থাইরয়েড সমস্যায় ভুগছে দেশের ৫ কোটি মানুষ
দেশের বিপুল জনগোষ্ঠী থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত। এদের ৬০ শতাংশের বেশিই জানে না যে, তারা থাইরয়েড সমস্যায় ভুগছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, থাইরয়েড রোগ বিস্তারে বংশগতির প্রভাব রয়েছে। বিশেষ করে দাদি, নানি বা মায়েদের থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে শিশুরও এ সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বাংলাদেশে প্রায় ৫ কোটির বেশি মানুষ থাইরয়েড সমস্যায় ভুগছে, যা মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশের বেশি। প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের প্রায় ২ শতাংশ এবং পুরুষদের প্রায় শূন্য দশমিক ২ শতাংশ হাইপারথাইরয়েডিজম (থাইরয়েড হরমোনের বৃদ্ধিজনিত সমস্যা) রোগে ভুগছেন। ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এমন বাস্তবতায় আজ শনিবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব থাইরয়েড দিবস। ২০০৯ সাল থেকে ২৫ মে সারা বিশ্বে এ দিবসটি পালিত হয়ে থাকে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘থাইরয়েড রোগ অসংক্রামক রোগ’। থায়রয়েড টাস্কফোর্স ও বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটি জাতীয় প্রেস ক্লাবে গতকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে থাইরয়েডের তথ্য তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলেনে জানানো হয়, বাংলাদেশের প্রায় ৫ কোটির বেশি মানুষ বিভিন্ন ধরনের থাইরয়েড সমস্যায় ভুগছে। কিন্তু এদের সিংহভাগেরও বেশি মানুষ জানে না তারা এ সমস্যায় আক্রান্ত। থাইরয়েড গ্রন্থিটি মূলত গলার সামনের দিকের উঁচু হাড়ের নিচে অবস্থিত। গ্রন্থিটি দেখতে প্রজাপতিসদৃশ এবং এটি ট্রাকিয়া বা শ্বাসনালিকে পেঁচিয়ে থাকে। যদিও এটি একটি ছোট গ্রন্থি, কিন্তু এর কার্যকারিতা ব্যাপক। থাইরয়েড গ্রন্থি কর্তৃক নিঃসৃত হরমোন মানব পরিপাক প্রক্রিয়ার অন্যতম ভূমিকা পালন করে। ভ্রূণ অবস্থা থেকে আমৃত্যু থাইরয়েড হরমোনের প্রয়োজন অপরিহার্য। এ হরমোনের তারতম্যের জন্য শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি, শরীর মোটা হওয়া, ক্ষয় হওয়া, মাসিকের বিভিন্ন সমস্যা, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা, হার্টের সমস্যা এবং চোখ ভয়ংকরভাবে বড় হয়ে যেতে পারে। বন্ধ্যত্বের অন্যতম কারণ হিসেবে থাইরয়েড হরমোনের তারতম্যকে দায়ী করা হয়। শারীরিক কার্যক্ষমতা সঠিক রাখার জন্য নির্দিষ্ট মাত্রায় এ হরমোন শরীরে থাকা জরুরি। হরমোন স্বাভাবিক থেকেও থাইরয়েড গ্রন্থি ফুলে যেতে পারে। সাধারণত আয়োডিনের অভাবে গলাফোলা রোগ হয়ে থাকে, যাকে সাধারণ ভাষায় ঘ্যাগ রোগ বলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশে যদিও আয়োডিনযুক্ত লবণ খাওয়া হচ্ছে, কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ডায়াবেটিস ও হরমোন বিভাগের উদ্যোগে পরিচালিত সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, এদেশের বেশিরভাগ স্কুলগামী শিশু এবং অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের আয়োডিনের অভাব রয়ে গেছে। এ আয়োডিন শরীরে অতিপ্রয়োজনীয় থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। থাইরয়েড হরমোনের সব ধরনের চিকিৎসা এ দেশে হয়। গত ৩০ বছরে বিএসএমএমইউর থাইরয়েড ক্লিনিকের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষ সুচিকিৎসা পেয়েছেন। ক্লিনিকটি দেশের একমাত্র সমন্বিত থাইরয়েড ক্লিনিক, যা নিউক্লিয়ার মেডিসিন এবং সার্জারি বিভাগের মাধ্যমে মানুষকে সেবা দিয়ে আসছে। এ ছাড়াও বারডেম হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ দেশের প্রায় প্রতিটি মেডিকেল কলেজের হরমোন বিভাগ ও পরমাণু চিকিৎসাকেন্দ্রে থাইরয়েডের চিকিৎসা চলছে। থাইরয়েড রোগ প্রতিরোধে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়ে বলেন, আয়োডিনযুক্ত লবণ খাওয়া ও রেডিয়েশন থেকে মুক্ত থাকা উচিত, বিশেষ করে গর্ভাবস্থায়। হাইপার, হাইপো বা থাইরয়েড প্রদাহজনিত কোনো লক্ষণ দেখা দিলে শিগগিরই রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা নেওয়া উচিত। ঘ্যাগ বা অন্য কোনো কারণে থাইরয়েড বড় হয়ে গেলে বা ক্যান্সার হলে সার্জারির মাধ্যমে কেটে ফেলা উচিত। যাদের বংশগত থাইরয়েড সমস্যার ইতিহাস আছে, তাদের চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকা উচিত। কোনো শিশুর বা বয়স্কদের অবর্ধন শারীরিক ও মানসিক, ঠান্ডা বা গরম সহ্য করতে না পারা, বুক ধড়ফড় করা, খাওয়া ও রুচির সঙ্গে ওজন কমা ইত্যাদি হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
২৫ মে, ২০২৪

চীনে ভয়াবহ বন্যার শঙ্কা, ঝুঁকিতে ১২ কোটি মানুষ
ভারী বর্ষণের পর ভয়াবহ বন্যার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে চীনে। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে গুয়াংডং প্রদেশের প্রধান নদী, জলপথ এবং জলাধারগুলো পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে বলে সতর্কবার্তা জারি করেছে প্রশাসন। এ অবস্থায় মারাত্বক ঝুঁকির মুখে পড়েছে ১২ কোটি ৭ লাখ মানুষ।   চীনা সরকারি সংবাদমাধ্যম সিসিটিভির বরাত দিয়ে দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, গুয়াংডং প্রদেশের প্রধান নদী, জলপথ এবং জলাধারগুলো বিপজ্জনক বন্যার হুমকি দিচ্ছে। প্রদেশের ১২ কোটিরও বেশি মানুষকে রক্ষা করার জন্য জরুরি প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে বাধ্য হচ্ছে সরকার। পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ আখ্যা দিয়ে স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শিজিয়াং ও বেইজিয়াং নদীর অববাহিকায় পানির স্তর বেড়ছে।  বৃহস্পতিবার থেকে গুয়াংডং প্রদেশের বিভিন্ন অংশজুড়ে মুষলধারে বর্ষণের কারণে নদীগুলোর পানি বেড়েছে এবং পাহাড়ী এলাকায় বন্যা শুরু হয়েছে। বৃষ্টির কারণে উত্তর গুয়াংডং শহরের জিয়াংওয়ানের ছয়টি গ্রামে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে মানুষ আটকা পড়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি এবং আটকে পড়া মানুষের মোট সংখ্যা নির্দিষ্ট করা হয়নি। তবে সিসিটিভি জানিয়েছে, ভূমিধসে ‘আহত’ ছয়জনকে নিকটবর্তী শহর শাওগুয়ানে বিমানে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রোববার (২১ এপ্রিল) চীনের সিসিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে শিজিয়াং এবং বেইজিয়াং নদীর পানি অনেক বেড়ে গেছে। যে কোনো সময় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। যা গত ৫০ বছরের ইতিহাসকে ভেঙে দিতে পারে।   চুচিয়াং নদীর ব-দ্বীপ অববাহিকা চীনের সবচেয়ে জনবহুল একটি অঞ্চল। এখানে প্রায় ১৩ কোটি মানুষ বসবাস করেন। তবে ওই অঞ্চলে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর শোনা যায়নি। এছাড়া সাধারণ মানুষকে গণহারে সরিয়ে নেওয়ার কোনো প্রক্রিয়াও চোখে পড়েনি। আগাম বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি নির্দেশনা প্রদান করেছে চীনের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়।  গুয়াংডং কর্তৃপক্ষ আগাম বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে খাবার, পানি এবং জামা কাপড় প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া পানিতে যেসব অঞ্চল ডুবে যাবে সে সব অঞ্চলের বাসিন্দাদের অন্যত্র নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।  
২১ এপ্রিল, ২০২৪

নিরাপদ পানির বাইরে সাত কোটি মানুষ
দেশের ৬০ শতাংশ তথা ৬ কোটি ৯৫ লাখ মানুষ নিরাপদ পানি প্রাপ্তির বাইরে রয়েছেন। তারা দূষিত পানি ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছেন। শহরের বিপুলসংখ্যক মানুষও নিরাপদ পানি পাচ্ছেন না। একইভাবে চর ও দুর্গমাঞ্চলের ৪০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে ব্যবহার্য পানি সংগ্রহে বাড়ি থেকে দূরদূরান্তে যেতে হচ্ছে। দিন দিন এ চ্যালেঞ্জ বাড়ছে। বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে গতকাল শনিবার রাজধানীর সাঁতারকুলে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) মিলনায়তনে এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘পানি, স্যানিটেশন এবং জলবায়ু পরিবর্তনে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডর্প এবং দি ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ। সভায় সভাপতিত্ব করেন ডিআইইউর ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। সঞ্চালনা করেন ডর্পের উপনির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান। প্রধান অতিথি ছিলেন ডিআইইউর উপ-উপাচার্য ড. গণেশ চন্দ্র সাহা। মূল আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবির। প্যানেল আলোচক ছিলেন এসডিএসের নির্বাহী পরিচালক ও কানসা-বিডির চেয়ারপারসন রাবেয়া বেগম, ওয়াটার এইড বাংলাদেশের পরিচালক পার্থ হেফাজ সেখ, সিপিআরডির প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা ও মাসুদ হাসান প্রমুখ। ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তনে বৈশ্বিকভাবে যে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তার প্রায় সবই ব্যর্থ হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের এ ক্ষতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত নয়। তাই সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। বিআইআইএসএসের গবেষণা পরিচালক মাহফুজ কবির বলেন, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর ও রাজবাড়ী জেলায় ২০ শতাংশ এবং বাগেরহাট ও কক্সবাজার ছাড়া পাহাড় ও উপকূলীয় এলাকার ২০ থেকে ৪০ শতাংশ মানুষ কম পরিমাণ নিরাপদ পানির সুবিধা পাচ্ছেন। অথচ এ খাতে বরাদ্দ বাজেট ফেরত যাচ্ছে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় মুক্ত আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব হয়।
২৪ মার্চ, ২০২৪

নিরাপদ পানির বাইরে সাত কোটি মানুষ
দেশে খাদ্য, উৎপাদন ও স্যানিটেশন ব্যবস্থায় সরাসরি পানির ব্যবহার জড়িত থাকলেও ৬০ শতাংশ অর্থাৎ ৬ কোটি ৯৫ লাখ মানুষ নিরাপদ পানিপ্রাপ্তির বাইরে রয়েছে। ৫৯ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ দূষিত পানি ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছে। শহরাঞ্চলে বসবাসকারীদেরও বিপুলসংখ্যক মানুষ নিরাপদ পানি পাচ্ছে না। একইভাবে চর ও দুর্গম অঞ্চলে বসবাসরত ৪০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে দৈনন্দিন ব্যবহার্য পানি সংগ্রহে বাড়ি থেকে দূর-দূরান্তে যেতে হচ্ছে। নিরাপদ পানির অভাব ও পানি স্যানিটেশন এবং হাইজিন ব্যবস্থাপনা চ্যালেঞ্জ বাড়ছে। শনিবার (২৩ মার্চ) রাজধানীর বাড্ডার সাতারকুলের ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। পানি, স্যানিটেশন এবং জলবায়ু পরিবর্তনে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা  ড্রপ এবং দ্য ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্ট্রি বোর্ডের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। সঞ্চালনা করেন ডরপ এর উপ-নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান। এ সময় প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রো ভাইস চ্যান্সেলর ড. গণেশ চন্দ্র সাহা। মূল আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবির। প্যানেল আলোচক ছিলেন এসডিএস এর নির্বাহী পরিচালক এবং কানসা-বিডির চেয়ারপার্সন রাবেয়া বেগম, ওয়াটার এইড বাংলাদেশ প্রোগ্রাম এড পলিসি অ্যাডভোকেসির পরিচালক পার্থ হেফাজ সেখ, সিপিআরডি প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা ও মো. মাসুদ হাসান, এসডাব্লিওএর সিএসও বাংলাদেশ ফোকাল প্রমুখ। সভায় স্বাগত বক্তব্যে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, দ্রুত জলবায়ু পরির্বতনে বৈশ্বিকভাবে যে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে তার প্রায় সবই ব্যর্থ হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের এই ক্ষতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত নই। এজন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে কাজ করতে হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, কমিউনিটি বেইজ অর্গানাইজেশন ও এনজিও’র মতো বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। নিরাপদ পানি নিশ্চিতে সরকারকে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, মনিটরিং ও প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ করতে হবে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবির বলেন, দেশে পানি ব্যবস্থাপনার ঘাটতি ও নিরাপদ পানির সংকট রয়েছে। পানির সঙ্গে খড়ার মতো দুর্যোগ, পরিবেশের ভারসম্য রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন জড়িত। কিন্তু নেত্রোকোনা সুনামগঞ্জ, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, লক্ষীপুর ও রাজবাড়ীর জেলায় ২০ শতাংশ এবং বাগের হার্ট ককক্রবাজার ছাড়া পাহাড় ও উপকূলীয় এলাকার ২০ থেকে ৪০ ভাগ মানুষ কম পরিমাণ নিরাপদ পানি সুবিধা পাচ্ছে। অথচ এই খাতে বরাদ্দ বাজেট ফেরত যাচ্ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরেও ৫০ থেকে ৬০ ভাগ বাজেট ফেরত গেছে। ওয়াটার এইড বাংলাদেশ প্রোগ্রাম এড পলিসি অ্যাডভোকেসির পরিচালক পার্থ হেফাজ সেখ বলেন, সরকার ২০১৩ সালে পানি আইন পাশ করেছে। আইনে সুপেয় পানি ও পরিচ্ছন্নতা ব্যবহারে অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে। জাতিসংঘ পানি স্যানিটেশন ও মানবাধিকার হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু এখনো দুর্গম এলাকার জনগণের জন্য পানি প্রাপ্তির বাজেট এক শতাংশেরও কম। সভায় বক্তারা সরকারকে দ্রুত নিরাপদ ও সুপেয় পানি নিশ্চিতে আহ্বান জানান। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিকক্ষ, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২৩ মার্চ, ২০২৪

গবেষণা / ক্যানসার ঝুঁকিতে বাংলাদেশের কয়েক কোটি মানুষ
জলবায়ু সংকটের ফলে নলকূপের পানি দূষিত হয়ে পড়ায় ক্যানসারের ঝুঁকিতে পড়তে পারে বাংলাদেশের কয়েক কোটি মানুষ। বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিজ্ঞানবিষয়ক পিএলওএস ওয়ান সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর গার্ডিয়ানের।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশিদের পান করা প্রায় অর্ধেক পানিতেই বিপজ্জনকভাবে উচ্চমাত্রার আর্সেনিকের উপস্থিতি রয়েছে। ক্যানসার সৃষ্টিকারী আর্সেনিকের মাত্রা বাংলাদেশিদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির হলেও দেশটির মানুষ এই পানি পান করছেন।  বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য সংকটকে তুলে ধরে এই গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, নিয়মিত প্রবল বন্যা এই ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ জলবায়ু সংকটের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি ও মৌসুমী বন্যার কারণে আর্সেনিকের মাত্রা বাড়ে৷ সমুদ্রের নোনা পানি মিষ্টি পানির সঙ্গে মিশে গেলে পলি থেকে আর্সেনিক নির্গত হয়। বিজ্ঞানীরা এই গবেষণা পরিচালনার জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন। গবেষকরা আর্সেনিক নিঃসরণের মাত্রা বোঝার জন্য পানিতে অক্সিজেনের ঘনত্ব, পিএইচ এবং তাপমাত্রা পরীক্ষা করে দেখেছেন। গবেষকরা বলেছেন, বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষের পান করা পানির ৪৯ শতাংশের মধ্যে ক্যানসার সৃষ্টিকারী আর্সেনিকের অনিরাপদ মাত্রার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, পানিতে আর্সেনিকের সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রা ১০ পার্টস পার বিলিয়ন (পিপিবি)। কিন্তু বাংলাদেশের ৪৯ শতাংশ এলাকার নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা ডব্লিউএইচও নির্দেশিত সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি বলে গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন। কিছু কিছু এলাকার পানিতে আর্সেনিকের ঘনত্ব প্রতি লিটারে ৪৫০ মাইক্রোগ্রাম পাওয়া গেছে। যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিত মাত্রার চেয়ে ৪৫ গুণ বেশি। গবেষণাটির মুখ্য গবেষক যুক্তরাষ্ট্রের নরউইচ ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. সেথ ফ্রিসবি বলেছেন, এই সংকট কেবল বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ নয়। বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের বাসিন্দাদেরও আর্সেনিক বিষক্রিয়া প্রভাবিত করছে। সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধির একই রাসায়নিক প্রক্রিয়া পলি থেকে আর্সেনিককে বাংলাদেশের ভূগর্ভস্থ পানিতে মিশে যায়। পলি থেকে নির্গত আর্সেনিক বাংলাদেশের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের নলকূপের পানিতেও মিশছে। ড. ফ্রিসবি বলেন, আর্সেনিক বিষক্রিয়ার প্রভাব বাংলাদেশে শনাক্ত হওয়ার ১১ বছর আগে উপমহাদেশে প্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে। ভারত এবং বাংলাদেশে পানিতে আর্সেনিকের উচ্চ মাত্রার উপস্থিতি কয়েক দশকের পুরোনো; যা উভয় দেশের জনসংখ্যাকে আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, গবেষণার এই ফলাফল জনস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি সতর্কবার্তা। দীর্ঘদিন ধরে আর্সেনিকযুক্ত পানি পান কিংবা আর্সেনিকের সংস্পর্শে এলে ক্যানসার এবং ভাস্কুলার রোগসহ বিভিন্ন ধরনের গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। ভূগর্ভস্থ পানির দূষণ রোধে পানি পরিশোধন প্রযুক্তি এবং অবকাঠামোসহ সম্ভাব্য অন্যান্য সমাধানমূলক ব্যবস্থা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
১৮ জানুয়ারি, ২০২৪

২৪ কোটি মানুষ জানেন না তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত
এ বছরের স্লোগান হচ্ছে—Diabetes : Know your risk, know your response. বাংলায় ভাবানুবাদ করা হয়েছে, ‘ডায়াবেটিসের ঝুঁকি জানুন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন’। এ প্রতিপাদ্য থেকে এটা স্পষ্ট যে, আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) এবার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি থেকে বাঁচতে এ বিষয়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের সম্প্রতিক তথ্যমতে, পৃথিবীতে প্রতি দশ সেকেন্ডে একজন ডায়াবেটিস রোগীর মৃত্যু হয় এবং দুজন নতুন রোগী শনাক্ত হয়! ১৯৯১ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য ও আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে সিদ্ধান্ত হয় যে, প্রতিবছর ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হবে। এর আরও একটি কারণ হলো, এই দিনে ফ্রেডরিক ব্যান্টিং জন্মগ্রহণ করেন। যিনি তার সহযোগী চার্লস বেল্টকে সঙ্গে নিয়ে অধ্যাপক ম্যাকয়িডের গবেষণাগারে ডায়াবেটিক রোগ নিয়ন্ত্রণের মহৌষধ ইনসুলিন আবিষ্কার করেন। ডায়াবেটিক বর্তমানে একটি মহামারি রোগ হিসেবে চিহ্নিত এবং এ রোগ সারা জীবনের। নিয়ন্ত্রণে থাকলে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা যায় কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের জটিলতা অনেক। এ দিবসটি পালনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে ডায়াবেটিক রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণ রাখার ব্যবস্থা সম্পর্কে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করা। উন্নত বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বৃদ্ধির হার বেশি। ২০০৩ সালে সারা বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগী ছিল ১৯ কোটি। আগামী ২০৩০ সালে তা বেড়ে দ্বিগুণ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। উন্নত বিশ্বের অধিকাংশ দেশে ডায়াবেটিসকে মৃত্যুর চতুর্থ প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। সুতরাং প্রতিদিন যেমন ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তেমনি বাড়ছে ডায়াবেটিস রোগীদের নানা ধরনের জটিলতা। আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বর্তমানে বিশ্বে ডায়াবেটিসকে মহামারি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এর কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা দুটি বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছেন, তা হচ্ছে—দৈনন্দিন জীবনে আমাদের শারীরিক সক্রিয়তা কম এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহণ না করা। ডায়াবেটিক মারাত্মক ও প্রাণঘাতী রোগ, যা ব্যক্তি এবং তাদের পরিবার, সেইসঙ্গে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। আইডিএফ ডায়াবেটিস অ্যাটলাস ডায়াবেটিসের বৈশ্বিক প্রভাব সম্পর্কে সর্বশেষ যে পরিসংখ্যান এবং তথ্য দিয়েছে, তাতে দেখা যায়—২০২১ সালে ৫৩.৭ কোটি মানুষ (প্রতি ১০ জনে ১ জন) ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন। ২০৩০ সালের মধ্যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৬৪.৩ কোটিতে এবং ২০৪৫ সালে ৭৮.৩ কোটিতে পৌঁছানোর আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ২৪ কোটি মানুষ (প্রতি ২ জনে ১ জন) জানেন না, তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। তাদের অধিকাংশই টাইপ-২ ডায়াবেটিস আক্রান্ত। ১২ লাখেরও বেশি শিশু ও কিশোর (০-১৯ বছর) টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ২০২১ সালে বিশ্বের ৬৭ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসের কারণে মৃত্যুবরণ করেন। ২০২১ সালে ৯৬৬ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয় ডায়াবেটিসের কারণে, যা বৈশ্বিক স্বাস্থ্য খাতে মোট ব্যয়ের ৯ শতাংশ। বিশেষজ্ঞদের মতে, বংশগত কারণ ছাড়াও নগরায়ণ ও পরিবর্তিত জীবনধারণের কারণেই ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়, গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীদের প্রায় অর্ধেক পরবর্তী সময়ে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন। এমনকি অপরিকল্পিত গর্ভধারণের কারণে শিশু অপুষ্টির শিকার হলে এবং সেই শিশু পূর্ণবয়স্ক হওয়ার পর অতিরিক্ত ওজন হলে তার ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বহুগুণ বেশি থাকে। বর্তমানে নগরায়ণের ফলে পরিবর্তিত জীবনযাপনের কারণে সারা বিশ্বেই ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। তবে বৃদ্ধির এ হার উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশে বেশি। ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতার অভাবে প্রতিবছর অসংখ্য মহিলা এর শিকার হচ্ছেন এবং ডায়াবেটিক নিয়ে শিশু জন্ম দিচ্ছেন অথবা নবজাতকের বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিচ্ছে। প্রতিটি অন্তঃসত্ত্বা মা যদি গর্ভধারণের আগেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সন্তান জন্ম দিতে পারেন তবে সন্তান সুস্থভাবে জন্ম দিতে পারবেন এবং মায়ের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি গর্ভকালীন ডায়াবেটিস প্রতিরোধে গর্ভধারণ-পূর্ব সেবা দিতে বিশেষ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এরই মধ্যে সারা দেশে ‘গর্ভধারণ-পূর্ব সেবা কেন্দ্র’ খোলা হয়েছে যেখানে নির্ধারিত সময়ে বিনামূল্যে গর্ভধারণ-পূর্ব পরামর্শ এবং স্বল্পমূল্যে গর্ভধারণসংক্রান্ত সেবা পাওয়া যাবে। এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি প্রসবকালীন নারী ও শিশুমৃত্যুর হার যেমন কমানো সম্ভব হবে, তেমনি নারীসহ আগামী প্রজন্মকেও ডায়াবেটিসের ভয়াবহ প্রকোপ থেকে অনেকাংশে রক্ষা করা সম্ভব হবে। ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে— l কায়িক পরিশ্রম না করা l মোটা বা স্থূলকায় হয়ে যাওয়া l অতিমাত্রায় ফাস্টফুড খাওয়া ও কোমল পানীয় (সফট ড্রিঙ্কস) পান করা l অতিরিক্ত মানসিক চাপের মধ্যে থাকা l ধূমপান করা ও তামাক (জর্দা, গুল, খৈনি, সাদাপাতা) খাওয়া l গর্ভকালীন বিভিন্ন সমস্যা l যাদের বাবা-মা অথবা রক্ত সম্পর্কীয় নিকটাত্মীয়ের ডায়াবেটিস আছে এবং যাদের বয়স ৪৫ বছরের বেশি তাদের হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কাজেই ডায়াবেটিস সমন্ধে তাদের অধিকতর সতর্ক থাকা দরকার। l বয়স যদি ৪০-এর বেশি হয় এবং ওজন যদি মাত্রাতিরিক্ত হয় কিংবা বংশে যদি কারও ডায়াবেটিস থাকে, তবে অবশ্যই বছরে একবার এর পরীক্ষা করা প্রয়োজন এবং সেইসঙ্গে অন্তঃসত্ত্বারা নিশ্চিত করবেন তাদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস আছে কি না। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা জাতীয় অধ্যাপক ডা. মো. ইব্রাহিমের অমর বাণী—‘প্রত্যেক ডায়াবেটিস রোগী যদি তিনটি D—Diet, Drug, Discipline অর্থাৎ পরিমিত খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত ওষুধ গ্রহণ এবং রক্ত পরীক্ষা ও নিয়মিত ব্যায়াম—এ তিনটি নীতিকে নিষ্ঠার সঙ্গে প্রতিদিন মেনে চলেন, তাহলে তারা অবশ্যই স্বাভাবিকের কাছাকাছি, সামাজিকভাবে উপযোগী, সৃজনশীল কাজে সক্ষম ও সম্মানজনক জীবন নির্বাহ করতে পারবেন।’ তামাক ও ধূমপানের সঙ্গে ডায়াবেটিসের সম্পর্ক এরই মধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। ধূমপান ও তামাক সেবন ডায়াবেটিসের ভয়াবহতা এবং জটিলতা অনেকগুণ বাড়িয়ে দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা তরুণ বয়সে ধূমপান শুরু করে তারা পরবর্তী সময়ে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে। ডায়াবেটিস আছে এমন কেউ যদি ধূমপান, তামাক সেবন করে তবে তাদেরও তা নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। ফলে তাদের মধ্যে ফুসফুসের ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোক ও পায়ের পচনশীল রোগ ‘গ্যাংগ্রিন’ হওয়ার সম্ভাবণা পাঁচগুণ বেশি। তা ছাড়া ডায়াবেটিস রোগীদের ধূমপানের কারণে ‘মাড়ির রোগ বা পেরিওডেন্টাল ডিজিজ’-এর জটিলতা বেশি হয় এবং অকালে দাঁত পড়ে যায়। যারা (বিশেষত মহিলারা) জর্দা, গুল, সাদাপাতা ব্যবহার করেন তাদের মুখের ভেতরে বিভিন্ন ধরনের ঘা হতে পারে, যেগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ক্যান্সারে রূপান্তরিত হতে পারে। নিয়মিত জর্দা, গুল, সাদাপাতা ব্যবহারে ডায়াবেটিসের শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে না, ফলে মুখের ভেতরের বিভিন্ন রোগ বিশেষত মাড়ির রোগ ও মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকগুণ বেড়ে যায়। অতএব, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ও প্রতিরোধে তামাক, জর্দা, গুল, সাদাপাতা এবং সেইসঙ্গে ধূমপান অবশ্যই বর্জন করা প্রয়োজন। ডায়াবেটিস সারা জীবনের রোগ। একবার হলে তা কখনো সারে না। তবে এটি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ যোগ্য। ডায়াবেটিসের ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে পারলে একে প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা সহজ। এজন্য যাদের ডায়াবেটিস আছে এবং যাদের নেই, উভয়কেই প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য ডায়াবেটিসের ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে হবে। আরেকটি কথা, ৫০ শতাংশের বেশি টাইপ-২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধযোগ্য। আজ থেকে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করুন। কেননা অঙ্গহানি, হৃদরোগ, কিডনি জটিলতা ও অকাল মৃত্যুর অন্যতম কারণ ডায়াবেটিস। সামান্য উদ্যোগই রোগের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে। প্রতিকারের চাইতে প্রতিরোধই শ্রেয়, সস্তা ও নিরাপদ। লেখক : অধ্যাপক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা (একুশে পদকপ্রাপ্ত শব্দসৈনিক, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র)
১৪ নভেম্বর, ২০২৩

আলোচনায় বিশিষ্টজনেরা / ধূমপানে ক্ষতির শিকার আট কোটি মানুষ
দেশে প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাক সেবন করে। প্রায় ৮ কোটি মানুষ পরোক্ষভাবে ধূমপানের ক্ষতির শিকার হয়। তবে অসংক্রামক রোগ ও অকাল মৃত্যু প্রতিরোধে এবং স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন নিশ্চিতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনী ও বাস্তবায়ন অপরিহার্য। ২০৪০ সালের মধ্যে সরকার তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিলেও তামাক আইন সম্পর্কে বেশিরভাগ লোকই জানেন না। আইন প্রয়োগের বিষয়ে উদাসীনতা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তামাকমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে সচেতনতা তৈরিসহ রাজনৈতিক অঙ্গীকার দরকার। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা মানস এর আয়োজনে ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রয়োগ ও বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।  মানসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী সভায় সভাপতিত্ব ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, দেশে প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ তামাক সেবন করে। প্রায় ৮ কোটি মানুষ পরোক্ষভাবে ধূমপানের ক্ষতির শিকার হয়। ক্যান্সার, স্ট্রোক, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের অন্যতম কারণ হলো তামাক সেবন যা স্বাস্থ্য খাতে চাপ বৃদ্ধি করছে। তামাকের কারণে পরিবেশ-জীববৈচিত্র, কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন হুমকিতে রয়েছে। প্রবন্ধে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ রাখার বিধান বিলুপ্ত, ই- সিগারেট ইত্যাদি আমদানি, বিপণন, ব্যবহার নিষিদ্ধসহ আরও বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য সংশোধনী প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার চেয়ারম্যান ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, দেশে মাদকের সহজলভ্যতার পেছনে ধূমপান ও তামাকের ব্যবহার অন্যতম বড় কারণ। সুতরাং তামাক নিয়ন্ত্রণে আইন শক্তিশালী ও বাস্তবায়ন, ট্যাক্স বৃদ্ধি, সিএসআর নিষিদ্ধসহ বহুমাত্রিক পদক্ষেপ নিতে হবে। তামাকবিরোধী কাজে সবার অংশগ্রহণ প্রয়োজন। গণমাধ্যমের কাজ হলো সত্য তুলে ধরা। তামাক ও ধূমপানের প্রকৃত সত্য গণমাধ্যমে তুলে ধরে মানুষকে সচেতন করতে হবে। এতে তারা প্রভাবিত হবে এবং সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, উন্নত দেশগুলোতে তামাক ক্রমান্বয়ে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশেও তামাকের ব্যবসা বাড়ানো হচ্ছে। দেশের অনেক আইন প্রণেতা তামাক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এবং তাদের লবিং রয়েছে। ফলে তামাক নিয়ন্ত্রণ কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় হচ্ছে না। তামাক নিয়ন্ত্রণে শক্তিশালী রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রয়োজন। একইসঙ্গে গণমাধ্যমকে ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী বলেন, ১৮ বছরের নিচে কারো কাছে তামাকজাত পণ্য বিক্রি করা যাবে না এটা আমরা কতজন জানি। অনেকেই জানি না। আইন প্রয়োগ করবে যারা তাদেরও অনেকে জানেন না। আমাদের এসব বিষয়ে আরও সচেতন করতে হবে। ২০৪০ সালের মধ্যে তামাক নির্মূলের যে কমিটমেন্ট সেটা আর ১৭ বছর সময় আছে। আমাদের এখনই রাষ্ট্র ও প্রশাসনের দিক থেকে গুরুত্ব দিতে হবে। ভাইটাল স্ট্রাটেজিস’র পরামর্শক ফাহিমুল ইসলাম বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতার পাশাপাশি আইনি কাঠামো শক্তিশালী এবং তা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ জরুরি। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে।
৩১ অক্টোবর, ২০২৩

ইউএনএইচসিআর যুদ্ধ-সহিংসতায় বাস্তুচ্যুত সাড়ে ১১ কোটি মানুষ
যুদ্ধ, সংঘাত, সহিংসতা, মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ নানা কারণে বিশ্বব্যাপী বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১১ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষ। এর মধ্যে গত সেপ্টেম্বর মাসে বিপুলসংখ্যক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সংঘাত নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যর্থতার কারণে রেকর্ডসংখ্যক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে গত বুধবার এক প্রতিবেদনে জানায় জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার। এতে বলা হয়েছে, বাস্তুচ্যুত মানুষের এ সংখ্যা গত বছরের শেষের তুলনায় ৫৬ লাখ বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৭৫ সালে এ-সংক্রান্ত পরিসংখ্যান রাখা ও ডাটা নিবন্ধন শুরু করার পর থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষের এ সংখ্যাটিই সর্বোচ্চ। ইউএনএইচসিআর জানায়, চলতি বছরের প্রথমার্ধে বাস্তুচ্যুতির প্রধান কারণগুলো ছিল— ইউক্রেন, সুদান, মিয়ানমার ও ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে সংঘাত, আফগানিস্তানে মানবিক সংকট, সোমালিয়ায় বন্যা, খরাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অস্থিতিশীলতা। ২০২৩ সালের মাঝামাঝি যারা নতুন করে বাস্তুচ্যুত হয়েছে তাদের মধ্যে ১ কোটি ১০ লাখ ইউক্রেনীয়। তারা যুদ্ধ থেকে বাঁচতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। সুদানের ৩০ লাখ মানুষ আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের বিরুদ্ধে দেশটির সেনাবাহিনীর সংঘাতে ঘরবাড়ি হারিয়েছে। ক্রমবর্ধমান এ সংখ্যার সঙ্গে চলতি মাসে নতুন করে যোগ হয়েছে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যাও। চলতি মাসের শুরু থেকে এ পর্যন্ত অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বোমা হামলার ১৪ লাখ ফিলিস্তিনি বাড়িঘর থেকে ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়। জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা ওসিএইচএ জানায়, ইসরায়েলের নির্বিচার এ হামলায় গাজার অনেক এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ লোকই আফগানিস্তান, সিরিয়া এবং ইউক্রেনের। বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যার দিক থেকে সিরিয়ার অবস্থান বরাবরের মতো শীর্ষে রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত এ দেশটির ৬৫ লাখ মানুষ বিশ্বের ১৩০টি দেশে ছড়িয়ে রয়েছে। এ ছাড়া সিরিয়ায় অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা আরও ৬৭ লাখ। ইউএনএইচসিআরের প্রধান ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বাস্তুচ্যুত মানুষের দুর্দশাময় পরিস্থিতির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দায়ী করে সংকট নিরসনে নতুন করে চাপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমরা গাজা, সুদান এবং তার বাইরের ঘটনাগুলো যখন দেখছি, তখন শরণার্থী এবং অন্যান্য বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য শান্তি নিশ্চিত ও সংকট সমাধানের সম্ভাবনা বেশ কঠিন বলেই মনে হবে। তাই বলে আমরা হাল ছেড়ে দিতে পারি না। অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে শরণার্থী সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে বের করতে আমাদের চাপ অব্যাহত থাকবে।
২৭ অক্টোবর, ২০২৩

আ. লীগকে জিএম কাদের / ১৬ কোটি মানুষ ১টি করে ঢিল ছুড়লেই আপনারা শেষ
দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার জন্য দেশের ভয়াবহ অবস্থা এমন মন্তব্য করে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মানুষের মাঝে শংকা বিরাজ করছে। নির্বাচন সঠিক সময়ে সঠিক পদ্ধতিতে গ্রহণযোগ্য হবে কিনা তা নিয়ে আশংকা আছে। এখন সবার কাছে অগ্রাধিকার হচ্ছে সামনের নির্বাচন। ভবিষ্যতে আমাদের কি হবে এ নিয়ে মানুষ অতংকিত। আজ সোমবার (২৩ অক্টোবর) দলের চেয়ারম্যান’র বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে ‘উপজেলা ব্যবস্থা প্রবর্তন দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সম্প্রতি আমেরিকা গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ না জানানোর কথা উল্লেখ করে বিরোধী দলের এই উপনেতা বলেন, জার্মানীর এক প্রতিষ্ঠান ১২৯টি দেশের মধ্যে করা জরিপে ২০২৩ সালের রিপোর্টে বলেছে বাংলাদেশ, লেবানন, মোজাম্বিক, নিকারাগুয়া ও উগান্ডা এই ৫টি দেশে নতুন করে স্বৈরশাসন চালু হয়েছে। বাংলাদেশে স্বৈরশাসন চলছে। মুক্তিযুদ্ধের নাম দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধংস করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা ধংস করেছে আওয়ামী লীগ। তিনি বলেন, গেলো তিন মাসে ৪ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান কমেছে। ১ কোটি মানুষ ইউরোপের মত জীবন যাপন করছে, তাই দেশে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। লুটপাটের জন্য মেগা প্রকল্প তৈরী করা হচ্ছে। ১০৮ বিলিয়ন ডলার বিদেশী ঋণ আর দেশী ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ ১০৯ বিলিয়ন ডলার ঋণ নেয়া হয়েছে। প্রবাসী আয়ের চেয়ে ব্যয় অনেক বেশি হওয়ায় প্রতি মাসে ১ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। শ্রীলংকা যখন দেউলিয়া হয়েছিলো তখন এমনভাবেই তাদের রির্জাভ কমেছিলো। রিজার্ভ ১০ বিলিয়নে ঠেকলে দেশকে দেউলিয়া হিসেবে ধরে নেয়া হয়। তবে, শ্রীলংকা এখন আমাদের চেয়ে ভালো আছে। ডলারের দাম বাড়ছে তাই প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইএমএফ এর হিসাবে দেশে সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকা খেলাপী ঋণ। অন্য একটি সূত্র বলছে, দেশের খেলাপী ঋণের পরিমান ৪ লাখ কোটি টাকা। ১ লাখ কোটি টাকা প্রতি বছর পাচার হচ্ছে। সরকার টাকা ছাপাচ্ছে, এতে মুদ্রাস্ফিতি বাড়ছে সেই সাথে বাড়ছে দ্রব্যমূল্য। দেশের ব্যবসায় সিন্ডিকেট আছে, তারাই দেশ চালাচ্ছে। তারাই টাকা পাচারের সাথে জড়িত বলেও যোগ করেন তিনি। সিন্ডিকেটের কারনেই দেশে পণ্যের দাম বাড়ার অভিযোগ করে জি এম কাদের বলেন, এর সাথে জড়িত এক কোটি মানুষ। তিনি বলেন, সরকার বলছে ক্ষমতার বাইরে গেলে তাদের বিএনপি-জামায়াত পিটিয়ে মারবে। বিএনপি-জামায়াত লাগবে না, ১৬ কোটি মানুষকে যেখানে নিয়ে গেছেন তারা ১টি করে ঢিল ছুড়লেই আপনারা শেষ হয়ে যাবেন। তাই পুলিশ ছাড়া চলতে পারবেন না। দেশবাসী কি আপনাদের আজীবন ক্ষমতায় রাখবে? এটা ভাবেন কেমন করে? আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে বিভক্ত করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শাসন ও শোষণ টিকিয়ে রাখতে একটি শ্রেণীকে অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে সরকার। এ করণেই মানুষ অবিচারের শিকার হয়ে নির্যাতিত হচ্ছে। জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেছেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ফর্মুলা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে, আনুপাতিক হারে ফলাফলের নির্বাচন করতে হবে। জাপা যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু’র সঞ্চালনায় আলোচনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সল চিশতী, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, মো. বেলাল হোসেন, এবিএম লিয়াকত হোসেন চাকলাদার, একেএম আশরাফুজ্জামান খান, এমএ ছোবহান, আল মামুন, মাহমুদা রহমান মুন্নি প্রমুখ।
২৩ অক্টোবর, ২০২৩

৪ কোটি মানুষ ইউরোপের মতো জীবনযাপন করছে : বাণিজ্যমন্ত্রী
দেশে প্রায় চার কোটি মানুষ আছেন যাদের জীবনযাপনের মান ইউরোপের মানুষের মতো বলে দাবি করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) ঢাকার কুড়িলে বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে পাঁচ দিনের জাতীয় ফার্নিচার মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যে তিনি এই দাবি করেন।  তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ৪ কোটি মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ইউরোপের মানুষের সমান। এই ৪ কোটি মানুষ দাম দিয়ে ভালো পণ্য কিনতে পারেন।’  টিপু মুনশি যুক্তি দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে যেহেতু ইউরোপের মানুষের মতো বিপুলসংখ্যক নাগরিকের ক্রয়ক্ষমতা তৈরি হয়েছে, সেহেতু তাদের জন্য ইউরোপীয় মানের আসবাবপত্র বানাতে পারেন ব্যবসায়ীরা। এই চার কোটি মানুষ কিন্তু দাম দেবে, ভালো জিনিসপত্র কিনতে পারবে। দেশে মানসম্পন্ন ফার্নিচার তৈরি হচ্ছে। তাই বিদেশ থেকে তেমন একটা আমদানি করতে হয় না দাবি করে বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, গত ১০-১২ বছরে বাংলাদেশের ফার্নিচার শিল্পের বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এখন ফার্নিচার রপ্তানির দিকে মনোযোগী হতে ব্যবসায়ীদের তাগিদ দেন। রাজধানীর বসুন্ধরার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে মেলার আয়োজন করে বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি (বিএফআইওএ)। দেশীয় ফার্নিচার শিল্পের সর্ববৃহৎ এই আয়োজন চলবে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত। 
১৭ অক্টোবর, ২০২৩
X