বৈষম্যমূলক সর্বজনীন পেনশন প্রত্যাহারের দাবি কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের
সম্প্রতি ঘোষিত সরকারের সর্বজনীন পেনশন প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। বুধবার (১৫ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল ভাস্কর্যের পাদদেশে এ কর্মসূচি পালিত হয়। প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. তুষার কান্তি সাহা, সাধারণ সম্পাদক ড. মো. শফিকুল ইসলাম, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তপন কুমার সরকার, প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জি প্রমুখ। সভায় বক্তারা বলেন, আগামী ১ জুলাই থেকে যোগদানকৃতদের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত করার যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, তা বৈষম্যমূলক। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনের ক্ষেত্রে এই ধরনের প্রজ্ঞাপন কাম্য নয়। স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বায়ত্তশাসন প্রদান করে যে শিক্ষা ও গবেষণার গুরুত্বকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন, এই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সেই গুরুত্ব এবং শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। একইসঙ্গে মেধাবীরা শিক্ষকতায় নিরুৎসাহিত হবেন।    বৈষম্যমূলক এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে প্রত্যাহার করে শিক্ষকদের মাঝে সৃষ্ট ক্ষোভ ও অসন্তোষ নিরসনের দাবি জানায় নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। পাশাপাশি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবি স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর প্রতি সমর্থন জ্ঞাপনপূর্বক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মর্যাদাকে সমুন্নত করার জোর দাবিও জানায় শিক্ষক সমিতির নেতারা।
১৫ মে, ২০২৪

অনিয়মের বেড়াজালে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়
প্রশাসনিক কাজে তিন বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে, বিজ্ঞপ্তির এমন শর্ত ভঙ্গ করে জাল সনদে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সুপারভাইজর সোহেল রানার বিরুদ্ধে। তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে ইউজিসির কাছে অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে। ‘হল সুপারভাইজর’ পদে নিয়োগটি ত্রুটিপূর্ণ আখ্যা দিয়ে, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটকে চিঠি ইস্যু করেছে ইউজিসি। জানা যায়, ২০২১ সালের ৮ নভেম্বর কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য পদের পাশাপাশি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের জন্য ‘হল সুপারভাইজর’ পদের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। প্রকাশিত বিজ্ঞাপনে পদটির জন্য আবেদনকারীদের অন্যান্য যোগ্যতার পাশাপাশি অভিজ্ঞতা হিসেবে, (ক) সরকারি/ আধা সরকারি/ স্বায়িত্বশাসিত/ শিক্ষা প্রশাসনে প্রশাসনিক কাজে প্রশাসনিক কাজে তিন বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতার বলা হয়। ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮২তম সিন্ডিকেটে সোহেল রানা নামে এক ব্যক্তি ত্রিশালের আমিরাবাড়ী ইউনিয়নের গুজিয়াম আলিম মাদ্রাসা থেকে কমম্পিউটার অপারেটর কাম হিসাব রক্ষক (খণ্ডকালীন) কাজের অভিজ্ঞতার সনদ দাখিল করে এ পদে নিয়োগ পান। আবেদনকারীদের সকল সনদ যাচাইয়ের পর যে তালিকা হয়, রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে সে তালিকা সংগ্রহ করেন জাহানারা মুক্তা নামে অপর এক আবেদনকারী। তাতে দেখা যায়, সোহেল রানা ২ বছর ১ মাসের অভিজ্ঞতার সনদ দাখিল করেছিলেন। তার মন্তব্যের কোঠায়, ‘আবেদনের (ক) শর্ত পূরণ করেননি’ মর্মে উল্লেখ ছিল। তা সত্ত্বেও সোহেল রানার নিয়োগ ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা নামক একটি মেয়েদের হলের জন্য একজন পুরুষকে হল সুপারভাইজর করে নিয়োগ দেওয়াসহ নানা অসঙ্গতি নিয়ে ময়মনসিংহ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন মুক্তা।  হল সুপারভাইজর পদে নিয়োগপ্রাপ্ত সোহেল রানা এখন রেজিস্ট্রার দপ্তরের আইন কর্মকর্তার সহকারী হিসেবে কাজ করছেন বলে একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়। এদিকে এই নিয়োগের বিরুদ্ধে প্রাপ্ত তথ্য ও মাদরাসা অধ্যক্ষের একটি ভিডিও বার্তাসহ, শিক্ষামন্ত্রী ও ইউজিসির উপ-পরিচালক বরাবর নিয়োগ জালিয়াতির লিখিত অভিযোগ করেন একই পদে আবেদনকারী অপর চাকরিপ্রার্থী কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী জাহানারা মুক্তা। অভিযোগের অনুলিপি দেওয়া হয়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মুঞ্জুরি কমিশনের বিভিন্ন দপ্তরে। অভিজ্ঞতা সনদটি যাচাইয়ের জন্য গত ২৯ ফেব্রুয়ারি গুজিয়াম আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে চিঠি দেন কমিশন। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মামুনের দেওয়া জবাবে ইউজিসির বিশ্লেষণে প্রতীয়মান হয়েছে, প্রকাশিত বিজ্ঞাপণের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘হল সুপারভাইজর’ পদে নিয়োগটি ত্রুটিপূর্ণ। গত ১৭ এপ্রিল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত খাত হতে সম্মানি দেওয়া হয় এমন খণ্ডকালীন কাজের অভিজ্ঞতার সনদের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত/স্থায়ী পদের বিপরীতে জনবল নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ আছে কিনা সেটি বিবেচ্য। এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন্ন সিন্ডিকেটে বিষয়টি উপস্থাপন করে সিদ্ধান্ত গ্রহণপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং কমিশনকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হলো।’ ওই নিয়োগের পরপরই একজন গণমাধ্যমকর্মীর ধারণ করা একটি ভিডিও রেকর্ড এসেছে কালবেলার হাতে। এতে দেখা যায়, ওই গণমাধ্যমকর্মী গুজিয়াম আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মামুনকে প্রশ্ন করেন, ‘সোহেল রানা নামে কোনো ব্যক্তি এই প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার অপারেটর কাম হিসাবরক্ষক কর্মরত ছিলেন কিনা, এমন প্রশ্নে অধ্যক্ষ বলেন, এ নামে কেউ নেই, ছিলেন না।’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে এবার সুর পাল্টে অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, তিনি তো (সোহেল রানা) এখানে পার্টটাইম কাজ করতেন। নাম প্রকাশে একাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা বলেন, নিয়োগপ্রাপ্ত ওই সোহেল রানার শিক্ষাজীবনে এইচএসসি পাস করেছেন জিপিএ ২.৮০ পেয়ে এবং বেসরকারি ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফাইন্যান্সে সিজিপিএ ২.৮৬ পেয়ে স্মাতক পাস করেন। অথচ তার চেয়ে অনেক ফল অর্জন করা আবেদনকারীরাও কেন বাদ পড়েছেন, তার পেছনে রহস্যজনক কারণ আছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ইউজিসির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, কমিশনের কাছে তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। যেহেতু নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ সিন্ডিকেট, তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী সিন্ডিকেটকেই নিয়োগ বাতিল করতে হবে।   অভিযোগকারী জাহানারা মুক্তা বলেন, অবৈধপন্থা অবলম্বন করে অর্থের বিনিময়ে জাল সনদে সোহেল রানাকে নিয়োগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আর এজন্যই বিভিন্ন তথ্যউপাত্ত সরবরাহ করে ইউজিসি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি। উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, ত্রুটিপূর্ণ হয়নি জানিয়ে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউজিসি বলেছে, সিন্ডিকেটে নিয়ে যাও, ইউজিসির কথামতো আমরা সিন্ডিকেটে নিয়ে যাব। সিন্ডিকেট সদস্যরা যে মত দেবে, তাতে যদি কারও চাকরি থাকে থাকবে, না থাকলে থাকবে না। কারও প্রতি আমাদের আলাদা পক্ষপাত নেই।
১৪ মে, ২০২৪

সেই দিনটি / বিস্ময় প্রতিভা কবি সুকান্ত
‘সাবাস, বাংলাদেশ/ এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়/ জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার/ তবু মাথা নোয়াবার নয়’। আরেক কবিতায় লিখেছেন—‘ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়/পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি’। বাংলা সাহিত্যের এক বিস্ময়কর প্রতিভা সুকান্ত ভট্টাচার্য কাব্য সাহিত্যে এমনই সব অমর কাব্যগাথা রচনা করে অমর হয়ে আছেন। বাংলা কাব্য, নাটক ও প্রবন্ধ সাহিত্যে অসাধারণ প্রতিভাধর এ কবির ছিল মাত্র একুশ বৎসরের অত্যন্ত স্বল্প সময়ের জীবন। এ সামান্য সময়ে অত্যাশ্চর্য সৃষ্টিশক্তির বদৌলতে অর্জন করেছেন অশেষ খ্যাতি এবং বেঁচে আছেন মানুষের হৃদয়ে। সুকান্ত ছিলেন মাকর্সবাদী ভাবধারায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল চেতনার অধিকারী এক তরুণ কবি। ১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমার কোটালীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার মাতার নাম সুনীতি দেবী এবং পিতা নিবারণ চন্দ্র ভট্টাচার্য। ছোটবেলা থেকে সুকান্ত ভট্টাচার্য কলকাতায় বসবাস করেন। ১৯৪৫ সালে বেলেবিটা স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষা দিয়ে অকৃতকার্য হন। এ সময়ে তিনি বাম রাজনীতিতে যুক্ত হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে কবির শিক্ষাজীবনের সমাপ্তি ঘটে। ছোটবেলায় মাকে হারান। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান কিশোর কবি বেছে নেন রাজনীতি ও লেখালেখির জীবন। সুকান্তের বাল্যবন্ধু ছিলেন কবি অরুণাচল বসু। ‘সুকান্ত সমগ্র’তে লেখা সুকান্তের চিঠিগুলোর বেশিরভাগই অরুণাচল বসুকে লেখা। অরুণাচল বসুর মা সরলা বসু কবিকে পুত্রস্নেহে লালনপালন করেন। কবির জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছিল কলকাতার বেলেঘাটার ৩৪ হরমোহন ঘোষ লেনের বাড়িতে। সেই বাড়িটি এখনো অক্ষত। কাছেই কবির ভাইয়ের মধ্যে দুজন, বিভাস ভট্টাচার্য ও অমিয় ভট্টাচার্যের বাড়ি। পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সুকান্তের সম্পর্কিত ভ্রাতুষ্পুত্র। স্কুলজীবনে মাত্র ৯ বছর বয়সে সুকান্তের প্রথম লেখা একটি গল্প হাতে লেখা পত্রিকা ‘সঞ্চয়’তে প্রকাশ পায়। সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালে লেখেন নাটক ‘ধ্রুব’। এ নাটকে তিনি অভিনয় করেন। সেই থেকে কবিতা, নাটক, প্রবন্ধ লেখা শুরু করেন। সাংবাদিকতায় অসাধারণ মেধার পরিচয় রাখেন কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, তেতাল্লিশের মন্বন্তর, ফ্যাসিবাদী আগ্রাসন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রভৃতির বিরুদ্ধে তিনি কলম ধরেন। ১৯৪৪ সালে তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ লাভ করেন। পরে দলটির মুখপত্র ‘দৈনিক স্বাধীন’ সম্পাদনা কাজে যোগ দেন। সেই বছর আকাল নামক একটি সংকলনগ্রন্থ তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়। ১৯৪১ সালে যোগ দেন কলকাতা রেডিওতে। কৈশোর থেকেই সুকান্ত যুক্ত হয়েছিলেন সাম্যবাদী রাজনীতির সঙ্গে। পরাধীন দেশের দুঃখ-দুর্দশাজনিত বেদনা এবং শোষণমুক্ত স্বাধীন সমাজের স্বপ্ন, শোষিত মানুষের কর্মজীবন এবং ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জন্য সংগ্রাম তার কবিতার মূল প্রেরণা। স্বল্প সময়ে সুকান্ত নানা বিষয়ে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেন। তার প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে ছাড়পত্র, কবিতাসমগ্র, পূর্বাভাস, মিঠেকড়া, অভিযান, হরতাল, রাখাল, গীতিগুচ্ছ অন্যতম। একাধারে বিপ্লবী ও স্বাধীনতার আপসহীন সংগ্রামী কবি সুকান্ত ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির সারাক্ষণের কর্মী। পার্টি ও সংগঠনের কাজে অত্যধিক পরিশ্রমের ফলে নিজের শরীরের ওপর হয়েছে অমানুষিক অত্যাচার। তিনি প্রথমে ম্যালেরিয়া ও পরে দুরারোগ্য ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৯৪৭ সালের ১৩ মে মাত্র ২১ বছর বয়সে মারা যান।
১৩ মে, ২০২৪

কবি অমিয় চক্রবর্তী
ত্রিশের দশকের পঞ্চপাণ্ডবের অন্য চার কবি জীবনানন্দ দাশ, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, বিষ্ণু দে, বুদ্ধদেব বসুর সঙ্গে এক পঙক্তিতে স্থান দখল করে নিয়েছিলেন অমিয় চক্রবর্তী। তার প্রথম দুটো কাব্যগ্রন্থে অবশ্য রবীন্দ্র প্রভাব লক্ষ করা যায়। তার তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘খসড়া’ প্রকাশ পেলে কবিতা পত্রিকায় বুদ্ধদেব বসু লিখেছিলেন, “খসড়া প্রকাশের পর অমিয় চক্রবর্তীকে উল্লেখযোগ্য বাঙালি কবিদের অন্যতম বলে মেনে নিতে আমাদের দ্বিধা করা উচিত নয়।” রবীন্দ্রনাথ তার মধ্যে দেখেছিলেন অনুভূতির বিচিত্র সূক্ষ্ম রহস্য ও বিশ্বসাহিত্যের স্পর্শ। শুধু তাই নয়, প্রথমে সাহিত্যের ছাত্র ও পরবর্তীকালে সাহিত্যের অধ্যাপক, ধর্মতত্ত্ব-রাজনীতি, দর্শনশাস্ত্রে সুপণ্ডিত, বিশ্বসাহিত্যের একনিষ্ঠ পাঠক অমিয় চক্রবর্তী ছিলেন দারুণ মননশীল মানুষ। তার কবিতা পড়লে দেখা যায়, সেখানে তিনি উঠিয়ে এনেছেন প্রগাঢ় দার্শনিকতার মধ্যে অন্তর্লীন হয়ে যাওয়া সময় আর সমাজ-সচেতনতা। অমিয় চক্রবর্তী [এপ্রিল ১০, ১৯০১-জুন ১২, ১৯৮৬]
১০ মে, ২০২৪

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় গবেষণা মেলা শুরু
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে দুই দিনব্যাপী দ্বিতীয় গবেষণা মেলা ২০২৪। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও সম্প্রসারণ কেন্দ্রের আয়োজনে সামাজিক বিজ্ঞান ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে গবেষণা মেলা। বুধবার (৮ মে) বিকেলে গবেষণা মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। গবেষণা ও সম্প্রসারণ কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. মার্জিয়া আক্তারের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান এবং বিভিন্ন অনুষদের ডিনরা। ৮ ও ৯ মে দুইদিনব্যাপী গবেষণা মেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪টি বিভাগ ৩২টি স্টলের মাধ্যমে তাদের গবেষণা কার্যক্রম ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরবে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাশুরেন্স সেলসহ বিভিন্ন ইন্সটিটিউটসমূহ তাদের কার্যক্রম ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা প্রকাশ করবে। গবেষণা মেলার সমাপনী আয়োজনে অতিথি হিসেবে থাকবেন বিশিষ্ট গবেষক, বিজ্ঞানী ও বুয়েটের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ। 
০৯ মে, ২০২৪

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ক্লাব
সম্প্রতি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য বিশ লাখ টাকা সরকারি অনুদান পেয়েছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফজলে হাসান শিশির। ‘ঝিরি পথ পেরিয়ে’ নামের যে চলচ্চিত্রটির জন্য অনুদান পেয়েছেন, সেটার চিত্রনাট্যও লিখেছেন তিনি। ইংরেজি বিভাগে পড়াশোনা করলেও চলচ্চিত্র নির্মাণ ও বোঝাপড়ার দিকে তুলনামূলক ঝোঁক ছিল, বেশি ছিল শিশিরের। সেই সময় তুলনামূলক নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয়টির চলচ্চিত্রপ্রেমীদের সঙ্গে নিয়ে গড়ে তুলেন ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ক্লাব। শিশিরের ভাষায়, আমরা যে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই, তখনো বেশ ঘরোয়া পরিবেশ বিরাজ করছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে। তবে যেহেতু বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই ক্যাম্পাসে স্থায়ীভাবে থাকেন না, তাই ক্লাস-পরবর্তী সময়েই একটা শূন্যতা বশ করে ফেলত ক্যাম্পাসে। আমাদের ক্লাবের উদ্দেশ্য ছিল চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র শিল্পকে উপজীব্য করে নিজেদের আরও পরিশীলিত জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা। ক্লাবটি যাত্রা শুরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ চালুর সাত বছর আগে; ২০০৯ সালে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ক্লাবটি নিয়মিতভাবে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী আয়োজন শুরু করে। কখনো থিয়েটার ডিপার্টমেন্টের স্টুডিও থিয়েটার হলে কিংবা কখনো ইংরেজি বিভাগের বারান্দায়। প্রতি সপ্তাহের মঙ্গলবার বা বৃহস্পতিবারে চলতো ক্লাসিক্যাল সব চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর এমন আয়োজন। এরপর ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় শর্টফিল্ম ফেস্টিভালের আয়োজন করে ক্লাবটি। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী যারা শর্টফিল্ম নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত, তারা আয়োজনটিতে অংশগ্রহণ করেন। দেশ ও দেশের বাইরে মিলিয়ে শতাধিক শর্টফিল্ম জমা পড়ে এবং প্রদর্শনী করা হয় ৫৪টি চলচ্চিত্র। পরে ফিল্ম অ্যাপ্রিশিয়েশন কোর্স চালু করা হয় ক্লাব থেকে। ২০১৭ সালের নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস নিয়ে প্রথমবারের ফিচার ফিল্ম তৈরি করে ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি; ১০ মিনিটের এই ফিল্মটি সর্বমহলে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়। বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের সঙ্গে যৌথ আয়োজনে সংগঠনটি ক্যাম্পাসে তিন দিনব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী ও স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত এ উৎসবে একাত্তরের মা জননী (পূর্ণদৈর্ঘ্য), একাত্তরের গণহত্যা ও বধ্যভূমি (প্রামাণ্যচিত্র), ভুবন মাঝি (পূর্ণদৈর্ঘ্য) ও সেই রাতের কথা বলতে এসেছি (প্রামাণ্যচিত্র) এবং আগামী ১৪ ডিসেম্বর তারিখ দেখানো হবে স্টপ জেনোসাইড (প্রামাণ্যচিত্র), অনিল বাগচীর একদিন (পূর্ণদৈর্ঘ্য), বধ্যভূমিতে একদিন (প্রামাণ্যচিত্র) ও বিশ্বসভায় বাংলাদেশ (প্রামাণ্যচিত্র) প্রদর্শন করা হয়। তারা ইউনাইটেড ন্যাশনস, বঙ্গবন্ধু অ্যাডভেঞ্চার ফেস্টিভ্যাল, দ্য ডেইলি স্টার-সেলিব্রেটিং লাইফ, উইম্যান পিস ক্যাফেসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, চলচ্চিত্র নির্মাণবিষয়ক ওয়ার্কশপ আয়োজন করে থাকে। ১৪ বছরের ব্যবধানে শিশির ছাড়াও ক্লাবের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য চলচ্চিত্র নির্মাণ, শর্টফিল্ম নির্মাণ, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র প্রতিযোগিতায় বিজয়ী, বিদেশে ফিল্ম নিয়ে উচ্চশিক্ষাসহ চলচ্চিত্রের নানাক্ষেত্রে অবদান রাখছে। শিশির নিজে ফিল্ম স্টাডিজে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় বর্তমানে কাজ করছেন বাংলা ভাষার সিনেমা নিয়ে। ক্লাবের সাবেক সদস্য সাব্বির আহমেদ আবির আলোকচিত্র নিয়ে পড়াশোনা করছেন ভারতের হায়াদ্রাবাদের ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাদ আহমেদ ফুয়াদ সেকেন্ড রানার্সআপ হয়েছেন তারেক মাসুদ শর্ট ফিল্ম কম্পিটিশন-২০২০ এ। ক্লাবের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে সভাপতি জি এম মেহেদী হাসান জানান, ক্লাবের প্রতিটি সদস্যদের ফটোগ্রাফি ও সিনেমাটোগ্রাফিতে পারদর্শী করে তোলা। আন্তর্জাতিক কোলাব্রেশন। এবং ত্রিশাল তথা ময়মনসিংহ অঞ্চলকে ক্যামেরার লেন্স দিয়ে পুরো বিশ্বকে দেখানো।
০৫ মে, ২০২৪

কবি নজরুল কলেজে ফরিদপুর জেলা ছাত্রকল্যাণের নতুন কমিটি
রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজে অধ্যয়নরত ফরিদপুর জেলার শিক্ষার্থীদের সংগঠন ফরিদপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মে ) সকালে ফরিদপুর জেলা ছাত্রকল্যাণের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন টুটুল, কায়জার তুহিন, মো. নাসির মোল্লা, সাইফুর রহমান মৃধা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এক বছরের জন্য এ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মোজাফফর ইসলাম ইমন সভাপতি এবং মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মারজিউর রহমান মিতুল (রেহান) সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটি দ্রুতই প্রকাশ করা হবে জানিয়ে ফরিদপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের উপদেষ্টারা বলেন, আমাদের জেলার ছেলে মেয়েদের পিছিয়ে পড়ার কোনো সুযোগ নেই। এ কমিটির মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে ভাতৃত্ববোধ ও আস্থা আরও দৃঢ় হবে। একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে নিজেদের দক্ষ নাগরিক হিসেবে তৈরি করবে। নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মারজিউর রহমান মিতুল বলেন, আমরা আশা করব এ কমিটির মধ্য দিয়ে ফরিদপুর জেলার সকল শিক্ষার্থী একত্র হবেন। এতে করে আমাদের মাঝে ভ্রাতৃত্ববোধ আরও বৃদ্ধি পাবে এবং নির্ভরতার একটি জায়গা তৈরি হবে।
০২ মে, ২০২৪

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বাউল ও লোকগানের কর্মশালা
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বিশ্ব সংস্কৃতিতে বাংলাদেশের বাউল ও লোকদর্শন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দুই দিনব্যাপী বাউল ও লোকগানের কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ বাউল ও লোকশিল্পী সংস্থার সভাপতি বাউল শফি মন্ডল কর্মশালায় মুখ্য প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সোম ও মঙ্গলবার (২৯ ও ৩০ এপ্রিল) দুই দিনব্যাপী আলোচনা সভা, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ও রাতে ভাব গানের আসরের মধ্য দিয়ে আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ও নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের আয়োজনে কর্মশালাটি বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ বাউল ও লোকশিল্পী সংস্থা।  নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর কর্মশালাটির উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, আজকের পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে প্রশান্তির সংকট। মানুষের ভেতরে শান্তি নেই, বাকি সব আছে। বাউলরা সেই প্রশান্তিই খোঁজে। তারা মনের প্রশান্তি খুঁজে দেয়। আজকে পাশ্চাত্য যে অভিঘাত তা থেকে বাউল সাধকরা আমাদের মুক্তি দিতে পারে। তাদের যে দর্শন এই দর্শনকে দেখবার জন্য, উপলব্ধি করবার জন্য বিদেশ থেকে লোক আসছে। এই বাউল আমাদের নিজস্ব সম্পদ। যে সম্পদ দিয়ে আমরা সারা বিশ্বে পরিচিত হতে পারি। সংগীত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. সুশান্ত কুমার সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুশাররাত শবনম। মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক ও নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য মো. শহীদুল ইসলাম। গানের দর্শন নিয়ে আলোচনা করেন সংগীত বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. জাহিদুল কবীর, লেখক-গবেষক রুবেল সাইদুল আলম ও মো. তাজউদ্দিন। সংগীত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, বাউল শফি মন্ডল একজন গুণী মানুষ। অনেক শিল্পী ওনার গান শুনে বড় হয়েছে, অনুপ্রাণিত হয়েছে। আমাদের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা ওনার কাছ থেকে সরাসরি গান শেখার সুযোগ পেয়েছে। আমি মনে করি, ছাত্রছাত্রীদের জন্য এটা বড় প্রাপ্তি। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যেমন সমৃদ্ধ হয়েছে, একইসঙ্গে আমাদের বিভাগও সমৃদ্ধ হয়েছে।  দুই পর্বের অনুষ্ঠানটির দ্বিতীয় পর্বে ভাব গানের আসরটি পরিবেশিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চুরুলিয়া মঞ্চে। এ সময় সংগীত পরিবেশন করেন বাউল শফি মন্ডল, অধ্যাপক ড. জাহিদুল কবির, রুবেল সাইদুল আলম, সরদার হীরক রাজা, প্রকৌশলী মোহাম্মদ খাইরুজ্জামান সবুজ, দিতি সরকার, মিজানুর রহমান ভুট্টো এবং সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
০১ মে, ২০২৪

কবি নজরুল কলেজের ছাত্রাবাসে পলেস্তারা খসে আহত শিক্ষার্থী
কবি নজরুল কলেজের একমাত্র ছাত্রাবাস শহীদ সামসুল আলম হল এর ডি ব্লকের একটি রুমে ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে একজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।  মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় রুমেই ঘুমাচ্ছিলেন কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফিদবি।  তিনি বলেন, হঠাৎ করেই আমি অনুভব করি আমার গায়ে কিছু পড়ছে। এর মধ্যেই হুট করে বিকট শব্দে ছাদ থেকে বেশ বড় মাপের পলেস্তারা খসে পড়ে। আমার গায়েও কিছু পড়েছে।  নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী জানান, হলটি এখন কলেজের নিয়ন্ত্রণে নেই। মাঝে মধ্যে কলেজ ছাত্রলীগ ও স্থানীয় নেতারা শুটিংয়ের জন্য হলটি ভাড়া দিয়ে থাকে। সাধারণত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রাবাস যেভাবে নিয়ন্ত্রণ বা রক্ষণাবেক্ষণ হওয়ার কথা তা হয় না। এই শহীদ শামসুল আলম হলের ব্যাপারে এখানে যে যার ইচ্ছেমতো থাকে, মাদক গ্রহণ করে এই ভবনেই।  সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাগজে কলমে হলটির নিয়ন্ত্রণকারী কলেজ প্রশাসন জানেও না এখানে কারা কীভাবে থাকে, কে কী করে।  এদিকে হলে নেই কোনো সংস্কার, ভবনের ছাদ থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। সব রুমে একই অবস্থা। যে কোনো সময় এখানে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দ্রুত হল সংস্কার ও কলেজ প্রশাসনের উদ্যোগে হলে বৈধ সিট চালুর দাবি জানিয়েছেন হলের আবাসিক ও অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা।  এ বিষয়ে একাধিকবার কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আমেনা বেগমের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। 
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

‘কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার ২০২৩’ পেলেন চার তরুণ
আইএফআইসি ব্যাংক নিবেদিত ‘কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার ২০২৩’ পেলেন চারজন তরুণ লেখক। শনিবার (২৭ এপ্রিল) ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে এক আড়ম্বর অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এবারের বিজয়ীরা হলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাহিত্যে ‘ফাড়াবাড়ি হাট গণহত্যা আদর্শ বাজার গণহত্যা’ বইয়ের জন্য ফারজানা হক, কথাসাহিত্যে ‘ভাতের কেচ্ছা’ বইয়ের জন্য কাম্রুন্নাহার দিপা, প্রবন্ধ ও গবেষণা বিভাগে ‘জনসংস্কৃতির রূপ ও রূপান্তর’ বইয়ের জন্য শারফিন শাহ ও শিশু-কিশোর সাহিত্যে ‘আলোয় রাঙ্গা ভোর’ গ্রন্থের জন্য রহমান বর্ণিল। প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা ও স্মারক দেওয়া হয়। বিচারকমণ্ডলীর সিদ্ধান্ত অনুসারে কবিতা বিভাগে মানসম্মত গ্রন্থ জমা না পড়ায় এ বছর ৪টি বিভাগে পুরষ্কার প্রদান করা হয়েছে।      অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কালি ও কলম-এর সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি এমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘কালি ও কলম তার দীর্ঘদিনের পথচলায় কখনো লক্ষ্য থেকে সরে যায়নি। আমাদের পূর্বের অনেক বিজয়ী এখন দাপটের সঙ্গে সাহিত্যাঙ্গনে বিরাজ করছেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এবারের বিজয়ী লেখকরাও আগামীতে অনেক ভালো কাজ করবেন। নতুনরা সবসময় একটা ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসেন, এবারো ব্যতিক্রম হবে না       প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, সাহিত্যের পথচলা অনেক অমসৃণ যাত্রা। এই পথে এরকম স্বীকৃতি আগামী দিনে ভালো লেখার প্রণোদনা দেয়। আশা করি এই সঞ্জীবনী শক্তিতে ওরা এগিয়ে যাবে এবং বাংলা সাহিত্যে নতুন মাত্রা যোগ করবে। তিনি বলেন, পুরস্কার নয়, লেখালেখি সবসময় পাঠকের জন্য। আপনার লেখা যেন পাঠককে ভাবায়, কিছু অনুভব করায়, সেই উদ্দেশ্যে কাজ করে যাবেন এই আশা রাখছি। আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ আলম সারওয়ার, কালি ও কলমের সম্পাদক সুব্রত বড়ুয়া এবং কালি ও কলমের প্রকাশক আবুল খায়ের। স্বনামখ্যাত রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে এবারের আয়োজন শেষ করা হয়।
২৭ এপ্রিল, ২০২৪
X