বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
নেতানিয়াহুর জন্য ‘আশীর্বাদ’ হয়ে এসেছে ইরানের হামলা
বেশ কিছুদিন ধরে বড় ধরনের আন্তর্জাতিক চাপের মধ্য ছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গত ১ এপ্রিল ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলায় সহায়তা সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের সাত ত্রাণকর্মী নিহত হয়। এ ঘটনায় নেতানিয়াহুর ওপর ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল। এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও শেষ পর্যন্ত নেতানিয়াহুর বিষয়ে ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছেন বলে মনে হয়েছিল।  তবে ইরানের হামলা যেন অনেকটা আশীর্বাদ হয়ে এসেছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর জন্য। সম্প্রতি বিবিসির বিশ্লেষণে ওঠে এসেছে এমনই তথ্য। গাজায় ইসরায়েলের আঘাতে ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের কর্মীদের মৃত্যুর দিনেই সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটেও হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে ইরানের এক জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডারসহ সাত কর্মকর্তা নিহত হন। এর মধ্য দিয়ে দূতাবাসে হামলা চালানোর ওপর যে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তা লঙ্ঘন করে নেতানিয়াহু সরকার। ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলার পর বাইডেনের একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছিল হোয়াইট হাউস। তাতে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আর এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনাও ছিল না। ফিলিস্তিনের বেসামরিক লোকজন ও ত্রাণকর্মীদের রক্ষায় যথেষ্ট তৎপর ছিল না ইসরায়েল সরকার। ওই ঘটনার পর নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন বাইডেন। সে সময় গাজায় বিপুল পরিমাণ ত্রাণ সরবরাহের সুযোগ, ত্রাণ প্রবেশে আরও সীমান্ত ক্রসিং খোলাসহ ইসরায়েলকে কিছু ছাড় দেওয়ার কথা তুলেছিলেন তিনি। এ ছাড়া ইসরায়েলের আশদাদ বন্দরও খুলে দেওয়ার কথাও বলেছিলেন বাইডেন। নেতানিয়াহুও পরিস্থিতি পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিলেও তেমন কিছুই করা হয়নি। এ ছাড়া হোয়াইট হাউসের পাশাপাশি নিজ দেশেও সংসদে উগ্র জাতীয়তাবাদীদের চাপের মধ্যেও ছিলেন নেতানিয়াহু। তাদের সমর্থনেই ইসরায়েলে ক্ষমতায় রয়েছে নেতানিয়াহুর জোট সরকার। এই জাতীয়তাবাদীরা শুধু গাজায় অবাধ ত্রাণ সরবরাহের বিরোধীই নন, চলমান সংঘাত উপত্যকাটিতে আবার অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনের সুযোগ করে দেবে বলেও বিশ্বাস করেন তারা। যুক্তরাষ্ট্রের চাপ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আরেকটি জল্পনা তৈরি হয়েছিল যে ইসরায়েলে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা অস্ত্র ব্যবহারের ওপর শর্ত আরোপ করবে হোয়াইট হাউস। শনিবার ইরানের হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসে একটি মতামত প্রকাশ করা হয়। সেই মতামতে বলা হয়, নেতানিয়াহু ও তার সরকারের কট্টরপন্থিরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘বিশ্বাস ভঙ্গ’ করেছেন। এরপরই ইসরায়েলে প্রথমবারের মতো হামলা চালায় ইরান, যে হামলায় নতুন জীবন ফিরে পান নেতানিয়াহু। ইরানের ছোড়া তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র রুখতে ইসরায়েলকে সহায়তা করে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা। এ ছাড়া আরব দেশগুলোর জর্ডানও শনিবার ইরানের হামলা ঠেকাতে তৎপর ছিল। ইরানের হামলার পর থেকেই আন্তর্জাতিক চাপ অনেকটাই কমে এসেছে নেতানিয়াহুর ওপর। মার্কিন সামরিক সহায়তার ক্ষেত্রে আরোপ বিভিন্ন শর্তের বদলে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন দেখাচ্ছে ওয়াশিংটন। এতে রাজনৈতিকভাবে নতুন কিছু সুযোগ পেয়েছেন নেতানিয়াহু। তবে ইরানের হামলার পর নেতানিয়াহুর ওপর চাপের ধরন বদলেছে। বাইডেন স্পষ্টভাবেই ইসরায়েলকে পাল্টা আঘাত না হানার পরামর্শ দিয়েছেন। এ ছাড়া ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ‘লৌহবর্মের’ মতো মন্তব্য করেছেন বাইডেন। অর্থাৎ ইসরায়েলের পাশেই আছে যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যে যেন বড় পরিসরে যুদ্ধ ছড়িয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে দৌড়ঝাঁপ করছেন বাইডেন ও তার প্রশাসন। যদিও একই সঙ্গে গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে ইসরায়েলকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র সরবরাহ করে যাচ্ছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এত সমর্থন পাওয়ার পরেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কোনো আহ্বানই কানে তুলছেন না নেতানিয়াহু। ইরানের হামলা ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্রদেশগুলোর সহায়তার কয়েক দিন পরও ইসরায়েল সেই আগের অবস্থান ধরে রেখেছে বলে মনে হচ্ছে। তারা শুধু বাইডেনের সংযত থাকার আহ্বানই এড়িয়ে যাচ্ছে না, একই সঙ্গে হামলা ঠেকাতে সহায়তাকারী অন্য দেশগুলোর অনুভূতিও উপেক্ষা করছে। নেতানিয়াহুর দৃষ্টিভঙ্গিতে ইসরায়েলের সবচেয়ে ভয়ংকর শত্রু ইরান। তারা মনে প্রাণে ইসরায়েলকে ধ্বংস করতে চায়। নেতানিয়াহুর মতো একই দৃষ্টিভঙ্গি অনেক ইসরায়েলির। এদিকে ইসরায়েল হামলা চালালে আরও কঠোরভাবে জবাব দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে ইরান। তাদের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হোসেইন বাকেরি বলেছেন, ইসরায়েলে যে হামলা চালানো হয়েছে, তা ‘সীমিত’ ছিল। ইসরায়েল পাল্টা জবাব দিলে এবার তাদের ‘অনেক বড়’ খেসারত দিতে হবে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র বলছে ইসরায়েল ইরানে পাল্টা হামলা চালালে তাতে সহায়তা করবে না মার্কিন বাহিনী। তবে এটা বিশ্বাস করা কঠিন। কারণ, মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন, ইসরায়েলের নিরাপত্তা রক্ষায় তার প্রতিশ্রুতি ‘লৌহবর্মের’ মতো। সব মিলে নেতানিয়াহু এ যাত্রায় টিকে গেলেন ইরানের হামলার আশীর্বাদেই।    
১৮ এপ্রিল, ২০২৪

ইরানের হামলা ঠেকাতে কত ব্যয় হলো ইসরায়েলের
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে নিজেদের কনস্যুলেটে হামলার জবাবে ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে ইরান। ইসরায়েলে এ হামলায় শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে দেশটি। তবে এসবের বেশিরভাগ ঠেকিয়ে দেওয়ার দাবি করেছে ইসরায়েল। এবার এসব ড্রোন ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে নিজেদের ব্যয়ের পরিমাণ জানিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে বরাতে টিআরটি ওয়াল্ডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান থেকে রাতভর ছোড়া ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে ইসরায়েলের ১৩৫ কোটি ডলার খরচ হয়েছে। ইসরায়েলি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ ৫ বিলিয়ন শ্যাকেলেও ওপরে।   ইসরায়েলি সংবাদামাধ্যম ইয়েদিওথ আহরনোথে রোববার ইসরায়েলি চিফ অব স্টাফের সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রাম অমিনাচের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, গত রাতের হামলার জন্য কেবল প্রতিরক্ষা ব্যয় হয়েছে ১৩৫ কোটি ডলার। তিনি বলেন, আমি এটা কেবল ইরান থেকে থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যয়ের কথা বলছি। এ সময়ে ঘটা অন্য কোনো ক্ষয়ক্ষতির কথা বলছি না।  ইরানের এ হামলা ঠেকাতে অ্যারো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ব্যবহার করেছে ইসরায়েল। সেনাবাহিনীর এ কর্মকর্তা জানান, অ্যারো ডিফেন্স দিয়ে ইরানের একটি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রকে আটকানোর প্রায়  ৩৫ লাখ ডলার ব্যয় করতে হয়। যেখানে ম্যাজিক ওয়ান্ড নামের একটি ক্ষেপণাস্ত্রের দাম ১০ লাখ ডলার। এ ছাড়া ইরানের হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলের যুদ্ধবিমানও অংশ নিয়েছে। সেসব বাদেই এ পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে।    এর আগে রোববার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি বলেন, ইরান থেকে ইসরায়েলের প্রায় ৩৫০টি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে।  তবে এগুলোর বেশিরভাগই  আকাশেই আটকে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ইরানের ছোড়া ৩০টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ২৫টি ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া তাদের ছোড়া ১২০টির বেশি ব্যালেস্টিক মিসাইলের বেশিরভাগই নিস্ক্রিয় করা হয়েছে। এর মাত্র কয়েকটি ইসরায়েলের আকাশে প্রবেশ করেছে। ইরানের হামলায় নেভাতিম বিমান ঘাঁটিকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।  ইরানের একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তিনশরও বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তেহরান। সেগুলোর বেশিরভাগ ইসরায়েল প্রতিহত করলেও অন্তত ৭টি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের মাটিতে আঘাত হেনেছে। ইরানি বার্তা সংস্থা ইরনা নিউজ জানিয়েছে, রেমন ঘাঁটিতে দ্রুতগতির ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে বলে ইসরায়েল নিশ্চিত করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ হামলার কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, রেমন বিমানঘাঁটিতে খুব দ্রুতগতিতে আঘাত হানছে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র। ওই সময় সেখানে আগুনের ফুলকিও দেখা যায়। মূলত, চলতি মাসের শুরুর দিকে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের দূতাবাসে ইসরায়েলি বোমা হামলার জবাবে শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে এই পাল্টা হামলা করে তেহরান। ইসরায়েল ও ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশ্লেষকরা। এমনকি দুই চিরশত্রু দেশের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধ পর্যন্ত বেধে যেতে পারে বলে সতর্ক করছেন তারা। গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে দেশটির কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে একের পর এক হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছিল ইরান।  
১৬ এপ্রিল, ২০২৪

আইআরজিসির মন্তব্য, ইরানের হামলা সফল
ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ইরান প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সফলতা পেয়েছে বলে দাবি করেছেন ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি। তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের দখল করা ভূখণ্ডে যেসব ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করা হয়েছে, সেগুলোর একটি অংশ সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। শনিবার রাতে ইরান থেকে ইসরায়েল লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছোড়া হয়। এগুলোর ৯৯ শতাংশই আকাশে থাকতে ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলের হামলার জবাবে গতকাল এই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে তেহরান। হোসেইন সালামি বলেন, ইসরায়েলে যেসব ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন আঘাত হেনেছে, সেগুলোর সব কটি সম্পর্কে তথ্য জানা যায়নি। তবে সেগুলোর একটি অংশ নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। মাঠপর্যায় থেকে যেসব তথ্য-প্রমাণ এসেছে তাতে দেখা গেছে, ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সফলতা পাওয়া গেছে। ইরানের এই সামরিক কর্মকর্তা বলেন, ইসরায়েলে আরও বড় পরিসরে হামলা চালানোর সক্ষমতা রয়েছে ইরানের। তবে সে পথে হাঁটেনি তেহরান। চলতি মাসের শুরুতে দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে বিমান হামলা চালাতে ইসরায়েলের যে স্থাপনাগুলো ব্যবহার করা হয়েছে, শুধু সেগুলো নিশানা করেই হামলা চালানো হয়েছে।
১৬ এপ্রিল, ২০২৪

ইরানের হামলা ঠেকাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাল জর্ডান
ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে ইরান। তবে দেশটির ছোড়া ড্রোনের বেশকিছু ভূপাতিত করেছে জর্ডান। দেশটির দাবি, তাদের আকাশসীমায় প্রবেশ করায় জনগণের নিরাপত্তার জন্য এগুলো ভূপাতিত করা হয়েছে। এতে বেশকিছু ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে দেশটির। রোববার (১৪ এপ্রিল) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানান হয়েছে।  জর্ডানের মন্ত্রিসভার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত রাতে ইরান যখন ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে তখন তারা বেশকিছু ড্রোন ভূপাতিত করেছে। নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিজেদের আকাশসীমায় প্রবেশ করায় এগুলো ভূপাতিত করা হয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ইরানের ছোড়া কিছু শার্পনেল বিভিন্ন জায়গায় পড়েছে। তবে এতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এ ছাড়া হতাহতের কোনো তথ্যও পাওয়া যায়নি।  দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদামাধ্যম জানিয়েছে, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী এমন সবকিছুর মোকাবিলা করবে যা মাতৃভূমি এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা বিপন্ন করবে। এ ছাড়া আকাশসীমা ও ভূখণ্ডের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবে।   প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির সরকার সব পক্ষকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলছে, উত্তেজনা বৃদ্ধি বিপজ্জনক হবে। উল্লেখ্য, শনিবার রাতে অপারেশন ট্রু প্রোমিজ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে ইরান। এ প্রতিক্রিয়া সীমিত ও নির্ধারিত হবে বলে জানিয়েছেন ইরানের কর্মকর্তারা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান কী করতে সক্ষম তার সামান্য চিত্র দেখাল মাত্র। এটা এমন একটি দৃশ্য যা কখনো কেউ দেখেনি। এমন হামলার পরেই পাল্টা হামলার আশঙ্কায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী, একই সঙ্গে ইসরায়েলের প্রতিও সতর্কবার্তা দিয়ে রেখেছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া বিবৃতিতে আইআরজিসির এক কমান্ডার জানান, ইসরায়েল যদি প্রতিক্রিয়া দেখায় তাহলে তার চেয়েও কড়া প্রতিক্রিয়া দেখাবে ইরান।  
১৪ এপ্রিল, ২০২৪

ইসরায়েলে ইরানের হামলা : জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক
টানা কয়েকদিনের উত্তেজনার পর ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে ইরান। দেশটির হামলার পর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে জরুরি বৈঠকের আহ্বান করা হয়েছে। রোববার (১৪ এপ্রিল) এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলের ওপর ইরানের হামলার নিন্দা জানিয়ে বৈঠকের আহ্বান জানায় দেশটি। এ ছাড়া একইসাথে তারা ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাবনা জানিয়েছে।   শনিবার রাতে প্রকাশিত সিডিউলে দেখা গেছে, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলের এ প্রস্তাব নিয়ে রোববার বিকেল ৪টায় বৈঠকের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।  রয়টার্স জানিয়েছে, জাতিসংঘে নিয়োজিত ইসরায়েলের অ্যাম্বাসেডর গিলাদ এরডান শনিবার কাউন্সিলের প্রেসিডেন্টকে জরুরি বৈঠকের আনুরোধ জানিয়ে চিঠি  দিয়েছেন।  এরডান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানান, ইরানের হামলা বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুতর হুমকি। আমি আশা করি, কাউন্সিল ইরানের বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে সব উপায় ব্যবহার করবে। উল্লেখ্য, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালায় ইসরায়েল। দেশটির এ হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর এক সিনিয়র কমান্ডারসহ ৭ সদস্য নিহত হন। এরপর হামলার জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় ইরান। ইরানের এ হুঁশিয়ারির পর মার্কিন কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা সিবিএস নিউজকে জানান, ইসরায়েলের হামলা চালাতে ইরান শতাধিক ড্রোন ও কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। এমন আশঙ্কার মধ্যে শনিবার গভীর রাতে কয়েক ডজন ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। তবে প্রথম হামলায় ঠিক কতগুলো ড্রোন ছোড়া হয়েছে তা জানা যায়নি। এদিকে ইরানের হামলা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয় জর্ডান। এছাড়া এ সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ইসরায়েলগামী দুটি বিমান ও থাইল্যান্ড থেকে ইসরায়েলগামী আরও দুটি বিমানকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।
১৪ এপ্রিল, ২০২৪

ইসরায়েলে ইরানের হামলা শুরু
ইসরায়েলে হামলা শুরু করেছে ইরান। শনিবার (১৩ এপ্রিল) গভীর রাতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে দেশটি। রোববার (১৪ এপ্রিল) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রয়টার্সের সাংবাদিকরাও ইসরায়েলে সাইরেন ও দূর থেকে বিকট শব্দ শুনতে পেয়েছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এ আওয়াজকে বিস্ফোরক ড্রোন ভূপাতিতের শব্দ বলে উল্লেখ করেছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের এ হামলায় ৭ বছরের এক শিশু গুরুতর আহত হয়েছে।  এদিকে আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,  ইরান ইসরায়েলে কয়েক ডজন ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় চালিয়েছে। ইসরায়েল জানিয়েছে, ইরান তাদের হামলা শুরু করেছে। এরপর ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।  আইআরজিসি জানিয়েছে, তারা ‘ট্রু প্রমিজ’ অপারেশনের অধীনে শনিবার এ হামলা চালিয়েছে। এটিকে ইসরায়েলের কৃত অপরাধের শাস্তি হিসেব উল্লেখে করেছে তারা।  এর আগে শনিবার আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলায় সম্ভাব্য ব্যবহারের জন্য ১০০-এর বেশি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র প্রস্তুত করেছে। যে কোনো সময় এ অস্ত্র ব্যবহার করা হতে পারে। অন্য এক খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন কর্মকর্তা ধারণা করছেন, হামলায় ইরান ১০০ ড্রোন ও কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, ইরান যদি ১০০ ড্রোন ও কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় তাহলে এটি ঠেকানো ইসরাইলের জন্য ‘চ্যালেঞ্জিং’ হয়ে যাবে। গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে একের পর এক হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে ইরান। 
১৪ এপ্রিল, ২০২৪
X