শিক্ষক-কর্মচারীর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে ঘাটতি ৫৬০ কোটি টাকা
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (এমপিওভুক্ত) শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে বছরে ঘাটতি ৫৬০ কোটি টাকারও বেশি। প্রতি বছরই এ ঘাটতি আরও বাড়ছে। পাশাপাশি বেসরকারি শিক্ষক ও কর্মচারীদের অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের সুবিধার ৬১ হাজারেরও বেশি আবেদন অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে। অর্থ সংকটে এসব আবেদন নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির আলোচনায় এ বিষয়টি উঠে এসেছে। সংসদীয় কমিটির বৈঠক সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ মার্চ অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদের শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রথম বৈঠকে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের সুবিধার আবেদন সময়মতো নিষ্পত্তি না হওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। ওই বৈঠকে শিক্ষা সচিব সোলায়মান খান নিজেই প্রসঙ্গটি তোলেন। সচিব বলেন, বেসরকারি শিক্ষক ও কর্মচারীদের অবসর সুবিধা খাতে বছরে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তার চেয়ে বরাদ্দ অনেক কম হওয়ায় প্রতি বছর ঘাটতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে অর্থাভাবে প্রায় ৩৪ হাজার আবেদন অনিষ্পন্ন অবস্থায় আছে। এগুলো নিষ্পত্তি করতে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি প্রয়োজন। আর কল্যাণ ট্রাস্টে অনিষ্পন্ন ২৭ হাজার আবেদন নিষ্পত্তি করতে প্রায় ২ হাজার কোটি ৪০০ কোটি টাকা প্রয়োজন। তিনি এ বিষয়ে কমিটির সহায়তা কামনা করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত কমিটির দ্বিতীয় বৈঠকে কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধার অনিষ্পন্ন আবেদন নিয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, কল্যাণ ট্রাস্টের সুবিধা পেতে বছরে গড়ে ১৬ হাজার ৮০০টি আবেদন জমা পড়ে। এসব আবেদন নিষ্পত্তির জন্য বছরে তাদের প্রয়োজন ৭২০ কোটি টাকা। কিন্তু এমপিও থেকে ৪ শতাংশ হারে কর্তন থেকে বছরে ৫৭৬ কোটি টাকা ও ব্যাংক সুদ থেকে বছরে ২৪ কোটিসহ বছরে তাদের আয় ৬০০ কোটি টাকা। বছরে তাদের ঘাটতি থাকছে ১২০ কোটি টাকা। বৈঠকে বর্তমানে দেশে ২৯ হাজার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (এমপিওভুক্ত) রয়েছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী সংসদীয় কমিটিকে বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটি গঠন, নিয়োগ, ছাত্র ভর্তি, দলাদলি, জমিজমাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের ভেতর থেকে বেশিরভাগ মামলা হয়ে থাকে। বর্তমানে প্রায় ১২ হাজারের বেশি মামলা চলমান আছে। এ কারণে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রতিমন্ত্রী শামসুন নাহার, মো. মোতাহার হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মো. আবদুল মজিদ, আহমদ হোসেন, মো. বিপ্লব হাসান এবং মো. আজিজুল ইসলাম অংশ নেন।
১৯ এপ্রিল, ২০২৪

মেসির অবসর ভাবনা
শিগগির অবসরের কথা ভাবছেন না লিওনেল মেসি। খেলাটা যতদিন উপভোগ করবেন; ক্লাব ও সতীর্থদের যতদিন সহায়তা করতে পারবেন, ততদিন ফুটবল চালিয়ে যাবেন আর্জেন্টাইন এ সুপারস্টার। ‘এমবিসি বিগ টাইম পডকাস্ট’-এ মেসি বলেছেন, অবসর নেওয়ার বিষয়টি বয়সের ওপর নির্ভর করছে না। আমি কেমন বোধ করছি, তার ওপর নির্ভর করছে আমার অবসর গ্রহণের বিষয়টি। আর্জেন্টাইন তারকা ইন্টার মিয়ামির হয়ে নতুন মৌসুম শুরু করেছেন। আগামী জুনে জাতীয় দলের জার্সিতে কোপা আমেরিকা মুকুট ধরে রাখার মিশনে নামবেন মেসি। ৩৬ বছর বয়সেও তিনি ক্লাব ও জাতীয় দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একজন খেলোয়াড়। মেসিকে দলভুক্ত করার পর গত মৌসুমে প্রথম ট্রফি জিতেছে ইন্টার মিয়ামি। কিন্তু ডেভিড বেকহামের মালিকানাধীন ক্লাবটি এমএলএস প্লে-অফে যেতে ব্যর্থ হয়েছে। এ মৌসুমে লিগ কাপ ধরে রাখার পাশাপাশি এমএলএস প্লে-অফ মিশনে মেসি সঙ্গী হিসেবে পাচ্ছেন সাবেক সতীর্থ জর্দি আলবা, সার্জিও বুসকেটস ও লুইস সুয়ারেজকে। ইন্টার মিয়ামি কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপেও টিকে আছে। এখন পর্যন্ত জাতীয় দল ও ক্লাবের হয়ে মেসির সবকিছু মসৃণ গতিতেই এগোচ্ছে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলে ৬ ম্যাচ শেষে শীর্ষে আছে আর্জেন্টিনা। এখন পর্যন্ত ৩ গোল করেছেন মেসি। কনকাকাফ অঞ্চলের ৬ দল নিয়ে জুনে শুরু হতে যাওয়া কোপা আমেরিকায় দলকে নেতৃত্ব দেবেন সর্বকালের অন্যতম সেরা এ ফুটবলার। আগামী জুনে ৩৭ বছরে পা দিতে যাওয়া মেসি নিজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বলছিলেন, ‘আমি জানি সে সময়টা দ্রুতই আসতে যাচ্ছে, যখন আমি প্রত্যাশিত নৈপুণ্য দেখাতে পারব না। যখন দেখব আমি দলকে ও সতীর্থদের সহায়তা করতে পারছি না, খেলাটাও উপভোগ করতে পারছি না, তখন বুট জোড়া তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নেব।’ একসময় জাতীয় দলে মেসির নিবেদন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এ কারণে অভিমানে জাতীয় দল থেকে অবসরের ঘোষণাও দিয়েছিলেন এ সুপারস্টার। অভিমান ভেঙে চিরচেনা সাদা-আকাশি ডোরাকাটা জার্সিতে ফিরেছেন। বাকিটা তো ইতিহাস—ফিনালেসিমা, ২০২১ সালের কোপা আমেরিকার পর ২০২২ সালে বিশ্বকাপও জিতেছেন। নিজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে মেসি আরও বলেন, ‘আমি আত্মসমালোচক। আমি জানি, কখন ভালো খেলতে সমর্থ। কখন ভালো খেলার মতো অবস্থায় থাকি না, সেটাও বুঝতে পারি। আমি যখন অনুভব করব খেলা ছাড়া উচিত, তখনই অবসরের ঘোষণা দেব। এ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বয়স মোটেও ভূমিকা রাখবে না।’ ২০২৫ সালের শেষদিকে ইন্টার মিয়ামির সঙ্গে মেসির চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। চূড়ান্ত অবসরের আগে শৈশবের ক্লাব নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজের হয়ে খেলার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন মেসি। সে হিসেবে সহসাই অবসরের সম্ভাবনা নেই আর্জেন্টাইন তারকার।
২৯ মার্চ, ২০২৪

অবসর গুঞ্জনে যা বললেন মেসি
কাতার বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকে আতঙ্কে আছেন আর্জেন্টাইন সমর্থকরা। যে কোনো সময় অবসরের ঘোষণা দিতে পারেন তাদের প্রাণভোমরা লিওনেল মেসি। এ নিয়ে অনেকবার কথা বলতে হয়েছে আর্জেন্টাইন অধিনায়ককে। এরপরও থামছে না আটবারের বর্ষসেরা ফুটবলারের অবসর গুঞ্জন। যেখানে সাক্ষাৎকার দেন, সেখানেই তাকে কথা বলতে হয় অবসর নিয়ে। সম্প্রতি এমবিসি-এর ‘বিগ টাইম পডকাস্টে’ আবারও কথা বলেছেন নিজের ফুটবল ভবিষ্যৎ নিয়ে। মেসি বলেছেন, ‘সেই মুহূর্তটা কেমন হবে আমি জানি, যখন বুঝতে পাব আর পারফর্ম করতে পারছি না। বুঝতে পারব যে, ফুটবলে নিজ আর উপভোগ করছি না, সতীর্থদের কোনো সাহায্য করতে পারছি না তখনই এই (অবসরের) সিদ্ধান্ত নেব।’ এ সময় আর্জেন্টাইন অধিনায়ক আরও বলেন, ‘আমি ভীষণ আত্মসমালোচক। আমি জানি, কখন আমি ভালো (অবস্থায় থাকি), কখন খারাপ, কখন ভালো খেলি, কখন বাজে খেলি...এবং যখন অনুভব করব পদক্ষেপটা নেয়ার সময় এসেছে, বয়সের কথা না ভেবেই সেটা নেব। ভালো অনুভব করলে, আমি সবসময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই, কারণ আমি এটাই পছন্দ করি এবং জানি, সেটা কীভাবে করতে হয়।’ বর্তমান সময়ের সেরা তারকা আরও বলেন, ‘খেলাধুলার দিক থেকে ক্যারিয়ার সবকিছু অর্জনের, স্বপ্নপূরণের সৌভাগ্য হয়েছে আমার। সত্যি বলতে পেশাদার ফুটবলার হিসেবে ও ব্যক্তিগত জীবনে, পরিবার ও বন্ধুবান্ধব মিলিয়ে এর বেশি আমি চাইতে পারতাম না। সৃষ্টিকর্তা আমাকে যা দিয়েছেন, সেটা অনেক এবং আমি সবসময় তা উপভোগের চেষ্টা করি।’ আগামী ২০ জুন শুরু হবে কোপা আমেরিকা আসর। মহাদেশীয় এই আসরের শিরোপা ধরে রাখার মিশন আর্জেন্টিনার। ধারণা করা হচ্ছে লাতিন আমেরিকার ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের এই টুর্নামেন্টের পর অবসর নেবেন মেসি। তবে সাক্ষাৎকারে এ নিয়ে কোনো কথা বলেননি আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।
২৮ মার্চ, ২০২৪

টাইগারদের বিপক্ষে টেস্টে ফিরছেন অবসর নেওয়া লঙ্কান তারকা
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বেশ বড় নামই বলা চলে লঙ্কান অলরাউন্ডার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বড় এই নাম আরো বেশিদিন সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ফোকাস করার জন্য মাত্র ৪টি টেস্ট খেলে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছিলেন। তবে লঙ্কান ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য খুশির খবর- অবসর ভেঙে বাংলাদেশের বিপক্ষে চলমান সিরিজের টেস্ট দিয়েই ফিরছেন হাসারাঙ্গা। তাকে রেখেই ১৭ সদস্যের টেস্ট স্কোয়াড ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড (এসএলসি)। হাসারাঙ্গা শেষ টেস্ট খেলেছিলেন বাংলাদেশের বিপক্ষেই। ২০২১ সালে পাল্লেকেল্লে টেস্টের পর সিলেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট দিয়েই ফিরছেন তিনি। হাসারাঙ্গার খেলা ৪ টেস্টে তার শিকার ৪ উইকেট এবং ১৯৬ রান। হাসারাঙ্গা ছাড়াও লঙ্কানদের টেস্টে দলে থাকছে নামছে শক্তিশালী স্পিন আক্রমণ। স্কোয়াডে আছেন প্রবাথ জয়সুরিয়া, রমেশ মেন্ডিস, অলরাউন্ডার নিশান পেরিস ও কামিন্দু মেন্ডিস। আগামী ২২ মার্চ থেকে সিলেটে শুরু হবে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার দুই টেস্টের সিরিজ। পরবর্তীতে ৩১ মার্চ চট্টগ্রামে হবে দ্বিতীয় টেস্ট। এদিকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারের পর শ্রীলঙ্কাকে শেষ ওয়ানডেতে হারিয়ে ২-১ এ ওয়ানডে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। ফরম্যাটটিতে লঙ্কান দলে ছিলেন না ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। তার নেতৃত্বে সফরকারী দলটি টেস্টে টাইগারদের মোকাবিলা করবে। যেখানে ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেওয়া কুশল মেন্ডিস থাকছেন ধনাঞ্জয়ার সহকারী হিসেবে। এছাড়া টেস্ট সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে আসছেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে তিনি নিজ দেশে ফিরে গিয়েছিলেন। শ্রীলঙ্কা টেস্ট স্কোয়াড : ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা (অধিনায়ক), কুশল মেন্ডিস, দিমুথ করুণারত্নে, নিশান মাদুশকা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, দিনেশ চান্দিমাল, সাদিরা সামারাবিক্রমা, কামিন্দু মেন্ডিস, লাহিরু উদারা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, প্রবাথ জয়সুরিয়া, রমেশ মেন্ডিস, নিশান পেরিস, কাসুন রাজিথা, বিশ্ব ফার্নান্দো, লাহিরু কুমারা ও চামিকা গুনাসেকারা।
১৯ মার্চ, ২০২৪

রোমান সানার ‘অভিমানী’ অবসর
হঠাৎ করেই বাংলাদেশ জাতীয় আরচারি দল থেকে অবসর ঘোষণা করেছেন রোমান সানা। অবসরের কারণ ‘ব্যক্তিগত’। বাংলাদেশ আরচারি ফেডারেশনকে লেখা চিঠিতে ‘ব্যক্তিগত’ কারণে অবসরের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি। আরচারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাজীবউদ্দিন আহমেদও সংবাদমাধ্যমকে এ কথাই বলেছেন। তবে রোমান সানার অবসরের আসল কারণ, ‘জাতীয় দলে আগের মতো সুযোগ-সুবিধা নেই, কোনো কিছু নেই।’ কোনো কিছু নেই বলতে সংবাদমাধ্যমে আরচারদের বেতনের কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। জাতীয় দলে মাসে ৩ হাজার টাকা বেতনকে কটাক্ষ করে রোমান সানা বলেন, ‘দুই হাজার টাকা ঘরভাড়া—হয় না। আট ঘণ্টা কঠোর অনুশীলন করে মাস শেষে দৈনিক ১০০ টাকা, আর বিদেশ গেলে ১০০ ডলার। প্রতিদিন ১০-১৫ ডলার করে হাতখরচা। এসব আর ভালো লাগছে না।’ কালবেলা থেকে রোমান সানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে একরাশ অভিমান ভরা কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার আরও লম্বা সময় জাতীয় দলে খেলার ইচ্ছা ছিল। ২০২৮ সালের অলিম্পিক অবধি খেলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সবার তো সবকিছু ভাগ্যে থাকে না। কী আর করব। ভাগ্যের কাছে হেরে গেলাম। হেরে যেতে হয়। বলুন, খেলব কীসের আশায়? ‘অবসরের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কোনো সুযোগ আছে কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে রোমান সানা বলেন, ‘দেখুন আমার ১৪ বছরের ক্যারিয়ার। অনেক পরিশ্রম করে এখানে এসেছি। অনেক দেখেছি। অনেক কষ্ট করেছি। এতকিছুর বিনিময়ে আমি কী পেলাম? এ প্রশ্নটা কিন্তু আসবেই। আসলে লম্বা সময় ধরে একজন কোনো কিছু নিয়ে যখন কঠোর পরিশ্রম করে, তখন দিন শেষে সেখান থেকে সে কিছু মুনাফা চাই। জীবন ধারণের জন্য লাভবান হতে চাই। এটা সব পেশার মানুষের সাধারণ চাওয়া। পরিশ্রমের ফল কী হবে—এ প্রশ্নের উত্তরে আমি আশাবাদী হতে পারি না। কোনো কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।’ আরচার ফেডারেশনের সভাপতি কাজী রাজীবউদ্দিন আহমেদ প্যারা আরচারির কাজে বর্তমানে দুবাইয়ে রয়েছেন। তিনি দেশের একটি সংবাদমাধ্যমকে রোমান সানার অবসর নিয়ে বলেছেন, ‘রোমান ব্যক্তিগত কারণে জাতীয় দলের হয়ে আর খেলতে চায় না। আমাদের বিষয়টি জানিয়েছে। এখানে মান-অভিমানের কিছু নেই। সে ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করেছে।’ রোমান সানার বয়স এখন ৩০ বছর। এটা খেলা ছাড়ার বয়স নয়। প্রায় তিন সপ্তাহ আগে তিনি ফেডারেশনকে চিঠি দিয়েছিলেন। এরপর সংবাদমাধ্যমকে কাঁধের ইনজুরির কথা উল্লেখ করে চাপ নিতে পারছেন না বলেও জানান। আরচারি ছেড়ে ভবিষ্যতে কী করবেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে একটি সংবাদমাধ্যমকে রোমান সানা বলেন, ‘ভবিষ্যতের জন্য কিছু একটা করতে হবে। টাকা-পয়সা তো দরকার ভবিষ্যতের জন্য। ব্যবসা-বাণিজ্য করব।’
০৪ মার্চ, ২০২৪

হঠাৎ করেই জাতীয় দল থেকে রোমান সানার অবসর
একদম হঠাৎ করেই বাংলাদেশের আর্চারির পোস্টার বয় রোমান সানা জাতীয় দল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশনকে চিঠি দিয়ে তার অবসরের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি। অবসরের কারণ হিসেবে অবশ্য চিঠিতে ব্যক্তিগত কারণকে উল্লেখ করেছেন তিনি। তার অবসরের চিঠি পাওয়ার বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন আর্চারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাজিবউদ্দিন আহমেদ।   রাজিব উদ্দিন আহমেদ প্যারা আরচ্যারির কাজে বর্তমানে দুবাইতে রয়েছেন। সেখান থেকে তিনি দেশের একটি সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘রোমান ব্যক্তিগত কারণে জাতীয় দলের হয়ে আর খেলতে চায় না। আমাদের বিষয়টি জানিয়েছে।’ রোমানের সঙ্গে অবশ্য ফেডারেশনের বেশ কিছু দিন ধরেই দূরত্ব ছিল। সেই অভিমান থেকেই এই সিদ্ধান্ত কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এখানে মান অভিমানের কিছু নেই। সে ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করেছে।’ বেশ কিছুদিন ধরেই অবশ্য বাজে পারফরম্যান্সের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলেন রোমান। যে কারণে গত ফেব্রুয়ারিতে ইরাকের বাগদাদে অনুষ্ঠিত এশিয়ান আর্চারি প্রতিযোগিতার বাংলাদেশ দলে রাখা হয়নি তাকে। খুলনায় জন্মগ্রহণ করা রোমান সানা ২০১৯ সালে বাংলাদেশের প্রথম আর্চার হিসেবে বিশ্ব আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ পদক জেতেন। একই বছর ফিলিপাইনে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপ র‌্যাঙ্কিং টুর্নামেন্টের ব্যক্তিগত ইভেন্টেও স্বর্ণপদক জেতেন।  ২০২০ টোকিও অলিম্পিকে রোমান সানা নিজ যোগ্যতায় খেলেছিলেন। যা বাংলাদেশের জন্য বিশাল অর্জন ছিল।
০৩ মার্চ, ২০২৪

তামিমের অবসর ইস্যুতে মুখ খুললেন হাথুরু
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালকে নিয়েই গত বছর পুরোটা সময়ই উত্তাল ছিল ক্রিকেটপাড়া। এই নিয়ে অবশ্য টাইগার ক্রিকেটে কম জল ঘোলা হয়নি। অধিনায়কত্ব ছাড়া থেকে শুরু করে জাতীয় দল থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার মতো ঘটনায় তামিমই ছিলেন দেশের ক্রীড়াঙ্গনের প্রধান শিরোনাম। দেশের ক্রিকেটের এতবড় ঘটনার পরেও টাইগারদের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের দাবি তিনি না কি কিছুই জানতেন না। বর্তমানে বিপিএলের প্লে-অফ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তামিম ইকবাল। ফ্রাঞ্চাইজি এই টুর্নামেন্টের এখন পর্যন্ত সেরা রান সংগ্রাহক হলেও তাকে জাতীয় দলের জার্সিতে দেখা যাবে কি না তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ। সম্প্রতি ক্রিকেট বিষয়ক এক ওয়েবসাইটে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তামিমকে নিয়ে কথা বলেছেন কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহে। ঘরের মাটিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে আফগানিস্তানের সিরিজ চলাকালীন ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। এই বিষয়ে জানতে চাইলে হাথুরুসিংহে বলেন, ‘কোন ঘটনা? আমি জানতে চাই। আমি এর আগে কখনো এই বিষয়ে শুনিনি। সত্য বলতে, আমি আজ পর্যন্ত জানি না সে কেন অমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।’ অবশ্য ওই ঘটনার পরে তামিমের সঙ্গে এখন পর্যন্ত কোনো কথা বলেননি হাথুরু। তামিমকে নিয়ে শ্রীলঙ্কান এই কোচ আরও বলেন, ‘সে অবসর নিয়েছে এবং সেটি এমন একটি পর্যায় যেখানে আমরা কিছুই করতে পারি না। এরপর আমার মনোযোগ রয়েছে দলের দিকে। আপনি জানেন, আমি সবসময় এই কথা বলেছি, দলের চেয়ে কোনো ব্যক্তিই বড় নয়।’ এ দিকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট বিপিএল নিয়েও কথা বলেছেন জাতীয় দলের এই কোচ। বিপিএলকে সাকার্সের সঙ্গে তুলনা করেছেন তিনি। সেইসঙ্গে টুর্নামেন্টের কার্যকারিতার মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন হাথুরুসিংহে।
২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

এমপিওভুক্তদের অবসর সুবিধা দিতে হবে ছয় মাসের মধ্যে
এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীর বেতনের ১০ শতাংশ কেটে রাখার বিপরীতে আর্থিক ও অবসর সুবিধা অবসরের ছয় মাসের মধ্যে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। অবসর কল্যাণ বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের নামে এ অর্থ কেটে রাখা হয়। এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চ এ রায় দিয়েছেন। হাইকোর্ট বলেন, এটি চিরন্তন সত্য যে, শিক্ষকদের রিটায়ারমেন্ট বেনিফিট পেতে বছরের পর বছর ঘুরতে হয়। এই হয়রানি থেকে তারা কোনোভাবেই পার পান না। একজন প্রাথমিকের শিক্ষক কত টাকা বেতন পান, সেটিও বিবেচনায় নিতে হবে। এজন্য তাদের অবসর ভাতা ছয় মাসের মধ্যে দিতে হবে। এই অবসর ভাতা পাওয়ার জন্য শিক্ষকরা বছরের পর বছর দ্বারে দ্বারে ঘুরতে পারেন না। রিটকারী শিক্ষক ও কর্মচারীদের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মামুন চৌধুরী। তথ্য অনুযায়ী, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট প্রবিধানমালা, ১৯৯৯-এর প্রবিধান-৬ এবং বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা প্রবিধানমালা, ২০০৫-এর প্রবিধান-৮ অনুযায়ী শিক্ষক ও কর্মচারীদের মূল বেতনের ২ শতাংশ এবং ৪ শতাংশ মোট ৬ শতাংশ কর্তনের বিধান ছিল। যার বিপরীতে শিক্ষকদের ট্রাস্টের তহবিল থেকে শিক্ষক ও কর্মচারীদের কিছু আর্থিক সুবিধা প্রদান করা হতো। কিন্তু ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল বিধানটি সংশোধন করে ৪ শতাংশ ও ৬ শতাংশ মোট ১০ শতাংশ কর্তনের বিধান করে দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তবে অতিরিক্ত অর্থ কর্তনের বিপরীতে শিক্ষক ও কর্মচারীদের কোনো বাড়তি আর্থিক সুবিধার বিধান করা হয়নি। প্রজ্ঞাপন চ্যালেঞ্জ করে বিপ্লব কান্তি দাস, তোফায়েল সরকারসহ ১৩১ শিক্ষক-কর্মচারী হাইকোর্টে রিট করেন।
২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

সম্পাদকীয় / অবসর ভাতায় বিড়ম্বনা
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ভাতা পাওয়ার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘোরার বিষয়টি বহুল আলোচিত। বস্তুত তহবিল ঘাটতির কারণেই পেনশনের জন্য এসব শিক্ষক-কর্মচারীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কয়েক দশক থেকেই বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের পেনশন প্রাপ্তিবিষয়ক জটিলতা যে পর্যায়ে ছিল, বর্তমানেও সেই একই পর্যায়ে রয়ে গেছে। অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি এবং এর কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরিজীবনের শুরু থেকেই এমপিও প্রাপ্তি, চাকরি স্থায়ীকরণ ইত্যাদি বিষয়ে নানা ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তার পরও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ার দায়িত্ব তারা পালন করেছেন নিষ্ঠার সঙ্গে। শেষ বয়সে এসে শিক্ষক-কর্মচারীরা যেন আর ভোগান্তির শিকার না হন, সেটি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। তবে সরকারের আন্তরিকতায় এ সংকট দিন দিন কমছে। শিক্ষকদের দুঃখ দূর করতে নিয়মিত বাজেটে বরাদ্দ দেওয়া দরকার বলে মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞ। গতকাল কালবেলায় প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা চাকরিজীবন শেষে অবসরে গেলেও ঠিক সময়ে টাকা পাচ্ছেন না। তিন বছর সময় লেগে যাচ্ছে তাদের প্রাপ্য টাকা পেতে। টাকা চাইলেই তহবিল সংকটের অজুহাত দেখানো হচ্ছিল। এই সংকট কাটাতে মাধ্যমিক থেকে স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট হারে টাকা সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এরই মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ শুরু করা হয়েছে। চলতি বছর দ্বিতীয়বারের মতো টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু গত দুই বছর টাকা তোলা হলেও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) সেই টাকা জমা দিচ্ছে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো গত বছরের তোলা টাকা পাঠায়নি। শিক্ষার্থীদের থেকে তোলা টাকা মাউশিতে পাঠাতে তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আবারও চিঠি দেওয়া হবে। চাপ কমাতে ষষ্ঠ শ্রেণির রেজিস্ট্রেশনের সময় এই (অবসর ও কল্যাণ) খাতের টাকা যাতে তোলা যায়, সেই দায়িত্ব শিক্ষা বোর্ডকে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ১৯৯০ সাল থেকে কল্যাণ ট্রাস্টের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ২০০৫ সাল থেকে শুরু হয়েছে অবসর সুবিধা দেওয়া। এই দুই সুবিধা বাবদ শিক্ষকরা চাকরিকাল অনুযায়ী এককালীন অর্থ পান। আইন অনুযায়ী, শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও (বেতনের সরকারি অংশ) থেকে চাঁদা হিসেবে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কেটে রাখা হয়। এর মধ্যে অবসর সুবিধা বোর্ড ৬ শতাংশ এবং কল্যাণ ট্রাস্ট ৪ শতাংশ পায়। এর বাইরে বিশেষ বা থোক বরাদ্দ এবং বিভিন্ন সময়ে সরকারের দেওয়া সিড মানির (গচ্ছিত অর্থ) লভ্যাংশ পায় সংস্থা দুটি। আমরা মনে করি, শিক্ষা খাতে সরকারের বিনিয়োগ আরও বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সংকট সৃষ্টি হতে পারে। শিক্ষার মান উন্নয়নের সঙ্গে শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়নের বিষয়টিও জড়িত। শিক্ষকদের কাঙ্ক্ষিত বেতন-ভাতা প্রদান করা না হলে শিক্ষার মান বাড়বে কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। শিক্ষকতা পেশায় যাতে মেধাবীরা আগ্রহী হন, সে জন্য শিক্ষকদের সার্বিক জীবনমানের উন্নয়নে পদক্ষেপ নিতে হবে। সব পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চাকরি আরও আকর্ষণীয় করতে হবে। এতে বেশি মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আগ্রহী হবে। অন্যথায় এ খাতের লক্ষ্য অর্জনে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে।
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

সম্পাদকীয় / অবসর ভাতায় বিড়ম্বনা
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ভাতা পাওয়ার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘোরার বিষয়টি বহুল আলোচিত। বস্তুত তহবিল ঘাটতির কারণেই পেনশনের জন্য এসব শিক্ষক-কর্মচারীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কয়েক দশক থেকেই বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের পেনশন প্রাপ্তিবিষয়ক জটিলতা যে পর্যায়ে ছিল, বর্তমানেও সেই একই পর্যায়ে রয়ে গেছে। অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি এবং এর কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরিজীবনের শুরু থেকেই এমপিও প্রাপ্তি, চাকরি স্থায়ীকরণ ইত্যাদি বিষয়ে নানা ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তার পরও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ার দায়িত্ব তারা পালন করেছেন নিষ্ঠার সঙ্গে। শেষ বয়সে এসে শিক্ষক-কর্মচারীরা যেন আর ভোগান্তির শিকার না হন, সেটি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। তবে সরকারের আন্তরিকতায় এ সংকট দিন দিন কমছে। শিক্ষকদের দুঃখ দূর করতে নিয়মিত বাজেটে বরাদ্দ দেওয়া দরকার বলে মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞ। গতকাল কালবেলায় প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা চাকরিজীবন শেষে অবসরে গেলেও ঠিক সময়ে টাকা পাচ্ছেন না। তিন বছর সময় লেগে যাচ্ছে তাদের প্রাপ্য টাকা পেতে। টাকা চাইলেই তহবিল সংকটের অজুহাত দেখানো হচ্ছিল। এই সংকট কাটাতে মাধ্যমিক থেকে স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট হারে টাকা সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এরই মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ শুরু করা হয়েছে। চলতি বছর দ্বিতীয়বারের মতো টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু গত দুই বছর টাকা তোলা হলেও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) সেই টাকা জমা দিচ্ছে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো গত বছরের তোলা টাকা পাঠায়নি। শিক্ষার্থীদের থেকে তোলা টাকা মাউশিতে পাঠাতে তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আবারও চিঠি দেওয়া হবে। চাপ কমাতে ষষ্ঠ শ্রেণির রেজিস্ট্রেশনের সময় এই (অবসর ও কল্যাণ) খাতের টাকা যাতে তোলা যায়, সেই দায়িত্ব শিক্ষা বোর্ডকে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ১৯৯০ সাল থেকে কল্যাণ ট্রাস্টের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ২০০৫ সাল থেকে শুরু হয়েছে অবসর সুবিধা দেওয়া। এই দুই সুবিধা বাবদ শিক্ষকরা চাকরিকাল অনুযায়ী এককালীন অর্থ পান। আইন অনুযায়ী, শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও (বেতনের সরকারি অংশ) থেকে চাঁদা হিসেবে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কেটে রাখা হয়। এর মধ্যে অবসর সুবিধা বোর্ড ৬ শতাংশ এবং কল্যাণ ট্রাস্ট ৪ শতাংশ পায়। এর বাইরে বিশেষ বা থোক বরাদ্দ এবং বিভিন্ন সময়ে সরকারের দেওয়া সিড মানির (গচ্ছিত অর্থ) লভ্যাংশ পায় সংস্থা দুটি। আমরা মনে করি, শিক্ষা খাতে সরকারের বিনিয়োগ আরও বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সংকট সৃষ্টি হতে পারে। শিক্ষার মান উন্নয়নের সঙ্গে শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়নের বিষয়টিও জড়িত। শিক্ষকদের কাঙ্ক্ষিত বেতন-ভাতা প্রদান করা না হলে শিক্ষার মান বাড়বে কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। শিক্ষকতা পেশায় যাতে মেধাবীরা আগ্রহী হন, সে জন্য শিক্ষকদের সার্বিক জীবনমানের উন্নয়নে পদক্ষেপ নিতে হবে। সব পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চাকরি আরও আকর্ষণীয় করতে হবে। এতে বেশি মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আগ্রহী হবে। অন্যথায় এ খাতের লক্ষ্য অর্জনে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে।
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X