কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করুন
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের শেষ তিন মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে বেকার বেড়েছে প্রায় আড়াই লাখ। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাস্তবে বেকারের সংখ্যা অনেক বেশি। বিবিএসের তথ্যমতে, দেশে মোট বেকারের ১২ শতাংশই উচ্চশিক্ষিত। অথচ যাদের কোনো আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নেই, তাদের বেকারত্বের হার মাত্র ১.০৭ শতাংশ। মানসম্মত শিক্ষার অভাবেই দেশে বেকারত্ব, বিশেষ করে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেশি বাড়ছে। শ্রমশক্তি জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিন মাসের ব্যবধানে শ্রমশক্তিতে যুক্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ২ লাখ ৯০ হাজার। জনগোষ্ঠী বাড়লেও সেই তুলনায় দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর অর্থ হচ্ছে আনুষ্ঠানিক খাতে কাজের সুযোগ সৃষ্টির বিষয়গুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না। বর্তমান সময়ের বাস্তবতা হচ্ছে, দেশে শ্রমশক্তির তুলনায় কর্মসংস্থানের প্রবৃদ্ধি কম। বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের মধ্যে একটা বড় অংশই এখন বেকার। পড়াশোনা শেষ করে বছরের পর বছর চাকরির জন্য অপেক্ষা করছে তারা। এখন করণীয় কী? কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। বাস্তবতা হচ্ছে, যোগ্য প্রার্থীর তুলনায় সরকারি চাকরিতে নিয়োগ একেবারে কম। বেসরকারি খাতে চাকরির বাজার সেভাবে সম্প্রসারিত হয়নি। অন্যদিকে সরকারি চাকরির তুলনায় বেসরকারি খাতের চাকরি সেভাবে আকর্ষণীয় নয়। বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, স্থানীয় বাজারে চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ জনশক্তি পাওয়া যায় না। ফলে দেশের বেসরকারি খাতের অনেক উচ্চপদে বাইরের দেশ থেকে জনশক্তি নিয়োগ করা হয়। বিশেষায়িত এসব পদে নিয়োগের বিপরীতে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা চলে যায়। ইউএনডিপি তাদের এক প্রতিবেদনে জানাচ্ছে, বাংলাদেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অতিক্রম করছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এ সুযোগ কি কাজে লাগাতে পারছে বাংলাদেশ? কেন পারছে না? আমরা কথায় কথায় কর্মমুখী শিক্ষার কথা বলি। এখন দেখার বিষয় আমাদের শিক্ষা কতটা কর্মমুখী হয়েছে? আদৌ কি হয়েছে? পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সম্পদ হচ্ছে মেধা। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করুনবাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম মেধাবী। তাদের যথাযথভাবে তৈরি করে কাজে লাগাতে পারলে আগামী দিনের বাংলাদেশ নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করবে। এ মেধাবীদের উপযুক্ত করে তৈরি করতে হলে বিনিয়োগ করতে হবে। বাংলাদেশে চাহিদা অনুযায়ী কর্মসংস্থান না হওয়ায় প্রতি বছর কর্মক্ষম মানুষ নতুন করে বেকার হচ্ছে। কারণ প্রবৃদ্ধির সমান্তরালে কর্মসংস্থান হচ্ছে না। ফলে দেশের কর্মক্ষম শ্রমশক্তির একটি বড় অংশ কাজের বাইরে থেকে যাচ্ছে। অথচ দেশের সার্বিক উন্নয়নে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি নতুন কর্মপরিবেশের উপযোগী একটি শ্রমশক্তিও তৈরি করতে হবে। কর্মসংস্থান কী করে সৃষ্টি করা যাবে? কাজের সুযোগ তৈরি করতে হবে। দেশে প্রতি বছর নতুন জনশক্তি যুক্ত হচ্ছে। তাদের উৎপাদনশীলতায় নিয়ে আসতে হবে। তরুণদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যথাযথ কাজে লাগাতে হবে। তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করাটাই এখন জরুরি। উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দিলে দেশ এগিয়ে যাবে। দেশে শিক্ষিতের হার শতকরা ৭০ শতাংশের মতো হলেও মোট জনশক্তির প্রায় এক-তৃতীয়াংশই বেকার। যাদের অধিকাংশই শিক্ষিত, স্বল্পশিক্ষিত, কিংবা অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন। প্রতি বছর বাংলাদেশে গড়ে গ্র্যাজুয়েট বের হচ্ছে লক্ষাধিক, যাদের বেশিরভাগের কর্মসংস্থান হয় না। ফলে বাড়ছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যাও। পরিসংখ্যান মতে, বর্তমানে বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা প্রায় দুই কোটি। এমনিতেই বিশ্ব মন্দা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার প্রেক্ষাপটে সারা বিশ্বেই কর্মসংস্থান সংকুচিত হচ্ছে। দেশে কর্মসংস্থান যে হারে বাড়ছিল, তা হ্রাস পেয়েছে নানা কারণে। তাই অনেকে শ্রম বেচতে বাইরে যেতে বাধ্য হচ্ছে। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের নানা অস্থিরতার কুফল যেসব দেশ ভোগ করছে বাংলাদেশ তার অন্যতম। সারা বিশ্বে প্রায় দেড় কোটি বাংলাদেশি নাগরিক কর্মসংস্থানের কারণে বসবাস করছে। এর মধ্যে মালয়েশিয়ায়ই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক। তাই বলা যায়, সার্বিক পরিস্থিতি যে কতটা ভয়াবহ তা সহজেই অনুমেয়। পরিস্থিতির অবনতি রোধে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগ কোনোটাই মূলত কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। ফলে বৃহৎ এ জনগোষ্ঠী সম্পদ নয়, রাষ্ট্রের বোঝা হিসেবেই ভাবা হচ্ছে। কিন্তু এ অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হওয়া সঠিক হবে না। তাই অন্যের মুখাপেক্ষী না হয়ে সরকারের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। নিজেদের সম্পদ কাজে লাগিয়ে দেশেই কর্মসংস্থানের পথ খুঁজতে হবে। সময়টা তথ্যপ্রযুক্তির। তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারের ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা প্রদর্শনের সুযোগ পাচ্ছেন এ দেশের যুবকরা। অনেকেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাজের ক্ষেত্র গড়ে তুলতে সক্ষম হচ্ছেন। ফলে সমাজে সম্ভাবনার ক্ষেত্র আরও সম্প্রসারিত হচ্ছে। আসলে যুবসমাজই হচ্ছে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও নিরক্ষরতামুক্ত আধুনিক, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রধান চালিকাশক্তি। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গড়তে দেশের এ বিশাল শক্তির উপযুক্ত ব্যবহার হওয়া দরকার। এরাই নিজেদের মেধা ও মনন শক্তি ব্যবহার করে নির্ধারণ করবে দেশের আগামী দিনের চলার পথ। সত্তর দশকের ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ তলাবিহীন ঝুড়ি, নব্বই দশকের বিশ্ব পরিমণ্ডলে তুলনামূলক অচেনা বাংলাদেশ এখন বিশ্বব্যাপী এক বিস্ময়ের নাম। উন্নয়ন নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা মানুষের কপালে ভাঁজ ফেলে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও সম্ভাবনার দিগন্তে সাফল্যের পতাকা উড়িয়ে দেশ অব্যাহত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সামনেও সোনালি ভবিষ্যৎ হাতছানি দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সফল হবে কি না, তা নির্ভর করছে সৃষ্ট সুযোগ কতটা কাজে লাগানো যাবে তার ওপর। বাংলাদেশের জন্য এই মুহূর্তে সমস্যা হলো জনগোষ্ঠীর এক বিরাট অংশ বেকার। যুব জনগোষ্ঠীর একটি অংশ অভিভাবকদের আয়ের ওপর নির্ভরশীল। যুবসমাজের কর্মসংস্থানের যথাযথ পদক্ষেপ যেমন দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করবে, তেমনি এ ক্ষেত্রের ব্যর্থতা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। দেশের সোনালি ভবিষ্যতের স্বার্থেই কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে গতি আনার উদ্যোগ নিতে হবে। কিন্তু এ অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হওয়া সঠিক হবে না। তাই অন্যের মুখাপেক্ষী না হয়ে সরকারের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। নিজেদের সম্পদ কাজে লাগিয়ে দেশেই কর্মসংস্থানের পথ খুঁজতে হবে। সময়টা তথ্যপ্রযুক্তির। তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারের ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা প্রদর্শনের সুযোগ পাচ্ছে এ দেশের যুবকরা। অনেকেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাজের ক্ষেত্র গড়ে তুলতে সক্ষম হচ্ছেন। ফলে সমাজে সম্ভাবনার ক্ষেত্র আরও সম্প্রসারিত হচ্ছে। আসলে যুবসমাজই হচ্ছে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও নিরক্ষরতামুক্ত আধুনিক, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রধান চালিকাশক্তি। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গড়তে দেশের এ বিশাল শক্তির উপযুক্ত ব্যবহার হওয়া দরকার। এরাই নিজেদের মেধা ও মননশক্তি ব্যবহার করে নির্ধারণ করবে দেশের আগামী দিনের চলার পথ। বাংলাদেশ ছিল প্রায় সম্পূর্ণরূপে একটি কৃষিনির্ভর দেশ। মানুষের কর্মসংস্থানও ছিল মূলত কৃষি ক্ষেত্রে। যেহেতু কৃষিজমি বাড়ছে না, তাই বর্ধিত জনসংখ্যার কর্মসংস্থানের জন্য কৃষিবহির্ভূত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিস্তৃত করার প্রয়োজন দেখা দেয়। অতীতে সেই প্রক্রিয়াটি যথাযথভাবে না এগোনোয় বেকারত্বের হার অনেক বেড়ে গিয়েছিল। তরুণ-যুবকরা বাধ্য হয়েছিল ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রযাত্রা কিংবা অন্যান্য উপায়ে বিদেশে পাড়ি জমাতে। সাম্প্রতিককালে অবৈধভাবে বিদেশযাত্রার সেই ধারা কিছুটা হলেও কমে এসেছে। সম্প্রতি দেশে উল্লেখযোগ্য হারে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে। ক্রমান্বয়ে এর গতি বাড়ছে। সেইসঙ্গে দেশি বিনিয়োগও বাড়ছে। বর্ধিত কর্মসংস্থানের স্বার্থে সরকারকে শিল্পায়নের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। সেবা খাতসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও যাতে দ্রুত বিকশিত হয়, তার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। অবকাঠামো, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিস্থিতির আরও উন্নয়ন করতে হবে। তাহলে নিকট ভবিষ্যতে দেশে বিনিয়োগ আরও গতি পাবে, সেইসঙ্গে বাড়বে কর্মসংস্থানের হারও। লেখক: রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান ও সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের উপদেষ্টা
১৬ মে, ২০২৪

কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করুন
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের শেষ তিন মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে বেকার বেড়েছে প্রায় আড়াই লাখ। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাস্তবে বেকারের সংখ্যা অনেক বেশি। বিবিএসের তথ্যমতে, দেশে মোট বেকারের ১২ শতাংশই উচ্চশিক্ষিত। অথচ যাদের কোনো আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নেই, তাদের বেকারত্বের হার মাত্র ১.০৭ শতাংশ। মানসম্মত শিক্ষার অভাবেই দেশে বেকারত্ব, বিশেষ করে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেশি বাড়ছে। শ্রমশক্তি জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিন মাসের ব্যবধানে শ্রমশক্তিতে যুক্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ২ লাখ ৯০ হাজার। জনগোষ্ঠী বাড়লেও সেই তুলনায় দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর অর্থ হচ্ছে আনুষ্ঠানিক খাতে কাজের সুযোগ সৃষ্টির বিষয়গুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না। বর্তমান সময়ের বাস্তবতা হচ্ছে, দেশে শ্রমশক্তির তুলনায় কর্মসংস্থানের প্রবৃদ্ধি কম। বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের মধ্যে একটা বড় অংশই এখন বেকার। পড়াশোনা শেষ করে বছরের পর বছর চাকরির জন্য অপেক্ষা করছে তারা। এখন করণীয় কী? কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। বাস্তবতা হচ্ছে, যোগ্য প্রার্থীর তুলনায় সরকারি চাকরিতে নিয়োগ একেবারে কম। বেসরকারি খাতে চাকরির বাজার সেভাবে সম্প্রসারিত হয়নি। অন্যদিকে সরকারি চাকরির তুলনায় বেসরকারি খাতের চাকরি সেভাবে আকর্ষণীয় নয়। বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, স্থানীয় বাজারে চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ জনশক্তি পাওয়া যায় না। ফলে দেশের বেসরকারি খাতের অনেক উচ্চপদে বাইরের দেশ থেকে জনশক্তি নিয়োগ করা হয়। বিশেষায়িত এসব পদে নিয়োগের বিপরীতে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা চলে যায়। ইউএনডিপি তাদের এক প্রতিবেদনে জানাচ্ছে, বাংলাদেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড অতিক্রম করছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এ সুযোগ কি কাজে লাগাতে পারছে বাংলাদেশ? কেন পারছে না? আমরা কথায় কথায় কর্মমুখী শিক্ষার কথা বলি। এখন দেখার বিষয় আমাদের শিক্ষা কতটা কর্মমুখী হয়েছে? আদৌ কি হয়েছে? পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সম্পদ হচ্ছে মেধা। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করুনবাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম মেধাবী। তাদের যথাযথভাবে তৈরি করে কাজে লাগাতে পারলে আগামী দিনের বাংলাদেশ নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করবে। এ মেধাবীদের উপযুক্ত করে তৈরি করতে হলে বিনিয়োগ করতে হবে। বাংলাদেশে চাহিদা অনুযায়ী কর্মসংস্থান না হওয়ায় প্রতি বছর কর্মক্ষম মানুষ নতুন করে বেকার হচ্ছে। কারণ প্রবৃদ্ধির সমান্তরালে কর্মসংস্থান হচ্ছে না। ফলে দেশের কর্মক্ষম শ্রমশক্তির একটি বড় অংশ কাজের বাইরে থেকে যাচ্ছে। অথচ দেশের সার্বিক উন্নয়নে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি নতুন কর্মপরিবেশের উপযোগী একটি শ্রমশক্তিও তৈরি করতে হবে। কর্মসংস্থান কী করে সৃষ্টি করা যাবে? কাজের সুযোগ তৈরি করতে হবে। দেশে প্রতি বছর নতুন জনশক্তি যুক্ত হচ্ছে। তাদের উৎপাদনশীলতায় নিয়ে আসতে হবে। তরুণদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যথাযথ কাজে লাগাতে হবে। তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করাটাই এখন জরুরি। উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দিলে দেশ এগিয়ে যাবে। দেশে শিক্ষিতের হার শতকরা ৭০ শতাংশের মতো হলেও মোট জনশক্তির প্রায় এক-তৃতীয়াংশই বেকার। যাদের অধিকাংশই শিক্ষিত, স্বল্পশিক্ষিত, কিংবা অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন। প্রতি বছর বাংলাদেশে গড়ে গ্র্যাজুয়েট বের হচ্ছে লক্ষাধিক, যাদের বেশিরভাগের কর্মসংস্থান হয় না। ফলে বাড়ছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যাও। পরিসংখ্যান মতে, বর্তমানে বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা প্রায় দুই কোটি। এমনিতেই বিশ্ব মন্দা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার প্রেক্ষাপটে সারা বিশ্বেই কর্মসংস্থান সংকুচিত হচ্ছে। দেশে কর্মসংস্থান যে হারে বাড়ছিল, তা হ্রাস পেয়েছে নানা কারণে। তাই অনেকে শ্রম বেচতে বাইরে যেতে বাধ্য হচ্ছে। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের নানা অস্থিরতার কুফল যেসব দেশ ভোগ করছে বাংলাদেশ তার অন্যতম। সারা বিশ্বে প্রায় দেড় কোটি বাংলাদেশি নাগরিক কর্মসংস্থানের কারণে বসবাস করছে। এর মধ্যে মালয়েশিয়ায়ই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক। তাই বলা যায়, সার্বিক পরিস্থিতি যে কতটা ভয়াবহ তা সহজেই অনুমেয়। পরিস্থিতির অবনতি রোধে সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগ কোনোটাই মূলত কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। ফলে বৃহৎ এ জনগোষ্ঠী সম্পদ নয়, রাষ্ট্রের বোঝা হিসেবেই ভাবা হচ্ছে। কিন্তু এ অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হওয়া সঠিক হবে না। তাই অন্যের মুখাপেক্ষী না হয়ে সরকারের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। নিজেদের সম্পদ কাজে লাগিয়ে দেশেই কর্মসংস্থানের পথ খুঁজতে হবে। সময়টা তথ্যপ্রযুক্তির। তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারের ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা প্রদর্শনের সুযোগ পাচ্ছেন এ দেশের যুবকরা। অনেকেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাজের ক্ষেত্র গড়ে তুলতে সক্ষম হচ্ছেন। ফলে সমাজে সম্ভাবনার ক্ষেত্র আরও সম্প্রসারিত হচ্ছে। আসলে যুবসমাজই হচ্ছে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও নিরক্ষরতামুক্ত আধুনিক, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রধান চালিকাশক্তি। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গড়তে দেশের এ বিশাল শক্তির উপযুক্ত ব্যবহার হওয়া দরকার। এরাই নিজেদের মেধা ও মনন শক্তি ব্যবহার করে নির্ধারণ করবে দেশের আগামী দিনের চলার পথ। সত্তর দশকের ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ তলাবিহীন ঝুড়ি, নব্বই দশকের বিশ্ব পরিমণ্ডলে তুলনামূলক অচেনা বাংলাদেশ এখন বিশ্বব্যাপী এক বিস্ময়ের নাম। উন্নয়ন নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা মানুষের কপালে ভাঁজ ফেলে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও সম্ভাবনার দিগন্তে সাফল্যের পতাকা উড়িয়ে দেশ অব্যাহত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সামনেও সোনালি ভবিষ্যৎ হাতছানি দিচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সফল হবে কি না, তা নির্ভর করছে সৃষ্ট সুযোগ কতটা কাজে লাগানো যাবে তার ওপর। বাংলাদেশের জন্য এই মুহূর্তে সমস্যা হলো জনগোষ্ঠীর এক বিরাট অংশ বেকার। যুব জনগোষ্ঠীর একটি অংশ অভিভাবকদের আয়ের ওপর নির্ভরশীল। যুবসমাজের কর্মসংস্থানের যথাযথ পদক্ষেপ যেমন দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করবে, তেমনি এ ক্ষেত্রের ব্যর্থতা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। দেশের সোনালি ভবিষ্যতের স্বার্থেই কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে গতি আনার উদ্যোগ নিতে হবে। কিন্তু এ অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হওয়া সঠিক হবে না। তাই অন্যের মুখাপেক্ষী না হয়ে সরকারের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। নিজেদের সম্পদ কাজে লাগিয়ে দেশেই কর্মসংস্থানের পথ খুঁজতে হবে। সময়টা তথ্যপ্রযুক্তির। তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারের ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা প্রদর্শনের সুযোগ পাচ্ছে এ দেশের যুবকরা। অনেকেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাজের ক্ষেত্র গড়ে তুলতে সক্ষম হচ্ছেন। ফলে সমাজে সম্ভাবনার ক্ষেত্র আরও সম্প্রসারিত হচ্ছে। আসলে যুবসমাজই হচ্ছে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও নিরক্ষরতামুক্ত আধুনিক, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রধান চালিকাশক্তি। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গড়তে দেশের এ বিশাল শক্তির উপযুক্ত ব্যবহার হওয়া দরকার। এরাই নিজেদের মেধা ও মননশক্তি ব্যবহার করে নির্ধারণ করবে দেশের আগামী দিনের চলার পথ। বাংলাদেশ ছিল প্রায় সম্পূর্ণরূপে একটি কৃষিনির্ভর দেশ। মানুষের কর্মসংস্থানও ছিল মূলত কৃষি ক্ষেত্রে। যেহেতু কৃষিজমি বাড়ছে না, তাই বর্ধিত জনসংখ্যার কর্মসংস্থানের জন্য কৃষিবহির্ভূত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিস্তৃত করার প্রয়োজন দেখা দেয়। অতীতে সেই প্রক্রিয়াটি যথাযথভাবে না এগোনোয় বেকারত্বের হার অনেক বেড়ে গিয়েছিল। তরুণ-যুবকরা বাধ্য হয়েছিল ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রযাত্রা কিংবা অন্যান্য উপায়ে বিদেশে পাড়ি জমাতে। সাম্প্রতিককালে অবৈধভাবে বিদেশযাত্রার সেই ধারা কিছুটা হলেও কমে এসেছে। সম্প্রতি দেশে উল্লেখযোগ্য হারে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে। ক্রমান্বয়ে এর গতি বাড়ছে। সেইসঙ্গে দেশি বিনিয়োগও বাড়ছে। বর্ধিত কর্মসংস্থানের স্বার্থে সরকারকে শিল্পায়নের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। সেবা খাতসহ অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডও যাতে দ্রুত বিকশিত হয়, তার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। অবকাঠামো, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিস্থিতির আরও উন্নয়ন করতে হবে। তাহলে নিকট ভবিষ্যতে দেশে বিনিয়োগ আরও গতি পাবে, সেইসঙ্গে বাড়বে কর্মসংস্থানের হারও। লেখক: রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান ও সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের উপদেষ্টা
১৬ মে, ২০২৪

‘দক্ষ নারীকর্মীদের বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে কাজ করা হচ্ছে’ 
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেছেন, দক্ষ নারীকর্মীদের বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে কাজ করা হচ্ছে। জাতীয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের নারীদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সোমবার (১৩ মে) বিকেলে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর অফিস কক্ষে উইমেন্স ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় সার্ক বিজনেস কাউন্সিল এবং ইন্ডিয়ান  চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট মানতাশা আহমেদের নেতৃত্বে অন্যান্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ নারীকর্মী তৈরির মাধ্যমে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয় আরও বেশি উদ্যোগী হবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, নারীকর্মীদের ফ্যাশন ও এসএমই সেক্টরে বিদেশে কর্মসংস্থান এবং জাতীয় বাজেটে নারীবান্ধব নীতিমালার প্রতিফলন গুরুত্বপূর্ণ।
১৩ মে, ২০২৪

নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধিতে চাকরি মেলা 
নারী শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিউনিটি হলে ইউএসএআইডি’স উইমেন থ্রাইভ প্রকল্প চাকরি মেলার আয়োজন করে। এতে ৭টি তৈরি পোশাকশিল্প প্রতিষ্ঠান, দক্ষতা উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা এবং পেশাগত পরামর্শ প্রদানকারী ৩টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। সোমবার (২৯ এপ্রিল) দিনব্যাপী এ চাকরি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় ইউএসএআইডি বাংলাদেশের মিশন ডিরেক্টর রিড এশলিম্যান বলেন, প্রাইভেট সেক্টর এবং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের শ্রমিক বিশেষ করে নারীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে কাজ করছি। চাকরি মেলা তার একটা অনন্য উদাহরণ। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথ আরও সুগম হচ্ছে। পিভিএইচ বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার নাজিব সাঈদ এবং কেয়ার বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর রাম দাশ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। মিশন ডিরেক্টর রিড এশলিম্যান এ দিন সকালে প্রকল্পের কার্যক্রম দেখতে সাভারের ফোর এ ইয়ার্ন ডাইং লিমিটেড পরিদর্শন করেন। তিনি এ সময় কারখানা ম্যানেজমেন্ট এবং নারী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং পেশাগত উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম কীভাবে নারী শ্রমিকদের জীবনমানের পরিবর্তন বয়ে আনছেন সে সম্পর্কে তাকে অবহিত করা হয়। তিনি ওই কারখানার ‘ব্যক্তিগত উন্নতি ও পেশাগত উৎকর্ষতা (পেইস)’ প্রশিক্ষণ সম্পন্নকারী নারীদের মাঝে সার্টিফিকেটও বিতরণ করেন। মেলায় গার্মেন্টস শিল্পে চাকরিপ্রত্যাশী প্রায় এক হাজার নারী সিভি জমা দেন এবং সরাসরি ইন্টারভিউতে অংশ নেন। কেয়ার বাংলাদেশ বাস্তবায়িত, ইউএসএআইডি’স উইমেন থ্রাইভ ইন বাংলাদেশ প্রকল্প গ্লোবাল ফ্যাশন ব্র্যান্ড পিভিএইচের সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে তৈরি পোশাক কারখানায় কর্মরত নারী কর্মীদের পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ এবং নেতৃত্বের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সামাজিক ও লৈঙ্গিক বাধা অতিক্রম করতে সহযোগিতা করছে।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

প্রতিবন্ধীদের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির তাগিদ
সুযোগ সুবিধা পেলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সামর্থ্য ও সক্ষমতা অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে সম্পৃক্ত হতে পারেন। কারিগরী প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি তার জীবনে পরিবর্তন আনতে সক্ষম। শ্রমবাজারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সক্ষমতাকে কাজে লাগাতে হবে।  বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকার মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারের কনফারেন্স রুমে 'প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জীবনমান উন্নয়নে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ সব কথা বলেন। ডিজএ্যাবল্ড রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড রিসার্চ এসোসিয়েশন (ডিআরআরএ) এ সভার  আয়োজন করে।  সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিআরআরএর চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) রাবেয়া সুলতানা৷ তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সামাজিক অবস্থান যাচাই করতে গেলে এখনও দেখা যায় যে, মানব মর্যাদা ও অধিকার ভোগের ক্ষেত্রে তারা আজও বৈষম্যের  শিকার। বিশেষত স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জীবিকায়ন ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে তাদের যে ধরনের গমনযোগ্যতা প্রয়োজন, তা আশানুরূপভাবে দৃশ্যমান হয়ে ওঠেনি। অথচ সুযোগ ও সুবিধা পেলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সামর্থ ও সক্ষমতা  অনুযায়ী জীবিকায়নে সম্পৃক্ত হতে পারেন। কর্মসংস্থানে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারেন।  সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন  শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নে যত কাজ করেছে, অতীতে কেউ এত কাজ করে নাই। তারপরও আমি বলবো তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। যাদের সমাজে বোঝা মনে করা হচ্ছে, তাদের যদি সম্পদে  পরিণত করতে পারি,  তাহলেই সাফল্য আসবে। প্রতিমন্ত্রী জানান, কর্মসংস্থান বিষয়ক নতুন দপ্তর গঠনের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। কর্মসংস্থান দপ্তর হয়ে গেলে তার মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান বিষয়ে কাজ  করা যাবে।  তিনি বলেন, 'শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি দেখলাম, এর নাম শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কিন্তু এখানে কর্মসংস্থান নিয়ে কাজের কোনো সুযোগ নেই। কর্মসংস্থানের আলাদা একটি ডিপার্টমেন্ট অতিসত্ত্বর হয়ে যাবে।' সভায় সভাপতিত্ব করেন ডিআরআরএর প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক ফরিদা ইয়াসমিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি, সংসদ সদস্য শবনম জাহান শীলা, জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের  ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুহুল আমিন খান, এনডিডিপি ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ্ আলম এবং পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার ও সীপ এর মূখ্য সমন্বয়কারী  জিয়াউদ্দিন ইকবাল। মতবিনিময় সভায় অংশ নেওয়া প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা তাদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।  বক্তারা বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা আসলে অক্ষম না, বিশেষভাবে সক্ষম। প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সম্পর্কে নিয়োগদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন দরকার ৷ সভায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানে সম্পৃক্ত করতে কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- শ্রম বাজারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সক্ষমতা উপস্থাপনে সরকারিভাবে জোড়ালো প্রচেষ্টা চালানো, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির দক্ষতাকে সবার আগে বিবেচনা করা, জাতীয়ভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা ভিত্তিক পরিসংখ্যান করা, সক্ষমতা, মেধা, ন্যূনতম শিক্ষা ভিত্তিক ট্রেড নির্ধারণ করা ও তাদেরকে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করা।
২৪ এপ্রিল, ২০২৪
X