‘এম ডিনা’ কাপ ইউরোপ ক্রিকেটের চ্যাম্পিয়ন বেলজিয়াম
আইসিসি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ‘এম ডিনা’ কাপ ইউরোপ ক্রিকেটের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বেলজিয়াম। স্থানীয় সময় রোববার (১২ মে) ফ্রান্সের দ্রো ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে বেলজিয়াম ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ১৫ রানে স্বাগতিক ফ্রান্সকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। এর আগে, টস জিতে ফ্রান্স ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে সব কটি উইকেটে হারিয়ে ১৩৯ রান করে। জবাবে বেলজিয়াম ১৪.২ ওভারে ৫ উইকেটে ১১২ রান করলে বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মাঠ খেলার উপযোগী না হওয়ায় ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে (ডিএলএস) বেলজিয়ামকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। খেলা শেষে বিজয়ী এবং ম্যাচ অফিসিয়ালদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন টুর্নামেন্টের পৃষ্ঠপোষক শাহ্ গ্রুপের চেয়ারম্যান সাত্তার আলী সুমন, ফ্রান্স ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক জুবায়ের আহমেদ এবং ফ্রান্স ক্রিকেট বোর্ডের সদস্য ফাতেমা খাতুন মরিয়ম।  এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্স ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট প্রভু বালানসহ আরও অনেকে। টুর্নামেন্টের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে ফ্রান্সের বাংলাদেশি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান শাহ্ গ্রুপ। 
১১ ঘণ্টা আগে

রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশের পাশে আছে ইউরোপ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও পশ্চিম ইউরোপের দেশসমূহ বাংলাদেশের পাশে আছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বৃহস্পতিবার (২ মে) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এ তথ্য জানান তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি দেশটির ওপর আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করে চলেছে। ক্রমাগত কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও পশ্চিম ইউরোপের দেশসমূহ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে তাদের টেকসই, নিরাপদ ও দ্রুত প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারকে সব প্রকার মানবিক ও রাজনৈতিক সহায়তা ও সমর্থন প্রদান অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, সৌদি আরবসহ আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার দেশসমূহের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। যার মধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও ওই দেশসমূহে বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধিতে দূতাবাসের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ‘অর্থনৈতিক কূটনীতি’ অনুসরণ করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও ভাবমূর্তি বৃদ্ধি প্রধান লক্ষ্য। মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও অন্যান্য দেশে নতুন শ্রমবাজার বৃদ্ধিসহ বাংলাদেশ থেকে দক্ষ ও আধা দক্ষ শ্রমশক্তি রপ্তানিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সঙ্গে একযোগে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীর সঠিক দিকনির্দেশনায় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরলস প্রচেষ্টায় অনেক দেশের সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন হয়েছে। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কূটনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে ল্যাটিন এবং আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলোতে সাম্প্রতিক সময়ে আমরা বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছি। দক্ষিণ আমেরিকান দেশগুলো যেমন, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে, চিলি, উরুগুয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য খুবই সীমিত পরিমাণে হয়ে থাকে, যেমনটি রয়েছে আফ্রিকার দেশগুলোতেও। অথচ বাণিজ্যসহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নানা ক্ষেত্রে এ অঞ্চলগুলো অনেক সম্ভাবনাময়। তাই নিয়মিত অংশীদারদের বাইরেও এখন সম্ভাবনাময় ও অনুদ্ঘাটিত গন্তব্যসমূহের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্রাজিল, মেক্সিকো, এসোয়াতিনি, বতসোয়ানা, দক্ষিণ আফ্রিকায় এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় উচ্চপর্যায়ের সফর অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রত্যেকটি সফরেই বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করা গেছে। 
০২ মে, ২০২৪

ইউরোপ ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে : ম্যাখোঁ
ইউরোপ ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এ ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ইউরোপের নেই সতর্কবার্তা দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাখোঁ। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  ম্যাখোঁ বলেন, সামরিক, অর্থনৈতিক ও অন্যান্য চাপ ইউরোপের ২৭ দেশকে দুর্বল করে দিতে পারে। ইউরোপের বর্তমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ভিত্তিতে প্যারিসের সোরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন।  ইউরোপের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় জোরদারের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই মহাদেশের মার্কিনিদের অধীন হওয়া উচিত হবে না। এ সময় তিনি বিশ্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দৃঢ় অবস্থানের রূপরেখা প্রদান করেন।  ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইউরোপের সাইবার নিরাপত্তা বৃদ্ধি, ব্রেক্সিটের পর ব্রিটেনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মীদের সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য ইউরোপীয় একাডেমি গঠনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে কোনোভাবে সফল হতে দেওয়া যাবে না।  ম্যাখোঁ বলেন, প্রতিরক্ষা শিল্প স্থাপন  করতে হবে। এছাড়া কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই কাজে দেবে না। কয়েক দশক ধরে এ খাতে বিনিয়োগ কম হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সামরিক সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া উচিত।  ম্যাখোঁ আরও বলেন, অধিক পরিমাণে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরি করতে হবে। এটি দ্রুত করতে হবে। আর  ইউরোপীয়দের জন্য এসব প্রস্তুত করতে হবে। ইউরোপকে দেখাতে হবে যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের অধীন নয়।  বর্তমানে মার্কিন সামরিক ছত্রছায়ার কোনো বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প নেই বলে অনেক ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্মকর্তা মনে করেন।   
২৬ এপ্রিল, ২০২৪

ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রকে একে অপরের প্রয়োজন
টানা দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে রুশ আগ্রাসন বন্ধের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রকে একে অপরের প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন সামরিক জোট ন্যাটোর প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ। এমনকি ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্র ‘একসঙ্গে শক্তিশালী’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। খবর বিবিসির। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রকে একে অপরের প্রয়োজন এবং তারা ‘একসঙ্গে শক্তিশালী’ বলে মন্তব্য করেছেন ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ। মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক এই জোটের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপকে নিরাপত্তা দিলেও ওয়াশিংটনেরও তার ইউরোপীয় মিত্রদের সামরিক, গোয়েন্দা এবং কূটনৈতিক সুবিধার প্রয়োজন রয়েছে। স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘আমি একা আমেরিকাতে যেমন বিশ্বাস করি না, ঠিক তেমনি একা ইউরোপেও বিশ্বাস করি না। আমি ন্যাটোতে আমেরিকা এবং ইউরোপ একসঙ্গে বিশ্বাস করি, কারণ আমরা একসঙ্গে শক্তিশালী এবং নিরাপদ।’ বিবিসি বলছে, ন্যাটোপ্রধানের এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে, যখন সামরিক এই জোটটি ইউক্রেনে দীর্ঘমেয়াদি সামরিক সহায়তা দেওয়ার জন্য পাঁচ বছরে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল বিবেচনা করছে, যাতে যুক্তরাষ্ট্র বা ন্যাটোর সদস্য অন্য কোনো দেশে রাজনৈতিক পরিবর্তনের কারণে কিয়েভকে সাহায্য করা ঝুঁকির মধ্যে না পড়ে। বক্তৃতার সময় স্টলটেনবার্গ বলেন, ন্যাটো অবশ্যই ‘সঠিক কিছু করছে’, নিজেদের সূচনাকালে এই জোটটিতে ১২টি দেশ থাকলেও বর্তমানে তা ৩২টিতে উন্নীত হয়েছে। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের কারণে সুইডেন এবং ফিনল্যান্ড তাদের দীর্ঘদিনের নিরপেক্ষতা পরিত্যাগ করেছে এবং ন্যাটো জোটে নতুন সদস্য হিসেবে যোগ দিয়েছে।
০৬ এপ্রিল, ২০২৪

আবারও ইউরোপ মাতাতে যাচ্ছে অ্যাশেজ
এক বছর আগে ইউরোপের দেশ নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স ও জার্মানি মাতিয়ে আসে দেশের জনপ্রিয় রক ব্যান্ড অ্যাশেজ। দেশ ও দেশের বাইরে তাদের গানের ভক্ত ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকায় এ বছর আবারও ইউরোপ ট্যুরে যাচ্ছে দলটি। এ ছাড়া এপ্রিল মাসজুড়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে কনসার্ট করবে তরুণদের পছন্দের এই ব্যান্ড। ঈদের পর অ্যাশেজের ব্যস্ততা ও ইউরোপ সফর নিয়ে ব্যান্ডের ভোকাল জুনায়েদ ইভান কালবেলাকে বলেন, ‘বাংলা গান নিয়ে বিশ্বের বুকে দেশের প্রতিনিধিত্ব করা সবসময়ই আনন্দের ও গর্বের। সেই গর্বের স্থান থেকে আমরা এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কনসার্ট করেছি। পেয়েছি অসম্ভব ভালোবাসা। সেই ভালোবাসাই আমাদের প্রধান শক্তি। এই শক্তি নিয়েই আমরা বিশ্বের বুকে বাংলা গান ছড়িয়ে দিতে চাই। আমাদের যারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে গান গাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানায়, তাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও ভালোবাসা।’ মে মাসে অ্যাশেজে নেদারল্যান্ডস সফরে যাবে। এই সফরে ইউরোপের আরও একটি দেশে তাদের কনসার্ট করার কথা রয়েছে। এ বিষয়ে ব্যান্ডের ড্রামার তৌফিক আহমেদ বিজয় কালবেলাকে বলেন, ‘ঈদের পর আমাদের কনসার্টের ব্যাপক ব্যস্ততা রয়েছে। এপ্রিল মাসের ব্যস্ততা শেষে আমরা মে মাসে ইউরোপের উদ্দেশে রওনা দেব। তার আগে ভারতে আরেকটি কনসার্ট রয়েছে। এরপর আমরা ইউরোপের দেশ নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে কনসার্ট করব। এ ছাড়া ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আরও বেশকিছু কনসার্টের কথা চলছে। আশা করি এবারের ইউরোপ সফরটিও স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’ ২০০৬ সালে যাত্রা শুরু করে অ্যাশেজ ব্যান্ড। ২০১০ সালে মুক্তি পায় ব্যান্ডটির প্রথম গান ‘হীন’। গান, স্টেজ পারফরম্যান্স দিয়ে বিভিন্ন বয়সের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকে অ্যাশেজ। ২০১৪ সালে নিয়ে আসে প্রথম অ্যালবাম ছাড়পোকা। অ্যাশেজের প্রধান ভোকাল জুনায়েদ ইভান, অন্য সদস্যরা হলেন তৌফিক আহমেদ (ড্রামস), আদনান বিন জামান (কিবোর্ড), সুলতান রাফসান খান (গিটার) ও ওয়াহিদ উজ জামান তূর্য (বেজ গিটার)।
০৪ এপ্রিল, ২০২৪

এক ঘণ্টা এগিয়ে গেল ইউরোপ
ঘড়ির কাঁটা এক ঘণ্টা এগিয়ে নিয়েছে ইউরোপ। রোববার থেকে নতুন এই সময় কার্যকর করা হয়েছে। মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে প্রতিবছর মার্চের শেষ রোববার ঘড়ির কাঁটা এক ঘণ্টা এগিয়ে নেওয়া হয়। যা ডে লাইট সেভিং টাইম নামে পরিচত। অফিসসহ অন্যান্য জায়গায় দিনের আলোর ব্যবহার বাড়ানোর জন্য এমনটি করা হয়। আগামী ২৭ অক্টোবর আবারও সাধারণ সময়ে ফিরে আসবে ঘড়ির কাঁটা। সাধারণত বছরে দুবার ঘড়ির কাঁটা এক ঘণ্টা পরিবর্তন করা হয়। একবার সামনে, আরেকবার পেছনে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় গত ১০ মার্চ থেকেই ঘড়ির কাঁটা এক ঘণ্টা এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। ২০০১ সাল থেকেই ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর জন্য ঘড়ির কাঁটা এগিয়ে আনা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এটি দিনের আলো সংরক্ষণ সময় বা ডিএসটি পরিকল্পনা নামে পরিচিত। তবে ব্রেক্সিটের কারণে ভবিষ্যতে যুক্তরাজ্যের ঘড়ির কাঁটায় পরিবর্তন আসবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। এদিকে, ইউরোপের দেশ রাশিয়া, আইসল্যান্ড ও বেলারুশ পদ্ধতিটি ব্যবহার করে না। প্রতি বছর এভাবে ঘড়ির কাঁটা পরিবর্তনের বিষয়টি বাতিল করে দিতে ২০১৯ সালে একবার উদ্যোগ নিয়েছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। কিন্তু পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও এটি নিয়ে কোনো সুরাহা হয়নি। এমনকি বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনাও শুরু করতে পারেনি ইউরোপীয় ইউনিয়ন। গত কয়েক বছরে ব্রেক্সিট, কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বিষয়টি আরও জটিল করে দিয়েছে। আর বিষয়টির সমাধান যে সহসা হবে না সেটিও প্রায় নিশ্চিত। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ইউক্রেনেও ঘড়ির কাঁটা এগোনো হয়। তবে ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল রাশিয়া দখল করে রেখেছে সেখানে সাধারণ সময় অনুযায়ী সবকিছু চলে। ডেইলাইট সেভিং টাইম কার্যকর করা হয় এজন্য যে, যেন সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উভয়ই এক ঘণ্টা পরে ঘটে এবং বিকেলের ভাগে অতিরিক্ত ১ ঘণ্টা সময় সূর্যালোক পাওয়ার সুযোগ থাকে। ১৭৮৪ খ্রিষ্টাব্দে বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন তার একটি প্রবন্ধে প্রথম এই নাটকীয় ব্যবস্থার ধারণা তুলে ধরেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোতে ব্যবহৃত হচ্ছে ডে লাইট সেভিং। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে এ সংক্রান্ত একটি আইন পাশ করে, যাতে যুদ্ধকালে দেশের সময়কে এক ঘণ্টা এগিয়ে নেওয়া যায়। সেই ধারাবাহিকতায় পদ্ধতিটি যুক্তরাজ্যও অনুসরণ করতে শুরু করে। এই পদ্ধতিটি নিয়ে বিতর্কও রয়েছে। বিকেলের দিকে আলো যোগ করলে কেনাকাটা, খেলাধুলাসহ অন্যান্য কাজে লাভবান হওয়া যায়। তবে কৃষিকাজ, সান্ধ্যকালীন প্রমোদসহ বেশকিছু কাজের ক্ষেত্রে সমস্যর সৃষ্টি হয়।  
৩১ মার্চ, ২০২৪

অবৈধ মুনাফা সবচেয়ে বেশি ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার
পৃথিবীতে বাধ্যতামূলক শ্রম থেকে অর্জিত অবৈধ মুনাফা সবচেয়ে বেশি হয় ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোয়। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। আইএলও ‘প্রফিটস অ্যান্ড পভার্টি: দ্য ইকোনমিকস অব ফোর্সড লেবার’ বা ‘মুনাফা ও দারিদ্র্য: বাধ্যতামূলক শ্রমের অর্থনীতি’ শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে বাধ্যতামূলক শ্রম দেওয়া শ্রমিকদের মাথাপিছু মুনাফার হিসাব তুলে ধরেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, মাথাপিছু অবৈধ মুনাফা অর্জনের দিক থেকে ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। এই দুই অঞ্চলের দেশগুলোর বার্ষিক মাথাপিছু অবৈধ মুনাফা ২১ হাজার ২৪৮ ডলার। তালিকায় এরপর রয়েছে আরব দেশগুলো। এসব দেশে যেখানে মাথাপিছু অবৈধ মুনাফা ২০ হাজার ৩১৮ ডলার। আমেরিকা অঞ্চলের দেশগুলোয় মাথাপিছু অবৈধ মুনাফা ১৫ হাজার ১১৯ ডলার, আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলোয় ৫ হাজার ৮৭৯ ডলার ও এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোয় ৫ হাজার ১৯৯ ডলার। আইএলওর প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বে প্রতি বছর বাধ্যতামূলক শ্রম থেকে বছরে ২৩৬ দশমিক ৬০ বিলিয়ন বা ২৩ হাজার ৬০০ কোটি ডলার মুনাফা অর্জিত হয়। এর মধ্যে ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর অর্জন সর্বোচ্চ ৮৪ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ৮ হাজার ৪২০ কোটি ডলার। পরের অবস্থানে থাকা এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এ ধরনের মুনাফা অর্জিত হয় ৬২ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ৬ হাজার ২৪০ কোটি ডলার। আমেরিকা অঞ্চলে এই মুনাফার অঙ্ক এখন ৫২ দশমিক ১ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ২১০ কোটি ডলার। আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলো বাধ্যতামূলক শ্রম থেকে ১৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৯৮০ কোটি ডলার এবং মধ্যপ্রাচ্যের, তথা আরব দেশগুলো ১৮ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার মুনাফা করে। এই বাধ্যতামূলক শ্রমের বড় অংশই বেসরকারি অর্থনীতিতে নিয়োজিত। বিশ্বের কোন অঞ্চলে কত মানুষ বাধ্যতামূলক শ্রম দেয়, সেই হিসাবও দেখিয়েছে আইএলও। এ ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলো। ২০২২ সালে এই দুটি অঞ্চলে ১ কোটি ৪৫ লাখ মানুষ বাধ্যতামূলক শ্রম দিত। আফ্রিকা অঞ্চলে এই সংখ্যা ছিল ৩৮ লাখ, আমেরিকায় ৩৬ লাখ; ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া অঞ্চলে ৪১ লাখ। এ ছাড়া আরব দেশগুলোতে ৯ লাখ মানুষ বাধ্যতামূলক শ্রম দেন। আইএলও বলছে, ২০১৪ সালের পর এই বাধ্যতামূলক শ্রম থেকে সৃষ্ট মুনাফা বেড়েছে ৬ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বা ৩৭ শতাংশ।
২২ মার্চ, ২০২৪

ফিউদর লুকিয়ানভের বিশ্লেষণ / রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বলির পাঁঠা যেন ইউরোপ
রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করলে বিশ্বে তোলপাড় শুরু হয়। প্রভাবশালী বিভিন্ন দেশ তাদের কূটনীতি ও নিরাপত্তা নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবতে শুরু করে। চলমান এই সংকট ইতোমধ্যে বেশ বিরোধিতামূলক পরিণতি তৈরি হয়েছে। এতে পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলো বুমেরাংয়ের মতো নিজেদেরকেই এ দ্বন্দ্বের অগ্রভাগে দেখতে পাচ্ছে। সমস্বরে রুশ বিরোধিতার ঠিক দুই বছর পরেই এমন ধারণা তৈরি হওয়ায় বিশ্ব মোড়লদের ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ফের ভাবাচ্ছে। তবে আটলান্টিকের ওপারের রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক সংঘাতের সম্ভাবনা অনেক জোরদার হচ্ছে এবং ফ্রান্সই বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি উস্কে দিচ্ছে।  এ প্রসঙ্গে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর একটি ঘোষণা সামনে আসে। তিনি জানিয়েছেন, ফরাসি প্রজাতন্ত্র অদূর ভবিষ্যতে ইউক্রেনে তার সেনা পাঠাবে না। এর আগে তিনি বলেছিলেন, পশ্চিমা নেতারা ইউক্রেনে সেনা পাঠানো নিয়ে আলোচনা করেছেন কিন্তু এখনো কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেননি। যুদ্ধক্ষেত্রে ন্যাটো সৈন্য পাঠানোর সম্ভাবনা সম্পর্কে ম্যাক্রোঁর বক্তব্য অনেকের কাছে স্বতঃস্ফূর্ত বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু ঠিক এক সপ্তাহ পরে প্যারিসের দাবি, এ বক্তব্য ইচ্ছাকৃত ও সুচিন্তিত ছিল। বহু বছর ধরে ফ্রান্স ইইউকে ‘কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন’ সম্পর্কে চিন্তা করার আহ্বান জানিয়ে আসছে। তবে খুব কম মানুষই এর মমার্থ বুঝতে পেরেছিলেন।  ১৩ বছর আগে যখন লিবিয়ার গৃহযুদ্ধে ন্যাটোর হস্তক্ষেপের উদ্যোগ পশ্চিম ইউরোপীয়দের কাছ থেকে এসেছিল, মূলত ফরাসিদের কাছ থেকে, তারা এ বিষয়ে বিভিন্ন যুক্তিও তুলে ধরেছিল। রাষ্ট্রপতি নিকোলাস সারকোজির সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত কারণ (মুয়াম্মার গাদ্দাফির সঙ্গে তার আর্থিক ও রাজনৈতিক সম্পর্কের গুজব) থেকে একটি দুর্বল শত্রুর বিরুদ্ধে সহজে বিজয় অর্জনের ইচ্ছার কথাও আলোচিত হয়েছিল। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, যিনি তার বেশিরভাগ পূর্বসূরিদের মত সামরিকবাদী ছিলেন না, তিনি অবশ্য এ হস্তক্ষেপের ব্যাপারে ততটা উৎসাহী ছিলেন না।  লিবিয়ায় ইউরোপীয় মিত্রদের ব্যর্থতা ওয়াশিংটনের জন্যও দুর্ভাগ্যজনক ছিল। ফলে ওয়াশিংটনকে এর জড়িয়ে পড়তে হয়েছিল। ফলাফলটি সুপরিচিত – তারা যা চেয়েছিল তা পেয়েছে (গাদ্দাফিকে উৎখাত ও হত্যা)। কিন্তু তার জন্য চরম মূল্য দিতে হয়েছে লিবিয়াকে। আর সেটি হচ্ছে একটি দেশ হিসেবে চরম পতন এবং দীর্ঘস্থায়ী অস্থিতিশীলতা। বর্তমান পরিস্থিতির সাথে সেই পরিস্থিতির তুলনা করার কোনো মানে নেই। কারণ দুটি পরিস্থিতির গঠন এবং স্কেল উভয়ই আলাদা।  ইউক্রেন যুদ্ধের পেক্ষাপটে বর্তমান পশ্চিম ইউরোপীয় প্রতিক্রিয়া এবং রাশিয়ান হুমকি বৃদ্ধি অন্য একটি কারণের সাথে যুক্ত। চলমান সংঘাতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ইইউসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশ। ইতোমধ্যে তারা বহুমুখী নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ভুগতে শুরু করেছে। যা জার্মানির দিকে তাকালে আরও স্পষ্ট হয়। কিন্তু এই যুদ্ধে ওয়াশিংটনের কাছ থেকে তাদের ইউরোপীয় অংশীদাররা কী পাবে বা কী আশা করবে সেটি সম্পর্কেও স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারছে না কেউ। যার অর্থ দাঁড়ায় পরিস্থিতি এখনও ঘোলাটে এবং মোটেও আশাব্যঞ্জক নয়।  সদ্য অনুষ্ঠিত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাক্কালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ইইউ রাষ্ট্রদূতদের একটি বৈঠকে আমন্ত্রণ জানালেও তারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। রুশ এ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতে, ইউরোপীয় দেশগুলোর কূটনৈতিক মিশনগুলো কীভাবে নির্বাচনের জন্য ‘প্রস্তুতি’ নিচ্ছে, নন-সিস্টেমিক বিরোধীদের সমর্থন করার জন্য প্রকল্প তৈরি করছে এবং রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে সে সম্পর্কে মস্কোর কাছে যথেষ্ট তথ্য রয়েছে। পরিকল্পিত বৈঠকে, ল্যাভরভ বিদেশি কূটনীতিকদের এই ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত না হওয়ার জন্য পরামর্শ দিতে চেয়েছিলেন, বিশেষ করে দূতাবাসগুলোর এই ধরনের প্রকল্পগুলো চালানোর কোনও অধিকার নেই, সেই বিষয়ে অবগত করতে চেয়েছিলেন।  এরমধ্যে  রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা জানান, ‘সভার ঠিক আগে, আমরা একটি ফ্রান্সের কাছ থেকে একটি বার্তা পেয়েছি যে তারা না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা কি এমন রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক স্তরে সম্পর্ক কল্পনা করতে পারেন যাদের রাষ্ট্রদূতরা স্বীকৃত দেশের মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আসতে ভয় পান? এই মিত্র অংশীদারদের আচার-ব্যবহারে এটাই ঘটেছে।’ তার মতে, পশ্চিমা এবং ন্যাটো দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতরা রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের পাশাপাশি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের সাথে জড়িত। তারা আর তাদের আসল কাজ করছে না।  রাশিয়ান নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ, ল্যাভরভের সঙ্গে দেখা করতে অনাগ্রহীদেশের রাষ্ট্রদূতদের বহিষ্কারের পরামর্শ দিয়েছেন। তার মতে, এই ধরনের আচরণ কূটনৈতিক মিশনের ধারণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।  তিনি তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন, ‘এই রাষ্ট্রদূতদের রাশিয়া থেকে বহিষ্কার করা উচিত এবং এ দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের স্তর কমানো উচিত।’ এদিকে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৯৫ দশমিক ০৮ শতাংশ ভোট গণনা শেষ হয়েছে। এতে পুতিন সর্বোচ্চ ৮৭ দশমিক ৩২ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। যার অর্থ হচ্ছে- আরও ছয় বছরের জন্য পুতিনের ক্ষমতা পাকাপোক্ত হতে যাচ্ছে। পুতিন আবারও ক্ষমতা নিশ্চিত করার পর ইউক্রেন ইস্যু কোন দিকে গড়ায় সেটিই দেখার বিষয়। 
১৮ মার্চ, ২০২৪

ইয়েমেনে মার্কিন-ব্রিটিশ হামলা নিয়ে বিভক্ত ইউরোপ
ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের ওপর বিমান ও নৌ হামলা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন। তাদের এই হামলার যৌক্তিকতা তুলে ধরে একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনসহ ১০টি দেশ। তবে এ যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেনি ইতালি, ফ্রান্স ও স্পেন। এই তিন দেশের এমন পদক্ষেপে ইয়েমেনে মার্কিন-ব্রিটিশ হামলা নিয়ে ইউরোপীয়দের মাঝে বিভক্তির বিষয়টি সামনে চলে আসে। খবর রয়টার্সের। গতকাল শুক্রবার ভোরে ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীটির বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা শুরু করার কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন। দুই দেশের এই হামলায় লজিস্টিক ও গোয়েন্দা সহায়তা প্রদান করেছে নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও বাহরাইন। এ ছাড়া ইয়েমেনে নৈশকালীন এই হামলার পক্ষে সাফাই গেয়ে এই ছয় দেশের সঙ্গে একটি যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছে জার্মানি, ডেনমার্ক, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়া। এমনকি লোহিত সাগরে হুতিরা হামলা বন্ধ না করলে জাহাজ চলাচল নিশ্চিতে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে এসব দেশ। তবে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির কার্যালয়ের এক সূত্রের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, রোম এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে রাজি হয়নি। এ জন্য তাদের এ হামলায় অংশ নিতে বলা হয়নি। আরেকটি সরকারি সূত্র বলেছে, ইতালিকে হামলায় যোগদানের কথা বলা হয়েছিল। তবে দুই কারণে তারা এতে অংশগ্রহণ করেনি। প্রথমটি হলো এতে অংশগ্রহণ করতে হলে আগে দেশের সংসদ থেকে অনুমতি নেওয়া লাগবে। বিষয়টি অনেক সময়সাপেক্ষ। দ্বিতীয় কারণ হলো লোহিত সাগরে শান্তির নীতি বেছে নিয়েছে রোম। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ফরাসি কর্মকর্তা বলেছেন, মার্কিন নেতৃত্বাধীন হামলায় যোগদান করলে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনের ক্ষমতা হারাতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে অংশ নেয়নি ফ্রান্স। সম্প্রতি গাজা যুদ্ধ ঘিরে লেবাননে সংঘাত এড়াতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করেছে প্যারিস। ইয়েমেনে হামলায় অংশগ্রহণ করতে ফ্রান্স অস্বীকার করেছে কি না জানতে চাইলে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, দুই দেশের কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনা নিয়ে কথাবার্তা দীর্ঘ করবেন না। তিনি বলেন, যারা এই হামলায় অংশগ্রহণ করেছে তাদের তালিকা আপনারা দেখেছেন। এ ছাড়া স্পেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্গারিটা রোবেলস বলেছেন, লোহিত সাগরে সামরিক অভিযানে মাদ্রিদ যোগ দেয়নি। কারণ তারা এই অঞ্চলে শান্তি নিশ্চিত করতে চায়। লোহিত সাগরে হুতিদের হামলা ঠেকানো নিয়ে পশ্চিমাদের বিভক্তির বিষয়টি গত মাসেই প্রকাশ্যে আসে। ডিসেম্বরে লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচল নিশ্চিত করতে একটি বহুজাতিক নৌজোট গঠনের কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে মার্কিন নেতৃত্বাধীন এই নৌজোটে অংশ নেয়নি ইতালি, স্পেন ও ফ্রান্স।
১৩ জানুয়ারি, ২০২৪

ক্লাব বিশ্বকাপে ইউরোপ সেরার কর্তৃত্ব কমছে
পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি শেষ ইউরোপিয়ান দল হিসেবে ক্লাব বিশ্বকাপে বাড়তি সুবিধা ভোগ করল। কারণ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী হিসেবে সরাসরি সেমিফাইনাল খেলার এটিই ছিল শেষ সুযোগ। ২০২৫ সালে নতুন ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত হবে আসরটি। এতদিন ক্লাব বিশ্বকাপে সরাসরি সেমিফাইনালে খেলে আসছিল উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী দলগুলো। মাত্র দুই ম্যাচ জিতলেই শিরোপা— ইউরোপিয়ান এলিট আসর জয়ীদের জন্য বাড়তি সুবিধা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। ৩২ দল নিয়ে একটি কেন্দ্রীয় প্রতিযোগিতা আয়োজন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ীদের আরও কঠিন পরীক্ষায় ফেলবে নিশ্চিত। কারণ, সে আসরে ইউরোপের বেশ কয়েকটি ক্লাব অংশগ্রহণ করবে। বায়ার্ন মিউনিখ, পিএসজি, ইন্টার মিলান, এফসি পোর্তো, বেনফিকা এরই মধ্যে ২০২৫ সালের আসরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। চার বছরের উয়েফা র্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে পরবর্তী আয়োজনে অংশগ্রহণের ছাড়পত্র পেয়েছে উল্লিখিত ক্লাবগুলো। জার্মানি, ইতালি ও স্পেনের একটি করে ক্লাবও সুযোগ পাবে। ২০২০-২১ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী চেলসি, ২০২১-২২ মৌসুমে জয়ী রিয়াল মাদ্রিদ ও গত মৌসুমের জয়ী ম্যানচেস্টার সিটির অংশগ্রহণও নিশ্চিত হয়েছে। চলতি মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী দলকে নিয়ে আসন্ন ক্লাব বিশ্বকাপে ইউরোপের প্রতিনিধিত্ব করবে ১২ দল, যা পরবর্তী চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী দলের ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ের পথ বেশ কঠিন করে তুলবে। কারণ, অন্যান্য মহাদেশের দলগুলো ইউরোপিয়ানদের সঙ্গে সাধারণত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কুলিয়ে উঠতে পারে না। চেলসি সর্বশেষ দল হিসেবে ক্লাব বিশ্বকাপ শিরোপা জিততে ব্যর্থ হয়েছে। জাপানে অনুষ্ঠিত ২০১২ সালের ফাইনালে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব করিন্থিয়ান্সের কাছে হেরেছিল ইংলিশ ক্লাবটি। তার পর থেকে ক্লাব বিশ্বকাপের ২২ ম্যাচে অপরাজিত ইউরোপের প্রতিনিধিরা। ২০২৫ সালের ১৫ জুন থেকে ১৩ জুলাই পরবর্তী ক্লাব বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে। এ আসর সম্পর্কে বিশ্বফুটবল সংস্থার (ফিফা) প্রধান উন্নয়ন কর্মকর্তা আর্সেন ওয়েঙ্গার বলেন, ‘নতুন এ ফরম্যাট ও পদ্ধতি অন্য ক্লাবগুলোর উন্নয়নে দারুণ ভূমিকা রাখবে, যা বিশ্বব্যাপী ক্লাবগুলোর মধ্যকার প্রতিদ্বিন্দ্বতাও বৃদ্ধি করবে।’ ইংলিশ ক্লাব আর্সেনালের সাবেক কোচ আরও বলেন, ‘ইউরোপিয়ান হিসেবে আমরা সৌভাগ্যবান। কিন্তু এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, ফুটবলকে বৈশ্বিক রূপ দেওয়া এবং উন্নয়নে সহায়তা করা।’ মিশরের ক্লাব আল-আহলির কাছে হেরে এবারের আসরের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছে করিম বেনজেমার আল-ইত্তিহাদ। ২০৩৪ সালের বিশ্বকাপ আয়োজনের পরিকল্পনায় সৌদি আরবের ফুটবলকে ঢেলে সাজানোর যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে, তাতে দেশটির ক্লাবগুলোর উন্নতির পথ প্রশস্ত করবে বলে মনে করা হচ্ছে। সৌদি আরবের দলগুলো ক্লাব বিশ্বকাপে নিজেদের মেলে ধরার মঞ্চ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বর্তমানের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, নেইমার জুনিয়র, করিম বেনজেমা, এনগলো কন্তে, ইয়াসিন বুনো, কালিদু কুলিবালি, রবার্তো ফিরমিনোর মতো ফুটবলাররা সৌদি আরবের ক্লাবগুলোতে খেলছেন। ক্লাব বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে নিশ্চয়ই শক্তি বৃদ্ধির পরিকল্পনা নিয়ে এগোবে তেলসমৃদ্ধ দেশটির ক্লাবগুলো।
২৪ ডিসেম্বর, ২০২৩
X