টেকনাফে বন্ধুর হাতে খুন ছাত্রলীগ নেতা
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের এক নেতাকে ছুরিকাঘাতে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত সোমবার বিকেলে বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই ছাত্রলীগ নেতার ভাই আহত হয়েছেন। নিহত রাকিব শাহরিয়ার মুরাদ (২১) বাহারছড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তার বাবা মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ বাহারছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। এ ঘটনায় গুরুতর আহত আব্দুল্লাহ আল মামুনকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মুরাদের চাচা মোহাম্মদ আরিফ বলেন, শামলাপুর এলাকার রফিক ও আদিল পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মুরাদকে বাজারে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাত ও কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় ভাইকে বাঁচাতে গেলে মামুনকেও কুপিয়ে আহত করা হয়। তিনি জানান, কোনো একটি বিষয় তাদের মধ্যে ঝামেলা ছিল। মীমাংসার কথা বলে মামুনকে বাজারে ডেকে নেয় তারা। সেখানে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাশের একটি কর্মকারের দোকান থেকে ধারালো দা নিয়ে মুরাদকে কোপায় তারা। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন আগে রফিক দাবি করেন মুরাদের মোবাইলে তার একটি গোপন ছবি আছে। এটি নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। সোমবার বিষয়টি মীমাংসা হওয়ার কথা ছিল। এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, মুরাদ ও রফিক দুই বন্ধু। ছবি আদান-প্রদানকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। রফিকের ছুরিকাঘাতে নিহত হন মুরাদ। লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
০৮ মে, ২০২৪

উখিয়া শিবিরে ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে আরও এক রোহিঙ্গা খুন
কক্সবাজারের উখিয়ার আশ্রয় শিবিরে ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে আরও এক রোহিঙ্গা যুবককে গুলি ও গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার (৫ মে) সন্ধ্যা ৭টার দিকে উখিয়া উপজেলার ২০-এক্সটেনশন নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বি-৫ ব্লকে ঘটনা ঘটে।  নিহত রোহিঙ্গা জাফর আহমদ (৪২) উখিয়া উপজেলার ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জি-৯ ব্লকের বাসিন্দা রঞ্জু মিয়ার ছেলে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (এডিআইজি) মোহাম্মদ ইকবাল। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে এডিআইজি মোহাম্মদ ইকবাল বলেন, সন্ধ্যায় উখিয়ার ৪-এক্সটেনশন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এফ-ব্লকে দ্বিতীয় স্ত্রীর বাসায় যান জাফর আহম্মদ। অস্ত্র দেখিয়ে তাকে তুলে নিয়ে যায় আরসা সদস্যরা। পরে পার্শ্ববতী ২০-এক্সটেনশন নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বি-ব্লকের কাঁটাতারের বাইরে নিয়ে তারা প্রথমে জাফরকে গুলি করে। এরপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তায় নিয়োজিত এপিবিএন পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল থেকে ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে। এর আগে, রোববার সকালে উখিয়ার ঘোনারপাড়া ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এম-১৯ ব্লকে রেড ক্রিসেন্ট অফিসের পাশে নুর কামাল (২৯) নামের এক রোহিঙ্গাকে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
০৬ মে, ২০২৪

দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে সবজি বিক্রেতা খুন
সিলেটে ছুরিকাঘাতে ভাসমান সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ আলী নামে এক তরুণ খুন হয়েছেন। শুক্রবার (৩ মে) সন্ধ্যায় নগরীর ছড়ারপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মোহাম্মদ আলী কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুরের বাসিন্দা। তিনি সিলেট নগরীর ছড়ারপাড় এলাকার রাহাত মিয়ার কলোনিতে বসবাস করতেন। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মঈন উদ্দিন শিপন বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, মোহাম্মদ আলী একজন ভাসমান সবজি বিক্রেতা। শুক্রবার বিকেলে কিছু দুর্বৃত্ত চালিবন্দর ভৈরব মন্দির সংলগ্ন এলাকায় তাকে ছুরিকাঘাতের পরে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওসি মঈন উদ্দিন শিপন বলেন, দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে আলী নামে এক তরুণ খুন হয়েছে। আমরা ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। আসামিদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
০৩ মে, ২০২৪

প্রতিক্রিয়া / খুন করার মতোই কার্যকলাপ
‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ারে’র আড়ালে মিল্টন সমাদ্দারের কার্যকলাপকে মানুষ হত্যা করার মতোই ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। গতকাল বৃহস্পতিবার কালবেলার সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রটির প্রতিষ্ঠাতা মিল্টন সমাদ্দার প্রতারণা, নিকৃষ্টতা ও ভণ্ডামির সর্বোচ্চ সীমা লঙ্ঘন করেছেন। তার কার্যক্রম খুন করার মতোই; অসংখ্য মানুষকে তিনি খুনই করেছেন। বিনা চিকিৎসায় তারা মারা গেছেন। এরপর তিনি নিজেই আবার ডেথ সার্টিফিকেট দিয়েছেন। তার মতো নৃশংস ন্যক্কারজনক কাজের লোক এ সমাজে খুব কমই আছে। যারা ওপরে ভালো মানুষ, ফেরেশতার মতো, মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে নাম করছে। মানুষ তুলে নিয়ে গিয়ে এমনভাবে দেখাচ্ছে, মানুষ তো মনে করছে এত ভালো মানুষ কী করে হয়! এর আড়ালে এ লোক এই অসভ্যতাগুলো করে গেছেন। টাকা উপার্জনের জন্য মানুষ এত খারাপ কাজ করতে পারে—এটা তো চিন্তাই করা যায় না। তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে মিল্টনকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আটক করেছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। আমরা তদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় থাকব, তদন্তে দোষী হলে আমরা তার কঠিন শাস্তি চাইব; যে শাস্তির মাধ্যমে সমাজে উদাহরণ সৃষ্টি হয়। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, তার এ ন্যক্কারজনক কাজের ফলে সমাজে যারা প্রকৃত ভালো কাজ করেন, তারা বিপদে পড়বেন। সাধারণ মানুষের বিশ্বাস উঠে যাবে। তাই তার কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত, যাতে পরবর্তী সময়ে কেউ এ ধরনের ন্যক্কারজনক কাজ করার সাহস না দেখায়।
০৩ মে, ২০২৪

সিগারেট বাকিতে না দেওয়ায় দোকানিকে খুন
মুন্সিগঞ্জে চিপস ও সিগারেট বাকি দিতে না চাওয়ায় মোশারফ হোসেন নামে এক মুদি দোকানিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (২৯ এপ্রিল) রাত দেড়টার দিকে মুন্সিগঞ্জ মিরকাদিম পৌরসভার কাগজীপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।  নিহত মোশারফ হোসেন মিরকাদিম পৌরসভার কাগজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা। আটক মোহাম্মদ রুবেল মুন্সিগঞ্জ মিরকাদিম পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ সোহেলের ছোট ভাই।     মুন্সিগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থান্ডার খায়রুল হাসান কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। স্থানীয়রা জানান, গতকাল রাতে মোশারফ দোকানে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত দেড়টার দিকে রুবেল তাকে ডেকে তুলে চিপস ও সিগারেট বাকি চায়। সে দিতে না চাইলে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে রুবেল তাকে দোকান থেকে বের করে এনে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। পরে স্থানীয়রা মোশারফকে উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।    মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. কালাম প্রধান বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। নিহতের শরীরের বিভিন্নস্থানে ধারালো ছুরিকাঘাত রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্ডার খায়রুল হাসান বলেন, চিপস ও সিগারেট বাকি না দেওয়ায় কথাকাটাকাটি হয় দুজনের মধ্যে। পরে মোশারফকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে রুবেল। রাতেই তাকে রক্তমাখা ছুরিসহ আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।
৩০ এপ্রিল, ২০২৪

শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মারধর থেকে বোনকে বাঁচাতে গিয়ে ভাই খুন
বোনকে মারছিলেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বোনের চিৎকার শুনে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বোনের শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুজন। শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের মির্জাপুর আকন্দ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।  নিহতের নাম জয়নাল আকন্দ। তিনি বালিজুড়ী ইউনিয়নের মির্জাপুর আকন্দ বাড়ির মুসলিম আকন্দের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, ১০ বছর আগে ফুলেরা বেগম ও নুর ইসলামের বিয়ে হয়। তারা একে অপরের প্রতিবেশী ছিলেন। বিয়ের পর নুর ইসলামের পরিবার ফুলেরা বেগমকে মেনে নেয়নি। এ নিয়ে প্রায়ই তাকে শারীরিক নির্যাতন করতেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে স্বামী নুর ইসলাম প্রবাসে চলে গেলে নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। শনিবার দুপুরে ফুলেরা বেগমের সঙ্গে তার শাশুড়ি নূরজাহানের ঝগড়া হলে ফুলেরা বেগমকে মারধর করতে থাকেন। এ সময় ফুলেরা বেগমের চাচাতো ভাই জয়নাল আকন্দ বোনের বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করতে গেলে ভাইকে দেখে ফুলেরা বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকেন।  বোনকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে বোনের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয় জয়নালের। একপর্যায়ে ফুলেরার শাশুড়ি নূরজাহান তার বাবা ও তিন ভাইকে জানালে তারা এসে জয়নালের ওপর হামলা চালায়। এ সময় জয়নালের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। তাদের বাঁচাতে এগিয়ে আসলে প্রতিবেশী বাবুল ও আলমগীরকেও পিটিয়ে আহত করে অভিযুক্তরা। জয়নাল আকন্দসহ তিনজনকে উদ্ধার করে মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুরে পাঠান চিকিৎসকরা। সেখানে নেওয়ার পথে জয়নাল আকন্দ মারা যান। মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মনজুরুল বারী বলেন, নিহত জয়নাল আকন্দের মাথায় আঘাতে ভেতরের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। এ ছাড়া আহত দুজন উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।  ভুক্তভোগী ফুলেরা বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর শাবু মিয়া, শাশুড়ি নূরজাহান, দেবর সাইফুল ও ননদ সাবিনা আমাকে প্রায়ই শারীরিক নির্যাতন করতেন। আজ দুপুরে আমাকে মেরে ফেলার জন্য মারধর করতে থাকেন। আমার চাচাতো ভাই জয়নাল আকন্দ পুকুরে গোসল করার জন্য আসছিলেন, আমি বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার করলে আমার ভাই আমাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। তিনি বলেন, একপর্যায়ে আমার শাশুড়ি নূরজাহান তার বাবা ও ভাইদের ফোন করে জানালে তারা লাঠি নিয়ে এসে আমার মামাশ্বশুর মেহেদী হাসান আমার ভাই জয়নালকে মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এরপর আমার ভাই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় সে। এ ঘটনায় আমি দোষীদের শাস্তি চাই।  মাদারগঞ্জ মডেল থানার ওসি মাহমুদুল হাসান কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার পর নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। সেই সঙ্গে অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।
২৭ এপ্রিল, ২০২৪

২৪ ঘণ্টায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ২ কর্মী খুন
পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নে ২৪ ঘণ্টায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দুই কর্মী খুনের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) কদমতলা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে পূর্বশত্রুতার জেরে পিটিয়ে সৈয়দ রাসেল মীর (২২) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে খুন করে প্রতিপক্ষের লোকজন। অপরদিকে সোমবার (২২ এপ্রিল) রাতে একই ইউনিয়নের সোহাগ শেখ (৩৩) নামে এক যুবলীগ কর্মীকে খুন করে প্রতিপক্ষের লোকজন। নিহতরা হলেন, রাসেল মীর পিরোজপুর পৌরসভার মুক্তারকাঠী এলাকার সৈয়দ ইদ্রিস মীরের ছেলে ও সোহাগ শেখ পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের ভৈরমপুর গ্রামের সিদ্দিক শেখের ছেলে। রাসেল পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। নিহত ছাত্রলীগ কর্মী রাসেলের স্বজনরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরের পর রাসেল মীর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম বায়জীদ হোসেনের সঙ্গে তার বাড়িতে দেখা করে ফেরার পথে কদমতলা ইউনিয়ন পরিষদের সামনের সড়কে এলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওঁৎ পেতে থাকা স্থানীয় মো. ফারুক ও গাঙ্গুয়া নামে দুজন পেছন থেকে লাঠিসোটা নিয়ে রাসেলের ওপর হামলা চালায়। তারা আরও জানান, এতে তিনি গুরুতর জখম হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় রাসেলকে প্রথমে পিরোজপুর জেলা হাসপাতাল ও পরে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয় এবং অবস্থার অবনতি হলে রাত ১২টার দিকে রাসেল মীর মারা যায়। পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম জানান, গত ১৫ এপ্রিল পিরোজপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীদের টাকা দাখিলের দিনও সৈয়দ রাসেল এবং রিয়াজুলের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারামারি হয়। তারা পুলিশের কাছে অভিযোগ না দিয়ে রাজনৈতিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা করতে থাকে। পূর্বে ২০২২ সালেও তাদের উভয়ের মধ্যে মারামারির ঘটনায় আসামির হাত ভাঙার ঘটনা ঘটে। রিয়াজুল সেই ক্ষোভ মনে পুষে রাখে এবং রাসেলের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকে। তিনি আরও জানান, তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে কদমতলা ব্রিজের ঢালে রাসেলকে পেয়ে তার মাথায় গাছের চ্যারা, জিআই পাইপ দিয়ে সজোড়ে বাড়ি মারে। পরবর্তীতে মিরাজসহ অন্যান্য আসামিরা রাসেলকে লাঠিসোটা দিয়ে পিটায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে তাকে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে ও পরে খুলনা সিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসারত অবস্থায় ওইদিন রাত ১১ টার দিকে রাসেল মারা যায়। এর আগে পূর্বশত্রুতার জেরে সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের ভৈরমপুর গ্রামে সোহাগ শেখ (৩৩) নামে এক হত্যা মামলার আসামি ও যুবলীগ সমর্থককে কুপিয়ে ও হাত-পা বিচ্ছিন্ন করে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। নিহত সোহাগ পিরোজপুর সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের ভৈরমপুর গ্রামের সিদ্দিক শেখের ছেলে। নিহতের ভাই শিপন শেখ আরও জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে একটি পক্ষের সঙ্গে সোহাগ ও তার পরিবারের বিরোধ ছিল। গত ইউপি নির্বাচনের পর শহিদুল নামে একজন খুন হন। সে মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছিল নিহত সোহাগ শেখকে। চার মাস আগে সোহাগ সেই মামলায় কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়। সেই পূর্বশত্রুতার কারণে পরিকল্পিতভাবে তার ভাই সোহাগ শেখকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি তার। পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকিত হাসান খান জানান, পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।
২৪ এপ্রিল, ২০২৪

দেনা মেটাতে এটিএম বুথ লুটের চেষ্টা, বাধায় নিরাপত্তাকর্মীকে খুন
ব্যবসায় লোকসানে আরিফুল ইসলামের ১৪ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঋণ হয়ে যায়। দেনা মেটাতে নিজের একটি কিডনিও বিক্রির চেষ্টা করেন। এতে ব্যর্থ হয়ে পরিকল্পনা আঁটেন এটিএম বুথ লুটের। ইউটিউব দেখে কৌশলও আয়ত্ত করেন। পরে একটি দিন ঠিক করে রাজধানীর শাহজাদপুর মধুমতি ব্যাংকের এটিএম বুথে ঢোকেন আরিফুল। এ সময় বুথ লুটে বাধা দেওয়ায় চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন নিরাপত্তাকর্মী হাসান মাহমুদকে। ঈদের আগের দিন ১০ এপ্রিল ভোরে এ ঘটনার পর হাসানের ভাই মাহফুজুর রহমান রুমেল অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তিদের আসামি করে গুলশান থানায় মামলা করেন। এ মামলায় রোববার আরিফুলকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গ্রেপ্তারের পর তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপি ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। ডিএমপির ডিবিপ্রধান বলেন, ইউটিউব দেখে ব্যাংক বা এটিএম বুথ ডাকাতির কৌশল শেখেন আরিফুল। পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী স্বাধীন বাংলা সুপার মার্কেট থেকে হাতুড়ি, ছেনি, মিরপুরের পল্লবীর মিল্লাত ক্যাম্প মোড় থেকে চাপাতি, সাবল, চাকু ও স্টেডিয়ামের ফুটপাত থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের একটি জার্সি কেনেন। এরপর নিরিবিলি এলাকায় এটিএম বুথ খুঁজতে থাকেন। শাহজাদপুরের ওই বুথটি নিরিবিলি মনে হওয়ায় সেটাকে বেছে নেন তিনি। ১০ এপ্রিল ভোর সোয়া ৫টার দিকে বুথে ঢোকেন আরিফুল। এ সময় তাকে বাধা দেন নিরাপত্তাকর্মী হাসান মাহমুদ। তখন তাকে চাপাতি দিয়ে গলায় কুপিয়ে হত্যা করেন। এরপর সঙ্গে নিয়ে যাওয়া সরঞ্জাম দিয়ে বুথ ভাঙার চেষ্টা করেন। ১০ থেকে ১২ মিনিট চেষ্টার পর ব্যর্থ হয়ে সব ফেলে বেরিয়ে বাসে উঠে মিরপুরের দিকে চলে যান। ডিবি গুলশান বিভাগের তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ১০ থেকে ১২ বছর বিভিন্ন অফিস ও বাসাবাড়ির আসবাবপত্র পরিবহনের কাজ করেন আরিফুল। দুই থেকে তিন বছর আগে ইট, বালু ও পাথরের ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু এ ব্যবসায় তার বড় লোকসান হয়। বড় অঙ্কের টাকা ঋণ হয়ে যায়, একপর্যায়ে কিডনি বিক্রির চেষ্টা করেন, মিরপুর এলাকায় লিফলেটও ছেড়েছিলেন। ডিবি জানিয়েছে, পাওনাদারদের চাপে ও ভয়ে গত তিন-চার মাস ধরে পরিবার-পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাজধানীর মিরপুরসহ বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে থেকে বুথ লুটের পরিকল্পনা করেন তিনি।
২৩ এপ্রিল, ২০২৪

৭৫ বছর বয়সে দ্বিতীয় বিয়ে, ছেলের হাতে বাবা খুন
বাগেরহাটের শরণখোলায় দ্বিতীয় বিয়ে করার কারণে পুত্রের হাতে পিতা খুন হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের পশ্চিম খোন্তাকাটা গ্রামের নিজ বাড়ির সামনে নৃশংসভাবে খুন হন তিনি। নিহত ওই ব্যক্তির নাম মেহাম্মাদ আলী খাঁন। ঘটনার পর থেকে নিহতের দুই ছেলে রফিকুল ও মোস্তাফিজ পলাতক রয়েছে। নিহতের ভাইয়ের ছেলে ইসমাইল হোসেন খাঁন জানান, চার ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে মশিউর রহমান খাঁনের সঙ্গেই মোহাম্মাদ আলী খাঁন থাকতেন। স্ত্রী অক্ষম বলে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোহাম্মাদ আলী খাঁন ছেলেদের না জানিয়ে দ্বিতীয় বিবাহ করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর থেকেই তার মেজো ছেলে রফিকুল তার পিতা মোহাম্মাদ আলীর সঙ্গে ঝগড়া করেন এবং মেরে ফেলার হুমকি দেন। তিনি আরও জানান, এরপর শুক্রবার রাত ৯টার দিকে তিনি শুনতে পান মোহাম্মদ আলীকে বাড়ির সামনে কুপিয়ে হত্যা করে ফেলে রেখে গেছে। ঘটনার পর থেকেই দুই ছেলে রফিকুল ও মোস্তাফিজকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয় ইউপি সদস্য মহিউদ্দিনসহ এলাকাবাসী ধারণা করছেন, বাবা বিয়ে করে স্ত্রীকে পাঁচ কাঠা জমি লিখে দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে এমন হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে পালিয়েছে রফিকুল ও মোস্তাফিজ। নির্মম এ হত্যার ঘটনায় রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম আশিকুর রহমান।  শরণখোলা থানার ওসি এএইচএম কামরুজ্জামান জানান, ধারণা করা হচ্ছে, দ্বিতীয় বিবাহের কারণে তার দুই ছেলে তাকে হত্যা করেছে। ঘটনার পর থেকে নিহতের দুই ছেলে পলাতক রয়েছে। ঘাতকদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
২০ এপ্রিল, ২০২৪

নাতির গলা কেটে হত্যা করল নানা
বগুড়ায় মায়ের সঙ্গে হরিবাসর অনুষ্ঠানে আসা ৫ বছরের শিশু বন্ধন কুমার দাসকে গলা কেটে হত্যা করেছে তার নানা সুকুমার দাস।  নিহত বন্ধন কুমার দাস গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার খানসামা গ্রামের রবি কুমার দাসের ছেলে। রবি কুমার তার শ্বশুরবাড়ি বগুড়া সদর উপজেলার লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়নের পীরগাছা গ্রামে থাকেন।  বন্ধনকে হত্যার পর তার নানা (শিশুটির মা কাকলী রানী দাসের মামা) নিজ ঘরে ঢুকে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে বসে ছিলেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে আটক করে।  আটক সুকুমার দাস (২৫) সদর উপজেলার নুনগোলা ইউনিয়নের শশীবদনী গ্রামের ঝুমুর দাসের ছেলে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মজিদ জানান, কাকলী রানী গত মঙ্গলবার তার দিদার (নানি) বাড়ি শশীবদনী গ্রামে ছেলে বন্ধনকে সঙ্গে নিয়ে হরিবাসর অনুষ্ঠানে যান। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কাকলীর মামা সুকুমার বন্ধনসহ দুই শিশুকে তার ঘরে ডেকে নিয়ে যায়। এ সময় সে ধান কাটার কাঁচি দিয়ে শিশু বন্ধনের গলায় আঘাত করলে অন্য শিশুটি ভয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে গ্রামের লোকজন ওই শিশুর কাছ থেকে বিষয়টি জানার পর গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় বন্ধনকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক ওই শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন। বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক শাহিনুজ্জামান শাহীন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আটক সুকুমার হত্যার কারণ সম্পর্কে কোনো কিছু জানায়নি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নিহত শিশুর লাশ শজিমেক হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাবে।
১৮ এপ্রিল, ২০২৪
X