পরিবেশ রক্ষায় পাশে থাকার অঙ্গীকার কক্সবাজার সমিতির
১৯৯১ সালের ভয়াল ২৯ এপ্রিলকে জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা, টেকসই বেড়িবাঁধ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকে পাঠ্যপুস্তকে সংযুক্তি, প্যারাবন উদ্ধারসহ নানাবিধ পরামর্শ ও আলোচনার মাধ্যমে দিবসটিকে স্মরণ করেছে ঢাকাস্থ কক্সবাজার সমিতি। সমিতির সভাপতি স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ খোরশেদ আলমের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যকার কাউছার চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখক সাদাত উল্লাহ খান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান, সহসভাপতি সন্তোষ শর্মা, সহসভাপতি ইয়াছিন মোহাম্মদ শামসুল হুদা, সহসভাপতি স্বপন কান্তি পাল, সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তাকিম প্রমুখ। অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা ২৯ এপ্রিলের ভয়াল অভিজ্ঞতা স্মরণ করে প্যারাবন তথা ম্যানগ্রোভ বনায়ন রক্ষায় সর্বমহলের সহযোগিতা চান। প্রাকৃতিক সাইক্লোন নয়, প্যারাবন ধ্বংসকে তিনি অরাজনৈতিক দুর্বৃত্ত সাইক্লোন উল্লেখ করে দুর্বৃত্তদের রুখে দিতে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান। কাউছার চৌধুরী সেই প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে নিহতের স্মরণ করে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। তিনি ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী ত্রাণ-সাহায্য বিতরণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। লেখক সাদাত উল্লাহ খান প্যারাবন ধ্বংসের নিন্দা জানান এবং এই প্যারাবন ছাড়া মহেশখালীর অস্তিত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন। তিনি প্যারাবন ধ্বংসকারীদের দুর্বৃত্ত আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান। কক্সবাজার সমিতির সহসভাপতি দৈনিক কালবেলার সম্পাদক সন্তোষ শর্মা নীতিনির্ধারকদের কাছে কক্সবাজারে যে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন যাতে পরিবেশবান্ধব করা হয়, সেই অনুরোধ করেন। তিনি পাহাড় নিধনের নিন্দা জানিয়ে কক্সবাজার সমিতিকে পরিবেশ রক্ষার যে কোনো উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানান। সভাপতির বক্তব্যে সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদ সেই ঘূর্ণিঝড়ের স্মৃতিচারণ করে দিনটির গুরুত্ব তুলে ধরেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন প্রণিধানযোগ্য উদ্যোগকে তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন হালনাগাদ করেছে। আইনের মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবিলাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

ভয়াল ২৯ এপ্রিলের স্মরণে ঢাকাস্থ কক্সবাজার সমিতি
১৯৯১ সালের ভয়াল ২৯ এপ্রিলকে স্মরণ করে আলোচনা সভা করেছে ঢাকাস্থ কক্সবাজার সমিতি। যেখানে দিবসটিকে জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা, টেকসই বেড়িবাঁধ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকে পাঠ্যপুস্তকে সংযুক্তি, প্যারাবন উদ্ধারসহ নানা পরামর্শ দিয়েছে উপস্থিত বক্তারা।  সমিতির সভাপতি স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ খোরশেদ আলমের পরিচালনায় আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, একুশে পদক বিজয়ী নাট্যকার কাউছার চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখক সাদাত উল্লাহ খান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান, সহসভাপতি সন্তোষ শর্মা, সহসভাপতি ইয়াছিন মোহাম্মদ শামসুল হুদা, সহসভাপতি স্বপন কান্তি পাল, সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তাকিম প্রমুখ। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা ২৯ এপ্রিলের ভয়াল অভিজ্ঞতা স্মরণ করেন। প্যারাবন তথা ম্যানগ্রোভ বনায়ন রক্ষায় তিনি সর্বমহলের সহযোগিতা কামনা করেন। প্রাকৃতিক সাইক্লোন নয়, প্যারাবন ধ্বংসকে তিনি অরাজনৈতিক দুর্বৃত্ত সাইক্লোন উল্লেখ করে সংশ্লিষ্টদের দুর্বৃত্তদের রুখে দেওয়ার আহ্বান জানান।  একুশে পদক বিজয়ী নাট্যকার কাউছার চৌধুরী দিনটিকে স্মরণ করে তাদের আত্নার মাঘফেরাত কামনা করেন। তিনি ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী ত্রাণ সাহায্য বিতরণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।  বিশিষ্ট লেখক সাদাত উল্লাহ খান বর্তমানে প্যারাবন ধ্বংসের নিন্দা জানান ও এই প্যারাবন ছাড়া মহেশখালীর অস্তিত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন। তিনি প্যারাবন ধ্বংসকারীদের দুর্বৃত্ত উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান। কক্সবাজার সমিতির সহসভাপতি দৈনিক কালবেলার সম্পাদক সন্তোষ শর্মা কক্সবাজারে পরিবেশবান্ধ প্রকল্প বাস্তবায়নে অনুরোধ করেন। তিনি পাহাড় নিধনের নিন্দা জানিয়ে কক্সবাজার সমিতিকে পরিবেশ রক্ষার যেকোনো উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানান। সভাপতির বক্তব্যে সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদ ২৯ এপ্রিলের ঘূর্ণিঝড়ের স্মৃতিচারণ করে দিনটির গুরুত্ব তুলে ধরেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন প্রণিধানযোগ্য উদ্যোগকে তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রকৃত দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন হালনাগাদ করেছে। এ ছাড়া অবকাঠামো খাতের বিভিন্ন তৎপরতা অবগত করেন তিনি।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

উচ্চ ঝুঁকিতে রাঙামাটি বান্দরবান ও কক্সবাজার
চট্টগ্রাম বিভাগের পার্বত্য অঞ্চলের তিন জেলা ও কক্সবাজারে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ কমছেই না। রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে তিন বছর ধরে ম্যালেরিয়ার রোগী বাড়ছে। বান্দরবানে ২০২৩ সালে রোগীর সংখ্যা আগের বছরের চেয়ে কম হলেও এই সংখ্যা ২০২১ সালের তুলনায় বেশি। কোনো এলাকায় এক বছরে প্রতি হাজার মানুষের মধ্যে একজনের বেশি ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়, তবে তা উচ্চ ঝুঁকির এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়। এ হিসেবে পার্বত্য তিন জেলার মধ্যে বর্তমানে বান্দরবান ও রাঙামাটি বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। খাগড়াছড়িতে আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও এখানে ঝুঁকি কম নয়। এর মধ্যে নতুন করে যোগ হয়েছে কক্সবাজার জেলা। দেশে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের ৯৫ শতাংশই পার্বত্য চট্টগ্রামে। ২০৩০ সালের মধ্যে সরকার দেশ থেকে ম্যালেরিয়া নির্মূল করতে চায়। আক্রান্ত বাড়ার প্রবণতা সরকারের লক্ষ্য পূরণে বাধা হয়ে উঠতে পারে বলেই ধারণা সংশ্লিষ্টদের। মাঠপর্যায়ের চিকিৎসক, কীটতত্ত্ববিদ ও গবেষকদের মতে, ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধির পেছনে তিনটি কারণ রয়েছে। এক. পার্বত্য এলাকায় মশা প্রতিরোধে বিতরণ করা কীটনাশক যুক্ত মশারি কাজ করছে না। দুই. পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্তবর্তী এলাকায় সংক্রমণ বেশি হওয়ার পরও প্রতিবেশী দেশগুলোর দিকে নজরদারির অভাব। তিন. প্রকৃতি, মশা ও মানুষের আচরণে পরিবর্তন। এমন পরিস্থিতিতে দেশে আজ পালিত হবে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস। চলতি বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো—ন্যায়সংগত বিশ্বের জন্য ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই আরও গতিশীল করতে হবে। দিবসটি ২০০১ সালের ২৫ এপ্রিল প্রথম পালন করা হয় আফ্রিকায়। ২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেমব্লির ৬০তম অধিবেশনে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবসের প্রস্তাবনা করা হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর ২৫ এপ্রিল দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। সরকারের ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত দশ বছরে দেশে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮ জনের ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়। তার মধ্যে ১৫৩ জনের মৃত্যু হয়। দেশের ১৩টি জেলা ম্যালেরিয়া প্রবণ। এর মধ্যে উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে রাঙামাটি, বান্দরবান ও কক্সবাজার। দেশের মোট ম্যালেরিয়া সংক্রমণের ৯৫ শতাংশের বেশি এই তিন জেলায়। বাকি ১০ জেলা হলো চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, শেরপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কুড়িগ্রাম, সিলেট, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার তুলনামূলকভাবে নিম্ন ঝুঁকির এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশে ১ হাজার ১৫৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে রাঙামাটিতে সর্বোচ্চ ৫০৩ জন। বান্দরবানে ৪৬০ জন এবং কক্সবাজারে ১৩৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ ছাড়া খাগড়াছড়িতে ৪০, চট্টগ্রামে ১৩, হবিগঞ্জে দুই এবং সিলেট ও নেত্রকোনায় একজন করে রোগী শনাক্ত হন। এ সময় কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। পার্বত্য তিন জেলার মধ্যে বান্দরবানে প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। ২০২৩ সালে দেশে ১৬ হাজার ৫৬৭ জন রোগী শনাক্ত হন। তার মধ্যে ৬০ দশমিক ৩৭ শতাংশ বান্দরবানের। ২৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ রাঙামাটি, ৭ দশমিক ৬১ শতাংশ কক্সবাজারে, ২ দশমিক ৫২ শতাংশ খাগড়াছড়ির বাসিন্দা। ২০২২ সালে ১৮ হাজার ১৯৫ জনের ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়। তার মধ্যে ৭৫ দশমিক ৯ শতাংশ বান্দরবানের। রাঙামাটির ১৭ দশমিক ৭ শতাংশ আর কক্সবাজারে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এর আগে ২০২১ সালে সারা দেশে ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয় ৭ হাজার ২৯৪ জনের। তার মধ্যে বান্দরবানের ৭১ দশমিক ৭ শতাংশ। রাঙামাটির ২১ দশমিক ৩ শতাংশ। কক্সবাজারের ৪ দশমিক ৯ শতাংশ আর খাগড়াছড়ির ১ দশমিক ৪ শতাংশ। ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ রয়েছে—এমন ১৩ জেলার মধ্যে ১২টি জেলার ৩৬ উপজেলার সঙ্গে ভারতের আন্তঃসীমান্ত রয়েছে। আর কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সঙ্গে প্রতিবেশী মিয়ানমারের আন্তঃসীমান্ত রয়েছে। পাহাড়ে ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ কমাতে সেখানে কীটনাশকযুক্ত মশারি দেওয়া হয়। তবে সেই মশারি এখন মশা প্রতিরোধে কাজে আসছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অ্যানোফিলিস জাতীয় মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া হয়। দেশে অন্তত ৩৭ প্রজাতির অ্যানোফিলিস মশা রয়েছে। এর মধ্যে সাতটির অধিক প্রজাতি বেশি ম্যালেরিয়া ছড়ায়। ইনক্রিমিনেশন অব ম্যালেরিয়া ভেক্টর মসকিউটোস ইন বাংলাদেশ: সিজনাল প্রিভিলেন্স অব অ্যানোফিলিস মসকিউটোস অ্যান্ড দেয়ার ডিস্ট্রিবিউশন ম্যাপস’ শীর্ষক পিএইচডি গবেষণা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, লক্ষ্যমাত্রার নির্ধারিত সময়ে ম্যালেরিয়া নির্মূল খুবই কঠিন কাজ। পার্বত্য অঞ্চলে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে কীটনাশক যুক্ত যে মশারি বিতরণ করা হয়, তাতে ডেলটামেট্রিন কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, বেশ কয়েক বছর ধরে এটি মশা প্রতিরোধ করতে পারছে না। কীটনাশক পরীক্ষা করলেও আমরা মশারি পরীক্ষা করিনি। কারণ, কীটনাশকই যেখানে কাজ করছে না, সেখানে মশারির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। পার্বত্য অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হচ্ছেন—যারা বনে গাছ কাটেন, জুম বাগান রক্ষণাবেক্ষণ করেন এবং সীমান্তে চোরাচালানে জড়িত। তারা বাইরে প্রতিরোধ ব্যবস্থা ছাড়া কাজ ও ঘোরাঘুরি করেন। মশাবিরোধী ক্রিম হাতে-পায়ে ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া ভারত, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে আন্তঃদেশীয় সমঝোতার মাধ্যমে একযোগে মশক নিধনে কাজ করলে পার্বত্য অঞ্চলের ম্যালেরিয়া ২০৩০ সালের মধ্যে নির্মূল করা সম্ভব। আইইডিসিআর’র সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও কীটতত্ত্ববিদ মুশতাক হোসেন বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ যেসব অঞ্চলে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব এখনো সক্রিয়, সেখানে মশা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। যতদূর জানি, ওষুধের ঘাটতি নেই। সম্ভবত ওষুধ অকার্যকর হয়ে গেছে।
২৫ এপ্রিল, ২০২৪

ঈদে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে বিশেষ চমক
ঈদ উপলক্ষে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথের যাত্রীদের জন্য আসছে বিশেষ চমক। ঈদযাত্রা স্বস্তি ও আরামদায়ক করতে এ রুটে প্রথমবারের মতো ঈদ স্পেশাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। একজোড়া বিশেষ ট্রেনে আসা-যাওয়ার পথে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ৮টি স্টেশনে থামবে। স্পেশাল এ ট্রেনটি ঈদুল ফিতরের আগে ও পরে চলবে। কক্সবাজার রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার গোলাম রব্বানী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ট্রেনটি চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকাল ৭টায় কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা করবে এবং পৌঁছাবে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে। সন্ধ্যা ৭টায় কক্সবাজার আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়ে রাত ১০টা ৫ মিনিটে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে। পথে ট্রেনটি ষোলশহর, জানালীহাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা এবং রামু স্টেশনে থামবে। তিনি আরও জানান, ট্রেনটি ৮ এপ্রিল থেকে ঈদুল ফিতরের আগের দিন পর্যন্ত এবং ঈদুল ফিতরের পরের দিন থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত চলাচল করবে। এ ট্রেনটিতে ১০টি কোচ এবং ৪৮০ সিট রয়েছে। ফার্স্টক্লাস সিটের (এসি) চট্টগ্রাম টু কক্সবাজারের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪০ টাকা এবং শোভন সিটের (ননএসি) ভাড়া ১৮৫ টাকা। এছাড়াও বিভিন্ন আন্তঃনগর ট্রেন অর্থাৎ মহানগর, মেঘনা ও  তূর্ণা কক্সবাজার পর্যন্ত বর্ধিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি প্রকল্পের কাজ শেষ হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে কমিউটার ট্রেনও চালু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
০২ এপ্রিল, ২০২৪

কক্সবাজার সৈকতে হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ
পবিত্র রমজান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আয় কমেছে সমুদ্র সৈকতের হকার, সার্ফার ও সৈকতের পরিছন্নতা কর্মীদের। এমন পরিস্থিতিতে তাদের দুরবস্থায় পাশে দাঁড়িয়ে হকার, পথশিশুসহ ২৫০টি হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেছে হোটেল ‘সায়মন বিচ’ রিসোর্ট। সোমবার (২৫ মার্চ) বিকেলে কক্সবাজার সৈকতের কলাতলী পয়েন্ট সায়মন বিচ রিসোর্টের সামনে এসব উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন সায়মন বিচ রিসোর্টের পরিচালক মো. সাবেদ উর রহমান। উপহারের মধ্যে চাল, ডাল, চিনি, সেমাই, আটা, লবণ, সয়াবিন তেল, মুড়ি, চিড়া, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও দুধ। পরে নতুন রূপে যাত্রা শুরু করা সায়মন হেরিটেজে আয়োজিত ইফতার পার্টি অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হয়ে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ‘সায়মন বিচ’ রিসোর্টের ও সায়মন হ্যারিটেজের ক্লাস্টার জেনারেল ম্যানেজার পুবুদু ফারনান্দো ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ইয়ামিন হোসেনসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
২৫ মার্চ, ২০২৪

টেকনাফ সীমান্তবাসীর ঘুম ভাঙল ওপারের ভারী গোলার শব্দে
কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত কয়েক দিন শান্ত থাকার পর আবারও গোলাগুলি ও ভারী অস্ত্রের বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছে। রোববার (২৪ মার্চ) রাত থেকে সোমবার (২৫ মার্চ) সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া ও হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়নের মিনাবাজার, খারাংখালী এলাকা থেকে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এ শব্দেই সীমান্তবাসীদের ঘুম ভেঙেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করছেন, রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের উত্তরে নাকপুরা এলাকা এবং পূর্বে ধনখালী, হাসুরাতা, নাইক্ষ্যংদিয়া, গর্জনদিয়া ও সংক্ষদাবিল এলাকায় চলমান সংঘাতই এসব বিস্ফোরণের কারণ। হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘কয়েক দিন সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। রোববার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত টানা ভারী অস্ত্রের বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে সাধারণ মানুষ।’ হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ আনোয়ারী বলেন, ‘বেশ কয়েক দিন সীমান্ত শান্ত থাকার পর আবারও হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় মিয়ানমারের ওপার থেকে ব্যাপক গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। নাফ নদীতে যারা মাছ শিকার করছিলেন তারা প্রাণ ভয়ে পালিয়ে আসেন। জেলেদের আতঙ্ক কাটছে না।’ এই বিষয়ে জানতে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদের মোবাইল ফোনে একাধিক বার কল করা হয়। কিন্তু তিনি তা রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
২৫ মার্চ, ২০২৪

পাহাড়ে অপহৃত আরেক কৃষক উদ্ধার
কক্সবাজারের টেকনাফে অপহৃত আরেক কৃষক মো. নুরকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব। এ নিয়ে অপহৃত পাঁচ কৃষককেই উদ্ধার করা হলো। রোববার (২৪ মার্চ) রাতে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী পাহাড়ে এ সফল উদ্ধার অভিযান করা হয়। টেকনাফের পশ্চিম পানখালী থেকে বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ভোরে পাঁচজন অপহরণের শিকার হন। তারা সবাই কৃষক। পরে তাদের ছেড়ে দিতে পরিবারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। শনিবার (২৩ মার্চ) রাত সাড়ে ১২টার দিকে অপহৃত পাঁচজনের মধ্যে চারজনকে লেদা পাহাড় থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি বলেন, ‘অপহরণকারীর সদস্য সংখ্যা ছিল ২৫ জনের মতো। তাদের প্রত্যেকের হাতে অস্ত্র রয়েছে। তাদের আস্তানাও শনাক্ত হয়েছে।’ বাকি অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলেও জানান তিনি।
২৫ মার্চ, ২০২৪

ঢাকাস্থ কক্সবাজারবাসীদের বার্ষিক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত
পূর্বাচল মেরিন সিটিতে দিনব্যাপী আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো ঢাকাস্থ কক্সবাজারবাসীদের মিলনমেলা। দিনব্যাপী এ আয়োজনে সংবর্ধনা প্রদান, ঐতিহ্যবাহী মেজবানি ভোজ, শিশুতোষ বিভিন্ন আয়োজন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিমণ্ডিত ছিল। অনুষ্ঠানে আজীবন সম্মাননা ‌‘কক্সবাজার সমিতি সম্মাননা ২০২৪’ প্রদান করা হয় একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা কাউসার চৌধুরী ও দৈনিক কালবেলার প্রকাশক, সম্পাদক সন্তোষ শর্মাকে। এ ছাড়া সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয় কক্সবাজার-১ এর সংসদ সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক রবীন্দ্র শ্রী বড়ুয়া, আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত স্থপতি আসিফ আহসানুল হক, আদর্শ শিক্ষক নূরুল ইসলাম ও মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় সারা বাংলাদেশে তৃতীয় স্থান অধিকারী আহমেদ জামিকে। কক্সবাজার সমিতির সভাপতি হেলালুদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানের শুরুতে সূচনা বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম। কক্সবাজার সমিতির এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান তনি।  এসময় তিনি কক্সবাজার সমিতির স্থায়ী অফিস ক্রয়ের অগ্রগতির অবস্থান তুলে ধরেন।  সভাপতির বক্তব্যে হেলালুদ্দীন আহমেদ সমিতির সদস্যদের পারস্পরিক সৌহার্দ্য অক্ষুণ্ন রাখার গুরুত্বকে তুলে ধরে অনাগত দিনগুলোতে বিভিন্ন আয়োজনের পরিকল্পনা দেন।  এসময় তিনি সম্মাননাপ্রাপ্ত গুণীজনদের প্রতি কক্সবাজার সমিতির পক্ষ হতে শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের অর্জনকে পুরো কক্সবাজারবাসীর অর্জন উল্লেখ করে বলেন, এতে কক্সবাজারবাসী সম্মানিত হয়েছে।  কক্সবাজার সমিতির উপদেষ্টা ও সদস্য, সাবেক সচিব আ ম ম নাসির উদ্দিন কক্সবাজার সমিতির আয়োজনকে কক্সবাজারবাসীদের পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে কক্সবাজার সমিতি কক্সবাজার তথা সারা বাংলাদেশের নারীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের প্রতীক হিসেবে কক্সবাজার সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আনিসুল মাওয়া আরজু, মহিলা শিশুবিষয়ক সম্পাদক শাফিয়াতুস সালেহিন ও নির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট রাবেয়া হককে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। একই সঙ্গে আগামী বছর এই দিবসে বিশেষ নারী সম্মাননা জানানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা কাউসার চৌধুরী আজীবন সম্মাননা ‌‘কক্সবাজার সমিতি সম্মাননা ২০২৪’ নিয়ে বলেন, ‌নিজ এলাকার মানুষদের এই স্বীকৃতিতে আমি আপ্পুত ও সম্মানিত।  দৈনিক কালবেলার সম্পাদক, প্রকাশক সন্তোষ শর্মা কক্সবাজার সমিতির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ভবিষ্যতেও এই সংগঠন অরাজনৈতিক, অসাম্প্রদায়িকভাবে নিরলস কাজ করে যাবে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।  বিশেষ সম্মাননাপ্রাপ্ত সংসদ সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম কক্সবাজারবাসীর এই সংগঠনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে কক্সবাজারবাসীর স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যু ও কক্সবাজারকে জাতীয়ভাবে তুলে ধরার বিভিন্ন প্রণিধানযোগ্য বিভিন্ন পরিকল্পনায় পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন। অনুষ্ঠানে কক্সবাজার সমিতির সহসভাপতিরা মোমিনুর রশিদ আমিন, জয়নুল আবেদিন মুকুল, ইয়াসিন মোহাম্মদ শামসুল হুদা, স্বপন কান্তি পাল, ব্যারিস্টার মিজান সাইদ, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তাকিম, প্রফেসর ডাক্তার মোহাম্মদ ইব্রাহিম উপস্থিত ছিলেন। এতে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র মুজিবুর রহমান।  সকালের অধিবেশন পরিচালনা করেন প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক মোহিব্বুল মোক্তাদীর তানিম। এরপর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আনিসুল মাওয়া আরজুর পরিচালনায় শিশুতোষ বিভিন্ন পরিবেশনা সম্পন্ন হয়। দ্বিতীয় অধিবেশন পরিচালনা করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুজন শর্মা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মফিজুর রহমান। র‍্যাফেল ড্র পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।  
০৯ মার্চ, ২০২৪

সীমান্তে গোলাগুলি / ‘বিকট বিস্ফোরণে মনে হলো ভূমিকম্প হচ্ছে’
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের জেরে আবারও শনিবার (২ মার্চ) সকাল থেকে বোমা ও গুলির শব্দে কেঁপে উঠছে টেকনাফ সীমান্ত। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এত বিকট শব্দ মনে হচ্ছে জীবনে প্রথম শুনেছেন তারা। বিস্ফোরণে হ্নীলায় যেন কম্পন সৃষ্টি হয়েছে। মনে হয়েছে, ভূমিকম্প হচ্ছে। শব্দ শুনেই শিশুরা কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছে। এদিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন ও হ্নীলা ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকার স্থানীয় লোকজন কালো ধোঁয়া দেখতে পাচ্ছেন। কিছু দিন বন্ধ থাকলেও ফের কয়েক দিন ধরে মর্টার শেলের ভারী আওয়াজে সীমান্ত এলাকায় লোকজন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। সকালে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়ার পূর্বে মিয়ানমারে সীমান্তে কালো ধোঁয়া দেখতে পান স্থানীয় লোকজন। সেখানকার বাসিন্দা জামাল উদ্দিন বলেন, শনিবার সকালে নাফ নদের ওপারে একটি বিস্ফোরণ হয়। এত বিকট শব্দ মনে হচ্ছে জীবনে প্রথম শুনলাম। বিস্ফোরণে হ্নীলায় যেন কম্পন সৃষ্টি হয়েছে। মনে হয়েছে ভূমিকম্প হয়েছে। শব্দ শুনেই শিশুরা কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছে। হ্নীলা এলাকার সীমান্তের এ বাসিন্দা আরও জানান, রাখাইন রাজ্যের বলিবাজারের দক্ষিণে ও নাগাকুরা এলাকায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর সারা রাত টানা গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। এপারের মানুষ নানাভাবে জানতে পেরেছে– জান্তা বাহিনীকে হটিয়ে ওই দুই এলাকা আরাকান আর্মি দখলে নিয়ে নিয়েছে। পুনঃদখলের জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনী চেষ্টা করছে। এ কারণে দুপক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে। হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘মিয়ানমারের ওপারে শুক্রবার সারা রাত থেমে থেমে চলছিল মর্টার শেল ও গোলাগুলি। সকালেও সেটি থেমে থেমে চলমান ছিল। হ্নীলা চৌধুরীপাড়ার পূর্বে মায়ানমারে কালো ধোঁয়া দেখা যায়। বলতে পারছি না কখন শেষ হবে এ সংঘাত। দিন দিন আরও বাড়ছে, এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে। মানুষ সব সময় আতঙ্কে রয়েছে। টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং মাদক পাচার রোধসহ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সদস্যরা সব সময় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। সীমান্ত নিরাপদে রাখতে বিজিবি রাত-দিন কাজ করছে।’
০২ মার্চ, ২০২৪

রামুর রাংকুট ও কক্সবাজার সৈকতে মুগ্ধ কূটনীতিকরা
কক্সবাজারের রামুর দুহাজার বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহার তীর্থস্থান পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজার সফররত আন্তর্জাতিক সংস্থার মিশন প্রধানসহ ২৪ দেশের ৩৪ কূটনীতিক। এ সময় কূটনীতিকরা ২ হাজার ৩০০ বছরের পুরোনো মহামতি বুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থান দেখে বিমোহিত হন। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে এসব কূটনীতিকদের গাড়িবহর রামু রাংকুট বনাশ্রম বিহারে পৌঁছালে তাদেরকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান বিহারের পরিচালক জ্যোতিসেন মহাথেরসহ স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এরপর কূটনীতিকরা যান কক্সবাজার সৈকত এলাকায়। সৈকতের লাবণী পয়েন্টের ট্যুরিস্ট ছাতা মার্কেট ঘুরে পছন্দের নানান জিনিস ক্রয় করেন। এরপর ঘুরে দেখেন দৃষ্টিনন্দন নানা পর্যটন স্পট। সৈকত দর্শন শেষে কূটনীতিকরা রামুর পেঁচারদ্বীপ মারমেইড বিচ রিসোর্টে যান। সেখানে দুপুরের ভোজ সেরে হোটেলে ফিরে বিকেলে কক্সবাজার বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন এবং বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরেন। এসময় অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ড. নজরুল ইসলামসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, পুলিশ কর্মকর্তারাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী ‘অ্যাম্বাসাডরস আউটরিচ প্রোগ্রাম’ এর শেষ দিনে বুধবার রাষ্ট্রদূতরা রামু ও কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন। এর আগে মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের নেতৃত্বে ‘অ্যাম্বাসাডরস আউটরিচ প্রোগ্রাম’ এ কূটনীতিকরা চট্টগ্রামের নেভাল একাডেমি ও কর্ণফুলী টানেল পরিদর্শন শেষে বিশেষ ট্রেনে চড়ে কক্সবাজার পৌঁছান। কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, কক্সবাজারের উন্নয়ন প্রকল্প, রামু বৌদ্ধ মন্দির, প্রাচীন ঐতিহ্য ও জেলার সৌন্দর্য উপভোগ করাতে ৩৪ কূটনীতিককে কক্সবাজার আনা হয়েছে। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম থেকে টানেলসহ উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দেখে ট্রেনে করে তারা কক্সবাজারে এসেছেন। বুধবার সকালে রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ তীর্থস্থান আসলে অতিথিদের স্বাগত জানান বিহারাধ্যক্ষ কে শ্রী জ্যোতিসেন মহাথেরো। তিনি কূটনীতিকদের সামনে বিহারের ঐতিহাসিক বিবরণ উপস্থাপন করেন। বিহারাধ্যক্ষ এই অঞ্চলের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বহুকালের ঐতিহ্য বিদেশের মিশন প্রধানদের জানান। হুইপ কমল আরও জানান, পরিদর্শনকালে মিশন প্রধানগণ বুদ্ধাস্থি সম্বলিত ঋদ্ধিময় বুদ্ধবিম্ব পরিদর্শন করেন এবং সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তারা বিহারের বিভিন্ন স্থানে সংরক্ষিত বৌদ্ধ পুরাকীর্তিগুলো ঘুরে দেখেন। পরে অতিথি কূটনীতিকদের সম্মানে স্থানীয় শিশু-কিশোররা গান ও নৃত্য পরিবেশন করে। স্থানীয় পিঠা পুলি আর ফলমূল দিয়ে কূটনীতিকদের আপ্যায়িত করা হয়। কক্সবাজার সফরের অনুভূতি প্রকাশকালে বিভিন্ন মিশনের প্রধানরা বাংলাদেশের পর্যটন খাতের অপার সম্ভাবনার কথা জানান। অ্যাম্বাসাডরস আউটরিচ প্রোগ্রাম বাংলাদেশের পর্যটনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তারা মত দেন। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সারা বিশ্বের জন্য একটি অসাধারণ নজির বলে তারা উল্লেখ করেন। রাংকুট বিহারাধ্যক্ষ জ্যোতিসেন অ্যাম্বাসাডরস আউটরিচ প্রোগ্রাম আয়োজন করায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ ধরনের কর্মসূচি বিদেশিদের নিকট বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারণা আরও উঁচু করবে। উল্লেখ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া, চীন, কোরিয়া, ইতালি, ডেনমার্ক, কসভো, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল, শ্রীলংকা, ভিয়েতনাম, ভ্যাটিকান, ভুটান, স্পেন, আর্জেন্টিনা, লিবিয়া, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মিশর, ফ্রান্স এবং এফএও, আইইউটি, একেডিএন আন্তুর্জাতিক সংস্থাগুলোর মিশনপ্রধানসহ ৩৪ জন কূটনীতিক সদস্য এ আউটরিচ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
X