্যস্থতায় হামাস সম্মত হওয়া যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সুদূরপ্রসারী সমাপ্তি রয়েছে। এ ধরনের প্রস্তাব ইসরায়েল সমর্থন করবে না।  ইসরায়েলের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমও একই তথ্য জানিয়েছে। তারা জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে হামাসের চুক্তি ইসরায়েল সরকার গ্রহণ করেনি।  এর আগে প্রতিরোধ আন্দোলনের একটি সূত্র জানায়, এরই মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার কথা মিসর ও কাতারি মধ্যস্থতাকারীদের নিশ্চিত করা হয়েছে গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে।  এক বিবৃতিতে প্রতিরোধ সংগঠনটি জানায়, হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া কাতারি প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মাদ বিন আব্দুল রহমান আল থানি এবং মিসরের গোয়েন্দা মন্ত্রী আব্বাস কামেলের সঙ্গে এক ফোনালাপে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার কথা জানান।  যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার পাশাপাশি এখন বল ইসরায়েলের কোর্টে বলে জানান হামাসের ঊর্ধ্বতন নেতারা। যদিও দ্বিতীয় দফায় এ যুদ্ধবিরতি কতক্ষণ স্থায়ী হবে এবং গাজায় জিম্মিদের মুক্তির ব্যপারে ঠিক কী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তা বিস্তারিত বলা হয়নি।  গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাতদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন। অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।  
০৬ মে, ২০২৪

বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত
যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি গোলাবারুদের একটি চালান ইসরায়েলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে বাইডেন প্রশাসন। গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর এই প্রথম ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ আটকে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অস্ত্রের চালানটি গত সপ্তাহে ইসরায়েলে পাঠানোর কথা থাকলেও সেটি আপাতত পাঠানো হচ্ছে না বলে ইসরায়েলকে জানিয়েছেন ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা।  প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন কেন অস্ত্রের চালানটি স্থগিত করেছে সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। তবে এ বিষয়ে অবগত সূত্রটি বলেছে, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার রাফায় সম্ভাব্য ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের সঙ্গে বাইডেন প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তের যোগসূত্র নেই।  ইসরায়েলের দুজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস রোববার প্রথম এই সংবাদ প্রকাশ করে। পরে ইসরায়েলভিত্তিক সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট নিজেদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ওয়াশিংটনের আকস্মিক এ পদক্ষেপে উদ্বেগ বোধ করছেন ইসরায়েলের কর্মকর্তারা।  সংবাদ মাধ্যমটি আরও বলেছে, ঠিক কী কারণে অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত করা হলো তা জানতে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে ইসরায়েল। কারণ এই চালানটিতে ইসরায়েলের জন্য জরুরি কিছু অস্ত্র আসার কথা ছিল। কী কারণে অস্ত্রের চালান স্থগিত করা হলো তা জানতে চাইলেও মার্কিন কর্মকর্তারা এখনো ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের স্পষ্টভাবে কিছু বলছেন না।  বাইডেন প্রশাসনের একজন কর্মকর্তার কাছে এ ব্যাপারে জানতে চেয়েছিল সিএনএন, কিন্তু তিনিও সরাসরি উত্তর না দিয়ে বলেছেন, গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলকে শত শত কোটি ডলারের নিরাপত্তা সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত কয়েক মাসে ইসরায়েলকে যত সহায়তা প্রদান করা হয়েছে, তা গত কয়েক দশকেও দেওয়া হয়নি।  সিএনএন-কে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, শুধু হামাসই নয়, হিজবুল্লাহ ও ইরানকে মোকাবিলা করার জন্যও আমরা ইসরায়েলকে সহায়তা দিয়েছি এবং আগামীতেও তা অব্যাহত থাকবে।  পরে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর পেন্টাগন এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরেও যোগাযোগ করেছিল সিএনএন। কিন্তু দুই দপ্তরের কোনো কর্মকর্তা এ ইস্যুতে কথা বলতে রাজি হননি। মার্কিন রাজনীতি বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, ইসরায়েলকে গাজায় অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত সেখানে বেসামরিক লোকজনের হতাহত হওয়া হ্রাস করা, গাজায় ত্রাণসামগ্রী প্রবেশে বাধা না দেওয়াসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছে ওয়াশিংটন, কিন্তু ইসরায়েল সেসবে কর্ণপাত করেনি। সর্বশেষ গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত শহর রাফায় অভিযান চালাতে নিষেধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেই নির্দেশনাও মানেনি ইসরায়েল।  রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার ‘হুঁশ’ ফেরাতে এ পদক্ষেপ নিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। 
০৬ মে, ২০২৪

ফিলিস্তিন ইস্যুতে চবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনবিরোধী শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন মুভমেন্টে’ সংহতি ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘বয়কট ইসরায়েল’ বলে স্লোগান দিতে দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। সোমবার (৬ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, ফিলিস্তিনের চলমান স্বাধীনতা আন্দোলন শুধু মুসলিমদের ইস্যু নয়, এটা গোটা মানবজাতির মানবতার ইস্যু। আজকের এই মানববন্ধনে উপস্থিত হতে পারাটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ঘটনা। সবচেয়ে বড় মূল্যবান বিষয় হলো ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো, অন্যায়ের বিপক্ষে দাঁড়ানো। ফ্যাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ইশতিয়াক হোসেন মজুমদার বলেন, সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক বিষয় হলো ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিশেষত স্বয়ং ইসলরায়েলের সবচেয়ে বড় দোসর আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে ও ইসলরায়েলের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য আন্দোলন করছে। অথচ আরবরা জাতি ভাই হয়েও আজ নির্বিকার, আরব শাসকগোষ্ঠীসহ জনগণ পর্যন্ত ভোগ-বিলাসে মত্ত হয়ে আছে। তাদের এই ভণ্ডমী একদিন তাদের পতনের কারণ হবে, ইনশাআল্লাহ। যে জাতি স্পেন বিজয় করতে পারে, সে জাতি আজ নিজের বোনের আর্তনাদ শুনতে পায় না। আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী নিয়ামত উল্লাহ ফারাবী বলেন, আমেরিকা গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালা সেজে আমাদের মানবাধিকার শেখাতে আসে, অথচ খোদ তাদের ঘরেই প্রতিনিয়ত মানবতা লঙ্ঘন হচ্ছে। ফিলিস্তিনিদের পক্ষে আন্দোলনকারীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে, অথচ মার্কিন প্রশাসন সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন দেখতে পায় না। গত ৮ মাসের জুলুমের করাল গ্রাসে আমাদের ৩৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি ভাই শহীদ হয়েছেন, শহীদদের কাতার আরও লম্বা হচ্ছে। কিন্তু বিশ্ব বিবেক এখনও আইসিইউতে রয়ে গেছে। আমরা আজকের মানববন্ধন থেকে ইসরাইল ও তাদের দোসরদের সকল পণ্য বয়কট ঘোষণা করছি।
০৬ মে, ২০২৪
X