মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

উইম্বলডন জয়ের ঘোষণা জকোভিচের
উইম্বলডনের কোয়ার্টার ফাইনাল শুরুই হয়েছিল অঘটন দিয়ে। নারী এককের শীর্ষ বাছাইয়ে ইগা শিয়নটেক বিদায় নেন। এরপর সেন্টার কোর্টে নামেন নোভাক জকোভিচ। প্রথম সেট ৬-৪ ব্যবধানে তিনিও হেরে গেলেন আন্দ্রে রুবলেভের কাছে। তখন হয়তো আরও একটি অঘটনের চিন্তায় শঙ্কিত ছিলেন সেন্টার কোর্টের সমর্থকরা। কিন্তু তাদের শঙ্কা উড়িয়ে ২৩টি গ্র্যান্ডস্লাম মালিক টানা পঞ্চমবারের মতো উইম্বলডনের সেমিফাইনালে পা রেখেছেন। শেষ আটের লড়াইয়ে সপ্তম বাছাই রুশ রুবলেভকে ৪-৬, ৬-১, ৬-৪, ৬-৩ গেমে হারিয়েছেন তিনি। জকোভিচ ২ ঘণ্টা ৪৭ মিনিটে ম্যাচ জিতে উইম্বলডনের সেমিফাইনালে উঠেছেন। কোয়ার্টার ফাইনালে দাপুটে শুরু করেছিলেন রুবলেভ। নবম গেমে জকোভিচের সার্ভিস ভেঙে দেন তিনি। ৪৫ মিনিটে সেটও জিতে নেন। প্রথম সেটে রুবলেভের উইনারের জবাব দিতে পারেননি জকোভিচ। দ্বিতীয় সেটে অবশ্য ছন্দে ফেরেন তিনি। শক্তিশালী সার্ভ এবং ব্যাকহ্যান্ডের দাপটে উড়ে যায় রুবলেভের পাওয়ার টেনিস। দ্বিতীয় গেমেই রুশ তারকার সার্ভিস ভেঙে দেন। তৃতীয় গেমে রুবলেভ আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি। পরপর পাঁচটি গেম জিতে ৫-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পর জকোভিচের সেট জয় ছিল সময়ের অপেক্ষা। ২৮ মিনিটে ৬-১ ব্যবধানে দ্বিতীয় সেট জয় করেন তিনি। তৃতীয় সেটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলেও ৬-৪ ব্যবধানে জিতলেন জকোভিচ। উইম্বলডনে অষ্টম শিরোপা জয়ের মিশনে নিজেকেই সেরা প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবছেন তিনি। এই নিয়ে ঘাসের কোর্টের গ্র্যান্ডস্লামে ১২ বার সেমিফাইনালে উঠলেন। সব গ্র্যান্ডস্লাম মিলিয়ে এটি ৪৬তম সেমিফাইনাল। রজার ফেদেরারও সমানসংখ্যক সেমিফাইনাল খেলেছেন। ম্যাচ জিতে উইম্বলডন শিরোপা হাতে নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে জকোভিচ বলেছেন, ‘অহংকারের সুরে বলতে চাই না। কিন্তু আমি নিজেকেই ট্রফি জয়ের দাবিদার মনে করছি। আমার ক্যারিয়ারে এই কোর্টে যে পরিসংখ্যান আছে, সেটা বিচার করেই বলছি। শেষ চারবার উইম্বলডনে নেমে আমি জিতেছি। তাই নিঃসন্দেহে আমিই ট্রফি জয়ের ব্যাপারে এগিয়ে।’ মঙ্গলবার গ্র্যান্ডস্লামে ৪০০তম ম্যাচ খেললেন জকোভিচ। ৩৬ বছর বয়সী সার্ব তারকা বলেন, ‘আমার বেশ ভালো লাগছে ব্যাপারটা। যে কোনো খেলোয়াড়ই নিজেকে এমন একটা উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায়, যেখানে বাকিরা তাকে হারানোর জন্য মুখিয়ে থাকে। এমন নয় যে কোর্টে নামলে একটুও চাপে থাকি না। এটা জানি যে বাকিরা আমাকে হারানোর জন্য মুখিয়ে রয়েছে।’ রুবলেভের প্রশংসা করে জকোভিচ বলেন, ‘সে কোর্টে আমার ওপর যথেষ্ট চাপ তৈরি করেছে। খুব দ্রুততার সঙ্গে খেলছিল। ম্যাচটা অনেকটাই ডগফাইটের আকার ধারণ করে। ম্যাচের কিছু সময় ছিল খুবই ঘাম ঝরানো। তবে তৃতীয় সেটের পরপরই খেলাটা আমার দিকে ঝুঁকে পড়ে। ম্যাচটা জিতে আমার মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।’ আগামীকাল শুক্রবার উইম্বলডনের সেমিফাইনালে জকোভিচ কোর্টে নামবেন ইতালির অষ্টম বাছাই জানিক সিনারের বিপক্ষে। ম্যাচটা যে কঠিন হবে, সেটি আগেভাগেই জানিয়ে রেখেছেন জকোভিচ, ‘সিনার ঘাসের কোর্টে খেলতে পছন্দ করে। সে দ্রুতগতির কোর্টে খেলতে পছন্দ করে। কারণ, আগ্রাসী টেনিস তার শক্তির জায়গা। সে পরিপূর্ণ একজন খেলোয়াড়। উইম্বলডনের সেমিফাইনালে সে এই প্রথমবারের মতো উঠেছে। আমি তার সঙ্গে খেলার জন্য মুখিয়ে আছি। আমি নিশ্চিত, সিনারও যথেষ্ট অনুপ্রেরণা নিয়েই মাঠে নামবে। অন্যদিকে, আমার অনুপ্রেরণাও কম নয়।’ অন্যদিকে জকোভিচের শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নিয়েছেন কোয়ার্টারে হেরে যাওয়া প্রতিপক্ষ আন্দ্রে রুবলেভও। তিনি বলেন, ‘ছোট ছোট সুযোগ আমিও পেয়েছিলাম। কিন্তু কাজে লাগাতে পারিনি। ও সেটা কাজে লাগিয়েছে। এ কারণেই সে নোভাক। টেনিসের ইতিহাসে অন্যতম সেরা খেলোয়াড়।’
১৩ জুলাই, ২০২৩
X