বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের ইতিহাসে নতুন সাফল্যের গল্প রচিত হলো ইয়াঙ্গুনে। বাছাই পর্বে তিন ম্যাচের সবগুলোতে জয় পেয়ে এক ম্যাচ আগেই এশিয়া কাপের মূল পর্ব নিশ্চিত করেছিল দল। তবে শেষ ম্যাচটিকে কেবল আনুষ্ঠানিকতা ভাবেনি পিটার বাটলারের শিষ্যরা। বরং তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে ৭-০ গোলের দাপুটে জয় দিয়ে বাছাই মিশন শেষ করেছে তারা।
শুক্রবার (৫ জুলাই) মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধেই প্রতিপক্ষকে ধুঁইয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ঢঙে খেলা শুরু করে লাল-সবুজের মেয়েরা। মাত্র ৩ মিনিটেই স্বপ্না রানীর গোলে এগিয়ে যায় দল। এরপর ৬ ও ১৩ মিনিটে শামসুন্নাহারের জোড়া গোল বাংলাদেশের আধিপত্য আরও দৃঢ় করে। ১৬ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে মনিকা, ঋতুপর্ণা এবং তহুরা খাতুনের তিনটি টানা গোলে স্কোরলাইন হয়ে যায় ৬-০। প্রথমার্ধ শেষের ঠিক আগে ঋতুপর্ণা নিজের দ্বিতীয় গোলটি করলে ৭-০ ব্যবধানে বিরতিতে যায় দল।
দ্বিতীয়ার্ধে আর কোনো গোল না হলেও বাংলাদেশের মেয়েরা বল দখল ও আক্রমণে সমান তেজ দেখিয়েছে। তবে ম্যাচের শেষ দিকে কিছু সহজ সুযোগ নষ্ট করায় ডাবল ডিজিট গোলের ঐতিহাসিক কীর্তি অর্জন হয়নি।
বাছাই পর্বের তিন ম্যাচে বাংলাদেশ প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়েছে ১৬ বার। অন্যদিকে, নিজেদের জালে গোল খেয়েছে মাত্র একবার, মিয়ানমারের বিপক্ষে। প্রথম ম্যাচে বাহরাইনকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেয় ঋতুপর্ণারা। এরপর মিয়ানমারকে ২-১ ব্যবধানে হারায় তারা। আজকের বিশাল জয়ে পূর্ণ ৯ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ।
দুইবারের সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ নারী দল এবারই প্রথম এশিয়ান ফুটবল অঙ্গনে এতটা জোরালো বার্তা দিয়েছে। এশিয়া কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেওয়ায় আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের নারীদের ফুটবলের উত্থান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
দলটি আগামীকাল মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরবে। বাফুফে সূত্রে জানা গেছে, মধ্যরাতেই ঢাকায় পৌঁছানোর পর নারী দলকে সংবর্ধনা দেওয়ার আয়োজন করছে ফেডারেশন।
বাংলাদেশের এই জয় শুধু পরিসংখ্যান নয়, আত্মবিশ্বাসেরও মজবুত ভিত্তি। আগামী বছর মূল পর্বে এই আত্মবিশ্বাসই হতে পারে বড় হাতিয়ার, যা দেশের কোটি ফুটবলপ্রেমীর প্রত্যাশার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
মন্তব্য করুন