‘আমার ছেলে কই, আমি আছি আমার ছেলে তো নেই’ এভাবেই বিলাপ করতে করতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন নিহত বিমানবাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদের মা।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) বিকেলে মানিকগঞ্জে আসিমের বাসায় এ দৃশ্য দেখা যায়।
নিহত আসিম জাওয়াদের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার গোপালপুর গ্রামে। তার বাবা আমান উল্লাহ একজন চিকিৎসক। তার মা নিলুফা খানম সাভার ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ছিলেন। তারা গত ৩ বছর ধরে শহরের গোল্ডেন টাওয়ারে নিজস্ব ফ্ল্যাটে থাকেন। চাকরির কারণে আসিম তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে চট্টগ্রামে থাকতেন। তাদের ছয় বছরের একটি কন্যা ও এক বছরের ছেলে রয়েছে।
আসিমের মানিকগঞ্জের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ‘একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে বিলাপ করছেন মা। বলছেন, ‘আমার ছেলে প্রতিদিন ফোন করে আমাকে খাবারের কথা মনে করে দেয়। কিন্তু আজ এখন পর্যন্ত কোনো ফোন করেনি। কখন আসবে আসিমের ফোন। বাড়িতে এত লোক কেন। আমার ছেলে কই, আমি আছি আমার ছেলে তো নেই।’
আসিমের খালাত ভাই মশিউর রহমান জানান, আসিম ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ এয়ারফোর্স অ্যাকাডেমিতে (বাফা) যোগদান করেন। তিনি ২০১১ সালে বিমানবাহিনীতে অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড় ১২টার দিকে পতেঙ্গার বানৌজা ঈসা খাঁ হাসপাতালে (নেভি হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এর আগে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। বিমান বিধ্বস্তের আগে নিরাপদেই প্যারাসুট দিয়ে নেমে পড়েন পাইলট স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ। কিন্তু সাহসী এই বীরকে বাঁচানো যায়নি।
চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তাসলিম আহমেদ বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিমানবাহিনীর জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের পর বিমানটি দুর্ঘটনায় পড়ে। এ সময় বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে পাইলট ও কো-পাইলট প্যারাসুট দিয়ে নেমে আসেন।
মন্তব্য করুন